খোলা চিঠি
হৃদি,
তুমি প্রায়ই বলতে,তোমাকে যেন আমি চিঠি লিখি। আমি বলতাম-আমি ভালবাসার চিঠি লিখতে পারি না,এই মোবাইল, ফেইসবুকের যুগে চিঠি লিখে আমি কি করব, তোমাকে দিব? না, তোমাকে দিব না,তুমি পড়লে হাসতে হাসতে মারা যাবে, অনেক বানান ভুল থাকবে সেগুলো ধরবে আর আমাকে পচাবে সুতরাং আমি চিঠি লিখবো না, মজা করে বলতাম-চলো মোবাইল ফেলে দিয়ে আমরা আগের যুগের মত চিঠি লিখে প্রেম করি। চিঠি লিখতে অস্মমতি জানালাম বলে আমার সাথে টানা দুইদিন কথা বললে না,এত অভিমানি কেন তুমি। নিজেও কষ্ট পেলে আমাকেও কষ্ট দিলে। তুমি আসলেই একটা পাগলী, কষ্ট পাবে তবুও আমাকে কষ্ট দিবে, ভালবাসার মানুষকে কষ্ট দিতে তোমার এত ভাল লাগে কেন...?
তোমার মনে আছে, আমরা প্রথম যেদিন দেখা করেছিলাম। একটা খোলা মাঠের মাঝখানে, ঐদিন ছিল পূর্নিমা,একদিকে সূর্য লালিমা ছড়িয়ে বিদায় নিচ্ছিল আর অন্যদিকে চাঁদমামা হাসতে হাসতে যেন আমার ভালবাসার আগমনি বার্তা শোনাচ্ছিল। তুমি বলেছিলে এখন থেকে প্রতিবছর এই দিনে আমরা এখানে দেখা করবো। ছোট্ট একটি কথার এত শক্তি আমি বুঝিনি,যে আমি পৃথিবীর কারো কথা শুনি না মানি না,সেই আমি তোমার মুখ থেকে যেদিন ঐ কথাটা শুনেছিলাম সব কিছু কেমন যেন উল্টা-পাল্টা হয়ে গেল, আমার ছন্নছাড়া জীবনটা কেমন যেন গোছালো হয়ে গেল,আমিও এটাই চেয়েছিলাম কেউ যেন এসে তার মত করে আমার জীবনটাকে গুছিয়ে নেয়। তুমি প্রায়ই বলতে আমি নাকি অপরিণত (immature) একটা ছেলে,আমাকে নাকি তোমার পাশে বাচ্চা বাচ্চা লাগে এবং অনেক বোকা। আসলেই আমি অনেক বোকা এবং পাগলাটে টাইপের একটা ছেলে কিন্তু সেটা যে আমি কার জন্য হয়েছি এটা কি তুমি কখনো পরখ করে দেখেছ...?
আজ না আমার মনটা অনেক খারাপ,পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে এই জন্য না, আমার মা’এর জন্য। কত আশা করে বসে আছে,আমি পাস করে চাকরি পেয়ে আস্তে আস্তে তার দুঃখ দূর করবো, তার জন্য আমাকে আরো তিনমাস থাকতে হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই পরীক্ষাটার আগে বলেছিলে তোমাকে আর ফোন না দিতে, তোমার সাথে আর যোগাযোগ না করতে, তুমি মুক্তি চাও,তুমি পালাতে চাও। এই খারাপ রেজাল্টের জন্য আমি তোমাকে দোষ দিচ্ছি না। আমার জ্বর ছিল, তারও দোষ দিব না। আমিতো এমনিতেই পড়ালেখা করি না, তারপরেও ঐ পরীক্ষার আগে আরো বেশি পড়ার চেষ্টা করছি যেন খারাপ রেজাল্টের জন্য তোমার কোন দোষ না হয়। আমার হাতে তোমার জন্য যে দুই বছর সময় আছে তার থেকে আমার তিন মাস সময় কমে গেল। আমি আমার জীবন থেকে তিনমাস পিছিয়ে গেলাম। তুমি ভয় পেও না, আমি এই তিন মাস কঠোর পরিশ্রম দিয়ে পূরণ করে নিব,যেন তুমি আমার কাছে আসার পরে দুঃখ না করতে পার যে তোমার জন্য আমার জীবন থেকে তিনটা মাস হারিয়ে গেছে।
আজও আমি যখন ফেইসবুকে ঢুকি তোমার প্রোফাইল খুলে বসে থাকি। তুমি আমাকে তোমার ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে রিমুভ করেছ তাতে কি,তোমার প্রোফাইলের কিছুই দেখতে পারি না,কিন্তু নামটাও অন্তত দেখা যায়, তাও আমার দেখতে ভাল লাগে। তুমি যেসব পেজ দিয়ে ঘুরাঘুরি করতে আমি এখনো সেই পেজগুলোতে খুজে বেড়ায় তোমার কোন মন্তব্য, তোমার কোন লাইক আছে নাকি। প্রতিদিন কতবার যে তোমার মোবাইল নাম্বার লিখে সেন্ড বাটনে হাত দিয়ে বসে থাকি কিন্তু প্রেস করি না। বিশাল বিশাল মেসেজ লিখি মোবাইলে,ফেইসবুকে, লিখে আবার আস্তে আস্তে মুছেও ফেলি। সেন্ড করার অদম্য ইচ্ছা থাকা সত্বেও তুমি বিরক্তি বোধ করবে বলে আর সামনে এগোয় না।
তোমার স্মৃতি বলতে আমার সাথে তোমার বলা কথাগুলো,যা কানের কাছে সারাক্ষণ বাজতে থাকে, কম্পিউটারে কিছু ছবি আর আমার মোবাইলে রেকর্ড করা তোমার গাওয়া একটি রবীন্দ্রসংগীত আছে। তোমাকে বলতাম তোমার কথা না শুনলে রাতে আমার ঘুম আসে না,সকালে তোমার ফোন না পেলে আমার ঘুম ভাঙ্গে না, তাই তুমি প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোন দিতে আর আমাকে সকালে ঘুম থেকে তুলে দিতে। এখন ক্লাস নেই তাই সকালে উঠার তাড়া ও নেই তবুও খুব ইচ্ছা করে তোমার ফোনে যেন আমার ঘুম ভাঙ্গে। যখন মনটা অধিক ব্যাকুল হয়ে যায় তোমার সাথে কথা বলার জন্য,তোমার একটু কণ্ঠ্য শোনার জন্য তখন তোমার গাওয়া “আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যকুল” এই গানটা শুনি আর তোমার ছবিগুলো দেখি। তোমার কি মনে আছে গানটা তুমি আমাকে কবে গেয়ে শুনিয়েছিলে ? এখন মনে হয় তুমি ফেইসবুকে আরো অনেক নতুন ছবি আপলোড করছ, না? কতদিন হল তোমার কোন নতুন ছবি দেখি না। আচ্ছা তুমি কি আমার স্মৃতিগুলো সব নষ্ট করে ফেলেছ...?
হঠাৎ তুমি একদিন বললে-চল আমরা এক সপ্তাহ কথা না বলে থাকি। আমি বললাম- একদিন ও পারবো না। কিন্তু তোমার জোরাজুরিতে রাজি হলাম,আমার বিশ্বাস ছিল তুমিও একদিনের বেশি পারবে না,ঠিক তাই হল পরদিন রাতে আমাকে ফোন দিয়ে বললে আর পারছি না। অথচ দেখো এই কতদিন হয়ে গেল তুমি আমাকে ফোন দাও না। আমার না বিশ্বাস করতে অনেক কষ্ট হয়, একটা মানুষ এত সহজে কেমনে বদলে যায়...?
তুমি এই ভেবে কষ্ট পেও না যে আমি কষ্ট পাচ্ছি,তোমাকে পাওয়ার জন্য এর চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি। আর আমি ভালই আছি। তুমিও ভাল থেকো, ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া, পড়ালেখা করো। না এই চিঠিটা আমি তোমাকে পাঠাবো না, কত আজে বাজে প্যাচালে ভরা এত বড় একটা চিঠি দেখে তোমার মেজাজ খারাপ হবে। এই বিরক্তটুকুও তোমাকে করতে চায় না। চিঠিটা যেভাবে লিখছি সেভাবেই আমার ডায়েরীর পাতায় বন্ধী থাক। যদি জীবনে কোনদিন তোমাকে আপন করে পায়, তোমাকে দেয়া কথা রাখতে পারি সেইদিন প্রথম দেখাতেই তোমাকে তোমার অনেক চাওয়ার এই চিঠিটা উপহার স্বরূপ দিব। ততদিন আমার জন্য অপেক্ষা করবেতো পাগলী...?
উৎসর্গঃ সিলেটবাসী এক পাগলীকে……
লিখেছেন- ধুতু
হৃদি,
তুমি প্রায়ই বলতে,তোমাকে যেন আমি চিঠি লিখি। আমি বলতাম-আমি ভালবাসার চিঠি লিখতে পারি না,এই মোবাইল, ফেইসবুকের যুগে চিঠি লিখে আমি কি করব, তোমাকে দিব? না, তোমাকে দিব না,তুমি পড়লে হাসতে হাসতে মারা যাবে, অনেক বানান ভুল থাকবে সেগুলো ধরবে আর আমাকে পচাবে সুতরাং আমি চিঠি লিখবো না, মজা করে বলতাম-চলো মোবাইল ফেলে দিয়ে আমরা আগের যুগের মত চিঠি লিখে প্রেম করি। চিঠি লিখতে অস্মমতি জানালাম বলে আমার সাথে টানা দুইদিন কথা বললে না,এত অভিমানি কেন তুমি। নিজেও কষ্ট পেলে আমাকেও কষ্ট দিলে। তুমি আসলেই একটা পাগলী, কষ্ট পাবে তবুও আমাকে কষ্ট দিবে, ভালবাসার মানুষকে কষ্ট দিতে তোমার এত ভাল লাগে কেন...?
তোমার মনে আছে, আমরা প্রথম যেদিন দেখা করেছিলাম। একটা খোলা মাঠের মাঝখানে, ঐদিন ছিল পূর্নিমা,একদিকে সূর্য লালিমা ছড়িয়ে বিদায় নিচ্ছিল আর অন্যদিকে চাঁদমামা হাসতে হাসতে যেন আমার ভালবাসার আগমনি বার্তা শোনাচ্ছিল। তুমি বলেছিলে এখন থেকে প্রতিবছর এই দিনে আমরা এখানে দেখা করবো। ছোট্ট একটি কথার এত শক্তি আমি বুঝিনি,যে আমি পৃথিবীর কারো কথা শুনি না মানি না,সেই আমি তোমার মুখ থেকে যেদিন ঐ কথাটা শুনেছিলাম সব কিছু কেমন যেন উল্টা-পাল্টা হয়ে গেল, আমার ছন্নছাড়া জীবনটা কেমন যেন গোছালো হয়ে গেল,আমিও এটাই চেয়েছিলাম কেউ যেন এসে তার মত করে আমার জীবনটাকে গুছিয়ে নেয়। তুমি প্রায়ই বলতে আমি নাকি অপরিণত (immature) একটা ছেলে,আমাকে নাকি তোমার পাশে বাচ্চা বাচ্চা লাগে এবং অনেক বোকা। আসলেই আমি অনেক বোকা এবং পাগলাটে টাইপের একটা ছেলে কিন্তু সেটা যে আমি কার জন্য হয়েছি এটা কি তুমি কখনো পরখ করে দেখেছ...?
আজ না আমার মনটা অনেক খারাপ,পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে এই জন্য না, আমার মা’এর জন্য। কত আশা করে বসে আছে,আমি পাস করে চাকরি পেয়ে আস্তে আস্তে তার দুঃখ দূর করবো, তার জন্য আমাকে আরো তিনমাস থাকতে হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই পরীক্ষাটার আগে বলেছিলে তোমাকে আর ফোন না দিতে, তোমার সাথে আর যোগাযোগ না করতে, তুমি মুক্তি চাও,তুমি পালাতে চাও। এই খারাপ রেজাল্টের জন্য আমি তোমাকে দোষ দিচ্ছি না। আমার জ্বর ছিল, তারও দোষ দিব না। আমিতো এমনিতেই পড়ালেখা করি না, তারপরেও ঐ পরীক্ষার আগে আরো বেশি পড়ার চেষ্টা করছি যেন খারাপ রেজাল্টের জন্য তোমার কোন দোষ না হয়। আমার হাতে তোমার জন্য যে দুই বছর সময় আছে তার থেকে আমার তিন মাস সময় কমে গেল। আমি আমার জীবন থেকে তিনমাস পিছিয়ে গেলাম। তুমি ভয় পেও না, আমি এই তিন মাস কঠোর পরিশ্রম দিয়ে পূরণ করে নিব,যেন তুমি আমার কাছে আসার পরে দুঃখ না করতে পার যে তোমার জন্য আমার জীবন থেকে তিনটা মাস হারিয়ে গেছে।
আজও আমি যখন ফেইসবুকে ঢুকি তোমার প্রোফাইল খুলে বসে থাকি। তুমি আমাকে তোমার ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে রিমুভ করেছ তাতে কি,তোমার প্রোফাইলের কিছুই দেখতে পারি না,কিন্তু নামটাও অন্তত দেখা যায়, তাও আমার দেখতে ভাল লাগে। তুমি যেসব পেজ দিয়ে ঘুরাঘুরি করতে আমি এখনো সেই পেজগুলোতে খুজে বেড়ায় তোমার কোন মন্তব্য, তোমার কোন লাইক আছে নাকি। প্রতিদিন কতবার যে তোমার মোবাইল নাম্বার লিখে সেন্ড বাটনে হাত দিয়ে বসে থাকি কিন্তু প্রেস করি না। বিশাল বিশাল মেসেজ লিখি মোবাইলে,ফেইসবুকে, লিখে আবার আস্তে আস্তে মুছেও ফেলি। সেন্ড করার অদম্য ইচ্ছা থাকা সত্বেও তুমি বিরক্তি বোধ করবে বলে আর সামনে এগোয় না।
তোমার স্মৃতি বলতে আমার সাথে তোমার বলা কথাগুলো,যা কানের কাছে সারাক্ষণ বাজতে থাকে, কম্পিউটারে কিছু ছবি আর আমার মোবাইলে রেকর্ড করা তোমার গাওয়া একটি রবীন্দ্রসংগীত আছে। তোমাকে বলতাম তোমার কথা না শুনলে রাতে আমার ঘুম আসে না,সকালে তোমার ফোন না পেলে আমার ঘুম ভাঙ্গে না, তাই তুমি প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোন দিতে আর আমাকে সকালে ঘুম থেকে তুলে দিতে। এখন ক্লাস নেই তাই সকালে উঠার তাড়া ও নেই তবুও খুব ইচ্ছা করে তোমার ফোনে যেন আমার ঘুম ভাঙ্গে। যখন মনটা অধিক ব্যাকুল হয়ে যায় তোমার সাথে কথা বলার জন্য,তোমার একটু কণ্ঠ্য শোনার জন্য তখন তোমার গাওয়া “আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যকুল” এই গানটা শুনি আর তোমার ছবিগুলো দেখি। তোমার কি মনে আছে গানটা তুমি আমাকে কবে গেয়ে শুনিয়েছিলে ? এখন মনে হয় তুমি ফেইসবুকে আরো অনেক নতুন ছবি আপলোড করছ, না? কতদিন হল তোমার কোন নতুন ছবি দেখি না। আচ্ছা তুমি কি আমার স্মৃতিগুলো সব নষ্ট করে ফেলেছ...?
হঠাৎ তুমি একদিন বললে-চল আমরা এক সপ্তাহ কথা না বলে থাকি। আমি বললাম- একদিন ও পারবো না। কিন্তু তোমার জোরাজুরিতে রাজি হলাম,আমার বিশ্বাস ছিল তুমিও একদিনের বেশি পারবে না,ঠিক তাই হল পরদিন রাতে আমাকে ফোন দিয়ে বললে আর পারছি না। অথচ দেখো এই কতদিন হয়ে গেল তুমি আমাকে ফোন দাও না। আমার না বিশ্বাস করতে অনেক কষ্ট হয়, একটা মানুষ এত সহজে কেমনে বদলে যায়...?
তুমি এই ভেবে কষ্ট পেও না যে আমি কষ্ট পাচ্ছি,তোমাকে পাওয়ার জন্য এর চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট আমি সহ্য করতে পারি। আর আমি ভালই আছি। তুমিও ভাল থেকো, ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া, পড়ালেখা করো। না এই চিঠিটা আমি তোমাকে পাঠাবো না, কত আজে বাজে প্যাচালে ভরা এত বড় একটা চিঠি দেখে তোমার মেজাজ খারাপ হবে। এই বিরক্তটুকুও তোমাকে করতে চায় না। চিঠিটা যেভাবে লিখছি সেভাবেই আমার ডায়েরীর পাতায় বন্ধী থাক। যদি জীবনে কোনদিন তোমাকে আপন করে পায়, তোমাকে দেয়া কথা রাখতে পারি সেইদিন প্রথম দেখাতেই তোমাকে তোমার অনেক চাওয়ার এই চিঠিটা উপহার স্বরূপ দিব। ততদিন আমার জন্য অপেক্ষা করবেতো পাগলী...?
উৎসর্গঃ সিলেটবাসী এক পাগলীকে……
লিখেছেন- ধুতু