Tuesday, July 27, 2021

কুরআন নিয়ে কথা

 

এক লোক প্রচুর কুরআন পড়ত। কুরআন নিয়েই ডুবে থাকতে ভালবাসত। কিন্তু কেন যেন কুরআনের কিছুই সে মুখস্থ রাখতে পারত না। একদিন লোকটির ছোট ছেলে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলল, 'বাবা, আপনি যে এত কুরআন পড়েন, কিছুই তো মনে রাখতে পারেন না। এতে কী লাভ হচ্ছে?'
.
— তোমার এই প্রশ্নের উত্তরটা দিবো। তার আগে এক কাজ করো, তুমি এই বেতের ঝুড়িটা সমুদ্র তীরে নিয়ে যাও এবং পানি ভরে নিয়ে আসো।
— এটা তো বেতের তৈরি, পানি কীভাবে ধরবে?
— আহা, চেষ্টা করে দেখো না!
.
সাধারণত কয়লা আনা-নেওয়ার কাজে তারা এই ঝুড়ি ব্যবহার করে। তবুও বাবার কথায় ছেলেটি ঝুড়ি নিয়ে তীরে গেল এবং পানি ভরল। কিন্তু বাড়ি ফিরে আসতে আসতে সব পানি পথেই শেষ। পড়তে পড়তে একদম খালি হয়ে গেছে।
.
'দেখলেন? কোনো লাভ হলো? পানি একটুও বাঁচেনি।' ছেলে আফসোস নিয়ে বলল।
লোকটি আশ্বাস দিলো, 'চেষ্টা চালিয়ে যাও সোনা। আরও কয়েকবার চেষ্টা করো।'
.
এভাবে দুইবার, তিনবার, চারবার, সবশেষে পাঁচবার পর্যন্ত চেষ্টা করল ছেলেটি। কিন্তু এক মুঠো পানিও আনতে পারল না। অবশেষে হাল ছেড়ে দিয়ে বাবাকে বলল, 'এই ঝুড়ি দিয়ে আমার পক্ষে পানি আনা অসম্ভব।'
.
এবার লোকটি শান্ত গলায় বলল, 'আচ্ছা, তবে তুমি কি ঝুড়িটার ভিতরের দিকে খেয়াল করেছ? ভিতরের অবস্থার কোনো পরিবর্তন দেখেছ?'
— হ্যাঁ, এটা পানি ধরে রাখতে না পারলেও বার বার পানি ভরার কারণে কয়লার ময়লাগুলো সাফ হয়ে গেছে। ভিতরটা বেশ পরিষ্কার দেখাচ্ছে এখন।
— ঠিক ধরেছ। এবার বলি, কুরআনও ঠিক এই কাজটাই করে তোমার অন্তরের ভিতরে। দুনিয়ার পেছনে ছুটতে ছুটতে তোমার অন্তর যখন কলুষিত হয়ে পড়ে, তখন কুরআন সমুদ্রের পানির মতোই তোমাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দেয়। অন্তরে মুখস্থ রাখতে না পারলেও সে তোমাকে পবিত্র করে দেয়।
বাবারে, একটা কথা মনে রেখো, কুরআনের প্রথম অবতীর্ণ আয়াত 'পড়ো', 'মুখস্থ করো' না। কাজেই মুখস্থ করতে না পারার কারণে শয়তান যেন তোমাকে ধোঁকায় না ফেলে, কুরআন পড়া থেকে দূরে সরিয়ে দিতে না পারে।
.
ড. আলী মুহাম্মাদ আস-সাল্লাবী (হাফি.)-এর পেইজ থেকে অনূদিত।
অনুবাদ: ওয়াফিলাইফ
.

মেয়েদের পর্দা

 

