Wednesday, May 5, 2021

উটের গোস্ত খাওয়া ওযু ভঙ্গের একটি কারণ

 No photo description available.

  উটের গোস্ত খাওয়া ওযু ভঙ্গের একটি কারণ*

প্রশ্ন:- উটের গোশত খেলে আবার অজু করে সালাত আদায় করতে হয় কেন? এর কারণ কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হতাম।

উত্তর:

উটের গোস্ত খেলে ওযু ভেঙ্গে যায়। সালাত আদায় বা কুরআন স্পর্ষ করতে চাইলে পূণরায় ওযু করতে হবে। এর কারণ হল, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওযু করতে আদেশ করেছেেন।
এ বিষয়ে নিম্নে হাদীস প্রদান করা হল:
🔰 জাবের বিন সামুরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে জিজ্ঞেস করা হল, আমরা কি ছাগলের মাংস খেয়ে ওযু করব? তিনি বললেন, যদি চাও তো করতে পার। বলা হল, আমরা উটের মাংস খেয়ে কি ওযু করব? তিনি বললেন, “হ্যাঁ”। (সহীহ মুসলিম)

🔰তিনি আরও বলেন, “উটের গোশত খেলে তোমরা ওযু করো।” (মুসনাদ আহমদ, সুনান আবূদাঊদ, সুনান তিরমিযী, সুনান ইবনে মাজাহ্‌, সহীহুল জামে ৩০০৬ নং)

নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ছাগলের মাংস খেয়ে ওযু করার বিষয়টি মানুষের ইচ্ছাধীন রেখেছেন, তখন বুঝা যায় উটের গোস্ত খেয়ে ওযুর ব্যাপারে মানুষের কোন ইচ্ছা স্বাধীনতা নেই। অবশ্যই ওযু করতে হবে।
অতএব উটের গোস্ত কাঁচা হোক বা পাকানো হোক কোন পার্থক্য নেই, গোস্ত লাল বর্ণ হোক বা অন্য বর্ণ খেলেই ওযু ভঙ্গ হবে। উটের নাড়ী-ভুঁড়ি, কলিজা, হৃতপিণ্ড, চর্বি, মোটকথা উটের যে কোন অংশ ভক্ষণ করলে ওযু ভঙ্গ হবে। কেননা রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য বর্ণনা করেন নি। অথচ তিনি জানতেন মানুষ উটের সব অংশ থেকেই খেয়ে থাকে।

আরও শুনুন:

https://youtu.be/1OCU2wrR_K0
-----------------------------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল, সৌদি আরব

 

 

 

যাকাতের হকদার কারা বা কাদেরকে যাকাত দিবেন?

 May be an image of text that says 'কুরআনে বর্ণিত যাকাতের ৮ টি খাত "যাকাত তো হচ্ছে শুধুমাত্র ১- গরিবদের ২- অভাবগ্রস্থদের যাকাত আদায়ের জন্য নিযুক্ত কর্ম্চারীদের ইসলামের প্রতি যাদের হৃদয় আকৃষ্ট করতে হয় দাস-মুক্তির মুক্তির জন্য ৬- ঋনগ্রস্থদের ৭- আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের ৮- মুসাফিরদের সাহায্যে। এ বিধান আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময় (সূরা তাওবা: আয়াত ৬০) Zakat'

 যাকাতের হকদার কারা বা কাদেরকে যাকাত দিবেন?
▪▪▪▪▪▪▪▪

যাকাতের খাত ৮টি:

