This is not a blog only-you will get almost everything helpful, educational materials and so on here with the passage of time.
জানাযার সালাত সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর
▬▬▬▬▬▬
প্রশ্ন:
ক. আমি একজন সাধারণ মানুষ। ইসলাম সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না। আরবিতে
কুরআন পড়তে পারি না। জানাযার দুআও জানি না। আমি কি জানাযার সালাত আদায় করতে
পারব? এবং কিভাবে তা আদায় করব?
খ.কোন ব্যক্তি কি নিজের মৃত পিতা, মাতা, ভাই, বোন-স্ত্রী সন্তানের জানাযায় নিজেই ইমামের দায়িত্ব পালন করতে পারে?
গ. লোক মুখে শোনা যায় যে, “মৃত ব্যক্তির রক্ত সম্পর্কিত কেউ জানাযা দিলে তার সওয়াব বেশি হয়।” এ কথাটা কি সঠিক?
উত্তর:
কুরআন শিক্ষা করা ফরযে আইন- কমপক্ষে সালাত শুদ্ধ হওয়ার পরিমাণ। তাই যে কোন
ইমাম, হাফেয বা আলেমের নিকট কুরআন পড়া শিখে নিন। সালাতের বিধি-বিধান, দুআ ও
তাসবীহগুলো শিখার চেষ্টা করুন। দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য
ফরযে আইন। এ ক্ষেত্রে অলসতা ও অবহেলা করলে ফরয লঙ্ঘনের কারণে গুনাহগার হতে
হবে।
আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমীন।
জানাযার সালাতের পদ্ধতি খুবই সহজ:
যেমন-
- ১ম তাকবীরের পর সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
পাঠ করা। (সূরা ফাতিহা বাদ দিয়ে সানা পড়ার প্রচলিত নিয়ম সুন্নত সমর্থিত নয়)।
- ২য় তাকবীরের পর দরুদ পাঠ (যা সালাতের শেষ তাশাহুদে পাঠ করা হয়)।
- ৩য় তাকবীরের পর জানাযার বিশেষ দুআ পাঠ করা।
মৃত ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক হলে নিম্ন স্বরে এই দুআ পড়বে-
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِ نَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَنَا اَللّٰهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلٰى الْاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلٰى الْاِيْمَانِ
অর্থ: হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত ও মৃত, উপস্থিত ও অনুপস্থিত, ছোট ও বড় এবং পুরুষ ও নারী – সকলকে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ, আপনি আমাদের মধ্য থেকে যাঁদেরকে জীবিত রেখেছেন ইসলামের উপর জীবিত রাখেন আর যাদেরকে মৃত্যু দান করেছেন তাদেরকে ঈমানের সাথেই মৃত্যু দান করেন।
আর জানাযা অপ্রাপ্ত বয়স্ক কারো হলে উক্ত দুআর পরিবর্তে এই দুআ পড়বে :
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطًا وَّاجْعَلْهُ لَنَا اَجْرً ا وَّاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَّمُشَفِّعًا
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি তাকে আমাদের জন্য অগ্রবর্তী হিসেবে কবুল করুন, তাকে করুন আমাদের জন্য প্রতিদান স্বরূপ এবং তাকে বানান আমাদের জন্য সুপারিশকারী -যার সুপারিশ কবুল করা হবে।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক লাশ মেয়ের হলে ‘হু’ (هُ) স্থানে ‘হা’ (هَا) বলতে হবে। এই দুআ পাঠের পর ইমাম চতুর্থ তাকবীর বলে প্রথমে ডানে ও পরে বামে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি’ বলে সালাম ফিরাবে। মুক্তাদীরাও তার অনুকরণ করবে।
সংশ্লিষ্ট কিছু জরুরী মাসআলা :
মাসআলা : ছানা, দরূদ ও দুআর পরে যে আরো তিনবার তাকবীর বলতে হয় তখন ইমাম ও মোক্তাদীর হাত বাঁধা থাকবে।
মাসআলা : ইমাম তাকবীর ব্যতীত সবকিছুই চুপে চুপে বলবে, শুধু তাকবীর উচ্চস্বরে বলবে। মোক্তাদীরা তাকবীরসহ সবকিছুই আস্তে আস্তে বলবে।
মাসআলা : ডান দিকে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে ডান হাত এবং বাম দিকে সালাম ফিরানোর সাথে সাথে বাম হাত নামিয়ে ফেলবে।
মাসআলা : জানাযার নামাযের পরে আর কোন দুআ বা মোনাজাত এক সাথে করার বিধান নেই।
মাসআলা : জানাযার নামায ছুটে যাওয়ার আশংকা হলে (পানি নিকটে থাকা সত্ত্বেও) তায়াম্মুম করে জানাযায় শরীক হওয়া যায়।
মাসআলা : জুতা পায়ে রেখেও জানাযার নামায পড়া যায়। তবে শর্ত এই যে জুতার তলা এবং জুতার নিচে জায়গা পাক থাকতে হবে। আর যদি জুতা খুলে জুতার উপরে পা রেখে দাঁড়ায় তাহলে পায়ের সাথে লেগে থেকে জুতার উপরের অংশ পাক থাকলেই হবে।
- এবং ৪র্থ তাকবীরের পর সালাম ফেরানো।
সূরা ফাতিহা ও দরুদ তো প্রায় সকল নামাযীর জানা থাকার কথা। এগুলো জানা
থাকলে কেবল বাকি জানাযার দুআটি মুখস্থ করার চেষ্টা করুন। কিন্তু মুখস্থ না
থাকলেও অন্যান্য মুসল্লিদের সাথে জানাযায় অংশ গ্রহণ করবেন। আর উক্ত দুআটির
স্থানে চুপ না থেকে যে সব দুআ-তাসবীহ জানা আছে সেগুলো পড়বেন। যেমন,
সুবহানাল্লা-হ, আল হামদু লিল্লা-হ, লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ..উত্যাদি। পরে তা
শিখে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। দুআ মুখস্থ হয় নি বলে জানাযা থেকে দূরে থাকা
ঠিক নয়। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
যে কোন ব্যক্তি তার মৃত পিতা, মাতা, ভাই, বোন ও স্ত্রী-সন্তানদের জানাযার সালাত আদায় করতে পারে। ইসলামী শরিয়তে এতে কোন আপত্তি নাই।
“মৃত ব্যক্তির রক্ত সম্পর্কিত কেউ জানাযা দিলে তার সওয়াব বেশি” ইসলামী
শরিয়তে এমন কিছু আছে বলে আমার জানা নাই। তবে কোন ব্যক্তি যখন নিজের রক্ত
সম্পর্কীয় ব্যক্তির জানাযা আদায় করবে তখন স্বভাবতই তার আন্তরিকতা বেশি
থাকে। কারণ তারা তার রক্ত সম্পর্কীয় প্রিয়জন। আর যে ইবাদতে যত বেশি
আন্তরিকতা থাকে তা ততই উত্তম। ইখলাস বা আন্তরিকতাপূর্ণ দুআ কবুলের
সম্ভাবনাও বেশি থাকে। আল্লাহু আলাম।
আমরা যেন দ্বীন সম্পর্কে যথাযথ
জ্ঞানার্জন করে সে আলোকে আমাদের জীবন পরিচালনা করতে পারি এবং আল্লাহর
নৈকট্য প্রাপ্ত বান্দা হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করতে পারি-মহান আল্লাহর
নিকট সে তাওফিক কামনা করছি। আল্লাহুম্মা আমীন।
▬▬▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব