Wednesday, April 28, 2021

রাসূল সাঃ যেভাবে গোসল করতেন।

 

রাসূল সাঃ যেভাবে গোসল করতেন।
‌----------------------------------------------------
পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো গোসল।
আর যদি তা হয় রাসূল সাঃ এর শেখানো পদ্ধতিতে
তবে নিঃসন্দেহে তা হবে একটি ইবাদত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।
🔹গোসল সাধারণত দুই ধরণের হতে পারে:
▪নূন্যতম বা জায়েয পদ্ধতি,
▪পরিপূর্ণ পদ্ধতি।
🔸জায়েজ পদ্ধতি হলো শুধুমাত্র ফরজ গুলো আদায় করা,সূন্নাত-মুস্তাহাব আদায় না করা।
🔸আর পরিপূর্ণ পদ্ধতি হলো যেভাবে রাসূল সাঃ বলেছেন, শিখিয়েছেন অর্থাৎ ফরজ, সূন্নাত ও মুস্তাহাব সহ আদায় করা এবং মাকরূহ গুলো বর্জন করে গোসল করা।
🔹গোসলের পদ্ধতি দুটি।
▪ফরজ গোসলের পদ্ধতি
▪সূন্নাত/গোসলের পূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি।
🔸 ফরজ গোসলের পদ্ধতি হলো-
প্রথমে উভয় হাত ধুয়ে নেবেন।
তারপর বাম হাতের উপর পানি ঢেলে দেহের নাপাকী ধুয়ে ফেলে বাম হাতকে মাটি অথবা সাবান দ্বারা ধুয়ে নেবে। এরপর (ফরজ হিসেবে) গড়গড়ার সাথে কুলি করবে,নাকের ভেতরের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌঁছাতে হবে এরপর সমস্ত শরীরে পানি প্রবাহিত করবে। এতটুকু করলে ফরজ আদায় হয়ে যাবে এবং পবিত্রতা অর্জন হয়ে যাবে। (বুখারী-২৬০)
🔸সূন্নাত/পূর্নাঙ্গ পদ্ধতি হলো-
নবী সাঃ যেভাবে গোসল করতেন সেভাবে গোসল করাকে বলে সূন্নাত গোসল।
ওযু ও গোসলের সময় বিস্‌মিল্লাহ্‌ পড়া মুস্তাহাব।।কেউ কেউ ওয়াজিবও বলেছেন।
যে ব্যক্তি অপবিত্রতা থেকে গোসল করতে চায় তিনি তার হাতের কব্জিদ্বয় ধৌত করবেন। এরপর বাম হাতের উপর পানি ঢেলে দেহের নাপাকী ধুয়ে ফেলবেন। তারপর বাম হাতকে মাটি অথবা সাবান দ্বারা ধুয়ে নেবেন।
এরপর নামাযের জন্য ওযু করার মত পূর্ণ ওযু করবেন। যদি গোসলের যায়গাটি পবিত্র না হয় তবে গোসল শেষে পবিত্র জায়গায় গিয়ে উভয় পা ধুয়ে নেবেন।
কখনো রাসূল সাঃ আঙ্গুল দিয়ে মাথার চুলে খিলাল করতেন,(মুসলিম)। যদি কারো চুল ঘন হয় তাদের এটা করা উত্তম।
এরপর মাথার উপর তিনবার পানি ঢালবেন যাতে মাথায় চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছায়। এরপর শরীরের অবশিষ্টাংশ তিন বার ধৌত করবেন। প্রথমে ডান দিকে তিন বার এরপর বাম দিকে তিন বার পানি ঢালতেন।(বুখারী)। হযরত আয়েশা রাঃ বলেন- যতক্ষণ না তিনি নিশ্চিত হতেন যে তাঁর সম্পূর্ণ শরীরে পানি পৌঁছেছে ততক্ষণ তিনি পানি ঢালতেন। (বুখারী,মুসলিম,মিশকাত)
▪ নারী পুরুষের গোসলের পদ্ধতি একই। তবে নারী চুলের খোঁপা/বেনী না খুলে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছালেই যথেষ্ট হবে তবে সম্পূর্ণ চুল ধোয়া উত্তম।( বুখারী,মিশকাত)
▪নখ পালিশ থাকলে তা তুলতে হবে, না হয় ফরজ গোসল আদাশ হবে না।
▪গোসলের পর নামাজের জন্য নতুন অযুর প্রয়োজন নেই। এতেই সালাত পড়তে পারবেন। (আবু দাউদ,তিরমিজি)
▪ সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে গোসল করা যাবে না।
«مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلَا يَدْخُلِ الحَمَّامَ بِغَيْرِ إِزَارٍ،
নাবী সাঃ বলেন- আল্লাহ তা’আলা ও পরকালের প্রতি যে লোক ঈমান রাখে সে যেন লুঙ্গি পরিহিত অবস্থা ছাড়া গোসলখানায় প্রবেশ না করে [তিরমিজী]।
▪গোসলের সময় পানি অপচয় করা যাবেনা। রাসূল সাঃ খুব অল্প পানি দিয়ে গোসল করতেন। (বুখারী)
كَانَ يَغْتَسِلُ ـ بِالصَّاعِ إِلَى خَمْسَةِ أَمْدَادٍ، وَيَتَوَضَّأُ بِالْمُدِّ‏.‏
▪ হায়েস থেকে পবিত্র হওয়ার গোসলে রাসূল সাঃ বড়ই পাতা দিয়ে গোসল করতে বলতেন।
▪রাসূল সাঃ ও তাঁর স্ত্রীদের কেউ কেউ একই সাথে একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করেছেন। (বুখারী)

ইসলাম ও বিনোদন

 May be an image of text that says 'ইসলাম বিনোদন'

 

প্রশ্ন-১ঃ বিনোদনের ব্যাপারে ইসলামের কি অভিমত? ইসলাম কি আদৌ তার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে?
উত্তরঃ ইসলাম চির সবুজ কল্যাণময়ী একটি জীবন বিধান। যা কিছু ধর্মীয় আচার-আচরণে সীমাবদ্ধ নয়। বরং তা মানুষের সামগ্রিক জীবনকে ব্যপ্ত করে আছে। ইসলাম মানব জীবনের মৌলিক ও অমৌলিক সব ধরনের চাহিদা পূরণ করেছে। মানুষের ছোটো ছোটো প্রয়োজনগুলোকেও গুরুত্ব দিয়ে তাকে একটি গতিশীল জীবনের দীক্ষা দিয়েছে। যা আনন্দ-ফূর্তি ও প্রাণের সজীবতায় উজ্জ্বল। ইসলামে নৈরাশ্যবাদ ও বৈরাগ্যবাদের কোন স্থান নেই। ইসলামে নৈরাশ্যবাদ ও বৈরাগ্যবাদের কোন স্থান নেই। ইসলাম নীরস কাঠখোট্টা জীবনকে প্রশ্রয় দেয় না। সে মানুষকে একটি প্রাণবন্ত মসৃণ জীবনের পথ দেখায়। যেখানে মানুষ প্রয়োজনীয় ও উপকারী বিনোদন রসের আমদানি করে জীবনকে আনন্দময় ও কর্মমুখর করে তুলতে পারে।
ক) বিনোদনের ইসলামী সংজ্ঞা ঃ
বিনোদন বলতে এমন কিছু ক্ষতিমুক্ত কর্মকান্ডকে বুঝায় যা কোন ব্যক্তি, দল বা শ্রেণী স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইসলামী নিয়মনীতির উপর ভিত্তি করে আপন আপন সময়ে মানব মনের ভারসাম্যতাও একঘেয়েমীভাব কাটানোর জন্য পালন করে থাকে।
খ) বিনোদন জায়েজ হওয়ার ক্ষেত্রে শরিয়তের দলিল ঃ
♻ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, "তোমরা খেলাধুলা ও আনন্দ করো। কেননা আমি তোমাদের ধর্মে কঠোরতা অপছন্দ করি।" [কানযুল উম্মাল : ৪০৬১৬]
♻ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, "কখনো কখনো মনকে আনন্দ দান করো।" [আহকামুল কুরআন ]
♻ আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, "আল্লাহর শপথ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার কক্ষের দরজায় দাড়ানো দেখেছি, যখন আবিসিনিয়ার লোকগণ আল্লাহর রাসূলের মসজিদে তাদের যুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে খেলছিলো। তিনি আমাকে তার চাদর দিয়ে ঢেকে রাখছিলেন যাতে তাদের দিকে তাকাতে পারি। তারপর আমার জন্য আবস্থান করতেই থাকতেন যতক্ষণনা আমি নিজ থেকে ফিরে যেতে না চাইতাম।" [মুসলিম : ৮৯২]
♻ ইবনে মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, "তোমরা মনগুলোকে আনন্দ দাও, কেননা মন যখন বিরক্ত হয় তখন অন্ধ হয়ে যায়।" [বাহজাতুল মাজালিস, ইবনে আব্দুল বার]
♻ উমর ইবনে আব্দুল আজীজ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, "মুসলমান খেলাধুলা, তামাসা, হাসি ঠাট্টা করবে এটা দোষের ব্যাপার নয়। তবে এটা যেনো তার অভ্যাস চরিত্র ও প্রকৃতিতে পরিণত না হয়ে যায়। কারণ তখন সে কঠোরতার স্থানে ছাড় দেবে আর কাজের সময় বেহুদা কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে পড়বে।
প্রশ্ন-২ঃ শরীয়ত মোতাবেক ইসলামে বিনোদনের স্থায়ী নিয়মনীতিগুলো কি কি?
উত্তরঃ
১। বিনোদনের মূল হলো জায়েজ হওয়াঃ
এর প্রমাণ আবু দারদা (রাদিআল্লাহু আনহু) বর্ণিত হাদীস, তিনি বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, " আল্লাহ তাঁর কিতাবে যা হালাল করেছেন তা হালাল, আর যা হারাম করেছে তা হারাম। আর যে সমস্ত ব্যাপারে তিনি চুপ থেকেছেন তাতে রয়েছে ছাড়। সুতরাং তোমরা তাঁর ছাড় গ্রহণ কর। কেননা, আল্লাহ কোন কিছু ভোলেননা।" [মুস্তাদরাকে হাকেম : ২/৩৭৫]
২। বিনোদন হলো মাধ্যম, তা উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য নয়ঃ
বিনোদন মানব জীবনের বিভিন্ন অংশের ভারসাম্য আনয়নের মাধ্যম৷ কোন এক দিকের ভারসাম্যতা ক্ষুন্ন হলে বিনোদনের মাধ্যমে সে অংশের পরিপূর্ণতা লাভের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হয়। কিন্তু যদি এ সীমা লঙ্ঘন করা হয় এবং বিনোদনই লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যে পরিণত হয়ে যায় তখন তার হুকুম মাকরুহ বা হারামে পরিণত হয়।
এর দ্বারা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, কোন কোন বিনোদন যখন পেশায় পরিণত হয় তখন তা হালাল বা বৈধতা থেকে হারাম বা মাকরুহের পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
৩। বিনোদনমূলক কর্মকান্ডে অবশ্যই শরীয়ত বিরোধীতা বর্জন করতে হবেঃ
এ নীতি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর কিছু নমুনা পেশ করা হলো ঃ
ক) এমন বিনোদন না করা যাতে অন্যের প্রতি ঠাট্টা-বিদ্রুপ আছে, বা তাদের প্রতি ভয় প্রদর্শন করা হয়, বা কারো সম্পদ নষ্ট করা হয়।
খ) এমন বিনোদন না করা যাতে অপর মানুষের কথায় বা কাজে, শারিরীক বা আর্থিক অথবা মানসিকভাবে কষ্ট দেয়া হয়।
গ) এমন বিনোদন পরিত্যাগ করতে হবে যাতে মিথ্যাচার ও অপবাদ রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "ঐ লোকের ধ্বংস হোক যে ব্যক্তি লোক হাসানের জন্য মিথ্যা বলে, তার ধ্বংস হোক, তার ধ্বংস হোক।"
ঘ) এমন বিনোদন না করা যাতে খুব বেশি হাসতে হয়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "আর তোমরা বেশি বেশি হাসবেনা, কেননা তা মনকে মৃত্যু দেয়।"
ঙ) এমন বিনোদন যাতে না হয় যাতে গান-বাজনা রয়েছে৷ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "আমার উম্মতের মধ্যে কিছু লোক এমন হবে যারা ব্যভিচার, রেশমী (সিল্ক), মদ ও গান বাদ্য হালাল করতে চাইবে।" [বুখারী : ৫৫৯০]
চ) এমন প্রতিযোগিতা না করা যাতে সরাসরি হারাম যন্ত্রপাতি (দাবা, হারাম গান-বাজনা ইত্যাদি) ব্যবহার করতে হয়।
ছ) বান্দার প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি কথা ও কাজ হবে আল্লাহর স্মরণ ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিঃশর্ত আনুগত্যে ভরপুর। প্রবৃত্তির তাড়নায় সে কোন কাজ করতে পারে না। এই দৃষ্টি কোন থেকে ইসলাম যে শিল্প-সাহিত্য ও বিনোদন মানুষকে ধর্মের আনুগত্য থেকে বের করে বল্গাহীন জীবনের পথে ধাবিত করে তা থেকে বারণ করে।
কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, "একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে। এবং তা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে। তাদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।" [সূরা লোকমান : ৬]
বর্তমানে আমরা বিনোদনের বড় দুইটা মধ্যম হিসেবে নি গান শোনা, মুভি, সিরিয়াল/নাটক ইত্যাদি দেখা৷ ইসলামে বিনোদনের সুযোগ দিলেও গান-বাদ্য, মুভি, নাটক দেখা কতটুকু জায়েজ?
প্রশ্ন-৩ঃ গান শোনা কি হারাম?
উত্তরঃ ইসলাম মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতির সুস্থতার স্বার্থেই গান-বাজনাকে নিষিদ্ধ করেছে। গান-বাজনা যেমন আমাদের পরকাল ভুলিয়ে দেয় তেমনি বাস্তুজগতকেও দেয় ডুবিয়ে। এ গানের মাধ্যমে দূর্বল নৈতিকতাসম্পন্ন লোকেরা বিশেষত তরুণ প্রজন্ম অবৈধ প্রেম ও লৌকিক ভালোবাসার প্রতি উদ্ধুদ্ধ হয়। গান-বাজনার ভূমিকা এই পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। যারা এ গান-বাজনায় পুরোপুরি অভ্যস্ত হয়ে যায়, তাদের কাছে পবিত্র কুরআনের মোহনীয় তিলাওয়াত কিংবা হৃদয়ছোঁয়া সুর সুন্দর জীবনের প্রতি আহবানকারী ইসলামী নাশীদ ভালো লাগে না।
শায়খুল ইসলাম ইমাম আহমদ ইবনে তাইমিয়াাহ (রাহিমাহুল্লাহ) গান-বাজনার ব্যাপারে অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, "গায়ক বা গায়িকা যখন গান গায় তখন রোগগ্রস্ত অন্তর অশ্লীল মহব্বতের দিকে ধাবিত হয়। সেই সময় তার মনের অসুখ বৃদ্ধি পেয়ে তাকে বিপদগ্রস্ত করে তোলে। যদি তা থেকে মন পবিত্রও থাকে তবু গান-বাজনা মনকে অসুস্থ করে দেয়। এজন্য পূর্ববর্তী অনেক আলেম বলতেন, 'গান ব্যভিচারের মন্ত্র'। [মজমুয়াহ আল ফাতওয়া, ইবনে তাইমিয়া, খন্ড ১৫, পৃষ্ঠা ৩১৩]
➤ গান-বাজনা হারাম হওয়ার ব্যাপারে শরীয়তের দলীল ঃ
♻ আবু মালিক আল আশ'আরী (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মতের কিছু লোক মাদকদ্রব্য সেবন করবে এবং এর নাম পরিবর্তন করে অন্য কিছু রাখবে। তাদের মাথার উপরে বাজনা বাজানো হবে এবং গায়িকার গান পরিবেশন করবে। আল্লাহ তা'আলা এদেরকে মাটিতে ধ্বসিয়ে দিবেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ৪৯৯ পৃষ্ঠা, ৩য় খন্ড]
♻ আবু উমামা (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, " আল্লাহ আমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত ও পথপ্রদর্শক হিসেবে পাঠিয়েছেন। আমার প্রতিপালক আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমি যেনো গান-বাজনার যন্ত্রপাতি নিশ্চিহৃ করে দি। আর আমি যেনো দেবদেবীর মূর্তি, ক্রুশ এবং যাবতীয় অনৈসলামিক জিনিস বিলুপ্ত করে দিই। এসবের বেচা-কেনা শিক্ষা দেয়া অবৈধ। এসবের ব্যবসা করা যাবে না। এসবের মূল্য হারাম।" [মুসনাদে আহমদ, ২য় খন্ড, ১২৫ পৃষ্ঠা ]
♻ আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদিআল্লাহু আনহু) গানের প্রতিটি বাক্যকেই মাকরূহ মনে করতেন। তিনি বলতেন, "গান অন্তরে নিফাক (মুনাফেকি) সৃষ্টি করে, যেভাবে পানি ফসল উৎপাদন করে "।
♻ প্রখ্যাত তাবেয়ী শা'বী (রাহিমাহুল্লাহ) যারা গান শুনে এবং যারা গান গায় তাদের প্রত্যেককে অভিসম্পাত দিতেন। বলতেন, 'গায়ক, গায়িকা এবং শ্রোতা সবাইকে লা'নত। [তালবিস ইবলীস, ইবনে আল জাওমী]
প্রশ্ন-৪ঃ মুভি, সিরিয়াল ইত্যাদি দেখা কি জায়েজ?
উত্তরঃ নাটক, সিনেমা, সিরিয়াল, ভিডিও, ডকুমেন্টারী ইত্যাদি যেখানে হারাম ও অনৈতিক কার্যাবলী যেমন হারাম প্রেম-ভালোবাসার আবেগী প্রকাশ, হাত-ধরাধরি, নাচানাচি, লিভ-টুগেদার, অশ্লীল কথা ও বাদ্য বাজনা সংবলিত গান ইত্যাদি দেখা ও শোনা অবশ্যম্ভাবীভাবে হারাম। যে সমস্ত নাটক, মুভি এই সমস্ত হারাম বিষয়াদী থেকে মুক্ত সেগুলো দেখা জায়েজ।
মুসলিম ব্যক্তিসত্তা ও মুসলিম উম্মাহর উপর অশ্লীল নাটক, মুভি, সিরিয়ালের যে ঈমান বিধ্বংসী প্রভাবগুলো পড়ে তা হলো ঃ
১। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে অবৈধ কামনা-বাসনার উদ্রেক।
২। মুসলিম সমাজে অনৈতিকতার প্রসার। এর অন্যতম কারণ এই মুভিগুলো অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে তৈরি করা হয় এবং একে অত্যন্ত সহজলভ্য বানিয়ে দেয়া হয়েছে।
৩। Crime শিক্ষা দেয়, একে যুবক-বৃদ্ধ সকলের কাছে অত্যন্ত যুক্তিসংগত করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, হিন্দি সিরয়ালগুলো পরকীয়া, পারিবারিক কলহ ও কুতনামীকে অত্যন্ত স্বাভাবিক, যুক্তিসংগত ও আকর্ষনীয়ভাবে উপস্থাপন করছে।
৪। বিবাহিত জীবনে ভাংগন ও দাম্পত্য জীবনে অনৈতিকতার প্রবেশ। টিভিতে আকর্ষণীয় নারীদের দেখে স্বামীর কাছে স্ত্রীকে বা স্ত্রীর কাছে স্বামীকে অনাকর্ষনীয় ও নোংরা মনে হতে লাগে। ফলস্বরূপ একজন আরেকজনের প্রতি আকর্ষণ হারিয়্ব ফেলে এবং স্বাভাবিকভাবে পরকীয়ার সুত্রপাত ঘটে।
৫। বিভিন্ন কুফরি ও শিরকী মতবাদ, বিশ্বাস ও থিউরীর প্রসার, যেমন থিওরী অব ইভোলিউশন, ডারউননিজম, নাস্তিক্যবাদ, ফ্যান্টাসি ও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীভিত্তিক মুভিতে মানুষকে আল্লাহর ক্ষমতা ও গুণাবলী দান করা হয়, জাদুবিদ্যাকে প্রপোগেট করা, ধর্ম, ধর্মীয় পোশাক, আআচার-আচরণকে কটাক্ষ করা৷ (যেমন বাংলাদেশের বহুল আলোচিত মাটির ময়না ছবিটি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে কটাক্ষ করে তৈরি করা।) ইত্যাদি।
