Wednesday, May 5, 2021

মহিলাদের টি শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট পরিধানের বিধান

 No photo description available.

 মহিলাদের টি শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট পরিধানের বিধান
▬▬▬🔹⚫🔹▬▬▬
প্রশ্ন: মেয়েদের জন্য পুরুষদের পোশাক যেমন-জিন্স, টি শার্ট পরা কি সব অবস্থাতেই হারাম? যদি তারা এগুলো বোরকার নিচে পরে বা বাসায় পরে থাকে যেখানে কোনো গায়রে মাহরাম দেখার কোনো চান্স নেই তাহলে কি জায়েয হবে?
উত্তর:
হাদিসে পুরুষদের জন্য নারীদের এবং নারীদের জন্য পুরুষদের বেশ-ভূষা অবলম্বন করার ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা কবিরা গুনাহ।
সুতরাং যে কোন অবস্থায় নর-নারীর জন্য বিপরীত লিঙ্গের পোশাকআশাক, জুতা ইত্যাদি পরিধান করা হারাম। এমনকি স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সামনেও তা করতে পারবে না।
অত:পর কথা হল, কোন মহিলা যদি মহিলাদের উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে তৈরি কৃত জিন্সের প্যান্ট বা টিশার্ট পরিধান করে আর তা বোরকা বা জিলবাব দ্বারা পরিপূর্ণভাবে ঢাকা থাকে তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই। কেননা এতে পুরুষদের সাথে সাদৃশ্য থাকছে না। তাছাড়া সে তা বোরকার নিচে পরিধান করেছে। বরং এতে দ্বিগুণ পর্দা হল। উপরে বোরকা তার নিচে অন্য পোশাক।

অনুরূপভাবে একজন মহিলা তার স্বামীর সামনে মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরিকৃত t-shirt, জিন্সের প্যান্ট ইত্যাদি পরিধান করতে পারে। শরীয়তে এতে কোনো বাধা নেই। তবে সর্বাবস্থায় বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরিধান করা থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য-স্বামীর সামনে হলেও। কেননা এ ব্যাপারে হাদিসে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
আর মহিলারা মহিলাদের মহলে অথবা মাহরাম পুরুষদের সামনেও ঢিলেঢালা ও শালীন পোশাক পরিধান করবে। এমন পাতলা বা টাইট পোশাক পরিধান করবে না যাতে তার শরীরের বিশেষ অঙ্গগুলো দৃশ্যমান হয় বা বা ফুটে উঠে।
আল্লাহু আলাম।
---------------------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

 

 

স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে কি একে অপরকে দেখতে বা গোসল দিতে পারে?

 May be an image of text that says 'স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে কি একে অপরকে দেখতে বা গোসল দিতে পারে? আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী'

 

 

স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে কি একে অপরকে দেখতে বা গোসল দিতে পারে?
▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
প্রশ্ন: মৃত্যুর পর স্বামী মারা গেলে স্ত্রী দেখতে পারে না। মাহরাম যে সকল মহিলারা রয়েছে তারাও দেখা দেয় না। স্বামী স্ত্রীকে এবং স্ত্রী স্বামীকে গোসল দিতে পারে না। আমাদের সমাজে এ সকল কুসংস্কার চালু আছে। দয়া করে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন। কারণ অনেকেই এই ধরণের কথা বলে থাকে।
উত্তর:
আমাদের সমাজে কুধারণা চালু আছে যে, স্বামী বা স্ত্রী কেউ মারা গেলে অপরের জন্য তালাক হয়ে যায়! তাই তাকে গোসল দেয়া কিংবা দেখতে দেয়া নাজায়েয! সমাজে উক্ত রীতি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এক শ্রেণীর আলেমরাও এ ফতওয়া জারি করে রেখেছে। অথচ এটা মূর্খতা ও সুন্নাতের বিরুদ্ধাচরণ। কারণ উক্ত মর্মে একাধিক স্পষ্ট সহীহ হাদীছ এসেছে। যেমন,
🔰 একটি হাদীস
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ رَجَعَ رَسُوْلُ اللهِ مِنَ الْبَقِيْعِ فَوَجَدَنِىْ وَأَنَا أَجِدُ صُدَاعًا فِىْ رَأْسِىْ وَأَنَا أَقُوْلُ وَارَأْسَاهُ فَقَالَ بَلْ أَنَا يَا عَائِشَةُ وَارَأْسَاهُ ثُمَّ قَالَ مَا ضَرَّكِ لَوْ مِتِّ قَبْلِىْ فَقُمْتُ عَلَيْكِ فَغَسَّلْتُكِ وَكَفَّنْتُكِ وَصَلَّيْتُ عَلَيْكِ وَدَفَنْتُكِ.
আয়েশা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাক্বীউল গারক্বাদ (মদীনার বাকি গোরস্থান) থেকে যখন ফিরে আসলেন, তখন তিনি আমাকে মাথার যন্ত্রণা অবস্থায় পেলেন। আমি বলছিলাম, উফ! আমার মাথাব্যথা! তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছিলেন, আয়েশা! বরং আমারও মাথা ব্যথা করছে।
অতঃপর তিনি বলেন, তোমার কোন সমস্যা নেই। তুমি যদি আমার পূর্বে মারা যাও তবে আমি তোমার পাশে থাকব, তোমাকে গোসল দিব, তোমাকে কাফন পরাব এবং তোমার জানাযার সালাত আদায় করব।[1]
🔰 আরেকটি হাদীস:
عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ عُمَيْسٍ قَالَتْ غَسَّلْتُ أَنَا وَعَلِىٌّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ فَاطِمَةَ بِنْتَ رَسُوْلِ اللهِ
আসমা বিনতে উমাইস (রাঃ) বলেন, আমি এবং আলী (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কন্যা ফাতেমাকে গোসল দিয়েছি।[2]
🔰 অন্য দিকে আয়েশা রা. বলেন,
لَوِ اسْتَقْبَلْتُ مِنْ أَمْرِىْ مَا اسْتَدْبَرْتُ مَا غَسَّلَهُ إِلاَّ نِسَاؤُهُ
‘পরে যা জানলাম তা যদি আগে জানতাম, তবে রাসূল (ছাঃ)-কে তাঁর স্ত্রীরা ছাড়া কেউ গোসল দিতে পারত না’।[3]
অতএব স্বামী আগে মারা গেলে স্ত্রী, কিংবা স্ত্রী আগে মারা গেলে স্বামী উভয় উভয়কে গোসল দেয়ার বেশি হকদার। এর বিরুদ্ধাচরণ করার অর্থই হল শরী‘আতের মর্যাদা নষ্ট করা। মৃত্যুর পর সম্পদের ভাগাভাগি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে অথচ তাকে দেখতে পারবে না, গোসল দিতে পারবে না কেন?
-----------
টিকা:
[1]. ইবনু মাজাহা হা/১৪৬৫, পৃঃ ১০৫, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৯; সনদ হাসান, ইরওয়াউল গালীল হা/৭০০, ৩/১৬০ পৃঃ। [2]. হাকেম হা/৪৭৬৯; বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৬৯০৭; বায়হাক্বী, মা‘রেফাতুস সুনান ওয়াল আছার হা/২১৫৭; দারাকুৎনী হা/১৮৭৩; সনদ হাসান, ইওয়াউল গালীল হা/৭০১। [3]. আবুদাঊদ হা/৩১৪১, ২/৪৪৮ পৃঃ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৩২; সনদ হাসান, ইরওয়াউল গালীল হা/৭০২, ৩/১৬২ পৃঃ।
(সংগৃহীত-সামান্য পরিবর্তন সহ)
🖌🖌🖌🖌🖌
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আর