- মেয়েদের পর্দা -
হিজাব, নিকাব, হাত মোজা, পা মোজা পড়া হয়? - আলহামদুলিল্লাহ, বাহিরে সর্বদা এসব পড়া হয়।
মডারেট?
- না, আলহামদুলিল্লাহ, পরিপূর্ণ প্র্যাকটিসিং।
কখনো হিজাব পড়া ছবি ফেসবুক বা সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়?
- না, কখনোই না, আলহামদুলিল্লাহ।
নন-মাহরাম মেইনটেইন করা হয়?
- জ্বি আলহামদুলিল্লাহ, সর্বাত্মকভাবে মেইনটেইন করা হয়।
সবই আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
কিন্তু কিন্তু...
ফেসবুকে ছবি পোস্ট করা পর্দার লঙ্ঘন বিধায় আপলোড করেন না কিন্তু আপনার মেয়ে বান্ধবী আপনার মাহরাম বিধায় তার সাথে সেলফি তুলেন যা হয়তো আপনার বান্ধবীর ফোনে থেকে যায়। কিংবা আপনার সাথে আপনার বান্ধবীর গ্রুপ ছবি আপনার বান্ধবীকে ইনবক্সে সেন্ড করেন।
আপনি হয়তো ভাবছেন আমার বান্ধবির ফোনেই তো ছবি স্টোর করা আছে কিংবা আমার বান্ধবির ইনবক্সেই তো পাঠিয়েছি, মেয়ে তো, দোষ কিসের।
আপনার বান্ধবি মেয়ে, তার সাথে আপনার পর্দা করতে হবে না ঠিকই, কিন্তু আপনার বান্ধবির ফোন যে তার স্বামী, ভাই, বাবা, চাচা, মামা কিংবা অন্য কোনো পুরুষ যে ধরবে না এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। আপনার বান্ধবীর ফোন তার মাহরাম পুরুষরা তো ধরতেই পারে কিংবা ইনবক্সেও অ্যাক্সেস থাকতে পারে, অথচ ঐসকল পুরুষ আপনার জন্য নন-মাহরাম। অর্থাৎ আপনার পর্দার লঙ্ঘন হতেই পারে। সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আপনি হয়তো ভাবছেন আপনি যেসকল বান্ধবীর ফোনো ছবি তুলছেন কিংবা যেসকল বান্ধবির ইনবক্সে ছবি পাঠিয়েছেন, তারা সকলেই পরিপূর্ণ পর্দানশীল, পরিপূর্ণ ইসলাম প্র্যাকটিসিং, আপনার পর্দা লঙ্ঘনের সুযোগ নেই।
সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আপনার বান্ধবী ঠিকই পরিপূর্ণ প্র্যাকটিসিং এবং আপনার পর্দার হেফাজতে সর্বদা সতর্ক। কিন্তু হয়ত তার স্বামী/ভাই/বাবা/চাচা/মামা সহ কোনো না মাহরাম ইসলামিক মাইন্ডেড নয়, তারা হয়ত আপনার তোলা ছবি বা আপনার সেন্ড করা ছবি দেখে ফেলল। স্পষ্ট পর্দার লঙ্ঘন হবে।
একজন মেয়ের সকল মাহরাম যে ইসলামিক মাইন্ডেড হবে এবং ঐসকল মাহরাম পুরুষরা যে ঐ মেয়ের ফোন/ফেসবুক আইডি অ্যাক্সেস পাবে না, এরকম নিশ্চয়তা দেওয়ার সুযোগ নেই।
আর সকল নন-মাহরাম পুরুষরাও ইসলামিক মাইন্ডেড হলেই যে পরিপূর্ণ দ্বীনদার হবে, পরিপূর্ণ প্র্যাকটিসিং হবে, এর নিশ্চয়তাও দেওয়া সম্ভব না। আর পরিপূর্ণ প্র্যাকটিসিং না হলে আপনার পর্দার হেফাজত হবে - এমনটা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।
ছবি সেন্ড করার বাইরে আপনার বান্ধবির কাছে "সেনসেটিভ" ম্যাসেজ সেন্ড করাটার ক্ষেত্রেও একই বিষয় ঘটতে পারে।
ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের ক্ষেত্রে এসব এড়াতে "আনসেন্ড" করার সুযোগ রয়েছে। আনসেন্ড অপশনটি ব্যবহার করে ম্যাসেজের বিষয়টি থেকে পর্দার লঙ্ঘন কিছুটা ঠেকানো সম্ভব, ইন শা আল্লাহ।
কিন্তু ছবি স্টোর করে রাখার ক্ষেত্রে কখনওই ১০০% রিস্ক ফ্রি নয়। অতএব, বিষয়টি অনেকেরই হয়ত মাথায় থাকে নি, বা মাথায় আসেনি। তাকওয়ার পরিচায়ক হবে এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে তা বাস্তবায়ন করা।
লেখাঃ মুহাম্মদ রাহাত

হিজাব নিয়ে কথা

 হিজাব নিয়ে কথা

হিজাব বা পর্দা করার অন্যতম শর্ত হল 'বডি হাগিং' বা টাইট কিছু না পরা, যেটাতে শরীরের শেপ বুঝা যাবে। পায়ের শেপ এর মাঝে ইনক্লুসিভ। তাই উপরে ঢোলা টপ্স আর নিচে চাপা জিন্স পরে পর্দার কন্ডিশন ফুলফিল হয় না। দেশবিশেষে এটা 'ভ্যারি' করবে না। বাংলাদেশেও যে নিয়ম, ক্যানাডাতেও তাই, উজবেকিস্তানেও। সাইজ ৮ আপনার আইডিয়াল মাপ হলে ১১ বা ১২ পরলে খুব অসুবিধা হবার কথা না। মুসলিম দেশে হিজাব করা লাগবে আর অমুসলিম দেশে সব মাফ, এটা খুব অদ্ভুত ধারণা। উৎপত্তি কার উর্বর মাথা থেকে হয়েছে ইবলিশ বলতে পারবে since he helped out.
.
হিজাব সবার জন্য ফরজ, শুধু হুজুরনীদের জন্য না। যে পরিবারের ছেলে সদস্যরা তাদের রেসপন্সিবিলিটির আন্ডারে থাকা মেয়ে/মহিলাদের এ বিষয়ে সাবধান করে না, শিক্ষা দেয় না, তাকে দাইয়ুস বলে। উনার স্থান জাহান্নামে।
.
হিজাব মানে শুধু মাথায় কাপড় দেয়া না। এটা মডেস্টি, হায়া। হিজাব একটা এটিচ্যুড, লাইফস্টাইল। চাপা জিন্স ফতুয়া পরতে সমস্যা নেই, উপরে এমন ভাবে কিছু দিয়ে ঢেকে ফেলতে হবে যেন এসব বডি হাগিং ক্লোথ কারো নজরে না পড়ে। এনি আউটার লেয়ার। নিতান্তই না পারলে খুব ঢোলা, একেবারে আনরিভিলিং কাপড় পরতে হবে। টাইট জিন্স/লেগিং উইথ টপস পরলে যেহুতু হিজাব হবে না, ঢোলা টিউনিক পরতে পারেন। সিম্পল, লুজ, এলিগেন্ট। খেয়াল করেছেন কখনো যে কোমর পর্যন্ত টপ্স পরে হেঁটে গেলে পাশের বাড়ির বুড়া মোখলেস দাদাও আপনার পেছন পানে চেয়ে থাকে? Basic human instinct, কিচ্ছু করবার নেই।
.
হাত বের করে মাথা ঢেকে রাখার ব্যাপারটা হিজাবের নিয়ম লংঘন করে। হাফ হাতা, থ্রি কোয়াটার হাতা, বা টাইট স্লিভ পরে শুধু চুল কভার করাটা ভ্রান্তিজনক। হাত, পা (একেবারে পায়ের পাতা পর্যন্ত) আওরার অন্তর্ভুক্ত।
.
হিজাব কেন করব?
.
ফরজ তাই। জাহান্নামি না হওয়ার জন্য। কন্সেপ্টটা বুঝে নিতে হবে আগে যে it is obligatory. Optional ব্যাপার স্যাপার নাই এখানে। যেটার বিধান স্পষ্টত ফরজ সেখানে প্রপার হিজাব না করাটা সিম্পলি বেয়াদবি, এখানে কোন এক্সকিউয খাটে না। নূন্যতম ঢোলা কাপড়টা পরেন যাতে মামা চাচা দুলাভাই আপনার বডি ডাইমেনশন্স মানসপটে এঁকে ফেলতে না পারে। সবাই যে ওঁৎ পেতে আছে আপনার শরীর মাপার জন্য তা না, কিন্তু কে কে মাপবে না তার নিশ্চয়তা কে দিচ্ছে?
.
'কেন আমাকে ঢেকেঢুকে চলতে হবে? ছেলেরা কেন হিজাব করবে না? আমি এত হুজুর না। এত কি মানা সম্ভব? দেবর, দুলাভাই তো নিজের ভাইয়ের মতন। ওদের সামনে হিজাব কেন করা লাগবে?' এসব বাচ্চা বাচ্চা প্রশ্ন আমাকে করবেন না প্লিয। এখনো যদি we can't grow up, তাহলে আল্লাহ্‌ মাফ করুক, হয়ত আমাদের অন্তরে সিল মারা হয়ে গেছে।
.
হিজাব না করলে কি হবে?
.
সেটা আল্লাহ্‌ আর আপনার মাঝের ব্যাপার। তবে যে জেনেশুনে তার প্রভুর কথা অমান্য করল, তার প্রভু তাকে অনুগ্রহ করবেন এটা আশা করা বিশাল লিপ অফ 'ফেইথ'। এতটা সিলি কারই হওয়া উচিত না।
.
পরে করব, মন থেকে আসলে করব, বুড়া হয়ে করব এসব খুব দুঃখজনক কথা। আপনার 'মন থেকে না আসলে' নিশ্চয়ই আপনি খাওয়া, টয়লেট বন্ধ করে রাখেন না। It's not optional.
.
বর্তমানে হিজাব করে আগের এলোমেলো বাতাসে উড়ানো খোলা চুলের ছবি দিলে হিজাব করার মানেটাই তো 'The End' হয়ে গেল, তাই না? সবাই তো আপনার লুকায়িত সৌন্দর্য দেখেই ফেলল।
.
'আমার মা হিজাব করে না, কিন্তু অনেক পরহেজগার।' Well, আল্লাহ্‌ কাস্টোমাইজড রুলিং দেন নাই, ছাড় দিয়েছে ক্ষেত্রবিশেষে করুণা করে। To think we are inclusive in that ছাড়, কি ভয়ংকর এক আশা!
.
নিজে হিজাব করে সন্তানকে মিনি মিনি বারবি জামা পরাবেন না প্লিজ। ভয়ংকর কিছু মানসিক রোগী সবখানেই বিচরণ করে। শালীনতা has no age limit, so the earlier you start, the better.
বইঃ হিজাব আমার পরিচয় 🖤

দ্রুত বিয়ে ও উত্তম স্ত্রী কিংবা স্বামী পাওয়ার আমল

 

দ্রুত বিয়ে ও উত্তম স্ত্রী কিংবা স্বামী পাওয়ার আমল:
 
▪️আমাদের জীবনে সেটাই ঘটবে যা আল্লাহ তাআলা আমাদের ভাগ্যে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই পেরেশান হওয়ার কিছু নেই৷ আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা চাই৷ আল্লাহ বলেন:
 
قُلْ لَنْ يُصِيْبَنَا إِلاَّ مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا
▪️অর্থ: তুমি বল, আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন, তা ব্যতীত কিছুই আমাদের নিকট পৌঁছবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক।
➖(সুরা তওবা: ৫১)
▪️তবে বেশি বেশি করে দুআ করবেন৷ কারণ দুআ অনেক পাওয়ারফুল আমল৷ আল্লাহ তাআলা আম্বিয়ায়ে কেরামের আমলের মধ্যে দুআর বিষয়টি পবিত্র কুরআনে বারবার উল্লেখ করেছেন৷ হাদিসে এসেছে-
لاَ يَرُدُّ الْقَضَاءَ إِلاَّ الدُّعَاءُ
▪️অর্থ: ভাগ্য পরিবর্তন হয় না দুআ ব্যতীত।➖(তিরমিযী: ২১৩৯)
▪️অতিদ্রুত হালাল, উত্তম ও সম্মানজনক রুজি এবং উত্তম ও দ্বীনদার স্ত্রী কিংবা স্বামী পাওয়ার জন্য বেশি বেশি করে মুসা আলাইহিস সালাম কৃত দুআটি পড়তে পারেন:
 
رَبِّ اِنِّیۡ لِمَاۤ اَنۡزَلۡتَ اِلَیَّ مِنۡ خَیۡرٍ فَقِیۡرٌ
▪️অর্থ: হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাযিল করবে, আমি তার মুখাপেক্ষী। ➖(সুরা কাসাস: ২৪)
▪️উত্তম জীবনসঙ্গী, নেককার সন্তান-সন্ততির জন্য আল্লাহ তাআলার শিখিয়ে দেয়া কুরআনি এই দুআটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপক অর্থপূর্ণ:
 
رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّاجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا.
▪️অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।
➖(সুরা ফুরকান:৭৪)
▪️বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তিগফার করুন। কারণ এটা রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম একটি আমল। আর, আপনার জীবনের প্রতিটি নিয়ামত ও প্রশান্তি আপনার রিজিকেরই অন্তর্ভুক্ত। নফল সাদাকা করুন৷ বেশি করে সালাতুল হাজত পড়ে আল্লাহর নিকট সাহায্য চান। কারণ এটা দ্রুত বিয়ে ও দ্বীনদার স্বামী/স্ত্রী পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আমল।
▪️আর হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই৷ আল্লাহ তাআলা আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন৷ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
 
ﺛَﻠَﺎﺛَﺔٌ ﺣَﻖٌّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻮْﻧُﻬُﻢْ: ﺍﻟﻤُﺠَﺎﻫِﺪُ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟﻤُﻜَﺎﺗَﺐُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻷَﺩَﺍﺀَ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﻛِﺢُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻌَﻔَﺎﻑَ
▪️অর্থ: তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ্ তাআলার জন্য কর্তব্য হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলার রাস্তায় জিহাদকারী, চুক্তিবদ্ধ গোলাম যে তার মনিবকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পদ আদায় করে মুক্ত হতে চায় এবং ওই বিবাহে ইচ্ছুক ব্যক্তি যে (বিবাহ করার মাধ্যমে) পবিত্র থাকতে চায়।
➖(আমি : ১৬৫৫, নাসায়ী: ৩২১৮)
▪️ধৈর্যধারণ করে এই আমলগুলো করতে থাকুন৷ আল্লাহ তাআলার প্রতি দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন৷ শীঘ্রই ব্যবস্থা হয়ে যাবে
ইন শাআল্লাহ।
_এডমিন✅

সবচেয়ে সুস্বাদু পাপ - গীবত

 May be an image of one or more people and text that says 'সবচেয়ে সুস্বাদু পাপ পাপ "গীবত" FAYSAL AHMED'

 

