ইসমে আজম কি?? ইসমে আজম কবে পড়বেন, হাদিসে বর্ণীত সঠিক ইসমে আজম ও ইসমে আজমের ফজিলত:
যে দোয়া পাঠ করলে আল্লাহর দান ও সাড়া পাওয়া যায়, এবং দোয়া কবুল হয় । ইসমে আজম হলো আল্লাহর গুণবাচক নাম গুলো দিয়ে দোয়া, যে দোয়া পাঠ করলে আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে তা অবশ্যয় আল্লাহ কবুল করেন।
ফজিলতঃ এক ব্যাক্তিকে ইসমে আজম পাঠ করতে দেখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘সে আল্লাহকে তাঁর ইসমে আজম বা সর্বাধিক বড় ও সম্মানিত নামের সঙ্গে ডাকল। যা (ইসমে আজম) দ্বারা যখন কেউ তাঁর নিকট কিছু প্রার্থনা করে, তিনি তাকে তা দান করেন এবং যা দ্বারা যখন কেউ তাঁকে ডাকে, তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দেন। (তিরমিজিঃ৩৫৪৪, আবু দাঊদঃ১৪৯৩, নাসাঈঃ১৩০০)
অনেকের প্রশ্ন বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম দেখা যায় ইসমে আজম তাহলে কোনটা পড়বো? কোনটি সঠিক? এই প্রশ্নের উত্তর হলো ৩ টি সহীহ হাদীসে ৩ ভাবে ইসমে আজমের দোয়াটি উল্লখিত রয়েছে। তাই একেক জায়গায় একেক রকম দেখা যায়। ৩ টি হাদীসই সহীহ, আপনাদের সুবিধার্থে ৩ টিই উল্লেখ করলাম। তবে প্রথমটি বেশি প্রচলিত।
ইসমে আযমঃ
১
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لَا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ، الْمَنَّانُ، يَا بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالْإِكرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস-আলুকা বি-আন্না লাকাল হা’মদু লা-ইলা-হা ইল্লা-আনতা ওয়াহ’দাকা লা-শারীকা লাকাল মান্না-ন, ইয়া বাদীআ’স্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরদ্বি, ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল-ইকরা-ম। ইয়া হা’ইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম।
(সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-৩৫৪৪)
২
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ أَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না আসআলুকা আন্না আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আংতা আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।
(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৪৯৩)
৩
اللَّهُمَّ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ .
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা ইলাহা ইল্লা আংতা মান্নানু বাদিয়্যুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
(সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং-১৩০০)
(আরবি উচ্চারণ প্রাধান্য দিন)
[উপরের তিনটি ইসমে আযম থেকে যে কোন একটি ইসমে আযম আমল করলেই হবে, প্রথমটি সবচেয়ে ভাল]
এখন প্রশ্ন আসতে পারে কখন পড়বেন এই দোয়া? এই প্রশ্নের উত্তর একটি হাদীস দ্বারা স্পষ্ট হয়... আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার রাসুল (স:) নামাজের পর দোয়ারত জায়েদ ইবনে সাবিতের (রহ:) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সাবিত (রহ:) দোয়া করার সময় এই দোয়াটি বলছিলেন: (ইসমে আযম) আমি হু্ুবুহু হাদিসটি উল্লেখ করছি:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ وَحْدَكَ لاَ شَرِيكَ لك الْمَنَّانُ بَدِيعَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ يَا ذَا الْجَلالِ وَالإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّو
[এটি উপরের তিনটি ইসমে আযমের ১ম টি]
তখন মুহাম্মাদ (সঃ) বললেন, 'তুমি জানো, তুমি কি দিয়ে দোয়া করেছ? তুমি দোয়া করেছ 'ইসমে আজম' দিয়ে, যা দ্বারা দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন এবং তা দ্বারা কিছু চাইলে আল্লাহ তা প্রদান করেন।'' (সুনানে তিরমিজি, হাদিস নং-৩৫৪৪)
এছাড়াও মুহাম্মাদ (সঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইসমে আজম দিয়ে দোয়া করে তার দোয়া আল্লাহ্ কবুল করেন। (মুসনাদে আহমদ : ১২২০৫)
আরও বলা হয়েছে, যে আল্লাহর ঐ ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করেছে যা দ্বারা দোয়া করা হলে তিনি তা কবুল করেন, আর যাদ্বারা কোন কিছু চাওয়া হলে তা তিনি দান করেন। (সুনানে নাসাঈঃ হাদিস নং ১৩০০)
এ থেকে বোঝা যায়, সালাতে সালাম ফিরানোর আগে অর্থাৎ তাশাহুদ,দরুদ,দোয়া মাসুরা পড়ার পর ইসমে আযম পাঠ করা যাবে,বা সালাত শেষে মোনাজাতের আগে বা দোয়া করার আগে আপনি ইসমে আজম পড়বেন, বা যেকোনো কিছু চাওয়ার বা দোয়া করার আগে এই দোয়া পড়লে আপনার দোয়া কবুল হবে।
ইসমে আযমের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য অপরিসীম। যাদের দোয়া কবুল হয়না, ইসমে আজম পাঠ করে আল্লাহর কাছে আকুতি মিনতি করে দীর্ঘ সময় নিয়ে আল্লাহর কাছে চাইতে থাকুন, আল্লাহ কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সবাইকে আমল করার তাওফিক দান করুক, তাওফিক দাতা আল্লাহ
No comments:
Post a Comment