Wednesday, June 14, 2023

বিদেশে দেশে


দীর্ঘ আট বছর,, প্রবাসে কাটিয়ে যখন কাউ কে না জানিয়ে বাড়িতে আসি সবাই কে সারপ্রাইজ দিবো বলে। বাড়িতে এসে আমি নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে যাই। কারণ আজকে আমার ছোট ভাইয়ের বিয়ে অথচ আমাকে কেউ একবার বলেনি। আমি বাড়িতে আসায় কেউ খুশি হতে পাড়েনি। আমি ভালো ভাবে বুঝতে পারছিলাম। কারণ তাদের চেহারায় খুশির চেয়ে বিরক্ত ভাব টা বেশি ছিলো। সবার সাথে কোশল বিনিময় করে ঘরে যাই।তখন বাবা আমার পিছন পিছন পিছন আসে।

বাবা :কিরে নিলয় হঠাৎ বাড়িতে চলে আসলি যে কোন সমস্যা হইছে। 
— না বাবা সমস্যা হয় নাই তোমাদের দেখতে মন চাইলো তাই চলে আসলাম। 
বাবা : ওওও তা আবার কখন যাবি 

(বাবার কথা শুনে কিছু টা অনেক টা অবাক হলাম এই মাএ বাড়ি আসলে আর এখন জিজ্ঞেস করছে কখন যাবি। একটা মুচকি দিয়ে বললাম) 

– কিছু দিন পর চলে যাবো বাবা,, 
বাবা : ওহ্ এখন না এসে কিছু দিন পর আসতি।এখনো অনেক লেনাদেনা বাকি আছে আমাদের। 

বাবার কথা শুনে কিছু বললাম না,, তখন মা বললো 

মা : কিরে বাবা চলে আসলি কেন কোন সমস্যা হইছে 
— না মা সমস্যা হয় নাই। এমনি আসলাম তোমাদের দেখতে। 
মা : ওও আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে আর,, আজকে আবার রাকিবের বিয়ে তুই যাবি নাহ্ তোর ভাইয়ের সাথে। 
— নাহ্ মা আমি আমি ক্লান্ত,, তাই যাবো নাহ্ 

আমি আমার মা বাবার কথা শুনে অনেক টা অবাক হলাম। বড় ছেলে বিয়ে করে নাই। তাকে জিজ্ঞেস করে ছোট ভাইয়ের বিয়েতে যাবে কি নাহ্।সবাই ছোট ভাইয়ের সাথে চলে গেলো শুধু মা ছাড়া। সারা দিনের জার্নি করে আমি অনেক টা ক্লান্ত।তাই কিছু না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি ঘুম ভাঙ্গে মানুষের হইচই শুনে। বুঝতে পারলাম বউ নিয়ে চলে আসছে এর মধ্যে ছোট ভাইয়ের সাথে কথা বা দেখা হয় নাই। ওই ভাবে শুয়ে আছি আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করেনি আমি কিছু খেয়েছি কি না। একটু পর ছোট বোন আসলো। 

মোন্তাহা : ভাইয়া কেমন আছো তুমি 
— ভালো তুই কেমন আচ্ছিস 
মোন্তাহা : ভালো ভাইয়া তুমি মনে হয় সকাল থেকে কিছু খাওনি 
— আরে তেমন কিছু না খাওয়া হইছে আমার 
মোন্তাহা : ভাইয়া তুমি মিথ্যা টা ও ভালো ভাবে বলতে পারো নাহ্। তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসি। 

মানুষ বলে মা নাকি মুখ দেখে সন্তানের দুঃখ বোঝে কিন্তু আমার বেলা উল্টো। আমার আম্মুর মনে নাই আমি বাড়িতে আসছি।এতো খন যার সাথে কথা বললাম। সে হলো আমার ছোট বোন। এক মাএ আমার ছোট বোন আমার চেহারা দেখে বলতে পারে আমি কি চাই। তাই তো বুঝতে পারছে আমি কিছু খাই নাই।কিছু খন পর খাবার নিয়ে আসলো 