আমাদের অনেকের সমস্যা হচ্ছে, ঠিক কোন গুলো গীবত তা ধরতে না পারা । এখানে বেশ কয়েক প্রকারের গীবত নিয়ে আলোচনা করা হলো"‼️🥺
(১) খাবারের গীবত :
নিকৃষ্টতম গীবত হল খাবারের গীবত করা । একজন মানুষ কষ্ট করে রান্না করে, আর সবাই মিলে রান্নার বদনাম করতে থাকে । খাবারের গীবত বেশি হয় বিয়ে বাড়িতে ।
যেমন বলা, খাবারটা মজা হয় নাই, লবণ কম হইছে, এত লবণ দিয়েছে যে তিতা লাগছে ইত্যাদি ।
নবী(স:) কখনই খাবারের দোষ ধরতেন না । ভালো না লাগলে এক পাশে সরিয়ে রাখতেন । কখনই বলতেন না, কী খাবার রান্না করেছে মুখেই দেয়া যাচ্ছে না !
(২) দৈহিক কাঠামোর গীবত :
কারো কাছে কোন ব্যক্তির দৈহিক ত্রুটি উল্লেখ করাও গীবত ।
যেমন বলা, অমুক ব্যক্তি খুব মোটা, তার নাক বোঁচা, চোখ খুবি ছোট, চোখে দেখে না, মাথায় তো চুল নাই, পেটে ভূড়ি আছে, সে তো খুবি খাট ইত্যাদি ।
তো কোন ব্যক্তির আড়ালে অন্য কারো সাথে যদি আপনি ঐ ব্যক্তির দৈহিক কাঠামো নিয়ে এরকম আলোচনা করেন তাহলে তা গীবত হয়ে যাবে ।
"একবার আয়েশা(রা:) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল ! আপনি কী সাফিয়ার বেঁটে হওয়াটা অপছন্দ করেন না ?
রাসূল(স:) বললেন, হে আয়েশা ! তুমি এমন একটি কথা বললে যা নদীর পানির সাথে মিশিয়ে দিলে তার উপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে ।"
(আবু দাউদ )
(৩) পোশাকের গীবত :
এভাবে বলা, অমুকের পোশাক খাট, কেমন কালারের জামা-কাপড় পরে দেখতে বিশ্রি লাগে, ঐ মেয়ে এত ফিটিং ওয়ালা পোশাক পরে, অমুক তো পাতলা ড্রেস পরে ইত্যাদি ।
" একবার আয়েশা(রা:) বলেন, অমুক স্ত্রীলোকের আচল খুব লম্বা । রাসূল(স:) একথা শুনে বললেন, হে আয়েশা ! তোমার থুথু ফেলা কর্তব্য । আয়েশা(রা:) বলেন, আমি থুথু ফেললে মুখ থেকে গোশতের একটি টুকরা বের হয়ে আসে ।"
(আত তারগীব ওয়াত তারহীব)
(৪) বংশের গীবত :
তুচ্ছ করার জন্য কাউকে বলা, অমুকের বংশ নিচু, অমুকের পূর্ব পুরুষেরা ছিল কূলি মজুর বা চোর ডাকাত ইত্যাদি, অমুকের তো কোন বংশই নেই ইত্যাদি বলা ।
"নবী(স:) বলেন, দীনদ্বার ও সৎকর্ম ব্যতীত কোন ব্যক্তির অপর কোন ব্যক্তির উপর শ্রেষ্ঠত্ব্য নেই ।"
(আব্দুর রহমান আশ-শারানী)
(৪) অভ্যাস বা আচার-আচারণের গীবত :
কোন ব্যক্তির আচার ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করা । যেমন, সে মানুষকে কষ্ট দিয়ে কথা বলে, ব্যবহার খারাপ, অভদ্র, পেটুক, অলস, সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘুমায় ইত্যাদি ।
একবার সালমান ফারসী(রা:) আহার করে শুয়ে পড়লেন । দুই ব্যক্তি তার খাওয়া ও শোয়ার ধরণ নিয়ে সমালোচনা করলে নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হয়,
"তোমরা পরস্পরের গীবত কর না । "
(সুরা হুজরাত : ১১)
(ইবনে জুরাইহ এর সূত্রে দুররুল মানছুরে)
(৫) ইবাদতের গীবত :
ইবাদতের ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে সমালোচনা করা । যেমন, কাউকে গিয়ে বলা অমুকতো ঠিকমত নামায পরতে পারে না, মাকরুহ ওয়াক্তে নামায পরে, রমযানের রোজা রাখে না, এত বড় হইছে কিন্তু এখনো নামায পড়ে না, এত বড় মেয়ে কুরআন পড়তে জানে না ইত্যাদি ।
"তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে কতক লোক ঘুমিয়ে থাকলে শেখ সাদী(রহ:) তাদের সমালোচনা করেন এবং বলেন, এই লোকগুলো যদি তাহাজ্জুদ পড়তো তবে কতই না ভালো হত । সাদীর পিতা একথা শুনে বলেন, কতই না ভালো হত যদি তুমি তাহাজ্জুদ না পড়ে এদের মত ঘুমিয়ে থাকতে । তাহলে এদের গীবত করার পাপ তোমার ঘাড়ে চাপত না ।"
(ইহয়া উলূমিদ-দীন)
(৬) গুনাহের গীবত :
যেমন বলা, অমুক যেনা করেছে, অমুক মানুষের নামে বদনাম করে, বাবা-মা কে কষ্ট দেয়, মিথ্যা কথা বলে, হিংসুক, অমুকের মেয়ে প্রেম করে ছেলে নিয়ে রাস্তা দিয়ে ঘুড়ে বেড়ায় ইত্যাদি ।
(৭) অভিনয়/ইশারা-ইংগিতের মাধ্যমে গীবত :
কোন ব্যক্তির অসহায় অবস্থা অভিনয়ের বা ইশারা-ইংগিতের মাধ্যমে দেখানো । যেমন, অন্ধ, বোবা, খুরা ইত্যাদি সেজে দেখানো । এমনকি সমালোচনার জন্য কারো চালচলন, কথা, পোশাক ইত্যাদি নকল করে অভিনয় করাটাও গীবত । সরাসরি নামোল্লেখ না করে এমন কিছু ইংগিতবহ উপমা ব্যবহার করে দোষ বর্ণনা করা যে লোকেরা উপমা শুনেই বুঝে ফেলে কার কথা বলা হচ্ছে । অর্থাৎ গীবত করার সময় নাম না নিলেও এমন ভাবে কোন ব্যাক্তির দোষ-ত্রুটি বলা যে মানুষের আর বুঝতে বাকি থাকে না কার কথা বলা হচ্ছে, এটাও গীবত পর্যায়ে পড়বে ।
"রাসূল(স:) বলেন, আমি পরানুকরণ পছন্দ করি না, এত এত সম্পদের বিনিময়েও না ।"
(তিরমিযি)
(৭) কানের গীবত :
নিজে না বললেও কারো গীবত শোনা এবং শোনার সময় কোনরুপ বাধা না দেয়া কানের গীবত । গীবত দুই ভাবে হয় -
(১) মুখে বলে
(২) কানে শোনে
গীবত বলা ও শোনা সমান পাপ ।
"রাসূল(স:) বলেছেন, গীবত শ্রবণকারীও গীবতকারীদের একজন ।"
(তাবরানী)
(৮) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে গীবত :
নিজের হাত, পা, চোখ ইত্যাদির মাধ্যমে অন্য লোকের নিকট কোন ব্যক্তির দোষ বর্ণনা করা ।
যে ব্যক্তি চোখ এবং হাতের ইশারার দ্বারা মানুষদের কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি । এবং হুতামাহ নামক জাহান্নামটি তাদের জন্যও প্রস্তুত রয়েছে ।
যেমন, কোন ব্যক্তি কোন মজলিস থেকে উঠে চলে যাওয়ার পর তার প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য চোখ অথবা হাতের ব্যবহার করা ।
"খর্বাকৃতি এক মহিলা মহানবী(স:) এর নিকট আগমন করলো । তার চলে যাওয়ার পর আয়েশা(রা:) তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্য হাতের দ্বারা তার প্রতি ইংগিত করেন । মহানবী(স:) বলেন, হে আয়েশা ! তুমি তো তার গীবত করলে ।" (বায়হাকী)
ভুল ত্রুটিগুলো(পোস্ট এ কোন ভুল থাকলে) ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে।
Copied

 

সমসাময়িক প্রেক্ষাপট: আমার কিছু ভাবনা

 

কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে অহরহ একটি বিষয় লক্ষ করছি। তাই এটা নিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে কিছু লিখার প্রয়োজন মনে করলাম।
সমসাময়িক প্রেক্ষাপট -১
কয়েকদিন ধরে চেনা-অচেনা অনেকেই ইনবক্সে একটি মেসেজ দিচ্ছেন। সেটা হচ্ছে একটি অ্যাপকে রেফার করা। আর সেই অ্যাপটি হচ্ছে সকলের সুপরিচিত ‘টিকটক’। আমরা দৈনন্দিন প্রয়োজনে বিভিন্ন অ্যাপ রেফার করে থাকি। নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু অ্যাপ আমাদের সর্বদাই কাজে লাগে। কিন্তু এই টিকটক কি আসলেই নিত্যকার প্রয়োজনীয়?
টিকটকের কার্যক্রম কিরকম আর এই অ্যাপ কি নিয়ে কাজ করে সেটা কারোরই অজানা নয়। তাই এ নিয়ে আজ কিছু লিখতে চাই না। যুবসমাজের ধ্বংসের মূল একটি হাতিয়ার বললেও মনে হয় খুব বেশি ভুল হবে না। আর এই অ্যাপ প্রমোট করা, রেফার করা একজন মুসলিমের জন্য কতটুকু যুক্তিযুক্ত সেটাই ভাবার বিষয়।
কয়েকদিন ধরে যেটা লক্ষ করছি সেটা হচ্ছে যারা কোনদিন টিকটক ব্যবহার করেননি বা কোনভাবেই এর সাথে যুক্ত ছিলেন না তারাও এর রেফারেল মেসেজ দিচ্ছেন। কেন? কারণ একটি রেফার করলেই কিছু টাকা দিচ্ছে অথোরিটি। এরকম কয়েকটি রেফার করতে পারলেই হাতিয়ে নেওয়া যাবে হাজার দুয়েক টাকা। এতে অথোরিটির লাভ কি? সহজ উত্তর, এতে তাদের অ্যাপের প্রচার হচ্ছে যার ফলে তাদের ইনকাম সোর্স বাড়ছে আর সেখান থেকেই কিছু অংশ রেফারকারীকে দিচ্ছে তারা।
অনেকেই ভাবছেন, বাহ! সহজ তো। অল্প কষ্টে অধিক টাকা, তাও আবার বসে থেকেই।
থামুন!! একজন মুসলিম হিসেবে আপনার উচিৎ নয় যেখানে সেখানে আয়ের উৎস খোঁজা। একজন বিবেকবান মানুষ যেমন ডাস্টবিন থেকে পঁচা খাবার তুলে খাবে না, যতই সুস্বাদু হোক, তেমনি একজন মুসলিমও যেখানে সেখানে আয়ের উৎস খুজতে পারে না, যতই লাভজনক হোক।
কিন্তু আপনি বলতে পারেন, সমস্যা কি? আমি তো আর ভিডিও দেখছি না বা তৈরি করছি না। এবার আমি বলি, আপনি কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য অন্তত ১০ জনকে রেফার করছেন। এই ১০ জনের কেউই যে তাদের ভিডিও দেখবে না বা তৈরি করবে না তার কি গ্যারান্টি? আবার এই ১০ জন অন্য যাদের রেফার করবে তারা যে দেখবে না তার কি গ্যারান্টি? এতে তাদের সমপরিমাণ গুনাহ আপনার আমলনামায় যোগ হবে। আর এটা প্রজন্মের মতো চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকবে।
এখন আপনি তো আবার আল্ট্রা প্রো-ম্যাক্স বুদ্ধি নিয়ে চলেন। আপনি হয়তো বলতে পারেন আমি তো অন্য কাউকে রেফার করি না, আমি নিজেই ১০ টা একাউন্ট খুলে সেটাতে রেফারেল কোড ব্যবহার করছি। পরে আবার ডিলেট করে দিব। এক্ষেত্রে বুঝা যায় আপনার উদ্দেশ্য ভিডিও দেখা না, শুধু কিছু টাকা কামানো। এতে সমস্যা কি? এতেও সমস্যা আছে। কারণ তাদের যে আয়ের উৎস সেটা কিন্তু হারাম। অন্যরা তাদের অ্যাপ ব্যবহার করছে আর এতে তারা লাভবান হচ্ছে, আর সেখান থেকেই কিছু অংশ আপনাকে দিচ্ছে। এটা স্পষ্টত যে তাদের উৎস হারাম আর সেখান থেকেই আপনাকে টাকা দিচ্ছে।
একজন সুদখোরের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়া একজন মুসলিমের জন্য জায়েজ নয়, কারণ তার আয়ের উৎস হারাম (ভিন্ন কোন উৎস থাকলে আলাদা ব্যাপার)। তাহলে যার একমাত্র আয়ের উৎস হারাম তার থেকে আপনি টাকা নিবেন কোন যুক্তিতে? সে তো আর অন্য কোন সোর্স থেকে আপনাকে টাকা দিবে না। একটি প্রশ্ন, এই সামান্য ক-টি টাকা না হলে কি আপনার বিরাট কোন লোকসান হবে, পরিবারের কেউ না খেয়ে মারা যাবে? তাহলে হারামে পা বাড়াচ্ছেন কেন?
এখন টাকা তুলেই ফেলেছেন, তাহলে করণীয় কি? টাকা তুললে আপনি সেই টাকা সাওয়াবের নিয়ত ব্যাতিত দান করে দিন। পাপে জড়ানোর কারণে তওবা করে নিন (নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা করতে ভালবাসেন)। আর যাদেরকে আপনি রেফার করেছেন তাদের হাতে পায়ে ধরে হলেও বলুন তারা যেন ডিলেট করে দেয়। কারণ তওবা করেও কোন লাভ হবে না যদি এর মাধ্যমে তারা ফায়দা নিয়ে থাকে। এতে আপনার আমলনামায় চক্রবৃদ্ধি হারে গুনাহ আসতেই থাকবে।
|| সমসাময়িক প্রেক্ষাপট: আমার কিছু ভাবনা||
“হাসান তারিক”

