Saturday, May 15, 2021

মেয়েরা স্বামীর পাশে অন্য কাউকে মানতেই পারেনা

 

মেয়েরা স্বামীর পাশে অন্য কাউকে মানতেই পারেনা, কথাটা পুরোপুরি ঠিক না। বরং মেয়েরা পারে জেনেই আল্লাহ্ তা'আলা পুরুষদের একাধিক বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন। আল্লাহ্ কাউকে সাধ্যের অতীত বোঝা চাপিয়ে দেন না।
তবে আমাদের দেশে একাধিক বিয়ে মেনে নিতে না পারার প্রধান কারণ হলো, পরিবেশ। সৌদির মেয়েরা মাসনা দেখে অভ্যস্ত, এভাবেই তারা বেড়ে ওঠে, তাই তাদের জন্যে এটা তেমন কোনো ফ্যাক্ট না। তারাই বরং স্বামীর জন্য পাত্রী খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাসনা মানেই দুইটা মেয়ের জীবন শেষ, ওয়াহিদার চূড়ান্ত অসম্মান।
দ্বিতীয়ত, তীব্র ভালোবাসার মানুষগুলোকে আমরা সবসময় নিজের করেই রাখতে চাই, সেখানে অন্য কারও অস্তিত্ব আমাদের প্রচন্ডভাবেই কষ্ট দেয়। এটা শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রে না, বরং পুরুষের ক্ষেত্রেও। কোনো স্বামী কখনও তার ভালোবাসার স্ত্রীর পাশে অন্য কাউকে কল্পনা পর্যন্ত করতে পারবে না। এমনকি তারা তো এটাও ভাবতে পারে না যে, আখিরাতে যদি অন্য কেউ স্বামী হয়! কাজেই, এই জেলাসি থাকাটা খুবই স্বাভাবিক এবং এটা শুধু স্বামী-স্ত্রী না, অনেকে তার প্রিয় বন্ধুর ক্ষেত্রেও খুব জেলাস থাকে৷ এই বিষয়গুলো আসলে সম্পর্কের ওপর ডিপেন্ডেড।
যেমন- রাসূল (ﷺ) ওয়াহিদা জীবিত থাকাকালীন মাসনা করেননি, নবুওয়্যাতের বেশ অনেক বছর পরেই মা খাদিজা (রা.) মারা যান, তবুও করেননি। তাঁদের সেই সম্পর্কটাই ছিলো তেমন বন্ধনের, যেখানে তৃতীয় কারো দরকার হয়না। তেমনি আশেপাশে এমন অনেক পুরুষকেই দেখেছি, যাদের জোর করেও মাসনা করানো যায়না, কারণ তারা যাকে ভালোবাসে, তাকে নিয়েই সুখী। এছাড়া অন্য কাউকে দরকার নেই।
এ ব্যাপারে একটা ঘটনা আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়, যেটা অনেকেই জানেনা। রাসূল (ﷺ) এর বড় মেয়ে যাইনাব (রা) ও তাঁর স্বামী আবু আস (রা) এর ঘটনা। আবু 'আস (রা) ছিলেন এমন একজন, যিনি স্ত্রীর সাথে দীর্ঘ বিচ্ছেদ, এমনকি স্ত্রী মারা যাবার পরেও অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারেননি। যখন তাঁকে কুরাইশদের অন্যান্য সুন্দরী মেয়ের ব্যাপারে প্রস্তাব দেয়া হতো, তিনি স্পষ্ট করে বলতেন— ‘ওয়াল্লাহি! যাইনাবের পরিবর্তে সকল নারী দিলেও, আমার তা পছন্দ নয়।’
আবু আস (রা) এর স্ত্রীর প্রতি এই ভালোবাসা রাসূল (ﷺ) পছন্দ করতেন এবং তাঁর প্রশংসা করতেন।(তাবারী-৩/১৩৬; ইবনে হিশাম আস-সীরাহ-১/৬৫২)
এখন বলা যেতে পারে, রাসূল (ﷺ) তো মা আয়িশাহ্ (রা) কেও খুব ভালোবাসতেন। তবে আয়িশাহ (রা) যদি খাদিজা (রা) এর সম্বন্ধে কিছু বলতেন, তখন রাসূল (ﷺ) প্রচন্ড রাগান্বিত হতেন, কারণ খাদিজা (রা) এর প্রতি নবীজীর ভালোবাসা ছিলো বাস্তবিকই সবচেয়ে আলাদা। তাই আমরা দেখতে পাই, মা খাদিজা (রা) বেঁচে থাকাকালীন আল্লাহ্ তা'আলা নবীজিকে মাসনার আদেশও দেননি। এক্ষেত্রে আবারও বলা যায়, 'আল্লাহ্ কাউকে তার সাধ্যের অতীত বোঝা চাপিয়ে দেননা।' - (সূরাহ্ বাক্বারাহ্: ২৮৬)
একইভাবে দেখা যায়, আদম (আ) ও হাওয়া (আ) এর বন্ধন। এখানে আমি এটা বলছিনা যে, সকল রাসূলগণের শরীয়ত একই, বরং তা অবশ্যই ভিন্ন। তবে এখানে আদম (আ) এর বিষয়টি তুলে ধরার কারণ হলো, ফিতরাতের বিষয়টি বোঝানো। কারণ অনেকে বলে থাকেন, সকল পুরুষের ফিতরাত হলো বহুগামিতা; তাই কোনো পুরুষ নিজের জন্য মাসনা না চাওয়ার অর্থ, সে শারীরিকভাবে দুর্বল— যেটা পুরোটাই ভুয়া। কারণ, ফিতরাত হলে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই আদম (আ) এর জন্যে একাধিক স্ত্রী তৈরি করে দিতেন (আল্লাহু আ'লাম)।
তবে হ্যাঁ, মানুষভেদে প্রয়োজন আলাদা। আর আল্লাহ্ সকল বান্দার প্রয়োজন সম্পর্কে অবগত, তাই কারও প্রয়োজন হলে সে যেনো পাপাচারে না জড়িয়ে পবিত্রতার সম্পর্কে আবদ্ধ হতে পারে, এটা মাসনা হালাল হবার একটা উল্লেখযোগ্য কারণ।
কিন্তু দুনিয়াতে এমন সম্পর্ক অনেক স্বামী-স্ত্রীরই আছে, যেখানে চাইলেও মাসনার ব্যাপারটা মেনে নেয়া স্বামী-স্ত্রী দু'জনের জন্যেই কঠিন। কিন্তু এর মানে এই না যে, আল্লাহ্ তা'আলার করা হালাল বিধানের প্রতি অবজ্ঞা বা অসন্তোষ, না'উজুবিল্লাহ। যেমন- কাঁঠাল হালাল ফল হলেও সবাই তা খেতে পারেনা; আবার, মাছ হালাল হলেও সবাই মাছের গন্ধ সহ্য করতে পারেনা, কষ্ট হয়। এর মানে কি এই যে, সে আল্লাহ্'র বিধানকে তুচ্ছ করলো? মোটেই না।
কারণ, এই বিষয়গুলো আল্লাহ্ তা'আলা আমাদের ইচ্ছাধীন করে দিয়েছেন, হালালের ভেতর থেকে যা খুশি গ্রহণ করো সতর্কতার সাথে। খাদ্য হালাল হলেই যেমন ইচ্ছামতো অপচয় করা গুনাহ, তেমনি ফ্যান্টাসির জোয়ারে থেকে মাসনার জন্য কোনো মেয়ের ওপর জুলুম করা আরও বড় গুনাহ।
এখন কথা হচ্ছে, যদি আমাদের জন্য রিবা হালাল করা হতো আর বলা হতো যে, হালাল হলেও রিবার কাছে না যাওয়াই নিরাপদ, তাহলে সতর্কতার খাতিরে আমরা সকলেই রিবা'র সংস্পর্শ থেকে বাঁচতে চেষ্টা করতাম, তাইনা? এ কারণেই ইমাম শাফিঈ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, "আমার পছন্দ হলো- বিবাহ একজনের মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখা, যদিও এর বেশি করারও অনুমতি রয়েছে। কেননা আল্লাহ্ বলেছেন, যদি তোমরা আশঙ্কা করো যে তোমরা ন্যায়বিচার করতে পারবে না, তবে একটিই (বিয়ে করো)।"
কুরআনে আল্লাহ্ বুঝিয়ে দিয়েছেন, একটি বিয়ে নিরাপদ। তবে চারটে অবধি অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে অনেক বোনের আক্ষেপ যে, কেনো কুরআনে এটা উল্লেখ করলো?
প্রথমত, জাহেলী যুগ ছিলো অশ্লীলতায় পরিপূর্ণ। আজ থেকে এক দেড়শ বছর আগে এই ভারতেই অনেক মানুষ ৩০/৫০/৮০, এমন কি একশো'র বেশি বিয়ে করত! রেফারেন্স হিসেবে দেখতে পারেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বই 'বহুবিবাহ'।
আর, মধ্যযুগে বল্লাল সেন কৌলিন্য প্রথার মুখোশে যে বহুবিবাহ প্রথার প্রচলন করেছিলো, সেই প্রথার সুযোগ নিয়ে কুলীন ব্রাহ্মণ শতাধিক বিবাহে মেতে উঠতো। এছাড়া রূপকথা পড়লেও দেখা যাবে, সব রাজাদের কয়েকটা করে রাণী।
মানুষেরা আগে এমনই ইচ্ছেমতো বিয়েশাদী করতো, ছিলো না কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থা। তখন আল্লাহ্ আয়াত নাজিল করেন, বিয়ে করা যাবে শর্তসাপেক্ষে সর্বোচ্চ চারটে, এর বেশি না।
গাইলান ইবনু সালামা আস-সাকাফী নামের একজন ব্যক্তির একইসময় ১০ জন স্ত্রী ছিলো। জাহেলী যুগে তিনি এই ১০ জনকে বিয়ে করেন। তাঁর সাথে তাঁর ১০ জন স্ত্রী ইসলাম গ্রহণ করে। রাসূল (ﷺ) যখন শুনতে পেলেন গাইলানের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ১০ জন স্ত্রী, তখন তিনি তাঁকে বললেন, “তুমি তাদের মধ্যে যেকোনো চারজনকে বেছে নাও।” [জামে আত-তিরমিজি : ১১২৮]
কায়স ইবনুল হারিস যখন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন তাঁর ৮ জন স্ত্রী ছিলো। ইসলাম গ্রহণ করার পর কায়স (রাদিয়াল্লাহু আনহু) রাসূল (ﷺ) কে বিষয়টি জানান। রাসূল (ﷺ) তাঁকেও একই কথা বলেন, “তাদের মধ্যে তোমার পছন্দমতো চারজনকে রেখে দাও।” [সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৯৫২]
কথা হলো যে, ইসলাম তো নতুন করে বহুবিবাহের প্রচলনই ঘটায়নি। বরং আল্লাহ্ সর্বপ্রথম একজন মানবের জন্যে একজন মানবীকেই স্ত্রী হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন। বহুবিবাহের প্রচলন শুরু করেছে মানুষ, ইসলাম জাস্ট এখানে সীমারেখা টেনে দিয়েছে, তাও শর্ত দিয়ে— যেটা নিঃসন্দেহে উত্তম। নয়তো কুরআনে উল্লেখ না থাকলে, এখনও হয়তো মানুষ দেশে বিদেশে ইচ্ছামতো বিয়ে করতো, কিন্তু ইনসাফের ধার ধারতোনা।