মোন্তাহা : ভাইয়া খাবার টা খেয়ে নাও। 
— হুম। 
মোন্তাহা : ভাইয়া একটা কথা বলি। 
— হুম বল কি বলবি। 
মোন্তাহা : আমার হাতে খাইয়ে দিবো তোমাকে। 
— হুম দে অনেক দিন হলো কারো হাতে খাবার খাই না। 

তার পর ছোট বোন।খাবার খাইয়ে চলে গেলো।রাতের বেলা সবাই আমার ঘরে আসলো। সাথে ছোট ভাই ও ছিলো আম্মু বললো। 

মা : নিলয় কি নিয়ে আসলি আসার সময়। আমাদের একটু দেখা 
— এনে ছিলাম অনেক কিছু। কিন্তু কা কে দিবো বুঝতে পারছি না।

 তখন বাবা বললো। 

বাবা : কা কে দিবি মানে আমরা তোর পরিবার আমাদের কে দিবি। 

 একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম। 

 – তোমরা আমার পরিবার 

বাবা : কেনো 
— নাহ্ এমনিম আমি এখন কিছু খুলতে পারবো নাহ্। দুই দিন পড়ে খোলবো।

তারপর সবাই চলে গেলো কি আজব দুনিয়া। আমার থেকে তাদের কাছে জিনিসের দাম টা বেশি। দেখতে দেখতে দুই দিন কেটে গেলো দুই দিন পর 

চলবে 🥰

ভুল গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Saturday, June 10, 2023

শাইখুনা হারুন ইজহার হাফিযাহুল্লাহর আজকের কুরআনের দারসের ব্যক্তিগত কিছু নোটসঃ

শাইখুনা হারুন ইজহার হাফিযাহুল্লাহর আজকের কুরআনের দারসের ব্যক্তিগত কিছু নোটসঃ 
(আল্ কুরআনের দারস - Al Quraner Dars পেইজে খুব শীঘ্রই ভিডিও আসবে, সবাই যুক্ত হই ইনশাআল্লাহুল আযিয)



১) ওয়াজ করা ও শোনা উভয়ই ফ্যান্টাসি যদি আমলের নিয়্যাত না থাকে, যে পরিমাণ কথাবার্তা প্রচার ও শোনা হচ্ছে সে পরিমাণ পরিবর্তন সমাজে দেখা যাচ্ছেনা। 
২) ব্যক্তিগত পর্যায়ে আবেগ অনুভূতির সাথে কুরআনের চর্চাকে বাড়িয়ে দিতে হবে, কুরআন চর্চার প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ থাকা চাই। 
৩) আল্লাহ তার রাসূল (ﷺ) কে যেভাবে কুরআন চর্চা করিয়েছেনঃ গভীর রাতের আধারে, সেভাবে আমাদেরকেও রাতের বেলা কুরআনকে ধারণ করতে হবে, এই সময়ে কুরআনকে আত্মস্থ করা অধিক সহজ। 
৪) আমরা মানুষদেরকে অনলাইনের মাপকাঠিতে বিচার করি। কিন্তু উচিত ছিল ব্যক্তির অতীত-বর্তমান, আলেমের যোগসূত্র, দাওয়াতি কার্যক্রম ইত্যাদি সম্পর্কে খবর নেওয়া। 
৫) ফেসবুক কেন্দ্রিক মুজাহাদা, যুহদ, দাওয়াত ইত্যাদিকে মাপকাঠি ধরে শাইখের (হারুন ইজহার) কার্যক্রম বিচার করা যাবেনা। অফলাইনে এসে খোঁজ নিয়ে বিচার করুন। 
৬) স্বল্পসংখ্যক লোকদের দিয়ে আল্লাহ তার দ্বীনের কাজ করান। 
৭) উচ্চবিত্ত নিম্নবিত্তের সংঘাতের মধ্যে দিয়ে দ্বীনের কাজ হয়।
৮) হাদিসের ভাষ্যমতে - কথা বলার সময় বেশি সুন্দর করে কৃত্রিমতা মিশ্রিত কথা বলা নিফাকের আলামত। কিছুটা আটকে কথা বলা ও অন্তর থেকে ভেবে ভেবে কথা বলা খাটি ঈমানের আলামত। (তিরমিজি, বুখারীর হাদীসের ব্যাখ্যা অনুসারে)
৯) নবীদের তাদের নবুওয়্যাতের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে হয়। কিন্তু বেলায়েত/ওলী দের বিষয়গুলো স্থায়ী-চূড়ান্ত কিছুনা।
১০) বেশিরভাগ আল্লাহর প্রিয় বান্দারা/ওলীরা লোকচক্ষুর গোপনে থাকে। তাদের থেকে পরোক্ষভাবে দুআ নিতে হবে। (এই পোস্ট যেই পড়বেন Mashwara Official এর কবুলিয়্যাতের জন্যে দুআর দরখাস্ত- এটুকু শাইখের কথা না)
১১) দাওয়াতী মেজাজের মধ্যে সামাজিক অবস্থা বুঝতে হবে। 
১৩) তাত্ত্বিক বইপুস্তক বেশি পড়লে দাঈ হওয়া যায়না।
১৪) কুরআনুল কারীম সমাজবিজ্ঞাণের যাবতীয় কিতাবাদি থেকে শ্রেষ্ঠ। কুরআন সমাজবিজ্ঞাণ শেখার সর্বোত্তম গ্রন্থ। 
১৫) সুরা ইবরাহীম, আয়াত: ২১, ৩১৷ সূরা আহযাব, আয়াত ৪৭, ৪৮, ৬৭। সূরা বাকারাহ, আয়াত: ১৬৬, ১৬৭। এই আয়াতগুলো ভালো করে বুঝে বুঝে পড়বো, সংশ্লিষ্ট তাফসীর পড়বো।
১৬) কেয়ামতে উচ্চবিত্ত নিম্নবিত্ত এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করবে।

