আজকাল বিভিন্ন ইসলামিক নাম আমাদের হাসি তামাশার খোরাক হয়ে উঠেছে। একজন মুসলিম হয়ে ও অজ্ঞতার বশবর্তী হয়ে এই গোনাহর কাজ করেই চলেছি।
আসুন দেখি এর কিছু উদাহরণ
মোখলেস:
টিভিরেডিওতে প্রাণ ম্যাঙ্গো ক্যান্ডির এই নামটিকে ফান হিসেবে দেখা হয়। এমনকি যাদের নাম মোখলেস তারাও এই নাম নিয়ে বেশ বিপদে পড়তে হয়। আমরা কি কখনো চিন্তা করে দেখেছি এর নামের অর্থ কি? মোখলেস নামটি আরবি এখলাস শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ একনিষ্ঠভাবে এবাদত করা।আল্লাহর নিকট ইখলাস ছাড়া কোন আমলই গ্রহণযোগ্য নয় আর সেই নামকেই আমরা ফান বানিয়েছি?
মফিস :
এটি একটি আরবি নাম যার অর্থ সফলকাম হওয়া। সাধারণত পরকালের সফলতা বুঝাইতেই শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা কে না চাই পরকালে সফল হতে? তবে কেন ম্যাজিক টুথ পাউডারের কল্যাণে এই নাম নিয়ে ঠাট্টা করি। পরকালের সফলতা নিয়ে যদি ঠাট্টা করি তবে কি আসলেই আমরা পরকালে সফল হতে পারবো?
আবুল :
এই নাম নিয়ে সবচেয়ে বেশি ফান করা হয়।আমরা কি এই নামের মাহাত্ম্য জানি? আমাদের নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপনাম আবুল কাসেম। যার অর্থ হল "কাশেমের পিতা " ভাবুন কি নিয়ে ফাজলামি করছি। যেখানে তার নামকে সম্মান করা দরকার ছিলো সেখানে আমরা তাঁকে নিয়ে ব্যঙ্গ করছি। আফসোস।
কুদ্দুস
সর্বাধিক ফান করা হয় এই নামটি নিয়ে। অথচ আল্লাহর একটি গুনবাচক নাম যার অর্থ "মহাপবিত্র " কেউ যদি কাউকে শুধু কুদ্দুস বলে তবে তার পাপ হবে। কারণ এটি সিফাতী নাৃ বলতে হবে আব্দুল কুদ্দুস। চিন্তা করে দেখুন আমরা আল্লাহর নাম নিয়েও রসিকতা করছি। আমাদের ঈমানের অবস্থা কেমন?
মমিন
আসলে এর শুদ্ধ উচ্চারণ হবে মুমিন। একজন পূর্ণাঙ্গ ঈমানদারকেই মুমিন বলে। কিন্তু দেখুন ফেসবুকসহ বিভিন্ন স্থানে "কস কি মমিন " বলে নামটিকে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে এবার বলুন আর কি নিয়ে আমাদের ফান করা বাকি আছে?আমরা কি একটু সচেতন হতে পারি না?
আর সবশেষে,
কুরআন মাজীদে একটি আয়াত দিয়ে শেষ করতে চাই,
তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না, কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাকে মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তাওবা না করে তারাই জালেম (সূরা হুজরাত আয়াত ১১)
আল্লাহ আমাদের সহি বুজ দান করুন।
This is not a blog only-you will get almost everything helpful, educational materials and so on here with the passage of time.
