Wednesday, April 21, 2021

নিয়ামতে ভরপুর স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন উপহার দেওয়ার জন্য আল্লাহ্ কখনো মানুষকে সাময়িকভাবে নিঃস্ব-অসহায় করে দেন

 

নিয়ামতে ভরপুর স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন উপহার দেওয়ার জন্য আল্লাহ্ কখনো মানুষকে সাময়িকভাবে নিঃস্ব-অসহায় করে দেন।
.
আইয়ুব আলাইহিস সালাম। আল্লাহর প্রিয় এক বান্দা ও নবি। জীবনের এক কঠিন সময়ে তাঁর সমস্ত সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন হারান; ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হয়ে পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যান। কেবল মমতাময়ী স্ত্রী ছিলেন তাঁর পাশে—সেবায় নিয়োজিত থাকেন বিরতিহীন।
.
এমন করুণ অবস্থাতেও আইয়ুব (আ.) হতাশ হননি, আল্লাহকে ভুলেননি। নিজের অসহায়ত্বের কথা আল্লাহর কাছে তুলে ধরেছেন—
.
أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنْتَ أَرْحَمُ الرّٰحِمِينَ
.
‘‘আমাকে দুঃখ-কষ্ট আঁকড়ে ধরেছে; আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াশীল।’’ [সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৩]
.
আল্লাহও তাঁর প্রিয়তম বান্দা আইয়ুবকে পরীক্ষা করে নিলেন। তাঁর দু‘আ কবুল করলেন। এরপর তাঁকে প্রচুর অর্থ-সম্পদ, আত্মীয়-স্বজন, সুস্বাস্থ্য দিয়ে নিয়ামতে ভরপুর এমন জীবন দান করলেন, যা পূর্বের চেয়ে বহুগুণে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ ছিলো।
.
আল্লাহ্ তা‘আলা আইয়ুব (আ.)-এর প্রশংসায় বলেন, ‘‘কতই না চমৎকার বান্দা সে!’’ [সুরা সোয়াদ, আয়াত: ৪৪]
.
একই আয়াতে আল্লাহ্ আরো বলেন, ‘‘আমরা তাকে পেলাম ‘ধৈর্যশীল’ হিসেবে।’’
.
অতএব, পরিস্থিতি যেমনই হোক—সবর করতে হবে, আল্লাহর সিদ্ধান্ত ও তাকদিরকে সম্মান করতে হবে, তাঁর দিকেই ফিরে আসতে হবে। বিনিময়ে তিনি উত্তম বদলা দিবেন; যেভাবে আইয়ুব (আ.)-কে দিয়েছিলেন।
.
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা:
আমরা সরাসরি বাক্যে কিছু চাওয়াকেই কেবল দু‘আ মনে করি। যেমন: ‘‘হে আল্লাহ! আমাকে এই দাও, সেই দাও।’’ অথচ নবি-রাসুলগণ সবসময় সরাসরি বাক্যে চাইতেন না। তাঁরা কখনো কখনো নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করতেন এবং আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব, গুণাবলী ও পবিত্রতা ঘোষণা করতেন। এতেই দু‘আ কবুল হতো। যেমন: আইয়ুব (আ.)-এর দু‘আ—‘‘আমাকে দুঃখ-কষ্ট আঁকড়ে ধরেছে; আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়াশীল।’’ [সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৩]
.
এখানে কিন্তু সরাসরি কিছু চাওয়া হচ্ছে না। তেমনিভাবে, ইউনুস (আ.) মাছের পেটে গিয়ে বলেছিলেন—
.
لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحٰنَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظّالِمِيْنَ
.
‘‘আপনি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; আপনি পবিত্র আর আমি তো জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।’’ এখানেও দেখুন—স্পষ্ট করে কিছু চাওয়া হচ্ছে না। সবসময় স্পষ্ট করে চাওয়ার দরকারই-বা-কী! মহান অন্তর্যামী আল্লাহ্ তো বোঝেন—আমাদের কী চাওয়া! তবে, দু‘আর ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের অসহায়ত্ব, অযোগ্যতা, গুনাহ ইত্যাদি আল্লাহর কাছে পেশ করা এবং আল্লাহর মহানত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব, মর্যাদা, অমুখাপেক্ষীতা ইত্যাদি স্বীকার করা এবং এগুলোর উসিলা দেওয়া (নিজের নেক আমলের উসিলাও গুরুত্বপূর্ণ কাজ)।
.
Tasbeeh

মালিকের ভালোবাসা সিক্ত আমল 'রোযা'

 

|| মালিকের ভালোবাসা সিক্ত আমল 'রোযা' ||
তাদাব্বুর — “সূরা আল-বাকারাহ ১৮৩-১৮৫”
এ আয়াতগুলিতে আল্লাহ পাক আমাদেরকে সিয়াম অর্থাৎ রোযা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন এবং কিসের জন্য আমরা রোযা রাখি, রোযা রেখে কী লাভ, কাদের জন্য রোযা রাখায় ছাড় আছে ইত্যাদি শিক্ষা দিয়েছেন।
এ আয়াতটি লক্ষ করুন—
“হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরজ করা হয়েছে, যে রকম তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি হয়।” [আল-বাক্বারাহ ১৮৩]
এখানে আল্লাহ পাক সুস্পষ্ট ভাবে রোযা রাখার উদ্দেশ্যকে তুলে ধরেছেন। রোযা বলতে শুধু না খেয়ে থাকাকে নয়, বরং রোযা রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি সচেতনতা বাড়ানো। প্রথমে বোঝা দরকার তাকওয়া কী।
তাকওয়া শব্দটির অর্থ সাধারণত করা হয়—আল্লাহকে ভয় করা। এটি পুরোপুরি সঠিক অনুবাদ নয়, কারণ ‘ভয়’ এর জন্য আরবিতে ভিন্ন শব্দ রয়েছে—যেমন খাওফ خوف, খশিয়া خشي, হিযর حذر; শুধু কু’রআনেই ১২টি আলাদা শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন গভীরতার ভয়, সতর্কতা, আতঙ্ক ইত্যাদি তুলে ধরার জন্য। এর মধ্যে ‘তাক্বওয়া’ হচ্ছে ‘সবসময় পূর্ণ সচেতন’ থাকা বা আল্লাহর কথা মনে রেখে নিজেকে অন্যায় থেকে দূরে রাখা।[১][২]
ধরুন, সরকারের কোনো বিশেষ নিয়মের ভেতর আপনার উপর নজরদারির ঘোষণা করা হলো যে, আপনি কখনো আইন ভঙ্গ করেন কিনা সেটা খতিয়ে দেখা এবং রেকর্ড করার!
আপনার বাসার সবগুলো রুমে ক্যামেরা বসানো হলো। যেখানে যেখানে যান সেখানেও ক্যামেরা লাগানো হলো। এক কথায় আপনি ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে শুরু করে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত সবসময় আপনার দিকে ক্যামেরা তাক করে রাখা হলো। আপনি কী বলছেন, কী করছেন, কী খাচ্ছেন, কী দেখছেন, সবকিছু প্রতি মুহূর্তে রেকর্ড করা হচ্ছে! কল্পনা করুন, যদি এরকম কোনো ঘটনা ঘটে তাহলে আপনার মানসিক অবস্থা কিরকম হবে? আপনি প্রতিটা কথা বলার আগে চিন্তা করবেন যে, আপনার কথাগুলো মার্জিত হচ্ছে কি না, আপনার হাঁটা-চলার ধরন ঠিক আছে কি না, কারো উপর খারাপ আচরণ করছেন কি না, উল্টোপাল্টা কিছু করলে সেটা আবার রেকর্ড হয়ে গেলো কি না! আপনি টিভিতে যেসব হিন্দি সিরিয়াল, বিজ্ঞাপন, মুভি দেখেন, যেসব গান শুনেন, ইন্টারনেটে যে সব বাজে সাইটে ঘুরে বেড়ান, সেগুলো ক্যামেরায় রেকর্ড হয়ে গেলে লোকজনের কাছে মান-সন্মান থাকবে কি না। এই যে ক্যামেরার প্রতি আপনার চরম সচেতনতা এবং চরম সতর্কতা, এটাই তাক্বওয়া। আল্লাহ পাকের প্রতি আমাদের প্রত্যেকেরই এর থেকে আরও অনেক বেশি সচেতনতা থাকা উচিত।
এখন প্রশ্ন হলো, রোজার সাথে তাকওয়ার সম্পর্ক কী?
কেউ যখন রোযা রাখে, সে অনেক লম্বা একটা সময় শারীরিক চাহিদা, কামনা-বাসনা, যৌন প্রবৃত্তি থেকে স্বইচ্ছায় দূরে থাকে। ক্ষুধায় তার পেট মোড়ায়। হাত বাড়ালেই খাবার। ইচ্ছে করলেই সে রুমের দরজা বন্ধ করে লুকিয়ে লুকিয়ে পছন্দের খাবারটুকু গোগ্রাসে খেয়ে ফেলতে পারে। কিন্তু না! সে এটা করে না, সে মনে করে; 'কেউ না দেখলেও তো আল্লাহ পাক দেখছেন!' আবার একসময় তার পিপাসায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। এক গ্লাস ঠান্ডা পানির জন্য হাহাকার করে ওঠে বুকের ভেতরটা! অথচ, হাত বাড়ালেই পানির গ্লাস, ঠান্ডা স্বচ্ছ মিঠা পানি! কিন্তু সে খায় না, সে নিজেকে বোঝায়, “মাগরিব আসুক। এর আগে এক ফোঁটাও পানি খাওয়া যাবে না। এটাই আল্লাহ পাকের হুকুম।”
সারাদিন অফিসে-স্কুলে-কলেজে তার চোখের সামনে নানা প্রলোভন ঘুরে বেড়ায়। কিছুক্ষণ পর পর বিপরীত লিঙ্গের হাতছানি। ইচ্ছে করলেই সে চোখ উঠিয়ে সুন্দরী মেয়েদের দিকে তাকাতে পারে। আবার বাসায় আসলেই টিভি ছেড়ে দিয়ে গুনাহে লিপ্ত হতে পারে। ইন্টারনেটে ঢুকে চুপিচুপি সে অশ্লীলতার সাগরে ডুবে যেতে পারে। কিন্তু না, সে নিজেকে বোঝায়, “আমি রোজাদার। আমি এখন কোনো খারাপ কিছু দেখতে পারি না, কোনো খারাপ কিছু করতে পারি না। কোনো গুনাহই করতে পারি না।” দিনে কয়েকবার সে সুযোগ পেয়েছে মিথ্যা বলে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার, নিজের দোষ ঢাকার, অন্যায়ভাবে সুবিধা হাতিয়ে নেওয়ার, অন্যের গীবত করার। কিন্তু সে এসব করে না, সে নিজেকে সংযত করে বলে; “আমি তো রোযাদার, মিথ্যা বলে, গীবত করে রোযার ক্ষতি করতে পারি না। আমার রোযাকে মূল্যহীন বানাতে পারিনা।”
আবার যখন আমরা রোজা রাখি না, তখন আমাদের শারীরিক চাহিদা আসলেই আমরা সেটা মিটিয়ে ফেলি, পাপ কাজের ইচ্ছা জাগলেই আর হালাল-হারামের তোয়াক্কা করি না। ক্ষুধা লাগলেই খাই। পিপাসা পেলেই পান করি। কামনা জাগলে, তা সহজে পূরণ করে ফেলি। সুযোগ পেলেই মিথ্যা বলি, ঘুষ খাই, অন্যায় করি, গীবত করি। এভাবে আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদেরকে ক্রমেই প্রবৃত্তির দাস বানিয়ে ফেলি। যার ফলে দিনে দিনে কুপ্রবৃত্তির উপর নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকি। প্রবৃত্তি জিততে থাকে, আর আমরা হারতে থাকি। কিন্তু যখন আমরা রোযা রাখি, প্রতিদিন একটা বিরাট সময় আমরা আমাদের প্রবৃত্তিকে শক্ত হাতে দমন করে রাখি। কিছুক্ষণ পর পর প্রবৃত্তি মাতাচাড়া দিয়ে উঠে, আমাদের উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে চায়। কিন্তু তখনি আমরা সেটাকে পরাজিত করে নিজের উপর আবার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেই। এভাবে একটা মাস আমরা প্রবৃত্তির উপর জিতে যাওয়ার শক্তপোক্ত ট্রেনিং নিতে থাকি। তখন আমাদের নফস ধীরে ধীরে বশে চলে আসে। এবং আল্লাহ পাকের নির্দেশ মানা, অন্যায় থেকে দূরে থাকাটা তখন আমাদের জন্য আরও সহজ হতে থাকে। এভাবেই আমরা রোযা রেখে তাকওয়া অর্জন করি। [১]
রমযান তাই গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য প্রশিক্ষণের মাস! একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।
প্রাচীন আরবরা ঘোড়া নিয়ে যুদ্ধ করতে যেত। কিন্তু উটের মতো উত্তপ্ত মরুভূমিতে দীর্ঘ সময় থাকার জন্য ঠিক ঘোরা মোটেও উপযুক্ত নয়। এরা পানি ছাড়া বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। একারণে আরবরা ঘোড়াকে মরুভূমির প্রখর উত্তাপে বার বার দৌড়িয়ে মরুভূমিতে টিকে থাকার প্রশিক্ষণ দিত। এভাবে ঘোড়াকে প্রচণ্ড তাপে যুদ্ধ করার জন্য তৈরি করাকে তারা সিয়াম বলত। সিয়াম, যাকে আমরা রোযা বলি, মুমিনদের জন্য এটাও মূলত একধরনের মিলিটারি ট্রেনিং! এটি আমাদের শক্ত করে, কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য শারীরিক এবং মানসিক প্রশিক্ষণ দেয়। যাতে আমরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারি। [১][১৬]
একজন মুমিনের রোযা অবস্থায় গুনাহ কেনই বা হবে?
এতোদিন যেগুলো বৈধ ছিলো, সেগুলোই যখন রোযা অবস্থায় খাওয়া বা পান করা হারাম। যেমন: ভাত, গোশত, রুটি, খেজুর, পানি...ইত্যাদি।
আর এতোদিন থেকে যেগুলো অবৈধই ছিলো, হারামই ছিলো, যেমন: গান শোনা, মুভি দেখা, হারাম রিলেশন, পর্ণগ্রাফী, হস্তমৈথুন, মিথ্যা, গীবত ইত্যাদি। সেগুলো আবার রোযা রাখা অবস্থায় চালিয়ে যাওয়া কিভাবে যুক্তিসঙ্গত?
তাই একজন রোযাদার শুধু খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকাকেই নয় বরং সমস্ত গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাকে “রোযা রাখা” মনে করে। আর এটাই পুরোপুরি তাকওয়াপূর্ণ রোযা। উপরিউক্ত আয়াতে এ ধরনের তাকওয়ার কথাই বোঝানো হয়েছে, যে তাকওয়া সমস্ত গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখে।
এরপরের আয়াতে আল্লাহ পাক আমাদেরকে দেখিয়েছেন, কোন কোন পরিস্থিতিতে রমযানে রোযা রাখা আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক নয় এবং তিনি কতোটা সহজতর করে দিয়েছেন!—
“রোযা নির্দিষ্ট সংখ্যক দিনের জন্য। তারপরেও যদি তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ থাকে, বা সফরে থাকে, তাবে অন্য সময়ে সমান সংখ্যা পূরণ করবে। যারা এর শক্তি রাখে তারা একজন মিসকীনকে খাবার খাইয়ে (রোযার) ফিদয়া আদায় করতে পারবে। এছাড়া কেউ যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন পূণ্যের কাজ করে তবে তার পক্ষে তা শ্রেয়। আর তোমাদের মধ্যে যদি সমঝ থাকে, তবে রোযা রাখাই তোমাদের জন্য বেশি ভালো।” [আল-বাক্বারাহ ১৮৪]
এই আয়াতে ফিদয়া আদায় করার কথা বলা হয়েছে। তা আসলে কি! এটা কি সবার জন্য প্রযোজ্য? চলুন বিষয়টা বিশ্লেষণ করা যাক।
ফিদয়া: প্রথমদিকে যখন রোযা ফরজ করা হয় তখন এই সুবিধাও দেওয়া হয়েছিল যে, কোনও ব্যক্তি রোযা না রেখে তার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাবার খাইয়ে ফিদয়া আদায় করতে পারবে। পরবর্তীতে ১৮৫ নং (যা সামনে আসছে) আয়াতে এ সুবিধা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় এবং চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয় যে, যে ব্যক্তিই রমযান মাস পাবে তাকে অবশ্যই রোযা রাখতে হবে। অবশ্য যারা বৃদ্ধ, রোযা রাখার শক্তি নেই এবং ভবিষ্যতে রোযা রাখার মতো শক্তি ফিরে আসারও কোন আশা নেই, তাদের জন্য এ সুবিধা এখনও বাকি রাখা হয়েছে। [৩]
ফিদয়ার এই বিষয়টির মাধ্যমে সূক্ষ্ম একটি ব্যপার আমরা দেখতে পাই যে, আল্লাহ পাক তাঁর কোনো হুকুম আচমকা নাজিল করেননি। বরং বান্দাদের সুবিধার্থে ধীরে ধীরে নাজিল করেছেন এবং সাধ্যের অতীত বোঝা চাপান নি বরং নানাবিধ সুবিধাও রেখেছেন।
অসুস্থতা, অক্ষমতায় নিজের উপর জোর করে, অসুস্থতা বাড়িয়ে রোজা রাখতে আল্লাহ পাক আমাদেরকে বলেননি। আমাদের মধ্যে অনেকেই চেষ্টা করি জোর করে আল্লাহকে খুশি করার। অথচ, আল্লাহ পাক আমাদেরকে কোনো জবরদস্থি করতে বলেননি।
তাফসিরগুলোতে এই নিয়ে একাধিক মত রয়েছে। একাধিক সাহাবি (রাঃ) থেকে আসা মত অনুসারে; কারো যদি অসুস্থতা বাড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তার জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়। গর্ভবতী বা শিশু বাচ্চাকে দুধ পান করান এমন মা, বৃদ্ধ, অসুস্থ মানুষরা রমজান মাসে রোজা রাখতে কষ্ট হলে বা স্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি থাকলে, প্রতিটি রোজার বদলে একদিন করে একজন গরিব মানুষকে সাধ্যমত খাওয়াবে। একইভাবে সফরে থাকলেও রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়, যদি রোজা রাখার ফলে কষ্টের সৃষ্টি হয়।[১১][৬] তবে একাধিক মাযহাবের মত অনুসারে কেউ যদি রমজানের পরে রোজা রাখতে সক্ষম হয়, তাহলে গরিব খাওয়ানো যাবে না, নিজে অবশ্যই রোজা রাখতে হবে। সুতরাং অসুস্থতা সাময়িক হলে এবং মা’দের রমজানের পরে রোযা রাখতে হবে, গরিব খাওয়ালে হবে না।
কী ধরণের অসুস্থতা হলে এবং কী ধরণের সফর হলে রোজা না রাখলেও হবে, এ নিয়ে বিভিন্ন ফিকহ-এর আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।[১১][৩][৬] যেহেতু আল্লাহ পাক এখানে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি, তাই তারা আশংকা করেছেন যে, মানুষ ব্যাপারটাকে সহজভাবে নেবে এবং একটু অসুস্থ হলেই, বা সামান্য সফরে গেলেই রোজা রাখা ছেড়ে দেবে। তাই তারা সফরের দৈর্ঘ্য কতটুকু, কতদিনের হতে হবে, এ নিয়ে কিছু শর্ত দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো গ্রহণযোগ্য হাদিস থেকে এই শর্তগুলোর পক্ষে ইজমা হওয়ার মতো যথেষ্ট দলিল পাওয়া যায়নি বলে একাধিক তাফসিরবিদদের মত।[৩][৬] তাদের বক্তব্য হচ্ছে; আল্লাহ পাক এখানে কোনো শর্ত দেননি, কারণ রোজা রাখার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া অর্জন। কেউ যদি আল্লাহর সাথে প্রতারণা করতেই চায়, নিজের প্রবৃত্তির কাছে নিজেকে বিক্রি করে দিতে চায়, তাহলে তার জন্য এই সব শর্ত থাকা বা না থাকাটা একই কথা। যে সবসময় সুযোগ খুঁজে কীভাবে আইনের ফাঁকফোকর বের করে পার পেয়ে যাওয়া যায়, তাকে হাইকোর্ট দেখিয়ে খুব একটা লাভ হয় না। বরং এই সব মানুষকে ঠিক করতে গিয়ে অন্য সবার জন্য ধর্মের মধ্যে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করলে, তা উলটো মানুষকে ধর্মের প্রতি নিরুৎসাহিত করে।[৬]
আমাদের এটা মনে রাখতে হবে যে, ইসলাম ধর্ম আল্লাহ পাক-ই আমাদেরকে দিয়েছেন, কোনো মানুষ তা নির্ধারণ করেনি। কখন মানুষকে শক্ত নিয়ম দিতে হবে, কখন ছাড় দিতে হবে, ছাড় দিলে তার সুদূর প্রসারি ফলাফল কী হবে —এটা আল্লাহ পাক যে কোনো মানুষের থেকে ভালো জানেন। সুতরাং কোনো এক প্রজন্মের ইসলামকে হালকা ভাবে নিয়ে অবহেলা করা দেখে, সে প্রজন্মের আলেমরা যদি ইসলামে নানা শক্ত নিয়ম, শর্ত যোগ করেন, তাহলে সেটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সবসময় কল্যাণকর নাও হতে পারে, বরং তাদের প্রতি অন্যায় হয়ে যেতে পারে। একারণে আল্লাহ পাক যদি কোনো নিয়ম মানার বেলায় শিথিলতা দেন, তাহলে আমাদের আল্লাহর পাকের প্রজ্ঞার উপর আস্থা রাখতে হবে।[৬]
চলুন এর পরের আয়াতটি নিয়ে ভাবা যাক—
“রমজান মাস- যে মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে, যা আদ্যোপান্ত হিদায়াত এবং এমন সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী সম্বলিত, যা সঠিক পথ দেখায় এবং সত্য ও মিথ্যার মধ্যে চূড়ান্ত ফায়সালা করে দেয়। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে সে যেন এ সময় অবশ্যই রোযা রাখে। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অসুস্থ হয় বা সফরে থাকে, তবে অন্য সময় সে সমান সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের পক্ষে যা সহজ সেটাই করতে চান, তোমাদের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করতে চান না, যাতে তোমরা রোযার সংখ্যা পূরণ করে নাও এবং আল্লাহ তোমাদের যে পথ দেখিয়েছেন, সেজন্য আল্লাহর তাকবীর পাঠ কর এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।” [আল-বাক্বারাহ ১৮৫]
রমযান মাস যে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের জন্য কতো পালনীয় সেটা বোঝা যায় এই মাসেই কুর’আন নাজিল হওয়ার মাধ্যমে। তাই রমযান মাস হচ্ছে কুর’আন উদযাপনের মাস। এই মাসে কুর’আনের সাথে আমাদের সম্পর্ক যাতে আরও গাঢ় হয় এজন্য এই আয়াতে আল্লাহ পাক কুরআনের বৈশিষ্ট্যের দিকে ফোকাস করে বলেছেন; “...যা আদ্যোপান্ত হিদায়াত এবং এমন সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী সম্বলিত, যা সঠিক পথ দেখায় এবং সত্য ও মিথ্যার মধ্যে চূড়ান্ত ফায়সালা করে দেয়।...” কুর'আনের এই বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী সামনে রেখে আমরা যেন পুরো রমযান মাস কুর'আনকে গভীরভাবে উপলব্ধি করে বাকি ১১ মাস তা জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি, আয়াতটি সেই তার্গেটকেই নির্দেশ করে।
আবার এই আয়াতে আরেকটি চমৎকার বিষয় নিহিত আছে যা আল্লাহ পাক ও আমাদের মধ্যে আন্তরিক ভালোবাসার এক বিশাল ভুবনের দ্বার উন্মোচন করে দেয়। এ আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন;
“... আল্লাহ তোমাদের পক্ষে যা সহজ সেটাই করতে চান, তোমাদের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করতে চান না।”
কতো চমৎকার একটি আয়াত তাইনা! যে আল্লাহ পাক আমাদের সৃষ্টি করেছেন, আমাদের নাড়ীনক্ষত্র আদ্যোপান্ত যাঁর কতৃত্বে, তিঁনি যেমন ইচ্ছে তেমনি ভাবে আমাদের পরিচালনার ক্ষমতা রাখেন, অধিকার রাখেন। এমত দ্বা সত্ত্বেও তিঁনি আমাদের উপর এমন কিছু হুকুম রাখতে চান না, যা বিন্দুমাত্রও জটিলতা সৃষ্টি করে, কষ্টদায়ক হয়ে যায়। বরং সবকিছু সহজ করতে চান!
এটা যে কতোবড় উদারতা এটা বোঝাতে গিয়ে আমি একটি উদাহরণ সামনে নিয়ে আসতে চাই। সেটা হলো —
আরবের জাহেলিয়াত যুগে দাস প্রথা চালু ছিলো। নিয়ম হলো দাস কেনার পর তাকে যা ইচ্ছে, যেভাবে ইচ্ছে গাধার মতো খাটিয়ে নেওয়া যাবে। মালিকের হুকুমকৃত কাজটি করতে গিয়ে জান বের হয়ে গেলেও দাসের কোনো অধিকার নেই মালিকের বিরুদ্ধে কথা বলার। তাকে যা পরতে দেওয়া হয় সেটাই পরিধান করবে, যা খেতে দেওয়া হবে সেটাই তাকে খেতে হবে।
ঠিক এই ব্যপারটাই আল্লাহ এবং আমাদের মধ্যে ভাবুন এবং তার সাথে উপরিউক্ত আয়াতটির কথা চিন্তা করুন। আহ্... কতো চমৎকারই না আমাদের রব! কতোই না ভালোবাসেন তিঁনি আমাদের! আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ!
আমরাই শুধু আমাদের অজ্ঞতার কারণে ভুল বুঝি! যেমন, আমাদের ভেতর অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে, আমরা মনে করি; আমরা আল্লাহর পাকের জন্য যত কষ্ট করবো, তত সওয়াব, এতে প্রাণ চলে যায় যাক! কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও তেমন নয়।
বরং আল্লাহর কখনই চান না আমরা যেন নিজেদেরকে জোর করি, ইচ্ছা করে কষ্ট দেই। তিনি চান আমাদের জীবনটা যেন সহজ, সুন্দর হয়। আমরা যেন দুনিয়ার হাজারো প্রলোভন থেকে নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। তারপর একদিন জান্নাতে গিয়ে চিরজীবন আনন্দে থাকতে পারি। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে অনেকেই ইবাদতের মধ্যে পালনের কাঠিন্যতা দেখিয়ে, হাজারো শর্ত জুড়ে দিয়ে ধর্মকে অনেক কঠিন করে উপস্থাপন করেন। যার ফলাফলে, নতুন প্রজন্ম ইসলাম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
যেমন, আমাদের মাঝে অনেকেই, কোনো ব্যক্তিকে অসুস্থ বা রোযা দিতে অক্ষম দেখেও কঠোর হুমকির সাথে ফতোয়া দিয়ে দেয় যে, ‘রোযা না রাখলে সরাসরি জাহান্নামের লাকড়ি হয়ে জ্বলবি!’ ‘যতো সমস্যাই থাক রোযা দিতেই হবে, দিতে দিতে যদি মরেও যাস, তবুও রোযা ছাড়া যাবে না। নতুবা জাহান্নামের আগুনে চিরস্থায়ী ভাবে জ্বলতে থাকবি!”
অথচ আল্লাহ পাক আমাদের উরপ এমন কোনো হুকুম চাপান নি যার কারণে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যায়! বরং তিঁনি আমাদের উপর এমন ভাবে জীবন-বিধান দিয়ে দিয়েছেন, যেভাবে জীবন পার করলে এই দুনিয়াতেই আমরা হাসিখুশি থাকতে পারব, নিজের জীবন, পরিবারে, সমাজে, দেশে শান্তি নিয়ে আসতে পারব। একই সাথে মৃত্যুর পরে অনন্তকাল পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে অনাবিল, অফুরন্ত শান্তিতে জান্নাত উপভোগ করতে পারব। তিনি আমাদেরকে বলেননি এই দুনিয়াতে নিজেদের উপরে ইচ্ছা করে কষ্ট দিতে। বরং তিনি পৃথিবীতে অসংখ্য হালাল আনন্দের ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন এবং সেগুলো উপভোগ করার নির্দেশ কু’রআনেই দিয়েছেন। যেমন—
“আল্লাহ তোমাদেরকে এই জীবনে যা দিয়েছেন, তা ব্যবহার করে এর পরের জীবনকে পাওয়ার জন্য চেষ্টা করো, কিন্তু সেই সাথে এই দুনিয়াতে তোমার যে প্রাপ্য রয়েছে, সেটা ভুলে যেও না। অন্যের সাথে ভালো কাজ করো, যেভাবে আল্লাহ তোমাকে কল্যাণ দিয়েছেন। এই পৃথিবীতে দুর্নীতি ছড়ানোর চেষ্টা করবে না। দুর্নীতিবাজদের আল্লাহ পছন্দ করেন না!” [আল-কাসাস ২৮:৭৭]
বল, “কে তোমাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট সৌন্দর্য এবং ভালো-পবিত্র খাবার উপভোগ করতে মানা করেছে, যা তিনি তার বান্দাদের জন্যই তৈরি করেছেন?” বলে দাও, “এগুলো তাদেরই জন্য যারা এই দুনিয়াতে বিশ্বাস করে: কিয়ামতের দিন এগুলো শুধুমাত্র তাদেরই হবে।” এভাবেই আমি আমার বাণীকে পরিষ্কার করে দেই বুদ্ধিমান লোকদের জন্য। [আল-আরাফ ৭:৩২]
সূরা বাকারাহ-এর এই আলোচ্য আয়াত তিনটির মূলকথা একটাই; জীবনকে উপভোগ করতে হবে আল্লাহর প্রতি অনুগত থেকে, কৃতজ্ঞ থেকে এবং পাপের ব্যাপারে সবসময় সাবধান থেকে। তাঁকে ভালোবাসতে হবে সকল গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যমে। রোযা শুধু খাওয়া থেকে বেঁচে থাকার নাম নয়, বরং সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার নাম।
সূত্র:
[১] নওমান আলি খানের সূরা আল-বাকারাহ এর উপর লেকচার এবং বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর।
[২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ।
[৩] তাফসীরে তাওযীহুল কু’রআন (প্রথম খন্ড,পৃ:১১৫) — মুফতি মোহাম্মদ তাকী উসমানী দাঃবাঃ
[৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী।
[৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran
[৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran
[৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি।
[৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী।
[৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ।
[১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি
[১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি
[১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ।
[১৩] তাফসির ইবন আব্বাস।
[১৪] তাফসির আল কুরতুবি।
[১৫] তাফসির আল জালালাইন।
[১৬] লুঘাতুল কুরআন — গুলাম আহমেদ পারভেজ।
Collected

কখন কি বলা সুন্নাহ্‌

 

কখন কি বলা সুন্নাহ্‌ ? ১৫ টি কাজের গুরুত্বপূর্ণ ১৫ টি সুন্নাহ (রেফারেন্স সহ) !! এবং সেগুলোর বাংলা অনুবাদ ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা ..
1) ভালো কোন কিছু খাওয়া বা পান করার সময়, কোন কিছু লেখা বা পড়ার সময়, কোন কাজ শুরু করার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে শুরু করে । -(বুখারীঃ ৫৩৭৬)
2) ভালো কিছু খাওয়া বা পান করা শেষে, কোন শুভ সংবাদ শোনা হলে, কেউ কেমন আছো জিজ্ঞেস করলে- তার জবাবে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা । -(ইবনে মাজাহঃ ৩৮০৫)
3) . কারো হাঁচি আসলে ”আলহামদু লিল্লাহী ‘আলা কুল্লী হা-ল” বলা । -(আত তিরমিযীঃ ২৭৪১)
4) কোন হাঁচি দাতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতে শুনলে- ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা। -(বুখারীঃ ৬২২৪)
5) আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ব বা বড়ত্বের কোন কৃতিত্ব দেখলে কিংবা শুনলে ‘আল্লাহু আকবর’ বলা । স্বাভাবিকের মধ্যে কোন ব্যতিক্রম দেখলে কিংবা আশ্চর্য ধরণের কোন কথা শুনলে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা। -(বুখারীঃ ৬২১৮)
6) . ভালো যে কোন কিছু বেশি বা ব্যতিক্রম দেখলে ‘মা-শা আল্লাহ’ বলা। -(মুসলিমঃ ৩৫০৮)
7) . ভবিষ্যতে কোন কিছু করবে বললে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলা । -(আল কাহাফঃ ২৩-২৪)
😎 . কোন বাজে কথা শুনলে কিংবা আল্লাহর আজাব ও গজবের কথা শুনলে বা মনে পড়লে “না’উজু বিল্লাহ” বলা। -(বুখারীঃ ৬৩৬২)
9) . কোন বিপদের কথা শুনলে কিংবা কোন খারাপ বা অশুভ সংবাদ শুনলে, কোন কিছু হারিয়ে গেলে, কোন কিছু চুরি হয়ে গেলে, কোন কষ্ট পেলে ‘ইন্না লিল্লাহ’ বলা। –(মুসলিমঃ ২১২৬)
10) . কথা প্রসঙ্গে কোন গুনাহর কথা বলে ফেললে, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলা । -(সূরা মুহাম্মদঃ ১৯)
11) . উপরে উঠার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা এবং নিচে নামার সময় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা। -(বুখারীঃ ২৯৯৩)
12) . নিশ্চিতভাবে না জেনে কোন বিষয়ে কিছু বললে, কথা শেষে ‘ওয়াল্লাহু আলুম’ বলা। -(বুখারীঃ ৫৫৭০)
13) কেউ কিছু দিলে কিংবা কারো মাধ্যমে কোন কাজ হলে তার বদলে ‘জাযাকাল্লাহু খাইরান’ বলা। -(বুখারীঃ ৩৩৬)
14) কোন কিছু জবেহ করার সময় ‘বিসমিল্লাহী ওয়া আল্লাহু আকবর’ বলা। -(মুসলিমঃ ৫০৮৮)
15) . কোন বিজয় লাভ করলে কিংবা বিজয় লাভের আশায় শ্লোগান দিলে ‘আল্লাহু আকবর’ বলা । -(বুখারীঃ ৬১০)
==========০০০=========
কোন সময় কি বলতে হবে এবং সেগুলোর বাংলা অনুবাদ ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা ..
✔ আল হামদুলিল্লাহ:-আল হামদুলিল্লাহ শব্দের অর্থ, সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। যে কোন সুখবর বা ভালো অবস্থা সম্পর্কিত সংবাদের বিপরীতে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন ভাই আপনি কেমন আছেন? জবাবে বলা উচিত, আল হামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
✔ ইনশাআল্লাহ: - ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ, মহান আল্লাহ যদি চান তাহলে। ভবিষ্যতের হবে, করবো বা ঘটবে এমন কোন বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা সুন্নত। যেমন ইনশাআল্লাহ আমি আগামী কাল আপনার কাজটি করে দিবো। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন।
✔ মাশা আল্লাহ:
মাশা আল্লাহ শব্দের অর্থ, আল্লাহ যেমন চেয়েছেন। এটি আল হামদুলিল্লাহ শব্দের মতোই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে কোনও সুন্দর এবং ভালো ব্যাপারে এটি বলা হয়। যেমন, মাশা আল্লাহ তুমি তো অনেক বড় হয়ে গেছো।
✔ সুবহানাল্লাহ:
সুবহানাল্লাহ শব্দের অর্থ আল্লাহ পবিত্র ও সুমহান। আশ্চর্য জনক ভালো কোন কাজ হতে দেখলে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন সুবহানাল্লাহ! আগুনে পুরো ঘর পুরে গেলেও কুরআন শরীফ অক্ষত আছে।
✔নাউযুবিল্লাহ:
নাউযুবিল্লাহ শব্দের অর্থ, আমরা মহান আল্লাহর কাছে এ থেকে আশ্রয় চাই। যে কোনও মন্দ ও গুনাহের কাজ দেখলে তার থেকে নিজেকে আত্ম-রক্ষার্থে এটি বলা হয়ে থাকে।
✔ আসতাগফিরুল্লাহ:
আসতাগফিরুল্লাহ শব্দের অর্থ আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। অনাকাঙ্ক্ষিত কোন অন্যায় বা গুনাহ হয়ে গেলে আমরা এটি বলবো।
✔ ইন্নালিল্লাহ বা ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রা-জিউন:
অর্থ, নিশ্চয়ই আমরা মহান আল্লাহর জন্য এবং আমরা তার দিকেই ফিরে যাবো। যে কোনও দু:সংবাদ বা বিপদের সময় আমরা এটি বলবো।
✔লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ: অর্থ; মহান আল্লাহর সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া আর কোন আশ্রয় ও সাহায্য নেই। শয়তানের কোন ওয়াসওয়াসা বা দুরভিসন্ধিমূলক কোন প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য এটি পড়া উচিত।
✔ কারো সাথে দেখা হলে- হাই, হ্যালো না বলে বলুন- আস সালামু আলাইকুম (আপনার উপর মহান আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক)
✔ কেউ আপনার কোন উপকার করলে- তাকে থ্যাংক ইউ না বলে বলুন- জাযাকাল্লাহ খায়রান (মহান আল্লাহ আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুন)
✔ কারো কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময়- টা টা না বলে বলুন- আল্লাহ হাফেজ (মহান আল্লাহ সর্বোত্তম হিফাজতকারী) অথবা ফি আমানিল্লাহ।
 
No photo description available.

কুরআনের অলৌকিক ভাষাশৈলী

কুরআনের অলৌকিক ভাষাশৈলী 

 May be an image of one or more people and text

আয়াতুল কুরসী আয়াতটিকে মোট নয়টি বাক্যে ভাগ করা যায়। এই নয়টি বাক্যের মধ্যে চমৎকার একটি রিং স্ট্রাকচার লক্ষ্য করা যায়।
আয়াতুল কুরসীর প্রথম বাক্যটি খেয়াল করুন,
ٱللَّهُ لَآ إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلْحَىُّ ٱلْقَيُّومُ
"আল্লাহ! তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও সবকিছুর ধারক।"
এই বাক্যে আল্লাহর দুটো গুণবাচক নাম এসেছে। اَلۡحَیُّ এবং الۡقَیُّوۡمُ.
এবার আসুন শেষ বাক্য (৯ম) দেখি।
وَهُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْعَظِيمُ
"এবং তিনি সুউচ্চ, সুমহান।"
এখানেও তাঁর দুটো গুণবাচক নাম উল্লেখ আছে। ٱلْعَلِىُّ এবং ٱلْعَظِيمُ.
অর্থাৎ, ১ম এবং শেষ বাক্যের চমৎকার মিল!
এবার আসি ২য় বাক্যে..
لَا تَأْخُذُهُۥ سِنَةٌۭ وَلَا نَوْمٌۭ
"তন্দ্রা ও নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করেনা।"
তন্দ্রা ও নিদ্রা আসে সাধারণত ক্লান্তি থেকে। কেউ একটানা একটা একঘেয়ে কাজ করতে থাকলেও তন্দ্রা চলে আসে। কিন্তু, আল্লাহ এসব থেকে মুক্ত।
৮ম বাক্যে বলা হচ্ছে,
وَلَا يَـُٔودُهُۥ حِفْظُهُمَا
"আর এ দুটোর (আকাশ ও পৃথিবী) রক্ষণাবেক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না।"
রক্ষণাবেক্ষণ বা দেখাশোনা করা একটা ক্লান্তিকর কাজ তাই না? ধরুন, একজন লোক সিসিটিভির সামনে বসে থাকে। তার কাজ সিকিউরিটির বিষয়াদি দেখাশোনা করা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সে তাকিয়ে থাকে সিসিটিভির দিকে। এই কাজটা যথেষ্ট একঘেয়ে। আর একঘেয়ে কাজ ক্লান্তিকর।
আর ক্লান্তির সাথে সম্পর্কিত কী? তন্দ্রা ও নিদ্রা! যেটা বলা হয়েছে ২য় বাক্যে! অর্থাৎ, এই দুটো আয়াত মিলে বলা হয়েছে আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর রক্ষণাবেক্ষণ করেন, এতে তিনি বিন্দুমাত্রও ক্লান্ত বোধ করেন না, তাঁর তন্দ্রা-নিদ্রাও আসে না৷
এবার আসি ৩য় বাক্যে..
لَّهُۥ مَا فِى ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَمَا فِى ٱلْأَرْضِ
"আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তাঁর।"
এখানে কী বোঝানো হচ্ছে? এখানে বোঝানো হচ্ছে আসমান ও জমিনের সবকিছুর মালিক আল্লাহ। এই সবকিছু হচ্ছে তাঁর property.
আরবিতে মালিক শব্দটি দুটি অর্থ বহন করে। একটি হচ্ছে مَالِك যার অর্থ owner বা স্বত্বাধিকারী। আর অন্যটি হচ্ছে مَلِك যার অর্থ king বা রাজা।
এখন আল্লাহ আমাদের কোন মালিক? স্বত্বাধিকারী নাকি রাজা? উত্তর হচ্ছে দুটোই। তিনি বিশ্বজাহানের সবকিছুর স্বত্বাধিকারী (مَالِك) আবার সবার ওপর কতৃত্ববান (مَلِك)।
৩য় বাক্যটিতে তো শুধু স্বত্বাধিকারী বোঝাচ্ছে, তাহলে রাজা হওয়ার উল্লেখ কোথায় পাবো?
৭ম বাক্যেই পাচ্ছেন..
وَسِعَ كُرْسِيُّهُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ
"তাঁর ‘কুরসী’ আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে।"
কুরসী কার থাকে? এক্সাকলি! রাজাদের থাকে। আল্লাহ তো বিশ্বজাহানের রাজা, সবার ওপর কতৃত্ববান (مَلِك)।
এবার আসি ৪র্থ বাক্যে..
مَن ذَا ٱلَّذِى يَشْفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذْنِهِ
"কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে।"
এখানে দেখুন, একটা জেনারেল স্টেটমেন্ট- "হাশরের মাঠে কেউ সুপারিশ করতে পারবে না" with an exception "তিনি অনুমতি দিলে পারবে"।
একই ব্যাপার ঘটেছে ৬নং বাক্যেও..
وَلَا يُحِيطُونَ بِشَىْءٍۢ مِّنْ عِلْمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَ
"একমাত্র তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত, তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা আয়ত্ত করতে পারেনা।"
এখানেও একটা জেনারেল স্টেটমেন্ট- "তাঁর জ্ঞানের কিছুই তারা কেউ আয়ত্ত করতে পারেনা" with an exception "তিনি ইচ্ছা করলে পারে এবং যতটুকু ইচ্ছা করেন, ততটুকু পারে"।
এই দুটো বাক্যে আল্লাহ বেশ কিছু বিভ্রান্ত আকীদাকে ধূলিসাৎ করেছেন।
এক. যারা ভাবে পির আউলিয়া মাত্রই শাফায়াত করতে পারবে। (আল্লাহ অনুমতি না দিলে কেউই পারবে না, আল্লাহ বলছেন)
দুই. যারা ভাবে গায়েবের ইলম আল্লাহ ব্যতীত কারো আছে। যেমন- পীর আউলিয়া ইত্যাদি। (আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন গায়েবের ইলম দেন, যেমন রাসূলকে (স) তিনি বেশ কিছু বিষয় জানিয়েছিলেন। তাঁর ভবিষ্যৎবাণীগুলো পড়লে আমরা বুঝতে পারি। কিন্তু, আল্লাহ না জানালে তিনি জানতে পারতেন না।)
চমৎকার বিন্যাস না?
১---৯
২---৮
৩---৭
৪---৬
এভাবে সামনের আর পেছনের বাক্যের চমৎকার সামঞ্জস্য!
চমক কিন্তু এখনো বাকি আছে। আর এটা বোধহয় সবচেয়ে বড় চমক। একেবারে মাঝের বাক্যটি লক্ষ্য করুন..
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ
"তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন।"
এই বাক্যটির শিক্ষণীয় অর্থটি হচ্ছে আল্লাহ আদ্যোপান্ত জানেন। কিন্তু, আরেকটি চমৎকার বিষয় লক্ষ্য করুন! এটি একেবারে মাঝের বাক্য। এর সামনের এবং পেছনের প্রত্যেকটি আয়াত একে অপরের সাথে মিলসম্পন্ন। এবং, আল্লাহ বলছেন, তিনি জানেন সামনে ও পেছনে কী আছে!
এটা কি কো-ইনসিডেন্স? নাকি আল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছেন আয়াতুল কুরসীর এই লুকিয়ে থাকা সৌন্দর্য্যটি বের করার? সুবহান-আল্লাহ!
এবং, আল্লাহই অধিক অবগত।
...
কুরআনের অলৌকিক ভাষাশৈলী
মূলঃ উস্তাদ নোমান আলী খান
অনুবাদঃ আসিফ মাহমুদ
পর্বঃ ৪
[বিঃদ্রঃ রিং স্ট্রাকচার বোঝার জন্য কমেন্টে একটি ছবি সংযুক্ত করা হলো। ]

12 Ways To Improve Social Skills And Make You Sociable Anytime

 

12 Ways To Improve Social Skills And Make You Sociable Anytime

If you feel like you’re the awkward person at social events or you struggle to enter into conversations because you’re shy, it can impact your social life and your career.

However, you can start improving your social skills by following these 12 strategies and soon, you’ll be able to enter into conversations with confidence.

1. Behave Like a Social Person

You can behave like a more social creature, even if you don’t feel like it.

Don’t allow anxiety to hold you back. Make the decision to talk to new people and to enter into conversations even when you’re feeling nervous about it.

Over time, it will get easier and you’ll quickly start improving your social skills.

2. Start Small if Necessary

If going to a party or spending time in a crowd seems overwhelming, start small.

Go into the grocery store and say, “Thank you,” to the clerk or go to a restaurant and order your food. Practice making small talk gradually.

3. Ask Open-Ended Questions

If you want the attention off you in a conversation, get familiar with open-ended questions. Encourage others to talk so you won’t have to make the idle chit-chat.

Ask questions that require more than a yes or no answer and you may open the door to invite the other person to keep the conversation going.

4. Encourage Others to Talk About Themselves

Most people really enjoy talking about themselves. Ask a question about a person’s career, hobbies, or family. Show you’re interested in hearing what is being said.

If you want to keep the conversation going, you should make it like playing ping pong.

5. Create Goals For Yourself

Establish some small goals for yourself. Perhaps you want to practice one particular skill or maybe you want to start attending a social activity in your community.

Establish a goal and begin to work on strategies that will improve your social life.

Even better, learn to use SMART Goal to help you communicate better.

6. Offer Compliments Generously

Compliments can be a great way to open the door to a conversation. Offer a co-worker a compliment on a presentation he gave at a meeting or compliment your neighbor on his new car.

Compliments can show others that you are friendly and there’re more reasons Why You Should Pay a Compliment to Someone Every Day.

7. Read Books About Social Skills

There are many books on the market that can help you learn specific social skills and ways to start conversations.

However, keep in mind that reading about these skills won’t make you an expert. You’ll need to practice them over and over again.

8. Practice Good Manners

Good manners go a long way in improving social skills. Practice being polite, showing gratitude, and using good table manners.

9. Pay Attention to Your Body Language

Non-verbal communication is very important. Pay attention to the type of body language you use.

Try to appear relaxed, make appropriate amounts of eye contact, and appear open to conversation.

10. Join a Social Skills Support Group

Many communities offer social skill support groups. Support groups help people who feel shy, awkward, or extremely anxious in social situations learn and practice new skills.

You’ll start improving social skills and may be able to make new friends who understand your difficulties.

11. Stay Up to Date on Current Events

Read up on current trends and news stories so you have something to talk about with people.

Try to avoid anything that is too controversial, such as politics, but do talk about other news stories that may be of interest.

It can be a great way to start a conversation and can help you stick to neutral subjects.

12. Identify and Replace Negative Thoughts

If you have a lot of negative thoughts about your social interactions, it could become a self-fulfilling prophecy.

For example, a person who thinks, “I’m really awkward and I will embarrass myself,” may sit in the corner at a party. As a result, he may leave the party thinking that he must be really awkward because no one talked to him.

Identify negative thoughts that are likely dragging you down. Replace them with more realistic thoughts such as, “I can make conversation and I can meet new people.”

Good social skills are essential for effective communication. If you find socializing with others a challenge, start to take on my suggestions and practice each of them consistently.

Great social skills don’t come easily, you need to practice yourself and really try these tips by talking with others.

6 Tips To Improve Social Skills

 

6 Tips To Improve Social Skills

Having a great network – the set of relationships you build over time, both personally and professionally – is important to your success in so many ways.

Your network helps you deliver better results, surge ahead in your career or rebound when things are tough. It also helps you learn, grow and have more fun in your life.

However, your network is not something you can buy. The only way to have a great network is to build it. And the number one key to building relationships is having strong social skills.

It doesn’t matter how smart you are. If you don’t have good social skills, you will top out before you are meant to.

Maybe you’re already seeing others less capable than you getting promoted while you aren’t. Or being invited to sit at the equivalent of the “cool kids’ table” at company dinners while you’re at the back.

Worse yet, if you lack social skills, you’ll leave some great living on the table – the happy and fun parts.

The good news is that even if you’re an introvert or lack the social ease and grace of your colleagues, you can become good at this. You don’t need to settle for “average” either on the job or at home.

I recently came across an inspiring piece on how to do just that.

In The Ultimate Guide to Social Skills, Ramit explores five aspects of developing social skills, and provides specific tools and techniques for mastering each. These include:

  • How to be interesting
  • How to make small talk
  • Overcoming shyness
  • How to master group conversations
  • How to be more likeable

When you have a chance, I recommend taking a look. It’s easy to read and includes videos full of useful tips and tools from Ramit and others.

6 Tips To Improve Your Social Skills

In the meantime, and in case you’re short on time, here are the takeaways that resonated most with me and how they apply in a business setting.

