Wednesday, May 5, 2021

স্বামী-স্ত্রী একে অপরের যৌনাঙ্গে মুখ দেয়া

 May be an image of text that says 'স্বামী-স্ত্রী একে অপরের যৌনাঙ্গে মুখ দেয়া আব্দল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী'

 স্বামী-স্ত্রী একে অপরের যৌনাঙ্গে মুখ দেয়া
▬▬▬▬❤ ❤ ❤ ▬▬▬▬
প্রশ্ন:
আল্লাহ তায়ালা হক কথা বলতে লজ্জাবোধ করেন না।সহবাসের পূর্বে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের লিংগ/যোনিতে মুখ দেয়া কি শরিয়ত সম্মত?

উত্তর:
দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর আনন্দ-বিনোদনের ক্ষেত্রে কী কী কাজ করা হারাম তা আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন।
সেগুলো হলো দুটি:
▪১) ঋতুস্রাব বা বাচ্চা প্রসবোত্তর স্রাব চলাকালীন সময় স্ত্রী সহবাস করা।
▪২) স্ত্রীর পায়ুপথ ব্যবহার করা।
এই দুটি বিষয় ছাড়া পারস্পরে যেভাবে খুশি সেভাবে আনন্দ উপভোগ করতে পারে। কোন কিছুকে হারাম বলার সুযোগ নাই।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّىٰ شِئْتُمْ ۖ وَقَدِّمُوا لِأَنْفُسِكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا أَنَّكُمْ مُلَاقُوهُ ۗ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
"তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর।"
(Sura Al-Baqarah, Ayah 223)
কেননা বিয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, স্বামী-স্ত্রী বৈধভাবে একে অপর থেকে আনন্দ উপভোগ করা এবং এর মাধ্যমে হারাম পন্থা থেকে নিজের লজ্জাস্থান এবং চক্ষু হেফাজত করা।
যদিও কেউ কেউ বলতে চেয়েছেন যে, মুখে যেহেতু আল্লাহর জিকির করা হয় এবং লজ্জাস্থান দিয়ে নাপাকি বের হয় তাই স্বামী-স্ত্রী একে অপরের যৌনাঙ্গে মুখ লাগানো ঠিক নয়। আমরা বলব, কোনটা ঠিক আর কোনটা ঠিক নয় তা নির্ধারণকারী একমাত্র আল্লাহ এবং তার রাসুল। এর বাইরে আমরা কোন কিছুকে হারাম বলার অধিকার রাখি না। তবে অনেক আলেমের মতে, সর্বোচ্চ বলা যেতে পারে, এটি সুস্থ রুচিবোধ ও উন্নত চরিত্র বিরোধী এবং আদব পরিপন্থী কাজ কিন্তু তা হারাম বা এ জন্য গুনাহগার হতে হবে-এমন কোন কথা বলা ঠিক নয়।

সুতরাং সুস্থ রুচিবোধ ও অনুত্তম হওয়ার দিক বিবেচনায় এ থেকে বিরত থাকা ভালো।
তবে যদি লজ্জাস্থান থেকে নির্গত নাপাক বস্তু গিলে ফেলা হয় তাহলে তা হারাম।
(সৌদি বড় আলেমদের ফতোয়ার সার সংক্ষেপ)
▬▬▬▬❤ ❤ ❤ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, KSA
fb/AbdullaahilHadi
https://goo.gl/893MFm
এ বিষয়ে পূর্ববর্তী আলেমদের অভিমত সহ ফতোয়া: (আরবি)
https://bit.ly/3ih5J0m
শাইখ আব্দু্ল্লাহ বিন বায, উসাইমীন প্রমূখদের ফতোয়া:
https://www.facebook.com/191782107581900/posts/563882970371810/

 

 

 

 

 

 

মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও কখন একজন মুসলিম জান্নাতে যেতে পারবে না?

 No photo description available.

 জীবন ঘনিষ্ঠ কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব-১৫
-------------
প্রশ্ন: মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও কখন একজন মুসলিম জান্নাতে যেতে পারবে না?

উত্তর: একজন ঈমানদার ব্যক্তি যদি শিরক বা কুফরির মাধ্যমে ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত তথা মুরতাদ না হয়ে যায় তাহলে তার অন্তরে সরিষার দানা সম পরিমাণ ঈমান থাকলেও ইনশাআল্লাহ অবশেষে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে।

প্রশ্ন: এ হাদিসটি কি সহিহ ?

