Saturday, May 11, 2024

ঈমান দুর্বলতার আলামত, কারণ ও চিকিৎসা

⛔ ঈমান দুর্বলতার আলামত, কারণ ও চিকিৎসা

🔻 প্রথম: ঈমান দুর্বলতার কতিপয় আলামত (১৯টি পয়েন্ট)

১. পাপ কাজে লিপ্ত হওয়া
২. অন্তর কঠিন হয়ে যাওয়া
৩. মজবুতভাবে ইবাদত না করা 
৪. ইবাদতে অলসতা করা
৫. অন্তরে সংকীর্ণতা অনুভব করা
৬. কুরআনের আয়াত, আল্লাহর আদেশ-নিষেধ, আযাব-গযব এবং কিয়ামতের বিবরণ শুনে প্রভাবিত না হওয়া
৭. আল্লাহর যিকির-আযকার, দুয়া ইত্যাদির ব্যাপারে অমনোযোগী থাকা
৮. আল্লাহর বিধান লঙ্ঘিত হতে দেখলেও মনে রাগ বা ক্ষোভ সৃষ্টি না হওয়া
৯. নিজেকে লোক সমাজে প্রকাশের মনোবাসনা সৃষ্টি হওয়া
১০. প্রচণ্ড অর্থলিপ্সা ও কৃপণতা করা
১১. এমন কথা বলা যা সে নিজে করে না।
১২. কোন মুসলিমের বিপদ দেখে আনন্দিত হওয়া
১৩. কল্যাণকর কাজকে তুচ্ছ মনে করা বা ছোট ছোট নেকীর কাজকে গুরুত্ব না দেয়া
১৪. মুসলিমদের বিভিন্ন ঘটনাবলীতে গুরুত্ব না দেয়া
১৫. বন্ধুত্বের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়া 
১৬. বিপদাপদ বা সমস্যায় মুষড়ে পড়া
১৭. তর্ক-বিতর্ক ও ঝগড়াঝাঁটি করা
১৮. দুনিয়ার প্রেমে মগ্ন থাকা
১৯. খাদ্য-পানীয়, পোশাক-পরিচ্ছদ, গাড়ি-বাড়ি ইত্যাদিতে মাত্রাতিরিক্ত গুরুত্ব দেয়া।

🔻দ্বিতীয়: ঈমান দুর্বলতার কারণ (৮টি পয়েন্ট)

১. দীর্ঘ সময় ঈমানী পরিবেশ থেকে দূরে থাকা
২. সৎ, আদর্শবান ও অনুসরণীয় মানুষের সংশ্রব থেকে দূরে থাকা
৩. দ্বীনের ইলম (জ্ঞান) অন্বেষণ থেকে দূরে থাকা
৪. পাপ-পঙ্কিল পরিবেশে বসবাস করা
৫. দুনিয়াবি ব্যস্ততায় নিমগ্ন থাকা
৬. ধন-দৌলত, সন্তান-সন্ততি ও স্ত্রী-পরিবার নিয়ে ব্যস্ততায় ডুবে থাকা
৭. সুদীর্ঘ আশা
৮. অতিরিক্ত পানাহার,অতিরিক্ত ঘুম অথবা নিঘূর্ম রাত কাটানো। অনুরূপভাবে মানুষের সাথে মেলামেশা ও উঠবসের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সময় অপচয় করা।

🔻 তৃতীয়: ঈমান দুর্বলতার চিকিৎসা (১৯টি পয়েন্ট)

১. আল কুরআন অধ্যয়ন করা
২. মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ব অনুধাবন করা,তাঁর নাম ও গুণাবলীগুলো সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করার পর সেগুলোর মর্মার্থ জেনে-বুঝে সেগুলোকে অন্তরে গেঁথে নেয়া এবং কাজে-কর্মে তার প্রতিফলন ঘটানো।
৩. দ্বীনের ইলম অন্বেষণ করা
৪. যে সকল বৈঠকে আল্লাহর যিকির তথা আল্লাহ এবং আল্লাহর দ্বীন সম্পর্কে আলোচনা করা হয় সেগুলোতে নিয়মিত উপস্থিত হওয়া
৫. অধিক পরিমাণে নেকীর কাজ করা এবং সব সময় নেকীর কাজে লেগে থাকা
৬. বিভিন্ন প্রকারের ইবাদত করা
৭. অধিক পরিমাণে মৃত্যুর কথা স্মরণ করা
৮. ঈমান নবায়নের অন্যতম উপায় হল,আখিরাতের বিভিন্ন মনজিলের কথা স্মরণ করা
৯. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঘটনাবলীতে প্রভাবিত হওয়া
১০. আল্লাহর যিকির
১১. আল্লাহ তাআলার কাছে নিজের দীনতা তুলে ধরে দুয়া-মুনাজাত করা
১২. বেঁচে থাকার লম্বা আশা না করা
১৩. এ কথা চিন্তা করা যে, পার্থিব জীবন খুবই নগণ্য।
১৪. আল্লাহর বিধি-বিধান ও-নিদর্শনাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।
১৫. আল ওয়ালা ওয়াল বারা (ঈমানদারদের সাথে বন্ধুত্ব এবং কা/ফে/র/দের সাথে শত্রুতা পোষণ করা)
১৬. বিনয় অবলম্বন করা।
১৭.অন্তরের কতিপয় বিশেষ কাজ। 
১৮. আত্মসমালোচনা। 
১৯. ঈমান নবায়নের জন্য দুআ করা।