Wednesday, April 28, 2021
নাম নিয়ে কথা
আমার_ঘুম_আমার_ইবাদাত
একটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন— প্রতিদিন যদি আমরা আট ঘন্টা করেও ঘুমাই তবে এর অর্থ হবে আমাদের জীবনের এক তৃতীয়াংশ ঘুমের মধ্যেই অতিবাহিত হয়ে যায়৷ যদিও ঘুম মৃত্যুর মতোই৷ ঘুমের ঘোরে চোখ বন্ধ করে থাকি যখন আমরা দুনিয়া থেকে বেখবর হয়ে যাই৷ তবু, জীবদ্দশায় আমাদের ঘুম এটা তো আমার জীবনেরই অংশ৷ আল্লাহ তায়ালা যে কেয়ামতের দিন আমার জীবনের হিসাব নিবেন তখন কি এই দৈনন্দিন আট ঘন্টা ঘুমিয়ে কাটালাম তার হিসাব চাইবেন না! অবশ্যই চাইবেন৷ জীবনের প্রতিটি প্রশ্বাসের, প্রতিটি মুহূর্তের হিসাব তিনি চাইবেন৷
প্রখ্যাত সাহাবি মুআজ ইবনে জাবাল একদিন বলছেন আবু মুসা আশয়ারি রাদিয়াল্লাহু আনহুমকে— আমি তো আমার ঘুম থেকেও সওয়াবের আশা রাখি৷ যেমন সওয়াবের প্রত্যাশা করি আমার নামাজ, আমার রোজা ও আমার তাবৎ ইবাদাত থেকে৷
(আসসালাতু ওয়াত তাহাজ্জুদ)
সুবহানাল্লাহ৷ আমরা তো মনে করি আমাদের ঘুম কেবল শরীরের ক্লান্তি নিবারক৷ দিনের যত শ্রান্তি তা দূর করবার জন্যে আমি বিছানার বুকে এলিয়ে দিই আমার দেহ৷ ঘুম আমার কাছে কেবলই একটা মেডিসিনের মতো: যা আমার শরীরে এনার্জি ফিরিয়ে দেয়৷
কিন্তু সাবাহায়ে কেরাম দেখেন ঘুমকে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করতেন৷ তাদের কাছে ঘুম কেবলই ক্লান্তি নিবারক নয়৷ সেটা তো আছেই৷ ঘুম তো ক্লান্তি দূর করবেই৷ “আর আমি নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি নিবারণকারী” (সূরা নাবা) কিন্তু তারা এটাকে ইবাদাতও মনে করতেন৷
কেন?
কিভাবে তাঁরা ঘুমের মতোন একটা আবশ্যিক মানবিক কাজকে ইবাদাত ভাবছেন! তাঁরা ভাবতে পারছেন— কারণ তাঁদের ঘুমটাও যে ছিল কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী৷ তাঁদের সামনে ছিল নবিজীর ঘুমের চিত্র৷ তাঁরা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো ঘুমের বেলাতে এসেও ফলো করতেন নবিজীকে৷ এবং পূর্ণ মাত্রায়৷ তাই তাঁরা বলতে পেরেছেন— আমাদের ঘুম আমাদের ইবাদাত৷ বিনিময়ে তাঁরা হয়ে উঠেছেন মুমিনের আইডল৷ ইমান পরিমাপের মাপকাঠি৷
তোমরা ইমান আনো যেমন ইমান এনেছে মানুষেরা (সাহাবায়ে কেরাম)
(সুরা বাকারা)
এখন আমাদের ঘুমকে ইবাদাতের অংশ করবার জন্যে প্রথমেই আমাদের জানতে হবে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিভাবে ঘুমোতেন৷ ঘুমোবার পূর্বে আরও কি কি প্রাসঙ্গিক কাজ করতেন৷ এবং এটাও আমাদের জন্যে জেনে নেয়া প্রয়োজন— ঘুম থেকে জেগেই বা নবিজী কী করতেন!
এসব কিছু জেনে নিজেদের জীবনে যদি তার বাস্তবায়ন ঘটাতে পারি তবে আমার হৃদয়ও আমাকে বলবে— তোমার ঘুম থেকে তুমি সওয়াবের আশা করতে পারো৷
ক্রমশ...
Subscribe to:
Posts (Atom)