Wednesday, April 28, 2021

ফাতেমা রা. কে মা বলা কি ঠিক?

 May be an image of text that says 'ফাতেমা রা. কি আমাদের মা?'

 

প্রশ্ন: ফাতেমা রা. কে মা বলা কি ঠিক?
উত্তর:
◈ ফাতেমা রা. কে মা বলা ঠিক নয়। কেননা কুরআনে আল্লাহ তাআলা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রীদেরকে মুমিনদের ‘মা’ হিসেবে সম্বোধন করেছেন-যাদেরকে বলা হয় ‘উম্মাহাতুল মুমিনীন’। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ
“আর তাঁর স্ত্রীগণ তাদের (মুমিনদের) মা।” (সূরা আহযাব: ৬)
সুতরাং যারা আমাদের মা তাদের কন্যাদেরকেও মা বলা কিভাবে সঙ্গত হতে পারে?
◈ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কন্যাগণ মুমিনদের মা হলে তো হারামের পর্যায়ে চলে যাবে। অথচ আলী (রা.), ওসমান (রা.) তাঁর মেয়েদেরকে বিয়ে করেছেন। যদি তাঁরা মা হতেন তাহলে এই উম্মতের কারো জন্য তাঁদেরকে বিয়ে করা বৈধ হতো না-যেমনটি বিয়ে করা হারাম ছিলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রীদেরকে।
◈ তাছাড়া ফাতিমা রা. কে কুরআন, হাদিস, সাহাবিদের বক্তব্য, তাবেঈনদের বক্তব্য, যুগে যুগে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ এর অগণিত মুহাদ্দিস মুফাফসির কেউ মা বলে সম্বোধন করেছেন বলে ইতিহাস পাওয়া যায় না। কোনও হাদিসের কিতাব, সিরাতের কিতাব বা ইসলামের ইতিহাসের কিতাবে তাঁকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে বলে জানা নাই।
মূলত: রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম এর কন্যা ফাতেমা রা. কে মা বলার প্রচলন শিয়াদের প্রভাবে এসেছে। সুতরাং তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
সুতরাং যারা যুক্তি দেখান যে, সম্মানের স্বার্থে ফাতেমা রা.কে ‘মা’ বলায় দোষ নেই। আমার দৃষ্টিতে এটি একটি খোঁড়া যুক্তি। এ দ্বারা মূলত: শিয়াদের দল ভারী করা হয়। আল্লাহ ক্ষমা করুন। আমীন।
আল্লাহু আলাম।
—————–
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

 

 

যে ব্যাক্তি কাউকে অপমান করার ক্ষেত্রে তার [বৃহত্তর] জনগোষ্ঠীকেও সাব্যস্ত করে

 No photo description available.

 

আমরা বলি, "বরিশাইল্লারা খারাপ", "মানুষ দুই প্রকারঃ ভালো মানুষ আর নোয়াখাইল্লা", "কুমিল্লার লোক ইতর", "চাটগাঁইয়ারা নিজেদের দেশী লোক ছাড়া কিছু বুঝে না", "উত্তরবংগের লোক মফিজ" ইত্যাদি।
আর 'আইশা (রাঃ) এর বর্ণনা মতে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, "মিথ্যাবাদীদের মধ্যে নিকৃষ্টতম হচ্ছেঃ যে ব্যাক্তি কাউকে অপমান করার ক্ষেত্রে তার [বৃহত্তর] জনগোষ্ঠীকেও সাব্যস্ত করে, আর যে ব্যাক্তি তার পিতাকে অস্বীকার করে আর মাতার প্রতি ব্যাভিচারের [মিথ্যা] অপবাদ দেয়"। (সুনান ইবনে মাজাহ ৩৭৬১)
অর্থাৎ আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমাদের দল/গোষ্ঠীকে সাব্যস্ত করা বিষয়গুলো অধিকাংশের ক্ষেত্রেই ঠিক না ভুল সেই প্রসংগেই যান নি। প্রথমেই একে মিথ্যার অন্তর্ভুক্ত করেছেন, আর দয়া করে লক্ষ্য করুন আর কোন ধরণের মিথ্যার সাথে একে এক কাতারে ফেলেছেন।
আমাদের একটু চিন্তা করা উচিত, আমরা যখন উপরের কথাগুলো বলি, তখন ভেবে দেখি কিনা যে বরিশাল নোয়াখালীর কোটি লোকের যদি একজনও ভালো হয়, চাটগাঁইয়া কোটি লোকের যদি একজনও সব নির্বিশেষে নিঃস্বার্থ উপকারী হয়, কুমিল্লার যদি একজনও ভদ্র হয় আর উত্তরবংগের যদি একজনও জ্ঞানবুদ্ধি সম্পন্ন হয়, তাহলে সামান্য মুখের সুখ করার জন্য সেই একজন একজন মানুষগুলোকে ঐ অপমানের মধ্যে ফেলার জন্য শেষ দিনের বিচারক আল্লাহ তায়া'লা যে হিসাব দিতে বলবেন, সেদিন সেই হিসাব দেওয়ার হ্যাডম আমাদের থাকবে কিনা।
আল্লাহ 'আজ্জা ওয়াজাল আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন, সঠিক পথ দেখিয়ে দিন আর, শেষ বিচারের পরাজয় থেকে রক্ষা করুন, আমিন।
- আবদুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ
সূরা হুজুরাতের আয়াতটি খেয়াল করি - কে কোন অঞ্চল, কোন দেশ তা মোটেও বিবেচ্য নয়; মূল বিবেচ্য হলো 'তাকওয়া'।
“হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে দল ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যেন তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে (তোমাদের মধ্যে) সর্বাপেক্ষা ধার্মিক ও আল্লাহভীরু ব্যক্তিই তোমাদের মধ্যে অধিকতর সম্মানিত।” - সূরা হুজুরাতঃ ১৩
অর্থাৎ দল-গোত্রের পার্থক্য কেবলমাত্র পারস্পারিক পরিচয় লাভের জন্যেই করা হয়েছে; পরস্পরের হিংসা-দ্বেষ, গৌরব-অহংকার বা ঝগড়া বিবাদ করার উদ্দেশ্য নয়। এ বাহ্যিক পার্থক্য ও বিরোধের কারণে মানবতার মৌলিক ঐক্য ভুলে যাওয়া সংগত হবে না। তোমাদের পরস্পরের মধ্যে পার্থক্য করার একমাত্র মাপকাঠি হচ্ছে নৈতিক চরিত্র, বাস্তব কার্যকলাপ এবং সততা ও পাপপ্রবণতা।
.
.
📝লেখা: Arafat