Saturday, September 23, 2023

ফেমিনিজম ডিবাংকড – 2 :

ফেমিনিজম ডিবাংকড – 2 :
---
হিজাবি ফেমিনিস্ট এবং সিম্প হুজুরগুলার প্রতারণার ধরন বোঝার চেষ্টা করেন,
১. 
ফেমিনিস্টরা জরায়ুর স্বাধীনতার অংশ হিসেবে “বাচ্চা না নেয়ার” কথা বলে। মানে ইচ্ছা হলে বাচ্চা নিবে, না হলে নিবে না, শরীর তার - স্বাধীনতা তার। তবে অতি অবশ্যই তারা বাচ্চা নিতে নিরুৎসাহিত করে, যেসব নারীরা অধিক বাচ্চা নেয় তাদের উপহাস ও তাচ্ছিল্য করে। (হুবহু পোশাকের স্বাধীনতার মত অবস্থা এখানেও)।
এদের বাচ্চা না নেয়ার পেছনে কারণ হল, যাতে যেখানে সেখানে শুতে পারে, কাবিনের টাকা কিংবা ৫০% সম্পদ কেড়ে নিয়ে যখন ইচ্ছা ডিভোর্স দিতে পারে, এতে কোনো পিছুটান না থাকে। একই কারণে তারা ভ্রূণ ঽত্তা‌ নরমালাইজের আন্দোলন করে। 
সন্তান ও পরিবার যে একটা পূর্ণ ও স্ট্যাবল নারীর সিম্বল, এটা সমাজে প্রতিষ্ঠিত থাকা ওইসব ডাইনিদের জন্য বিব্রতকর। আর এই পুরা বিষয়টা একটার সাথে আরেকটা কানেক্টেড। 
এখন সিম্প হুজুরগুলা এই পিওর শয়তানি শ্লোগানের পক্ষাবলম্বন করে কি দেখিয়ে জানেন? বলে, অনেক মানুষের তো চেষ্টা করেও বাচ্চা হয় না, তারা কি খারাপ? কিংবা এটাও বলে, নবীজির অনেক স্ত্রীরও তো বাচ্চা হয়নাই। আস্তাগফিরুল্লাহ। 
আরে নর্দামা, একটা হইলো রুচিবিকৃতদের by choice child free life, এরা তো মানবসভ্যতার দুষমন। আর আরেকটা হল স্বাভাবিক মানুষদের পরিবার নিয়ে জীবনযাপন, চেষ্টার পরেও আল্লাহ দেয়নাই তাই হয়নাই। দুইটা কেমনে এক হয়। 
আল্লাহর রাসুল অধিক সন্তান নিতে উৎসাহ দিয়েছেন, সাহাবায়ে কিরাম প্রচুর পরিমাণে সন্তান নিয়েছেন, পরবর্তি মুসলিমরাও অধিক সন্তান নেয়ার পক্ষে ছিল - থাকবে। এটাই আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি। 
২. পিল, কন*ম আর ন্যাপকিন কোম্পানিগুলো দেখবেন নারী অফিসে কাজ করছে, ভার্সিটিতে ট্যুর দিচ্ছে এসব খুব হাইলাইট বা প্রোমোট করে। কারণ তারা বোঝাতে চায়, এগুলো সিনারিওতে নারী নিষিদ্ধ যৌ*তা করবে, তাদের পণ্য এজন্য সহায়তা করছে। বাংলাদেশের টপ মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি থেকে শুরু করে একদম নিম্নমানের গার্মেন্টস পর্যন্ত এমন কোনো কম্বাইন্ড ফ্রি মিক্সিংওয়ালা কর্মক্ষেত্র নাই, যেখানকার নারীরা সহকর্মির দ্বারা হেনস্তার স্বীকার হয়না, হারাম সম্পর্কে জড়ায় না। আর যেসব দেশ নারীদের রাস্তায় নামানোতে আমাদের চেয়ে ১০০বছর এগিয়ে, তাদের অবস্থাও আরও খারাপ। সেখানে এব্রোশন করেনাই কিংবা পিল খেয়ে ফার্টিলিটি নষ্ট করেনাই এরকম কর্মীওয়ালা অফিস খুঁজে পেতে আপনার কষ্ট হবে।
এই প্রসঙ্গেও রেগুলার ফেমিনিস্টদের মত একই সুরে হিজাবি ফেমিনিস্ট নারীর অর্থনৈতিক স্বাধিনতার পক্ষে বলে। ঘরের কাজে নিরুৎসাহিত করে অফিসের কাজে উদ্ধুদ্ধ করে।
এখন আপনি যখন বলবেন নারীর ঘরে থাকা উচিত। এই সিম্পগুলা বলবে, অনেক নারীর পুরুষ অভিভাবক থাকে না, তাদের বাধ্য হয়ে জীবন ধারণের কাজ করতে হয়, বাইরে যেতে হয়। 
