কেয়ামতের আলামত দুই ধরনের। ছোট ও বড়। ছোট আলামত বলতে সেসব লক্ষণকে বোঝানো হয় যা কেয়ামতের অনেক আগে থেকে সংঘটিত হবে। কেয়ামতের ছোট আলামতগুলো নিম্নরূপ :
কেয়ামতের আলামত দুই ধরনের। ছোট ও বড়। ছোট আলামত বলতে সেসব লক্ষণকে বোঝানো হয় যা কেয়ামতের অনেক আগে থেকে সংঘটিত হবে। কেয়ামতের ছোট আলামতগুলো নিম্নরূপ :
১. রাসুলুল্লাহ (সা.) এর আগমন। বোখারি;
২. তাঁর ওফাত। বোখারি;
৩. তাঁর আঙুলের ইশারায় চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়া। সূরা কামার ১-২;
৪. সাহাবাগণের বিদায়। মুসলিম;
৫. বায়তুল মোকাদ্দাস বিজয়। বোখারি;
৬. দুইটি প্রলয়ঙ্করী মহামারী (যা ১৬ ও ২৫ হিজরিতে হয়েছিল।) বোখারি;
৭. নানা ধরনের ফিতনা প্রকাশ ঘটবে। মুসলিম;
৮. আকাশ মিডিয়ার বিস্তার। ইবনে আবি শায়বা;
৯. সিফফিনের যুদ্ধ (যা আলী ও মুয়াবিয়া (রা.) এর মাঝে ঘটেছিল)। বোখারি ও মুসলিম;
১০. খারেজিদের প্রকাশ। বোখারি;
১১. ৩০ জন নবুয়তের দাবিদার, মহামিথ্যুকের প্রকাশ। বোখারি;
১২. সুখ-শৌখিনতা বৃদ্ধি ও দূর-দূরান্ত পাড়ি দেয়া সহজ হয়ে যাবে। আহমাদ;
১৩. হেজাজ থেকে আগ্নেয়গিরি প্রকাশ। বোখারি;
১৪. মুসলমানদের সঙ্গে তুর্কিদের যুদ্ধ। (যা সাহাবিযুগে হয়েছিল) বোখারি;
১৫. জুলুমবাজ লোকেরা ছড়ি ও চামড়ার বেত দিয়ে নিরীহ মানুষকে প্রহার করবে। আহমাদ;
১৬. খুন বেড়ে যাবে। মুসলিম;
১৭. অন্তর থেকে আমানত উঠে যাবে। বোখারি;
১৮. ইহুদিদের অনুকরণের প্রবণতা বেড়ে যাবে। বোখারি;
১৯. ক্রীতদাসীর গর্ভ থেকে মালিকের জন্ম হবে। মুসলিম;
২০. স্বল্পবসনা নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। মুসলিম;
২১. ছাগলের রাখাল, নগ্নপদের লোকেরা ও বস্ত্রবঞ্চিতরা অট্টালিকা হাঁকাবে। মুসলিম;
২২. চেনাজানা ও বিশিষ্ট লোকদের সালাম দেয়ার প্রচলন হবে। ইবনে খুজাইমা;
২৩. ব্যবসার ব্যাপক বিস্তার ঘটবে। আহমাদ;
২৪. স্বামীর ব্যবসায় (শেয়ার হিসেবে) স্ত্রী যোগ দেবে। আহমাদ;
২৫. কিছু ব্যবসায়ী গোটা বাজার নিয়ন্ত্রণ করবে। আহমাদ;
২৬. মিথ্যা সাক্ষী বেড়ে যাবে। আহমাদ;
২৭. সত্য সাক্ষ্য গোপনের প্রবণতা বাড়বে। আহমাদ;
২৮. মূর্খতা বেড়ে যাবে। বোখারি;
২৯. মানুষের অন্তরে হিংসা ও কৃপণতা বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ;
৩০. প্রতিবেশীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ
৩১. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের প্রবণতা বাড়বে। আহমাদ;
৩২. অশ্লীলতার সয়লাব শুরু হবে। আহমাদ;
৩৩. আমানতদারকে অবিশ্বাস আর খেয়ানতকারীদের বিশ্বাস করা হবে। হাকেম;
৩৪. সমাজের ভালো লোকেরা দ্রুত বিলুপ্ত হবে ও নিচু লোকদের উত্থান হবে। হাকেম;
৩৫. সম্পদ কোথা থেকে কীভাবে এলো তার বাছবিচার করবে না কেউ। বোখারি;
৩৬. যুদ্ধলব্ধ সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন হবে না। তিরমিজি;
৩৭. আমানতকে গনিমতের সম্পদ ভেবে ভোগ করা হবে। তিরমিজি;
৩৮. জাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে। তিরমিজি;
৩৯. পার্থিব উদ্দেশ্যে এলম শিখবে। তিরমিজি;
৪০. মানুষ স্ত্রীর কথা শুনবে, মায়ের কথা শুনবে না। তিরমিজি;
৪১. পিতাকে দূরে রেখে বন্ধুদের কাছে টানা হবে। তিরমিজি;
৪২. মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলা ও হৈহট্টগোলের প্রবণতা দেখা যাবে। তিরমিজি;
৪৩. অপরাধী ও অসৎ লোকেরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতা হবে। তিরমিজি;
৪৪. সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সমাজের নেতৃত্বে থাকবে। তিরমিজি;
৪৫. মানুষকে শ্রদ্ধা করা হবে তার অনিষ্ট ও ক্ষতির ভয়ে। তিরমিজি;
৪৬. ব্যভিচারকে অবৈধ মনে করা হবে না। বোখারি;
৪৭. পুরুষের জন্য রেশমকে হালাল মনে করা হবে। বোখারি;
৪৮. মদকে বৈধ মনে করা হবে। বোখারি;
৪৯. গানবাজনার অবৈধতার ধারণা বিলুপ্ত হবে। বোখারি;
৫০. মৃত্যু কামনা বেড়ে যাবে। বোখারি;
৫১. সকালের মোমিন বিকালে কাফের এবং বিকালের কাফের সকাল না হতেই ঈমানদার হয়ে যাবে। বোখারি;
৫২. মসজিদগুলোতে অতিরিক্ত সাজসজ্জা করা হবে। নাসাঈ;
৫৩. বাসাবাড়িতে সাজগোজে সীমালঙ্ঘন করা হবে। আদাবুল মুফরাদ;
৫৪. বেশি বেশি বজ্রপাত হবে। আহমাদ;
৫৫. লেখনী ও লেখকের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। আহমাদ;
৫৬. গলাবাজিকে পেশা বানানো হবে। আহমাদ;
৫৭. মানুষ কোরআন বিমুখ হয়ে যাবে এবং অন্য বইয়ের কদর ও বিস্তার হবে। তাবরানি;
৫৮. সমাজে কারি ফকিহ ও আলেম কমে যাবে। হাকেম;
৫৯. যারা নিজের যুক্তি দিয়ে কথা বলে এবং বেদাতে লিপ্ত, তাদের থেকে মানুষ এলম অর্জন করবে। ইবনুল মুবারক ফিয-যুহদ;
৬০. হঠাৎ মৃত্যুর হার বেড়ে যাবে। তাবরানি
৬১. নির্বোধরা নেতা হবে। বাজ্জার;
৬২. সময় কাছাকাছি হয়ে যাবে। বোখারি;
৬৩. স্বল্পবুদ্ধির লোকেরা জাতির মুখপাত্র বনে যাবে। মাজমাউজ যাওয়াইদ;
৬৪. নির্বোধরাই বেশি সফল হবে। ত্বহাবি;
৬৫. মসজিদকে রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হবে। হাকেম;
৬৬. মোহরানার আকার বৃদ্ধি পাবে। হাকেম;
৬৭. ঘোড়ার দাম বেড়ে যাবে। হাকেম;
৬৮. বাজারগুলো নিকটবর্তী ও সবকিছু হাতের নাগালে হয়ে যাবে। আহমাদ;
৬৯. অন্যসব জাতি মুসলিমদের নিধনে ঐক্যবদ্ধ হবে। আবু দাউদ;
৭০. মানুষ ইমামতি করতে চাইবে না। প্রাগুক্ত;
৭১. ঈমানদারদের অনেক স্বপ্ন সত্য প্রমাণ হবে। বোখারি;
৭২. মিথ্যার প্রচলন বাড়বে। মুসলিম;
৭৩. মানুষ একে অন্যকে চিনতে চাইবে না। কেউ কারও সঙ্গে একান্ত স্বার্থ ছাড়া পরিচিত হতে চাইবে না। আহমাদ;
৭৪. ভূমিকম্পের হার বেড়ে যাবে। আহমাদ;
৭৫. মহিলাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। বোখারি;
৭৬. পুরুষ কমে যাবে। বোখারি;
৭৭. অশ্লীল কাজ প্রচুর এবং প্রকাশ্যে হবে। মুসলিম;
৭৮. কোরআন পাঠ করে মানুষের কাছে বিনিময় চাওয়া হবে। আহমাদ;
৭৯. মোটা মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাবে। বোখারি;
৮০. সাক্ষ্য চাওয়া ছাড়াই আগ বেড়ে সাক্ষ্য দেয়ার লোক প্রকাশ পাবে। মুসলিম;
৮১. মানত করে তা পুরা করবে না। মুসলিম;
৮২. শক্তিশালীরা দুর্বলদের ভক্ষণ করবে। আহমাদ;
৮৩. আল্লাহর বিধান বাদ দিয়ে মানব রচিত বিধান অনুসৃত হবে। আহমাদ;
৮৪. পশ্চিমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও আরবরা কমে যাবে। মুসলিম;
৮৫. অভাবি লোক থাকবে না। জাকাত গ্রহণের লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। মুসলিম;
৮৬. ভূগর্ভ তার ভেতরের খনিজসম্পদ বের করে দেবে। মুসলিম;
৮৭. আকৃতি-বিকৃতির ঘটনা ঘটবে। তিরমিজি;
৮৮. ভূমিধস দেখা দেবে। তিরমিজি;
৮৯. আকাশ থেকে প্রস্তর বৃষ্টি হবে। তিরমিজি;
৯০. কেয়ামতের আগে এমন বৃষ্টি হবে যা সব কাঁচা-পাকা বাড়িকে নিমজ্জিত করে দেবে। কিন্তু উটের পশম দ্বারা নির্মিত (বিশেষ ধরনের) তাঁবু রক্ষা পাবে। আহমাদ
৯১. কেয়ামতের আগে বৃষ্টি হবে কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ফসল হবে না। আহমাদ;
৯২. একটি ভয়াবহ দাঙা গোটা আরবকে পরিষ্কার করে দেবে (মানুষ মরে সাফ হয়ে যাবে)। আহমাদ;
৯৩. আল্লাহর হুকুমে বৃক্ষ কথা বলবে। বোখারি;
৯৪. মুসলমানদের সাহায্যার্থে পাথরের জবান খুলে যাবে এবং পাথরের আড়ালে লুকানো ইহুদিদের কথা অলৌকিকভাবে বলে দেবে সে। বোখারি;
৯৫. মুসলমানরা ইহুদিদের সঙ্গে চূড়ান্ত যুদ্ধ করবে। বোখারি;
৯৬. ফোরাত নদীতে সোনার পাহাড় আবিষ্কার হবে। বোখারি;
৯৭, কেউ গোনাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করলে সমাজের মানুষ তাকে অচল, অসামাজিক, অযোগ্য ইত্যাদি তকমা দেবে। আহমাদ;
৯৮. আরব উপদ্বীপে নদীনালা ও পানির নহর হবে। মুসলিম;
৯৯. আহলাস নামক ফিতনা-দাঙ্গা দেখা দেবে। আবু দাউদ;
১০০. সাররা নামক আরেকটি ফিতনা প্রকাশ হবে। আবু দাউদ;
১০১. কেয়ামতের আগে দাহিমা নামক একটি ভয়াবহ দাঙ্গা সৃষ্টি হবে। আবু দাউদ;
১০২. এমন একটা সময় আসবে যখন এক সিজদার মর্যাদা গোটা পৃথিবী ও তন্মধ্যকার সবকিছুর চেয়ে বেশি হবে। বোখারি;
১০৩. মাসের শুরুতেই চাঁদ মোটা দেখা যাবে, যা সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম। তাবরানি;
১০৪. মানুষ সিরিয়ামুখী হবে। আহমাদ;
১০৫. পশ্চিমাদের সঙ্গে মুসলমানদের মহাযুদ্ধ সংঘটিত হবে। তিরমিজি;
১০৬. মুসলমানরা কুসতুনতুনিয়া (ইস্তান্বুল) জয় করবে। তিরমিজি;
১০৭. মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদ বণ্টন করা হবে না। মুসলিম;
১০৮. গনিমত-যুদ্ধলব্ধ সম্পদে মানুষ সন্তুষ্ট হবে না। মুসলিম;
১০৯. পুরাতন যুদ্ধাস্ত্রের প্রচলন পুনরায় চালু হবে। তিরমিজি;
১১০. কিছুকাল বিরান থাকার পর পুনরায় বায়তুল মোকাদ্দাস আবাদ হবে। আবু দাউদ;
১১১. মদিনা তখন বিরান হবে এবং সেখানে পর্যটক ও অধিবাসী কমে যাবে। আবু দাউদ;
১১২. কামারের হাপর যেমন লোহার জং দূর করে, মদিনা তেমনিভাবে তার ভেতরের সব মন্দকে বের করে দেবে। বোখারি;
১১৩. পাহাড় নিজ স্থান থেকে সরে যাবে। (অলৌকিকভাবে অথবা মানুষ পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করবে)। তাবরানি;
১১৪. একজন কাহতানি বংশীয় লোক আত্মপ্রকাশ করবে এবং সবাই তাকে অনুসরণ করবে। বোখারি;
১১৫. জাহজাহ নামের এক লোক আবির্ভূত হবে। মুসলিম;
১১৬. কেয়ামতের পূর্বে চতুষ্পদ হিংস্র জন্তু ও জড় পদার্থ কথা বলার মতো অলৌকিক ঘটনা ঘটবে। তিরমিজি;
১১৭. ছড়ির মাথা থেকে কথা ভেসে আসবে। তিরমিজি;
১১৮. জুতার ফিতা থেকেও কথা ভেসে আসবে। তিরমিজি;
১১৯. এমন একটা সময় আসবে, মানুষের ঊরু অলৌকিকভাবে তার স্ত্রীর অনৈতিকতার কথা জানিয়ে দেবে। তিরমিজি;
১২০. ধরাপৃষ্ঠ থেকে ইসলামচর্চা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ইবনে মাজাহ;
১২১. আল্লাহ মানুষের অন্তর থেকে কোরআন উঠিয়ে নেবেন। ফলে কারও স্মৃতিতে আর কোরআন থাকবে না। ইবনে মাজাহ;
১২২. কিছু লোক মক্কার হারামে যুদ্ধ করতে আসবে এবং ইমাম মাহদিকে গ্রেফতার করতে চাইবে, তখন তাদের পুরো বাহিনীসহ ভূমিধস হবে। মুসলিম;
১২৩. বায়তুল্লাহর হজ পরিত্যাজ্য হয়ে যাবে। ইবনে হিব্বান;
১২৪. আরবের কোনো কোনো গোত্র মূর্তিপূজা আরম্ভ করবে। বোখারি;
১২৫. কোরাইশ বংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আহমাদ;
১২৬. একজন নিগ্রো কর্তৃক কাবা ভেঙে ফেলার ঘটনা ঘটবে। বোখারি;
১২৭. মোমিনদের জান কবজ করার জন্য একটি স্নিগ্ধ বাতাস বইবে। বোখারি;
১২৮. মক্কায় সুউচ্চ দালান নির্মিত হবে। ইবনে আবি শায়বা;
১২৯. উম্মতের উত্তরসূরিরা পূর্বসূরিদের অভিশাপ দেবে। ইবনে আবি শায়বা;
১৩০. নিত্যনতুন দামি বাহন বের হবে। ইবনে হিব্বান;
১৩১. ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তিরমিজি।
আহমাদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ দেলোয়ার হুসাইন