Tuesday, May 7, 2013

ইমতিয়াজ [Ghost STories-43]


আমি ইমতিয়াজ রাজশাহী ইউনিভার্সিটি থেকে । ইংলিশ ডিপার্টমেন্টে এম এ কম্প্লিট করেছি ।আমি যখন ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হই তখন মেসে ছিলাম । আমার মেসের এক বড় ভাই আমাকে একদিন বললেন যে এই মেসটাই একটু প্রবলেম আছে আমি বললাম কি ধরনের প্রবলেম । তিনি বললেন পরে বুঝতে পারবা ।এখন বললে বিশ্বাস করবা না তবে একটু সাবধানে থেকো । আমি বরাবরই ভূত বিশ্বাস করতাম না । একদিন ফ্রেন্ডরা মিলে রাত তিনটা পর্যন্ত কার্ড খেলছিলাম । খেলা শেষ হয়ে যখন টয়লেটে গেলাম তখন পানি পড়ার শব্দ পেলাম । ভাবলাম হয়ত কেউ টয়লেটে আছে ।তাই অপেক্ষা করতে থাকলাম ।বেশ কিছুক্ষন পর যখন কেউ বের হলো না তখন আমি দরজায় নক করে জিঞ্জাসা করলাম ভিতরে কে?সাথে সাথে পানি পড়ার শব্দ থেমে গেল ।

দরজা ধাক্কা দেওয়ার ফলে দরজা খুলে গেল ।আমি অবাক হলাম কারন এতক্ষন পানি পড়ার শব্দ হয়ছে সেটা আমি স্পষ্ট শুনেছি কিন্তু টয়লেটটা পুরোপুরি শুকনা ছিল । আশেপাশে আর কোন পানির ট্যাপ ছিল না যেখান থেকে শব্দটা হতে পারে !


আমি ব্যাপারটা গুরুত্ব না দিয়ে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম ।যখন তন্দ্রা এল তখন আমি স্পষ্ট শুনতে পেলাম কে যেন কাদছে । আমি সিঙ্গেল রুমে থাকতাম । কিছুটা ভয় পেয়ে পাশের রুমের বড় ভাইকে ডেকে তুললাম ।যে ভাই একদিন আমাকে সাবধান করে দিয়েছিলেন । তিনি বললেন সেই রাতে তার সাথে ঘুমাতে ।রাতে ভাল ঘুম হলো না ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্নদেখলাম সকালে ভাই বললেন আমি যে রুমটায় থাকি সেই রুমে একটা ভাই ২বছর আগে থাকতেন ।কোন একটা কারনে তিনি সুইসাইড করেন । তারপর থেকে ঐ রুমে আর কেউ থাকে না ।২বছর পর আমিই নাকি ঐ রুমটাতে প্রথম উঠেছি ।তারপরও আমি ঐ রুমটাতে থাকতাম ।কিন্তু রাতে মাঝে মাঝে একটা হালকা এবং অদ্ভুত রকমের গন্ধ পেতাম ।মনে হতো কেউ একজন হয়তো আমার রুমে আছে ।প্রথম দিকে আমি এই ব্যাপারটা পাত্তা দিতাম না । ভাবতাম আমার মনের ভুল হয়তো । কিন্তু দেখা যেত হঠাত্ করে আমার টেবিল থেকে একটা মগ পড়ে গেল,একটা বই পড়ে গেল ।একদিন রাতে কার্ড খেলা শেষ করে রুমে দরজা বন্ধ করে কেবল মাত্র শুয়েছি সাথে সাথে আমার রুমের দরজা খুলে গেল ।আমি  আবার উঠে বন্ধ করে যখন আবার শুলাম তখন আবার দরজা খুলে গেল ।


আমি রুমে থাকতে পারলাম না । পাশের রুমের বড় ভাইয়ের সাথে সেই রাতটা কাটিয়ে দিলাম ।পরদিন মেস চেন্জ করে অন্য মেসে চলে গিয়েছিলাম


[ইমতিয়াজের ব্যাখ্যা--মানুষ হয়তো মারা যায় কিন্তু তার আত্মা কখনও মরেনা (~তার এখন বিশ্বাস হয়~)আত্মা কখনও সরে যায় না,হয়তো আমাদের চারপাশে থাকে]

■এক রিকশাওয়ালা■ [Ghost Stories-42]



এক রিকশাওয়ালা 



ঘটনাটি আমার এক বড় ভাই আনিসের কাছ থেকে শোনা।ঘটনাটি ঘটেছিল জামালপুরে ।জামালপুরে একজন রিক্সাচালক ছিল ।সে অতিরিক্ত ইনকামের জন্য রাতের বেলা বেশিরভাগ সময় রিক্সা চালাতো ।কারন রাতের বেলা ভাড়াটা বেশি পাওয়া যায় বা দূরের যাত্রি পাওয়া যায় যেহুতু সেখানেরেলস্টেশন আছে ।একদিন সে রেলস্টেশনে দাড়িয়ে আছে ।আর কোন রিক্সাওয়ালা তেমন একটা নাই ।অনেক রাত ।একটা লাস্ট ট্রেন যেটা আসবে সেটা ২ঘন্টার মত দেরী করে ফেলছে ।হঠাত্ ট্রেনটি আসল এবং একজন মাত্র প্যাসেন্জার নামল ।লোকটা স্যুট,বুট পড়েছিল এবং হাতে ছিল একটা ব্রিফকেস । লোকটা এসে রিক্সাওয়ালাকে বলল যাবা ।রিক্সাওয়ালা বলল যাবো,কোথায়?লোকট া বলল আমি যেদিকে বলবো সেদিকে চলো । রিক্সাওয়ালা চালাচ্ছে । চালাতে চালাতে জামালপুরের সবচেয়ে বড় যে কবর স্থানটা সেখানে গেল ।সাধারনত কবরস্থানের গেটে বিশাল বড় একটা তালা থাকে ।লোকটা যখন গেটের সামনে গিয়ে দাড়াল তালাটা autometic খুলে গেল ।

রিক্সাওয়ালা তখন এই দৃশ্য দেখতেছে ।লোকটা ভেতরে চলে গেল অনেকক্ষন পরে সে হাতে করে কিছু একটা নিয়ে আসতেছে । কাপড়ে ঢাকা একটা ছোটখাট লাশ এই টাইপের কিছু একটা নিয়ে আসতেছে । তো সে রিক্সার কাছে আসল এবং রিক্সাওয়ালাকে বলল আমাকে যেখান থেকে নিয়ে আসছো সেখানে চলো । রিক্সাওয়ালা তাকে নিয়ে প্যাডেল করতেছে খুব ভয়ে ভয়ে । পেছনে সে শব্দ শুনতেছে হাড চাবাই চাবাই খেলে যে শব্দটা হয় সেরকম এবং কিছু ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে এরকম শব্দ সে শুনতেছে ।সে ভয়ে হোক যেভাবেই হোক সে আবার স্টেশনে পৌছাতে পারছিল ।পৌছানোর পর লোকটা বলল এতক্ষন যা দেখলা বা শুনলা এটা কাউকে কখনও বলবা না আর তোমাকে কত ভাড়া দেব রিক্সাওয়ালা কিছু বলে নাই এবং তার হাতে একটা তামার পয়সা দেয়া হয় ।ঐ ট্রেনটি তখনও ওখানে এবং যে স্টেশন মাস্টার সেও সেখানে নাই । পরে জানা গেছে ঐদিন নাকি ট্রেন  ধর্মঘট ছিল ।তারপর রিক্সাওয়ালা সেন্সলেস হয় ।সকাল বেলা আশেপাশের যে রিক্সাওয়ালা ছিল এসে দেখে সে সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছে ।সারারাত বৃষ্টি হওয়ায় সে বৃষ্টিতে ভেজা । পরে রিক্সাওয়ালা ঘটনাটি তার বউ এর সাথে শেয়ার করে । কথাটি শুনে আগ্রহ হয়ে এগিয়ে যায় আশেপাশের লোকজন ।কথাটা যখন সে শেষ করছে এবং পয়সাটা দেখায়ছে তখন সে হঠাত্ করে এব নরমালের মত হয়ে গেল এবং তার নাকে মুখে রক্ত উঠে মারা যায় সাথে সাথে ঐ জায়গায় ।ঐ পাড়ার লোকজন এ ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখছিল ।

