Monday, May 3, 2021

ইফতারের পূর্বে সম্মিলিত দুআ-মুনাজাত করা বিদআত

 May be an image of text

 

ইফতারের পূর্বে সম্মিলিত দুআ-মুনাজাত করা বিদআত
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
প্রশ্ন: ইফতারের পূর্বমুহূর্তে দুআ করার জন্য কি হাত তুলে মোনাজাত করা জরুরি? সহকর্মী সবাই একসাথে ইফতার করতে বসি। সেখানে কেউ মোনাজাত করে না। এখন আমি যদি হাত না তুলে মনে মনে দুআ করি তাতে কি কোনও সমস্যা আছে?
উত্তর:
হাদিসে সাব্যস্ত হয়েছে, যে রোজাদারের দুআ কবুল হয়। তাছাড়া ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে মানুষ ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত ও ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত অবস্থায় থাকে। তাই এসময় দুআ করলে কবুলের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
সুতরাং এ সময় অধিক পরিমাণে দুআ করা উত্তম। কিন্তু তা হবে ব্যক্তিগত ভাবে। প্রত্যেকেই নিজে নিজে তার ইচ্ছা অনুযায়ী আল্লাহর নিকট দুআ করবে। চাই তা হাত উঠিয়ে হোক অথবা হাত উঠানো ছাড়া হোক-তাতে কোনও সমস্যা নাই। তবে হাত উঠিয়ে দুআ করা বেশি ভালো। কারণ এটি দুআর অন্যতম একটি আদব।
কিন্তু ইফতার সামনে নিয়ে সম্মিলিত দুআ করা দলিল সমর্থিত নয়। কেননা হাদিসে সম্মিলিত দুআ করার যে সকল ক্ষেত্র পাওয়া যায় এটি তার অন্তর্ভুক্ত নয়।
সুতরাং আমাদের সমাজে বিভিন্ন ইফতার মাহফিলে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে ইফতারির নানা আইটেমের খাদ্য-পানীয় সামনে নিয়ে বসে একজন মাওলানা বা ইমাম কর্তৃক দুআ করা আর বাকি সব রোজাদার আমিন আমিন বলার যে প্রথা চালু আছে তা সুন্নাহ সমর্থিত না হওয়ার কারণে মুহাক্কিক আলেমগণ তাকে ‘বিদআত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
সুতরাং ইফতারের পূর্বে প্রচলিত সম্মিলিত দুআ-মুনাজাত পরিত্যাজ্য।
◈ মিসরের প্রসিদ্ধ ইসলামি দাঈ ডক্টর মুহাম্মদ হাসসান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,
“ইফতারের পূর্বে সম্মিলিত দুআ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং আমাদের সালাফগণ (পূর্বসূরী) থেকে সাব্যস্ত হয় নি। অর্থাৎ এমনটা জানা যায় না যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো সাহাবিদেরকে নিয়ে মসজিদে বা অন্য কোথাও একত্রিত হয়ে ইফতারের পূর্বে সম্মিলিতভাবে দুআ করেছেন। অনুরূপভাবে সালাফগণও এমনটি করেন নি। সুতরাং আল্লাহ যতটুকু তওফিক দান করেন নিজে নিজে দুআ করুন।” (ভিডিও থেকে নেয়া)
◈ শাইখ মুহাম্মদ বিন হাদী আল মাদখালি (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন, "ইফতারের পূর্বে সম্মিলিত দুআ করার কোনও ভিত্তি আছে বলে জানা নাই। বরং মূল হল, প্রত্যেক ব্যক্তি নিজে নিজে দুআ করবে যা খুশি। কিন্তু সম্মিলিত দুআ করার বিষয়টির কোনও ভিত্তি জানা নাই। এটি বিদআত।” (ভিডিও থেকে নেয়া-সংক্ষেপায়িত)
আল্লাহ তাআলা সুন্নাহ আমাদেরকে অনুযায়ী আমল করার এবং বিদআত থেকে দূরে থাকার তওফিক দান করুন। আমিন। আল্লাহু আলাম।
 
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার সউদী আরব

 

 

 

Thursday, April 29, 2021

রুকইয়াহ শারইয়্যার গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা

 

রুকইয়াহ শারইয়্যার গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা
---------------------
[ক]
- সেলফ রুকইয়ার প্রয়োজনীয়তা
সেলফ রুকইয়াহ অর্থাৎ নিজের জন্য রুকইয়াহ নিজেই করার প্রয়োজন অপরিসীম। যেকোন সমস্যা শুরুর আগেই যদি এর সমাধান জানা থাকে, তাহলে এটা বেশিদূর গড়ায় না। তাই আমি যদি জানি কোন সমস্যায় সেলফ রুকইয়ার নিয়ম কি, তাহলে আমার ছোটখাটো সমস্যা অনেক বড় হবে না।
আরেকটা বিষয় হল, রুকইয়ার পাশাপাশি প্রচলিত ডাক্তারের চিকিৎসা নিতেও কোন মানা নেই।
সেলফ-রুকইয়াহ অর্থাৎ নিজের জন্য নিজে রুকইয়াহ করাকে ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে নিতে পারেন, যেমনটা সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে আমরা করে থাকি। কোন সমস্যা হলে প্রথমে ফার্মাসি থেকে বা ঘরের ঔষধের বাক্স থেকে একটা ঔষধ নিয়ে খাই, এরপর প্রয়োজন হলে এলাকার ডাক্তার বা অন্য কারও পরামর্শ নিই, এরপরেও ভালো না হলে তখন বড় ডাক্তার দেখাই।
অনুরূপভাবে রুকইয়ার ক্ষেত্রেও প্রথমে রুকইয়াহ বই, ব্লগ অথবা ফেসবুক পেইজ থেকে নিয়মকানুন দেখে নিজেই রুকইয়াহ করুন। এরপর প্রয়োজন হলে আপনার চেয়ে ভালো জানে এমন কারও পরামর্শ নিন, তারপরেও যথেষ্ট না হলে তখন অভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে রুকইয়াহ করান।
.
[খ]
- সার্বিকভাবে রুকইয়ার উপকারিতা
কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারে, কতশত দরকারি বিষয় আছে! ফিকহ, জিহাদ, আকাইদ, ইসলাহ–তাযকিয়া কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। ইলমের খিদমত করেন, আল্লাহর রাস্তায় সময় দেন – এসব না করে কেন এই রুকইয়াহ নিয়ে কষ্ট করছেন? কেউ আবার বলেন, এসব কাজ ছোটখাটো মোল্লাদের হাতে ছেড়ে দেন, আহলে ইলমরা এসব কেন করবে?
তাদের জন্য সহজ কথা, আমরা খুব ভালোভাবেই জানি যাদু - বদনজর - জ্বিন ইত্যাদি সমস্যাগুলো মানুষের মাঝে যত ব্যপক, এর সমাধানের ব্যাপারে মানুষ ততটাই অজ্ঞ। এই সমস্যায় মানুষ যে পরিমাণে আক্রান্ত, বিষয়টা তাঁর চেয়ে বহুগুণ বেশি অবহেলিত।
আর শরঈ সমাধানের সাথে তো আমাদের দেশের ৯৯.৯৯% মানুষই পরিচিত নয়। বরং অধিকাংশ মানুষের ভ্রান্ত বিশ্বাস হচ্ছে “কুফরি যাদু কাটতে কুফরিই করা লাগবে” (নাউযুবিল্লাহ)। এজন্য তাঁরা কবিরাজ-বৈদ্যদের কাছে যায়, আর দুনিয়া এবং আখিরাতের শুধু ধ্বংসই অর্জন করে।
আমাদের চারপাশে অসংখ্য মানুষ এসব সমস্যায় আক্রান্ত, আমরা কেউ নিজেই ভিকটিম, কারো পরিবারস্থ লোক, আর কারো আত্মীয়স্বজন। বহু বৈদ্য – কবিরাজের কাছে ঘুরে ঘুরে বহু পরিশ্রম করে তারা প্রচুর টাকা পয়সা নষ্ট করে। এর পেছনে মেধা, শ্রম, সময় ব্যয় করে। অবশেষে কেউ সুস্থ জীবনের আশা ছেড়ে দেয়, আর কেউ স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। আর কবিরাজের কাজগুলো কুফরি-শিরকি হওয়ার কারণে নষ্ট হয় আখিরাতেও পুঁজিও।
আমার - আপনার চারপাশে এমন মানুষের অভাব নেই। আমাদের দেশে হয়তো এমন একটা প্রাপ্তবয়স্ক লোকও পাওয়া যাবে না, যার নিজের পরিবার অথবা আত্মীয়স্বজনদের মাঝে কেউই এজাতীয় সমস্যায় ভুগছে না। এদের দুনিয়া এবং আখিরাতে ধ্বংস থেকে বাঁচানোর জন্যই রুকইয়াহ শারইয়াহ দরকার!
তবে আমি বলছি না, আপনি সব ছেড়ে রুকিয়ার জন্য নিবেদিত হয়ে যান, বরং আপনি যা করছেন সেটাই করেন। তবে সম্ভব হলে মাঝেমাঝে এবিষয়ে অল্প কিছুক্ষণ সময় দেন, কেউ সমস্যা আক্রান্ত হলে তাকে এবিষয়ে ধারণা দেন। এতে ব্যক্তি-সমাজ সবারই উপকার।
এর বিনিময়ে নিচের ফজিলতগুলো পাবেন ইনশাআল্লাহ!
.
১. দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার সুযোগ
একজন রাক্বি মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার চমৎকার সুযোগ পেয়ে থাকেন, যা রুকইয়ার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর জ্বিন যাদু ইত্যাদি সমস্যাগুলো নিয়ে যারা আসে, তাদের অনেকেই থাকে এমন, যারা দ্বীন পালনের ব্যাপারে উদাসীন, রুকইয়াহ করার সময় তাদেরকে দাওয়াত পৌঁছানোর সুযোগ পাওয়া যায়। আর এদের বিরাট একাংশ হয় এমন, যারা সুস্থতা লাভের লাভের আশায় কবিরাজ-বৈদ্যদের কাছে ঘুরে ঘুরে ইতিমধ্যে কুফরি বা শিরকি কাজ করে ফেলেছে। তাদেরকে আল্লাহর একত্ববাদের বার্তা পৌঁছানোর সুযোগ হয়।
অবশ্যই রাক্বিদের এই সুযোগ কাজে লাগানো উচিত। কেননা যুগে যুগে এটা নবীদের সুন্নাহ, মানুষ দুনিয়াবি প্রয়োজন নিয়ে আসলেও তাঁর আখিরাতের দীর্ঘস্থায়ী কল্যাণকে প্রাধান্য দেয়া। এক্ষেত্রে ইউসুফ ؑ এর ঘটনা লক্ষণীয়। দু’জন লোক তাঁর কাছে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানতে এসেছিল, তিনি তাদের সমস্যা এবং সময়ের প্রতি লক্ষ রেখে অল্প কথায় তাওহীদের দাওয়াত পৌছে দিয়েছেন, এরপর তাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানিয়েছেন।
এছাড়া খাইবার যুদ্ধের ঘটনা খেয়াল করুন, আলী রা. কে নির্দেশ দিয়েছিলেন- তুমি তোমার পথ ধরে তাদের মাঝে পৌছে যাও, এরপর তাদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান কর। আর তাদের উপর আল্লাহর হকগুলোর ব্যাপারে সংবাদ দাও। কারণ, আল্লাহর কসম, তোমার মাধ্যমে যদি একটা মানুষকেও আল্লাহ হিদায়াত দেন, তবে তা তোমার জন্য লাল উট প্রাপ্তি থেকেও উত্তম হবে। (সহিহ মুসলিম ৪৪২৩)
.
২. কোরআনের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি।
যিনি রুকইয়াহ করেন, প্রতিদিন তাকে দীর্ঘক্ষণ কোরআন তিলাওয়াত করতে হয়। এতে কোরআনের সাথে সম্পর্ক দিনদিন বৃদ্ধি পায়।
এর সাথে কোরআন পাঠের বিবিধ ফযিলত তো আছেই। যেমনঃ কোরআন তিলাওয়াতের প্রতিটি হরফে সওয়াব! আপনি যদি প্রতিদিন এক ঘন্টাও রুকইয়াহ করেন, এই একঘণ্টায় আপনার ঝুলিতে অনেকগুলো সওয়াব জমে যাবে।
এছাড়া রাসুল ﷺ বলেছেন, “তোমরা কুরআন পাঠ কর। কারণ কিয়ামতের দিন কুরআন তার পাঠকের জন্য সুপারিশ কারী হবে।” (মুসলিম ১৩৩৭)
.
৩. মুসলিম ভাই-বোনদের বিপদে সহায়তা করা।
প্রথমে একটি হাদিস খেয়াল করি, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এক সময় ঝাড়ফুঁক নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে আমর ইবনু হাযমের বংশের লোকেরা এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের নিকট একটি রুকইয়াহ ছিল, যা দিয়ে আমরা বিচ্ছুর ছোবলে ঝাড়ফুঁক করতাম, এখন আপনি তো ঝাড়ফুঁক নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তারা সেটা রাসুল ﷺ এর নিকট উপস্থাপন করল। তখন তিনি বললেন, কোন সমস্যা দেখতে পাচ্ছি না তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের কোনও উপকার করতে সমর্থ হয়, তাহলে সে যেন তা করে। (সহিহ মুসলিম ৪০৭৮)
এই হাদিসে আমরা দেখলাম রুকইয়ার মাধ্যমে যে মানুষের উপকার করা যায়, এটা স্বয়ং রাসুলুল্লাহ ﷺ স্বীকৃতি দিয়েছেন।
আর একজন মুসলিম ভাইকে সাহায্য করার অনেক অনেক লাভ আছে। যেমন: আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় কোন মুমিনের কোন বিপদ-আপদ দূর করে দেবে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করবেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪৮৬৭)
হাদিসের গ্রন্থসমূহে বিপদগ্রস্ত ভাইবোনদের সহায়তা করার আরও অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে, রুকইয়াহ করে আপনি সেসব লুফে নিতে পারেন।
.
৪. কুফরের বিরুদ্ধে এবং তাওহিদের পক্ষে সংগ্রাম করা।
ইবনে তাইমিয়া রহ. এজন্য মুখলিস রাক্বিদের ব্যাপারে বলেছেন,
وجنب الذنوب التي بها يسلطون عليه فإنه مجاهد في سبيل الله وهذا من أعظم الجهاد فليحذر أن ينصر العدو عليه بذنوبه
“রাক্বির উচিত গুনাহ থেকে দূরে থাকা, যেন এই সুযোগে জ্বিন তাঁর ওপর প্রভাব বিস্তার না করতে পারে। সে তো আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারির ন্যায়। আর রুকইয়াহ করাও জিহাদের একটি উত্তম পদ্ধতি। তাই তাঁর সতর্ক থাকা উচিত, যেন গুনাহ তাঁর শত্রুকে বিজয়ী হতে সহায়তা না করে।” (মাজমুউল ফাতওয়া ১৯/৫৩, রিসালাতুল জ্বিন ৬৫পৃ)
লক্ষণীয়ঃ ইবনে তাইমিয়া রহ. মূলত এই কথাটি মুবালাগা হিসেবে বলেছেন, উনার পূর্বাপর কথাগুলোয় গুরুত্বারপ করার জন্য। হাক্বিকী জিহাদের সাথে রুকইয়াহ চর্চার তুলনা যদিও হয় না, তবুও ইবনে তাইমিয়া রহ. এর কথাটি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, হক্বের ব্যাপারে অনড় একজন রাক্বি সমাজ থেকে কুফর-শিরক দূর করার জন্য নিজের প্রাণ ঝুঁকিতে ফেলে মেহনত করেন, আর যখন কুফরি যাদু আক্রান্ত কারো চিকিৎসা করে অথবা শয়তান ভর করা ব্যক্তির ওপর রুকইয়াহ করে, তখন সে আল্লাহর কালামের সাহায্যে সরাসরি শয়তানি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে।
.
৫. তাওয়াককুল।
রাসূলুল্লাহ ﷺ একটি হাদীসে বলেন, “আমার উম্মতের মধ্যে ৭০,০০০ হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” রাসূলুল্লাহ ﷺ এই হাদীসের মধ্যে এসব ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন, আর বলেছেন “এরা শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে।” আর এমন লোকদের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছেন, “যারা রুকইয়ার জন্য অনুরোধ করে না, শুভ-অশুভ লক্ষণ নির্ণয় করায় না, ছ্যাকা দিয়ে চিকিৎসা করে না বরং শুধু তাদের রবের উপরই ভরসা করে।” (বুখারি ৫৪২০, মুসলিম ৩২৩)
একজন রাক্বি এই হাদীসে উল্লিখিত ব্যক্তিদের মাঝে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য দাবিদার। কারণ, সে নিজেই রুকইয়াহ করে, অন্যের কাছে গিয়ে রুকইয়াহ করানোর প্রয়োজন তাঁর নাই। আর সে যখন আল্লাহর অনুগ্রহে জটিল জটিল সমস্যা সামাল দেয়, শক্তিশালী শয়তানদের শায়েস্তা করে, ভয়ংকর সব যাদু নষ্ট করে – আর এতসব অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে স্রেফ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ওপর ভরসা রেখে লড়ে। একের পর এক নুসরত প্রত্যক্ষ করে মুখলিস রাক্বির ঈমান এক অনন্য স্তরে পৌঁছে যায়। বস্তুতঃ এটা এমন এক মেহনত, যেখানে আল্লাহ ওপর তাওয়াককুল ব্যতীত কোন দুনিয়াবি সাহায্য উপকারে আসে না।
মোটকথা, এভাবেই একজন রাক্বি তাওয়াককুলে পুর্ণতা লাভ করে। সুতরাং তাঁর জন্য খুবই যৌক্তিক, সে এই পুরস্কার আশা করতে পারে।
কী ভাবছেন এখন? আপনি রুকইয়াহ করবেন তো?