এ কারণেই পাশ্চাত্যের বিখ্যাত দার্শনিক লিটনার তার 'মহামেডানিজম' বইতে লিখেছেন, 'অপরিমিত বহু বিবাহ প্রথাকে মুহাম্মাদ (ﷺ) রুখে দিয়েছিলেন।'
এছাড়াও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অনেক সময়েই মাসনার দরকার হতে পারে বলেই আল্লাহ্ এই বিধানকে হালাল করেছেন। তাই মাসনার কারণে কাউকে যেমন অসম্মান করবো না, তেমনি কেউ ব্যক্তিগত ভাবে নিজের জন্য মাসনা না চাইলে, তাকে আল্লাহদ্রোহী কাফির কিংবা অক্ষম পুরুষ আখ্যা দেওয়াটা অত্যাধিক বাড়াবাড়ি, যেটা অনেকেই করে।
বর্তমানে এই বহুবিবাহের বিষয়টা নিয়ে আন্দোলনে নামা বা প্রচুর পরিমাণে লিখালিখি করে মানুষকে উৎসাহী করা দরকার, এই ভাবনাটা আমার নিতান্তই অযৌক্তিক লাগে। ভাবখানা এমন যেনো, আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন, অধিক বিয়ে করলেই অধিক সওয়াব! কিংবা যে মাসনা করবেনা, সে গুনাহগার হবে!
আমি এক বোনকে জানি, যার স্বামী সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব লিখালিখি পড়ে হঠাৎই মাসনার প্রতি প্রচন্ড উৎসাহী হয়েছেন। তিনি বিয়ের জন্যে পাত্রী খুঁজছেন, কিন্তু তার বউ আছে জেনে কেউ রাজি হচ্ছেনা। এদিকে সেই স্বামীর তখন মাথা খারাপ, সে প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে হলেও দ্বিতীয় বিয়ে করবেই। ওদিকে সন্তান নিয়ে বোনটা মহাবিপদে। এরকম আরও বোন আছেন, যাদের স্বামী শুধুমাত্র মাসনা বিষয়ক নানা অযৌক্তিক লিখালিখির কারণে হঠাৎ করেই বদলে গিয়েছে, সেই বোনগুলি বড় বিপদে আছে। চোখের সামনে তাদের ভালোবাসার মানুষ হাত আলগা করে দেয়ায় তাদের চোখে অশ্রু ঝরে রোজ। সেইসাথে কষ্ট পায় বোনদের পরিবারও।
তাহলে আমার রব্ব, আর-রহমানুর রাহীম তো পরিবার, বাবা-মা সবার চেয়ে অনেক অনেক বেশি দয়ালু, তাঁর বান্দা সকলেই। তাঁর দুয়ারে নিশ্চয়ই জমা হবে বোনদের সেইসব অশ্রুবিন্দু। এইসব বিষয়ে কিছু বললে কতক ভাইবোন দারুন ক্ষেপে যান। তাই ফয়সালা জমা থাক রব্বের কাছেই।
আরেকটা মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট বিষয় হলো তাক্বদীর। তাক্বদীরে মুবরাম বা স্থায়ী তাক্বদীর হলো এমন তাক্বদীর যা কখনো পরিবর্তন হয় না। বান্দার জন্য যা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অনিবার্যভাবে ঘটবেই। বিয়ের ব্যাপারটাও অনেকটা তেমনই। কেউ সারাদিন পাতার পর পাতা লিখে উৎসাহ দিলেও, যার তাক্বদীরে নেই তার মাসনা তো দূর, বিয়েই হবেনা। মাঝখান দিয়ে কিছু বোনের সংসারটাই নষ্ট হবে কেবল।
ইসলামে চাহিদা আর প্রয়োজনের মাঝে বিস্তর তফাৎ। এখানে ইহসান বলেও যে একটা জিনিস আছে, সেটা আজকাল অনেকে ভুলে যান। হাদীসে আছে- 'ওই পুরুষ উত্তম, যে তার স্ত্রী'র কাছে উত্তম।' - (জামে তিরমিজি)
তবুও কেউ এতোটাই অধৈর্য্য যে, স্ত্রী অসুস্থ হলেই অন্য কাউকে বেছে নিতে চায়। এখানে সে হালাল কাজ করলো বটে, তবে ইহসান করলো না। আল্লাহ্ তো সবই দেখেন। তাঁর ইচ্ছায় সময় ঘুরে যেতে পারে, তেমন অসুস্থ হয়ে যেতে পারে স্বামীটাও!
মূলত ভালোবাসা, ইহসান আর ইনসাফের মাধ্যমে হালালভাবে সুন্দর সংসার গড়ে তোলাই কাম্য। এখানে কেউ রব্বের সন্তুষ্টির আশায় উত্তমরূপে একজনকেই ভালোবেসে মাসনা থেকে বিরত থাকলে এবং ইনসাফের ভয় করলে, আলহামদুলিল্লাহ্। আবার, সেই রব্বের সন্তুষ্টির আশাতেই কেউ মাসনা করলে, সেক্ষেত্রেও আলহামদুলিল্লাহ্।
সবশেষে, আমার রব্বের কাছে তো নিয়্যত আর তাক্বওয়াই প্রাধান্য পায়।
.
~ জান্নাত মিম
১১.০৪.২০২১

ইসমে আজম কি?? ইসমে আজম কবে পড়বেন, হাদিসে বর্ণীত সঠিক ইসমে আজম ও ইসমে আজমের ফজিলত

 

ইসমে আজম কি?? ইসমে আজম কবে পড়বেন, হাদিসে বর্ণীত সঠিক ইসমে আজম ও ইসমে আজমের ফজিলত:

▪️যে দোয়া পাঠ করলে আল্লাহর দান ও সাড়া পাওয়া যায়, এবং দোয়া কবুল হয় । ইসমে আজম হলো আল্লাহর গুণবাচক নাম গুলো দিয়ে দোয়া, যে দোয়া পাঠ করলে আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে তা অবশ্যয় আল্লাহ কবুল করেন।
ফজিলতঃ এক ব্যাক্তিকে ইসমে আজম পাঠ করতে দেখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘সে আল্লাহকে তাঁর ইসমে আজম বা সর্বাধিক বড় ও সম্মানিত নামের সঙ্গে ডাকল। 🔰 যা (ইসমে আজম) দ্বারা যখন কেউ তাঁর নিকট কিছু প্রার্থনা করে, তিনি তাকে তা দান করেন এবং যা দ্বারা যখন কেউ তাঁকে ডাকে, তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দেন।🔰 (তিরমিজিঃ৩৫৪৪, আবু দাঊদঃ১৪৯৩, নাসাঈঃ১৩০০)
 