✳ ১. ফকির: যাদের নিকট তাদের প্রয়োজনের অর্ধেকও নেই। বছরের ছয় মাস যে নিজের ও পরিবারের খরচের বহনে অক্ষম সেই ফকির। তার ও তার পরিবারের এক বছরের প্রয়োজন মোতাবেক তাকে যাকাত দেয়া হবে।
✳ ২. মিসকিন: যাদের নিকট তাদের প্রয়োজনের অর্ধেক বা তার চেয়ে অধিক রয়েছে, কিন্তু পূর্ণ বছরের খোরাক নেই, এদেরকে যাকাত থেকে অবশিষ্ট বছরের খাদ্য দেয়া যাবে।
যদি কোন ব্যক্তির নিকট নগদ অর্থ নেই, কিন্তু তার অন্য উৎস, অথবা চাকুরী অথবা সামর্থ রয়েছে, যা তার প্রয়োজন পূরণে যথেষ্ট, তাকে যাকাতের অর্থ দেয়া যাবে না। কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“ধনী ও কর্মঠ ব্যক্তিদের জন্য যাকাতে কোন অংশ নেই”। (আবু দাউদ-১৬৩৩, নাসায়ি-২৫৯৮)
✳ ৩. যাকাত উসুলে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ: যাদেরকে সরকার যাকাত উত্তোলন, যাকাত বিতরণ ও যাকাত সংরক্ষণের জন্য নিয়োগ দেয়, তাদেরকে তাদের কর্ম মোতাবেক যাকাত থেকে পারিশ্রমিক দেয়া যাবে, যদিও তারা ধনী হয়।
✳ ৪. ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ ব্যক্তিবর্গ: যারা কোন সম্প্রদায়ের সরদার, যাদের ঈমান দুর্বল, তাদের ঈমানের দৃঢ়তা বৃদ্ধির জন্য যাকাত থেকে তাদেরকে দেয়া যাবে, যেন তারা ইসলামের প্রতি আহ্বানকারী ও তার আদর্শ ব্যক্তিরূপে গড়ে উঠে।
✳ ৫. গর্দান মুক্ত করা: অর্থাৎ যাকাতের অর্থে গোলাম খরিদ করা ও আযাদ করা, চুক্তিবদ্ধদের মুক্ত হতে সাহায্য করা এবং মুসলিম বন্দীদের মুক্ত করার জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা।
✳ ৬. ঋণগ্রস্ত: যাদের নিকট তাদের ঋণ পরিশোধ করার অর্থ নেই, তাদের ঋণ পরিমাণ অর্থ কম/বেশী যাকাত থেকে দেয়া যাবে, যদিও তাদের খাদ্যের অভাব না থাকে। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যদি এমন হয়, যার নিজের ও পরিবারের খাদ্যের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু ঋণ পরিশোধ করার সামর্থ তার নেই, তাকে ঋণ পরিমাণ যাকাত দেয়া যাবে।
✳ ৭. ফি সাবিলিল্লাহ বা আল্লাহর রাস্তা: অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য যাকাত দেয়া যাবে। অতএব মুজাহিদদেরকে তাদের প্রয়োজন মোতাবেক যাকাতের অর্থ দেয়া জায়েয। যাকাতের অর্থ দিয়ে জিহাদের অস্ত্র খরিদ করাও বৈধ। আল্লাহর রাস্তার একটি হচ্ছে, শর‘য়ী ইলম। সুতরাং শর‘য়ী জ্ঞান অন্বেষণকারীকে তার প্রয়োজন মোতাবেক কিতাব ইত্যাদি ক্রয় করার জন্য যাকাতের অর্থ দেয়া বৈধ, তবে সে সচ্ছল হলে ভিন্ন কথা।
✳ ৮. ইবন সাবিল: অর্থাৎ মুসাফির, যার পথ খরচ শেষ হয়ে গেছে, তাকে যাকাত থেকে বাড়িতে পৌঁছার অর্থ দেয়া যাবে।
এরা সবাই যাকাতের খাত ও হকদার। আল্লাহ স্বয়ং কুরআনে এদের উল্লেখ করেছেন। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরয, যা তিনি স্বীয় জ্ঞান ও প্রজ্ঞা থেকে তার বান্দাদের উপর ফরয করেছেন।
⛔ এ খাতসমূহ ব্যতীত অন্য কোন খাতে যাকাত ব্যয় করা যাবে না, যেমন, মসজিদ নির্মাণ অথবা রাস্তাঘাট তৈরী বা মেরামত; কেননা আল্লাহ যাকাতের খাত সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। নির্দিষ্ট করার পর তা আর অনির্দিষ্ট খাতে দেয়া যায় না। (শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে সলেহ আল উসাইমিন (রঃ)- সিয়াম, তারাবীহ ও যাকাত বিষয়ে কয়েকটি অধ্যায়)
▪▪▪▪▪▪▪▪
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল


মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব