Tuesday, April 27, 2021

যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়:

 May be an image of text that says 'ফরজ গোসল মিম্মার স্পেশাল'

 

যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়:
১. স্বপ্নদোষ বা উত্তেজনাবশত বীর্যপাত হলে।
২. সহবাসে (সহবাসে বীর্যপাত হোক আর নাই হোক)।
৩. মেয়েদের হায়েয-নিফাস শেষ হলে।
গোসলের ফরজ ৩ টি:
১. গড়গড়া সহ কুলি করা, যাতে পানি গলার হাড় পর্যন্ত পৌছে।
২. হাতে পানি নিয়ে নাকের নরম হাড় পর্যন্ত পানি পৌছানো।
৩. সমস্ত শরীর উত্তম রুপে ধৌত করা।
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম:
গোসলের নিয়ত করা, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে গোসল শুরু করা। দুই হাত কবজি পর্যন্ত ধোওয়া (বুখারী ২৪৮)।
পানি ঢেলে বাম হাত দিয়ে লজ্জাস্থান পরিষ্কার করা (বুখারী ২৫৭)।
বাম হাতটি ভালভাবে ঘষে ধুয়ে নেওয়া (বুখারী ২৬৬)।
নামাজের ওজুর মতো ভালভাবে পূর্ণরূপে ওজু করা। এক্ষেত্রে শুধু পা দুটো বাকি রাখলেও চলবে, যা গোসলের শেষে ধুয়ে ফেলতে হবে। (বুখারী ২৫৭, ২৫৯, ২৬৫)।
মাথায় পানি ঢেলে চুলের গোড়া ভালভাবে আঙ্গুল দিয়ে ভিজানো। (বুখারী ২৫৮)।
পুরো শরীরে পানি ঢালা; প্রথমে ডানে ৩ বার,
পরে বামে ৩ বার, শেষে মাথার উপর ৩ বার। (বুখারী ১৬৮)। (যেন শরীরের কোন অংশ বা কোন লোমও শুকনো না থাকে।পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে। নাভি, বগল ও অন্যান্য কুঁচকানো জায়গায় অবশ্যই পানি ঢালতে হবে)।
গোসলের জায়গা থেকে একটু সরে গিয়ে দুই পা ধোওয়া (বুখারী ২৫৭)।
এটাই হচ্ছে গোসলের পরিপূর্ণ পদ্ধতি। উল্লেখ্য, এইভাবে গোসল করলে এর পরে নামায পড়তে চাইলে আলাদা করে ওযু করতে হবেনা, যদিনা গোসল করার সময় ওযু ভঙ্গের কোনো কারণ ঘটে থাকে।
গোসলের পরে কাপড় চেঞ্জ করলে বা হাঁটুর উপরে কাপড় উঠে গেলে ওযু ভাঙ্গবে না, এটা ওযু ভঙ্গের কারণ না।
(একটা পোস্ট থেকে পরিমার্জন করা)

 

 

 

 

অযু সংক্রান্ত কিছু মাসআলা

 

অযু সংক্রান্ত কিছু মাসআলা।
____ অযুর ফরজ ৪ টি
১/সমস্ত মুখ ধৌত করা।(কপালের চুলের গোড়া হতে থুতনির নীচ পর্যন্ত, এক কানের লতি হতে অন্য কানের লতি পর্যন্ত সমস্ত মুখ ধৌত করা)
২/উভয় হাতের কুনুইসহ ধৌত করা (হাত পরিহীত সকল গহনা আংটি, চুড়ি,ঘড়ি ইত্যাদি নাড়িয়া চাড়িয়া পানি পৌছানো।
৩/ মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা।
৪/উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা। (পায়ের আংগুল ভালভাবে খিলাল করা ও টাখনুর নিচের শক্ত অংশ ডলিয়া ধৌত করা।
_____ অযুর সুন্নত ১৭ টি
১/নিয়্যত করা
২/বিসমিল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহ পড়ে অযু শুরু করা
৩/দু হাতের কব্জিসহ তিনবার ধৌত করা
৪/মিসওয়াক করা।
৫/তিনবার কুলি করা
৬/তিনবার নাকের ভেতরের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌছানো,
৭/প্রতিবার নাক ঝাড়া দেওয়া,
৮/তিন বার মুখ ধোয়া,
৯/দাড়ি খেলাল করা,
১০/উভয় হাত তিনবার ধৌত করা,
১১/সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা,
১২/দু কান মাসেহ করা,
১৩/দু' পা টাখনু সহ ধৌত করা
১৪/ হাত এবং পায়ের আংগুলি খেলাল করা,
১৫/হাত ,মুখ ও পা ভালভাবে ধৌত করা,
১৬/ধারাবাহিক ভাবে সকল অঙ্গ সঙ্গে সঙ্গে ধৌত করা,
১৭/ অযু শেষ করে কালিমাতুশ শাহাদা পড়া,
______অযু ভঙ্গের কারণ ৭ টি
১/পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়া।
২/ শরিরের কোন স্থান হতে রক্ত, পানি, পুজ, বাহির হয়ে গড়িয়ে পড়া,
৩/মুখ ভরিয়া বমি হওয়া,
৪/থুতুর মধ্য রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া,
৫/পাগল,মাতাল অথবা বেহুশ হলে,
৬/চিত বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুমাইলে,
৭/নামাজে উচ্ছ স্বরে হাসিলে।

'শুয়োর' বললে কি ৪০ দিন মুখ নাপাক থাকে?

 No photo description available.

 

সুসংস্কার-১
বিষয়: 'শুয়োর' বললে কি ৪০ দিন মুখ নাপাক থাকে?
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তার ইবাদাতের জন্য। অন্যান্য সকল মাখলুককে সৃষ্টি করেছেন মানুষের খেদমতের জন্য। লক্ষাধিক মাখলুকের মধ্যে 'শুয়োর' ও আল্লাহ তায়ালার সৃষ্ট একটা জীব। শুয়োরকেও আল্লাহ তায়ালা মানুষের কল্যাণেই সৃষ্টি করেছেন।
আমাদের গ্রামাঞ্চলে একটা কথা প্রচলিত আছে। অবশ্য শুধু গ্রাম বাংলার কথা বললে ভুল হবে। শহর বা শহরতলীতে বসবাসরত অনেক উচ্চশিক্ষিত ছেলেমেয়েও এই বিশ্বাস লালন করে যে, 'শুয়োর' শব্দটি একবার উচ্চারণ করলে বা মুখে আনলে ৪০ দিন পর্যন্ত মুখ অপবিত্র (নাপাক) থাকে।
হাস্যকর বিষয় হলো, আমি আমার অনেক বন্ধুকে 'শুয়োর' শব্দটি উচ্চারণ না করে তার পরিবর্তে 'কচু খাওয়া' শব্দটা ব্যবহার করতে দেখেছি। তাদের বিশ্বাস, 'শুয়োর' বলায় মুখ নাপাক হলেও 'কচু খাওয়া' বলায় মুখ নাপাক হয় নাহ। হাহাহা!
অথচ, কুরআন-হাদীস তো দূরের কথা, ইসলামের ত্রিসীমানায়ও এর স্বপক্ষে কোনো দলীল পাওয়া যায় নাহ! আর একটা অতি মজার বিষয় হলো যে, রমজানে সারাদেশের যত জায়গায় খতমে তারাবীহ হয়, সকলেই সূরা বাকারার ১৭৩ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করে। এরপর সূরা মায়িদার ৩ নং আয়াত তিলাওয়াত করে। দুটি আয়াতেই আরবি 'খিনজির' শব্দটি রয়েছে, যার অর্থ শুয়োর! এছাড়া আরও অনেক আয়াতে 'খিনজির' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। প্রতি বছরই এই আয়াতগুলো পড়তে হয়।
এখন তাদের কথা যদি সঠিক ধরে নিই, তাহলে এই আয়াত পাঠ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল হাফেজের মুখ নাপাক হয়ে গেছে। ফলে নাপাক মুখে নামাজ পড়ায় আগামী ৪০ দিন তাদের কারও নামাজ হবে নাহ! অর্থাৎ, কোনোবারই কারও খতম তারাবীহ শুদ্ধ হয় নাহ! মাআজাল্লাহ (আল্লাহ মাফ করুক)।
অন্যদিকে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো প্রায়ই নামাজে সূরা বাকারা, মায়িদা তিলাওয়াত করতেন। সুতরাং প্রতিবারের জন্য যদি ৪০ দিন করে মুখ নাপাক ধরি, তাহলে তো জীবনভর নাপাক মুখেই কাটিয়েছেন তিনি। নাউজুবিল্লাহ! অথচ এমন বিশ্বাস সরাসরি ইমানের সাথে সাংঘর্ষিক।
ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রতি ৭ দিনে এক খতম করতেন, অন্যান্য সাহাবীরাও অধিকহারে কুরআন তিলাওয়াত করতেন, ফলে তাদের ক্ষেত্রেও উপরোক্ত হিসাব প্রযোজ্য। আস্তাগফিরুল্লাহ!
চিন্তা করে দেখেছেন, একটা কুসংস্কারে বিশ্বাস কীভাবে চোখের পলকে আপনার ইমানকে ধ্বংস করে দিতে পারে? এর প্রভাব কতটা গভীর থেকে গভীরে গিয়ে পৌঁছতে পারে?
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন, আমিন।
 
খাদিমুল মুরছালীন রিয়াদ