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনও মুসলিমকে এমন গুনাহ দ্বারা লজ্জা দেয়, যা থেকে সে তওবা করেছে, তাকে সেই গুনাহে লিপ্ত করে ইহকাল ও পরকালে লাঞ্ছিত করার দায়িত্ব আল্লাহ তা'য়ালা গ্রহণ করেন।” (তিরমিযী)

উত্তর:
এই মর্মে বর্ণিত হাদিসটি موضوع বা বানোয়াট।
الحديث رواه الترمذي ( كتاب صفة القيامة والورع/2429) ، ولفظه : " من عيَّر أخاه بذنب لم يمت حتى يعمله " .
والحديث قال عنه الشيخ الألباني في " ضعيف الجامع " رقم ( 5710 ) موضوع
কেউ পাপ করলে-বিশেষ করে যদি সে তওবা করে নিজেকে সংশোধন করে ফেলে তাহলে তাকে গালমন্দ বা ভর্ৎসনা করা উচিত নয় বরং উচিত তাকে সংশোধন করার জন্য নসিহত করা, তার হেদায়েতের জন্য দোয়া করা এবং তাকে সৎপথে চলতে সাহায্য করা।
সেই সাথে তার পাপ কাজটি অন্যের কাছে প্রকাশ না করা।

প্রশ্ন: মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণ যদি তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে তার ঋণ পরিশোধ না করে তাহলে কি সেই মৃত ব্যক্তি গুনাহগার হবে? নাকি তার ওয়ারিশগণ গুনাহগার হবে?

উত্তর:
কোনও ব্যক্তি যদি ঋণ রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয় তাহলে তার ওয়ারিশ বা উত্তরাধিকারীদের উপর আবশ্যক হল, ঋণ পরিশোধ করার পর সম্পদের বাকি অংশ তাদের মাঝে শরীয়ত সম্মত পদ্ধতিতে ভাগ-বাটোয়ারা করা।
তারা যদি এটি না করে তাহলে সকলেই গুনাহগার হবে। মৃত্যু ব্যক্তি এ জন্য দায়ী নয়।

প্রশ্ন: ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দেনমহর এর পরিমাণ কত?

উত্তর:
ইসলামের দৃষ্টিতে বর ও কনে উভয় পক্ষের সম্মতি ও আলোচনা সাপেক্ষে দেনমোহর নির্ধারণ করতে হয়। এর সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ কোন পরিমাণ ইসলামে নির্দিষ্ট করা হয় নি। বরং আর্থিক সক্ষমতা ও সামাজিক মর্যাদার দিকে লক্ষ রেখে তারা যত পরিমাণ দেনমোহর নির্ধারণে একমত হবে তাই শরীয়ত সম্মত বলে গণ্য হবে।
তবে যা নির্ধারণ করা হবে তা আদায় করা স্বামীর জন্য ফরজ। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً ۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا
“এবং তোমরা নারীদেরকে দাও তাদের মোহর খুশি মনে। এরপর তারা যদি স্বেচ্ছায় সাগ্রহে ছেড়ে দেয় কিছু অংশ তোমাদের জন্য তাহলে তা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।” (সূরা নিসা : ৪)
শুধু খাতা-কলমে দেনমোহর লিপিবদ্ধ করা আর বাস্তবে পরিশোধের নিয়ত না থাকা জায়েয নেই। বরং এটি একটি আর্থিক চুক্তি যা ঋণের মতই পরিশোধযোগ্য।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে দেনমোহরের কিছু উদাহরণ:

🔸 আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান বলেন, আমি (উম্মুল মুমিনীন) আয়েশা রা.কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী পরিমাণ মোহর দিয়েছেন? তিনি বললেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদেরকে সাড়ে বারো উকিয়া অর্থাৎ পাঁচ শ’ দিরহাম মোহর দিয়েছেন।’-সহীহ মুসলিম, হাদিস : ১৪২৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২১০৫; সুনানে নাসায়ী ৬/১১৬, ১১৭
🔸 উম্মুল মুমিনীনদের মাঝে উম্মে হাবীবা রা.-এর মোহর বেশি ছিল। তাঁর মোহর ছিল চার হাজার দিরহাম। হাবশার বাদশাহ নজাশি তাঁকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন এবং মোহরও তিনিই পরিশোধ করেছিলেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২১০৭; সুনানে নাসায়ী ৬/১১৯
🔸 আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে আমাদের মোহর ছিল দশ উকিয়া (চার শ দিরহাম)।-সুনানে নাসায়ী ৬/১১৭
-----------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলিল মাদানী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব