Wednesday, May 5, 2021

ইচ্ছা পূরণের সালাত সালাতুল হাজত

 

 

 May be an image of text

 

ইচ্ছা পূরণের সালাত
সালাতুল হাজত ❤
‪কোন হালাল চাহিদা পুরনের জন্য আল্লাহ’র সন্তষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করাকে “সালাতুল হাজত” বলা হয়।
( ইবনু মাজাহঃ হা/১৩৮৫)
কখন পড়বেন-
কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে কিংবা শারীরিক-মানসিকভাবে কোনো দুশ্চিন্তা দেখা দিলে এ নামাজ পড়তে হয়।
নিষিদ্ধ সময় -
সালাতুল হাজাত নিষিদ্ধ ওয়াক্ত ব্যাতীত যেকোনো সময়েই পড়তে পারেন।
নিয়ম-
নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই।
হাজতের নিয়তে অন্যান্য নামাজের মতোই দু রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন।
করণিয়-
অনান্য নামাজের মতোই উত্তম ভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে।
নামাজ শেষে সালাম ফিরানোর আগে প্রয়োজনের বিষয় টি খেয়াল করে
এই
দোয়া পড়বেন-
(ُ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ)
(রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া ক্কিনা আজাবানা নার)
( তিরমিজি, মিশকাতঃ হা/৮৭৩, আবু দাউদঃ ১৩১৯; সালাত অধ্যায়)
আল্লাহ পাক সকলকে আমল করার তৌফিক দান করুক। (আমিন)

 

বিয়ের চাঁদ 03

 

