পহেলা
বৈশাখ প্রস্তুতি:
বাঘিনীর
গর্জন
কিভাবে
একাই লড়বেন বিশজনের সাথে?
পার্টঃ ০১
পহেলা
বৈশাখের প্রস্তুতি
প্রিয়
পাঠিকাগণ,
পহেলা
বৈশাখের সপ্তাহ দুয়েক আগে
কিছু কাজের জিনিস শিখিয়ে
দিই। বাংলাদেশের সমাজ যদি
চিনে থাকেন,
জেনে নিন,
ভীড়ের
মধ্যে আপনার শ্লীলতাহানী
করতে ইতোমধ্যেই তৈরি হচ্ছে
বরাহের দল। যখন এধরণের কিছুর
শিকার হবেন,
কেউ আপনাকে
সহায়তা করবেনা বলেই ধরে
রাখুন। কাউকে এগুলো বললে সে
বরং মনে মনে সুখ নেবে বিষয়টা
কল্পনা করে,
এটাই
বাস্তবতা।
সুখের
বিষয় হচ্ছে,
আপনার
কাউকে দরকারও নেই।
বাংলাদেশে
মেয়ে হয়ে জন্মানো মোটামুটি
আজন্ম পাপ,
আমি এমন
কোন মেয়েকে চিনিনা যে জীবনের
কোন এক পর্যায়ে যৌন হয়রানির
শিকার হয়নি। বড় ধরণের কিছু
না হলে কেউ ঝামেলার ভয়ে
থানাপুলিশ করতেও চায়না।
উপায়
একটাই, নিজের
ব্যবস্থা নিজের করে নেয়া।
শরীরে অপ্রীতিকর স্পর্শ
পাওয়ামাত্র বিনা দ্বিধায়
স্পর্শকারীকে কিভাবে পিটিয়ে
হালুয়া বানাবেন এই নিয়ে
আজকের পোস্ট।
মানব
শরীরে তিনটা দুর্বল জায়গা
যেখানে সামান্য আঘাতেই অতি
বড় পালোয়ানও কুপোকাৎ হয়ে
যেতে বাধ্য। এই তিনটা জায়গা
হচ্ছে চোখ,
অণ্ডকোষ
এবং কণ্ঠনালীর নীচের নরম
জায়গাটি। কয়েকটা ছবি দিচ্ছি
গুগল করে, এগুলো
দেখুন এবং আগামী দুই সপ্তাহ
বন্ধুবান্ধব/ভাইবোন
মিলে অনুশীলন করুন (অনুশীলনের
সময় সতর্ক থাকবেন যাতে দুর্ঘটনা
না ঘটে)।
হাত
মুঠ করে অণ্ডকোষে আঘাত করতে,
আঙুল
দিয়ে চোখে গুঁতো দিতে বা কনুই
দিয়ে পেছনে কারো তলপেটে আঘাত
করতে ব্রুস লী হওয়া লাগেনা,
লাগে
বাসার বালিশ নিয়ে কাজিনের
হাতে ধরিয়ে দিয়ে ওটার উপর
পাঁচবার অনুশীলন।
বাসায়
ভাই/বোন/বাবা/মা
আছেন না? তাঁদের
বলুন শক্ত করে বালিশ ধরে
দাঁড়াতে। যে জায়গায় আঘাত
করা অনুশীলন করবেন,
সে জায়গায়
বালিশ ধরতে বলুন যাতে আপনার
করা আঘাত বালিশে গিয়ে লাগে।
পুরো শক্তিতে মারবেন না প্রথমে,
আগে শিখুন
কিভাবে মারবেন। পাঁচবার
অনুশীলন করুন আস্তে,
তারপর
যিনি বালিশ ধরে আছেন তাঁকে
বলুন বালিশ যেন শরীর থেকে দূরে
ধরে( চাইলে
কোলবালিশ নিয়ে দেয়ালে ঠেস
দিয়েও অনুশীলন করতে পারেন,
তবে ভুলে
আবার দেয়ালে মেরে বসবেন না!)
সর্বশক্তিতে
আঘাত করা প্রাকটিস করুন।অতি
অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
আমি
রেকমেন্ড করছি নীচের পাঁচটি
মুভ:
এক)
কনুই
দিয়ে পেছনের বদমায়েশের
পেটে প্রচন্ড জোরে আঘাত।
দুই)
হাত দিয়ে
পেছনে দাঁড়ানো বদমায়েশের
অণ্ডকোষে আঘাত।
তিন)
হাতের
থাবা দিয়ে চোখ/নাকে
আঘাত।
চার)
অণ্ডকোষ/তলপেট
বরাবর হাঁটু দিয়ে আঘাত (শাড়ি
পরে লাত্থি মারাটা কঠিন।
জিন্স/পাজামা
হলে লাত্থি দিতে সুবিধা )
পাঁচ)
হাঁটু
বরাবর সজোরে লাত্থি (হাঁটু
উচ্চতায় বালিশ রেখে প্রাকটিস
করুন)
এই
মুভগুলো অথবা আপনার পছন্দ
হয় এরকম যে কোন মুভ গুগল/ইউটিউব
থেকে দেখে বাসায় এই দুই সপ্তাহ
অন্তত প্রতিদিন দশ মিনিট করে
প্রাকটিস করে নিন।
মনে
রাখবেন, একজন
সত্যিকারের পুরুষ কখনোই আপনার
বিনা অনুমতিতে মরে গেলেও
আপনাকে বাজেভাবে স্পর্শ
করবেনা। যারা এটা করে,
তারা
তেলাপোকারও অধম,
তার শরীরের
সাইজ যাই হোক না কেন। আপনার
সামান্য প্রতিরোধ,
একটুখানি
সাহস এই নর্দমার কীটগুলোর
হাত থেকে আপনাকে এবং সমাজকে
বাঁচাতে পারে।
নিজেকে
রক্ষা করতে যতটা দরকার,
সেটুকু
শক্তি প্রয়োগ করতে এক বিন্দু
দ্বিধা করবেন না। বাংলাদেশের(
বা ভারতের)
পেনাল
কোডের ধারা ১০০ গুগল করুন,
দেখবেন
আইন আপনার সাথেই আছে।
ভীড়ে
কেউ গায়ে হাত দিলে দয়া করে
চেপে যাবেন না। Be
Brave. Shout. Create a Scene. Fight Back.
মনে
রাখবেন, চুপ
থাকতে থাকতেই আজ এই অবস্থা।
Its time
to fight back!!!
(আর্টিকেলে
দুটো প্রশ্ন বার বার এসেছে,
উত্তরগুলো
সংযুক্ত করে দিলাম)
"একসাথে
অনেকে আসলে কি করব?
তখন কি
এইটা কাজে আসবে?"
- জ্বি,
আসবে।
হাতের কাছে যেইটারে পাবেন
ওইটারে দিয়ে শুরু করবেন।
তেলাপোকার দল একা আসলেই কি
একশ আসলেই কি,
একটারে
মাইর খেতে দেখলে বাকিগুলা
পলায়ে কুল পাবেনা। এদের
মাইন্ডসেট বুঝতে চেষ্টা করেন,
এরা আপনার
কাছ থেকে কোন প্রতিরোধ আশা
করবেনা। সারপ্রাইজ দেম। আরো
ভাল হয় যদি তিন চার জন একসাথে
থাকেন। ওরা দল বেঁধে আসলে
আপনিও দল বেঁধে প্রতিরোধ
করবেন।
"এত
ঝামেলা না করে পহেলা বৈশাখে
বের না হলেই তো হয়"
- না,
হয়না।
হায়েনার দল প্রতিটা জায়গায়
আছে, কয়
জায়গাতে যাওয়া বন্ধ করবেন?
ঈদের সময়,
বাংলাদেশের
খেলার সময়,
নববর্ষের
দিন, মার্কেটের
ভীড় এমনকি রাস্তার জ্যামে-
সব জায়গায়
এরা লোল ফেলে শিকার খুঁজে
বেড়ায়। বদমায়েশদের ভয়ে রাস্তায়
বের হওয়া যাবেনা এই ধারণার
সাথে নীতিগতভাবে আমি তীব্র
দ্বিমত পোষণ করি। আজকে আপনি
এদের ভয়ে ঘরে থাকবেন,
কালকে
এরা ঘরে ঢুকে আপনাকে ছিঁড়ে
খাবে। ইট হ্যাজ টু স্টপ ইন দা
বিগিনিং।
পার্টঃ ০২
পহেলা
বৈশাখ প্রস্তুতি-
রাইজ অফ
দা টাইগ্রেসেস
প্রিয়
পাঠিকাবৃন্দ,
গত
পহেলা বৈশাখে যৌন হয়রানির
যে ন্যাক্কারজনক ঘটনাগুলো
ঘটেছে, সেগুলো
প্রতিহত করে সগর্বে কিভাবে
মাথা তুলে দাঁড়াবেন,
এই নিয়ে
এ লেখাটি। গতকালকের লেখায়
প্রাথমিক ধারণা দিয়েছিলাম,
আজ বিস্তারিত
লিখছি।
পুলিশ
একাডেমিতে আলফা কোম্পানির
ড্রিল প্রশিক্ষক আকবর ওস্তাদ
একটা জিনিস শিখিয়েছিলেন-
"স্যার,
আপনি এসপি
হন আর আইজি হন,
মনে রাখবেন,
আপনার
বডিগার্ড সবার আগে আপনি নিজে"
এই
কথাটা শুধু পুলিশ না,
প্রত্যেকের
জন্যে প্রযোজ্য। বাংলাদেশের
মেয়েদের মূল সমস্যা তাদের
সক্ষমতায় নয়,
মাইন্ডসেটে।
বছরের পর বছর সমাজের ভুল
কন্ডিশনিং এর ফলে একটা মেয়ে
নিজেকে দুর্বল ভাবতে শেখে,
আর এর
সুযোগ নেয় হায়েনার দল।
আমাদের মেয়েরা খুব ভালোভাবেই
সক্ষম নিজেকে রক্ষা করতে,
শুধু
প্রয়োজন মাইন্ডসেট পাল্টানো।
এই
লক্ষ্যেই গতকাল এবং আজকের
লেখা।
প্রথমে
আসি গতকালকের সবচাইতে কমন
প্রশ্নে। দল বেঁধে বিশজন
একসাথে আপনাকে টার্গেট করলে
কি করবেন এই প্রশ্নটা অনেকেই
করেছেন। আমি worst
case scenario এর
কথা লিখছি,
ধরুন আপনি
একা আর ওরা বিশ জন।
জেনারেল
আইজেনহাওয়ারের একটা কথা
আছে: Its
not the size of the dog, its the size of the fight in the dog that
matters most.
বিপদের
মুখে আপনি কতটা এ্যাগ্রেসিভ
এটাই আপনার পরিণতি ঠিক করে
দেবে। আমি বার বার একটা জিনিস
বলি, আপনারা
criminal
mindset মিস
করছেন। ভীড়ের মধ্যে একটা
মেয়ের গায়ে হাত দিয়ে যৌনসুখ
পায় কোন ধরণের পুরুষ?
যে পুরুষের
সাহস নেই সুস্থ্য,
ভদ্রোচিত
উপায়ে একটা মেয়েকে প্রপোজ
করার। এই কুকর্মটি করতে যার
আবার দল বেঁধে যেতে হয়,
এরা রাস্তার
নেড়ি কুকুরের চাইতেও ভীতু,
কুকুর
তো তবু দূরে গিয়ে হলেও হাঁকডাক
দেয়। এদের একটাই অস্ত্র-
আপনি
প্রতিবাদ না করে চেপে যাবেন
এই বিশ্বাসটুকু।
Dear
Sister, don't give the bastard the pleasure.
যে
মুহুর্তে বুঝলেন কেউ আপনাকে
বাজেভাবে স্পর্শ করছে,
raise hell around you.
Scream at the top of your voice.
আগে
থেকেই সতর্ক থাকুন কে করতে
পারে আশেপাশে,
তারপর
আপনার গায়ে হাত দেয়ামাত্র
ধরে ফেলুন। যদি দশ পনের জন
একসাথে আসে,
সবচেয়ে
কাছে যেটাকে পাবেন ওটাকে দিয়ে
শুরু করুন। Go
completely insane.
কোথায়
কোথায় আঘাত করবেন বলে দেই:
চোখ:
হাতের
পাঁচ আঙুল দিয়ে থাবা বানিয়ে
সর্বশক্তিতে গুঁতো দিন
নাক:
হাতের
তালু এবং কবজির সংযোগস্থল
দিয়ে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা
দিন
অন্ডকোষ:
লাত্থি
মারুন, হাত
দিয়ে সজোরে বাড়ি দিন।
হাঁটু:
লাত্থি
দিন যে কোন দিক দিয়ে
গলা:
হাতটাকে
ছুরির মত বানিয়ে প্রচন্ড
জোরে আঘাত করুন।
ছবিতে
বিস্তারিত দেখানো আছে,
দেখুন।
মনে
রাখবেন, নিজেকে
রক্ষা করার পূর্ণ আইনগত অধিকার
আপনার আছে(
পেনাল
কোড ধারা একশ দেখুন)।
যে মুহূর্তে আক্রান্ত হচ্ছেন,
মানবতা
সভ্যতা ইত্যাদি ভুলে যান।
এমন ধোলাই দিন যেন আর এ জীবনে
কোন মেয়ের গায়ে হাত দেবার
কথা দু:স্বপ্নেও
না ভাবে।
আমার
প্রশিক্ষক তমাল ভাই একটা মজার
ঘটনা শেয়ার করেছেন। তাঁর এক
ছাত্রী এরকম একসাথে দশ বারোজনের
আক্রমনের শিকার হল। একটুও
ভয় না পেয়ে সে রাস্তা থেকে
একটা থান ইঁট তুলে নিয়ে চিৎকার
করে বলল, "আয়,
কে আগে
মরতে চাস আয়"।
মেয়েটির আক্রমণাত্মক মনোভাব
দেখে সব কয়টা সুড়সুড় করে
দৌড়!
আড়ালে
আবডালে হাত দিয়ে স্পর্শসুখ
নিতে চাওয়া কাপুরুষ থান ইঁটের
বাড়ি খেতে চাইবেনা-
এই সহজ
সরল সত্যটা মনে রাখতে পারলেই
আপনি নিজেই বুঝবেন কি করতে
হবে।
চুলের
কাঁটা, সেফটিপিন,
আলপিন,
চোখা
পেনসিল- এগুলো
দারুণ অস্ত্র বদমায়েশদের
সাইজ দেবার। এগুলো কিছুই যদি
না থাকে, দাঁত
আর নখ তো আছে,
তাইনা?
কামড়
দিয়ে গায়ের মাংসসুদ্ধো
তুলে নিন, নখ
দিয়ে আঁচড়ে ছিন্নভিন্ন করে
দিন মুখমন্ডলের চামড়া।
When
you're attacked, DO NOT be civil. Be wild. Make the bastard realize
that he messed with the wrong girl.
এবার
নীচের বিষয়গুলো মাথায় রাখুন:
এক)
মানসিক
প্রস্তুতি নিন যে আপনার উপর
আক্রমণ হতে পারে। ভীড়ে অসতর্ক
থাকবেন না,
চারপাশে
ঘন ঘন নজর রাখুন। আপনার ঘন ঘন
নজর রাখা অনেক পটেনশিয়াল
বদমাশকে দূরে রাখবে
দুই)
একসাথে
চার পাঁচজন দল বেঁধে চলুন।
যখন আক্রান্ত হবেন,
অন্তত:
একজন যেন
দৌড়ে গিয়ে আশেপাশের লোক
জড়ো করতে পারেন এটা মাথায়
রাখবেন। নিজেরা নিজেরা আলোচনা
করুন কে কি করবেন। ইটস অল এবাউট
টিমওয়ার্ক।
তিন)
হ্যারাসমেন্টের
ভয়ে ঘরে বসে থাকাটা কোন সমাধান
না। দুদিন পর এরা আপনার ঘরে
ঢুকে আক্রমণ করবে যদি আজ আপনি
এদের প্রশ্রয় দেন।
চার)
আপনার
"ইজ্জত"
এত সস্তা
না যে কেউ গায়ে হাত দিলে তা
চলে যাবে। বরং এই অন্যায়ের
প্রতিবাদ না করলে মানুষ হিসেবে
আপনি নিজেই নিজের সম্মান
বিকিয়ে দিলেন।
পাঁচ)
"সমাজের"
কথায়
পাত্তা দেবেন না। যেই সমাজ
সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের
শিকার মেয়েটাকেই উল্টো বলে
যে তার চলন বলন ঠিক নেই,
সেই সমাজ
একটা অপরাধী,
হারামীমার্কা
সমাজ। এর না আছে আপনাকে রক্ষা
করার ক্ষমতা,
না আছে
আপনার দিকে আঙুল তোলার অধিকার।
আমি
চাই এই পহেলা বৈশাখে বাংলার
বাঘিনীরা জেগে উঠুক,
আমার
ইনবক্স ভরে যাক এই জেগে ওঠা
বাঘিনীদের প্রতিবাদ গর্জনের
গল্পে।
শেষ
করছি রুডিয়ার্ড কীপলিং এর
কবিতার প্রথম চার লাইন দিয়ে:
WHEN the
Himalayan peasant meets the he-bear in his pride,
He shouts
to scare the monster, who will often turn aside.
But the
she-bear thus accosted rends the peasant tooth and nail.
For the
female of the species is more deadly than the male.
প্রিয়
পাঠিকা, জেনে
রাখুন, যে
কোন প্রজাতিতেই নারীটি পুরুষের
চাইতে অনেক বেশি ভয়ংকর।
শেষ হোক আপনাকে দমিয়ে রাখার
দিন, আজই,
এ মুহুর্ত
থেকে।
পার্টঃ ০৩
পহেলা
বৈশাখ প্রস্তুতি:
বাঘিনীর
গর্জন
কিভাবে
একাই লড়বেন বিশজনের সাথে?
প্রিয়
পাঠিকাবৃন্দ,
গত
দুই পর্বে পহেলা বৈশাখে যৌন
হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে বেসিক
মাইন্ডসেট এবং আত্মরক্ষা
কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকে
শেষ পর্ব, এবং
এতে আলোচনা করব কিভাবে আপনি
একাধিক আক্রমনকারীকে প্রতিহত
করবেন।
আমি
যে সেল্ফ ডিফেন্স সিস্টেমের
(Krav
Maga) ছাত্র,
এতে
ক্রাউড ফাইটিং এর একটা মজার
জিনিস শেখানো হয়। আপনার একেবারে
কাছে মাত্র চারজন আপনার শরীরে
আক্রমণ করতে পারে চারদিক থেকে।
নিজের শরীরের চারপাশে এই
চারজনের হাত থেকে যদি নিজেকে
রক্ষা করতে পারেন,
এই একই
সিস্টেমে যতজনই আসুক পিটিয়ে
সোজা করতে পারবেন।
এবার
একটা অতি জরুরী কথা বলি। আপনি
যখন আক্রান্ত,
আপনার
মূল উদ্দেশ্য নিরাপদে ওখান
থেকে বেরিয়ে আসা,
এবং এজন্যে
যা যা প্রয়োজন সব আপনি করবেন।
একটা পালানোর পথ বের করে ওখান
দিয়ে আপনাকে বেরিয়ে যেতে হবে,
বিশজনকে
একাই পেটানো আপনার মূল উদ্দেশ্য
নয়। কাজেই,
কৌশলগতভাবে
মাত্র দু তিনজনকে আঘাত করেই
আপনি বিপদ কাটাতে পারবেন যদি
মাথা একটু ঠান্ডা থাকে।
ক্রাভ
মাগা ইন্সট্রাকটর তমাল ভাইয়ের
সাথে কথা বলে এবং উইকিহাউ(wikiHow)
আর্টিকেল
এর সাথে নিজের ক্রাউড কনট্রোল
এক্সপেরিয়েন্স মিশিয়ে আপনাদের
জন্যে একটা বেসিক গাইডলাইন
আমি তৈরি করেছি। এর একটা
Achronym
দিয়েছি:"পহেলা
বৈশাখ"।
#প
মানে প্রস্তুতি। প্রিপারেশন
ইজ এভরিথিং। এর দুটো ধাপ আছে,
মানসিক
এবং শারীরিক। মানসিকভাবে
প্রস্তুত থাকুন যে আপনার উপর
আক্রমন হবেই,
এবং মনে
মনে ঠিক করুন কিভাবে আপনি
আপনার কৌশল সাজাবেন। একসাথে
তিন চারজন মিলে যান,
নিজেরা
আলাপ করুন আগে থেকেই। একটা
জায়গায় ঢোকার আগে বিপদ এলে
কোন জায়গায় সবার আগে দৌড়ে
