Thursday, May 13, 2021

যাদু বিষয়ক সবকিছু একসাথে Treatment relating to magic illness in a single place

 

যাদু বিষয়ক সবকিছু একসাথে

 

 

  1. সিহরের কমন রুকইয়াহ
  2. যাদুর জিনিশ বা তাবিজ নষ্ট করার পদ্ধতি
  3. সিহরের চিকিৎসায় বরই পাতার গোসল
  4. বিয়ে ভাঙা বা আটকে রাখার যাদু
  5. গর্ভের সন্তান নষ্ট করার যাদু
  6. মাসনুন আমল : যাদু এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়

সিহরের কমন রুকইয়াহ

 

যাদু / ব্ল্যাক ম্যাজিক / বান মারার জন্য রুকইয়া:
যাদুর প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার রুকইয়া করা হয়। তবে কমন সেলফ রুকইয়া হচ্ছে-
প্রথমে সমস্যার জন্য নিয়াত ঠিক করে নিন, ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ পড়ে শুরু করুন। এরপর একটি বোতল ভর্তি পানি নিয়ে 
ক. সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২ 
খ. ইউনুস ৮১-৮২ 
গ. সুরা ত্বহা ৬৯নং আয়াত পড়ে ফুঁ দিন।
আপনাদের সুবিধার্থে এই আয়াতগুলো এখানে দেয়া হল। কেউ চাইলে কুরআনুল কারীম দেখেও পড়তে পারবেন। 
 
ক.
وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ - فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ - فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ - وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ -قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ - رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ -
খ.
فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ - وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ -
গ.
وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ -
ঘ. এরপর সুরা ফালাক্ব, সুরা নাস ৩বার পড়ে ফুঁ দিন।
 
তিন থেকে সাতদিন সকাল-বিকাল এই পানি খেতে হবে এবং গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে হবে।
আর ৩/৪ সপ্তাহ প্রতিদিন কমপক্ষে দুইঘণ্টা রুকইয়া শুনতে হবে। একঘণ্টা সাধারণ রুকইয়া (ডাউনলোড পেইজের ১১ থেকে ২৩ নং পর্যন্ত রুকয়াহ গুলো সাধারণ রুকইয়াহ। আপনার যেটা ইচ্ছা ডাউনলোড করে শুনবেন) আর একঘণ্টা সুরা ইখলাস, ফালাক, নাসের (ডাউনলোড পেইজের ৯ নং) রুকইয়াহ। (ডাউনলোড লিংক www.ruqyahbd.org/download )। আর পাশাপাশি তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে দোআ করতে হবে।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম সপ্তাহেই উন্নতি টের পাওয়া যায়, তবে এরপরের কয়েক সপ্তাহ একঘন্টা করে হলেও রুকইয়া শুনে যেতে হবে। বাদ দেয়া যাবে না। তাহলে ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে যাবে। যদি দুই-তিন সপ্তাহ পরেও সমস্যা শেষ না হয়, তবে আবার অনুরূপ করতে হবে।
যাদুর কোন জিনিশ অথবা তাবিজ খুঁজে পেলে:
কি দিয়ে যাদু করেছে যদি পাওয়া যায়, অথবা সন্দেহজনক কোন তাবিজ পেলে উপরে বলা আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন, এরপর তাবিজ অথবা যাদুর জিনিশগুলো ডুবিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, তাহলে ইনশাআল্লাহ যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। পরে সেগুলো পুড়িয়ে বা নষ্ট করে দিন।
 
যাদু আক্রান্ত হলে বোঝার উপায়ঃ
রুকইয়ার আয়াতগুলো যাদু আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর পড়লে, অথবা রুকইয়ার আয়াতের অডিও শুনলে যাদুগ্রস্তের অস্বাভাবিক অনুভূতি হয়। যেমন, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, পেট ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি।
 
যাদু, জ্বিন, বদনজর সম্পর্কিত একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে:
একসাথে একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে প্রথমে বদনজরের জন্য রুকইয়া করতে হবে, এরপর জ্বিনের রুকইয়া এবং যাদুর জন্য রুকইয়া।

 

 

যাদুর জিনিস বা তাবিজ নষ্ট করার নিয়মঃ

-----------
সন্দেহজনক কিছু বা কোন তাবিজ যদি পাওয়া যায় তাহলে সেটা নষ্ট করার জন্য একটি পাত্রে পানি নিন। তারপর সেই পানিতে সুরা আ’রাফ ১১৭-১২২ নং আয়াত, ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯, সূরা ফালাক্ব ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার পড়ে ফুঁ দিন। 
 
লক্ষণীয়ঃ
১। তাবিজ,পুতুল,কাগজ,যাদুকরের দেয়া যেকোনকিছু উপরের আয়াতগুলো পড়া পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন কিছুক্ষণ। কাগজে লেখা থাকলে সেটা ঘষে মুছে ফেলার চেষ্টা করবেন। লেখা মুছার পরে ছিড়ে অনেকগুলো টুকরো করবেন। তারপর শুকিয়ে পুড়িয়ে ফেলবেন। পুড়ানোর সময়ে নিশ্বাসের সাথে সেটার ধোঁয়া নেয়া থেকে বিরত থাকবেন। 
 
২। তাবিজ খালি হাতে না ধরে গ্লাভস ব্যবহার করতে পারেন। তাবিজ ধরার পূর্বে এবং নষ্ট করার পুরোটা সময়ে ফালাক, নাস পড়বেন। 
 
৩। তামা বা অন্য ধাতুর তাবিজ বা আংটিতে খোদাই করা লেখা থাকলে লেখাটা ঘষে মুছে ফেলবেন। ঘষে মুছতে না পারলে পুড়িয়ে হলেও লেখাটা মুছে ফেলা জরুরী। নিজে করতে না পারলে কোন স্বর্ণকারের কাছে গিয়ে লেখাটা মুছে ফেলবেন। 
 
৪। তাবিজে গিট দেয়া থাকলে সাবধানে প্রতিটা গিট খুলবেন। কোন পুতুল, মূর্তি, পাখি, মাছ ইত্যাদি পাওয়া গেলে সাবধানে খেয়াল করবেন এদের গায়ে কোন পিন আছে কিনা। থাকলে প্রতিটা পিন খুলবেন। পিনগুলোও পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন। জীবন্ত কোনকিছু যেমন- পাখি পাওয়া গেলে তার ডানার নিচে এবং শরীরের প্রতিটা জায়গায় খুঁজে দেখবেন কোন তাবিজ,পিন বা সন্দেহজনক কিছু আছে কিনা। থাকলে এগুলো সাবধানে খুলে নিয়ে পাখিকে তাবিজ নষ্টের পানি দিয়ে ভিজিয়ে ছেড়ে দিবেন। তাবিজের ভেতরে কাগজ ছাড়াও অন্যকিছু থাকতে পারে। তাবিজ খুলতে গেলে অনেক সময় খোলস ভেঙ্গে বের করা লাগতে পারে। যাই থাকুক, ভাঙ্গা টুকরোসহ সবটুকুই পানিতে ঢালবেন। একইভাবে যাদুকরের দেয়া তেলপড়া,পানিপড়া ইত্যাদি জিনিসপত্র পানিতে ঢালবেন।
৫। ব্যবহৃত পানি ফেলার জন্য এবং তাবিজ পুড়ানোর জন্য, সাধারনত মানুষের যাতায়াত হয়না এমন কোন জায়গা ঠিক করে নিন।
৬। কোন জায়গায় তাবিজ রাখা আছে সন্দেহ হলে সেখানে পরপর তিনদিন তাবিজ নষ্টের পানিটা ছিটিয়ে দিন। কারো বাসার দেয়ালে,ফ্লোরে অথবা যেকোন স্থানে তাবিজ আঁকা অথবা খোদাই করা থাকলে লেখাটা ঘষে মুছতে হবে। তারপর তাবিজ নষ্টের পানিটা ওখানে ছিটিয়ে দিতে হবে। অনেক সময় বাসা বানানোর সময়ে প্রতি কোণায় তাবিজ রেখে দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে এসব কোণায় তাবিজ নষ্টের পানিটা ছিটিয়ে দিবেন পরপর তিনদিন। আর দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাবিজ নষ্ট করে দেন।
৭। জ্যোতিষীর দেয়া কোন বিশেষ আংটি থাকলে তাবিজ নষ্টের পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন। কিছুক্ষণ রেখে পাথরটা ভেঙে তারপর ফেলে দিবেন। জ্যোতিষীরা বিশ্বাস করে পাথরের ক্ষমতা আছে। তাই কোনমতেই এই পাথর রেখে দেয়া যাবেনা।
৮। আপনি তাবিজ ব্যবহার করলে উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী তাবিজ নষ্ট করবেন। তারপর তাবিজ ব্যবহার করার জন্য তাওবা করবেন।

 

 সিহরের চিকিৎসায় বরই পাতার গোসল

 

 

বরই পাতার গোসল
------------------
সিহরের চিকিৎসা এই গোসলটি খুবই উপকারী। সর্বাধিক উপকারিতা বিবেচনায় সিহরের বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতির র্যাংকিং করলে হয়তো এটা সবার উপরে ১ নাম্বারে থাকবে। ইতিপূর্বে আমরা রুকইয়ার গোসল প্রবন্ধে এবিষয়ে সুদীর্ঘ আলোচনা করেছি, সুতরাং এখানে আর একই কথা পুনরাবৃত্তি করছি না। আজ আমরা সংক্ষেপে বরই পাতা বেটে রুকইয়ার গোসলের রিকোমেন্ডেড পদ্ধতি জানব।
এক বালতি গোসলের পানি নিন। এরপর সাতটি বরইয়ের পাতা বেটে (সম্ভব হলে পাটায় পিষে) পানিতে গুলান। আর পড়ুন-
১. সূরা ফাতিহা
২. আয়াতুল কুরসী
৩. সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস
সব তিনবার করে পড়ুন, এবং পড়ার মাঝে মাঝে পানিতে ফুঁ দিন। এরপর এখান থেকে তিন ঢোক পানি পান করুন, বাকিটা দিয়ে গোসল করুন।
ইনশাআল্লাহ প্রথম গোসলেই যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। প্রয়োজনে একই নিয়মে তিনদিন গোসল করুন।
উল্লেখ্য, এই পানি গরম করবেন না, এর সাথে অন্য পানি মিশাবেন না। আর বরই পাতা না পেলে কর্পূর পাতা অথবা অল্প কর্পুর দিয়ে একই নিয়মে গোসল করুন, তবে বরই পাতাই রিকমেন্ডেড। আর আপনি চাইলে সাথে আরও কিছু আয়াত অথবা দোয়া পড়তে পারেন।
আল্লার রহমতে জাদু টোনার চিকিৎসায় এই গোসল খুবই উপকারী। বিভিন্ন যুগের অনেক বিখ্যাত আলেমদের সাজেস্টেড পদ্ধতি এটা। আপনারাও চাইলে পরীক্ষা করতে পারেন। আল্লাহ ভরসা!
 

বরই পাতার গোসল

---------
সিহরের (যাদু) চিকিৎসা এই গোসলটি খুবই উপকারী। উপকারিতা বিবেচনায় সিহরের বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতির র্যাংকিং করলে হয়তো এটা সবার উপরে থাকবে।
আজ আমরা সংক্ষেপে বরই পাতা বেটে রুকইয়ার গোসলের রিকোমেন্ডেড পদ্ধতি জানব।
এক বালতি গোসলের পানি নিন। এরপর সাতটি বরই পাতা (কুল বলা হয় অনেক এলাকায়) বেটে পানিতে গুলান। (সম্ভব হলে সবুজ পাতা ব্যবহার করুন, এবং পাটায় পিষুন)। এরপর পড়ুন-
  • সূরা ফাতিহা - ৩ বার
  • আয়াতুল কুরসি - ৩ বার
  • সুরা আরাফ ১১৭-১২২ (৩বার)
  • সুরা ইউনুস ৮১-৮২ (৩বার)
  • সুরা তহা ৬৯ (৩বার)
  • সুরা ইখলাস - ৩ বার
  • সুরা ফালাক - ৩ বার
  • সুরা নাস - ৩ বার
পড়ার মাঝে মাঝে পানিতে ফুঁ দিতে পারেন। এরপর এখান থেকে তিন ঢোক পানি পান করুন, বাকিটা দিয়ে গোসল করুন। যদি গোসলের পানি খাওয়ার অনুপযোগী হয় তবে খাওয়ার পানি আলাদা করে নিবেন। এরপরে বরই পাতা পিষে উভয় পানিতে দিয়ে আয়াতগুলো পড়ে উভয় পানিতে ফুঁ দিবেন। এরপরে খাওয়ারটা খেয়ে নিবেন।
ইনশাআল্লাহ প্রথম গোসলেই যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। প্রয়োজনে একই নিয়মে আরো কিছুদিন গোসল করুন।

দ্রষ্টব্য

  • এই পানি চুলার আগুনে গরম করবেন না, এর সাথে অন্য পানি মিশাবেন না।
  • আর বরই পাতা না পেলে কর্পূর পাতা অথবা অল্প কর্পুর দিয়ে বা ওটাও না পেলে নিম পাতা দিয়েও একই নিয়মে গোসল করুন, তবে বরই পাতাই উত্তম।
  • আপনি চাইলে সাথে আরও কিছু আয়াত অথবা রুকইয়ার দোয়া পড়তে পারেন।
  • এসব আয়াত গোসলখানার বাহিরে পড়বেন। তবে সেখানে দোয়াকালাম পড়ার পরিবেশ না থাকলে আগে বরই পাতা বেটে দোয়াগুলো পড়ে ফুঁ দিন, এরপর গোসলখানায় নিয়ে পানিতে মিশিয়ে গোসল দিন।
আল্লাহ'র রহমতে জাদু-টোনার চিকিৎসায় এই গোসল খুবই উপকারী। বিভিন্ন যুগের অনেক বিখ্যাত আলেমদের সাজেস্টেড পদ্ধতি এটা। আল্লাহ্‌ চাইলে আপনিও উপকার পাবেন।
---
মূল - আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
 
 

বিয়ে ভাঙা বা আটকে রাখার যাদু

 
বিয়ে আটকে রাখার যাদু এবং তাঁর প্রতিকার
------------
.
বিয়ে আটকে রাখার যাদুটা আমাদের দেশে খুব ব্যাপক। এখানে সংক্ষেপে এই যাদুতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ এবং নিজে নিজে রুকইয়াহ করার নিয়ম আলোচিত হবে। বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন- Note 1
.
এই যাদুতে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে যে লক্ষণগুলো দেখা যায়ঃ
১। সব কিছু পার্ফেক্ট থাকলেও কোন না কোন কারনে প্রস্তাব গৃহীত হয়না। দু'পক্ষের যে কোন এক পক্ষ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়।
২। মেয়ে অনেক গুণধর হলেও প্রস্তাব আসে না।
৩। যখনই প্রস্তাব আসে তখনই মেয়ে অসুস্থ হয়ে যায়।
৪। মাথাব্যথা। ওষুধ খেয়েও তেমন ফায়দা হয় না।
৫। প্রায় সময়ই মানসিক অশান্তিতে থাকা। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত খুব অস্বস্তিতে ভোগা।
৬। মাঝে মাঝেই পেট ব্যথা করা।
৭। ব্যাকপেইন বা কোমড়ের দিকে ব্যথা করা। বিশেষত - মেরুদন্ডের নিচের দিকে।
.
লক্ষণীয় হলো - এই যাদুতে অনেক ক্ষেত্রেই জ্বীনের সাহায্য নেয়া হয়। তাই জিন আক্রান্ত হওয়ার কিছু লক্ষনও মিলতে পারে।  জ্বীন সংক্রান্তঃ https://allzinone.blogspot.com/2021/05/blog-post_13.html
.
এই যাদুর জন্য নিজে নিজে রুকইয়াহ করার পদ্ধতিঃ
১। প্রথমে পাকা নিয়ত করে নিন। কাউকে বলে নিন যেন তিনি উৎসাহ দিতে পারেন যদি কোন সময় আপনি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
২। (গ্রুপের এডমিনরা এই রুকিয়াহ করতে বললে এই ধাপ বাদ দিতে পারেন) যাদুর ব্যাপারে নিশ্চিত হতে শাইখ সুদাইস বা শাইখ লুহাইদানের রুকইয়া কয়েকবার শুনুন। সমস্যা থাকলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন যেমন: অনেক ঘুম ধরবে, মাথাব্যথা করতে পারে, তলপেটে ব্যথা করতে পারে, হাত-পা ব্যথা করতে পারে, শরীরের ভেতর ছটফট করতে পারে, অকারণে কান্না আসতে পারে। এছাড়াও রুকইয়া শুনতে গিয়ে বমি বমি ভাব আসতে পারে।
৩। দ্বিতীয় ধাপে যখন বুঝবেন আপনার যাদুর সমস্যা আছে (বা গ্রুপের এডমিনরা যদি রুকইয়াহ করতে বলে দেন) তবে খুব ভালোভাবে পাক-পবিত্র হয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ুন, সম্ভব হলে তাহাজ্জুদের সময়। এরপর দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে আপনার সমস্যা থেকে 'পরিত্রাণ পাওয়া' ও সুস্থতার জন্য দু'আ করুন। কিছু ইস্তিগফার করুন। দরুদ শরিফ পড়ুন। এরপর হাতের কাছে এক বোতল পানি নিয়ে বসুন। বোতলটি নিয়ে "সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২, সুরা ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯" এই আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন। এরপর সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস তিনবার করে পড়ে ফুঁ দিন। কিছু পানি এখনি খেয়ে নিন, বাকিটা রেখে দিন। এরপর নিচের প্রেসক্রিপশন ফলো করতে থাকুন যতদিন এডমিন করতে বলেন (অথবা নিজে নিজে রুকইয়াহ করলে ২-৪ সপ্তাহ করতে পারেন)
.
[প্রেসক্রিপশন]
১. রুকইয়াহ আয়াত পড়ে ফুঁ দেয়া এই পানি যতদিন রুকইয়াহ করতে বলা হয়েছে (বা নিজে করবেন বলে নিয়ত করেছেন) ততদিন দুইবেলা করে খেতে হবে। খাওয়ার বেলায় অন্তত আধ-গ্লাস পানি খাবেন।
২. একইভাবে প্রতিদিন গোসলের পানিতে এখান থেকে কিছু পানি মিশিয়ে গোসল করতে হবে। ঐ পানি যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে আবার এক বোতল পানি নিয়ে আয়াতগুলো পড়ে পানি তৈরি করে নিতে হবে। নিজে শুদ্ধ করে পড়তে না পারলে অন্য কেউ পড়ে দিলেও হবে। মেয়েদের পিরিয়ডের সময় অন্য কেউ পড়ে দিবে, নিজেরা পড়বে না।
৩. আর প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে রুকইয়া শুনতে হবে। আয়াতুল কুরসি'র রুকইয়া ১ ঘন্টা আর সুরা ইখলাস, ফালাক্ব, নাসের রুকইয়া ১ ঘন্টা। কোনো দিন খুব ব্যস্ত থাকলে আধাঘণ্টা হলেও শুনবেন। বাদ দিবেন না। (অডিও ডাউনলোড লিংক ruqyahbd.org/download)
৪. রুকইয়া ভালোভাবে কাজ করার জন্য নামাজ-কালাম ঠিকঠাক পড়তে হবে। ফরজ ইবাদাতে যেন ত্রুটি না হয়। মেয়েদের পর্দা করা ফরজ, তাই এব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে হবে।
৫ . সকাল-সন্ধ্যা ও ঘুমের আগে মাসনুন আমল বিশেষতঃ ৩ ক্বুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস)এর আমল ঠিকঠাক করবেন। মাসনুন আমলগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত পাবেন এখানে-
৬. ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবেন। আর তিনবার ৩ ক্বুল পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নিবেন।
.
নোট: আপনার কাজ মূলত ৩ টি। রুকইয়ার পানি খেতে হবে, গোসল করতে হবে এবং প্রতিদিন রুকইয়া শুনতে হবে (যতদিন সাজেস্ট করা হয় বা আপনি নিয়ত করেন)।
 
Note 1:
যাদের বিয়ে সংক্রান্ত সমস্যা তারা এইদিকে আসেন। আপনারা নিচের লেখাটা পড়েন। লক্ষন গুলো মিলিয়ে দেখেন। মিল খুঁজে পেলে পোস্টে যেভাবে বলা আছে সেভাবে চিকিৎসা করেন। ইনশা আল্লাহ্‌।
- বিয়ের ভাঙার যাদুর জন্য রুকইয়াহ -
...........
কাউকে বিয়ে ভাঙা বা আটকে রাখার জন্য বান মারলে / তাবিজ করলে / যাদু করলে সাধারণত এমন দেখা যায় প্রস্তাব আসে, সবকিছু পারফেক্ট থাকলেও পছন্দ হয়না। সব ঠিকঠাক থাকার পরও হয়তো ছেলে বেঁকে বসে, নয়তো মেয়ে। কোনোনা কোনোভাবে বিয়ে ভেঙে যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক গুণধর হওয়া সত্ত্বেও কোনো প্রস্তাব আসে না। কেউ প্রস্তাব দিলে পছন্দ হওয়ার বদলে উল্টা খারাপ লাগতে লাগে।
আমার এক রিলেটিভের এই সমস্যা ছিল, ওর বিয়ের আলোচনা উঠলেই সপ্তাহ-খানেকের জন্য অসুস্থ হয়ে যেত! কত মারাত্মক! তাইনা?
.
এই যাদুতে আক্রান্ত হলে সচরাচর কিছু লক্ষণ দেখা যায়-
১. মাথা ব্যথা। ঔষধ খেয়েও তেমন ফায়দা হয়না।
২. প্রায়সময়ই মানসিক অশান্তিতে থাকা, থাকা। মাঝেমধ্যেই বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত খুব অস্বস্তিতে ভুগা।
৩. ঘুমের মধ্যে শান্তি না পাওয়া, ঠিকমত ঘুমোতে না পারা, আবার ঘুম থেকে উঠার পর অনেকক্ষণ কষ্ট হওয়া।
৪. মাঝেমধ্যেই পেট ব্যথা করা।
৫. ব্যাকপেইন। বিশেষত: মেরুদণ্ডের নিচের দিকে ব্যথা করা।
লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, অনেকের ওপর বিয়ের আটকে রাখার জন্য যাদু করতে জ্বিনের সাহায্য নেয়া হয়। এজন্য কারো-কারো এই যাদু সংক্রান্ত সমস্যার সাথে সাথে জ্বিন রিলেটেড সমস্যাগুলোও দেখা যায়। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই শয়তানী যাদুর প্রচলন আমাদের দেশে খুব বেশি। আল্লাহ হিফাজত করুন।
আমরা প্রথমে লাইভ রুকইয়ার পদ্ধতি আলোচনা করে, তারপর সেলফ রুকইয়ার নিয়ম আলোচনা করবো। আপনি যদি নিজেই নিজের জন্য রুকইয়া করতে চান, তাহলে সোজা সেলফ রুকইয়াহ অনুচ্ছেদে চলে যান!
.
বিয়ে সমস্যার জন্য রুকইয়াহ:
১. আগের পর্বে বলা নির্দেশনা অনুযায়ী পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে আপনি রুগীর পাশে বসে জোর আওয়াজে রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়বেন, মাঝেমধ্যে ফুঁ দিবেন। যদি জ্বিনের সমস্যা থাকে তবে রুগীর ওপর জ্বিন চলে আসবে, তখন জ্বিন সিরিজের ৬ষ্ঠ-৭ম পর্বে যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবে ডিল করবেন। এখানে আবার সব নতুন করে সব বলা কষ্টসাধ্য।
তবে এখানে একটা বিষয় হচ্ছে, জ্বিন এলে জিজ্ঞেস করতে পারেন- ‘কিভাবে যাদু করেছে, যেসব জিনিশ দিয়ে যাদু করেছে, সেগুলো কোথায় আছে’। জ্বিনেরা যদিওবা খুব মিথ্যুক তবুও যদি বলে দেয় ভালো, না বললে নাই। যাহোক, সম্ভব হলে এটা জিজ্ঞেস করে, তারপর জ্বিন তাড়াবেন। আর যাদুর জিনিশ যদি পাওয়া যায়, তাহলে "সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২, ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯" এই আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে সেগুলো কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখতে হবে, তাহলে ইনশাআল্লাহ যাদু নষ্ট হয়ে যাবে।
২. আর যদি জ্বিন না আসে। এমনি অস্বস্তি বোধ করে, ঘুমঘুম লাগে, মাথাব্যথা করে, কান্না পায়-তাহলে বুঝতে জ্বিন দিয়ে যাদু করেনি, অন্যভাবে করেছে। তাহলে আরও ২/১বার রুকইয়া করে দেখুন। এরপর ৩য় পয়েন্ট অনুসরণ করুন।
৩. উপরের নিয়মে রুকইয়াহ করার পর একটা বোতলে পানি নিয়ে "সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২, ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯" আয়াতগুলো পড়ে ফুঁ দিন। কিছুটা এখনি খেতে বলুন, বাকিটা রেখে দিতে বলুন। এরপর নিচের প্রেসক্রিপশন অনুচ্ছেদ ফলো করতে বলে দিন। আর এক-দুই সপ্তাহ পরপর আপডেট জানাতে বলুন।
.
সেলফ রুকইয়া:
১. বিয়ে সমস্যার জন্য নিজে নিজে রুকইয়াহ করতে চাইলে প্রথমে মানসিক প্রস্তুতি নিন। এটা পাক্কা ইরাদা করে নিন সমস্যার একটা বিহিত করেই ক্ষান্ত হবো। নিজে নিজে রুকইয়া করলে অনেককে কয়েকদিন পরেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে দেখা যায়। এজন্য রুকইয়া করার ক’দিন মানসিক সাপোর্ট দেয়ার মত একজন থাকলে খুব ভালো হয়।
২. খুব ভালোভাবে পাক-পবিত্র হয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ুন, সবচেয়ে উত্তম হল তাহাজ্জুদের সময়। নইলে অন্য যেকোনো জায়েজ ওয়াক্তে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন। এরপর দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে আপনার সমস্যা থেকে 'পরিত্রাণের' জন্য এবং সুস্থতার জন্য দু'আ করে ইস্তিগফার দরুদ শরিফ পড়ে ট্রিটমেন্ট শুরু করুন। হাতের কাছে এক বোতল পানি নিয়ে বসুন। প্রথমে সিহরের রুকইয়া অথবা শাইখ সুদাইসের বা অন্য কোনো ক্বারির সাধারণ রুকইয়া শুনুন। সমস্যা থাকলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন, যেমন: অনেক ঘুম ধরবে, মাথাব্যথা করতে পারে, তলপেটে ব্যথা করতে পারে, হাতপা ব্যথা করতে পারে, শরীরের ভেতর ছটফট করতে পারে, অকারণে কান্না আসতে পারে। কিছু খাইয়ে যাদু করলে রুকইয়া শুনতে গিয়ে বমি বমি লাগতে পারে, বমি হয়ে গেলে ভালো, হয়তোবা সাথে যাদুর জিনিশ বের হয়ে যাবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যাদের রুকইয়া শুনে বমি হয়, সাধারণত তাঁরা সহজেই সুস্থ হয়ে যান।
৩. রুকইয়া শোনার পর পানির বোতলটি নিন, নিয়ে "সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২, ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯" এই আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন। কিছু পানি এখনি খেয়ে নিন, বাকিটা রেখে দিন। এবং নিচের প্রেসক্রিপশন ফলো করুন।
....
প্রেসক্রিপশন:
১. এই পানি ৩দিন বা ৭দিন দুইবেলা করে খেতে হবে। আর প্রতিদিন গোসলের পানিতে কিছু পানি মিশিয়ে গোসল করতে হবে। চাইলে আপনি সাধারণ রুকইয়ার গোসলও করতে পারেন (নিয়ম পরে বলছি)। আর রুকইয়ার ওঁই পানি যদি শেষ হয়ে যায়, তাহলে আবার এক বোতল পানি নিয়ে শুদ্ধ করে কোরআন পড়তে পারে; এরকম কেউ আয়াতগুলো পড়ে ফুঁ দিলেই হবে। এজন্য প্রফেশনাল কারো দরকার নেই, তবে বরকতের জন্য কোনো মুরব্বি অথবা আলেমকে অনুরোধ করতে পারেন, সেটা ভিন্ন বিষয়।যার সমস্যা সে নিজে পড়তে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।
সাধারণ রুকইয়ার গোসল: বালতিতে পানি নিয়ে তাতে দু'হাত ডুবিয়ে যেকোনো দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক, নাস, শেষে আবার দরুদ শরিফ- সব ৭বার করে পড়ে ওই পানি দিয়ে গোসল করবেন। উপরের যেকোনোভাবে রুকইয়ার গোসল করে পরে চাইলে অন্য পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন।
২. দুই থেকে চার সপ্তাহ প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে রুকইয়া শুনতে হবে। আয়াতুল কুরসি'র রুকইয়া ১ঘন্টা সুরা ইখলাস, ফালাক্ব, নাস-এর রুকইয়া ১ঘন্টা। কোনো দিন খুব ব্যস্ত থাকলে আধাঘণ্টা করে হলেও শুনবেন। বাদ দিবেন না। (ডাউনলোড লিংক https://ruqyahbd.org/download )
তবে এখানে একটা অপশন আছে, প্রতিদিন শোনার ক্ষেত্রে অন্য কারো হেল্প নিতে পারেন, অর্থাৎ অন্য কেউ যদি আপনার সমস্যার নিয়াতে রুকইয়া শোনে তবুও আপনি উপকার পাবেন। ব্যস্ততা থাকলে চাইলে ভাগ করে নিতে পারেন, আপনার ফ্রেন্ড শুনল ১ঘন্টা, আপনি ১ঘন্টা শুনলেন! এটা পরিক্ষিত!!
৩. রুকইয়া ভালোভাবে কাজ করার জন্য নামাজ-কালাম ঠিকঠাক পড়তে হবে। ফরজ ইবাদাতে যেন ত্রুটি না হয়। (মেয়েদের পর্দা করা ফরজ)
৪. সকাল সন্ধ্যার মাসনুন দোয়া, এবং ৩ ক্বুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস)এর আমল ঠিকঠাক করবেন।
৫. ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবেন। আর তিনবার ৩ ক্বুল পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নিবেন।
লক্ষনীয়ঃ ৩ - ৭দিন রুকইয়ার পানি খেতে হবে এবং গোসল করতে হবে। আর ২ থেকে ৪ সপ্তাহ প্রতিদিন রুকইয়া শুনতে হবে।
.
মন্তব্য:
১। কয়দিন মেয়াদি রুকইয়াহ করবেন এটা প্রথমেই ঠিক করে নিন। অর্থাৎ ৩দিন না ৭দিন পানি খাবেন আর গোসল করবেন, কতদিন রুকইয়াহ শুনবেন ২ সপ্তাহ, ৩ সপ্তাহ নাকি ১মাস এগুলো শুরুতেই ঠিক করে নিন। প্রতি সপ্তাহ শেষে যে আপনাকে মানসিক সাপোর্ট দিচ্ছে তাঁরসাথে আপনার অবস্থা পর্যালোচনা করুন।
২। উপরের নিয়ম অনুযায়ী একবার ২সপ্তাহ বা একমাসের রুকইয়া শেষে আল্লাহ না করুক যদি বুঝেন সমস্যা এখনো যায়নি, তবে আবার শুরু থেকে রুকইয়া করবেন। অনেকে ওপর একাধিক যাদু করে, তখন একটা একটা করে চিকিৎসা করতে হবে।
৩। খেয়াল রাখবেন, বিয়ের জন্য রুকইয়া করতে গেলে অধিকাংশেরই প্রথম প্রথম বেশ কষ্ট হয়, কখনো সমস্যা বেড়ে যায়, তবে ধৈর্য ধরে চিকিৎসা করে যেতে হবে, ইনশাআল্লাহ আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।
৪. বেশীরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম সপ্তাহেই উন্নতি টের পাওয়া যায়, তবে এরপরেও সপ্তাহখানেক আধঘণ্টা-একঘণ্টা করে হলেও রুকইয়াহ শুনে যাওয়া উচিৎ। তাহলে ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবে।
৫. আর যাদুর কারণে যদি শারীরিক কোনো সমস্যা তথা অসুখ-বিসুখ হয়, যা ভালো হচ্ছিলো না। এসবের জন্য রুকইয়াহ করার পর ডাক্তারের চিকিৎসা করালে ঠিক হয়ে ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের হেফাজত করুন! আমীন!
 
বিয়ে নিয়ে যারা সমস্যায় আছেন তাদের জন্য এই পোস্ট
যাদের বিয়ের হচ্ছে না তাদেরকে আমি এই পোস্টে কিছু ক্যাটাগরিতে ফেলেছি। আপনি কোন ক্যাটাগরিতে পড়েন নিজেই ঠিক করে নিন।
প্রথম কেসঃ উচ্চাশা
ডাক্তারই লাগবে, সরকারী চাকুরীজীবীই লাগবে, পাইলটই লাগবে, ইঞ্জিনিয়ারই লাগবে- এই ধরনের উচ্চাশাতে যারা ভুগছেন তাদের জন্য পরামর্শ হল এই “ই”-কার থেকে বের হয়ে আসেন। ছেলে/মেয়ের চরিত্র দেখেন, দ্বীনদারী দেখেন, ইন শা আল্লাহ ঠকবেন না।
দ্বিতিয় কেসঃ উদাসীন বাবা-মা
হয়ত আপনার বিয়ে নিয়ে আপনি চিন্তিত ঠিকই কিন্তু আপনার অভিভাবক মোটেও সচেতন না। এই ক্ষেত্রে আপনার বিয়ের প্রস্তাব আসে না-এটা বাস্তবসম্মত চিন্তা নয়। কেউ প্রস্তাব দিলে তো আর আপনার সাথে কথা বলবে না। আপনার অভিভাবকের সাথে কথা বলবে। তারা যদি ফিরিয়ে দেয় কারণ তাদের ছেলে/মেয়ের বিয়ের “বয়স”(!) হয়নি বলে তাহলে আর কিভাবে বিয়ে হবে। এসব ক্ষেত্রে মুখ ফুটে বলা উচিত বাবা-মাকে যেন তারা বিয়ের ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করেন।
তৃতীয় কেসঃ বিবাহভীতি
বিয়ে না হবার এটাও একটা কারণ। বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে তাদের সংসার সম্পর্কে ভয়াবহ অশান্তির কাহিনি, ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপের সাংসারিক টানাপোড়নের কাহিনি, বিবাহিত বন্ধু-বান্ধবীর থেকে ফিজিক্যাল রিলেশনের বিরূপ সব কথাবার্তা, নিজের চারপাশের বিয়ে বিচ্ছেদ এবং অশান্তির বাস্তব চিত্র থেকে এর বিরূপ প্রভাবে বিবাহ ভীতি তৈরি হতে পারে। ইসলামী জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে পড়াশুনা, দ্বীনের উপর চলে এমন পাত্র/পাত্রী নির্বাচন করা এই ক্ষেত্রে সমাধান হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং অনেক বড় বিষয়।
চতুর্থ কেসঃ অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন
ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করেন না, ঘুমান না। ফোন, পিসি নিয়ে থাকেন। বাজে নেশা/কাজ করেন। শরীর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়েছে। চেহাড়ার লাবণ্য হারিয়ে গিয়েছে। আপনাকে দেখে কে পছন্দ করবে? কাজেই নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করেন। ইন শা আল্লাহ বিয়েতে দেরি হবে না।
পঞ্চমকেসঃ রুকইয়াহ সংক্রান্ত সমস্যা
১। বিয়ের কথা বার্তা শুরু হলেই আপনার চেহাড়া খারাপ হয়ে যায়?
২। বিয়ে করতে চান কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব আসলেই প্রচণ্ড রাগ হয়?
৩। বিয়ের কথা শুরু হলেই অসুস্থ হয়ে যান?
৪। মেরুদণ্ডের নিচে অথবা মাথা অথবা ঘাড়ে অথবা পেটেব্যথা আছে আপনার? ডাক্তারী চিকিৎসা করেও কোনো লাভ হয় নি?
৫। স্বপ্নে খাওয়া দাওয়া করেন আপনি?
৬। স্বপ্নে কেউ আপনার প্রাইভেসী নষ্ট করে? ঘুম থেকে উঠার পর অঙ্গসমূহে ব্যথা হয়?
৭। ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হয়?
এসব প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যা বোধক হয় তাহলে আপনার রুকইয়াহ করা উচিত। ভালমত পড়বেন। “ভাইয়া কিছুই বুঝি নি”, “ভাইয়া সব মিলে গিয়েছে, এখন কি করবো?” -এই টাইপের প্রশ্ন যেন করা না লাগে।

ক) যদি দুই-তিনটা মিলে তাহলে দুই সপ্তাহ বদনজরের রুকইয়াহ করবেন। বদনজরের রুকইয়াহ করলে শরীর খারাপ করতে পারে। তখন অফ করা যাবে না। নিচে বিস্তারিত।
 
দুই সপ্তাহ করার পরেও যদি সমস্যা না চলে যায় তাহলে নিচে থেকে খ ফলো করবেন।
 
[বদনজরের জন্য রুকইয়াহ - ১]
---------
[ক]
যদি জানা যায় কার নজর লেগেছে তাহলে সাহল ইবনে হুনাইফ রা. এর হাদিসটা অনুসরণ করলেই হবে।
অর্থাৎ যার নজর লেগেছে তাকে অযু করতে বলবে, অযুর পানিগুলো একটা পাত্রে জমা করবে, এরপর সেটা আক্রান্ত ব্যাক্তির গায়ে ঢেলে দিবে। তাহলেই নজর কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ। যেমন, যদি মনে করেন আপনার বাবুর উপর মেহমানের নজর লেগেছে (যদিও ইচ্ছা করে বদনজর দেয়নি) তাহলে মেহমানকে অযুর করতে বলবেন বা উনার অযুর পানি নিয়ে আপনার বাবুর গায়ে ঢেলে দিবেন। ইন শা আল্লাহ সে সুস্থ হয়ে যাবে।
এই পদ্ধতিতে সাধারণ একবারেই বদনজরের প্রভাব দূর হয়ে যায়। তবেঁ, প্রয়োজনে ২-৩দিন করা লাগতে পারে। আর হ্যাঁ! অনেকের ক্ষেত্রে এই ওযু করার পানি ঢালার পর, প্রচণ্ড পায়খানা বা প্রসাবের বেগ আসে, সেটা হয়ে গেলে আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ হয়ে যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে, কুলির পানিও কি জমা করবে?
উত্তরঃ যদিওবা এক হাদিসে আছে কুলির কথা, তবে না নিলেও সমস্যা নেই। এমনকি অধিকাংশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একজনের হাতমুখ ধোয়া পানি নিয়ে অপরজন হাতমুখ ধৌত করলেই বদনজর নষ্ট হয়ে যায়।
উহ্য প্রশ্ন-২: যদি নিজের নজর নিজেকেই লাগে?
উত্তরঃ তাহলে ওযু করবে, এবং পানিগুলো জমা করবে, এরপর সেটা নিজের গায়ে ঢালবে।
[খ]
আর যদি আপনি না জানেন আপনার উপর কার নজর লেগেছে, যদি অনেক দিনের সমস্যা হয়, কিংবা যদি অনেকজনের নজর লাগে, তাহলে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। বদনজরের সেলফ রুকইয়া হিসেবে এই পদ্ধতি সাজেসটেড।
১. রুকইয়ার আয়াতগুলো প্রতিদিন তিলাওয়াত করবেন অথবা শুনবেন, সরাসরি শোনা সম্ভব না হলে অডিও রেকর্ড শুনবেন।
রুকইয়াহর আয়াত নিজেই তেলাওয়াত করা সর্বোত্তম। কাজেই আপনার তেলাওয়াত শুদ্ধ হলে সম্ভব হলে রুকইয়াহ আয়াত তেলাওয়াত করবেন। তা না হলে অডিও শুনবেন। বদনজরের রুকইয়াহর পিডিএফ নিচের লিংকে পাবেন।
পিডিএফ পড়তে সমস্যা হলে বা অডিও শুনলে যদি ঘুম আসে তাহলে কুরআন থেকে দেখে দেখে তেলাওয়াত করতে পারেন। আয়াতের লিস্ট :
বদনজরের রুকইয়াহর আয়াতের তালিকা
বদনজরের রুকইয়াহ যারা করেন তাদের একটি কমন সমস্যা হল অডিও শোনার সময় ঘুম পাওয়া। এই সমস্যার সমাধান হল তেলাওয়াত করা। তেলাওয়াতের পিডিএফ পাবেন https://ruqyahbd.org/ayat
যারা কুরআনুল কারীম থেকে বদনজরের আয়াত তেলাওয়াত করতে চান তাদের জন্য এই পোস্ট। নিজে নিজে তেলাওয়াত সর্বোত্তম রুকইয়াহ। প্রতিটি আয়াত এক বা একাধিকবার তেলাওয়াত করতে পারেন। বদনজরের লক্ষন এবং বদনজরের রুকইয়াহ করার বিস্তারিত পদ্ধতি কমেন্টে দেয়া হল।
আয়াতের তালিকাঃ
১। সুরা ফাতিহা
২। সুরা বাকারা। আয়াত নং- ৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ৫০, ৫৫, ৬০, ৬৯, ৭৬, ১০৫, ১০৯, ২৪৭, ২৫৫, ২৬৯, ২৮৫, ২৮৬।
৩। সুরা আলে ইমরান। আয়াত নং- ১৩, ১৪, ২৬, ২৭, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ১১৮, ১১৯, ১২০, ১৬৯, ১৭০, ১৭১, ১৭২, ১৭৩, ১৭৪, ১৮৬।
৪। সুরা আন-নিসা। আয়াত নং- ২৭, ৩২, ৫৩, ৫৪, ৭৩, ১০৮, ১১৩, ১৪১।
৫। সূরা মায়েদা। আয়াত নং- ৪৫, ৭৩।
৬। সুরা আনআম। আয়াত নং- ৩৩, ৫৩, ৯৩, ১০৩, ১১০, ১৩৯, ১৬৫।
৭। সুরা আরাফ। আয়াত নং- ৪৩, ১০৮, ১১৬, ১৭৯, ১৯৫, ১৯৮।
৮। সুরা আনফাল। আয়াত নং- ৬, ৪৪, ৫৩।
৯। সুরা তওবা। আয়াত নং- ৮, ৫০, ৫১, ৫৫, ৯২, ৯৮, ১২৭, ১২৮, ১২৯।
১০। সুরা ইউনুস। আয়াত নং- ৪৩, ১০১, ১০৭।
১১। সুরা হুদ। আয়াত নং- ৫, ৩১।
১২। সুরা ইউসুফ। আয়াত নং- ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১৮, ২১, ৩১, ৩৮, ৪৬, ৬৮, ৬৯, ৭৭, ৮৪, ৮৯, ৯০, ৯১, ৯২, ৯৩, ৯৯, ১০০।
১৩। সুরা রা'দ। আয়াত নং- ৫।
১৪। সুরা হিজর। আয়াত নং- ১৬, ১৭, ৫১, ৫২, ৮৮।
১৫। সুরা নাহল। আয়াত নং- ৬, ১৮, ৫৩, ৭১।
১৬। সুরা আল ইসরা (বনী ইসরাঈল)। আয়াত নং- ২০, ২১, ৭৬।
১৭। সুরা কাহাফ। আয়াত নং- ৫, ১৯, ২৮, ৩৫, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪৬, ৮২, ৮৬।
১৮। সুরা ত্বহা। আয়াত নং- ৫৯, ১৩১।
১৯। সুরা আম্বিয়া। আয়াত নং- ১৮, ৬১, ৯৬, ১১২।
২০। সুরা হজ্জ্ব। আয়াত নং- ১৫, ৭২।
২১। সুরা মু'মিনুন। আয়াত নং- ৯১, ৯৬।
২২। সুরা নুর। আয়াত নং- ৩০, ৩১, ৩৮।
২৩। সুরা ফুরকান। আয়াত নং- ৪১, ৭৪।
২৪। সুরা শু'আরা। আয়াত নং- ২১৮।
২৫। সুরা নামল। আয়াত নং- ১০, ১৫, ১৬, ১৯, ২৩, ২৭, ২৮, ৩৩, ৩৫, ৪০, ৪৪।
২৬। সুরা কাসাস। আয়াত নং- ১৩, ৬০, ৭৬, ৭৯, ৮০, ৮১, ৮২, ৮৩।
২৭। সুরা আহযাব। আয়াত নং- ১৯, ৫১, ৫২।
২৮। সুরা ইয়াসিন। আয়াত নং- ৯, ৬৬।
২৯। সুরা সফফাত। আয়াত নং- ১৯, ৪৬, ৫৭, ৮৮, ১৭৮, ১৭৯, ১৮০।
৩০। সুরা যুমার। আয়াত নং- ৬৮।
৩১। সুরা মু'মিন। আয়াত নং- ১৯, ২৫।
৩২। সুরা শু'রা। আয়াত নং- ১২, ২৭, ৪৫।
৩৩। সুরা আয-যুখরুফ। আয়াত নং- ৩১, ৩২, ৭১, ৮০।
৩৪। সুরা মুহাম্মাদ। আয়াত নং- ২০, ২৯, ৩০।
৩৫। সুরা ফাতাহ। আয়াত নং- ১৫।
৩৬। সুরা হুজুরাত। আয়াত নং- ১১, ১২।
৩৭। সুরা ক্বফ। আয়াত নং- ৬।
৩৮। সুরা আযযারিয়াত। আয়াত নং- ৪৪।
৩৯। সুরা তুর। আয়াত নং- ৪৮।
৪০। সুরা ক্বামার। আয়াত নং- ৮, ১২, ৩৫, ৩৭।
৪১। সুরা আর রাহমান। আয়াত নং- ৩৭, ৫০, ৭০।
৪২। সুরা ওয়াক্বিয়াহ। আয়াত নং- ৮৩, ৮৪।
৪৩। সুরা হাদিদ। আয়াত নং- ২০, ২৯।
৪৪। সুরা হাশর। আয়াত নং- ৯, ১০, ১৮।
৪৫। সুরা মুমতাহিনা। আয়াত নং- ২।
৪৬। সুরা মুনাফিকুন। আয়াত নং- ৪।
৪৭। সুরা মুলক। আয়াত নং- ৩, ৪, ২৮।
৪৮। সুরা ক্বলম। আয়াত নং- ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২।
৪৯। সুরা মুদ্দাস্‌সির। আয়াত নং- ২১, ২২।
৫০। সুরা ক্বিয়ামাহ। আয়াত নং- ২২ ২৩, ২৪, ২৫।
৫১। সুরা দাহর (ইনসান)। আয়াত নং- ১৯।
৫২। সুরা নাবা। আয়াত নং- ৪০।
৫৩। সুরা নাযিয়াত। আয়াত নং- ৪৬।
৫৪। সুরা আবাসা। আয়াত নং- ২৩।
৫৫। সুরা আল ইনশিকাক। আয়াত নং- ৯, ১৩।
৫৬। সুরা গাশিয়া। আয়াত নং- ১২।
৫৭। সুরা আল ফাজর। আয়াত নং- ১৫, ১৬।
৫৮। সুরা বালাদ। আয়াত নং- ৮, ৯।
৫৯। সুরা আশ শামস। আয়াত নং- ৮, ৯, ১০।
৬০। সুরা আদ্‌-দুহা।
৬১। সুরা হুমাযাহ।
৬২। সুরা আল কাওসার।
৬৩। সুরা নাসর।
৬৪। সুরা লাহাব।
৬৫। সুরা ইখলাস।
৬৬। সুরা ফালাক।
৬৭। সুরা নাস

 
২. আর প্রতিদিন রুকইয়ার গোসল করবেন।
রুকইয়াহ অডিওর ডাউনলোড পেজের লিংক: http://ruqyahbd.org/download (সেখান থেকে "বদনজর Evil Eye অথবা Eye Hasad যেকোনোটি শুনতে পারেন। এছাড়া সা'দ আল গামিদীর আধাঘণ্টার রুকয়াটাও শুনতে পারেন। যেটাই শুনবেন, শোনার সময় নিয়ত রাখবেন, আমি বদনজরের জন্য রুকইয়াহ করছি।
যদি আপনার কোনো সমস্যা থাকে তাহলে আপনি ফিজিক্যালি এর প্রভাব টের পাবেন। যেমনঃ প্রচণ্ড ঘুম আসবে, মাথাব্যথা করতে পারে, হাত-পা কামড়াতে পারে, হার্টবিট বেড়ে যেতে পারে, শরীর ঘামতে পারে, বেশি বেশি প্রসাব হতে পারে- ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে এরপরেও শুনতে থাকবেন, ঘুম আসলে জেগে থাকতে চেষ্টা করবেন। আর একান্তই না পেরে ঘুমিয়ে গেলেও দুশ্চিন্তার কিছু নাই। আর সমস্যা সমাধান হলেই ভালো ফিল করতে লাগবেন ইনশাআল্লাহ! দুশ্চিন্তার কারণ নাই।
.
আর আপনি কয়েকবার মনোযোগ দিয়ে শোনার পরেও যদি কোনোই ইফেক্ট না বুঝতে পারেন, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ্‌ আপনার কোনো সমস্যা নাই। আপনার যদি প্রবলেম থাকে তাহলে রুকইয়াহ শুনলে অবশ্যই প্রভাব টের পাবেন।
.
[গ]
রুকইয়ার গোসলের পদ্ধতি হচ্ছে-
একটা বালতিতে পানি নিবেন, তারপর ওই পানিতে দুইহাত ডুবিয়ে পড়বেন -
"দরুদ শরিফ, ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, চারকুল (কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক্ব, নাস) প্রত্যেকটা ৭ বার। শেষে আবার দরুদ শরিফ ৭ বার পড়বেন।
লক্ষণীয়ঃ
১. পড়ার পর হাত উঠাবেন এবং পানি দিয়ে গোসল করবেন। এগুলা পড়ে পানিতে ফু দিবেন না, এমনিই গোসল করবেন।
২. যদি টয়লেট আর গোসলখানা একসাথে হয় তখন এসব অবশ্যই বাহিরে এনে পড়তে হবে।
৩. কোনদিন হাতে সময় কম থাকলে এসবের মধ্যে সুরা কাফিরুন বাদ দিতে পারেন আর দরুদ শরিফ ৩বার করে পড়তে পারেন।
৪. প্রথমে এই পানি দিয়ে গোসল করলেন পরে অন্য পানি দিয়ে ভালোমতো করলেন অসুবিধে নেই।
৫. যার সমস্যা সে যদি পড়তে না পারে, তাহলে অন্যজন পানিতে হাত রেখে পড়ে দিবে, এরপর গোসল করবেন।
৬. উত্তম হচ্ছে, প্রথমে রুকইয়াহ শুনে এরপর গোসল করতে যাবেন। গোসলের আগে শুনতে না পারলে সমস্যা নাই, দিনের যেকোন সময় শুনলেই হবে ইনশাআল্লাহ।
৭. রুকইয়ার গোসল বাদ দিয়ে, খালি অডিও শোনা থেকে নিরুৎসাহিত করছি। এতে কষ্ট বেশি কিন্তু উপকার কম হওয়ার আশংকা রয়েছে।
.
[ঘ]
মোটকথা, প্রতিদিন রুকইয়া শুনবেন এবং উপরের নিয়ম অনুযায়ী রুকইয়ার গোসল করবেন। সমস্যা অনুযায়ী ৩-৭ থেকে দিন লাগতে পারে। সমস্যা বেশি মনে হলে ২১দিন করতে পারেন।
সমস্যা কম হলে কখনো একদিনেও ভালো হয়ে যায়। তবে ভালো হওয়ার পরেও ২-৩দিন করা উচিত।
[লেখাঃ আব্দুল্লাহ আলমাহমুদ]

 
 
খ) যদি চার-পাচটা বা তারও বেশি মিলে যায় তাহলে আপনি সিহরের রুকইয়াহ করেন ২ সপ্তাহ। এর মধ্যে ৩-৫ দিন বরই পাতার গোসল করবেন। এরপর আপডেট দিতে চাইলে গ্রুপে পোস্ট করবেন। উপরে লিখে দিবেন "আপডেট পোস্ট"
সিহরের রুকইয়াহ
 

যাদু /সিহর/ ব্ল্যাক ম্যাজিক/ বান মারা নষ্টের জন্য রুকইয়াহ:

যাদুর প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার রুকইয়াহ করা হয়। তবে সব ধরনের যাদু নষ্টের জন্য কমন সেলফ রুকইয়া হচ্ছে-
প্রথমে সমস্যার জন্য নিয়াত ঠিক করে নিন, ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ পড়ে শুরু করুন। এরপর এক বা একাধিক বোতল ভর্তি পানি নিয়ে
ক. সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২
খ. ইউনুস ৮১-৮২
গ. সুরা ত্বহা ৬৯নং আয়াত পড়ে ফুঁ দিন।

আপনাদের সুবিধার্থে আয়াতগুলো নিচে দেয়া হল। কেউ চাইলে কুরআনুল কারীম দেখেও পড়তে পারবেন।
১.

وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ - فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ - فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ - وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ -قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ - رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ -

২.

فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ - وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ -

৩.

وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ -

ঘ. এরপর সুরা ফালাক্ব, সুরা নাস ৩বার পড়ে ফুঁ দিন।
৩ সপ্তাহ আধ গ্লাস করে সকাল-বিকাল এই পানি খেতে হবে এবং আধ গ্লাস পানি গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে হবে। পানি শেষ হয়ে গেলে নতুন করে পড়ে নিতে হবে বা প্রথমবার পড়ার সময় বেশি করে পড়ে নিতে পারবেন।
আর প্রতিদিন কমপক্ষে একবার রুকইয়াহর আয়াত তেলাওয়াত করা। প্রতিটি আয়াত একাধিকবার তেলাওয়াত করার চেষ্টা করা। রুকইয়ার আয়াতের লিস্ট 
আয়াতের তালিকাঃ
১। সুরা ফাতিহা
২। সুরা বাকারা। আয়াত নং- ৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ৫০, ৫৫, ৬০, ৬৯, ৭৬, ১০৫, ১০৯, ২৪৭, ২৫৫, ২৬৯, ২৮৫, ২৮৬।
৩। সুরা আলে ইমরান। আয়াত নং- ১৩, ১৪, ২৬, ২৭, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ১১৮, ১১৯, ১২০, ১৬৯, ১৭০, ১৭১, ১৭২, ১৭৩, ১৭৪, ১৮৬।
৪। সুরা আন-নিসা। আয়াত নং- ২৭, ৩২, ৫৩, ৫৪, ৭৩, ১০৮, ১১৩, ১৪১।
৫। সূরা মায়েদা। আয়াত নং- ৪৫, ৭৩।
৬। সুরা আনআম। আয়াত নং- ৩৩, ৫৩, ৯৩, ১০৩, ১১০, ১৩৯, ১৬৫।
৭। সুরা আরাফ। আয়াত নং- ৪৩, ১০৮, ১১৬, ১৭৯, ১৯৫, ১৯৮।
৮। সুরা আনফাল। আয়াত নং- ৬, ৪৪, ৫৩।
৯। সুরা তওবা। আয়াত নং- ৮, ৫০, ৫১, ৫৫, ৯২, ৯৮, ১২৭, ১২৮, ১২৯।
১০। সুরা ইউনুস। আয়াত নং- ৪৩, ১০১, ১০৭।
১১। সুরা হুদ। আয়াত নং- ৫, ৩১।
১২। সুরা ইউসুফ। আয়াত নং- ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১৮, ২১, ৩১, ৩৮, ৪৬, ৬৮, ৬৯, ৭৭, ৮৪, ৮৯, ৯০, ৯১, ৯২, ৯৩, ৯৯, ১০০।
১৩। সুরা রা'দ। আয়াত নং- ৫।
১৪। সুরা হিজর। আয়াত নং- ১৬, ১৭, ৫১, ৫২, ৮৮।
১৫। সুরা নাহল। আয়াত নং- ৬, ১৮, ৫৩, ৭১।
১৬। সুরা আল ইসরা (বনী ইসরাঈল)। আয়াত নং- ২০, ২১, ৭৬।
১৭। সুরা কাহাফ। আয়াত নং- ৫, ১৯, ২৮, ৩৫, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪৬, ৮২, ৮৬।
১৮। সুরা ত্বহা। আয়াত নং- ৫৯, ১৩১।
১৯। সুরা আম্বিয়া। আয়াত নং- ১৮, ৬১, ৯৬, ১১২।
২০। সুরা হজ্জ্ব। আয়াত নং- ১৫, ৭২।
২১। সুরা মু'মিনুন। আয়াত নং- ৯১, ৯৬।
২২। সুরা নুর। আয়াত নং- ৩০, ৩১, ৩৮।
২৩। সুরা ফুরকান। আয়াত নং- ৪১, ৭৪।
২৪। সুরা শু'আরা। আয়াত নং- ২১৮।
২৫। সুরা নামল। আয়াত নং- ১০, ১৫, ১৬, ১৯, ২৩, ২৭, ২৮, ৩৩, ৩৫, ৪০, ৪৪।
২৬। সুরা কাসাস। আয়াত নং- ১৩, ৬০, ৭৬, ৭৯, ৮০, ৮১, ৮২, ৮৩।
২৭। সুরা আহযাব। আয়াত নং- ১৯, ৫১, ৫২।
২৮। সুরা ইয়াসিন। আয়াত নং- ৯, ৬৬।
২৯। সুরা সফফাত। আয়াত নং- ১৯, ৪৬, ৫৭, ৮৮, ১৭৮, ১৭৯, ১৮০।
৩০। সুরা যুমার। আয়াত নং- ৬৮।
৩১। সুরা মু'মিন। আয়াত নং- ১৯, ২৫।
৩২। সুরা শু'রা। আয়াত নং- ১২, ২৭, ৪৫।
৩৩। সুরা আয-যুখরুফ। আয়াত নং- ৩১, ৩২, ৭১, ৮০।
৩৪। সুরা মুহাম্মাদ। আয়াত নং- ২০, ২৯, ৩০।
৩৫। সুরা ফাতাহ। আয়াত নং- ১৫।
৩৬। সুরা হুজুরাত। আয়াত নং- ১১, ১২।
৩৭। সুরা ক্বফ। আয়াত নং- ৬।
৩৮। সুরা আযযারিয়াত। আয়াত নং- ৪৪।
৩৯। সুরা তুর। আয়াত নং- ৪৮।
৪০। সুরা ক্বামার। আয়াত নং- ৮, ১২, ৩৫, ৩৭।
৪১। সুরা আর রাহমান। আয়াত নং- ৩৭, ৫০, ৭০।
৪২। সুরা ওয়াক্বিয়াহ। আয়াত নং- ৮৩, ৮৪।
৪৩। সুরা হাদিদ। আয়াত নং- ২০, ২৯।
৪৪। সুরা হাশর। আয়াত নং- ৯, ১০, ১৮।
৪৫। সুরা মুমতাহিনা। আয়াত নং- ২।
৪৬। সুরা মুনাফিকুন। আয়াত নং- ৪।
৪৭। সুরা মুলক। আয়াত নং- ৩, ৪, ২৮।
৪৮। সুরা ক্বলম। আয়াত নং- ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২।
৪৯। সুরা মুদ্দাস্‌সির। আয়াত নং- ২১, ২২।
৫০। সুরা ক্বিয়ামাহ। আয়াত নং- ২২ ২৩, ২৪, ২৫।
৫১। সুরা দাহর (ইনসান)। আয়াত নং- ১৯।
৫২। সুরা নাবা। আয়াত নং- ৪০।
৫৩। সুরা নাযিয়াত। আয়াত নং- ৪৬।
৫৪। সুরা আবাসা। আয়াত নং- ২৩।
৫৫। সুরা আল ইনশিকাক। আয়াত নং- ৯, ১৩।
৫৬। সুরা গাশিয়া। আয়াত নং- ১২।
৫৭। সুরা আল ফাজর। আয়াত নং- ১৫, ১৬।
৫৮। সুরা বালাদ। আয়াত নং- ৮, ৯।
৫৯। সুরা আশ শামস। আয়াত নং- ৮, ৯, ১০।
৬০। সুরা আদ্‌-দুহা।
৬১। সুরা হুমাযাহ।
৬২। সুরা আল কাওসার।
৬৩। সুরা নাসর।
৬৪। সুরা লাহাব।
৬৫। সুরা ইখলাস।
৬৬। সুরা ফালাক।
৬৭। সুরা নাস

এভাবে ৩/৪ সপ্তাহ করা উচিত। তেলাওয়াত করা সম্ভব না হলে (উচ্চারন শুদ্ধ না থাকলে বা মেয়েদের পিরিয়ড থাকলে বা অন্য কোন কারণে) প্রতিদিন কমপক্ষে দুই ঘণ্টা রুকইয়াহ শুনতে হবে। একঘণ্টা সাধারণ রুকইয়া (ডাউনলোড পেইজের ১১ থেকে ২৩ নং পর্যন্ত রুকয়াহ গুলো সাধারণ রুকইয়াহ। আপনার যেটা ইচ্ছা ডাউনলোড করে শুনবেন) আর একঘণ্টা সুরা ইখলাস, ফালাক, নাসের (ডাউনলোড পেইজের ৯ নং) রুকইয়াহ। (ডাউনলোড লিংক www.ruqyahbd.org/download )। আর পাশাপাশি তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে দোআ করতে হবে।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম সপ্তাহেই উন্নতি টের পাওয়া যায়। তবে উন্নতি টের পেলেই রুকইয়াহ অফ করা যাবে না, চালিয়ে যেতে হবে। তাহলে ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে যাবে। যদি দুই-তিন সপ্তাহ পরেও সমস্যা শেষ না হয়, তবে আবার অনুরূপ করতে হবে।
[কেউ যাদু ধ্বংসের জন্য রুকইয়াহ করতে চাইলে উপরের অংশটুকু ফলো করলেই হবে ইন শা আল্লাহ]
যাদুর কোন জিনিশ অথবা তাবিজ খুঁজে পেলে:
কি দিয়ে যাদু করেছে যদি পাওয়া যায়, অথবা সন্দেহজনক কোন তাবিজ পেলে উপরে বলা আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন, এরপর তাবিজ অথবা যাদুর জিনিশগুলো ডুবিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, তাহলে ইনশাআল্লাহ যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। পরে সেগুলো পুড়িয়ে বা নষ্ট করে দিন।
.

যাদু আক্রান্ত হলে বোঝার উপায়ঃ

রুকইয়ার আয়াতগুলো যাদু আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর পড়লে, অথবা রুকইয়ার আয়াতের অডিও শুনলে যাদুগ্রস্তের অস্বাভাবিক অনুভূতি হয়। যেমন, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, পেট ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি।
যাদু, জ্বিন, বদনজর সম্পর্কিত একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে:
একসাথে একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে প্রথমে বদনজরের জন্য রুকইয়াহ করতে হবে, এরপর জ্বিনের রুকইয়াহ এবং যাদুর জন্য রুকইয়াহ।
আরও বিস্তারিত জানতে  
 
[সেলফ রুকইয়াহ গাইড-২]
যাদু এবং যাদুর রুকইয়াহ
[ক] যারা নিজেদেরকে যাদুগ্রস্থ মনে করছেন অথবা বুঝতে পারছেন না কিভাবে যাচাই করবেন আসলেই আপনি যাদুগ্রস্থ কিনা তাদের জন্য এই পোস্ট উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ। নিচের লক্ষণগুলো মিলিয়ে দেখুন আপনার সাথে কতগুলো লক্ষণ মিলেঃ
১। চোখের অবস্থা অস্বাভাবিক বা অসুন্দর লাগা।
২। কোন কারণ ছাড়াই শরীর গরম থাকা।
৩। ব্যাকপেইন। বিশেষত মেরুদণ্ডের নিচের দিকে ব্যথা করা।
৪। (মহিলাদের ক্ষেত্রে) অনিয়মিত মাসিক (পুরুষদের ক্ষেত্রে) প্রস্রাবে ইনফেকশন এর সমস্যা।
৫। প্রায়সময় পেট ব্যথা থাকা।
৬। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করেও কোন রোগ ভালো না হওয়া।
৭। তীব্র মাথা ব্যথা, ঔষধ খেয়েও তেমন লাভ হয়না।
৮। হঠাৎ করে কারো প্রতি তীব্র ঘৃণা বা তীব্র ভালোলাগা অনুভব হওয়া।
৯। পরিবার, বাসা, সমাজের প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা থাকা।
১০। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত খুব অস্বস্তিতে ভুগা অথবা মেজাজ খারাপ থাকা।
১১। কোন কারণ ছাড়াই বাড়ি থেকে দৌড় দিয়ে বের হয়ে যেতে ইচ্ছা হওয়া।
১২। শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে অতিরিক্ত ব্যথা হওয়া।
১৩। ঠিকমত ঘুমাতে না পারা। ঘুমালেও ভয়ংকর স্বপ্ন দেখা।
১৪। স্বপ্নে কোনো গাড়ি বা প্রাণিকে আক্রমণ করতে বা ধাওয়া করতে দেখা (যেমনঃ কুকুর, বিড়াল, গরু, মহিষ, বাঘ, সিংহ, সাপ)।
১৫। স্বপ্নে কোন ফাঁকা বাড়ি, মরুভূমি বা গোরস্থানে হাঁটাচলা করতে দেখা।
১৬। স্বপ্নে বিভিন্ন যায়গায় পানি দেখা (যেমন সাগর, নদী, পুকুর, ইত্যাদি)।
১৭। স্বপ্নে ঘনঘন কোথাও আগুন জ্বলতে বা কিছু পোড়াতে দেখা।
১৮। স্বপ্নে নিজেকে উড়তে দেখা বা কোন পাখি অথবা বড়বড় গাছ দেখা।
[খ] এসব লক্ষণ যদি দুই একটা মিলে যায় তাহলে ইনশাআল্লাহ আপনার রুকইয়াহ করা লাগবেনা। ফরজ কাজগুলোর পাশাপাশি নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যা এবং ঘুমানোর আগের মাসনুন আমল এবং বেশি বেশি দোয়া করলেই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।
মাসনুন আমল সম্পর্কে এখানে দেখুন-
[গ] এসব লক্ষণ যদি ৫ টা বা তারও বেশি মিলে যায় তাহলে আপনার উচিত টেস্ট করার জন্য রুকইয়ার আয়াতগুলো কয়েকবার তিলাওয়াত করা।
এখানে রুকইয়ার আয়াতের পিডিএফ পাওয়া যাবে ruqyahbd.org/d
অথবা এই পিডিএফটা ( bit.ly/ayatsihr ) তিলাওয়াত করবেন। প্রতিটা আয়াত বেশ কয়েকবার করে তিলাওয়াত করবেন।
তিলাওয়াত করতে না পারলে রুকইয়াহ অডিও শুনেও টেস্ট করতে পারবেন। নিচের লিংকে গিয়ে “বিভিন্ন ক্বারিদের সাধারণ রুকইয়াহ” শিরোনামে যেকোন অডিও শুনে টেস্ট করা যাবে।
এক্ষেত্রে শাইখ সুদাইস(১১ নাম্বার), এবং শাইখ লুহাইদানের (২০ নাম্বার) অডিও শুনতে পারেন।
গায়ে বা ঘরে তাবিজ থাকলে, সেটা খুলে নষ্ট করে তাওবা করার পর রুকইয়াহ শুনবেন। তাবিজ নষ্ট করার জন্য  ফলো করবেন
 
যাদুর জিনিস বা তাবিজ নষ্ট করার নিয়মঃ
-----------
সন্দেহজনক কিছু বা কোন তাবিজ যদি পাওয়া যায় তাহলে সেটা নষ্ট করার জন্য একটি পাত্রে পানি নিন। তারপর সেই পানিতে সুরা আ’রাফ ১১৭-১২২ নং আয়াত, ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯, সূরা ফালাক্ব ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার পড়ে ফুঁ দিন।
লক্ষণীয়ঃ
১। তাবিজ,পুতুল,কাগজ,যাদুকরের দেয়া যেকোনকিছু উপরের আয়াতগুলো পড়া পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন কিছুক্ষণ। কাগজে লেখা থাকলে সেটা ঘষে মুছে ফেলার চেষ্টা করবেন। লেখা মুছার পরে ছিড়ে অনেকগুলো টুকরো করবেন। তারপর শুকিয়ে পুড়িয়ে ফেলবেন। পুড়ানোর সময়ে নিশ্বাসের সাথে সেটার ধোঁয়া নেয়া থেকে বিরত থাকবেন।
২। তাবিজ খালি হাতে না ধরে গ্লাভস ব্যবহার করতে পারেন। তাবিজ ধরার পূর্বে এবং নষ্ট করার পুরোটা সময়ে ফালাক, নাস পড়বেন।
৩। তামা বা অন্য ধাতুর তাবিজ বা আংটিতে খোদাই করা লেখা থাকলে লেখাটা ঘষে মুছে ফেলবেন। ঘষে মুছতে না পারলে পুড়িয়ে হলেও লেখাটা মুছে ফেলা জরুরী। নিজে করতে না পারলে কোন স্বর্ণকারের কাছে গিয়ে লেখাটা মুছে ফেলবেন।
৪। তাবিজে গিট দেয়া থাকলে সাবধানে প্রতিটা গিট খুলবেন। কোন পুতুল, মূর্তি, পাখি, মাছ ইত্যাদি পাওয়া গেলে সাবধানে খেয়াল করবেন এদের গায়ে কোন পিন আছে কিনা। থাকলে প্রতিটা পিন খুলবেন। পিনগুলোও পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন। জীবন্ত কোনকিছু যেমন- পাখি পাওয়া গেলে তার ডানার নিচে এবং শরীরের প্রতিটা জায়গায় খুঁজে দেখবেন কোন তাবিজ,পিন বা সন্দেহজনক কিছু আছে কিনা। থাকলে এগুলো সাবধানে খুলে নিয়ে পাখিকে তাবিজ নষ্টের পানি দিয়ে ভিজিয়ে ছেড়ে দিবেন। তাবিজের ভেতরে কাগজ ছাড়াও অন্যকিছু থাকতে পারে। তাবিজ খুলতে গেলে অনেক সময় খোলস ভেঙ্গে বের করা লাগতে পারে। যাই থাকুক, ভাঙ্গা টুকরোসহ সবটুকুই পানিতে ঢালবেন। একইভাবে যাদুকরের দেয়া তেলপড়া,পানিপড়া ইত্যাদি জিনিসপত্র পানিতে ঢালবেন।
৫। ব্যবহৃত পানি ফেলার জন্য এবং তাবিজ পুড়ানোর জন্য, সাধারনত মানুষের যাতায়াত হয়না এমন কোন জায়গা ঠিক করে নিন।
৬। কোন জায়গায় তাবিজ রাখা আছে সন্দেহ হলে সেখানে পরপর তিনদিন তাবিজ নষ্টের পানিটা ছিটিয়ে দিন। কারো বাসার দেয়ালে,ফ্লোরে অথবা যেকোন স্থানে তাবিজ আঁকা অথবা খোদাই করা থাকলে লেখাটা ঘষে মুছতে হবে। তারপর তাবিজ নষ্টের পানিটা ওখানে ছিটিয়ে দিতে হবে। অনেক সময় বাসা বানানোর সময়ে প্রতি কোণায় তাবিজ রেখে দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে এসব কোণায় তাবিজ নষ্টের পানিটা ছিটিয়ে দিবেন পরপর তিনদিন। আর দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাবিজ নষ্ট করে দেন।
৭। জ্যোতিষীর দেয়া কোন বিশেষ আংটি থাকলে তাবিজ নষ্টের পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন। কিছুক্ষণ রেখে পাথরটা ভেঙে তারপর ফেলে দিবেন। জ্যোতিষীরা বিশ্বাস করে পাথরের ক্ষমতা আছে। তাই কোনমতেই এই পাথর রেখে দেয়া যাবেনা।
৮। আপনি তাবিজ ব্যবহার করলে উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী তাবিজ নষ্ট করবেন। তারপর তাবিজ ব্যবহার করার জন্য তাওবা করবেন।
 
 
 
 
যাদুর সমস্যা থাকলে রুকইয়াহ তিলাওয়াত করে অথবা অডিও শুনে বেশকিছু প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন- বমি হওয়া অথবা বমি বমি ভাব হওয়া, পেটে অথবা ঘারে অথবা মাথায় তীব্র ব্যথা হওয়া, কান্না পাওয়া ইত্যাদি। রুকইয়াহ শুনে যদি এরকম যেকোন প্রতিক্রিয়া হয় তাহলে আপনার উচিত অন্তত দুই সপ্তাহ যাদুর রুকইয়াহ করা। যাদু বা সিহরের রুকইয়াহ এই নিয়মে করবেন-
 
 
যাদু / ব্ল্যাক ম্যাজিক / বান মারার জন্য রুকইয়া:
যাদুর প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার রুকইয়া করা হয়। তবে কমন সেলফ রুকইয়া হচ্ছে-
প্রথমে সমস্যার জন্য নিয়াত ঠিক করে নিন, ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ পড়ে শুরু করুন। এরপর একটি বোতল ভর্তি পানি নিয়ে ক. সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২ খ. ইউনুস ৮১-৮২ গ. সুরা ত্বহা ৬৯নং আয়াত পড়ে ফুঁ দিন।আপনাদের সুবিধার্থে এই আয়াতগুলো এখানে দেয়া হল। কেউ চাইলে কুরআনুল কারীম দেখেও পড়তে পারবেন।
ক.
وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ - فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ - فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ - وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ -قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ - رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ -
খ.
فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ - وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ -
গ.
وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ -
ঘ. এরপর সুরা ফালাক্ব, সুরা নাস ৩বার পড়ে ফুঁ দিন।
তিন থেকে সাতদিন সকাল-বিকাল এই পানি খেতে হবে এবং গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে হবে।
আর ৩/৪ সপ্তাহ প্রতিদিন কমপক্ষে দুইঘণ্টা রুকইয়া শুনতে হবে। একঘণ্টা সাধারণ রুকইয়া (ডাউনলোড পেইজের ১১ থেকে ২৩ নং পর্যন্ত রুকয়াহ গুলো সাধারণ রুকইয়াহ। আপনার যেটা ইচ্ছা ডাউনলোড করে শুনবেন) আর একঘণ্টা সুরা ইখলাস, ফালাক, নাসের (ডাউনলোড পেইজের ৯ নং) রুকইয়াহ। (ডাউনলোড লিংক www.ruqyahbd.org/download )। আর পাশাপাশি তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে দোআ করতে হবে।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম সপ্তাহেই উন্নতি টের পাওয়া যায়, তবে এরপরের কয়েক সপ্তাহ একঘন্টা করে হলেও রুকইয়া শুনে যেতে হবে। বাদ দেয়া যাবে না। তাহলে ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে যাবে। যদি দুই-তিন সপ্তাহ পরেও সমস্যা শেষ না হয়, তবে আবার অনুরূপ করতে হবে।
যাদুর কোন জিনিশ অথবা তাবিজ খুঁজে পেলে:
কি দিয়ে যাদু করেছে যদি পাওয়া যায়, অথবা সন্দেহজনক কোন তাবিজ পেলে উপরে বলা আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন, এরপর তাবিজ অথবা যাদুর জিনিশগুলো ডুবিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, তাহলে ইনশাআল্লাহ যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। পরে সেগুলো পুড়িয়ে বা নষ্ট করে দিন।
যাদু আক্রান্ত হলে বোঝার উপায়ঃ
রুকইয়ার আয়াতগুলো যাদু আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর পড়লে, অথবা রুকইয়ার আয়াতের অডিও শুনলে যাদুগ্রস্তের অস্বাভাবিক অনুভূতি হয়। যেমন, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, পেট ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি।
যাদু, জ্বিন, বদনজর সম্পর্কিত একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে:
একসাথে একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে প্রথমে বদনজরের জন্য রুকইয়া করতে হবে, এরপর জ্বিনের রুকইয়া এবং যাদুর জন্য রুকইয়া।
[চলবে ইনশাআল্লাহ]
 
দুই সপ্তাহ করে পুরোপুরি ভালো না হলে প্রয়োজনে তিন সপ্তাহ করতে পারেন। দুই বা তিন সপ্তাহ করে গ্রুপে নতুন পোস্ট দিয়ে আপনার আপডেট জানাতে পারেন।
[ঘ]
উপরে উল্লেখিত যাদুগ্রস্থ হওয়ার লক্ষনগুলোর সাথে যদি আপনার জ্বিন সংক্রান্ত সমস্যা থাকে তাহলে রুকইয়াহ শুরুর পূর্বে এডমিনদের পরামর্শ নিবেন। নিচের লিংকে জ্বিন সংক্রান্ত সমস্যার লক্ষন দেখে নিন
 
 
জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হবার লক্ষনসমূহ
জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হবার লক্ষনগুলোকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
ক) ঘুম সংক্রান্ত লক্ষনসমূহ
১। নিদ্রাহীনতা: যার জন্য সারারাত শুধু বিশ্রাম নেয়াই হয়, ঘুম হয়না।
২। উদ্বিগ্নতা: যার জন্য রাতের বেশিরভাগ সময়ই না ঘুমিয়ে কাটানো।
৩। বোবায় ধরা: ঘুমের সময় কেউ চেপে ধরেছে, নড়াচড়া করতে পারছে না। প্রায়ই এমন হওয়া।
৪। ঘুমের মাঝে প্রায়শই চিৎকার করা, গোঙানো, হাসি-কান্না করা
৫। ঘুমন্ত অবস্থায় হাটাহাটি করা (Sleepwalking)
৬। স্বপ্নে কোনো প্রাণিকে আক্রমণ করতে বা ধাওয়া করতে দেখা। বিশেষতঃ কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর, উট, সিংহ, শিয়াল, সাপ
৭। স্বপ্নে নিজেকে অনেক উঁচু কোনো যায়গা থেকে পড়ে যেতে দেখা।
৮। কোনো গোরস্থান বা পরিত্যক্ত স্থান অথবা কোনো মরুভূমির সড়কে হাটাচলা করতে দেখা।
৯। বিশেষ আকৃতির মানুষ দেখা। যেমন: অনেক লম্বা, খুবই খাটো, খুব কালো কুচকুচে ইত্যাদি।
১০। জ্বিন-ভুত দেখা।
খ) জাগ্রত অবস্থার লক্ষনসমূহ
১। দীর্ঘ মাথাব্যথা (চোখ, কান, দাত ইত্যাদি সমস্যার কারণে নয়, এমনিই)
২। ইবাদত বিমুখতা: নামাজ, তিলাওয়াত, যিকির আযকারে আগ্রহ উঠে যাওয়া। মোটকথা, দিনদিন আল্লাহর থেকে দূরে সরে যাওয়া।
৩। মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকা, কিছুতেই মন না বসা..
৪। ব্যাপক অলসতা; সবসময় অবসন্নতা ঘিরে রাখা
৫। মৃগীরোগ।
৬। শরীরের কোনো অংঙ্গে ব্যাথা কিংবা বিকল হয়ে যাওয়া। ডাক্তাররা যেখানে সমস্যা খুজে পেতে বা চিকিৎসা করতে অপারগ হচ্ছে।
সতর্কতাঃ এখান থেকে দুই-চারটি লক্ষণ মিলে গেলে নিজেকে জিনের রোগী ভাবার কোন কারণ নেই। যদি দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।
 
এখান থেকে যদি ৪-৫ টা মিলে তাহলে ইনশাআল্লাহ সিহরের রুকইয়াহ করতে কোন অসুবিধা নেই। তারও বেশি লক্ষণ মিলে গেলে সিহরের পোস্টে বলা নিয়মে রুকইয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন একঘন্টা আয়াতুল কুরসি তিলাওয়াত করবেন অথবা অডিও শুনবেন। আর প্রায় সব লক্ষণ মিলে গেলে অবশ্যই এডমিন ভাইদের পরামর্শ নিবেন। 
 
জ্বীন বিষয়ক সব একসাথে

https://allzinone.blogspot.com/2021/05/blog-post_13.html
 
[ঙ]
নোটঃ
১। মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হলেও রুকইয়াহ করতে পারবে। গোসলের পানি অন্য কেউ পড়ে দিবে।
২। একজন পানি তৈরি করে দিলে অন্য জন গোসল করতে পারবে।
৩। রুকইয়াহ শুরু করলে প্রথমদিকে শরীর খারাপ করতে পারে। তখন বন্ধ করা যাবে না। ধৈর্য্য ধরে রুকইয়াহ চালিয়ে যেতে হবে। ইনশা আল্লাহ সাফল্য আসবে।
৪। গায়ে/ঘরে কোন তাবিজ থাকলে অবশ্যই নষ্ট করে ফেলতে হবে আগে। কোন মূর্তি, পুতুল, ছবি ইত্যাদি থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে। ঘরে কুকুর থাকা চলবে না।
৫। রুকইয়া শুরুর পূর্বে এই পোস্ট পড়ে নিবেন
 
 
 
পুরো লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। একবার না বুঝলে কয়েকবার পড়ুন। আল্লাহ চায়তো এরপর নিজেই সিহরের রুকইয়াহ করতে পারবেন। কাউকে জিজ্ঞেস করতে হবে না, বরং অন্যদেরও পরামর্শ দিতে পারবেন। তবে আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
আল্লাহ আপনাকে এমন আরোগ্য দান করুন যাতে আর কোন রোগ বাকি না থাকে। আমিন
 
রুকইয়া শুরুর পূর্বে
------------------------
যারা রুকইয়া শুরু করবেন অথবা রুকইয়া করছেন নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন ইনশাআল্লাহ।
১। রুকইয়া একপ্রকার ইবাদত। দুয়াতে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া হয়, একইভাবে রুকইয়ার মাধ্যমেও আল্লাহর সাহায্য চাওয়া হয়। এটাকে কখনোই হেলাফেলার বিষয় মনে করবেন না। “রুকইয়া করে দেখি কাজ হয় কিনা। কাজ নাহলে কবিরাজের কাছেই যেতে হবে” এরকম মানসিকতা নিয়ে রুকইয়া করবেন না। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আর আমি কুরআন নাযিল করি যা মুমিনদের জন্য শিফা ও রহমত, কিন্তু তা যালিমদের ক্ষতিই বাড়িয়ে দেয়।” (বনী ইসরাঈল ৮২)
আল্লাহর কালামে শিফা আছে এই কথা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রেখে রুকইয়া শুরু করবেন।
২। “রুকইয়া করব এবং কবিরাজের চিকিৎসাও চালিয়ে যাব” এরকম মন মানসিকতা থাকলে রুকইয়া করবেন না। রুকইয়ার পাশাপাশি ডাক্তারী চিকিৎসা নিতে পারেন। কিন্তু কবিরাজের চিকিৎসা,জীন হাজির করে জবাব নেয়া এমন কিছু করা যাবেনা। রুকইয়া শুরুর পূর্বে গায়ে/বাসার সকল তাবিজ নষ্ট করবেন। তাবিজ নষ্ট করে তাওবা করার পর রুকইয়া শুরু করবেন। তাবিজ নষ্টের জন্য এই পোস্ট ফলো করবেন, উপরে লিখা আছে
শরীয়ত সমর্থন করেনা এমনকিছু বাসায় রেখে রুকইয়া করবেন না। যেমন- কুকুর, প্রাণির উন্মুক্ত ছবি, মূর্তি, জ্যোতিষীদের দেয়া কোনকিছু। প্রশ্ন করতে পারেন, তাবিজ থাকলে সমস্যা কি? সমস্যা আছে, তাবিজ রেখে রুকইয়া করলে অনেক সময় উলটাপালটা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, সমস্যা থাকলেও রুকইয়া করে কোন উপকার হয়না।
৩। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “বান্দা আমার সম্পর্কে যেমন ধারণা করে আমি তার নিকট তেমনই”। (বুখারী, ৬৯০১)
আল্লাহ সম্পর্কে সর্বোচ্চ সুধারণা রাখতে হবে। যাবতীয় সমস্যার জন্য বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। বিশেষত দোয়া কবুলের সময়গুলোতে (যেমন- তাহাজ্জুদের সময়ে)। আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করবেন কিনা সেটা নিয়ে কনফিউজড থাকা যাবেনা। আল্লাহ দোয়া কবুল করবেন এমন ধারণা রেখেই দোয়া করতে হবে। এটা দোয়ার আদব।
৪। ফরজ ইবাদতে (যেমন নামাজ,পর্দা ইত্যাদি) সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। রুকইয়া করছেন এজন্য বা অন্যকোন কারণে না, আল্লাহ করতে বলেছেন তাই আপনাকে নামাজ পড়তে হবে, পর্দা করতে হবে। ফরজ ইবাদত নিয়মিত না থাকলে কি রুকইয়া শুরু করা যাবেনা? যাবে, তবে ফরজ ইবাদতের দিকে বেশি মনযোগ দিতে হবে। রুকইয়া যেহেতু এক প্রকার ইবাদত তাই রুকইয়া থেকে ভালো ফলাফল আশা করলে ফরজ ইবাদত ঠিক হওয়া জরুরি। পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকতে হবে যথাসম্ভব। সুস্থ এবং অসুস্থ সবারই উচিত হিফাজতের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিখিয়ে দেয়া সকাল সন্ধ্যা ও ঘুমানোর আগের আমলগুলো করা। যারা রুকইয়া করবেন এসব আমল করা তাদের জন্য আরো জরুরী। হিফাজতের জন্য বলা মাসনুন আমল এখানে পাওয়া যাবে,
৫। কিছু মানুষ বলে বেড়ায়, “কোরআন দিয়ে হবেনা। কুফরি কাটানোর জন্য কুফরিই করতে হবে।” নাউযুবিল্লাহ! জেনেশুনে কুফরি করা এবং মানুষকে কুফরির দিকে আহবান করা মারাত্মক গুনাহের কাজ। কুফরি কাটানোর জন্য কোরআন দিয়েই চিকিৎসা করতে হবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহ কোন হারাম বস্তুতে তোমাদের জন্য আরোগ্য রাখেননি।” (সহীহ ইবনে হিব্বান)
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্যে বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।” (সুরা আল হাশর ২১)
কোরআন কোন পাহাড়ের উপর নাজিল করলে আল্লাহর ভয়ে পাহাড়টাই মাটিতে মিশে যেত! সুবহানাল্লাহ! সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহ তায়ালার কালামের সামনে দাঁড়াতে পারে এমন কিছু আসমান জমীনে নাই। আল্লাহর কোন সৃষ্টি, আপনার অসুখ এসবেরও কোন ক্ষমতা নাই আল্লাহর কালামের সামনে টিকে যেতে পারে।
প্রচলিত কুফরি কবিরাজি সম্পর্কে জানুন এবং এসব থেকে দূরে থাকুন। কুফরি কবিরাজি সম্পর্কে জানতে এই পোস্ট পড়ুন,
 
 
রুকইয়াহ vs কবিরাজি
অনেকের ধারনা রুকইয়াহ এবং কবিরাজি একই। গ্রুপ এডমিনদের প্রতিও ধারনা তারা কবিরাজি করেন। রুকইয়াহ সম্পর্কে যার ন্যূণতম জ্ঞান আছে, সে অন্তত এই ধারণা করবে না। সাধারন মানুষ কবিরাজের কাছে যায়, কিছু টাকা দেয় বা না দেয়; কবিরাজ বলে হয়ে যাবে। কিন্তু কিভাবে হবে সেটা আর বলে না। ভয়ে তাকে জিজ্ঞেসও করা যায় না। এত্তবড় কবিরাজ/হুজুর। জিজ্ঞেস করলে যদি আবার আমার কোন ক্ষতি হয়! ইমাম সাহেব উনি, উনি খতিব, উনি মুফতি সাহেব! উনি কি আর ভুল কিছু করবেন?
কাজেই আমরা যখন "বদনজর, জ্বিন, যাদুর" ব্যাপারে কথা বলতে যাই তখন স্বাভাবিক ইম্প্রেশনে মানুষ কবিরাজ/হুজুরই মনে করে। কারন তারা ভাবে কবিরাজ/হুজুররা কুরআন দিয়েই চিকিৎসা করে। আমরাও সে কথাই বলি। কেউ খতিয়ে দেখার কথা ভাবে না যে, তলে তলে কি হচ্ছে।
এই কারনে কুফরী করা, শিরক করা, ভণ্ড কবিরাজ/হুজুর চেনা জরুরী।
লন্ডনের এক বিখ্যাত রাক্বি (যিনি রুকইয়াহ করেন) কবিরাজ/হুজুর চেনার কিছু উপায় বলেছিলেন। আপনাদের জন্য সেখান থেকে তুলে দেয়া হলঃ
১. যদি জিজ্ঞেস করে আপনার মায়ের নাম কি,বাবার নাম কি, দাদার নাম কি, বংশ পরিচয় জানতে চায়-ইত্যাদি।
২. যদি বলে আপনার কাপড়ের অংশ লাগবে/আন্ডারগার্মেন্টেসের অংশ লাগবে/ চুল লাগবে/ দাড়ি লাগবে/কানের দুলটা/গলার চেইনটা লাগবে/হাতের চুড়ি লাগবে।
৩. যদি সে বলে "একগ্লাস পানি আনেন। আর একটা ছুড়ি আনেন। এবার গ্লাসের পানিতে ছুড়ি চালান।" আপনি চালাবেন আর আপনার মনে হবে আপনি ছুড়ি পানিতে না গোশতের মধ্যে চালাচ্ছেন।
৪. যদি সে আপনার বাসায় আসে, বসে পড়ে এদিক সেদিক তাকায় আর কি যেন বিড়বিড় করে। সুন্দর সুন্দর কথা বলে কিন্তু সেগুলো কুরআনের আয়াত নয়, হাদীসের দোয়াও নয়।
৫. যদি এমন বলে (সাধারনত মেয়েদের বলে) যে, আপনি যদি সুস্থ হতে চান তাহলে "এই জিনিস"টা আমাকে আপনার গোপন অঙ্গে ঘষতে হবে। যদি সুস্থ হত চান তাহলে আপনার এই এই অঙ্গ আমাকে ধরতে হবে/ আপনাকে উলঙ্গ হতে হবে -ইত্যাদি ইত্যাদি। (নাউজুবিল্লাহ)
৬. যদি বলে যে, এক বোতল পানি আনেন। বোতলটা টেবিলের উপর/ওয়ারড্রোবের উপর রাখুন। অথবা বলে যে, বোতলের মুখ খুলে হাতে রাখুন। আমি যখন বলব তখন সাথে সাথে মুখ লাগিয়ে দিবেন।
৭. যদি বলে যে, এই নেন এই তাবিজটা/কবচটা গলায়/হাতে/কোমড়ে পড়েন। কারণ প্রায় ৯৯% তাবিজেই শিরক, কুফর বিদ্যমান। 
৮. যদি বলে, চোখ বন্ধ করুন। কিছু একটা দেখতে পাবেন। যখন দেখতে পাবেন তখনই ধরে ফেলবেন। অথবা বলবে যখনই দেখবেন তখনই দু'হাতে মশা মারার মত করে মারবেন।
৯. আপনারা হয়তো অনেক কবিরাজকে দেখে থাকবেন, যারা বলে গরু লাগবে, মুরগি লাগবে, ছাগল লাগবে তাহলে আপনার কাজ হবে। তাদের অনেকে নিজে এসব শয়তানের নামে বলি দেয়, আর অনেকে বলে “জবাই করার পর রক্তটা দিবেন।" তাঁরা এই রক্ত শয়তানের উপাসনায় ব্যবহার করে। যাদুবিদ্যায় বিভিন্ন মৃত প্রাণীর রক্ত ব্যবহার করা খুবই কমন ব্যাপার।
বাংলাদেশের কবিরাজ/হুজুররা আরও কিছু কাজ করে থাকে যেমনঃ
১। কাপড় মাপে, কাপড় ছোট বড় করে দেখায়। একই ভাবে হাত মেপে হাত ছোট বড় দেখায়।
২। মুখে দেখেই অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কথা বলে এবং কিছু কিছু মিলেও যায়।
৩। জ্যোতিষিদের মত হাত দেখে।
৪। কোন কিছু পুতে রাখার জন্য বলে।
৫। জ্বিন বোতলে বন্দি করে রেখেছে, জ্বিনকে অমুক জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছে, জ্বিন রক্তে মিশে গেছে -এই জাতীয় উদ্ভট কথা বলে।
৬। কবিরাজদের একদল নিজের নামের শেষ "শাজলী" যোগ করে। ওরা বলে "সাহাবি জিন" নাকি ওদের খেদমত করে।
৭। সাত ঘাটের পানি লাগবে, অমুক জায়গায় মাটি লাগবে ইত্যাদি অর্থহীন কাজ করবে।
৮। অন্য জনের উপর জ্বিন হাজির করে তাকে দিয়ে কথা বলাবে ।
৯। শনিবারে যেতে হবে, মঙ্গলবার যেতে হবে, মাগরিবের পর যেতে হবে -ইত্যাদি অনর্থক শর্ত আরোপ করবে।
১০। নির্দিষ্ট জিনিস খাওয়া নিষেধ করতে পারেন। যেমন,কলা খাওয়া নিষেধ, গোশত খাওয়া যাবে যাবে না- খেলে ওষুধ কাজ করবে না। অন্যকোন ওষুধ খাওয়া যাবে না -ইত্যাদি বলতে পারে।
১১। তুলা রাশির লোক লাগবে -এসব বলতে পারে।
কাজেই যারা আমাদের সম্পর্কে এমন গর্হিত ধারনা পোষন করেন তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আমরা এই ধরনের কথা বলে থাকি, এই ধরনের কাজ করি থাকি, তার প্রমান দিবেন। আর যদি প্রমান দিতে না পারেন তবে তওবা করে নিজের ধারনা সংশোধন করে নিবেন।
কবিরাজির বাস্তবতা সম্পর্কে কয়েকটা কথা বলি।
১) এদের কাছে গেলে আপনার সমস্যার সমাধান হবে না বরং আপনি জটিল থেকে জটিলতর সমস্যায় আক্রান্ত হবেন। অনেক মানুষ আছেন যার হয়ত সামান্য একটা সমস্যা ছিল। কিন্তু নানান কবিরাজের কাছে দৌড়াতে দৌড়াতে সেই সামান্য সমস্যাকে ভয়াবহ আকারে নিয়ে গিয়েছেন।
২) মেম্বাররা প্রায়ই বলেন, অমুক কবিরাজের কাছে গিয়েছিলাম, তাবিজ দিয়েছিল, এরপর এক মাস ভাল ছিলাম। এরপর আবার এই সমস্যা, ঐ সমস্যা শুরু হয়েছে। আসল কথা হল, শয়তানের একটা কাজ করে দিয়েছেন আপনি তাই একমাস আপনাকে বিরক্ত করেনি। একমাস পরে আবার শয়তানি করবে যেন আমি আবার নতুন করে কোন শয়তানি কুফরীতে লিপ্ত হন। প্রতিবার বড় থেকে বড় গোনাহে আপনি লিপ্ত হয়ে যাবেন। ক্ষুধার্থ কুকুরের মত। মাংস দিবেন, পেট ভরবে, চুপ থাকবে। হজম হয়ে গেলেই আবার ঘেঊ ঘেউ শুরু করবে।
৩) কবিরাজের/হুজুরের দেয়া তাবিজ কিছুদিন পর পর হারিয়ে যায়। ঘটনা একই আপনাকে আবার তাবিজ/টোটকা নিতে হবে। আবারও কোন গোনাহ করতে দিতে হবে।
৪) কেউ কেউ বলে জ্বিন নাকি নিজেই খেদমত করে। ডাহা মিথ্যে কথা। প্রথম দিকে হয়ত ছোট ছোট সমস্যার ব্যাপারে সহায়তা করে আপনার বিশ্বস্ততা অর্জন করতে চাইবে। পরে আপনাকে ঈমানহারা করে ফেলবে। আর পাশাপাশি ভয়ভীতি দেখাবে। আপনিও দেখবেন অমুক কাজ হয়েছে, তমুক কাজ হয়েছে এখন কথা না শুনলে না জানি আমার কি ক্ষতি করে। আমার ফ্যামিলির কি ক্ষতি করে! এ এক ভয়াবহ দুষ্টচক্র।
৫) ঈমানের ন্যুনতম নূর যার অন্তরে আছে তার কাছে কুফরী করা, শিরক করা কবিরাজ/হুজুর/যাদুকরের কাছে গেলেই মনেহবে "আমি ভুল কিছু করলাম নাতো"। মনে অশান্তি, খচখচানি থাকবে সারাজীবন।
অথচ রুকইয়াহ! কুরআনী চিকিৎসা, হাদিসের দোয়া নির্ভর চিকিৎসা। গোপনীয় কোন কিছু নেই। এমন না আমরা গ্রুপে এককথা বলি আর ইনবক্সে অন্য কথা বলি। যারা আমাদের ইনবক্স করেছেন তারা ভাল করেই জানেন কি অবস্থা। এখনো মনে হয় একেক জন্য এডমিনের ৩-৪ শ' মেসেজ রিকুয়েস্ট ঝুলে আছে।
এগুলো ঝুলেই থাকবে।
আপনি নিজেই করেন নিজের চিকিৎসা। কারও কাছে যেতে হবে না। আপনার জ্বিন সংক্রান্ত সমস্যা হলে আপনার বাবা, মা, ভাই, বোন, যেকাউকে (যার কুরআন তেলাওয়াত শুদ্ধ আছে) বলেন আপনাকে রুকইয়াহ করতে। চার আনা পয়সাও আপনাকে খরচ করতে হবে না। রুকইয়াহ ইনডেক্সে (bit.ly/ruqyahindex) সবই আছে। তবুও যদি আমাদের পরামর্শ চান তাহলে গ্রুপে ( facebook.com/groups/ruqyahbd ) তে পোস্ট করেন। একটা পয়সাও আমাদের দিতে হবে না। শুধু একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
এরপরও যারা "বিচার মানি তালগাছ আমার" টাইপ তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দু'আ। আল্লাহ যেন তাদের হেদায়াত দান করেন।
কবিরাজ/হুজুরদের সম্পর্কে আরও কিছু লেখা রুকইয়াহ ইন্ডেক্সে পাবেন। আগ্রহ থাকলে পড়ে দেখতে পারেন। ইন্ডেক্সের লিংকতো আগেই দিয়েছি। যারা জানেন না রুকইয়াহ কি তারাও ইন্ডেক্সে যান।
 
 
৬। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে রুকইয়া চালিয়ে যাবেন। পরিপূর্ণ সুস্থ হওয়া পর্যন্ত রুকইয়া করবেন। রুকইয়া কতদিন করলে সুস্থ হবেন? আল্লাহ যেদিন চান সেদিন আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন, দিনক্ষণ হিসেব করে বলা যাচ্ছেনা। যাদের সমস্যা একটু বেশি তাদের উচিত নিয়মিত রুকইয়াতে দৃঢ় থাকা।
আল্লাহ আপনাদের রুকইয়াহ সফল করুন এবং যাবতীয় রোগব্যধি থেকে শিফা করুন।
 
 
 
 
বরই পাতার গোসল
 

বরই পাতার গোসল

---------
সিহরের (যাদু) চিকিৎসা এই গোসলটি খুবই উপকারী। উপকারিতা বিবেচনায় সিহরের বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতির র্যাংকিং করলে হয়তো এটা সবার উপরে থাকবে।
আজ আমরা সংক্ষেপে বরই পাতা বেটে রুকইয়ার গোসলের রিকোমেন্ডেড পদ্ধতি জানব।
এক বালতি গোসলের পানি নিন। এরপর সাতটি বরই পাতা (কুল বলা হয় অনেক এলাকায়) বেটে পানিতে গুলান। (সম্ভব হলে সবুজ পাতা ব্যবহার করুন, এবং পাটায় পিষুন)। এরপর পড়ুন-
  • সূরা ফাতিহা - ৩ বার
  • আয়াতুল কুরসি - ৩ বার
  • সুরা আরাফ ১১৭-১২২ (৩বার)
  • সুরা ইউনুস ৮১-৮২ (৩বার)
  • সুরা তহা ৬৯ (৩বার)
  • সুরা ইখলাস - ৩ বার
  • সুরা ফালাক - ৩ বার
  • সুরা নাস - ৩ বার
পড়ার মাঝে মাঝে পানিতে ফুঁ দিতে পারেন। এরপর এখান থেকে তিন ঢোক পানি পান করুন, বাকিটা দিয়ে গোসল করুন। যদি গোসলের পানি খাওয়ার অনুপযোগী হয় তবে খাওয়ার পানি আলাদা করে নিবেন। এরপরে বরই পাতা পিষে উভয় পানিতে দিয়ে আয়াতগুলো পড়ে উভয় পানিতে ফুঁ দিবেন। এরপরে খাওয়ারটা খেয়ে নিবেন।
ইনশাআল্লাহ প্রথম গোসলেই যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। প্রয়োজনে একই নিয়মে আরো কিছুদিন গোসল করুন।

দ্রষ্টব্য

  • এই পানি চুলার আগুনে গরম করবেন না, এর সাথে অন্য পানি মিশাবেন না।
  • আর বরই পাতা না পেলে কর্পূর পাতা অথবা অল্প কর্পুর দিয়ে বা ওটাও না পেলে নিম পাতা দিয়েও একই নিয়মে গোসল করুন, তবে বরই পাতাই উত্তম।
  • আপনি চাইলে সাথে আরও কিছু আয়াত অথবা রুকইয়ার দোয়া পড়তে পারেন।
  • এসব আয়াত গোসলখানার বাহিরে পড়বেন। তবে সেখানে দোয়াকালাম পড়ার পরিবেশ না থাকলে আগে বরই পাতা বেটে দোয়াগুলো পড়ে ফুঁ দিন, এরপর গোসলখানায় নিয়ে পানিতে মিশিয়ে গোসল দিন।
আল্লাহ'র রহমতে জাদু-টোনার চিকিৎসায় এই গোসল খুবই উপকারী। বিভিন্ন যুগের অনেক বিখ্যাত আলেমদের সাজেস্টেড পদ্ধতি এটা। আল্লাহ্‌ চাইলে আপনিও উপকার পাবেন।
---
মূল - আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
 
যেদিন বরই পাতার গোসল করবেন সেদিন আর সিহরের নরমাল গোসল করতে হবে না।
যদি আপনার প্রাইভেসি নষ্ট হয় স্বপ্নে তাহলে নিচের লিংকের আয়াতগুলো পড়ে অলিভ ওয়েলে ফু দিয়ে রাতে ঘুমের আগে সারা গায়ে মালিশ করবেন। প্রাইভেসি নষ্ট না হলেও মালিশ করতে পারবেন, এতে ক্ষতির কিছু নেই।
প্রশ্নঃ
১। আমার এমন কোনো সমস্যা নেই? আমি কি ক বা খ ফলো করতে পারবো?
- পারবেন। অনেক সময় সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তি বোঝে না তার সমস্যা আছে কিনা। রুকইয়াহ করলে তখন বের হয়। আপনি করতে পারেন। আপনার যদি সমস্যা না থাকে তবে ক্ষতি হবে না। আর যদি সমস্যা থাকে তাহলেতো বোঝাই গেল।
২। কতদিন করতে হবে?
- যতদিন পর্যন্ত লক্ষনগুলো থাকবে ততদিন। তবে লক্ষন চলে গেলেও আরও দুই সপ্তাহ করা উচিত।
৩। আমারতো তাবিজ আছে গায়ে। আমি করতে পারবো?
- জ্বি না, গায়ে ঘরে কোনো তাবিজ থাকলে খুলে নষ্ট করে তওবা করে রুকইয়াহ করবেন। নিচের লিংকে বিস্তারিত
 
যাদুর জিনিস বা তাবিজ নষ্ট করার নিয়মঃ
-----------
সন্দেহজনক কিছু বা কোন তাবিজ যদি পাওয়া যায় তাহলে সেটা নষ্ট করার জন্য একটি পাত্রে পানি নিন। তারপর সেই পানিতে সুরা আ’রাফ ১১৭-১২২ নং আয়াত, ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯, সূরা ফালাক্ব ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার পড়ে ফুঁ দিন।
লক্ষণীয়ঃ
১। তাবিজ,পুতুল,কাগজ,যাদুকরের দেয়া যেকোনকিছু উপরের আয়াতগুলো পড়া পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন কিছুক্ষণ। কাগজে লেখা থাকলে সেটা ঘষে মুছে ফেলার চেষ্টা করবেন। লেখা মুছার পরে ছিড়ে অনেকগুলো টুকরো করবেন। তারপর শুকিয়ে পুড়িয়ে ফেলবেন। পুড়ানোর সময়ে নিশ্বাসের সাথে সেটার ধোঁয়া নেয়া থেকে বিরত থাকবেন।
২। তাবিজ খালি হাতে না ধরে গ্লাভস ব্যবহার করতে পারেন। তাবিজ ধরার পূর্বে এবং নষ্ট করার পুরোটা সময়ে ফালাক, নাস পড়বেন।
৩। তামা বা অন্য ধাতুর তাবিজ বা আংটিতে খোদাই করা লেখা থাকলে লেখাটা ঘষে মুছে ফেলবেন। ঘষে মুছতে না পারলে পুড়িয়ে হলেও লেখাটা মুছে ফেলা জরুরী। নিজে করতে না পারলে কোন স্বর্ণকারের কাছে গিয়ে লেখাটা মুছে ফেলবেন।
৪। তাবিজে গিট দেয়া থাকলে সাবধানে প্রতিটা গিট খুলবেন। কোন পুতুল, মূর্তি, পাখি, মাছ ইত্যাদি পাওয়া গেলে সাবধানে খেয়াল করবেন এদের গায়ে কোন পিন আছে কিনা। থাকলে প্রতিটা পিন খুলবেন। পিনগুলোও পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন। জীবন্ত কোনকিছু যেমন- পাখি পাওয়া গেলে তার ডানার নিচে এবং শরীরের প্রতিটা জায়গায় খুঁজে দেখবেন কোন তাবিজ,পিন বা সন্দেহজনক কিছু আছে কিনা। থাকলে এগুলো সাবধানে খুলে নিয়ে পাখিকে তাবিজ নষ্টের পানি দিয়ে ভিজিয়ে ছেড়ে দিবেন। তাবিজের ভেতরে কাগজ ছাড়াও অন্যকিছু থাকতে পারে। তাবিজ খুলতে গেলে অনেক সময় খোলস ভেঙ্গে বের করা লাগতে পারে। যাই থাকুক, ভাঙ্গা টুকরোসহ সবটুকুই পানিতে ঢালবেন। একইভাবে যাদুকরের দেয়া তেলপড়া,পানিপড়া ইত্যাদি জিনিসপত্র পানিতে ঢালবেন।
৫। ব্যবহৃত পানি ফেলার জন্য এবং তাবিজ পুড়ানোর জন্য, সাধারনত মানুষের যাতায়াত হয়না এমন কোন জায়গা ঠিক করে নিন।
৬। কোন জায়গায় তাবিজ রাখা আছে সন্দেহ হলে সেখানে পরপর তিনদিন তাবিজ নষ্টের পানিটা ছিটিয়ে দিন। কারো বাসার দেয়ালে,ফ্লোরে অথবা যেকোন স্থানে তাবিজ আঁকা অথবা খোদাই করা থাকলে লেখাটা ঘষে মুছতে হবে। তারপর তাবিজ নষ্টের পানিটা ওখানে ছিটিয়ে দিতে হবে। অনেক সময় বাসা বানানোর সময়ে প্রতি কোণায় তাবিজ রেখে দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে এসব কোণায় তাবিজ নষ্টের পানিটা ছিটিয়ে দিবেন পরপর তিনদিন। আর দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাবিজ নষ্ট করে দেন।
৭। জ্যোতিষীর দেয়া কোন বিশেষ আংটি থাকলে তাবিজ নষ্টের পানিতে ডুবিয়ে রাখবেন। কিছুক্ষণ রেখে পাথরটা ভেঙে তারপর ফেলে দিবেন। জ্যোতিষীরা বিশ্বাস করে পাথরের ক্ষমতা আছে। তাই কোনমতেই এই পাথর রেখে দেয়া যাবেনা।
৮। আপনি তাবিজ ব্যবহার করলে উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী তাবিজ নষ্ট করবেন। তারপর তাবিজ ব্যবহার করার জন্য তাওবা করবেন।
 
৪। তাবিজ ফেলে দিলে হবে? নষ্ট না করে?
- হবে না। নষ্ট করতে হবে।
৫। তাবিজ কোথায় আছে জানি না / হারিয়ে গিয়েছে। আমি কি রুকইয়াহ করতে পারবো?
- পারবেন। আল্লাহর কাছে দুয়া করবেন যেন যেখানেই থাকুক তাবিজ সেটা যেন নষ্ট হয়ে যায়। আর আগে ব্যবহার করে থাকলে তওবা করে নিবেন।
ষষ্ঠ কেসঃ উপরের কোনকিছুই আমার সাথে মিলে না। তবুও বিয়ে হচ্ছে না।
আপনার উচিত হবে বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ বার। আর তাহাজ্জুদ পড়ে দুআ করা। পূর্বে প্রকাশিত একটি পোস্ট থেকে এখানে কিছু আমল দেয়া হল। এইগুলোও ফলো করতে পারেন। ইন শা আল্লাহ উপকার পাবেন।
  • নিম্নোক্ত দুয়াটি বেশি বেশি পাঠ করবেন। উঠা-বসা, চলা-ফেরা যেকোন সময়েই পড়তে পারেন।
رب إني لما أنزلت إلي من خير فقير
রব্বি ইন্নি..লিমা.. আং..ঝালতা ইলাইয়্যা মিন খইরিং.. ফাক্বি..র।
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমার প্রতি যেই কল্যাণই নাযিল করবেন আমি সেটারই মুখাপেক্ষী।
  • পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর সূরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াত পড়বেন।
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوٰجِنَا وَذُرِّيّٰتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
রব্বানা..হাব লানা..মিন আঝওয়াজিনা..ওয়া যু'র্রিয়্যা..তিনা..ক্বুর্রতা আঅ'য়ুনিউ..ওয়াজআ'লনা..লিলমুত্তাক্বিনা ইমা..মা..।
অর্থ: হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী/স্বামী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন।
  • প্রতিদিন ফজরের নামাযে পর يافتاح (ইয়া ফাত্তাহু) বাম হাতের উপর ডাম হাত রেখে আল্লাহর এই নামটি ৪০ বার পড়বেন। এভাবে ৪০ দিন পড়লে ইনশাআল্লাহ ফল পাওয়া যাবে। (পিরিয়ড থাকলেও এই আমল করবেন ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠে )
আর হ্যাঁ আগেই বলেছি যেকোন আমল বা দু'আ কবুলের পুর্বশর্ত হচ্ছে গুনাহ থেকে বাঁচা। তাই সকল প্রকার গুনাহ বাঁচুন। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করুন।হারাম থেকে বাঁচুন। পর্দার মধ্যে থাকুন। আর রহমানুর রাহীমের দয়ার প্রতি ভরসা রাখুন। হতাশ হবেন না।আরেকটা কথা আপনারা সবাই জানেন কেউ যদি সরাসরি রুকইয়া করাতে চান সেক্ষেত্রে পর্দা আবশ্যক। বেপর্দা হয়ে আসলে রুকইয়াহ করা হয়না। তাহলে সেলফ রুকইয়াহ করার জন্য কি এই নিয়ম কোনই গুরুত্ব বহন করেনা?
 
 
 

 

গর্ভের সন্তান নষ্ট করার যাদু

------------------
[ক]
সমাজে প্রচলিত শয়তানী যাদুর মাঝে এটাও একটা। বাচ্চা না হওয়ার জন্য, কিংবা বাচ্চা হতে লাগলেও যেন নষ্ট হয়ে যায় এজন্য স্বামী বা স্ত্রী উভয়কেই যাদু করা যায়। এই যাদুতে আক্রান্ত হলে পুরুষের ক্ষেত্রে সাধারণত স্পার্মের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়! আর মেয়েরা আক্রান্ত হলে সাধারণত বাচ্চা আসে, কিন্তু অসময়ে গর্ভপাত হয়ে যায়।
যদি দেখা যায়, বারবার গর্ভপাত হচ্ছে, আর ডাক্তাররা এর সন্তোষজনক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারছে না, তবে ধারনা করা উচিত কেউ যাদু করেছে। এক্ষেত্রে রুকইয়া করে যাচাই করতে হবে সমস্যা আছে কি না। . 
এই যাদুতে আক্রান্ত হলে সচরাচর কিছু লক্ষণ দেখা যায়.. 
 
১. মানসিক অশান্তিতে থাকা, বিশেষত বিকেল থেকে মধ্যরাত
২. বেশিবেশি মতিভ্রম হওয়া
৩. শর্ট টাইম মেমোরি লস
৪. ঘুমের মাঝে অস্থিরতা, ঠিকভাবে ঘুমাতে না পারা
৫. মেরুদণ্ডের নিচের দিকে ব্যথা
৬. ভয়ংকর সব স্বপ্ন দেখা
এছাড়াও এই যাদু করতে অনেক সময় যেহেতু জ্বিনের সাহায্য নেয়া হয়, তাই জ্বিন আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলোও কিছু মিলে যেতে পারে।
 
জ্বীন বিষয়ক সব একসাথে

https://allzinone.blogspot.com/2021/05/blog-post_13.html

.
[খ]
বাচ্চা নষ্ট করার যাদুর জন্য সেলফ রুকইয়া:
১. এই যাদুতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যদিওবা জ্বিনের সাহায্য নেয়া হয়, তবু নিজে নিজে রুকইয়া করা ইনশাআল্লাহ যথেষ্ট হবে। তবে কোন আলেমের সাথে যোগাযোগ রাখা ভালো। খেয়াল করার বিষয় হচ্ছে, এই চিকিৎসায় যেহেতু একটু সময় লাগতে পারে, তাই মানসিক সাপোর্ট দেয়ার মত কেউ পাশে থাকা জরুরি। বাচ্চা হওয়া নিয়ে সমস্যা যেহেতু, তাই স্বামী-স্ত্রী এঁকে অপরের সহায়তা করতে পারেন এক্ষেত্রে।
২. সেলফ রুকইয়ার জন্য প্রথমে পাকপবিত্র হয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন। এরপর আল্লাহর কাছে আপনার সমস্যার কথা বলে প্রাণভরে দু'আ করুন, তারপর দরুদ ইস্তিগফার পড়ে ট্রিটমেন্ট শুরু করুন। পানি রাখুন কাছে। এরপর প্রথমে সিহরের রুকইয়া বা অন্য কারো কমন রুকইয়া শুনুন। সমস্যা থাকলে তো বুঝতে পারবেন, যে যাদুর সমস্যা আছে।
৩. এরপর এক গ্লাস পানি নিয়ে "আয়াতুল কুরসি, সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২, ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯" এই আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন। এবং খেয়ে নিন, কষ্ট হলেও খাবেন। সাথেসাথে লালচে বা কালোর মত বমি হলে ভালো, তাহলে সহজেই সুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৪. একমাস নিচের প্রেসক্রিপশন ফলো করুন, তারপর আবার শুরু থেকে রুকইয়া করে দেখুন, সমস্যা বুঝতে পারলে চিকিৎসার মেয়াদ আরও ১মাস বাড়িয়ে নিন।
.
[গ]
প্রেসক্রিপশন:
১. সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, বাক্বারার শেষ রুকু, আলে ইমরানের শেষ রুকু, ফালাক্ব (৩বার), নাস (৩বার) পড়ে অলিভ অয়েল অথবা কালোজিরার তেলে ফুঁ দিন। এই তেল প্রতিদিন ঘুমানোর আগে বুকে, কপালে, এবং মেরুদণ্ডে মালিশ করবেন।
২. উপরের আয়াতগুলো পড়ে খাঁটি মধুতে ফুঁ দিন। এই মধু ১ চামচ করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে হবে।
৩. প্রতিদিন সকালে সুরা সফফাত পড়বেন, নইলে অন্তত শুনবেন।
৪. প্রতিদিন রাতে সুরা মা’আরিজ পড়বেন, নইলে শুনবেন।
৫. কোন কারীর সাধারণ রুকইয়া প্রতিদিন কমপক্ষে ৩বার শুনবেন। (ডাউনলোড লিংক  ruqyahbd.org/d)
৬. সকাল সন্ধ্যার মাসনুন আমল করবেন, বিশেষত সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস তিনবার পড়বেন।
৭. ঘুমের আগে তিনবার সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীরে বুলিয়ে নিবেন। আর আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবেন।
.
[ঘ] লক্ষণীয়:
১। এই সমস্যায় রুকইয়া তো করবেনই, কিন্তু মেডিকেল টেস্টে যদি এসংক্রান্ত কোন অসুখ ধরা পড়ে, তাহলে পাশাপাশি ডাক্তারের কাছে সেটার জন্য চিকিৎসাও করাবেন।
২। সমস্যা ভালো হতে ৩ মাস পর্যন্ত লাগতে পারে, ধৈর্য ধরে চালিয়ে যেতে হবে। রুকইয়ার সময় অনেক কষ্ট হলেও বাদ দিবেন না।
৩। কয়েকদিন করেই যদি ভালো ফিল করতে লাগেন, তখন বাদ দিয়ে দিবেন না। বরং আরও দুই-এক সপ্তাহ রুকইয়া চালিয়ে যান।
আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন…

 

যাদু এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়

-------------------------------
ক. বিসমিল্লাহ্‌! …যারা যাদু আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা তো বটেই, তাঁদের সাথে আমাদের সবারই যাদু এবং জ্বিন-শয়তানের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিখিয়ে দেয়া আমলগুলো যত্নসহকারে করা উচিত। এগুলোকে মাসনুন আমল অর্থাৎ সুন্নাহসম্মত আমল বলে। এসবের অসাধারণ সব উপকারিতার পাশাপাশি বড় যে লাভ রয়েছে, তা হচ্ছে আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল বাড়ে।
সব সুন্নাতই গুরুত্বপূর্ণ, আর সারাদিনের; বিশেষত সকাল-সন্ধ্যার ফযিলতপূর্ণ অনেক দুয়া ও যিকর হাদিসে আছে, সবকিছু বিস্তারিত এখানে উল্লেখ করা তো সম্ভব না। আর সবসময় সবগুলোর ওপর আমলও সম্ভব না। তাই আমরা এখানে অল্প কিছু মাসনুন দোয়া এবং আমল নিয়ে আলোচনা করবো। আল্লাহ আমাদের এসবের প্রতি যত্নবান হবার তাওফিক দেন। আমিন...
সংযুক্তি-
➫ প্রতিদিনের মাসনুন আমলগুলো করার সুবিধার্থে এই প্রবন্ধের দোয়াগুলোর সাথে অতিরিক্ত আরও অনেক দোয়াসহ একটি অ্যা‌ন্ড্রয়েড অ্যাপ বানানো হয়েছে। যা পাওয়া যাবে এই লিংকে- http://bitly.com/masnun-app
➫ অ্যাপের ওয়েব সংস্করণ আছে এই লিংকে- http://ruqyahbd.org/dua
⋆ আরেকটা কথা, আরবি দোয়া অথবা কোরআনের আয়াতের উচ্চারণ বাংলায় আমরা অপছন্দ করি! কিন্তু অতীতে এই ধরনের পোস্টে অনেকেই উচ্চারণ চেয়ে পীড়াপীড়ি করেছে, তাই কয়েকটার উচ্চারণ লিখে দিলাম।
.

খ. সকাল-সন্ধ্যার আমল

১. আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি, মিং-শাররি মা-খলাক্ব।
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার পড়া। বিষ, যাদু এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে। (জামে তিরমিযী, ৩৫৫৯)
.
২. বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা-ইয়াদ্বুররু মা‘আসমিহী, শাইউং ফিলআরদ্বী ওয়ালা- ফিসসামা-ই, ওয়াহুওয়াস সামি’উল ‘আলীম।
بِسْمِ اللهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ العَلِيمُ
সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার পড়া। সব ধরনের ক্ষতি এবং বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকতে..। (জামে তিরমিযী, ৩৩৩৫)
.
৩. জিন-শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচতে সকাল সন্ধ্যায় আয়াতুল কুরসি (সুরা বাকারা ২৫৫নং আয়াত) পড়া। (হাকিম ১/৫৬২)
.
৪. সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস: প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে পড়া। সব ধরনের অনিষ্ট থেকে বাঁচতে এটা রাসুল স. এর শিখানো আমল। (সুনানে আবি দাউদ)
.
৫. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া 'আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ ، وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
প্রতিদিন সকালে ১০০বার পড়া। এর অনেক বেশি ফজিলত, এবং জ্বিন-শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচতে এটা পরিক্ষিত আমল। (বুখারি, মুসলিম হাদিস নং ৪৮৫৭) একশতবার না পারলে, অন্তত ফজর ও আসরের পর ১০বার করে পড়া। (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
.
৬. সুরা তাওবাহ ১২৯ নং আয়াতের অংশ-
حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় সাতবার এটি পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবেন। (সুনানে আবি দাউদ)
.

গ. ঘুমের আগের আমল

১. ওযু করে ঘুমানো, তাহলে ফিরিশতারা হিফাজতের জন্য দুয়া করতে থাকে। ডান কাত হয়ে ঘুমানো। এমনিতেও সর্বদা ওযু অবস্থায় থাকা সুন্নাত। (মু’জামুল আওসাত; সনদ হাসান-জায়্যিদ)
২. শোয়ার পূর্বে কোন কাপড় বা ঝাড়ু দিয়ে বিছানা ঝেড়ে নেয়া। (মুসলিম)
৩. আয়াতুল কুরসি পড়া। (বুখারী) সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া। (বুখারী)
৪. সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়ে হাতের তালুতে ফু দেয়া, এরপর পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নেয়া। (বুখারী)
.

ঘ. অন্যান্য সময়ের আমল

১. বিসমিল্লাহ্‌ বলে দরজা-জানালা লাগানো। ঘরে প্রবেশ করতে এবং খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ্‌ বলা।
.
২. সম্ভব হলে মদিনার আজওয়া খেজুরের ব্যবস্থা করা, না হয় যে কোন আজওয়া খেজুরেও হবে। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সাতটি আজওয়া খেজুর সকাল বেলায় আহার করবে সেদিন তাকে কোন বিষ ও যাদু ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী)
.
৩. টয়লেটে ঢুকার পূর্বে দোয়া পড়া-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা, মিনাল খুবসি ওয়াল খবা-ইছ।
অর্থ: হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি খারাপ পুরুষ ও মহিলা জ্বিন থেকে। (সহীহ মুসলিম, ৩৭৫)
.
৪. বিয়ের প্রথম রাতে স্ত্রীর কাছে গিয়ে পড়া [*]
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ
[⋆] এবিষয়ে প্রচলিত একটি ভুল ধারণা হচ্ছে, অনেকে এটি স্ত্রীর মাথায় হাত রেখেই পড়তে হবে। কিছু হাদিসে মাথায় হাত রেখে পড়ার কথা থাকলেও, প্রসিদ্ধ হাদিসগুলোতে কিন্তু স্ত্রীর কাছে গিয়ে শুধু পড়ার কথা আছে। (সুনানে আবি দাউদ ২২৪৩ এবং ইবনে মাযাহ ১৯০৮ দ্রষ্টব্য)
.
৫. স্ত্রী সহবাসের পূর্বে দোয়া পড়া।
بِسْمِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
বিসমিল্লাহি আল্লা-হুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্বা-না, ওয়া জান্নিবিশ্-শাইত্বানা মা-রযাকতানা। (বুখারী, ৪৮৭০)
.
৬. দৈনিক একবার হলেও মসজিদে প্রবেশের দোয়া পড়া
أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: মসজিদে প্রবেশের সময় কেউ এটা পড়লে শয়তান বলে, এই ব্যক্তি আজ সারাদিনের জন্য আমার থেকে রক্ষা পেয়ে গেল। (সুনানে আবি দাউদ, ৩৯৩)
.
7. ঘুমের সময় ভয় পেলে বা অন্যসময় খারাপ অনুভূতি হলে এই দোয়াটি পড়া
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وشَرّ عِبَادِهِ ، ومِنْ هَمَزَاتِ الشّيَاطِينِ وأَنْ يَحْضُرُونِ
উচ্চারণঃ আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লাহিত্তা-ম্মাতি মিন্ গাদ্বাবিহি ওয়া ইক্বা-বিহি ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহি ওয়ামিন হামাযা-তিশ্শায়া-ত্বীনি ওয়া আন ইয়াহ্দুরূন।
(আবু দাউদ ৩৮৯৩)
...
এগুলো সব ঠিকমত অনুসরণ করুন, ইনশাআল্লাহ্‌ জাদু, জিন, বদনজর, ইত্যাদি সহ সব ধরনের ক্ষতি থেকে হেফাজতে থাকবেন।
 
May be an image of text

 

No comments:

Post a Comment