গল্পঃ-->বিয়ের চাঁদ
লেখাঃ-->তোফায়েল আহমদ
পর্বঃ-->০৩
আব্দুল্লাহর মন খারাপ । কেমন জানি মনের ভিতর অস্থিরতা বাসা বেঁধেছে । কিছুই ভালো লাগতেছে না । বারবার আব্বুর সামনে মেয়েটার কথা বলার জন্য যায় কিন্তু বলবো বলবো করেই বলা হয় না ।
ওদিকে মেয়ের বাবা আব্দুল্লাহকে পছন্দ করেছে। সেই সাথে পছন্দ করেছে তার ফ্যামিলিকেও । কিন্তু তার মেয়ে বিয়ে করতে রাজি না ।
খালামনি আব্দুল্লাহর মাকে ফোন কলে সব কথাই খুলে বললো ।
- আব্দুল্লাহর বাবা! মেয়েটাকে তো আব্দুল্লাহর পছন্দ হয়েছে । দেখো না কোনো একটা ব্যবস্থা করতে পারো কি না?
- আমার আবার এখানে দেখার কি আছে! মেয়ে তো এককথাই বলেছে সে পড়ালেখা শেষ করে বিয়ে করবে ।
- মেয়ের আব্বুকে একটু বুঝাতে বলো । আমার একটি মাত্র ছেলে; আর তার পছন্দের মেয়ের সাথে বিয়ে দিবো না! তা হয় নাকি.........
- আচ্ছা, আমি শেষ বারের মতো মেয়ের বাবাকে ফোন দিচ্ছি । হলে হবে না হয়ে অন্য মেয়ে দেখবে ব্যাচ......
সন্ধাবেলা মেয়ের বাবাকে কল করা হলো -
- আসসালামু আলাইকুম ।
- ওয়ালাইকুমুস সালাম ।
- কেমন আছেন?
- এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভালো । আপনি?
- আলহামদুলিল্লাহ । বলছিলাম কি ; আমার ছেলের জন্য আপনার মেয়েকে বউ বানা যায় না?
- দেখুন, আমরা আপনাদের পছন্দ করেছি । কিন্তু মেয়েটা ক্যান জানি বিয়ে করতেই চাচ্ছে না।এতবার বুঝালাম তাও কোনো কাজ হলো না । ঘুরেফিরে একটাই কথা বলতেছে এখন বিয়ে করবো না । বিয়ে যখন করতেই চাচ্ছে না তাহলে ক্যামনে জোর করে বিয়ে দেই বলুন?
- তা অবশ্য ঠিক । আপনি আরেকটু বুঝিয়ে বলবেন ।
- আচ্ছা দেখতেছি কি করা যায় । যদি রাজি হয় তাহলে আপনাকে জানাবো ইনশা আল্লাহ ।
আব্দুল্লাহকে ডেকে আব্বু বুঝাচ্ছে -
- দেখো বাবা, ঐ মেয়ে বিয়ের জন্য রাজি না । তার চেয়ে ভালো হয় আমরা অন্য একটা মেয়েকে দেখি ।
আব্বুর এমন কথা শুনে আব্দুল্লাহ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে । কোনো কথাই বলছে না ।
- তাহলে কালকে তোমার আম্মু আর খালা সহ আরেকটা পাত্রীকে দেখতে যেও । যদি পছন্দ হয় তাহলে আমাকে জানাইয়ো । আমি বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করবো ।
এখনো আব্দুল্লাহর মুখে কথা নেই । ক্যামন জানি মনমরা মনমরা ভাব । আব্বুর বুঝতে বাকি রইলো না যে আব্দুল্লাহর ঐ মেয়েকেই পছন্দ হয়েছে । অনেক বুঝানোর পর আব্দুল্লাহকে বশে আনা গেলো । অবশেষে সে নতুন পাত্রী দেখার জন্য রাজি হয়ে গেলো ।
রাতে ঘুম আসে না । মাথায় একটি চিন্তাই ঘুরঘুর করে - ' কালকে যে মেয়েকে দেখতে যাবো সেও যদি বিয়েতে রাজি না হয়! '
এসব চিন্তা ভাবনায় রাত পেরিয়ে গেলো । ফজরের ওয়াক্তে মুয়াজ্জিনের আজান শুনে আব্দুল্লাহর ঘুম ভাঙলো । ওযু সেড়ে মসজিদের পানে হাঁটতে শুরু করলো । ফজরের নামাজ পড়ে দু'হাত তুলে আল্লাহর কাছে চাইলো -
" হে আল্লাহ! আপনি আমার জীবনে এমন একজনকে সঙ্গী সাথী হিসেবে নিযুক্ত করুন যে হবে দ্বীনদার মোহসেনা স্ত্রী "
নামাজ শেষ করে বাড়ির দিকে পা বাড়ালো ।ঘড়ির কাটায় তখন বাজে সকাল ১০ টা । পরিবারের সবাই মিলে সকালের খাওয়া দাওয়ার জন্য রান্নাঘরে বসে পড়লো । ঠিক এমন সময় মেয়ের বাবার ফোন কল বেজে উঠলো । ফোন রিসিভ করতেই সালাম দিয়ে বললেন -
- আমার মেয়ে বিয়েতে রাজি হয়েছে ।
- কি! কি বললেন?
