এখন মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, আগের চাকরির বেতন-বোনাস দিয়ে যে গাড়ি-বাড়ি করেছি তা আমার জন্য বৈধ কি না? যদি বৈধ না হয়ে থাকে তাহলে আমার এখন করণীয় কী? দয়া করে বিস্তারিত জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।
উত্তর
সুদী প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যে আয় দিয়ে গাড়ি-বাড়ি বা অন্য যে সম্পদ গড়েছেন, তা ভোগ করা জায়েয হবে না। এখন আপনি যদি এ গাড়ি-বাড়ি ও অন্যান্য সম্পদ থেকে বৈধভাবে উপকৃত হতে চান, তাহলে যে পরিমাণ টাকা দিয়ে এ গাড়ি-বাড়ি ও অন্যান্য সম্পদ ক্রয় করেছেন, সে পরিমাণ টাকা সওয়াবের নিয়ত ব্যতীত গরিব-মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। এভাবে যতটুকু সদকা করবেন ততটুকু সম্পদ আপনার জন্য হালাল বলে বিবেচিত হবে।
উল্লেখ্য, গাড়ি-বাড়ি করার পর এগুলো ভাড়ায় দিয়ে থাকলে তা থেকে উপার্জিত টাকাও সদকা করে দিতে হবে এবং পিছনের জীবনে হারাম উপার্জন ও হারাম ভোগ-ব্যবহারের কারণে আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।
সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৯৮; বাদায়েউস সানায়ে ৬/১৪৫; ফাতহুল কাদীর ৮/২৫৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/১১৪
—মাসিক আল কাউসার
বর্তমানে আমাদের দেশে প্রচলিত ইসলামী ব্যাংকগুলো শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত হওয়ার দাবি করলেও বাস্তবে তাদের কার্যক্রম এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। বাস্তব পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, তাদের বিনিয়োগ কার্যক্রমগুলোতে অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথভাবে শরীয়া নীতিমালা পালিত হয় না; বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শুধু কিছু কাগজপত্রে দস্তখত করানো এবং বিভিন্ন আরবী পরিভাষার ব্যবহার পর্যন্তই তা সীমিত থাকে। তাই পূর্ণ শরীয়া পালনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত এসব ব্যাংকে চাকরি করা বা এজেন্ট হওয়া এবং এর বেতনাদি বা কমিশন ভোগ করা থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ হবে। কেননা চাকরি করা বা এজেন্ট হওয়ার মানে হলে, সরাসরি তাদের কাজে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা করা। যা সংশ্লিষ্ট কারবার হালাল হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার আগে করা যায় না।
সহীহ বুখারী, হাদীস ৫২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৪৬; জামে তিরমিযী, হাদীস ১২৩৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪২৬; মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, জিদ্দা ১২/১/৬৯৭
মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া, ঢাকা।