Friday, June 20, 2025

Parenting tips

সন্তান হবার পরে অসুস্থ থাকা। মায়ের শরীর ভেঙে যাওয়া। এসব বাবা মায়ের জন্য বেদনার কারণ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলার পরেও অসুখ কমে না। তখন মনে করতে হবে সমস্যা অন্য কোথাও রয়েছে। আজকে বাদ মাগরিব এক মুসল্লির সন্তানের জন্য সমবেত দুয়া করলাম। দুয়ার পূর্বে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক কথা বললাম। সে কথাগুলো ছোট্ট করে লিখছি— 
• গর্ভধারণ অবস্থায় বাবার কর্তব্য হালাল খাবার খাওয়ানো ও বেশি বেশি আগত নবজাতকের জন্য দুয়া করা। মায়ের কর্তব্য সব সময় জিকির আজকার করা ও কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা। বিশেষত সকাল সন্ধ্যার মাসনূন দুয়াগুলো গুরুত্ব সহকারে পড়া৷ এবং এ সময় যথেষ্ট পর্দা পুশিদায় থাকা ও টিভিসিডি এড়িয়ে চলা। 

• সন্তান যেদিন আসছে সেদিন যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে আল্লাহকে ডাকা। আসার পরে আজান ও ইকামত দেওয়া ও তাহনীক করা। মায়ের দুধ খাওয়ানো। 

• পরিচ্ছন্ন পরিবেশে মাকে রাখা। ঘরদোর পরিষ্কার রাখা। আমসাধারণকে ঘরে আসতে না দেওয়া। কারণ বহু লোক কুদৃষ্টি দিতে পারে। এজন্য ‘মাশাআল্লাহ’ বলানো যে দেখতে আসবে। 

• সন্তান এলে খুশির অন্ত থাকে না। এ সময় দেখা যায় বাবা ছেলে বা মেয়ের ছবি তুলে যাকে তাকে পাঠায় ও দুয়া নেয়। এই ছবিগুলোর ওপর কুদৃষ্টি পড়তে পারে। তখন মা ও ছেলে সবাই রোগ বালায় পড়তে পারে। তাই যেকোনো ধরনের ছবিধারণ এরিয়ে চলা জরুরি। 

• এ সময় ঘরকে ডিভাইসমুক্ত রাখা। টিভিসিডি না দেখে নিজে নিজে সকাল সন্ধ্যার মাসনূন দুয়া পড়ে রুকইয়া করা। মায়ের নেফাসের সময় পার হলে অবশ্যই কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত ও নামাযে মনোযোগ দেওয়া। সূরা ফাতিহা, বাকারা, ইয়াসীন, রহমান ও শেফার আয়াতগুলো পড়ে নিজের ও সন্তানের ওপর দম করা। 

• এ সময় কুরআনি খাদ্য খাওয়া। যেমন দুধ, খেজুর, মধু ও কালোজিরা। পাশাপাশি সবুজ খাদ্য খাওয়া। আজকাল আমরা ভালো ভালো খাবার না খেয়ে অখাদ্য খেয়ে থাকি। যার কারণে মায়ের বহু অসুখ হয়। দুধ কম আসে। অথচ কালোজিরা খেলে দুধ বাড়ে। সন্তান পরিচর্যার নিয়মাবলি জানা। 

• সর্বোপরি সরিষার তেল ও পানি পড়িয়ে নিয়ে তা গায়ে মাখানো। এতে সুস্থ থাকবে মা ও শিশু। 

• সন্তান যা দেখে ও শোনে তা ধীরে ধীরে বলতে শেখে। তাই ভালো ভালো দৃশ্য সামনে রাখা। ইসলামি নিদর্শন ঘরে রাখা। 

• গুরুত্বপূর্ণ যে কথাটি ভুলে গিয়েছি বলতে — ঘর থেকে বেরোলে মেয়েদের চুল খোলা না রাখা। চুল শয়তানের রশি। তাই মানুষের নজরে পড়ে ফিতনা সৃষ্টি হয় ও বদ আসর লাগে। 

• শিশুকে পূর্ণ উলঙ্গ করে বের না করা। হাঁটতে শিখলেও তখন উলঙ্গ হয়ে তাকে বাইরে যেতে না দেওয়া। কারণ একটাই বদ নজর। ও বিভিন্ন ধূলোময়লা লজ্জাস্থানে পড়ে রোগ বালাই হতে পারে। 

একটা ঘটনা বলি, আমার সাফওয়ানকে আমি আজান শুনিয়েছি ও ইকামত শুনিয়েছি। আমি অবাক হয়ে দেখি, এখনও মসজিদে আজান হলে ও তন্ময় হয়ে থাকে। ওর কাছে বিসমিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও বিভিন্ন দুয়া পড়লে ও খুশি হয় ও আরাম পায় সাথে বেশ মনোযোগীও হয়ে ওঠে। সাফওয়ান প্রতিদিন ফজরের আগেই জাগে। আলহামদুলিল্লাহ আজও তেমন কান্নাকাটি ওকে করতে দেখি নি। শুধু ক্ষুধা লাগলে কাঁদে নতুবা নয়। আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করি ওকে সুস্থ পরিবেশে বড় করতে। 

২৪ জিলহজ ৪৬ 
#হুজুরের_ডায়েরি #প্রতিদিন_একটি_মাসয়ালা

মাওলানা রবিউল হাসান (হাফি.)

No comments:

Post a Comment