রাসূল সাঃ যেভাবে গোসল করতেন।
----------------------------------------------------
পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো গোসল।
আর যদি তা হয় রাসূল সাঃ এর শেখানো পদ্ধতিতে
তবে নিঃসন্দেহে তা হবে একটি ইবাদত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।
গোসল সাধারণত দুই ধরণের হতে পারে:
নূন্যতম বা জায়েয পদ্ধতি,
পরিপূর্ণ পদ্ধতি।
জায়েজ পদ্ধতি হলো শুধুমাত্র ফরজ গুলো আদায় করা,সূন্নাত-মুস্তাহাব আদায় না করা।
আর পরিপূর্ণ পদ্ধতি হলো যেভাবে রাসূল সাঃ বলেছেন, শিখিয়েছেন অর্থাৎ ফরজ, সূন্নাত ও মুস্তাহাব সহ আদায় করা এবং মাকরূহ গুলো বর্জন করে গোসল করা।
গোসলের পদ্ধতি দুটি।
ফরজ গোসলের পদ্ধতি
সূন্নাত/গোসলের পূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি।
ফরজ গোসলের পদ্ধতি হলো-
প্রথমে উভয় হাত ধুয়ে নেবেন।
তারপর বাম হাতের উপর পানি ঢেলে দেহের নাপাকী ধুয়ে ফেলে বাম হাতকে মাটি অথবা সাবান দ্বারা ধুয়ে নেবে। এরপর (ফরজ হিসেবে) গড়গড়ার সাথে কুলি করবে,নাকের ভেতরের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌঁছাতে হবে এরপর সমস্ত শরীরে পানি প্রবাহিত করবে। এতটুকু করলে ফরজ আদায় হয়ে যাবে এবং পবিত্রতা অর্জন হয়ে যাবে। (বুখারী-২৬০)
সূন্নাত/পূর্নাঙ্গ পদ্ধতি হলো-
নবী সাঃ যেভাবে গোসল করতেন সেভাবে গোসল করাকে বলে সূন্নাত গোসল।
ওযু ও গোসলের সময় বিস্মিল্লাহ্ পড়া মুস্তাহাব।।কেউ কেউ ওয়াজিবও বলেছেন।
যে ব্যক্তি অপবিত্রতা থেকে গোসল করতে চায় তিনি তার হাতের কব্জিদ্বয় ধৌত করবেন। এরপর বাম হাতের উপর পানি ঢেলে দেহের নাপাকী ধুয়ে ফেলবেন। তারপর বাম হাতকে মাটি অথবা সাবান দ্বারা ধুয়ে নেবেন।
এরপর নামাযের জন্য ওযু করার মত পূর্ণ ওযু করবেন। যদি গোসলের যায়গাটি পবিত্র না হয় তবে গোসল শেষে পবিত্র জায়গায় গিয়ে উভয় পা ধুয়ে নেবেন।
কখনো রাসূল সাঃ আঙ্গুল দিয়ে মাথার চুলে খিলাল করতেন,(মুসলিম)। যদি কারো চুল ঘন হয় তাদের এটা করা উত্তম।
এরপর মাথার উপর তিনবার পানি ঢালবেন যাতে মাথায় চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছায়। এরপর শরীরের অবশিষ্টাংশ তিন বার ধৌত করবেন। প্রথমে ডান দিকে তিন বার এরপর বাম দিকে তিন বার পানি ঢালতেন।(বুখারী)। হযরত আয়েশা রাঃ বলেন- যতক্ষণ না তিনি নিশ্চিত হতেন যে তাঁর সম্পূর্ণ শরীরে পানি পৌঁছেছে ততক্ষণ তিনি পানি ঢালতেন। (বুখারী,মুসলিম,মিশকাত)
নারী পুরুষের গোসলের পদ্ধতি একই। তবে নারী চুলের খোঁপা/বেনী না খুলে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছালেই যথেষ্ট হবে তবে সম্পূর্ণ চুল ধোয়া উত্তম।( বুখারী,মিশকাত)
নখ পালিশ থাকলে তা তুলতে হবে, না হয় ফরজ গোসল আদাশ হবে না।
গোসলের পর নামাজের জন্য নতুন অযুর প্রয়োজন নেই। এতেই সালাত পড়তে পারবেন। (আবু দাউদ,তিরমিজি)
সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে গোসল করা যাবে না।
«مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَاليَوْمِ الآخِرِ فَلَا يَدْخُلِ الحَمَّامَ بِغَيْرِ إِزَارٍ،
নাবী সাঃ বলেন- আল্লাহ তা’আলা ও পরকালের প্রতি যে লোক ঈমান রাখে সে যেন লুঙ্গি পরিহিত অবস্থা ছাড়া গোসলখানায় প্রবেশ না করে [তিরমিজী]।
গোসলের সময় পানি অপচয় করা যাবেনা। রাসূল সাঃ খুব অল্প পানি দিয়ে গোসল করতেন। (বুখারী)
كَانَ يَغْتَسِلُ ـ بِالصَّاعِ إِلَى خَمْسَةِ أَمْدَادٍ، وَيَتَوَضَّأُ بِالْمُدِّ.
হায়েস থেকে পবিত্র হওয়ার গোসলে রাসূল সাঃ বড়ই পাতা দিয়ে গোসল করতে বলতেন।
রাসূল সাঃ ও তাঁর স্ত্রীদের কেউ কেউ একই সাথে একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করেছেন। (বুখারী)
No comments:
Post a Comment