▪️অনেকের প্রশ্ন বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম দেখা যায় ইসমে আজম তাহলে কোনটা পড়বো? কোনটি সঠিক? এই প্রশ্নের উত্তর হলো ৩ টি সহীহ হাদীসে ৩ ভাবে ইসমে আজমের দোয়াটি উল্লখিত রয়েছে। তাই একেক জায়গায় একেক রকম দেখা যায়। ৩ টি হাদীসই সহীহ, আপনাদের সুবিধার্থে ৩ টিই উল্লেখ করলাম। তবে প্রথমটি বেশি প্রচলিত।
ইসমে আযমঃ
🔰
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ، الْمَنَّانُ، يَا بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالْإِكرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হা’মদু লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা ওয়াহ’দাকা লা-শারীকা লাকাল মান্না-ন, ইয়া বাদীআ’স্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরদ্বি, ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল-ইকরা-ম। ইয়া হা’ইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম।
(সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-৩৫৪৪)
🔰
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ أَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না আসআলুকা আন্না আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আংতা আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৪৯৩)
🔰
اللَّهُمَّ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ ‏.‏
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা ইলাহা ইল্লা আংতা মান্নানু বাদিয়্যুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
(সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং-১৩০০)
(আরবি উচ্চারণ প্রাধান্য দিন)
[উপরের তিনটি ইসমে আযম থেকে যে কোন একটি ইসমে আযম আমল করলেই হবে, প্রথমটি সবচেয়ে ভাল]
 
▪️এখন প্রশ্ন আসতে পারে কখন পড়বেন এই দোয়া? এই প্রশ্নের উত্তর একটি হাদীস দ্বারা স্পষ্ট হয়... আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার রাসুল (স:) নামাজের পর দোয়ারত জায়েদ ইবনে সাবিতের (রহ:) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সাবিত (রহ:) দোয়া করার সময় এই দোয়াটি বলছিলেন: (ইসমে আযম) আমি হু্ুবুহু হাদিসটি উল্লেখ করছি:
 
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لك الْمَنَّانُ بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ يَا ذَا الْجَلالِ وَالإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّو
 
[এটি উপরের তিনটি ইসমে আযমের ১ম টি]
তখন মুহাম্মাদ (সঃ) বললেন, 'তুমি জানো, তুমি কি দিয়ে দোয়া করেছ? তুমি দোয়া করেছ 'ইসমে আজম' দিয়ে, যা দ্বারা দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন এবং তা দ্বারা কিছু চাইলে আল্লাহ তা প্রদান করেন।'' (সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং-৩৫৪৪)
এছাড়াও মুহাম্মাদ (সঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইসমে আজম দিয়ে দোয়া করে তার দোয়া আল্লাহ্‌ কবুল করেন। (মুসনাদে আহমদ : ১২২০৫)
আরও বলা হয়েছে, যে আল্লাহর ঐ ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করেছে যা দ্বারা দোয়া করা হলে তিনি তা কবুল করেন, আর যাদ্বারা কোন কিছু চাওয়া হলে তা তিনি দান করেন। (সুনানে নাসাঈঃ হাদিস নং ১৩০০)
এ থেকে বোঝা যায়, সালাতে সালাম ফিরানোর আগে অর্থাৎ তাশাহুদ,দরুদ,দোয়া মাসুরা পড়ার পর ইসমে আযম পাঠ করা যাবে,বা সালাত শেষে মোনাজাতের আগে বা দোয়া করার আগে আপনি ইসমে আজম পড়বেন, বা যেকোনো কিছু চাওয়ার বা দোয়া করার আগে এই দোয়া পড়লে আপনার দোয়া কবুল হবে।
🔰ইসমে আযমের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য অপরিসীম। যাদের দোয়া কবুল হয়না, ইসমে আজম পাঠ করে আল্লাহর কাছে আকুতি মিনতি করে দীর্ঘ সময় নিয়ে আল্লাহর কাছে চাইতে থাকুন, আল্লাহ কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সবাইকে আমল করার তাওফিক দান করুক, তাওফিক দাতা আল্লাহ