যাবেন এটা মাথায় রাখুন। শারীরিক
প্রস্তুতি হিসেবে এ লেখার
প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে দেখানো
কৌশলগুলো বাসায় নিজে নিজে
অনুশীলন করুন। মাত্র দশ মিনিট
অনুশীলন লাইফ এ্যান্ড ডেথ
পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
অস্ত্র হিসেবে চোখা পেনসিল,
রুটি
বেলার ছোট বেলন,
সেফটিপিন,
পয়সা ভরা
ছোট ব্যাগ এগুলো সাথে রাখুন,
বিপদে
যাতে ব্যবহার করতে পারেন।
#হে
মানে হেলাফেলা না করা। বিপদ
হলে হবে অন্য কারো,
আমার
কিছু হবেনা-
এই হেলাফেলা
করেছেন কি মরেছেন। এই যে উপরের
প্যারায় অস্ত্র সাথে রাখতে
বললাম, জানি,
নব্বই
পারসেন্ট পাঠিকা এটা পাত্তাও
দেবেন না। আগের দু পর্বে বাসায়
যে অনুশীলনের কথা বলেছি এটা
নিরানব্বই পারসেন্ট পাঠিকা
দিনে মাত্র দশ মিনিট সময় ব্যয়
করে এক দুবার অনুশীলনটুকু
করবেন না। আপনারা প্রসাধনীর
পেছনে যতটা সময় ব্যয় করেন ,
প্রতিদিন
তার একটা অতি ক্ষুদ্র অংশ যদি
আজ থেকে পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত
হেলাফেলা না করে অনুশীলনে
ব্যয় করেন ,
কোন বদমায়েশ
আপনার হাত থেকে পালাতে পারবেনা।
এই বকাটুকু আপনাকে খোঁচা দিতে
নয়, একজন
ভাই হিসেবে আপনার ভেতরের
ফাইটিং স্পিরিট জাগিয়ে তুলতে
দায়িত্ব নিয়েই দিলাম। আমার
এ লেখা যদি মাত্র একজন মেয়েকে
অনুপ্রাণিত করে নিজেকে রক্ষা
করতে,
I will consider all my effort successful.
#লা
মানে লাত্থি। আক্রমণকারী
দলের পালের গোদা যেটা,
ওটার কাছে
এগিয়ে গিয়ে সরাসরি তার অন্ডকোষ
বা হাঁটুতে প্রচন্ড জোরে
লাত্থি মারুন। দশ বারোজনের
দলে যে বদমায়েশকে দেখবেন সবার
আগে আপনাকে নিয়ে বাজে কমেন্ট
করছে, নিজেই
এগিয়ে গিয়ে স্ট্রেইট লাত্থি
মারুন। লাত্থির সাথে আঁচড়,
কামড়,
রুটি
বেলার বেলনের বাড়ি,
সেফটিপিনের
খোঁচা ইত্যাদি যা যা আছে সব
প্রয়োগ করুন। নাক বরাবর ঘুষি,
চোখে আঙুল
চালানো, গলা
বরাবর হাত দিয়ে কারাটে চপ-
বিনা
দ্বিধায় সর্বশক্তিতে চালিয়ে
দিন। পিটিয়ে লাশ বানান আপনার
উপর আক্রমণ করা কাপুরুষগুলোকে,
যাতে
বাপের জন্মে আর এ কাজ কোন মেয়ের
সাথে না করে। Once
you attack, go all out.
#বৈ
মানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
নিজেকে অবলা নারী না ভেবে,
অসহায়
ভিকটিম মনে না করে এই সমাজে
বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার একজন
এজেন্ট হিসেবে ভাবুন। মনে
রাখবেন, এই
নষ্ট সমাজ চায় আপনাকে দমিয়ে
রেখে ডমিনেট করতে,
এবং কেউ
আপনার প্রতিবাদ দেখতে চায়না।
ভাল "ম্যারেজ
ম্যাটেরিয়াল",
"সুইট
ওয়াইফ থিংগি"
না হয়ে
ওই বেপরোয়া ডানপিটে মেয়েটি
হোন যে কিনা সমাজের চাপিয়ে
দেয়া "ভাল
মেয়ের"
সংজ্ঞাকে
পায়ে ছুঁড়ে দিয়েছে। সব অন্যায়
মেনে নিয়ে ম্যারেজ ম্যাটেরিয়াল
না হয়ে একজন আত্মমর্যাদাশীল,
প্রতিবাদী
মানুষ হয়ে উঠুন। এই পহেলা
বৈশাখে বখাটেদের উপর আপনার
এক একটা থাপ্পড় হোক সমাজের
মুখে এক একটা কুঠারাঘাত। যে
কৌশলগুলো শেখালাম,
তার দু
একটা বরাদ্দ রাখুন সেই সব
বদমায়েশগুলোর জন্য যারা পাশে
দাঁড়িয়ে কুমন্তব্য করবে।
#শা
মানে শারীরিক সক্ষমতা। এমন
কোন পোশাক পরবেন না যেটা পরে
আক্রমন প্রতিহত করা অসুবিধাজনক।
একটা কথা স্পষ্টভাবে বলি,
এর মানে
এই না যে কোন অবস্থাতেই আমি
নারীর প্রতি আক্রমণকে তার
পোশাক দিয়ে জায়েজ করছি। Even
if a girl is stark naked, still she is NOT asking for it. আমার
কথার মানে হল,
কিছু
পোশাক আছে যেগুলো পরে লাত্থি
মারা বা দৌড়ানো অসুবিধাজনক।
আপনার জন্য কোন পোশাক সুবিধাজনক
এটা আপনিই ভাল বলতে পারবেন।
আমার মা যেমন শাড়ি পরেই দৌড়ঝাঁপ
সব করতে পারেন,
ছোট বোনটা
পরে জিন্স,
ফতুয়া
বা কামিজ। নতুন জুতো পরে বৈশাখি
মেলায় গিয়ে দেখলেন হাঁটতেই
পারছেন না,
এমন যেন
না হয়। Do
not wear anything that will limit your physical movement.
#খ
মানে খবরদারি। দয়া করে নিজের
উপর কাউকে খবরদারি করতে দেবেন
না। বিশেষ করে "কি
দরকার অনুষ্ঠানে যাওয়ার"
টাইপ
কথাবার্তা শুনে কোন অবস্থাতেই
দমে যাবেন না। "I
am the master of my fate, I am the captain of my soul"-
ইনভিক্টাস
কবিতার এই দুলাইন মর্মমূলে
গেঁথে নিন। আমি বার বার এই
মাইন্ডসেটের কথা বলছি কারণ
আপনার মাইন্ডসেট যদি ঠিক থাকে,
কতজন
আক্রমণ করল সেটা কোন ব্যাপার
না।
উপরে
যা যা বললাম তার সারমর্ম মানা:
প
তে প্রস্তুতি
হে
তে হেলাফেলা না করা
লা
তে লাত্থি দেয়া
বৈ
তে বৈপ্লবিক পরিবর্তন
শা
তে শারীরিক সক্ষমতা
খ
তে খবরদারি না মানা
জানি,
নিরানব্বই
ভাগ পাঠিকাই এ লেখাটা পাত্তা
দেবেন না, দিলেও
বড়জোর ওই পড়া পর্যন্তই,
অনুশীলনটুকু
আর করবেন না।
তাও,
এমন একজন
বাঘিনীও কি নেই যিনি এই তিন
পর্বের লেখা কাজে লাগিয়ে অন্তত
একজন যৌন নিপীড়ককে শায়েস্তা
করবেন? এই
পহেলা বৈশাখে অন্তত একটা
দুর্ঘটনা ঠেকাবেন?
কোন
এক বোনের ভাই হিসেবে,
কোন এক
মায়ের সন্তান হিসেবে,
গরিব
দেশের ততোধিক গরীব একজন পুলিশ
অফিসার হিসেবে প্রশ্ন রেখে
গেলাম।
N.B.:
This writing has been written by Mashroof Hossain
(facebook.com/mashroof.hossain.3)
Since he
has explicitly said to share, I haven't asked again for the
permission to share. All credit goes to him apart from some editing
(addition of photos) by me. The whole article has been written by him
in three parts; I tried to keep them in a single place.