৬। ক্রমাগত নাটক, মুভি দেখা মানুষেরা বাস্তবতা বিবর্জিত এক অবাস্তব ও মোহের জগতে বাস করে।
৭। হলিউড-বলিউড ইত্যাদি মুভিতে দেখানো নারীদের নগ্ন দেহ, অশ্লীল ও খোলামেলা দৃশ্যগুলো মুসলিম তরুণদের মাঝে প্রবল ফিতনার সৃষ্টি করছে। তরুণেরা এইসব নগ্ন দৃশ্য দেখার পর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। নিজেদের কামনা-বাসনে পুরণের জন্য অবৈধ পথ ও পন্থা খুঁজতে শুরু করে।
৮। নারীরা যখন টিভিটে আকর্ষণীয় নন-মাহরাম পুরুষদের এবং হারাম আবেগী সম্পর্কগুলো দেখতে থাকে তখন তাদের মন তাদেরকে হারাম সম্পর্কে উদ্ধুদ্ধ করে। তাছাড়া আকর্ষণীয় মুখাবয়ব ও ফিগারের নায়িকাদের তাদের রুপ-সৌন্দর্য, ফ্যাশন ইত্যাদি নিজেদের ভিতর ধারণ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে যা তাদের ফরজ পর্দা লংঘন করে বেপর্দা চলতে উৎসাহিত করে। [Source : The Evil Consequences of Watching Movies, Fatwa No 85232 : Islamic Question and Answer, Shaykh Muhammad Salih Al Munajjid]
চিত্ত বিনোদনের আর একটি জন্মপ্রিয় মাধ্যম আমাদের কাছে ইলেকট্রনিক বিভিন্ন গেইম। কিন্তু এই গেইমগুলো খেলা কতটুকু বৈধ?
প্রশ্ন-৫ঃ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গেইম নিজে খেলা কিংবা শিশুদেরকে খেলতে দেয়ার বিধান কি?
উত্তরঃ যে কেউ এ গেইমগুলোর প্রতি নজর দিলে দেখতে পাবেন যে, এ গেইমগুলো মানসিক দক্ষতা ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে।
এ গেইমগুলো নানা ধরণ ও প্রকৃতির হয়ে থাকে: কোন কোন গেইম আছে কল্পনিক যুদ্ধের; যে গেইমের মাধ্যমে একই ধরণের (বাস্তব) পরিস্থিতিতে কী করণীয় সে প্রশিক্ষণ রয়েছে। কোন কোন গেইমে থাকে– বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সতর্ক প্রস্তুতি, শত্রুর সাথে লড়াই, টার্গেটকে ধ্বংস করা, পরিকল্পনা তৈরী করা, দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা, গোলকধাঁধা থেকে বের হওয়া, হিংস্র জানোয়ার থেকে পলায়ন, বিমান চালানো প্রতিযোগিতা, গাড়ী বা অন্য যানবাহন চালানো প্রতিযোগিতা, নানা প্রতিবন্ধকতা থেকে উত্তরণ, গুপ্তধন অনুসন্ধান। কিছু কিছু গেইম আছে যেগুলো সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধি করে ও মনোযোগ বাড়ায়; যেমন- কিছু জিনিস খুলে সেগুলো অন্য কোথাও স্থাপন করা, বিচ্ছিন্ন ছবিগুলো একত্রিত করা, কোন কিছু নির্মাণ করা, রঙ করা, ভরাট করা ও লাইটিং করা।
শরয়ি বিধান:
ইসলাম বৈধ উপায়-উপকরণের মাধ্যমে চিত্ত বিনোদন ও বৈধ আনন্দ করতে বাধা দেয় না। এসব গেইমের মূলবিধান হচ্ছে- বৈধতা; যদি না এগুলো কোন ফরয আমল থেকে ব্যক্তিকে বিরত না রাখে; যেমন- নামায আদায়, পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার এবং যদি না এগুলোতে হারাম কোন বিষয় না থাকে। অবশ্য এ ধরণের গেইমগুলোতে হারাম বিষয় কতই বেশি; যেমন-
- যে গেইমগুলোতে ভাল পক্ষ হিসেবে পৃথিবীবাসী ও দুষ্ট প্রতিপক্ষ হিসেবে আকাশবাসীর মাঝে যুদ্ধ চিত্রায়িত করা হয়। এর মধ্যে আল্লাহ্‌র প্রতি অপবাদ কিংবা সম্মানিত ফেরেশতাগণের প্রতি দোষারোপ এর দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।
- যে গেইমগুলো ক্রুশকে পবিত্র বিবেচনা করার ভিত্তিতে নির্মিত। ক্রুশের উপর দিয়ে পথ অতিক্রম করলে স্বাস্থ্য ও শক্তি অর্জিত হয়, কিংবা আত্মা ফিরিয়ে দেয়া হয় কিংবা খেলোয়াড়ের আত্মার সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হয় ইত্যাদি। অনুরূপভাবে যে গেইমগুলোতে খ্রিস্টমাসের উৎসবের কার্ড ডিজাইন করা হয়।
- যে গেইমগুলোতে যাদুটোনার স্বীকৃতি প্রতি রয়েছে কিংবা যাদুকরকে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
- যে গেইমগুলো ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়ে নির্মিত। যেমন- এক গেইমে আছে মক্কার ওপর বোমা নিক্ষেপ করলে ১০০ পয়েন্ট, বাগদাদের উপর বোমা নিক্ষেপ করলে ৫০ পয়েন্ট।
- যে গেইমগুলোতে কাফেরদেরকে সম্মানিত হিসেবে উপস্থাপন করা হয় এবং তাদেরকে নিয়ে গর্ববোধ করার তালিম দেয়া হয়। যেমন এক গেইমে আছে খেলোয়াড় যদি কাফের রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী নির্বাচন করে তাহলে সে শক্তিশালী হয়। আর যদি কোন আরব রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী নির্বাচন করে তাহলে সে দুর্বল হয়। অনুরূপভাবে যেসব গেইমে শিশুদেরকে কাফেরদের স্পোর্টিং ক্লাব ও কাফের খেলোয়াড়দের দ্বারা অভিভুত হওয়ার তালিম দেয়া হয়।
- যেসব গেইমে নগ্ন চিত্রায়ন রয়েছে। কিছু কিছু গেইমে জয়ী হওয়ার পুরস্কার হচ্ছে- একটি নগ্ন ছবি। অনুরূপভাবে যেসব গেইমে চারিত্রিক ব্যুহকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। উদাহরণত যেসব গেইমের থিম হচ্ছে প্রেমিকা, প্রণয়িনী কিংবা বান্ধবীকে দুষ্ট লোকের হাত থেকে কিংবা ড্রাগনের হাত থেকে রক্ষা করা।
- যেসব গেইমের থিম হচ্ছে- লটারী ও জুয়া খেলা।
- যেসব গেইমে রয়েছে মিউজিক। ইসলামি শরিয়তে মিউজিক হারাম হওয়া সুবিদিত।
- এসব গেইম খেলায় রয়েছে শারীরিক ক্ষতি। যেমন, চোখের ক্ষতি কিংবা স্নায়ুর ক্ষতি। অনুরূপভাবে ক্ষতিকর সাউন্ড ইফেক্টের মাধ্যমে কানের ক্ষতি। আধুনিক গবেষণায় সাব্যস্ত হয়েছে যে, এ গেইমগুলো নেশাগ্রস্ত করে, স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে, শিশুদের মাঝে উত্তেজনা ও স্নায়ুবিক চাপ সৃষ্টি করে।
- এসব গেইম সহিংসতা ও অপরাধ শিক্ষা দেয়। হত্যা ও প্রাণ বদ করাকে সহজ করে ফেলে। যেমনটি রয়েছে- প্রসিদ্ধ Doom নামক গেইমে।
- শিশুকে কল্পনার রাজ্য ও অসম্ভব কিছু করার তালিম দেয়ার মাধ্যমে শিশুর বাস্তবতার জ্ঞানকে নষ্ট করে ফেলা। যেমন- মৃত্যুর পর আবার ফিরে আসা, অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতা বাস্তবে যার অস্তিত্ব নেই, মহাকাশের বিভিন্ন জীব বা এলিয়েনের চিত্রায়ন ইত্যাদি।
আকিদা-বিশ্বাসের উপর এসব গেইমের ঝুঁকি ও শরয়ি বিধান লঙ্ঘনের উদাহরণ নিয়ে আমরা একটু দীর্ঘ আলোচনা করলাম। কারণ অনেক পিতামাতা এসব বিষয়ে সচেতন নয়। ফলে তারা তাদের সন্তানদের জন্য এগুলোর ব্যবস্থা করে দেন এবং এগুলোর মাধ্যমে তাদেরকে বিনোদন দিতে চান।
আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা দরকার সেটা হচ্ছে- এ গেইমগুলো খেলার ক্ষেত্রে বিনিময় নিয়ে প্রতিযোগিতা করা নাজায়েয; এমনকি সে গেইমটি খেলা জায়েয হলেও। কেননা এসব গেইম জিহাদের উপকরণ নয়। এগুলো খেলার মাধ্যমে কেউ জিহাদ করার শক্তিও অর্জন করবে না।
[সূত্র: ড. সাদ আল-শাছরি লিখিত ‘আল-মুসাবাকাত ওয়া আহকামুহা ফিস শারিয়াতিল ইসলামিয়্যা’]
➤ বর্তমান অবস্থায় সচেতন বিবেকের দাবীঃ
মানবজীবনে জাহেলী রীতি-নীতি তখনই অবাধে বিস্তার লাভের সুযোগ পায় যখন সুস্থ চর্চা রুদ্ধ বা বন্ধ হয়ে যায়। হারাম বিনোদনের উপকরণ ও পথভ্রাষ্টতা থেকে বাঁচানোর জন্য আমাদের এই মুহুর্তে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
১। ইসলামী সাংস্কৃতির আন্দোলনকে জোরদার করে এ ব্যাপারে ব্যপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা।
২। সংগীত, সাহিত্য, চলচিত্র, কাব্যচর্চা প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই স্বতন্ত্র ইসলামী ধারা সৃষ্টি করতে হবে এবং এই ক্ষেত্রগুলোতে তাকওয়া ও স্ব স্ব ক্ষেত্রে যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি করা যেতে পারে।
৩। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ও World Class quality সম্পন্ন চলচ্চিত্র তৈরির যোগ্যোতাসম্পন্ন ইসলামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলা। মনে রাখতে হবে, চলচ্চিত্র একটি জাতির পূর্ণাঙ্গ জাতিসত্তা ও স্বাতন্ত্র্যবোধকে প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা রাখে। তাই আমাদের এমন প্রশিক্ষিত ও তাকওয়াসম্পন্ন পপরিচালক প্রয়োজন যারা মুসলিম জাতির ঈমান, আকীদা, ইতিহাস, স্বাতন্ত্র্যবোধ ইত্যাদিকে চলচ্চিত্রের পূর্ণাঙ্গরুপে ফুটিয়ে তোলার যোগ্যতা রাখবেন এবং এই চলচ্চিত্রগুলোর আধুনিক প্রজন্মকে আকর্ষণ করার সক্ষমতা থাকবে।
৪। সর্বোপরি মেধাবী মুসলিম তরুণদের বিনোদন জগতে একটি স্বতন্ত্র ইসলামী ধারা তৈরির দৃঢ় আকাঙ্খা ও ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এগিয়ে আশাটা সময়ের সুদৃঢ় দাবী।
তথ্যসূত্রঃ
১। ইসলাম ও বিনোদন, ডঃ আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া।
২। আসুন গান-বাজনা থেকে তওবা করি, লেখক ঃ আলী হাসান মুহাম্মদ।
৩। ইসলামের দৃষ্টিতে গান-বাজনা, লেখকঃ মুহাম্মদ খলীলুর রহমান, প্রকাশকঃ গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার।
৪। Islamic Question and Answer, Shaykh Muhammad Salih Al Munajjid
||ইসলাম ও বিনোদন||
~ জেবা ফারিহা