Wednesday, April 28, 2021

ঘুম যদি না আসে!

 

ঘুম যদি না আসে!
দিনভর পরিশ্রমের শেষে আমরা বিছানায় আশ্রয় খুঁজে ফিরি৷ বালিশে মাথা রেখে ঝেড়ে ফেলতে চাই সকল ক্লান্তি, সারদিনের শ্রান্তি এবং যাবতীয় ক্লেদ৷ এবং ঘুম এমনই এক লিটমাস পেপার যা ক্ষার শুষে নেবার মতো করে শরীর থেকে টেনে বের করে নেয় যাবতীয় ক্লান্তি৷ ঘুম হলো শান্তির আলয়৷ যেখানে আশ্রয় নিলে আপনার দেহ-মনে ফিরে আসবে প্রশান্তি৷ আপনি হারানো কর্মোদ্দীপনা নতুন করে ফিরে পাবেন ঘুমের জগতে৷ রাব্বে কারীম বলেছেন— আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী৷
(সূরা নাবা)
কিন্তু তার জন্য ঘুমটা তো জরুরী৷ যদি আপনার চোখে ঘুমই নেমে না আসে! চোখ বুজে রইলেন সারারাত৷ কিন্তু ঘুমের শীতল জগতে প্রবেশই করতে পারলেন না! তবে! এমন হলে শরীরের অবসাদ দূর হবে কী উপায়ে? শরীরে হারানো এনার্জি ফিরে পেতে ঘুম তো আসতে হবে!
চিকিৎসকেরা বলেন— মানুষের জটিল সব রোগের সূত্রপাত ঠিকমতো এবং পরিমিত ঘুম না হওয়া থেকে৷ মানুষের সুস্থতার জন্য যতটুকু ঘুম দরকার সেটা না হওয়ার কারণে কঠিন সব ব্যাধির সূচনা হয়ে থাকে৷
সত্যিই তাই৷ আমরা আজ এমন দৌড়ঝাপে মেতে উঠেছি সময় করে ঘুমোনো ভুলে গেছি৷ দিনভর অর্জিত সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা-দুশ্চিন্তা মাথায় পুরে নিয়ে বিছানায় যখন যাই চোখে ঘুম নামে না আর৷ অস্থির পার হয়ে যায় আমাদের নির্ঘুম রাত৷ আর আমাদের এতসব অস্থিরতা-উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার পেছনের কারণ সন্ধানে নামলে দেখবেন একটি বড় কারণ— আমাদের ভেতরে লুকিয়ে রাখা হিংসা৷ অপরের প্রতি বিদ্বেষ৷ এবং আমাদের ঈর্ষাপরায়ণতা৷ নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাই সহজেই চোখে ঘুম নেমে আসার প্রেসক্রিপশন দিচ্ছেন ঘুমোতে যাবার আগে সব ঈর্ষা-হিংসা-দ্বেষ মন থেকে ঝেড়ে ফেলা৷
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর খাদেম হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলছেন—
হে বৎস! তুমি যদি সকাল-সন্ধ্যা এমনভাবে কাটাতে পার যে, তোমার অন্তরে কারো প্রতি কোন রকম বিদ্বেষ নেই, তাহলে তাই কর।
এ কথা বলার পর নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে আবার বলছেন—
হে বৎস! এটা হল আমার সুন্নত। আর যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে জীবিত করল সে আমাকেই ভাল বাসল, আর যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসল সে তো জান্নাতে আমার সাথেই থাকবে।
(তিরমিযী)
এ হাদীসকে সামনে রেখে উলামায়ে কেরাম বলেছেন— হিংসামুক্ত রাত্রি যাপন করলে রাতের ঘুম হবে আরামদায়ক৷ তা ছাড়া এটা তো সবাই স্বীকার করবে যে— কারুর প্রতি হিংসা বিদ্বেষ যে হৃদয়ে থাকে না সে হৃদয়ের মতো প্রশান্ত হয় না আর কোনো হৃদয়৷ আর নিরবচ্ছিন্ন ঘুম তো প্রশান্ত হৃদয়বানের চোখেই নেমে আসে৷
ঘুম আসতে যদি বিলম্ব হয়; যদি এমন হয় যে, অনেকটা সময় বিছানায় গড়াগড়ি করে কেটে যাচ্ছে কিন্তু তারপরও চোখে ঘুম নেমে আসছে না তখন আমরা কী করবো! এমতাবস্থার একটি চিকিৎসা আমার নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জীবনে পাই৷
গল্পটি বিখ্যাত সাহাবী খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর৷ একবার তিনি নবিজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে এসে জানালেন যে, দুশ্চিন্তা ও স্নায়ুবিক চাপের কারণে রাতে তার ঘুম হয় না৷ তখন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে একটি দুয়াবাক্য শিখিয়ে দিলেন৷ আর বললেন— যখন ঘুমোনোর জন্য বিছানায় যাবে তখন দুয়াটি পাঠ করবে৷
দুয়া বাক্যটি হলো—
اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ السَّبْعِ وَمَا أَظَلَّتْ، وَرَبَّ الْأَرَضِينَ وَمَا أَقَلَّتْ، وَرَبَّ الشَّيَاطِينِ وَمَا أَضَلَّتْ، كُنْ لِي جَارًا مِنْ شَرِّ خَلْقِكَ كُلِّهِمْ جَمِيعًا ؛ أَنْ يَفْرُطَ عَلَيَّ أَحَدٌ مِنْهُمْ، أَوْ أَنْ يَبْغِيَ، عَزَّ جَارُكَ، وَجَلَّ ثَنَاؤُكَ، وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা রাব্বিস সামা ওয়াতিসসাব'ই ওয়া মা আজাল্লাত৷ ওয়া রাব্বাল আরাদীনা ওয়া মা আক্বাল্লাত৷ ওয়া রাব্বাশ শায়াত্বীনা ওয়া মা আদ্বাল্লাত৷ কুন লী জারান মিন শাররি খালকিকা কুল্লিহিম জামিআ' আয় য়াফরুতা আলাইয়া আহাদুম মিনহুম আও আয় য়াবগিয়া৷ আজ্জা যা রুক৷ ওয়া জাল্লা ছানাউক৷ ওয়ালা ইলাহা গইরুক৷ ওয়ালা ইলাহা ইল্লা আনতা৷
তরজমা:
হে আল্লাহ্‌! সাত আকাশের প্রতিপালক এবং যা কিছুর উপর তা ছায়া বিস্তার করেছে, সাত যমিনের প্রতিপালক এবং যা কিছু তা উত্থাপন করেছে, আর শাইতানদের প্রতিপালক এবং এরা যাদেরকে বিপথগামী করেছে! তুমি আমাকে তোমার সকল সৃষ্টিকুলের খারাবী হতে রক্ষার জন্য আমার প্রতিবেশী হয়ে যাও, যাতে সেগুলোর কোনটি আমার উপর বাড়াবাড়ি করতে না পারে অথবা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে না পারে। সম্মানিত তোমার প্রতিবেশী, সুমহান তোমার প্রশংসা। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তুমি ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই।
(তিরমিযী)
চোখবুজে আছেন অনেক সময়৷ কিন্তু ঘুম আসছেই না৷ এমন রোগ নিয়ে মনোবিজ্ঞানিদের কাছে গেলে তারা আপনাকে চিকিৎসা হিসাবে একটা কাজ দেবে৷ তারা বলবে— ঘুম না এলে চোখ বন্ধ করে সংখ্যা কাউন্ট করতে৷ অনেকে অনেক পদ্ধতিতে সংখ্যা গণনা করার পরামর্শ আপনাকে দেবে৷ এবং আপনি দেখবেন যে, সংখ্যা গুনতে গুনতে কখন যেন আপনি ঘুমের কোলে ঢলে পড়েছেন৷
আসলে এখানে বিষয়টা কিন্তু সংখ্যার নয়৷ মনোচিকিৎসকেরা আপনার সাথে একটা মাইন্ডগেম খেলেন৷ তারা জানে যে আপনার ঘুম আসতে বিলম্ব হওয়ার কারণ— আপনার মানসিক অস্থিরতা৷ আপনার অস্থির মনে স্থীরতা আনার জন্য তারা সংখ্যার সাহায্য নিতে বলেন৷ যখন আপনি সংখ্যা গুনতে থাকেন কোনো অভিনব পদ্ধতিতে, যেমন একশ থেকে উল্টো দিকে এক পর্যন্ত গুনে আসা, তখন কিন্তু আপনার মনোযোগ সংখ্যার দিকে রাখতে হয়৷ যে কারণে মনের অস্থিরতা ভুলে আপনি আপনার মনকে স্থির করেন সংখ্যা গণনার প্রতি৷ যার ফলে অস্থিরতার কথা আপনার মনে আর থাকে না৷ ফলশ্রুতিতে ঘুম নেমে আসে আপনার ক্লান্ত চোখে৷
সংখ্যা গণনার বিকল্প হিসাবে আমি আপনাকে বলবো তাসবিহ পাঠ করার কথা৷ এ ক্ষেত্রে আপনি একটি পদ্ধতি ফলো করতে পারেন৷ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার৷ তিনটিকে উল্টে পাল্টে আওড়াতে থাকেন৷ এতে করে আপনার অস্থির মন তাসবিহ পাঠের প্রতি মনযোগী হয়ে উঠবে৷ আর চোখে নেমে আসবে রাজ্যের ঘুম৷
তা ছাড়া তাসবিহ কিন্তু অন্তরে প্রশান্তি এনে দেয়৷ আল্লাহ তায়ালা নিজে বলেছেন— জেনে রাখো! আল্লাহর জিকির দ্বারা অন্তর প্রশান্ত হয়৷
(আল কুরআন)
সুতরাং মনের অস্থিরতা দূর করতে, হৃদয়কে প্রশান্ত করতে আল্লাহ তায়ালার জিকিরের আশ্রয় নেয়াটাই আমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর নয় কি!
আল্লাহ তায়ালা আমাদের অন্তরের সকল অস্থিরতা দূর করে দিন৷ আমাদের ঘুমকে করে দিন আমাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক৷ ক্লান্তি নিবারক৷

১৭ শ্রেণীর লোক! মুসলিম হয়েও যারা জান্নাতে প্রবেশ থেকে বঞ্চিত থাকবে

 

১৭ শ্রেণীর লোক! মুসলিম হয়েও যারা জান্নাতে প্রবেশ থেকে বঞ্চিত থাকবে
------------------------------------------------------------------------
আপনি আমি এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছি না তো????? আসুন জেনে নিই!
১। হারাম খাদ্য ভক্ষণকারী জান্নাতে যাবে না- হারাম উপার্জনের খাদ্য এর অন্তর্গত যা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে...
--------------------------------------------------------------------
হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা লালিত-পালিত হয়েছে, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
(সুনানে বাইহাকী, হাদীস নং ৫৫২০)
২। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না
------------------------------------------------------------------
হযরত যুবাইর ইবনে মুতইম (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৫২৫)
৩। প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী জান্নাতে যাবে না
----------------------------------------------------------------
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যার অত্যাচার থেকে প্রতিবেশীরা নিরাপদ নয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬)
৪। মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, দাইউস ও পুরুষের বেশ ধারণকারীণী জান্নাতে যাবে না
------------------------------------------------------------------------
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না : মাতা-পিতার অবাধ্য, দাইউস (অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-বোন প্রমুখ অধীনস্থ নারীদের বেপর্দা চলাফেরায় বাধা দেয় না) এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলা।”
(মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস নং ২২৬)
৫। অশ্লীলভাষী ও উগ্রমেজাজী জান্নাতে যাবে না
-----------------------------------------------------------------
হারেছা বিন ওহাব (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, “অশ্লীলভাষী ও উগ্রমেজাজী ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না।”
(আবু দাউদ, হাদীস নং ৪১৬৮)
৬। অধীনস্থদেরকে ধোঁকাদানকারী শাসক জান্নাতে যাবে না
------------------------------------------------------------------------
হযরত মা‘কাল বিন ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে বলতে শুনেছি, “মুসলমানদের উপর প্রতিনিধিত্বকারী শাসক যদি এ অবস্থায় মারা যায় যে, সে তার অধীনস্থদেরকে ধোঁকা দিয়েছে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৬১৮)
৭। অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী জান্নাতে যাবে না
---------------------------------------------------------------------
হযরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কসম করে কোন মুসলমানের সম্পদ আত্মসাৎ করে, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করে দেন এবং জান্নাত হারাম করেন। এক ব্যক্তি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদিও সামান্য কোন জিনিস হয়? তিনি বললেন, যদিও পিলু গাছের একটি ছোট ডাল হোক না কেন।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯৬)
৮। খোটাদানকারী, অবাধ্য সন্তান ও মদ্যপ জান্নাতে যাবে না
-----------------------------------------------------------------------
হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, নবী কারীম (সা.) ইরশাদ করেন, “উপকার করে খোটা দানকারী, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, সর্বদা মদপানকারী--এই তিনশ্রেণীর মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
(সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৫৫৭৭)
৯। চোগলখোর জান্নাতে যাবে না
----------------------------------------------------
হযরত হুযাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫১)
১০। অন্য পিতার সাথে সম্বন্ধকারী জান্নাতে যাবে না
-------------------------------------------------------------------