তারবিয়্যাহ—সঠিক প্রশিক্ষণ

| তারবিয়্যাহ—সঠিক প্রশিক্ষণ |
 
ইসলাম পুরোটাই চর্চার বিষয়। ইসলামে নন-প্র্যাক্টিসিং বলে কোনো কথা নেই। মুসলিম মানেই তো ইসলাম অনুযায়ী জীবনযাপনকারী। যে ইসলাম সম্পর্কে জেনেও মানে না, সে আবার কেমন মুসলিম! তাই ইসলামে তারবিয়্যাহ এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সমাজকে প্রভাবিত করতে পারবে, এমন নীতিমান নাগরিক গড়ে তুলতে হলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আচার-আচরণের সুষ্ঠু রীতিনীতি থাকা অপরিহার্য। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ছোট-বড় যত ধরনের সামাজিক সমস্যা আছে, তার সবগুলোর মূলে রয়েছে তারবিয়্যাতের অভাব। 
 
বর্তমানে আমরা উন্মাদের মতো বস্তুগত উন্নতির পিছনে ছুটছি। সন্তান প্রতিপালনের জন্য আমরা জাদুকরি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির তালাশে আছি, যেন আমাদের নিজেদের সময় ও শক্তি খরচ করতে না হয়। এর ফলে আমাদের সন্তানরা বড় হয়ে অযত্নশীল ও স্বার্থপর হবে—এটাই তো স্বাভাবিক। পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা খরচ করলেই এইসব সমস্যা সমাধান হয়ে যায় না। কথায় আছে, ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে’। সন্তানদের যেভাবে বড় করে তুলব, তার উপর নির্ভর করবে আমাদের সমাজ, জীবন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। সন্তানদের বিলাসিতার মধ্য দিয়ে বড় করার অর্থ হচ্ছে নিজেদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত করা। আর পার্থিব ভবিষ্যৎ তথা পরনির্ভরশীল বার্ধক্যের দুর্ভোগ তো আছেই। সন্তানকে শুধু টাকা দিলেই হয় না, সময় এবং মনোযোগও দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো শর্টকাট রাস্তা নেই। 
 
তারবিয়্যাতের ক্ষেত্র পাঁচটি:
 
১. আকিদা (ধর্মীয় বিশ্বাস)
২. ইবাদাত
৩. মু‘আমালাত (লেনদেন)
৪. মু‘আশারাত (আচরণ)
৫. আখলাক (চরিত্র)
 
উল্লিখিত প্রত্যেকটি বিষয়ের প্রতি সমান মনোযোগ দেওয়া জরুরি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে আখলাকের শিক্ষা দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে।’ এর মানে এই নয় যে, আকিদা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে আকিদা ও আখলাক উভয়টিই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সচরাচর প্রথম দুটির প্রতি মনোযোগ দিয়েই দায়িত্ব শেষ করি। আর বাকি তিনটিকে একেবারেই অগ্রাহ্য করি। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের পদ্ধতি ছেড়ে দিয়ে অন্যদের পদ্ধতি গ্রহণ করছি। আসলে আমরা নিজেদের পদ্ধতি সম্পর্কে জানিই না।
 
মু‘আমালাত, মুয়া‘আশারাত এবং আখলাকের মূল বিষয়গুলো কুরআন, সুন্নাহ, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সীরাহ এবং সাহাবায়ে কেরামের জীবনীতে পাওয়া যায়। তাই সেই সর্বোত্তম প্রজন্মের কথা বেশি বেশি আলোচনা করাকে জীবনের অংশ বানিয়ে নিতে হবে। নিজেরাও জানতে হবে, জানাতে হবে সন্তানদেরও। তাদের ঘটনাগুলো যেন আমাদের কাছে বাস্তব ও জাজ্বল্যমান অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়। খেলোয়াড়, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং নাটক-সিনেমার তারকা নয়; সাহাবায়ে কেরামগণই আমাদের স্বতন্ত্র ও গৌরবময় পরিচয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের সন্তানরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কেরামের নামের তুলনায় তথাকথিত এসব সেলিব্রিটিদের নামের সাথেই অধিক পরিচিত। আর কথাটা কেবল আমাদের সন্তানদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়।
 
আসুন, একটি উদাহরণের মাধ্যমে সাহাবায়ে কেরামের জীবনী জানার উপকারিতা বোঝার চেষ্টা করি। আধুনিক গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থার দিকে একটু তাকান। ক্ষমতাশীল লোকেরা এই শাসনব্যবস্থা থেকে নিজেদের মনের মতো ফায়দা লুটছে। এখন প্রশ্ন হলো, ইসলাম কি এমন কোনো পন্থা দেখিয়েছে, যেখানে এমন সুবিধাবাদের কোনো স্থান নেই? যার মাধ্যমে একজন ভালো শাসক নিযুক্ত পাওয়া সম্ভব?
খলিফা আবু বকর সিদ্দিক (রা.) এবং উমার ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর শাসনকে বিশ্লেষণ করে দেখলে এর উত্তর পাওয়া যাবে। কোন ভিত্তি ও মৌলিক শক্তি তাঁদেরকে সঠিক পথের উপর অটল রেখেছিল? আল্লাহর প্রতি তাকওয়া এবং আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে—এই নিশ্চিত বিশ্বাস। এটাই তাদেরকে শয়তানের সকল ষড়যন্ত্র থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। তারাও তো মানুষ, তাদেরও ছিল নিজস্ব কামনা-বাসনা। ইসলামি ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে যে অনৈতিক সুবিধা পাওয়া যাবে, তা-ও ছিল তাদের জানা। তাকওয়াই তাঁদেরকে আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক কিছু করা থেকে বিরত রেখেছে। এটাই মূল চাবি। আর তারবিয়্যাহ হলো তাকওয়ার সেই পর্যায়ে পৌঁছানোর উপায়।
 
© মির্জা ইয়াওয়ার বেইগ
['বিশ্বাসের পথে যাত্রা'—বই থেকে]
সিয়ান | বিশুদ্ধ জ্ঞান | বিশ্বমান

জীবনকে সুখী করতে কয়েকটি অতি মূল্যবান কথাঃ

 

আসসালামু আলাইকুম,
*জীবনকে সুখী করতে কয়েকটি অতি মূল্যবান কথাঃ
● যখন আপনার রক্ত সম্পর্কীয়দের পক্ষ থেকে আঘাত পান, এই বলে মনকে সান্ত্বনা দেবেন, ইউসুফ (আঃ)-এর সাথে তাঁর আপন ভাইরাও কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন ।
● যদি আপনার মাতা-পিতা আপনার বিরোধিতা করেন, স্মরণ করবেন ইব্রাহীম (আঃ) -কে, যার পিতা তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন।
● যদি এমন একটা সমস্যাতে আটকে পড়েন যেখানে উদ্ধার পাওয়া কঠিন, ভুলে যাবেন না ইউনুস (আঃ) মাছের উদরে কিভাবে আটকে ছিলেন !
● যদি আপনি রোগাক্রান্ত হয়ে কষ্টের জ্বালায় কাঁদেন, স্মরণ করুন আয়ুউব (আঃ) -র রোগ- দুর্দশা কিন্তু আপনার অপেক্ষা বহুগুণ বেশী ছিলো ।
● যখন আপনার নামে কেউ অপবাদ ছড়ায়, ভুলবেন না মা আয়েশা (রাঃ) -ও কিন্তু এমন অপবাদ থেকে রেহাই পান নি ।
● যদি আপনি একাকীত্ব অনুভব করেন, স্মরণ করুন আদম (আঃ)-কে যাকে নিঃসঙ্গ সৃষ্টি করা হয়েছিলো ।
● যখন কনো যুক্তি খুঁজে পাবেন না, ভেবে দেখুন যে নূহ (আঃ) (লোকের চোখে) কোনো যুক্তি ছাড়াই কিন্তু সেই জাহাজটি বানিয়েছিলেন ।
● যদি আপনাকে কেউ বিদ্রূপ বা উপহাস করে আমাদের নবী (সাঃ)-কেও কিন্তু বহু উপহাস সহ্য করতে হয়েছে !
● আল্লাহ সুবহানআল্লাহু তা'য়ালা তাঁর নবী রসুলদের নানা পরীক্ষায় ফেলেছিলেন যাতে তাঁদের উম্মাহ এবং বংশধররা শিক্ষা গ্রহন করে আল্লাহর হুকুমের উপর সবর করতে শেখে ।
● আল্লাহ সুবহানআল্লাহু তা'য়ালা যেন আমাদের সঠিক জ্ঞান এবং বুঝার তৌফিক দেন। আমীন (সংগৃহীত)