Wednesday, May 5, 2021

মসজিদের সাথে মহিলাদের আলাদা সালাতের কক্ষ থাকা কি বিদআত?

 No photo description available.

 

 মসজিদের সাথে মহিলাদের আলাদা সালাতের কক্ষ থাকা কি বিদআত?
➖➖➖➖➖➖➖
প্রশ্ন: রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে নারীরা পুরুষদের পেছনে জামাআতে সালাত আদায় করত। কিন্তু বর্তমানে নারীদেরকে মসজিদে আলাদা রুমে বিভক্ত করে সালাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাহলে কি এটা বিদআত হবে না বা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খেলাফ করা হবে না?

উত্তর:
আমাদের জানা দরকার যে, মহিলাদের জন্য নিজ বাড়িতে সালাত আদায় করা অধিক উত্তম। এ ব্যাপারে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তাই তাদের উচিৎ, তাদের বাড়িতে সালাত আদায় করা। এটি তাদের জন্য অধিক সওয়াবের কাজ মসজিদে এসে জামআতে শরিক হওয়ার চেয়ে।

তবে যদি মসজিদে মহিলাদের সালাতের সুব্যবস্থা থাকে, তাহলে তারা ইচ্ছে করলে শর্ত সাপেক্ষে মসজিদে আসতে পারে-যদিও তা উত্তম নয়।
আর মসজিদে এলে জামাআতে দাঁড়ানোর সময় তাদেরকে পার্টিশন ছাড়া সরাসরি পুরুষদের পেছনে দাঁড়াতে হবে -এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগের মসজিদ ব্যবস্থা আমাদের মত এত উন্নত ছিল না। এখনকার মত একতলা, দু তলা, তিন তলা, এত সুন্দর কাপের্ট, মোজাইক, সাজানো গোছানো পারিপাটি ওযুখানা, টয়লেট ইত্যাদি কিছু ছিল না। অনুরূপভাবে মহিলাদের জন্যও আলাদা রুম করা হত না।
কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সমজিদের অবকাঠামোতে পরিবর্তন এসেছে এবং অনেক মসজিদে মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে বা একই মসজিদে মহিলাদেরকে পুরুষদের থেকে আলাদা পার্টিশন দিয়ে আলাদা করা হয়েছেে-যেমন মসজিদে নববীতে। আবার কাবায় তাদের জন্য আলাদা কক্ষ বা তেমন পার্টিশনও নেই।
সুতরাং মসজিদে মহিলাদের জন্য আলাদা রুম থাকা-না থাকা বা পার্টশন দ্বারা পৃথক করা-না করার সাথে বিদআতের কোন সম্পর্ক নেই। কারণ, নামায পড়াটা ইবাদত; আলাদা রুম/পার্টশন ইবাদতের বষয় নয়। এগুলো মসজিদের অবকাঠামোগত বিষয় (যা যুগে যুগে বরিবর্তনশীল)।

সুতরাং মসজিদে মহিলাদের জন্য আলাদা রুম থাকাকে বিদআত বলা বিদআতের সঙ্গা সম্পর্কে অজ্ঞতার শামিল।
আল্লাহু আলাম।
✒✒✒✒✒✒
*উত্তর প্রদানে:*
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

 

 

 

রোগীর জন্য বালিশে বা টেবিলের উপর সেজদা করা ঠিক নয়

 No photo description available.

 রোগীর জন্য বালিশে বা টেবিলের উপর সেজদা করা ঠিক নয়
➖➖➖➖➖➖
প্রশ্ন: আমার মায়ের মাজা ব্যাথার কারণে ডাক্তার তাক উঠাবসা করতে নিষেধ করেছেন। এখন তিনি কিভাবে সালাত আদায় করবেন? এক্ষেত্রে কি তার জন্য সেজদা দেয়া দেওয়ার জন্য টেবিল অথবা বালিশ ব্যবহার করা ঠিক হবে?

উত্তর:
রোগীর যদি উঠাবসা করতে সমস্যা হয় তাহলে বসে সালাত আদায় করতে হবে। বসেও কষ্ট হলে শুয়ে সালাত আদায় করতে হবে এবং ইশারায় রুকু-সেজদায় করতে হবে। বসে সালাত আদায় করার সময় টেবিল, বালিশ বা অন্য কিছুর উপর সেজদা করা ঠিক নয়। কেননা এ মর্মে হাদীস বর্ণিত হয়েছে,
জাবির রা. হতে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক রোগীকে দেখা-শোনা করতে গেলে দেখেলেন, সে ব্যক্তি বালিশের উপর সেজদা করছে। তখন তিনি সেটা নিয়ে ফেলে দিলেন। তারপর সে ব্যক্তি একখণ্ড কাঠ নিয়ে তার উপর সেজাদা করলে তিনি সেটা নিয়েও ফেলে দিলেন এবং বললেন:
صلِّ على الأرضِ إن استطعت ، وإلا فأوم إيماءً ، واجعل سجودَك أخفضَ من
ركوعِك

“যদি পারো মাটিতে স্বালাত আদায় করবে অন্যথায় ইশার করবে। আর সেজদাকে রুকু থেকে বেশি নিচু করবে।” (সিলসিলা সহীহাহ/ হা/৩২৩) আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. এর বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বালিশের উপর সেজদা করতে নিষেধ করেছেন।
এ মর্মে আরও একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

সুতরাং অসুস্থ ব্যক্তি সেজদা করার সময় টেবিল, কাঠ বা বালিশ ব্যবহার করবে না রবং ইশারায় রুকু-সেজদা করবে। আল্লাহু আলাম।

✒✒✒✒✒✒
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব