Monday, June 17, 2024

কাদের নিয়ে মাতামাতি? 03

কাজল আরেফিন অমি বলেছে, যারা তার নাটকের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকদের বয়কটের কথা বলছে, তারা নাকি পরে বুঝতে পারবে যে, ব্যাপারটা ঠিক ছিল না। তার টিমের লোকেরা নাকি বয়কট করার মত কিছু করেনি। 

তার বক্তব্য থেকে বুঝা যায়, সে কোকাকোলাকে প্রমোট করা ও মুসলিম সমাজের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালানোকে কোন দোষনীয় বিষয় মনে করে না। কারণ সে বলেছে, তার টীমের লোকেরা নাকি বয়কট করার মত কোন অপরাধ করেনি। অথচ তার টীমের জীবন ও শিমুল দুজন লোক কোকাকোলার প্রচারমূলক একটি প্রোপাগান্ডাময় এড করেছে। তার মানে কি অমির কাছে এটা কোন অপরাধ নয়?

এটা হল একটি দিক। আরেকটি দিক হল, ইসলামের দৃষ্টিতে তারা সকলে কোকাকোলার ইস্যু ছাড়াই বয়কটযোগ্য। কারণ এরা সকলেই প্রচলিত নাটক নির্মাণ ও সেগুলোতে অভিনয়ের মাধ্যমে সমাজে অশ্লিলতা, বেহায়াপনা ও দ্বীনহীনতার প্রচার করছে। ইসলামের দৃষ্টিতে তারা অশ্লিলতার প্রচারক। আর অশ্লিলতার প্রচারকদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখেরাতে শাস্তির হুশিয়ারি দিয়েছেন। 

মূলত কাজল আরেফিন অমি ও তার টিমের মত লোকেরা আজ যেই কাজ করছে, এক সময় তারা বুঝতে পারবে তারা কতটা ভয়াবহ কাজ করছে এবং তাদের এই কাজ যে কোনভাবেই সঠিক ছিল না। এই বুঝতে পারাটা যদি মৃত্যুর আগেই ঘটে, তাহলে তারা সৌভাগ্যমান। ( দোয়া করি, দুনিয়াতেই তারা এটা বুঝতে পেরে ফিরে আসুক)

কিন্তু বুঝতে পারাটা যদি মৃত্যুর পরে হয়, তাহলে তাদের আফসোস করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।


ইফতেখার সিফাত (হাফি.)

কাদের নিয়ে মাতামাতি ? 02

সমাজে অশ্লিলতার প্রচারক সেলিব্রিটি, নায়ক, নায়িকা, মডেল, প্রতিষ্ঠানের প্রতি যারা আবেগ, ভালবাসা ও উন্মাদনা রাখেন তারা একনিষ্ঠভাবে কেবল একবার পবিত্র কুরআনের এই আয়াতটি নিয়ে ভেবে দেখুন।

যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জাননা। (সুরা নুর, আয়াত ১৯)

আপনি কাদেরকে নিয়ে উন্মাদন হয়ে আছেন, কাদের ভালবাসায় আপনি অন্ধ হয়ে আছেন, কাদের প্রতি আপনি মুগ্ধতা অনুভব করছেন, কাদের মত হওয়ার জন্য আপনি আপ্রাণ পরিশ্রম করে যাচ্ছেন! 

যাদেরকে আপনার রব আযাবের ভীতি প্রদর্শন করছে, যাদেরকে আপনার সৃষ্টিকর্তা অপরাধী হিসেবে উপস্থাপন করছে, যাদেরকে আপনার ইলাহ দুনিয়া ও আখেরাতে অপদস্থতার বাণী শোনাচ্ছে, যাদেরকে আপনার প্রতিপালক অসম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরছে।

অমুক সেলিব্রেটির ফ্যানগ্রুপ খুলে গ্রুপে তাকে নিয়ে যত ধরণের উন্মাদনা আছে প্রকাশ করছেন। অশ্লিলতার প্রচারক কোন অভিনেতাকে নিয়ে গেট টু গেদার করার জন্য আত্মহারা হয়ে যাচ্ছেন। তার হাতের ছোঁয়া কিংবা কথার শব্দে আপনি আনন্দে ভেসে যাচ্ছেন। মুগ্ধ হয়ে তার ছবি, ভিডিও কিংবা গান শেয়ার দিচ্ছেন, অনুপ্রেরণা বা মুগ্ধতা প্রকাশকারী কমেন্ট করছেন, রিয়েক্ট দিচ্ছেন।

আপনি ভাবছেন এগুলো জাস্ট এমনি। কক্ষনো না। আপনি ভুল ধারণায় আছেন। এগুলোই তার প্রতি আপনার ভালবাসা ও মুগ্ধতার বহিঃপ্রকাশ। এই এক্টিভিটিগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার রবের বিরুদ্ধাচারণ করছেন। সমাজে অশ্লিলতার প্রসারে আপনিও ভূমিকা পালন করছেন। উল্লেখিত প্রতিটি কর্মের হিসেব আপনাকে দিতে হবে, তা যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন।আপনার লাইক, কমেন্ট, ভিউ তাদেরকে অনুপ্রেরণা দেয়। তাদের কর্মকে আরো প্রভাবশালী করে। 

একদিকে আপনি আপনার রবের অবাধ্যতায় লিপ্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে আপনি এগুলোর মাধ্যমে কী পাচ্ছেন সেটা ভেবে দেখেছেন? কিছুই না। উন্মাদনা আর ফ্যান্টাসি ছাড়া কিছুই না। কিন্তু হারাচ্ছেন অনেক কিছু। তারা আপনার দ্বীন, কর্মোদ্যমতা, সৃজনশীলতা, বৈধ প্রতিভা, যোগ্যতা সব কিছুকে কেড়ে নিচ্ছে। আপনাকে অথর্ব ও প্রতিবন্ধী এক খেলনার পাত্রে পরিণত করছে। আপনাকে আপনার দ্বীন ও দুনিয়ার দায়িত্ব ও অধিকার থেকে বেখবর করে রাখছে। সেই সুযোগে আপনি হয়ে বসেছেন পৃথিবীর কিছু মানুষের দাস।

ইফতেখার সিফাত (হাফি.)