Tuesday, May 20, 2025

অল্প হলেও শুরু করুন

জীবন থেকে একটা ব্যাপার খুব ভালো করে শিখেছি, সেটা হচ্ছে "Less is more". এই ব্যাপারটা আমি নিজেও ভালোমত শিখতে ও রপ্ত করতে চাচ্ছি, তবে যতটা সহজ মনে হয় ততটা সহজ আসলে না। 

উদাহরণ দিয়ে বলি, মনে করুন আপনার সারাদিনে কিছুই করার নেই। আপনাকে কোথাও থেকে জাস্ট 'একটা' পৃষ্ঠা এনে দিলাম কোন একটা খটমটে নন ফিকশন বইয়ের। মাত্র এক পৃষ্ঠা পড়তে হবে ভেবে আপনি নিমিষেই শেষ করে ফেললেন। এভাবে প্রতিদিন আপনাকে দুই পেইজ তিন পেইজ করে দিতে থাকলাম। মাস শেষে দেখা গেল আপনার পুরো বইটি পড়া শেষ, কোন রকম ঘাম ঝরানো ছাড়াই। 

দেখুন একমাসে একটা বই হয়তো আপনাদের অনেকের জন্যই অনেক কম। বই পড়ার প্ল্যান রাখলে হয়তো এক মাসে কয়েকটি নন ফিকশন পড়ার প্ল্যান করা হয়। তবে বাস্তবেই এক বছরে কয়টি বইয়ের মলাটের ভেতরের জিনিস ঘেটে দেখা হয়েছে একটু ভেবে দেখুন তো! কতদিন এমন হয়েছে যে পড়তে বসব বসব করে রাত হতে গিয়েছে; তারপর নিজেকে বুঝিয়েছেন আজ আর না, কালকে থেকে এক্কেবারে হুড়মুড় করে পড়া হবে? মাসের অর্ধেকে চলে এসেছেন, তাই ভাবছেন পড়ের মাস থেকে জিম জয়েন করবেন। তারপরের মাস এসেছে এক বছর পরে, সাথে বোনাস হিসেবে এসেছে ১২ কেজি এক্সট্রা ওয়েট। এরকম হয় কিনা বলেন? 

এটার সলুশন হচ্ছে ব্রেইনকে কখনোই পালানোর সুযোগ দিবেন না। পালানোর সুযোগ দিলেই লাই পেয়ে এটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। যদি মাসের ৫ দিনও বাকি থাকে, তবুও জিম জয়েন করেন। সারা বছর প্রিপারেশন নেন নাই, আর ২ সপ্তাহ বাকি আছে এক্সামের। ভাবছেন পরের বছর দিবেন? না! ওই দুই সপ্তাহই পড়েন ভালোমতন। নেক্সট ইয়ার আবার দিয়েন। আপনি নিজের কাজ শেষ না করে সহজ কোন অল্টারনেটিভ খুঁজতে যাবেন তখন আপনার মানসিক ডিফেন্স সিস্টেম রিলাক্সড হয়ে যাবে, পরের বছরও দেখবেন একই হাল হবে। এজন্য রাতে ঘুমানোর আগে আধা ঘন্টা বাকি থাকলেও ফেসবুক আর ইন্সটা ঢু না মেরে কিছু না কিছু কাজ করে তারপর ঘুমান। 

দৌড়ানোর প্ল্যান করেছেন কোন সমস্যা নাই, তবে দৌড়াতে না পারলে আজকে হাটিহাটি পাপা করে এগিয়ে যান একদিন। লজ্জার কিছু নাই। বাসের জ্যামে বসে না থেকে ক্লাসের এসাইনমেন্টগুলো একনজর দেখে নিন। চিন্তা করেন এগুলো নিয়ে। সকালে জগিং না করতে পারলে যখন উঠেছেন তখনই তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে পড়ুন টাইম থাকলে। আগামীকাল তো আছেই, আগামীকালও কাজ হবে। তাই বলে আজকের ১০ মিনিটও ছাড় দিবেন না। ১০০ টা বই ডাউনলোড না দিয়ে ১০ টা দিন, আর একটা পড়া শুরু করেন এখুনি। এই ১০ টার মধ্যে অন্তত পছন্দ মত তিনটা বই নিজের পড়া শেষ না করে নতুন কোন বই আর ডাউনলোড দিবেন না। এভাবে কাজ করতে থাকলে এক সময় দেখবেন শুধু গুরুত্বপূর্ণ বইগুলোই ডাউনলোড দেয়া হচ্ছে। "কোন এক মায়াময় সন্ধায়, জোনাকির আলোর সাথে লণ্ঠন জ্বালিয়ে ১০০ টি বই পড়া হবে"- এমন দূরাশা দেখা বাদ দিয়ে দিবেন। 

জীবনে সময় খুব কম। যখন যেটা চিন্তা করবেন সেটা তখনই ইমপ্লিমেন্ট করে ফেলেন। যদি কালকে থেকে জগিং এর ইচ্ছা থাকে তাহলে আজকেই ট্র্যাক শু কিনে নেন। আর ১৫ মিনিট দৌড়াতে পারলেও নিজেকে বাহ বাহ দেন। কম হলেও কাজ করেন। শুধু এই কাজ থেকে পালানোর অভ্যাসটা ঝেড়ে ফেলেন আজকে থেকে, তারপর দেখেন কি হয়। মেল রবিন্সের "দ্যা ফাইভ সেকেন্ড রুল" আসলে অনেকটা এভাবেই কাজ করে। Procrastination দূর করতে এর থেকে মোক্ষম উপায় আর পাই নি আমি। আপনাদের সাথেও শেয়ার করছি ঃ

আপনি যদি জানেন যে এখন আপনাকে অমুক কাজটি করতে হবে, তবে আর দ্বিতীয় কোন চিন্তা করবেন না। মনে মনে রকেট লঞ্চিং এর মত কাউন্টডাউন শুরু করেন, ৫...৪....৩....২....১...০ আর ব্যাস এক্ষুনি কাজটি করতে বসে যান। এর বেশী সময় নিলেই মস্তিষ্ক একটা অজুহাত দাড়া করিয়ে দিবে আর আপনি পালানোর একটি রাস্তা পেয়ে যাবেন। 

 [আঞ্চলিক আর চলিতের দূষণের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি, বাংলা আমার খুব একটা ভালো হয় না তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছি আরকি]

Omar Bin Mathtab vai