Wednesday, December 14, 2011

১০টি খারাপ অভ্যাস যা ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর [ 10 Harmful Bad Habits for BRAIN ]


"""""""""""১০টি খারাপ অভ্যাস যা ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর""""""""""""

প্রতিনিয়ত অভ্যাসবশত আমরা কিছু কাজ করে থাকি যা আমাদের ব্রেইনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই ব্রেইনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সতর্ক হবার জন্য জেনে নেওয়া যাক সেই অভ্যাসগুলো।

১। সকালে নাশতা না করাঃ আমরা অনেকেই ব্যস্ততার কারনে সকালের নাশতা না করেই বাসা থেকে বের হয়ে যাই। কিন্তু এই অভ্যাসটা খুব খারাপ। কারণ সকালে নাশতা না করলে নিম্ন রক্ত শর্করার কারণে আমাদের ব্রেইনে পর্যাপ্ত শর্করা তথা পুষ্টি পায়না। এতে করে ধীরে ধীরে ব্রেইন মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই ব্যস্ততা সত্ত্বেও সকালের নাশতা করতে ভুলে যাবেননা।

২। অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণঃ অনেক সময় আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণ করি। ধারণা করা হয় মাঝে মাঝে এরকম অতিরিক্ত ডায়েটে কি আর হবে! কিন্তু ধারণাটা ভুল। কারণ অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণের অভ্যাস আমাদের ব্রেইনের রক্তনালীর ইলাস্টিসিটি নষ্ট করে দেয় ফলস্বরূপ অনেক ধরনের মানসিক সমস্যার উৎপত্তি হয়। তাই সর্বদা সচেতন হোন এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডায়েট গ্রহণে বিরত থাকুন।

৩। ধূমপানঃ ধূমপান নানা রোগের অন্যতম কারন। ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব বলে শেষ করে যাবেনা। তাই যারা ধূমপান করেন তাদের জন্য সতর্কবার্তা ধূমপানে কেবল ফুসফুস ক্যান্সার নয় বরং এতে করে ব্রেইন সংকুচিত হয়ে যায় ফলস্বরুপ আলঝেইমার নামক স্মৃতিবিলোপকারি রোগের উদ্ভব হয়।

৪। অতিরিক্ত মিষ্টি গ্রহণঃ অনেকের ধারণা মিষ্টি বেশি খেলে ব্রেইন ভাল হয়। কিন্তু আসলে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না। অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে সেটা আমিষ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পরিপাক; শোষনে বাধা সৃষ্টি করে যা ব্রেইনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং ব্রেইনের বিকাশ সাধনের অন্তরায়। তাই অতিরিক্ত মিষ্টি নয় পর্যাপ্ত ও পরিমিত মিষ্টি গ্রহন করুন।

৫। বায়ু দূষণ: বায়ু দূষনের জন্য আমাদের ব্রেইনের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়। কারণ বায়ু দূষনের ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধ বাতাস আমাদের ব্রেইনে যেতে পারে না। ফলে ব্রেইন ধীরে ধীরে পুষ্টির অভাবজনিত কারণে স্বাভাবিক কার্যকারি ক্ষমতা হারাতে থাকে। তাই বায়ু দূষণ যুক্ত পরিবেশ থেকে দূরে থাকুন এবং বায়ু দূষন রোধে নিজে ও অন্যকে সচেতন করুন।

৬। নিদ্রাহীনতাঃ ঘুম আমাদের ব্রেইনের বিশ্রামের জন্য জরুরি। তাই পর্যাপ্ত ঘুম ব্রেইন কোষের স্বাভাবিক কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা দীর্ঘদিন যাবৎ নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন কিংবা কাজের ব্যস্ত্যতার জন্য ঘুমানোর সময় পাচ্ছেননা তাদের জন্য বলছি, নিদ্রাহীনতা আমাদের ব্রেইনের কোষের মৃত্যুর জন্য দায়ী। সুতরাং পর্যাপ্ত ঘুমকে কেবল সময় নষ্ট হিসেবে নয় বরং ব্রেইনের বিশ্রামের জন্য দরকারি হিসেবে নিন।

৭। ঘুমানোর সময় মাথা আবৃত করাঃ ঘুমাতে যাবার পূর্বে মাথা খোলা রেখে ঘুমানো ব্রেইনের জন্য উপকারি। কারণ মাথা আবৃত করে ঘুমালে কার্বনডাই অক্সাইড এর পরিমান ঘনীভূত হয় এবং অক্সিজেনের পরিমান কমে যায় যা পরবর্তিতে ব্রেইনের মারাত্বক ক্ষতিসাধন করে।

৮। অসুস্থতার সময় অতিরিক্ত কাজঃ যখন আমরা অসুস্থ হই তখন আমাদের উচিত কোন পরিশ্রমি কাজ অথবা পড়াশুনা থেকে বিরত থেকে আমাদের ব্রেইন কে বিশ্রাম দেয়া। তা না হলে অসুস্থতার সময় অতিরিক্ত চাপ আমাদের ব্রেইনের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় ফলস্বরূপ ব্রেইনের দীর্ঘমেয়াদী মারাত্বক ক্ষতিসাধন হয়।

৯। চিন্তা না করাঃ বেশি বেশি চিন্তা করুন, ব্রেইন কোষের উদ্দীপনার জন্য চিন্তা-ভাবনা করা অত্যন্ত জরুরি। যত বেশি সৃষ্টিশীল চিন্তায় মনোযগ দিতে পারবেন, ততবেশি আপনার ব্রেইন কোষ উদ্দীপিত হবে। আপনি আরো বেশি দক্ষ ও মনোযোগি হতে পারবেন যেকোন কাজে। আর চিন্তাহীন ব্রেইন ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে ব্রেইনের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।

১০। কথা না বলাঃ অনেকেই চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু অতিরিক্ত চুপচাপ ব্রেইনের জন্য ক্ষতিকর। কারণ আপনি যত বেশি বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় অংশ নিতে পারবেন সেটা আপনার ব্রেইনের স্বাভাবিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত উপকারি। তাই চুপচাপ নয় বরং কার্যক্ষেত্রে বেশি বেশি আলোচনায় অংশ নিয়ে আপনার ব্রেইনকে সতেজ রাখুন। (নেট থেকে সংগ্রৃহীত



"ফেরা" [ Collection of Stories - 17 ]


ঠিক ভোর ৫-৩০ এর সময় বিতিকিচ্ছিরি শব্দে অ্যালার্ম ঘড়িটা বেজে উঠলো । প্রতিদিনই এই ঘড়ির ডাকেই রিফাতের ঘুম ভাঙ্গে। ক্লাস আর পার্টটাইম চাকরি শেষে রিফাত মরার মতো ঘুমায় । এতো কর্কশ শব্দ ছাড়া ঘুম ভাঙ্গার কোন উপায় নেই তবে আজকে ঘড়িটার না বাজলেও চলতো । রিফাত কাল সারারাত জেগেই ছিল । শত চেষ্টা করেও ঘুমাতে পারে নি ।

অ্যালার্ম বন্ধ করে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো সে । পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর মাঝে শীর্ষে থাকা এই দেশে কিছুক্ষণ পরই আরেকটা ব্যস্তদিন শুরু হয়ে যাবে । রিফাতেরও খুব ইচ্ছে হল ঐ ব্যস্ত মানুষগুলোর ভিড়ে মিশে যেতে । আবার পরক্ষণেই একরাশ নৈরাশ্য তাকে ঘিরে ধরে ।

ল্যাপটপটা ওপেন করে সে । একেএকে মেইল , এফবি , চেক করে । নাহ , কোথাও কেউ তাকে মনে করেনি । সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করলো । কিন্তু লাইটারটা কোথাও খুঁজে পেল না । অন্যদিন হলে খুঁজে দেখত একটু, কিন্তু আজকে আর ইচ্ছে করলো না ।
সিগারেটের প্যাকেটটা পকেটে ঢুকিয়ে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এল সে । এই দেশের অন্যান্য শহরগুলোর মতো এই শহরের লোকজনও আরেকটা যান্ত্রিক দিনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে । শুধু রিফাতেরই আজ কেন যেন রক্ত-মাংসের মানুষ হতে ইচ্ছে করছে । সে রাস্তার পাশের একটা বেঞ্চে বসল , দেখতে লাগলো অন্যদের জীবনগুলোকে ।
পকেট থেকে মুঠোফোনটা বের করে অহনাকে ফোন করল । একের পর এক রিং বাজল । কিন্তু অহনা ধরল না। অবশ্য রিফাতের এটা জানাই ছিল । আজকে অহনার গায়ে হলুদ । ছেলে এদেশের গ্রিনকার্ডধারি , অনেক টাকা ইনকাম । অহনাকে সুখে রাখবে খুব ।
অহনার সাথে রিফাতের চার বছরের সম্পর্ক । অনেক বাধা-বিপত্তিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাদের সম্পর্কটা এতদিন টিকে ছিল । কিন্তু হটাত কী থেকে যে কী হয়ে গেল............ ............... ...
গত পরশু রাতে অহনার ফোন আসে।
‘’কেমন আছো , রিফাত?”
ভাল। তোমার কি খবর? সারাদিন কই থাক? ফোন ধর না কেন? “
রিফাত , তোমাকে একটা কথা বলি । মন দিয়ে শোন । আমার মনেহয় আমাদের আর যোগাযোগ রাখা উচিত না । আমার বিয়ের কথাবার্তা চলছে । ছেলের স্ট্যাটাস অনেক হাই ।
‘’কি বলছ তুমি এইসব? নিশ্চয় ফাজলামি করছো? আমাকে বোকা বানাচ্ছো, না? “
‘’ আমি মজা করছি না । সত্যি বলছি । তুমি আমাকে ভুলে যাও । এটা তোমার আর আমার আমাদেরদুইজনের জন্যই ভাল ।
এদেশে রিফাত যখন প্রথম পড়তে আসে তখনি অহনার সাথে পরিচয় ।রিফাত কখনো স্বপ্নেও ভাবেনিঅহনা এরকম কিছু করতে পারে । তার সমস্ত দুনিয়া যেন প্রচণ্ড ঝড়ে ওলটপালট হয়ে গিয়েছে । জীবনের প্রতি সমস্ত আগ্রহই তার চলে গিয়েছে ।
নিজের জীবনের এলোমেলো দিকগুলো নিয়ে ভাবতে ভাবতে রিফাত সারাদিন কাতিয়ে দিল । বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পথে , তখন সে হেঁটে হেঁটে শহরের একদম শেষপ্রান্তের রেলস্টেশনে এল ।
প্ল্যাটফর্মের একটা বেঞ্ছিতে বসলো রিফাত । কাজ শেষ করে মানুষজন ঘরে ফিরে আসছে । চোখে-মুখে পরিত্রিপ্তির পূর্ণ আভাস । স্টেশনটা ধীরে ধীরে নীরব হয়ে যায়। লোক চলাচল একদম কমেআসে । এমন সময় রিফাতের কাছে এক ভিখিরি এসে হাত পাতে । এদেশের ভিখিরিরাও অবশ্য কোট-প্যান্ট পরে । রিফাত কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে ভিখিরিটার দিকে চেয়ে রইল । তারপর পকেট থেকে নিজের মানিব্যাগটা বের করে লোকটারহাতে তুলে দিল । ভিখিরিটার ঘোর কাটার আগেই রিফাত বেঞ্চ ছেড়ে উঠে পড়ল ।
ধীর পায়ে হেঁটে এসে সে রেল লাইনে নামল । তার বেঁচে থাকাব্যাপারটা কেমন যেন অর্থহীনমনে হতে লাগল । রেল লাইন ধরে সে হাঁটতে শুরু করলো পরের ট্রেনের অপেক্ষায় । হাঁটতে হাঁটতে সে একটা টানেলের মধ্যে ধুকে গেল ।
ঐ তো ট্রেনের ক্ষীণ হুইসেল শোনা যাচ্ছে । অনেকদুরে আছে এখনো , কিন্তু অল্পক্ষণের মধ্যেই এসে পড়বে । এরপরেই তার দীর্ঘ , ভারি জীবনটাকে আর বইতে হবে না । অসহ্য অনুভূতিগুলোকে সইতে হবে না,না পাওয়ার কষ্টে আর পুড়তে হবে না ।
হটাৎ তার মুঠোফোনটা বেজে উঠলো । জীবনের শেষবেলায় এসে আর কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছেকরল না রিফাতের । তারপরও কি ভেবে যেন পকেট থেকে মুঠোফোনটা বের করল সে । স্ক্রিনে ভাসছে---Maa is calling…………….
রিফাতের মা বাংলাদেশের এক গ্রামে থাকেন । প্রতিদিনই ছেলের খোঁজ নিতে এ সময় ফোন করেন। রিফাতের মাথার ভিতরটাকেমন যেন ফাঁকা হয়ে গেল । বুকের ভিতর কোথা থেকে এসে একটা পাথর আঘাত করল । তার মায়ের গায়ের সেই অতি পরিচিত গন্ধটা যেন তার নাকে ভেসে এল। মায়ের হাতে ভাত খাওয়া , মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমানো ---------সব কিছু তাকে কোথায় যেন ভাসিয়ে নিয়ে গেল । সে বুঝতে পারল তার তো এমন অনেকেই আছে যারা শত বিপদেও তাকে ছেড়ে যাবে না । তারা শুধু দিতেই জানে , কিছু পাওয়ার সামান্য বাসনাও তাদের নেই । তার মৃত্যুতে তাদের কি অবস্থা হবে ভাবতেই তার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে এল ।
ততোক্ষণে ট্রেন ব্রিজের উপরচলে এসেছে । বাঁচার একটাই উপায় , যেকোনোভাবেই হোক তাকেটানেলের অপর প্রান্তে পৌঁছাতে হবে ।
রিফাত ছুটতে শুরু করল । সে দৌড়াতে শুরু করল তার টানেলের খোলা প্রান্তের দিকে । তাকে সেখানে পৌঁছাতেই হবে ।তার জন্য যে অপেক্ষায় আছে ভালবাসার বিশাল এক পৃথিবী ............... ............... ......।।
 
 গল্পটি নেয়া :  https://www.facebook.com/Golpo143/posts/217754268299805
by ---- Durjoy Baidya