আরে আবর্জনা, তাবাররুজ আর ইকরাহের হালতে বের হওয়া দুইটা কেমনে এক হয়? 
এই যায়গায় ধোঁকা হিসেবে আনে আম্মাজান খাদিজা রা. এর গল্প। কিন্তু বাচ্চা নেয়া বা স্বামীর খেদমতের ক্ষেত্রে কিন্তু খাদিজা রা. এর কথা ভুলেও মুখে আনবে না। এখানে সিম্পগুলা কুৎসিত চেরি পিকিং করে। আরে ভাই! আম্মাজান খাদিজা রা. জাহিলি যুগেও হারাম সম্পর্কে লিপ্ত হননাই, মাহরাম ছাড়া ট্যুর দিয়ে বেড়াননাই। টাকা ইনভেস্ট করে মানুষকে দিয়ে কাজ করাইছেন। এবং বিয়ের পর নবীজির প্রয়োজনে সব সম্পদ অকাতরে খরচ করেছেন।
এই পুরা বিষয়টা বেগম রোকেয়ার উত্তরসূরিরা চেপে যায়। নবিজি খাদিজা রা.এর কোন গুণগুলোর জন্য উনার কথা বারবার মনে করতেন সেটা ভুলেও উল্লেখ করে না।
৩. তৃতীয় উদাহরণ হইলো, ভার্সিটির পড়াশোনা। বাংলাদেশের ভার্সিটিগুলার অবস্থা হচ্ছে, শতকরা কমপক্ষে ৬০-৭০% ছেলে-মেয়ে হারাম রিলেশনে জড়িত। এবং এর বড় একটা অংশ ভার্সিটিতে ভার্জিনিটিও হারিয়ে ফেলে। এমনকি কিছুদিন আগে খবর বের হল, ফিমেল অনলি কলেজের মেয়েদেরও বড় ভাইদের রুমে যেতে হয় খুশি করতে। আর পড়াশোনার কোয়ালিটি তো ভাই…। উপরন্তু ভার্সিটিতে গিয়ে ইরতিদাদ বা যান্দাকায় আক্রান্ত হবার পরিমানও নারীদের মধ্যে বেশ উদ্বেগজনক। এরপরে দেখা যায়, পুরুষ টিচারদের চেয়ে নারী শিক্ষকগুলাই বেশি অত্যাচার করে।
এখন এই নাপাক গান্ধা অনিরাপদ পরিবেশ থেকে যদি আপনি সন্তানদের বাচানোর কথা বলেন, আকরাম নদভির মত সিম্পগুলা হাদিসের নারী রাবিদের লিস্ট এনে বলবে, এই দেখো মুসলিম নারীরা জ্ঞান চর্চা করসে, মুহাদ্দিসা হইসে। 
কত্ত বড় শয়তান হলে মুসলিম খিলাফার স্বর্ণযুগে নিজের ঘরে বসে কিংবা নিজের পরিবারের সাথে থেকে, কিংবা মসজিদে নববিতে নবীজির স্ত্রীর কামরায় বসে ইলম শেখার সাথে এই সব ভার্সিটির নাপাক পরিবেশের আজগুবি পড়াশোনার তুলনা করতে পারে চিন্তা করেন। 
… … …
এই অসততা ও প্রতারণার লিস্ট অনেক লম্বা। ফেমিনিজমের মূল প্যাটার্নই হচ্ছে, নারী অধিকারের ধোয়া তুলে নারীবাদ পুশ করা, প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য এদের প্রতিটা ক্লেইমের মধ্যে দুর্বল, অপারগ বা মজলুম নারীদের দুরাবস্থা দেখানো হয়। কিন্তু এর পেছনে লুকানো থাকবে নারীকে পরিবারের নিরাপদ গণ্ডি থেকে রাস্তায় বের করা আর পুরুষের সাথে অসম ধ্বংসাত্মক প্রতিযোগিতায় নামানোর চেষ্টা। যাতে শ্রমবাজারে কর্মীর সাপ্লাই বেশি থাকে। কম খরচে পুঁজিবাদের অধিক কার্যসিদ্ধি হয়।
এই পুরো ফাঁদটার মলাটে থাকে ‘জীবনকে আরও বেশি – আরেকটু বেশি উপভোগ করা’র তাড়না। অবাধ যৌনতা ও অর্থলোভের হাতছানি। 
ভাই, আমাদেরকে জাগতে হবে। নিজেদের বাচতে হবে, পরিবারগুলোকে বাচাতে হবে। আমাদের সন্তানদেরকে মুসলিম হিসেবে, আল্লাহর প্রতি সমর্পিত হিসেবে বড় করতে হবে।
এটা আমাদের কাছে দুনিয়ার হক। এই হক আদায় করতে হবে।
 আল্লাহ যেন আমাদের সহায় হয়।

Friday, September 22, 2023

কিভাবে বেশী প্রোডাক্টিভ হওয়া যায়, কাজ করার মোটিভেশন আনা যায় অথবা Procrastination দূর করা যায়।

#২২

আমি আগের মত প্রতিটা ইমেইলের লম্বা রিপ্লাই দেয়ার সময় পাচ্ছি না, তবে ইমেইল দেখেছি আর শর্টকাটে হলেও রিপ্লাই দিয়ে দিব পরের সপ্তাহে। একটা প্রশ্ন রিপিটেডলি আসে সেটা হচ্ছে কিভাবে বেশী প্রোডাক্টিভ হওয়া যায়, কাজ করার মোটিভেশন আনা যায় অথবা Procrastination দূর করা যায়। 

আগেই বলে নেই আমি কোন বোদ্ধা বা স্কলার না। কোন বইতে বা পোডকাস্টে দেখেছি এমন কিছু টিপস জানি, দুইটা টেকনিক বলছি যেগুলো আমার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করেছে   

১) ৫ সেকেন্ড রুল

কোন কাজ করার সময় হলে ৫ সেকেন্ডের মধ্যেই সেটা করা শুরু করে দিতে হবে। ১৫ টা পুশাপ দিবেন? ৫-৪-৩-২-১ বলে শুরু করে দিন। বই পড়ার প্ল্যান ছিল? দ্রুত বইটা খুলে প্রথম চ্যাপ্টার থেকে পড়া শুরু করুন। আজান দিয়েছে? এখনই অজু করতে দৌড় দিন। কোন সেকেন্ড থট ব্রেইনকে দিবেন না, নাহলে ব্রেইন পালাতে চাইবে [1]। 

ব্রেইন এমন ভাবেই তৈরি যে এটা আপনাকে অজানা বিপদ থেকে সেইভ করতে চায়, আপনি যখন নতুন কোন হ্যাবিট তৈরি করতে চান বা কনফোর্ট জোনের বাইরে বেরুতে চান তখন মস্তিষ্ক নানা রকম দুশ্চিন্তা আর টক্সিক সেলফ টক তৈরি করে আপনাকে ওয়ার্নিং দিবে। এজন্যে চেঞ্জ আনাটা এত কঠিন।  

৫ সেকেন্ডের বেশী দেরী করা মানে ব্রেইনকে অদরকারি ওভার এনালাইজ করার সুযোগ দেয়া। ভয়, কনফিউশন আর হেইজিটেশন মাথায় ভর করতে দেয়া। ধরুন আপনি ঠিক করেছেন বিকালে পার্কে দৌড়াতে যাবেন, আপনার ব্রেইন প্রথমে সায় দিবে। তারপর আপনি একটু অপেক্ষা করছেন আর ততক্ষণে মনে হলো আপনার বাইরে যাবার গেঞ্জিটার রঙ আসলে ক্ষ্যাত বা আপনার একটা রানিং শু কেনার পরেই দৌড়ানো শুরু করা উচিত। এভাবে নানারকম চিন্তার ফিকিরে পরে আপনি ফেসবুক স্ক্রল শুরু করে দিলেন, আপনার এই সপ্তাহে আর দৌড়ানোই হলো না। 

এডাল্ট হিসেবে আপনি জানেন কোন সময়ে আপনার কি করা উচিত, সময়ের আগে কাজটা নিয়ে অতশত ভাববেন না। সময় হবে, এলার্ম বাজবে তখন নিজেকে একটা কাউন্ট ডাউনদিন, 5-4-3-2-1 তারপর রকেটের মত নিজেকে কাজের দিকে লঞ্চ করুন- নো সেকেন্ড থট! এই কাউন্ট ডাউনটা গুরুত্বপূর্ণ, এটা প্রিফ্রনটাল কর্টেক্সকে জাগ্রত করবে। 

একটা সময়ে আমি এলার্ম দেয়ার পরেও ঘুম থেকে উঠতে পারতাম না। এই মেথডে আমি এক দিনের মধ্যেই সকালে উঠেতে পেরেছি। এলার্ম শুনলেই কোন চিন্তা না করে 5-4-3-2-1 বলে উঠে বিছানা থেকে উঠে বসতাম। এসম্পর্কে আরো জানতে মেল রবিন্সের “The 5 second rule” বইটা পড়তে পারেন।       
 
২) রিভার্স সাইকোলজি 

এই পদ্ধতিটা শুধু তাদের জন্য যারা কোন ভাবেই প্রোক্রাস্টিনেশন থেকে বের হতে পারছেন না। প্রথমে মনে রাখুন যে আপনার ব্রেইন সার্ভাইবলের জন্য অসাধারণ একটা যন্ত্র, হঠাৎ করে সামনে একটা জংলি ভাল্লুক পড়লে আপনি হয়তো ট্রেইনিং ছাড়াই হাই জাম্প দিতে পারবেন [2]। এটা মস্তিষ্কের কামাল, মস্তিষ্ক মাসেলকে ট্রিগার করে। প্রথমেই বলেছি ব্রেইন চায় আপনি বেঁচে থাকুন, তাই কমফোর্ট জোন বা ডেইলি রুটিনের বাইরে অজানা, অচেনা কোন অভ্যাস ফর্ম করতে প্রচুর রেজিস্ট করে।  

দেখুন আপনি আপনার লক্ষ্য নিয়ে সিরিয়াস এতে সন্দেহ নাই। কিন্তু আপনার দুষ্ট ব্রেইন আপনাকে প্রোগ্রাম করে রেখেছে “অনেক সময় আছে, পরে কাজ করা যাবে”, এজন্যেই আপনি হাই তুলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আবার ডেডলাইনের একেবারে আগের দিন আপনি সুপারম্যানের মত কাজ করছেন। এই অভ্যাস থেকে বাঁচতে ব্রেইনকে নেগেটিভ প্রোগ্রামিং করতে হবে। 

আপনি যদি একজন ক্রোনিক প্রোক্রাস্টিনেটর হয়ে থাকেন আর আপনার কাছে সময় থাকে তাহলে, “ডেইলি দৈনিক ৬ ঘন্টা পড়ব” ভাবার কোন দরকার নাই। ভাবুন “জাস্ট ১ ঘন্টা পড়ব, এর বাইরে এক মূহুর্তও না”। এক ঘন্টা পড়ার পর যতই পড়ার ইচ্ছা করুক না কেন পড়বেন না। এতে আপনার ব্রেইন ভয় পাবে, পড়ার আগ্রহ বাড়বে। 

কারণ ব্রেইন তখন রিভার্স ক্যালকুলেশন করবে, আগে নিশ্চিত ভাবে ভাবত যে ৬ ঘন্টা পড়ে সব শেষ হয়ে যাবে। এখন চিন্তা করবে ১ ঘন্টা পড়ে তো সিলেবাস শেষ হবে না। এক সপ্তাহ পরে পড়ার সময় আরো এক ঘন্টা বাড়ান, এভাবে দেখবেন আপনি পড়ার টেনশনে একসময় আগের থেকে বেশীই পড়ছেন। 

এই টেকনিক আমি ফলো করেছিলাম একাডেমিক রাইটিং লেখার সময়টাতে। এক সপ্তাহের মধ্যে আমার প্রোডাক্টিভিটি বুস্ট করেছিল। এই পদ্ধতিতে চিট করবেন না, বেশী পড়তে ইচ্ছা হলেই পড়তে বসবেন না। কয়েকদিন অপেক্ষা করুন তারপর পড়ার সময় বাড়ান। ব্রেইনকে রিয়াক্ট করার সুযোগটা দিন। 

একটা এক্সট্রা টিপ হলো- কাজ করতে মোটিভেশন না পেলেও কাজটা শুরু করে দেয়া উচিত। কারণ কাজ করতে করতে মোটিভেশন একসময় চলে আসবে। কাজটা শুরু করে কিছুটা এগিয়ে গেলে যে ডোপামিন রিলিজ হবে সেটা থেকেই কাজটা শেষ করার মোটিভেশন পাওয়া যাবে [3]। 

1. The 5 Second Rule - Mel Robbins

2. https://www.scientificamerican.com/article/extreme-fear-superhuman/ 

3. The Subtle Art of Not Giving a F*ck - Mark Manson


- Omar Bin Mahtab