Tuesday, August 16, 2011

ভূতের গল্প- প্রকৃতপক্ষে সত্যি ঘটনা -১

সত্যি কাহিনী - ( পর্ব ১ )

রাত দুইটা বাজে। এবার উঠতে হবে। টাইড খেলা অনেক হয়েছে। আর ভাল লাগছে না। যদিও তাসের এই পর্ব সারারাতই চলবে। মামুন বিদায় নিল। বন্ধুরা নাছড় বান্দা। কেউ ছাড়তে চাই না। চাদঁ রাত বলে কথা। সারারাত ক্লাবে হই হুল্লর। আজ আবার একটা ছাগল চুরি করা হয়েছে। রান্না ভাল হয়নি। কেমন একটা বমি বমি লাগছে। মামুন ঢাকায় থাকে। ঈদের সময় শুধু বা...ড়ি আসা। চাদঁ রাতে পাড়ার এই ক্লাবটির চেহেরায় বদলে যায়। প্রায় সব বন্ধু ই জড়ো হয়। এবার শুধু নয়ন নেই। ডিভি পেয়ে আমেরিকা চলে গেছে। নয়নের উদ্দেশ্যে শোকগাথাঁ লেখা হয়েছে। কাশেম লিখেছে। কবি হিসাবে এই মফস্সল শহরে তার আবার খানিক নাম ডাক আছে। ভোর চারটায় আরেকবার গলা ভেজানোর ব্যবস্থা আছে। মামুন শত প্রলোভন উপেক্ষা করে বেড়িয়ে পড়ল। শরিরটা আসলেই খারাপ করেছে। মাথার ভিতর একটা ভোতাঁ যন্ত্রনা। ক্লাব থেকে বেরিয়ে বাড়ির সর্টকার্ট পথ ধরল। ধানক্ষেতের আল দিয়ে। রাত ভালই হয়েছে। ঘুটঘুটে অন্ধকার। মোবাইলে চার্জ নেই। অনভস্ত্যতায় পথ চলতে একটু কষ্টই হচ্ছে। হঠ্যাৎ করে বমি চলে এসেছে। আর আটকাতে পারল না। ধান ক্ষেতের পাশেই বসে পড়ল। মনে হচ্ছে আর দাড়াতে পারবে না। আশেপাশে কাউকে খোজাঁর চেষ্টা করল। কেউ কি আছে। অন্ধকারে ভাল করে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এখনো অনেক পথ। একটু পানি পেলে ভাল লাগত। কুলি করা দরকার। ঠিক এসময় নিমাই দা এসে উপস্থিত
: কিরে, মামুন না। কি হয়েছে তোর।
: নিমাই দা। খুব খারাপ লাগছে
: দাড়া। আমাকে ধরে দাড়া।
: মনে হয় পারব না। একটু পানি খাওয়াতে পারবে।
: পানি নেই। ধর স্প্রাইট খা।
: দেও।
মামুন স্প্রাইট দিয়েই কুলকুচি করল। আরেকবার বমি হয়ে গেল।
: নিমাই দা, আমাকে একটু বাসায় দিয়ে আসবা।
: শোন আমার বাসাতো কাছেই। তুই চল। আগে কিছুক্ষন রেস্ট নিবি।
মামুন বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নিল। নিমাই দা স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলের অংকের মাষ্টার। মামুনদের দু-ব্যাচ সিনিয়ার। অসম্ভব ভাল। কিছু মানুষ থাকে উপকার করার জন্য জন্মায় সেই টাইপের। মামুন নিমাই এর হাত ধরে উঠে দাড়াল। দু-জনেই নিরবে এগিয়ে চলছে। গুনগুন করে নিমাই দা কি যেন একটা গাইছে। মামুনের তখন শোনার মত অবস্থা নেই। হঠ্যাৎ নিমাই দা মামুনের হাত শক্ত করে ধরল।
: কি হয়েছে?
: সামনে দেখ।
সামনে আবছা আবছা দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে কাফনের কাপড় পড়ে পাচঁটা লাশ পড়ে আছে ধান ক্ষেতের উপর। হালকা নড়ছেও। ভয়ের একটা শীতল স্রোত বয়ে গেল কেন জানি।
: চল
: কি ওগুলো
: চল না। যেয়ে দেখি।
: যাবা
: দুর গাধা। তুইতো ভয়েই আধমরা হয়ে গেলি।
: আমিতো এমনিতেই আধঁমরা। কিছু দেখলে কিন্তু ফুল মরা হয়ে যাব।
: বকবক করিস না। চল
কিছু দুর যেয়েই ঘটনা পরিস্কার হল। ধান ক্ষেতের উপর কে যেন কাপড় শোকাতে দিয়েছে। সাদা কাপড়। সেগুলোই দূর থেকে লাশের মত লাগছে। দু-দজনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি। নিমাই দা'র গানটা এবার বোঝা যাচ্ছে। নজরুল সংগীত।
শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে
বাহিরে ঝড় বহে নয়নে বারি ঝরে
শাওন রাতে যদি....

ভুলিও স্মৃতি মম নিশীথ স্বপন সম
আঁচলের গাঁথা মালা ফেলিও পথ পরে
বাহিরে ঝড় বহে নয়নে বারি ঝরে
শাওন রাতে যদি....
..................
..............................
............................................................
.............................
মামুন শুয়ে আছে নিমাই দা'র বাড়িতে। বাসা পর্যন্ত যেতে পারে নি। নিমাই দা'র বাড়ির সামনে আরেকবার বমি। কিছুতেই নিমাই দা ছাড়ল না। একটা এভোমিন পাওয়া গেছে। বৌদিও খুব ভাল। সাক্ষাত প্রতিমা'র মত চেহারা। মামুনের বিছানা গুছিয়ে দিল। বেশি কথা না বাড়িয়ে মামুন চুপচাপ শুয়ে পড়ল। ছোট্ট একটা বাড়ী নিমাই দা দের। তিন রুমের। উপরে টিন। নিমাই দা বৌদি' পাশের রুমে। বাসায় বোধহয় আর কেউ নেই। ঘুটঘুটে অন্ধকার। নিমাই দা'র একটা ছোট বোন ছিল। রাজশ্রী। মামুনের সাথে একটা অনৈতিক সম্পর্কও কিভাবে যেন গড়ে উঠেছিল যৌবনের প্রথম বছরে। বেশি দূর আর এগোয়নি। মামুন ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয়ে চলে এল। পরের বার গিয়ে শোনে বিয়ে হয়ে গেছে। সে অনেক দিন হল। শুনেছি এখন তিন ছেলে মেয়ের মা।মামুন রাজশ্রীর চেহারাটা মনে করা চেষ্টা করছে। কিছুতেই মনে পড়ছে না। আর দু-চোখ খোলা রাখা যাচ্ছে না। কখন ঘুমিয়েছে খেয়াল নেই। হঠ্যাৎ ঘুম ভেঙে গেছে। অদ্ভুত একটা শব্দে। মনে হচ্ছে এ ঘরে কোন মহিলা নামাজ পড়ছে। অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তবে নামাজ পড়ার সময় যেমন আওয়াজ হয় সেরকম আওয়াজ। মামুন চোখ বন্ধ করে ফেলল। মনে মনে বলার চেষ্টা করল সে ভুল শুনেছে। গাছের শব্দ হতে পারে। কিছুক্ষন পর আর আওয়াজ পাওয়া গেল না। চোখ খুলে আরেক বিষ্ময়। নিমাই দা দের ঘরে টাঙিয়ে রাখা কৃষ্ঞ এর ছবিটা যেন মামুনের দিকে তাকিয়ে হাসছে। অদ্ভুত ভঙ্গিতে। ঘুটঘুটে অন্ধকারেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মামুন চোখ বন্ধ করে ব্যাখ্যা দ্বার করাবার চেষ্টা করল। দূরের কোন আলো জানলা দিয়ে ছবির উপর পড়ে এমন হতে পারে। ঠিক তাই। নিজের আহাম্মকিতে নিজেই হাসার পালা। ঘুমানো'র চেষ্টা করছে কিন্তু ঘুম আসছে না। একটা'র পর ভুতের গল্প মনে পড়ছে। ঠিক এই সময় ভূমিকম্প হল। প্রথম দফা'য় তাই মনে হয়েছে। কিন্তু চোখ খোলার আগেই মনে হল পুরো খাট ধরে কেউ যেন ঝাকি দিচ্ছে। কিছু দেখা যাচ্ছে না। ভীষন ভয় লাগছে। কোন ব্যাখা দাড় করাতে পারছে না। কলেমা মনে করার চেষ্টা করতে লাগল প্রান পনে। এতে ভয় দূর হয়। কিছুতেই মনে পড়ছে না। এ সময় গগন বিদারি একটা চিৎকার ভেসে এল। কোন পিচাশের পক্ষেই এরকম আওয়াজ করা সম্ভব। মামুন লাফ মেরে উঠল। নিমাই দা নিমাই দা বলে প্রান পনে চিল্লাতে লাগল। কোন সাড়া শব্দ নেই। দরজা খুলে বাইরে যাবার চেষ্টা করল। কিন্তু দরজা খুলতেই যে দৃশ্য দেখল তাতে আত্বারাম খাচাঁ হবার যোগাড়। বৌদি দাড়িয়ে আছে। সিনেমায় দেখা রক্তচোষা ড্রাকুলাদের মত লাগছে। দাতে রক্ত লেগে আছে। সারা শরিরে রক্ত। কুৎসিত শব্দ করছে। কাচাঁ মাঙসের গন্ধ এসে নাকে লাগল। সামনে নিমাই দা'র লাশ পড়ে আছে। সেখান থেকে কলিজা বের করে খাচ্ছিল বোধহয়। ওফ এত বিভৎস! থুথু না বমি যেন করল বৌদি। গলা মাংস আর কলিজা বের হয়ে আসছে মুখ দিয়ে। মামুন স্থির। মামুনের দিকে এগিয়ে আসছে নর খাদকটা। নখ গুলো বেশ বড় বড়। মামুন ধাক্কা দিয়ে সরাতে চাইল। কিন্তু একেবারে নিখুত কাজ। সোজা মামুনের গলায় দাতঁ বসে গেছে। অজগরের খড়গোশ ধরার মত মামুনকে জাপটে ধরে রক্ত চুষতে লাগল। মামুনের দেহ নিথর। শেষবারের মত মায়ের মুখটা মনে পড়ছে।
..............................
..........................................................................................
.............
..............................
..........................................................................................
.............
মামুনের লাশ পাওয়া গেল পরদিন সকালে ঝিলের ধারে। নিমাই সরকার প্রথম দেখে। পরে সবাইকে খবর দেয়। পুলিশি তদন্ত চলছে। কি হয়েছিল ঠিক কেউ বলতে পারে না। তবে মামুনের গলায় দুটো ফুটো ছিল এটা নিশ্চিত!!

All Essential & Stylish Fonts Collection

Here goes the Links of those fonts.
Mind you are getting 927 unique Fonts family.
Happy downloading !!!!

This is in two parts.
Part 01

                         
                    Click this Link
 


Part 02

              
                   Click this Link
 


 Thanks for your participation.