1. It’s how you make them feel

The fundamental insight Ramit starts with is that beyond how you look, what people notice first and foremost is how you make them feel in the first few seconds of meeting you.

Think about it: don’t you get an instant feeling about people you’re introduced to, whether good or bad? For me, it’s a combination of the vibe they give off and how they present themselves.

I've learned that people will forget what you said, people will forget what you did, but people will never forget how you made them feel.”
Maya Angelou

In a business setting, it’s absolutely crucial to get this right.

Are you behaving in a way that allows them to feel you are trustworthy and appropriately confident? Are your body language and eye contact demonstrating your interest? Do you show that you’re attuned to them and not just in it for your self?

As they say, you only get one chance to make a good first impression. For better or worse, the impression you leave is based largely on your social skills.

The example Ramit gives is about someone losing a seven-figure business deal because of his cockiness and coming across as someone who would not be a team player. Ouch. Worst of all, the individual probably had no idea that his social skills were the reason, so he won’t have a chance to change.

2. Get in early if you’re shy

Especially if you’re shy, Ramit recommends making a commitment to do the following within 60 seconds of entering the room: go up to someone and introduce yourself. That way, you will have burst the shy bubble before you have a chance to get nervous.

This works in meetings too. When I was in mid-career, I was afraid to make a comment in case I sounded dumb. So I would wait and plan out what to say, and try to work up the courage to say it out loud. I’d argue with myself: was this a good point to make, and a good time to make it?

By the time I was finally ready, someone else would make the same point and I would spend the rest of the meeting beating myself up about missing my chance to speak.

That’s when I finally figured out that I needed to hear my voice in the meeting early, even if it was just saying hello. That made it easier to participate later on.

What I would add to this is so many of us focus on how nervous we are, and what other people are thinking of us, and being fearful of sounding dumb. The truth is that many of them are thinking the same thing about themselves. And others are mentally far away, worrying about something completely unrelated to you.

The best thing you can do is to just get over it and press on.

3. Take the lead

Ramit talks about being proactive in social situations, and how this increases your social value, especially when you’re in a group setting.

This doesn’t mean dominating the conversation. Instead, it’s about being prepared (brainstorming a list of potential topics before the event, planning the type of impression you want to leave), and engaging everyone in the conversation once you’re there.

In a business meeting, that type of facilitation and getting others involved in the conversation is hugely valuable. You get to direct the conversation and help include a diverse set of viewpoints, all of which can lead to better decisions and more effective meetings.

4. Small talk is important

This one was a revelation for me. Yes, I’m that nightmare person who just wants to get to the point and not “waste time” with “idle chit chat”. After reading Ramit’s piece, I see the error of my ways.

Ramit points out that you don’t build a relationship by just getting down to the facts. There’s a dance, a game, a whole process that’s important before getting down to business.

Just like going to a restaurant, you don’t want to just get the food the moment you walk in the door, eat it and go. It’s a dining experience with a set of rituals that makes it enjoyable, worthwhile and something you’ll want to do again.

This is highly relevant with clients and colleagues as well. It allows you to be seen as a complete person rather than someone who is boring, stiff and robotic. Showing your personality and being able to develop relationships is a great differentiator that helps you advance.

5. Get feedback

Ramit then goes on to point out the importance of getting feedback on how you’re coming across. His point is when you’re bad at social skills, people won’t just come out and tell you – frankly, people don’t even tell you when you’ve got spinach in your teeth!

I couldn’t agree more. With my coaching clients, we talk about uncovering blind spots and how one of the best ways is to get input from others. And as painful as it may seem to learn how others see you, it’s in your own interest to find out… as soon as possible. Even if you aren’t aware of it, everyone else is. And knowing is the first step to changing.

If you’re interested in hearing more on this, I recommend Ramit’s interview with Pam Slim (author of Escape from Cubicle Nation) in module 1.

6. Learn to wrap up

Part of having great social skills is knowing how to enter a conversation with ease and grace. But having gotten into that conversation, you don’t want to “get stuck” there. As in talking to the same person at the conference or cocktail party for 40 minutes. You also need to know how to wrap things up in an elegant way.

Getting stuck happens to me quite a bit. I’m genuinely interested in people and can talk to them for a long time without getting bored. Plus I don’t want to offend anyone. That’s where Ramit’s simple strategy is so helpful.

When the conversation has come to a natural end, or you’ve reached your attention span limit, all you have to say is, “It was a pleasure meeting you. Thanks for chatting.” Then walk away. It’s all about your demeanor while you’re giving that simple two-liner. You can smile, but you have to disengage and start moving away.

Putting Social Skills Into Practice

Some additional insights into the importance of social skills came up last weekend while I was attending Jeff Walker’s PLF Live event for entrepreneurs who want to make a difference by getting their message and services out into the world. It was a great place to practice the social skills Ramit talked about.

It’s not just about the content

As Jeff kicked off the three-day conference with 1,200 people, he explained that as great as his content is, it’s only part of the value for participants. Relationships are built, and business gets done outside the meeting room – in informal settings like the bar, the hallway, the restaurant.

He urged us to resist checking emails and making phone calls during breaks, and instead focus on meeting people. I’m thankful I listened (and obeyed!) because I met some terrific future business partners.

Be cool

Jeff also talked about what kind of conduct was “not cool” in terms of building relationships. There was to be no pushing and shoving to get into the room to get a good seat – you never know who could make or break your next business opportunity. We were to come from a mindset of openness and abundance when we talked to each other. We were to be supportive and help each other.

Dare to share

In addition to his instructions on how to “be cool” at the conference, the way he set up the sessions also encouraged us to share our ideas. He integrated small group conversations into each session where we had to find 2-3 other people and share our answers to questions he posed. Even our introverts were right in the mix sharing their points.

Continue Improving Your Social Skills

So, when you attend events, take advantage of the opportunity to build new relationships. Stay present and disconnect from the rest of your world for that limited time.

And as you build your network – that crucial set of mutually supportive relationships that travels with you no matter where you are – keep in mind the role that social skills play.

Whatever you do, keep practicing your social skills. They are truly differentiators, especially as you become more senior and people look to you for more than “just” your technical expertise.

Even the best of us can continue to improve our social skills.

1. Become a student of social skills: identify a few people who you think are great at it, and observe what they do in a variety of settings that works well for them. Analyze why it works for them and consider which approaches and techniques are worth experimenting with for you. You can do the same for people who are not so good at it and learn from them too.

2. Practice, practice, practice: Take those approaches or techniques you like from #1 and experiment with them, starting in low risk situations (like at a college campus recruiting event or a distant cousin’s wedding, etc.).

3. Give yourself permission to be “bad” at it the first few times as you practice, and reward yourself for putting yourself out there and practicing. Look for what you did well, and focus on that. Cut yourself some slack – it will feel more natural as you have more “at bats”.

4. Arrange to get feedback from a friend you trust who can watch you in action. Often what we are our own harshest critics – it’s hard to see ourselves accurately.

5. Related to #4, use the buddy system: another thing I’ve found really handy is to go to big networking events with someone else. It’s so much easier to break into a group conversation when there are two of you than when you’re solo.

6. Take it in bite-sized chunks (as in, set a modest goal such as meeting 2-3 people per event or finding something in common with 2-3 people), but do keep practicing. And have some fun with it!

Hope that helps. Happy socializing!