মূলঃ শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ
অনুবাদকঃ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

Sunday, May 5, 2024

কর্পোরেট প্রস্টিটিউশন

কর্পোরেট প্রস্টিটিউশন

এই সম্পর্কে যারা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও এজেন্সিগুলোতে কাজ করতেছেন তারা ছাড়া বাকিরা কেউ ভাবতেও পারবেন না সমাজে কি চলছে। বর্তমান কর্পোরেটে এটা একটা ক্যান্সার হয়ে গেছে। ভোগবাদী আর শো-অফের নেশায় নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে দ্বিধা করছে না মেয়েরা। পুরুষের লালসা আর ফাঁদে পা দিয়ে নিজে বুঝে উঠার আগেই চরিত্র বিকিয়ে দিচ্ছে সদ্য ভার্সিটি পাস করা মেয়ে। ব্যাপারটা শুধু ছোট কিংবা বড় প্রতিষ্ঠান নয় সব জায়গায় একই ভয়াবহ ক্যান্সার। পাবলিকের মেধাবী মেয়ে বা প্রাইভেটে অ্যাভারেজ মেয়ে নয়, সত্যি বলতে কোনো বাছবিচার নাই। পাবলিক, এনএসইউ, অনার্স কলেজ, প্রাইভেট সব জায়গার ভালো পরিবার, স্বচ্ছল পরিবার, অভাবী পরিবার কোনো বাছবিচার নাই বিশ্বাস করেন। নাস্তিক উগ্র মেয়ে কিংবা নামাজী মেয়ে সবাইকে এই ফাঁদে পা দিতে দেখে ফেলেছি অলরেডি। হ্যা, নিজের কথাই বলছি পাশাপাশি আমার বন্ধুদের অনেকেই আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠানে আছে তাদের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। আসেন আপনাদের কিছু সিনারিও দেখাই।

আমরা যারা ছেলেরা চাকরি করছি করেছি তাদের অভিজ্ঞতা আছে একটা ইনক্রিমেন্ট, একটা প্রমোশনের জন্য আমরা কি কি করেছি। রাতদিন ডিউটি, নাইট, আনলিমিটেড অফিস আওয়ার, দেশের নানা প্রান্তে সফর, রাতদিন এক করে ফোনকল ফলোয়াপ কি কি করেছি একবার চোখ বন্ধ করে ভাবুন। কুত্তার জীবন আর আপনার জীবনে কোনো তফাত পাবেন না। বিনিময়ে মাস শেষে আপনার এনে দেওয়া ইনকাম থেকে কোম্পানী আপনাকে দয়া করে কিছু অংশ দিয়ে তার ৪ গুন কীভাবে আদায় করে নেওয়া যায় সেই চিন্তায় মত্ত। এইবার কল্পনা করুন, একজন মেয়ে কোম্পানীতে জয়েন করলো। প্রথম মাসে তার হাতের শাওমি কিংবা মিডরেঞ্জ অপ্পোটি সাডেনলি আইফোনে রুপান্তরিত হলো। সে ছুটি পায় আগে। একজন জিএম গাড়ী না পেলেও একজন মেয়ে এক্সিকিউটিভ গাড়ীতে বাসায় যায়। প্রায়ই ছুটিতে থাকে। হঠাৎ তৃতীয় মাসে কেন যেন তাকে বিদেশ সফর করতে হয় এক্সিবিশন আর মিটিং এটেন্ড করার জন্য। তাও যে সে জায়গায় নয়। দুবাই কিংবা থাইল্যান্ড। এদিকে প্রায় রাতেই তাকে ডিনার করতে হয় লে মেরিডিয়ানে বা ওয়েস্টিনে। 

আশ্চর্যের বিষয়, মেয়েটি এই সুবিধাগুলোকে নিজের যোগ্যতায় পাওয়া সুবিধা মনে করে। কোম্পানী তাকে সেটা ফীল করায়। তাকে মিথ্যা আশ্বাস দেয় এই কয়দিন পরেই তুমি ম্যানেজার হয়ে যাবা, সব তোমারই দেখা লাগবে। মেয়েটিও বিশ্বাস করে। সেজন্য সে বিছানায় যেতেও দ্বিধা করে না। সে ভাবে বয়ফ্রেন্ডের সাথে যেতে যেহেতু দ্বিধা করি না ম্যানেজমেন্টের সাথে যেতে দ্বিধা কই। আর ম্যানেজমেন্টের জন্যই তো আজ হাতে আইফোন, কাঁধে ডিজাইনার ব্যাগ, গায়ে ১৩ হাজার টাকা দামের সেলোয়ার কামিজ। একবারও কি তার মনে উদয় হয় না এই বস্তুগুলোর চেয়ে আমার চরিত্রের দাম লাখ কোটি গুণ বেশী? আমি অবাক হই, কীভাবে এই মেয়েটি রাতে তার স্বামীর পাশে শোয়। কীভাবে তাকে আবার ভালোবাসার কথা বলে? তার মনে কি অপরাধবোধ কাজ করে না একটুও? নিজেকে কি অপবিত্র মনে হয় না? মনে হয় না যে আমি নাপাক হয়ে গেছি? এই নাপাকি কোনোভাবেই দূর করা পসিবল না। আচ্ছা সে কি ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে না? ভবিষ্যতে যখন আমার সন্তান হবে সেই সন্তানের মা যে দুশ্চরিত্রা মা হয়ে গেলো এটা তাকে ভাবায় না? 

এইবার আরেকটু আগাই আসেন। কিছুদিন পর যখন কোম্পানির এই মহামূল্যবান সম্পদটি হঠাৎ ব্রাত্য হয়ে যায়, যেতে আসতে ঝাড়ি খায়, গালি খায় তখন তার বোধদয় হয় যে আমার থেকে যা নেয়ার সব নিয়ে আমাকে ছূড়ে ফেলা হয়েছে। বোধদয় হয় কি? না হয় না। কারণ কোম্পানি তাকে ছেড়ে দিলেও সম্পর্ক রেখে দেয়। সকালে অফিস না করলেও রাতে ঠিকই ডিউটি করে। হয়তো ওই এক বান্ডেল টাকার লোভে। ছিহ: বাবা মা সারাজীবন তাকে ফুলের মতো করে লালনপালন করে বড় করছে ওয়েস্টিন আর হোটেল সারিনার নিশিকণ্যা হওয়ার জন্য? 

অনেকে পোস্ট করেন যেই আপুরা কক্সবাজার যায় আর আইফোন চালায় তারা কোন কোম্পানিতে কাজ করে। হ্যারে ভাই তারা সব কোম্পানিতেই কাজ করে। 

তবে যেই মেয়েরা নিজেকে বিলিয়ে দেয়া ছাড়া জব করে তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন জব কত কষ্ট। একটা আইফোনের দাম কত। একটা শখ পুরা করতে তাকে কত ঘন্টা অফিস করতে হয়েছে। আমি এমনও দেখেছি খারাপ প্রোপোজাল পেলে সাথে সাথে এক সেকেন্ড দেরী না করে রিজাইন দিতে। এমনকি এরকম মানুষও আছে আর কখনো কর্পোরেট জগতেই আসে নি। জবও ছেড়ে দিছে। এমন মানুষ দেখেছি রাতদিন কষ্ট করার পরেও কোম্পানী তাকে মূল্য দিচ্ছে না দেখে জব ছেড়ে দিছে কিন্তু খারাপ কাজে পা বাড়ায় নি।

অফিসের অন্যান্য কলিগরা কি এইসব জানে না? হ্যা জানে, ডে ওয়ান থেকেই তারা সব জানে। ম্যানেজমেন্টের ইশারায় তারা চুপ করে থাকে কিন্তু আড়ালে কি বলে সেগুলা শুনলে ওইসব আপুরা মাটির ১৪ হাত নীচে চলে যাইতো। আসলেও কি যাইতো? মনে হয় না। কারণ একজন বিবাহিত, কয়েক বাচ্চার বাপের বিছানা যারা গরম করতে পারে কিছু টাকার জন্য তাদের আবার শরম কীসের? 

এইজন্য সচেতন অভিভাবকদের বলি আপনার মেয়েকে জবে দেয়ার আগে ১৪ বার ভাবুন। হায়েনার ভীড়ে আপনার আদরের সোনামণিকে ছেড়ে দেয়ার আগে চিন্তা করুন তাকে কতটুকু আগলে রাখতে পারবেন। তাকে চোখে চোখে রাখুন। ঈদের দুইদিন আগে জয়েন করেই ফুল ঈদ বোনাস, হঠাৎ দামী দামী জামাকাপড়, হাতে আইফোন, জয়েন করতে না করতেই প্রমোশন ইনক্রিমেন্ট, দুই মাস ঘুরতে না ঘুরতেই বিদেশে কনফারেন্স এটেন্ড এগুলা দেখলেই বুঝবেন আপনের আদরের সোনামণি এখন একটা কর্পোরেট প্রস্টিটিউট হয়ে গেছে। যার সাথে দৌলতদিয়ার মহিলাদের সাথে পার্থক্য শুধু পে-রোলে।

হ্যাপী কামলাসোদা দিবস

Nayeemul Hasan