This is not a blog only-you will get almost everything helpful, educational materials and so on here with the passage of time.
Wednesday, December 14, 2011
ফাঁসি !!!! [ Collection of Stories - 14 ]
মা,
কেমন আছো তুমি? আজ থেকে যখনঅনেকদিন পর আবার এই চিঠি পড়বে তখনও মনে করো তোমার ছেলে
তোমার কাছে জানতে চাইছে: তুমি কেমন আছো? মা, তোমাদের এই এত আদরের ছেলেকে বাঁচাবার জন্য তোমরা নানা জায়গায় দৌড়া-দৌড়ি
করেছো, এখান থেকে সেখানে গিয়ে এর-ওর পায়ে ধরেছো। আমার যে
কি খারাপ লেগেছে শুনে, বিশ্বাস করো মা। আমি শুধু তোমাদের
কষ্টই দিয়ে গেলাম, কিছুই করে যেতে পারলাম না, ওরা আমাকে করতে দিল না। আমাকে পারলে ক্ষমা করে দিও মা।
বাবা,
স্কুলে থাকতে বন্ধুদের সাথে পিকনিকে
যাওয়া নিয়ে তোমার সাথে কথা-কাটাকাটি হবার পর সেই যে তুমি আমার সাথে কথা বন্ধ করে
দিলে, আরমাঝখানে ৫টি বছর কথাই বললে না। আমার মনে হত তুমি
বোধহয়আমাকে একটুও পছন্দ কর না। কিন্তু সেদিন যখন ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ৩ জন মূল
অপরাধীর সাথে নিরপরাধ এ আমারও ফাঁসির আদেশ হয়ে গেল,তখন
আদালত প্রাঙ্গণে ছুটে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে তোমার চিৎকার করে কান্না দেখে আমার যে
কি পরিমাণ খারাপ লেগেছে, আমি বলে বোঝাতে পারব না। বাবা,
তুমি যে আমাকে এত ভালবাসো আমি জানতাম না। আমিও তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি
বাবা। আমার জন্য আর কেঁদোনা বাবা,তোমাকে কাঁদতে দেখলে
আমার খুব কষ্ট হয়।
তিতলি,
ছোট্ট বোন আমার, কেমন আছিস?ভাইয়া তো আর তোকে কোনদিন"তেলাপোকা"
বলে ক্ষেপাবে না। আর কোনদিন তোকে অভিযোগ করতে হবে না: "মা, ভাইয়াকে সবসময় বেশি বেশি আদর করে, আমাকে করে না।" যাই হোক, ভাইয়া তো চলে
যাচ্ছি, তোর উপর এখন অনেক দায়িত্ব। মা-বাবাকে দেখে রাখবি,
তারা যেন আমার অভাব বোধ না করে সেই চেষ্টা করবি, কখনো কষ্ট দিবি না। আর হ্যা, ভাইয়ার জন্য মন
খারাপ করবি না। খুব বেশি মন খারাপ হলে ভাববি, ভাইয়া তোর
পাশেই আছে, ঠিক আছে?
নিরপরাধ তরুন ছেলেটিকে একসময় ফাঁসির
মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। ছেলেটির কেন যেন কিছুই বিশ্বাস হতে মন চায় না। মনে হয় সবকিছু
বুঝি শুধুই একটা দু:স্বপ্ন, এখুনি মা'র ধমকে ঘুম ভাঙবে আর দেখবে সে বিছানায় শুয়ে আছে। কিন্তু বাস্তবতা খুব
কঠিন। ছেলেটির বার বার তার মা-বাবা-বোনের শেষবারের মত তার হাত ধরে প্রচন্ড কান্নার
কথা মনে পড়ে। আস্তে আস্তে সে ফাঁসির জায়গাটিতে এসে দাঁড়ায়। তাকে মাথায় কালো কাপড়
পড়িয়ে দেয়া হয়।
হঠাৎ করে সময় যেন থমকে দাঁড়ায়।
প্রতিটা সেকেন্ড যেন একেকটা ঘন্টার মত যেতে থাকে। ছেলেটির জীবনের শেষ সময়ে এসেও
হাল ছেড়ে দিতে ইচ্ছা করে না। মানুষ মৃত্যুর আগে খড়-কুটো ধরেও বাঁচার শেষ চেষ্টা
করে। তার হঠাৎ বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে : আল্লাহ হয়ত শেষ মূহুর্তে তাকে বাঁচাতে
কাউকে না কাউকে পাঠাবেন যার কাছে আদালতের একটা নির্দেশনামা থাকবে যেখানে লেখা
থাকবে "ছেলেটি নির্দোষ, ওকে ছেড়ে দেয়া হোক।"
ভয়ংকর নীরবতার মাঝে এক একটা সেকেন্ড
যেন অনন্তকালহয়ে যেতে থাকে। হঠাৎ ছেলেটি যেন কার পায়ের জুতোর ঠক ঠক শব্দ শুনতে পায়,
কে যেন আসছে!! ছেলেটির মাঝে একটু আশার সঞ্চার দেখা দেয়। সত্যি কি
কেউ আসছে?? নাকি এ তার বেঁচে থাকার তীব্র বাসনা থেকে
সৃষ্ট কল্পনা??