হযরত সা‘দ ও আবু বাকরাহ (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি জেনে শুনে নিজেকে অন্য পিতার সাথে সম্পর্কিত করে অর্থাৎ নিজেকে অন্য পিতার সন্তান বলে পরিচয় দেয়, তার জন্য জান্নাত হারাম।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬২৬৯)
১১। গর্ব-অহংকারকারী জান্নাতে যাবে না
---------------------------------------------------------
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যার অন্তরে অনু পরিমাণ অহংকার রয়েছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩১)
১২। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নাফরমান জান্নাতে যাবে না
---------------------------------------------------------------------
হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “আমার সব উম্মত জান্নাতে যাবে, কিন্তু সে ব্যক্তি ব্যতীত যে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে। সাহাবীগণ আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কে অস্বীকার করেছে? তিনি বললেন, যে আমার আনুগত্য করে, সে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার নাফরমানী করে, সে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে।”
(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৭৩৭)
১৩। দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে ইলম অর্জনকারী জান্নাতে যাবে না
-------------------------------------------------------------
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ইলম দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা হয় সেই ইল্মকে যে ব্যক্তি দুনিয়াবী কোন স্বার্থ-সম্পদ হাসিলের উদ্দেশ্যে শিক্ষা করে, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।”
(আবু দাউদ, হাদীস নং ৩১৭৯)
১৪। অকারণে তালাক কামনাকারীণী জান্নাতে যাবে না
---------------------------------------------------------------------
হযরত সাওবান (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে মহিলা তার স্বামীর কাছে অকারণে তালাক কামনা করে, সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না।”
(জামি‘ তিরমিযী, হাদীস নং ১১০৮)
১৫। কালো কলপ ব্যবহারকারী জান্নাতে যাবে না
------------------------------------------------------------------
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “শেষ যুগে কিছু লোক কবুতরের সীনার ন্যায় কালো কলপ ব্যবহার করবে। তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না।”
(সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ৪৯৮৮)
১৬। রিয়াকারী জান্নাতে যাবে না
--------------------------------------------
হযরত আবু হুরাইরা (রা.) সূত্রে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম একজন শহীদকে ডাকা হবে। অতঃপর একজন ক্বারীকে। তারপর একজন দানশীল ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। প্রত্যেককে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। অতঃপর শহীদকে বীর-বাহাদুর উপাধি লাভের উদ্দেশ্যে জিহাদ করার অপরাধে, ক্বারী সাহেবকে বড় ক্বারীর উপাধি ও সুখ্যাতি লাভের জন্য কিরাআত শেখার অপরাধে এবং দানশীলকে বড় দাতা উপাধি লাভের নিয়তে দান-সদকা করার অপরাধে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৫২৭)
�৭১৭। ওয়ারিসকে বঞ্চিতকারী জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে
----------------------------------------------------------
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কোন ওয়ারিসকে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করলো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন।”
(সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস নং ২৬৯৪)
মহান প্রতিপালক আমাদের সকলকে ক্ষমা করুন।আমিন।