১৭) সুরা বাকারাহর ভাষ্যমতে, কিয়ামতের ময়দানে বড়রা ছোটদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আযাব দেখতে পাবে, মূলত দুনিয়ার সকল পারস্পরিক সম্পর্ক ছিন্ন হবে। 
১৮) দুনিয়ার জীবনে হিদায়াত সবার পিছনে ঘুরছে, হিদায়াত আল্লাহ সবার জন্যে সহজ করে দিয়েছেন, হিদায়াত চাইলেই পাওয়া যায়। কিন্তু, কিয়ামতে অনেকেই হিদায়াত চাইবে কিন্তু পাবেনা। কারণ, দুনিয়াতে তুমি হিদায়াত চাওনাই তাই পাওনাই কিন্তু তা তোমার নিকটবর্তী ছিল। আখিরাতে তুমি হিদায়াত চাইবে কিন্তু পাবেনা, কেননা হিদায়াত এখন আর তোমাকে ধরা দিবেনা। 
১৯) পরিবার ও শিক্ষাক্ষেত্রে প্রচুর মেহনত দরকার, দাওয়াতের অন্যতম মূলক্ষেত্র, জাহেলিয়্যাতের উত্থান-পতনের কেন্দ্রবিন্দু। আমরা প্রত্যেকেই জালেম, কেউ আল্লাহর থেকে হিদায়াত চাইনা।
২০) কিয়ামতের অন্য নাম: ইয়াউমুল হাসরাহ, ইয়াউমুল তাগাবুন, ইয়াউমুল তাগাদ। যথাক্রমে বাংলা: আফসোসের দিন, লোকসানের দিন, ডাকাডাকির দিন। 
২১) সবর ও তাওয়াক্কুল চাইতে হয় মুসিবতের সময় আল্লাহর কাছে। যেকোন মুসিবত ক্ষণাস্থায়ী, ঈমানের পরীক্ষা। আল্লাহ প্রদত্ত সবর-তাওয়াক্কুল গুণের তৌফিকেই এথেকে উত্তরণ সম্ভব। 
২২) হাদীসের ভাষ্যমতে, মুমিনদের উদাহরণ ছোট চারাগাছের মতো। চারাগাছ যেমন সবসময় বায়ূপ্রবাহে এদিক-ওদিক হেলেদুলে থাকে, তেমনি মুমিনের জীবনেও ছোটখাটো কষ্ট ও বিপদ লেগেই থাকে। যাতে সে সবসময় আল্লাহমুখী থাকে এবং অসংখ্য সওয়াবের অধিকারী হতে পারে। মুনাফিকের উদাহরণ বৃহৎ বৃক্ষের মতো- সামান্য বাতাস যার গায়ে লাগে না সত্য, কিন্তু প্রমত্ত ঘূর্ণিঝড় তাকে একেবারে সমূলে উৎখাত করে দেয়। যেদিন পড়বে সেদিন আর দাড়াতে পারবেনা। 
২৩) যদি কোন টগবগে যুবক যৌন চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে চায় ও এর জন্যে আল্লাহর কাছে তৌফিক চায় তবে আল্লাহ তার চরিত্র সংরক্ষণের তৌফিক দিবেন। চাইতে হবে, ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। 