- হুম রাজি হয়েছে । তবে একটা শর্ত দিয়েছে ।
- কি শর্ত?
- বলছে এখন আংটি পড়ায়ে রাখবে । আর বিয়ে ফাইনাল হবে ওর পরিক্ষার পর । আপনারা রাজি থাকলে আংটি পড়াতে পারেন ।
- আচ্ছা, আমি আব্দুল্লাহর সাথে কথা বলে আপনাকে জানাচ্ছি ।
আব্দুল্লাহ রে! সুখবর আছে । বিয়ের জন্য তোর পছন্দের মেয়েটা রাজি হয়ে গেছে । তবে একটা শর্ত দিয়ে বলছে এখন আংটি পড়াবে আর বিয়ে হবে ওর পরিক্ষার পরে ।
- বাবা, শরিয়তে বিয়ের আগে আংটি পড়ানো হারাম । কারণ আংটি পড়াতে গেলে ওর হাত ধরতে হবে । আর বিয়ের আগে নন-মাহরাম মেয়ের হাত ধরা ইসলামে হারাম করা হয়েছে । আর তাছাড়া আংটি পড়ার প্রচলনটা পশ্চিমা সাংস্কৃতির । সুতরাং আমরা কেনো পশ্চিমা সাংস্কৃতিকে অনুসরণ করবো? তার চেয়ে বেটার হয় আপনি বিয়ের সম্প্রদান করুন । ওর পরিক্ষা শেষ হলে বিয়ে ফাইনাল হবে । ততোক্ষণে আমি অপেক্ষায় থাকি ।
দেখছো আব্দুল্লাহর মা! বেটা বলে কি? অপেক্ষায় থাকতে রাজি তারপরেও ঐ মেয়েকে ছাড়তে রাজি না ।
- বাপ কা বেটা.......
বিয়াই সাহেব! বিয়ের আগে আংটি পড়ার দরকার নাই । তার চেয়ে ভালো হয় বিয়ের সম্প্রদান করি । কি বলেন?
- ভালোই হয় । আচ্ছা তাহলে আগামী শুক্রবার বিয়ের সম্প্রদান করা হবে ।
সম্প্রদান শেষ । এখন সুমাইয়া আব্দুল্লাহর আওতাধীন । যদিও আব্দুল্লাহর হবু স্ত্রী তারপরেও আব্দুল্লাহর জন্য সুমাইয়াকে দেখা হারাম এবং তার সাথে কথা বলাও হারাম । কেননা, এখনো তাদের বিয়ে হয় নাই । কেবল বিয়ের আলাপ পাকা হয়েছে ।
- মা সুমাইয়া! জামাই'র ফোন নম্বর নিবা? কথা বলার জন্য?
- না বাবা, তার কোনো প্রয়োজন নেই । ক'দিন বাদে আমার ফাইনাল পরিক্ষা । আর এ সময় পরিক্ষার প্রিপারেশন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই ।
- ঠিক আছে তোর যেটা ভালো মনে হয় ।
ওদিকে আব্দুল্লাহর মনে আনন্দের বন্যা বইছে । শত আনন্দের মাঝেও সুমাইয়ার সাথে কথা বলতে না পারার দুঃখও বিরাজ করছে ।
আব্দুল্লাহ তখন স্টাডি করছিলো । এমন সময় আম্মু এসে দরজায় করাঘাত করছে -
- আব্দুল্লাহ! এয় আব্দুল্লাহ! দরজাটা একটু খুল তো ।
- কি হয়েছে মা?
- বলি কি বাবা, আমার হবু বউমা সুমাইয়ার নম্বর নিবি না? কথাবার্তা বলবি না?
যদিও বা আব্দুল্লাহর সুমাইয়ার সাথে কথা বলার খুবই ইচ্ছে করছিলো তারপরেও নিজেকে কন্ট্রোল করে আম্মুকে বললো -
- আম্মু, আমাদের এখনো বিয়ে হয় নি । সুতরাং বিয়ের আগে একজন পুরুষ অন্য একজন বেগানা মহিলার সাথে কথা বলতে পারে না । এটা ইসলাম সমর্থন করে না । এটা স্পষ্ট হারাম । সুতরাং বিয়ের পর মন খুলে কথা বলবো ।
- তুই যেটা ভালো মনে করিস বাপ!
আব্দুল্লাহর কোনো ফোন কল অথবা মেসেজ না পেয়ে সুমাইয়া ভাবতে লাগলো -
- লোকটা একবারো কোনো কল করলো না । কল তো দূরের কথা একটা এসএমএস পর্যন্ত করলো না । ব্যাপার কি? যে ছেলে আমাকে বিয়ে করার জন্য অস্থির অথচ সেই ছেলে এখন পর্যন্ত আমাকে কোনো কলই করলো না । নাকি আমার নম্বর তার কাছে নেই ।
আব্বু! আব্বু!
- কি হয়েছে মা?
- আচ্ছা আব্বু, আমার নম্বর আব্দুল্লাহকে দাও নি?
- দিয়েছি তো ।
- তাহলে তিনদিন পার হয়ে গেলো এখন পর্যন্ত একবারও ফোন দিলো না । তুমি একটু খোঁজ নিয়ে দেখো তো কোনো বিপদ হলো না তো!
- আচ্ছা আমি খোঁজ নিয়ে দেখতেছি তুই কোনো চিন্তা করিস না ।
.
‌.
.
চলবে.................