ঠক ঠক ঠক .......এক ব্যাখ্যাতীত উত্তেজনায়
ছেলেটি সেই বাস্তব-অবাস্তবের বেড়াজ্বালে ঘেরা শব্দটি কান পেতে শুনতে
থাকে..............
...............................................
গল্পটি নেয়া : https://www.facebook.com/Golpo143
গল্পটি লিখেছেনঃসপ্নীল
.............................. .....
ঘৃণা [ Collection of Stories - 13 ]
•••••••••••••••••••••••••••••• ••
ফোনে নীলাকে আমি আবার বললাম : নীলা,তোমার মেয়ের খুব জ্বর।
-তোমার মেয়ে বলছ কেন?মেয়ে কি আমার একার?
নীলা খুব বিরক্ত হলো বলে মনে হলো।
ওপাশ থেকে হাসির আওয়াজ ভেসে আসছে,নীলা কাকে যেন হেসে হেসে কি বলছে।বাড়িতে সম্ভবত খুব বড় কোন উৎসব চলছে।
-নীলা,প্লিজ,একটু শুনো.......
-আমি এখন একটু বিজি ,তোমার সাথে পরে কথা বলব।
হঠাৎ ফোনের লাইনটা কেটে যায়।আমি বারবার হ্যালো হ্যালো করতে থাকি।
২ বছর হয়ে গেছে নীলা আমাকে ফেলে তার বড়লোক দু:সম্পর্কের এক চাচাত ভাইকে
বিয়ে করেছে।নীলা আমার মতই গরীব ঘরের সন্তান।নীলার খুব শখ ছিল:তার খুব
সুন্দর একটা নিজের গাড়ি থাকবে,সে সেই গাড়ি নিয়ে যেখানে খুশি সেখানে ঘুরে
বেড়াবে,শপিং করবে,মানুষ অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকবে। তার আরো অনেক শখই
ছিল,কিন্তু আমি তার কোন শখই পূরণ করতে পারিনি। তাই সে যখন একদিন আমাকে ফোন
করে বলল: আমি যেন কোন ঝামেলা না করে ডিভোর্স লেটার এ সাইন করে দেই,আমি তখন
খুব কষ্ট পেলেও মেনে নিয়েছি। কিন্তু সে যে তার ৪ বছরের ছোট মেয়েটিকেও একদম
ভুলে যাবে সেটা আমি ভাবতে পারিনি। সে কি তার নতুন পৃথিবীতে তার মেয়েকে
ঝামেলা মনে করছে?
গত ২ বছর আমি আমার মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে একেকটা দিন
কাটিয়েছি,নীলাকে একটিবারের জন্য ডিস্টার্ব করিনি,আমার সেই অধিকার
নেই। কিন্তু হঠাৎ মেয়েটি খুব অসুস্থ হয়ে গেল,ডাক্তার বলল: জরুরি অপারেশন
করাতে হবে।বেশ কিছু টাকা লাগবে। পরিচিত সবার কাছে গিয়ে যখন ব্যর্থ হলাম,তখন
হঠাৎ নীলার কথা মনে হল। শত হোক নিজের মেয়ে,নীলা কিছু একটা অবশ্যই
করবে।কিন্তু....
হাসপাতালে মেয়ের বেডের পাশে আমি চুপচাপ দাড়িয়ে
রইলাম,পৃথিবীর সব কিছু অর্থহীন মনে হতে থাকল। আমি বেচে থেকেও আমার ছোট
বাচ্চাটির জন্য কিছুই করতেপারলাম না,আমার ভেতরটুকু দুমড়ে-মুচড়ে একেবারে
ভেঙ্গে যেতে থাকে।
৪ বছর পরের কথা।হঠাৎ এক জায়গায় নীলার সাথে দেখা হয়ে
গেল।আগের থেকে অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছে।তাকে দেখে চেনাই যায় না।চেহারায়
আভিজাত্যের এক অন্যরকম আভাছড়িয়ে পড়েছে।
আমাকে দেখে অবাক হয়ে গেল,জিজ্ঞেস করল: কেমন আছো?
আমি আস্তে করে বললাম:ভাল।তুমি?
-আমি এইতো।শপিং করতে এলাম।
বলে অনেক কথা বলতে থাকল।আমি চুপচাপ শুনে যেতেলাগলাম।
হঠাৎ কথা থামিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল: মিতু কেমন আছে?
আমি কিছু না বলে এক তীব্র ঘৃনা নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম,দেখে সে কিছু
একটা বুঝে ফেলে।হঠাৎ তার চোখে মুখে ভয়ংকর এক অপরাধবোধ ফুটে উঠে, কিছু একটা
বলতে চায়,কিন্তু বলতে পারে না।মুখ ঢেকে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে থাকে।
এই ঘটনার ৩ মাস পর আমি খবর পাই যে নীলার নাকি মাথা নষ্ট হয়ে গেছে,তাকে
মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।কোন এক অদৃশ্য জগতেরএক অদৃশ্য বাচ্চার
সাথে খেলা করে তার এখন সময় কাটে।
•••••••••••••••••••••••••••••• ••
গল্পটি নেয়া : https://www.facebook.com/Golpo143
লিখেছেনঃস্বপ্নীল
•••••••••••••••••••••••••••••• ••
Subscribe to:
Posts (Atom)