২৪) বয়ানে সকলের উদ্দেশ্যে এলান: হে নিম্নবিত্তরা আজ তুমি উচ্চবিত্তদের অমান্য করতে শুরু করো, যেন আখিরাতে বেচে যাও, ফেসে না যাও। 
২৫) সুরা যুখরুফ ৫১ নং আয়াতে ফেরাউন সম্পর্কে আল্লাহ যা বুঝিয়েছেন তা ভালোভাবে বুঝতে হবে। অহংকারবশত মানুষ অন্যকে নিচু চোখে দেখা শুরু করে, এই স্বভাব আমাদের মধ্যে থেকে থাকলে, পরিহার করতে হবে।
২৬) শাইখের প্রশ্ন: ফেরাউনের কথা বারবার কুরআনের আলোচনায় এসেছে কেন? কারাগারে অবস্থানকালীন দুজনের কথোপকথনে এর উত্তরে মুফতি কাজী ইবরাহীম হাফিযাহুল্লাহ বলেছিলেন, ফেরাউনকে প্রতীক হিসেবে দিয়েছেন আল্লাহ যেন কিয়ামত পর্যন্ত সব অহংকারীদের জন্যে তা উজ্জ্বল শিক্ষা হয়ে থাকে।  
২৭) সুলাইমান - বিলকিসের ঘটনা ফেরাউন-মুসার বিপরীত। কেননা তখন উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্তের দিকে দাওয়াত যাচ্ছে।
২৮) বাংলাদেশে আপাতত দাওয়াত ছাড়া আর কোন কর্মপন্থা নেই। আপাতত শব্দটি ভালোভাবে লক্ষণীয়। 
২৯) খেল|ফত কায়েমের টেনশনে অনেকের ফজর, তাহাজ্জুদ আদায় হয়ে উঠেনা। এসব ফেসবুকীয় ফ্যান্টাসি বাদ দিতে হবে। 
৩০) সুরা গাফিরের আয়াত ২৮-৪৫ আয়াত বুঝায় দাওয়াত পরিপূর্ণ ব্যর্থ/বিফলে যায়না। কিছু হলেও কাজ করে। জালিমের উপরে দাওয়াত কাজ না করলেও তার আশেপাশের মানুষদের মাঝে এর প্রভাব পড়বে। 
৩১) দ্বীনের দাওয়াত দিলে কিছু হলেও প্রভাব পড়বে। দাওয়াত দিয়ে কাজ হবেনা যারা বলে তাদের কথার কোন ভিত্তি নেই। তারা বাস্তব জগত থেকে অনেক দূরে। 
৩২) বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা: দাওয়াতের দুর্বলতা।
৩৩) হিদায়াত পুরোটাই আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন, আল্লাহর থেকে চেয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া আছে। দাওয়াত দিতে হবে, ব্যক্তির হিদায়াত চাইতে হবে, এরপরেই কেউ হিদায়াতের পথে আসবে, দ্বীনের পথে চলতে পারবে। 


#HarunIzhar (গুরুত্বপূর্ণ হ্যাশট্যাগ- এক ক্লিকে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পড়ার সুযোগ)