 উত্সঃ ভুত এফ এম।

একটি অসংজ্ঞায়িত ঘটনা [Ghost Stories-41]


একটি অসংজ্ঞায়িত ঘটনা 


by: Mdsumon Ahmed 


আমি সুমন,ঘটনাটা সিলেটের লীডিং ইউনির্ভাসিটির একজন প্রফেসর এর কাছ থেকে শুনা। তিনি আমাকে যে ভাবে বলেছেন আমি সেভাবেই লিখছি।

ঘটনাটা সিলেটের হরিপুর নামক জায়গার।আমাদের বাসায় একটা জ্বীন এর পরিবার বাস করে।ঘটনাটা প্রথম জানা যায়,আমার চাচাতো বোনের বিয়ে ঠিক হওয়ার সময়,আমার বোনের একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু বিয়ের কথা হচ্ছিল আরেক জনের সাথে।সে দিন তাকে দেখতে ছেলে পক্ষ এসেছিল। ছেলের বাবা যখন কথা বলছিল তখন মেয়ে কে জিগ্যাসা করল যে মেয়ের এই বিয়েতে মত আছে কি না?তখন মেয়েটা কোন কথা বলে নাই। তারা মনে করে যে মেয়ের মত আছে এবং তারা মেয়েকে চলে যেতে বলল। ঠিক তখনই মেয়েটা পুরুষ মানুষের গলায় বলল যে ঝুমার(মেয়েটার নাম) এই বিয়েতে মত নেই,তোমরা চলে যাও।এই বলে মেয়েটা চলে গেল।লোকগুলো মেয়েটার বিষয়ে নানা রকম বাজে কথা বলতে লাগে।তার পরই তারা দেখতে পায় একটা বিরাট বড় সাপ যা কিনা তাদের তাড়া করতেছিল এবং তাদের কে বাহির করে দিলো। 

তারা চলে যাওয়ার পর আমার চাচা একজন ইমাম সাহেব কে নিয়ে আসেন যে কিনা এইসব বিষয়ে কাজ করে থাকেন ও তার কাছে কিছু জ্বীন ছিল।তিনি তার জ্বীন কে আদেশ করলেন বিষয়টা কি জানার জন্যে।অনেক্ষণ পর জবাব আসে,এটা কিছু জ্বীনের কাজ তবে জ্বীন টাকে নিয়ে আসা তার পক্ষে সম্ভব না।হয়তো অনুরোধ করলে আসতে পারে।তিনি ঐ মেয়েটাকে নিয়ে আসতে বললেন। মেয়েটা আসার পর মেয়েটা কে বললেন তুমি কি কিছু জান।মেয়েটা না বলল।তখন ঐ হুজুর জ্বীন টাকে আসার জন্যে অনুরোধ করলেন।তখন মেয়েটার গলা বদলে পুরুষ মানুষের গলায় বলল কে আমাকে ডেকেছিল,ইমাম সাহেব সালাম দিলেন ও বললেন আমি ডেকেছি,আপনি কে?সে বলল আমি(নাম
টা মনে নাই)আমরা এখানে থাকি অনেক বছর থেকে।আমার পরিবারের সবাই থাকে এখানে।এই মেয়েটা আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছে যে এইখানে যেন তার বিয়ে না হয়।আমরা তাকে সাহায্য করেছি,আর কিছু না।হুজুর বললেন আপনারা কি এখান থেকে চলে যাবেন।সে বলল আমরা কোথায় যাবো আমাদের সবাই এখানে থাকে।আমরা তো আর
কারো যায়গায় গিয়ে থাকতে পারবো না। এইভাবে অনেক সময় কথা কাটাকাটি হওয়ার পর ঠিক হলো তারা এখানেই
থাকবে তবে কারো কোন রকম ক্ষতি করবেনা।তারপর হুজুর চলে যান এবংপরেমেয়েটা অঞ্জান হয়ে যায়।

কবরের অভিজ্ঞতা অর্জন [Ghost Stories - 40]



◄► কবরের অভিজ্ঞতা অর্জন ◄►



কবরের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে গিয়ে এক কম্পিউটার প্রোগ্রামারের মৃত্যু কবরে কেমন লাগে? এ অভিজ্ঞতা লাভ করতে চেয়েছিলেন রাশিয়ার এক কম্পিউটার প্রোগ্রামার। এ জন্য নিজেই জোগাড় করেন কফিন। বাতাস চলাচলের জন্য ওই কফিনে একটা ফুটো করে পাইপ ঢোকানো হয়। মনের জোর ও ধৈর্যশক্তি পরীক্ষা করতে এক বোতল পানি, কম্বল আর মুঠোফোননিয়ে কফিনের ভেতর ঢোকেন তিনি। তাঁরই এক বন্ধুর বাগানে খোঁড়া কবরে রাতের আঁধারে নামানো হয় ওই কফিন। পরে অন্তত আট ইঞ্চি নিচে কফিনটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়। ভেতর থেকে মুঠোফোনে ওই
ব্যক্তি জানান, ভালো আছি বন্ধু। সব ঠিক আছে। তাঁকে শুভরাত্রি জানিয়েঘরে ফিরে গেলেন বন্ধু।

কম্পিউটার প্রোগ্রামারের (৩৫) সেই বন্ধু জানান, সকালে কফিন খুলে দেখা গেল, আমার বন্ধু আর বেঁচে নেই। রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় ব্যাগোভেসচেনস্ক শহরে এ  ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার ওই বন্ধুর বরাত দিয়েই আলেক্সেল লুবিনস্কি নামের এক তদন্ত কর্মকর্তা এএফপিকে এসব তথ্য জানান।

তদন্ত কর্মকর্তা লুবিনস্কির ধারণারাতে ঝড়োবৃষ্টির একপর্যায়ে হয়তো কফিনে বাতাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতেই এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছেইন্টারনেটে নানা লেখা পড়েই ওই ব্যক্তি কফিনে ঢুকে কবরের  অভিজ্ঞতা লাভের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন।

।।ভূতুরে বাড়ি।। [Ghost Stories-39]



।।ভূতুরে বাড়ি।।



By Nirob Ahmed.

আমার নাম বিপুল সাহা। বাবা মা আমায় ডাকে বিপু বলে। আমরা কলকাতাতে থাকি। গত বছর আমার বাবা পশ্চিমবঙ্গে একটা বাড়ি কিনেছিলেন। বিশাল এক দুতলা বাড়ি।সামনের দিকটা পুব থেকে পশ্চিমে প্রসারিত। পেছনে একটা বারান্দা। বারান্দার ওপাশটা ছিল খুবই ভয়ঙ্কর। ঘন জঙ্গল আর বড় বড় গাছপালায় ভরা। বাবা আমাদের বলেছিলেন বাড়িটি কেনার সময় অনেকেই নাকি বাবাকে বারন করেছিলেন। কিন্তু কারন জিজ্ঞেস করাতে কেউই এর সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেনি। কেউ বলেছে ঐ বাড়িটা ভালনা, আবার কেউ বলেছে ঐ বাড়িতে নাকি ভুত আছে। কিন্তু বাবা শুনেনি। সে বছরই আমরা ঐ বাড়িতে উঠি। আমরা ছিলাম মোট পাঁচজন। বাবা, মা, আমি, আমার ছোট বোন আর আমাদের কাজের লোক রঘু দা। আমি সময়পেলে প্রায়ই পেছনের বারান্দায় গিয়ে একা একা বসে থাকতাম, বই পড়তাম। আর চারপাশটা ভালকরে তাকাতাম। একটু একটু ভয়ও করত আমার। রাতের বেলায় কখনও আমি আমার ঘর থেকে বের হতাম না। তবে মাঝে মাঝে ছাদের উপর গিয়ে বসে থাকতাম। বাবার বারন ছিল রাতে ছাদের উপর উঠার। কিন্তু আমার রাতের বেলাতেইছাদের উপর বসে থাকতে বেশি ভাল লাগতো। তাই সময় পেলেই লুকিয়ে ছাদের উপর চলে যেতাম। একদিন আমি রাতে ছাদের উপর বসে আছি, ঠিক এমন সময় আমার মনে হল কেউ একজন সিড়ি বেয়ে উপরে চলে আসছে। আমি ভাবলাম নিশ্চয়ই বাবা আর নয়তো মা। ধরা পরলে আর রক্ষে নেই। আমি দৌড়ে চলে গেলাম। কিন্তু সিঁড়ির মধ্যে কাউকেই দেখতে পেলাম না। নিচে নামতেই লক্ষ করলাম বাথরোমে লাইট জ্বলছে, আর সেই সাথে পানি পড়ার শব্দ হচ্ছে। ভাবলাম নিশ্চয়ই বাবাধুকেছে। এই সুযোগে আমি আমার ঘরে গিয়ে শুয়ে পরলাম। সকাল বেলা মা আমায় ভীষণ বকাবকি করল। তার অভিযোগ আমি নাকি রাতে বাথরোমের পানি ছেরে রেখেছিলাম। কিন্তু কিছুতেই মাকে বিশ্বাস করাতে পারলাম না, যে আসলে আমি কাল রাতে বাথরোমেও যাইনি আর পানিও ছারিনি।মা বলল, আমি তোকে নিজের চোখে বাথরোমে ঢুকতে দেখেছি।

সেদিনের বকাবকিতে সারাদিন মনটা ভীষণ খারাপ ছিল। সন্ধ্যা হওয়া মাত্রই চলে গেলাম ছাদের উপরে। ছাদের উপরে যাওয়া মাত্রই কিছু একটা উপলব্ধি করলাম। আমি ঠিক যেখানটাতে বসে ছিলাম, ঠিক সেখানেই এইমাত্র কেউ একজন বসে ছিল। মনে হল আমার উপস্থিতি টের পেয়ে জিনিসটা কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল। অনেক্ষন বসে থাকার পর ঘরে গিয়ে শুয়ে পরলাম। কখন যে ঘুমিয়ে পরেছিলাম ঠিক মনে নেই। হঠাৎ করেই প্রচণ্ড চিৎকার চেঁচামেচিতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। কে যেন আমারনাম ধরে ডাকছে।

বিপু যাসনে! দাঁরা বিপু! বিপু চলে গেল!
বিছানা থেকে এক লাফে উঠে গেলাম। গিয়ে দেখি মা বারান্দায় গিয়ে জঙ্গলের দিকে ইশারা করে কাকে যেন ডাকছে। কিন্তু কাকে ডাকছে? কেউইতো সেখানে নেই। এর মধ্যে বাবা আর রঘুদা ও চলে এসেছে। বাবা মাকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, বিপু কোথাও যায়নি। এখানেই আছে, দেখ। মা আমার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল। মা বলল, তাহলে ঐখান দিয়ে কে চলে গেল? বাবামাকে বলে ঐখান দিয়ে কেউই যায়নি, তুমি ভুল দেখেছ। ইতোমধ্যে আমার ছোট বোনটার ঘুম ভেঙ্গে গেছে। ও মার এই অবস্থা দেখে ভয়ে কান্না শুরু করে দিয়েছে। এরপর মাকে ঘরে নিয়ে গেলাম।

আমার মনে বার বার চিন্তা হতে লাগল। মা গত রাতেও আমার মত কাকে যেন দেখেছে, আবার আজ রাতেও আমার মত কাকে যেন জঙ্গলের ধারে চলে যেতে দেখেছে। ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা। এখন আমার ছাদের উপর যেতেও ভয় করে। মার এই ঘটনাটা পরপরআরও কয়েকদিন ঘটল। বাবা এবার একজন ঠাকুর মশাইকে বাড়িতে ডাকল। তিনি মন্ত্রতন্ত্র পাঠ করে দিয়ে গেলেনআর বললেন, এরপর থেকে আর কোন সমস্যা হবেনা। কিন্তু কোন ফল হলনা। এরপর থেকে সমস্যা আরও বাড়তে লাগল। আমার ছোট বোনটা প্রায়ই ঘুমের ঘোরে চিৎকার করে উঠে। কিন্তু কোন কিছুতেই তার কান্না থামেনা। মাঝে মাঝে রান্নাঘরের আসবাব পত্র পরে যাওয়ার শব্দে সবার ঘুম ভেঙ্গে যেত। প্রথমে ভাবতাম হয়তো বিড়ালের কাজ।কিন্তু আমাদের বাসায় বিড়াল ঢুকারমত কোন জায়গা ছিলনা। এরপর দিন দিনসমস্যা আরও বাড়তে লাগল। মাঝে মাঝে মনে হত বাসার ছাদের উপর দিয়েকেউ দৌড়াদৌড়ি করছে। আবার কোন ঝর তুফান ছাড়াই বারান্দার উপর বড় বড় গাছ ভেঙ্গে পরত। তারপর কোন উপায়ুন্তু না দেখে কোন বড় ধরনের সমস্যা ফেস করার আগেই আমরা সেই বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যাই।

All Stories are Hosted by Sazzad Hossain.

DiGiTAL SiGNATURE: sazzadais

If you need any help, then mail me here:

sazzadais@gmail.com

sazzadais@yahoo.com

or perhaps in personal interactive session here:

sazzadais@facebook.com !

মৌলবি আবদুস সোবহান [Ghost Stories -38]


মৌলবি আবদুস সোবহান



মৌলবি আবদুস সোবহান সাহেবের সাথেআমার পরিচয় অনেক আগে থেকেই। ১৯৯১ সালে গয়েশপুর হাইস্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার মাধ্যমে পরিচয়ের ঘনিষ্ঠতা আরো বৃদ্ধি পায়।উনি বয়সে অনেক বড় ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে হাইস্কুলের শিক্ষক এবং গয়েশপুর জামে মসজিদেরইমাম।কন্তিু নির্বিরোধী এই ভালো মানুষটার প্রতি করা হয়েছিল খুব বড় অন্যায়। হাস্যকর এক অপরাধের ধুয়ো তুলে গ্রামের মানুষ কেড়ে নেয় তার ইমামত্ব।

চাকুরির মেয়াদ শেষ হলে তিনি চলে গেলেন পুরোপুরি অবসরে। কিন্তু তার সাথে যোগাযোগ ছিল।ধর্মীয় বিষয় ছাড়াও নানাবিধ আলোচনা করতামআমরা।এই আলোচনার মাধ্যমেই একদিন জানতে পারলাম তিনি পানি পড়া, তাবিজ দেওয়ার পাশাপাশি ঝাড়ফুকও করেন।নতুন তথ্য হলো, আগে এইসব কম করতেন কিন্তু সংসারের অভাবের কারণে এখন একটু বেশী করেন।

যাইহোক, মূল গল্পে আসি। কর্মব্যস্ততার কারণে একসময় যোগাযোগ কমে আসে। মাসখানেক পর উনার খোজ নিয়ে জানতে পারি উনি খুবই অসুস্থ।পরদিনেই দেখতে যাই।দেখি উনার দেহ কাঠামো শুকিয়েযেন অর্ধেক হয়ে গেছে।আমি এসেছি জানতে পেরে পাশ ফিরে আমার দিকে শুলেন।তার অবস্থার কারণ জানতে চাইলে বলেন না বাবা, এই অসুখ আমারআর সারবে না, এটা অসুখ না!

'না না অত ভাববেন না, ভালো চিকিৎসাকরালে আপনার অসুখ সেরে যাবে

কিন্তু তিনি মাথা এপাশ ওপাশ করতে লাগলেন। সেদিন চলে এলাম। এরপর কেটে গেল আরো একটা মাস। এক ভোর বেলায় হন্তদন্ত হয়ে বাসায় এল মৌলবী সাহেবের মেজ ছেলে। বলল ভাই, একনি হামার সাথে চলেন, আব্বাআপনার সাথে দেকা করার জন্য ছটপট করোচে

গেলাম তার সঙ্গে।ঘরে ঢুকে দেখি অবস্থা আসলেই খুব খারাপ।আমাকে দেখে সর্বশক্তি দিয়ে যেন নিজের কষ্ট সামলে রাখলেন।আমাকে ছাড়া ঘরের সকলকে বাইরে চলে যেতে বল্লেন।বাইরে যাওয়া মাত্র আমার হাতদুটো জাপটে ধরে ফিসফিসিয়ে বললেন বাবা, মনে আছে, তোমাকে বলেছিলাম এটা কোনো অসুখ না?

হ্যা মনে আছে

মিনিটখানেক অপলক আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।তারপর সত্যিই শোনালেন এক ভয়ানক গল্প। তার জবানিতেই তুলে ধরছি:

মাসচারেক আগে ঘোলাপাড়া থেকে দুজন লোক এসেছিল, বলল তদের পরিবারের এক মেয়েকে জিনে ধরেছে। তারা এসেছিল সকালে। বললাম আজ আমার জরুরী কয়েকটা কাজ আছে। এখনতো যেতে পারবো না মাগরিবের পর যাবোবাড়ির ঠিকানা বলে লোক দুটোচলে গেল।

মাগরিবের পর হেটেই রওনা দিলাম। সেদিন ছিল পূর্ণিমার রাত। চারিদিকে জোছনায় ঝলমল করছে। গয়েশপুর স্কুল ছাড়িয়ে উঠলাম ছোট যমুনার উপরের সেতুতে।সেতুর পর ডান হাতে বড় একটা বাঁশঝাড়। খুবই খারাপ জায়গাটা। অনেক কিছু দেখেছিওখানে। ঝাড়টার পাশাপাশি যেতেই মুখোমুখি এসে দাঁড়ালো সুদর্শন একযুবক। সাধারণ কেই দেখলে তাকে আর দশজন মানুষের মতই মনে করতো।কিন্তু দুচোখের গনগনে দৃষ্টি মুহূর্তে আমাকে বলে দিল, ওটা কি! অনেক বছর ধরে ওরকম দৃষ্টির সঙ্গে আমি পরিচিত। কিছু না বলে পাশ কাটাতে গেলাম।
মৌলবি সাহেব, আছর ছাড়াতে যাচ্ছেন? হাসল ওটা।
চুপচাপ এগিয়ে গেলাম ওটাকে পেছনে ফেলে।
যাবেন না মৌলবি সাহেব বলল ওটা।
কেন? বললাম আমি।
গেলে আপনার ক্ষতি হবে, কারণ আমি ধরেছি মেয়েটিকে
এবার রেগে গেলাম। কী ক্ষতি করবিরে তুই? তোর মত ওই রকম অনেক জিনিস দেখা আছে আমার, হুমকিও শুনেছি, কেউ ক্ষতি করতে পারেনি আমার
কিন্তু আমি পারবো ভেসে এল ঠান্ডাস্বর।
যা ভাগ, ব্যাটা! রাগে গা জ্বলে গেল আমার।
খুব ভুল করলেন মৌলবি সাহেব
আর কথা না বলে পা চালালাম দ্রুত। পেছনেও আর সাড়া শব্দ নেই।
ঘোলাপাড়া গিয়ে ভর-হওয়া মেয়েটির সামনে দাড়ানো মাত্র দাঁত খিচিয়ে বলল, কী রে হারামজাদা, এত মানা করনো তা-ও শুনলু না? এরপর অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করলো।
ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে মেয়েটির আছড়ছাড়ালাম।
শেষমেষ তাড়ালু, হামাক তাড়ালু? কুত্তার বাচ্চা, বুঝবু, একন বুঝবু! এই বলে বিকট এক চিৎকার করেমেয়েটি জ্ঞান হারালো।
কিছু পরে বাড়ির দিকে রওনা হলাম। মেয়েটির বাবা সাথে লোক দিতে চেয়েছিল কিন্তু মানা করে দিলাম। ফিরতি পথে বাঁশঝাড়টার কাছাকাছি আসতেই দেখলাম, আবার ওটা এসে দাড়িয়েছে।এবার আর সুন্দর চেহারায় নয়, আসল রূপে! চোখ দুটো যেন জলন্ত কয়লার টুকরো, শরীরের ওপরের অংশসহ বাম পায়ের হাঁটু পর্যন্ত ভালুকের মতো বড় বড় লোম, ডান পায়ে দগদগে ঘা, দুই হাঁটুর উপর বাড়তি দুটো চোখ, আর মনে হল রক্তের মত লাল টকটকে বিরাট এক জিভ, নেমে এসেছে বুক পর্যন্ত!
কী রে শুয়োরের বাচ্চা, মেয়েটির আছড় ছাড়িয়ে দিয়ে এলি? আমাকে থাকতে দিলিনা! ভয়ংকর গলায় বলতে লাগলো। হারামজাদা এত নিষেধ করলাম তাও শুনলি না কেন? প্রত্যেকটা কথার সাথে সাথে ছিটকেছিটকে পড়ছে আগুনের কণা।
আমার কাজ আমি করেছি বললাম যথাসম্ভব স্বাভাবিক স্বরে।
কাজ করেছিস তাইনা! বল শক্তি দেখালি! এত বড় সাহস তোর! এবার দেখ আমার শক্তি!
দপ করে জ্বলে উঠলো একটা আগুনের গোলা, কিছু বুঝে উঠার আগেই সোজা ছুটে এসে ঢুকে গেল আমার ভেতর। পড়তে পড়তে সামলে নিলাম, সারা শরীরে যেন আগুন ধরে গেছে! কোনোমতেবাড়িতে এসে সেই যে শুয়ে পড়লাম আর উঠতে পারলাম না।
জানতাম আর উঠতে পারবো না তাই তোমাকে বলেছিলাম এটা অসুখ না। গত কয়েক মাস ধরে ওটা কেবল আমার ভেতরেবসে খলখল করে হেসেছে আর চুষে চুষেখেয়েছে আমাকে!
চুপ করলেন মৌলবি সাহেব, চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগলো।
খানিকক্ষণ পর বললাম আর কিছু বলতেচান?
এপাশ ওপাশ মাথা নাড়লেন, বলতে চান না।
কিছুক্ষণ থেকে বিদায় নিয়ে চলে এলাম। বাড়ি ফিরে আসার মিনিট বিশেক পরেই খবর পাই মৌলবি সাহেব মারা গেছেন।

দ্রষ্টব্যঃ খসরু চৌধুরী লিখিত আমার যত ভৌতিক অভিজ্ঞতা গ্রন্থ থেকে নেয়া।