বদনজর মানুষকে ঠিক কতখানি আক্রান্ত করতে পারে, তার জন্য একটি ঘটনা বর্ণনা করা যাক। সত্য ঘটনা, নববী যুগের ঘটনা।
|
সাহল
বিইন হুনাইফ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। অত্যন্ত সুদর্শন একজন সাহাবী। একদিন
তিনি গোসলের জন্য শরীর থেকে কাপড় খুলেছিলেন। সে সময় আমির বিন রাবিয়া
রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। সাহল রাদ্বিয়াল্লাহু ছিলেন
সুঠামদেহী, সুশ্রী গড়নের যুবক। তাঁর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে আমির
রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু প্রশংসাসূচক কিছু কথা বলেন। এরপরই সাহল রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
কাছে এই খবর পৌঁছালে তিনি জানতে চাইলেন সাহাবীরা এই ব্যাপারে কারো নজর
লাগার সন্দেহ করছেন কিনা। তাঁরা তখন আমির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কথা বললেন।
তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ধমকালেন এবং বললেন, “যদি
কোনো জিনিস ভালো লাগে, তবে সে জিনিসের বরকতের দুআ করবে।” তারপর নজরের
চিকিৎসা হিসেবে আমির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ওযু করলেন এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ
ধুয়ে নিলেন। তাঁর সেই পানি একটি পাত্রে সংরক্ষণ করে সাহল রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহুর গায়ে ঢেলে দেওয়া হলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন।
|
প্রিয়
পাঠক! ঘটনাটির দিকে খেয়াল করুন। উভয়েই সাহাবী এবং সাহাবীরা একে অন্যের
ব্যাপারে হিংসা পোষণ করবেন কিংবা মন্দ চাইবেন, এটা কল্পনাতীত। আর এখানে তো
বলাই আছে যে আমির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু প্রশংসার সুরে কিছু কথা বলেছিলেন এবং
সেই দৃষ্টিতেই তাকিয়েছিলেন। যেমনটা আমরা কোনো সুঠামদেহীকে দেখলে তাকাই এবং
বলি যে বাহ, কি চমৎকার গঠন তার! তিনিও তেমনটাই কিছু বলেছিলেন। অতএব এখানে
হিংসা বা নেতিবাচক কিছুই ছিল না। তার উপর তিনি ছিলেন বদরী সাহাবী। কিন্তু
তবুও প্রশংসাসূচক বাক্যের সাথে আল্লাহর নাম যুক্ত না থাকায় তাঁর মতো মহান
ব্যক্তির পক্ষ থেকেও নজর লাগার মতো ঘটনা সংঘটিত হয়ে গেছে। এবং ফলাফলটাও ছিল
গুরুতর। সাহল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর মতো শক্তসমর্থ মানুষ, মাত্রই যাঁর
দেহসৌষ্ঠবের প্রশংসা করেছেন আরেকজন সাহাবী, তিনি সাথে সাথে ধরাশায়ী হয়ে
যান। রীতিমতো অসুস্থ হয়ে যান তিনি।
|
এরকম
ঘটনা আশেপাশে অহরহ। জরুরি নয় সব ঘটনাই নজরের ফলে হয়। কিন্তু নজরের খারাপ
প্রভাব সত্য এবং এই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকাটা খুব জরুরি।
|
|