Wednesday, May 12, 2021

বিয়ে আটকে থাকার পেছনে যাদু/তাবিয/বদনজরের আশংকা যারা করছেন তাদের জন্য

 

বিয়ে আটকে থাকার পেছনে যাদু/তাবিয/বদনজরের আশংকা যারা করছেন তাদের জন্য

প্রথমে কয়েকটি জরুরি কথা

প্রথম কথা - অনেকেই একটা/দুটা বিয়ে ভেঙে গেলেই মনে করেন তাদের যাদু করা হয়েছে। কিন্তু সবসময় যাদুই এই সমস্যার জন্য দায়ী হয় এটা ঠিক নয় । অন্যান্য যেসব কারনে বিয়ে বিলম্বিত হতে পারে তা হলো - পাত্র/পাত্রীর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত এক্সপেক্টেশন, পড়াশোনা শেষ করতে গিয়ে বিয়ের মূল সময়কে ফেলে আসা, অবহেলা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে বিলম্বিত হতে পারে। এই রুকইয়াহ তখনই উপকারি হবে যখন সমস্যার কারণ হিসেবে যাদু থাকবে।
দ্বিতীয় কথা - আকীদা, ফরজ ইবাদত (নামাজ, যথাযথভাবে পর্দা) ইত্যাদি ঠিক করা আবশ্যক। কোন গুনাহের সাথে জড়িত থাকলে সেটা ত্যাগ করতে হবে (যেমন হারাম রিলেশন, চোখের পর্দা না করা, গান-বাজনা শোনা ইত্যাদি)। বেশি বেশি আল্লাহর কাছে দুয়া করে সাহায্য চাইতে হবে। আল্লাহই যে মূল ও একমাত্র সাহায্যকারী, তিনি চাইলেই যে শুধু এই যাদু ও সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারি, এই কথা বিশ্বাস করতে হবে।
তৃতীয় কথা হলো - তাবিয থাকলে খুলে নষ্ট করতে হবে এবং দৃঢ়ভাবে ওয়াদা করতে হবে আর কখনো তাবিয ব্যবহার না করার জন্য। তাবিয কিভাবে নষ্ট করতে হবে জানতে এই পোস্ট দেখুন। কারণ তাবিযে বেশিরভাগ সময় থাকে কুফরি ও শিরকে পূর্ণ, আর আল্লাহর কালাম থাকলেও এগুলো তাওয়াক্কুল নষ্ট করে দেয়। মানুষের মনে হয় এইটা থাকলে বিপদ হবে না। https://web.facebook.com/.../permalink/901157306738256/

সমস্যার কারণ চিহ্নিত করা

প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে এই সমস্যার পেছনে যাদু আছে কিনা। যাদুর লক্ষনগুলো দেখুন এখানে -
১। সব কিছু পার্ফেক্ট থাকলেও কোন না কোন কারনে প্রস্তাব গৃহীত হয়না। দু'পক্ষের যে কোন এক পক্ষ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়।
২। মেয়ে অনেক গুণধর হলেও প্রস্তাব আসে না। ছেলেদের বেলাও এটা হতে পারে। সব ঠিক থাকলেও মেয়ে পাত্রী পাওয়া যায় না।
৩। যখনই প্রস্তাব আসে তখনই মেয়ে (বা ছেলে) অসুস্থ হয়ে যায়।
৪। মাথাব্যথা। ওষুধ খেয়েও তেমন ফায়দা হয় না।
৫। প্রায় সময়ই মানসিক অশান্তিতে থাকা। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত খুব অস্বস্তিতে ভোগা।
৬। মাঝে মাঝেই পেট ব্যথা করা।
৭। ব্যাকপেইন বা কোমরের দিকে ব্যথা করা। বিশেষত - মেরুদন্ডের নিচের দিকে
যদি এখানের বেশ কিছু লক্ষন মিলে যায় ইত্যাদি তাহলে সাজেশন ফলো করা শুরু করতে পারেন। তবে যদি আরো নিশ্চিত হতে চান তাহলে সুদাইস এবং লুহাইদানের রুকিয়াহ দুইটা শুনে প্রতিক্রিয়া দেখে নিশ্চিত হবেন। রুকিয়াহ দুইটা পাবেন এখানে https://ruqyahbd.org/d (অন্যান্য সব রুকইয়াও সেই সাইটে পাবেন)
কেমন প্রতিক্রিয়া হলে বুঝবেন যাদুর সমস্যা আছে? যদি খুব ঘুম ধরে, মাথাব্যথা করে, তলপেটে ব্যথা করে, হাত-পা ব্যথা করে, শরীরের ভেতর ছটফট করে, অকারণে কান্না আসে তাহলে ধরে নিতে হবে যাদুর সমস্যা আছে । এছাড়াও রুকইয়া শুনতে গিয়ে বমি বমি ভাব আসতে পারে।

রুকইয়ার সাজেশন

সাজেশনটা ৩ সপ্তাহের। যেভাবে করবেন -
১ম সপ্তাহ - বিয়ে আটকে থাকার প্যারানরমাল কারণগুলোর মধ্যে বদনজরও থাকতে পারে। তাই প্রথম ১ সপ্তাহ বদনজর দূর করবার নিয়তে রুকইয়াহ করলে ভাল হয়। নিজে নিজে যেভাবে বদনজরের রুকইয়াহ করবেন
  • ruqyahbd.org/d থেকে ১ বা ২ নং রুকইয়াহটা দিনে যতবার পারেন শুনবেন।
  • রুকইয়ার গোসল করবেন যেকোন অডিও শোনার পরে একবার এই নিয়মে bit.ly/ruqyahbath
যদি রুকইয়ার ঐ গোসলে বেশি কষ্ট হয় তবে ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক, নাস পানিতে পড়ে ফু দিয়ে ঐ পানি দিয়ে গোসল করবেন।
শুরুতে শারিরীক সমস্যা হতে পারে কিছু। যেমন ঘুম ভাব, ব্যথা। এরকম হলে অলিভ অয়েলে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, বাকারার শেষ ২ আয়াত, সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস কয়েকবার করে পড়ে ফু দিয়ে সেটা ব্যথার জায়গায় লাগাতে পারেন।
২য় ও ৩য় সপ্তাহ - এই দুই সপ্তাহে আপনারা যাদুর জন্য রুকিয়াহ করবেন।
এই রুকিয়ার প্রস্তুতির জন্য প্রথমে ২ সপ্তাহের জন্য যত পানি লাগে নিয়ে তাতে
  • সুরা বাকারাহ ১০২ নং আয়াত
  • আয়াতুল কুরসি
  • আরাফ ১১৭-১২২ নং আয়াত
  • ইউনুস ৮১-৮২ নং আয়াত
  • তহা ৬৯ নং আয়াত
কয়েকবার করে পড়ে ফু দিবেন। এরপরে সেই পানি থেকে
  • আধা বা এক গ্লাসের মত পানি সকাল-বিকাল দুবার খাবেন
  • এক গ্লাসের মত পানি গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করবেন
আর আয়াতুল কুরসির রুকইয়াহ ১ ঘন্টা আর ৩ কুলের রুকইয়াহ ১ ঘন্টা শুনবেন । এগুলো পাবেন ruqyahbd.org/d এই পেইজে।
এছাড়া দিনে ৩০ থেকে ৬০ মিনিট ৩ কুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়লে উপকারী হবে।
এছাড়া সকালে ফজরের পর সুরা ইয়াসিন, রাতে সুরা মুলক পড়তে পারেন।
এই রুকইয়াহ করতে গিয়েও গায়ে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। ব্যথা হলে ১ম সপ্তাহের মতই অলিভ অয়েলে রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়ে ফু দিয়ে ব্যথার জায়গায় মালিশ করবেন। তেলে একবার ফু দিয়ে অনেকদিন ইউজ করতে পারবেন। একইসাথে ব্যথার জায়গায় হাত দিয়ে ব্যথার রুকইয়াহটাও করবেন। নিয়ম দেখুন এখানে bit.ly/ruqyahpain
পেট ব্যথাও হতে পারে। হলে সুরা ফাতিহা কয়েকবার পানিতে পড়ে ফু দিয়ে ঐ পানি খেয়ে নিবেন। ৭বার বা ১১বার পড়তে পারেন (সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ না)
এছাড়াও মধু, কালোজিরাতে রুকইয়ার আয়াতগুলো (যেগুলো পানিতে পড়েছিলেন) পড়ে ফু দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। ইনশা আল্লাহ অধিক উপকার হবে।
স্বপ্নে খাওয়ার ঘটনা ঘটলে রাতে ঘুমের আগে রুকইয়াহ করা মধু এক চামচ আর এক ঢোক রুকইয়ার পানি খেয়ে নিবেন। আয়াতুল কুরসি পড়বেন ৭বার/১১বার বা যতবার ইচ্ছা। এগুলো করবেন যেন স্বপ্নে খাওয়াতে না পারে এই নিয়তে। আল্লাহর কাছে দুয়া করবেন যেন খাওয়াতে না পারে।
স্বপ্নে কেউ আক্রমণ করছে, কেউ শারিরীকভাবে হেনস্তা করছে এরকম বার বার দেখলে, স্বপ্নেই তাকে ঘায়েল করার নিয়তে আয়াতুল কুরসি পড়বেন। তার হাত-পা যেন বিনষ্ট হয়ে যায়, এমনকি সে যেন মরে যায় এই নিয়তেও আয়াতুল কুরসি পড়তে পারেন।
বেশি বেশি ইস্তেগফার, সময় পেলেই কুরান তিলাওয়াত করা উচিত সুস্থতার নিয়তে। আল্লাহর কাছে সমস্যা থেকে মুক্তি চেয়ে দুয়া করা উচিত। ছোট বড় গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচানো উচিত। এক কথায় নিজের জীবনকে যতটা সম্ভব আল্লাহমুখী করা যায় সে চেষ্টা করা উচিত।
সকাল/সন্ধায় আর ঘুমের আগে সুরক্ষার দুয়া/আমলগুলি গুরুত্বের সাথে করবেন। আমলগুলো এখানে পাবেন bit.ly/masnun-amal

বিশেষ নোটঃ

১। ৩ সপ্তাহের এই রুকইয়াহ শেষ হলে যদি আপনার এই সমস্যার জন্য কোন পোস্ট এপ্রুভ হয়ে থাকে তবে ওখানে কমেন্টে অবস্থা জানাবেন। আর যদি কোন পোস্ট এপ্রুভ না হয়ে থাকে তবে নতুন পোস্ট দিয়ে আপডেট জানাবেন। পোস্টের শুরুতে #আপডেট পোস্ট কথাটা লিখে দিবেন। আপডেটে যদি সাজেশন দিতে দেরি হয় তবে শেষ সপ্তাহের মত করেই রুকইয়াহ করে যাবেন যতদিন না রুকইয়াতে কোন ইফেক্ট না হয়।
২। রুকইয়াহ সংক্রান্ত জরুরি কিছু প্রশ্নের উত্তর পাবেন এই লেখায়। পড়ে নিবেন https://web.facebook.com/.../permalink/800108556843132/
৩। আপডেট দেবার বেলায় প্রতি সপ্তাহে কী কী পরিবর্তন লক্ষ করলেন, কোন লক্ষনের উন্নতি হয়েছে আর কোনটা অবনতি হয়েছে তা জানাবেন। চেষ্টা করবেন আপডেট সংক্ষেপে দিতে।
৪। উপরে বলা সুরক্ষার মাসনুন আমলগুলো বাদ দিবেন না। এইসব আমল সারাজীবন করা উচিত। নিজেও করবেন সবাইকেও করতে বলবেন।
৫। যে বা যারা যাদু করেছে বলে সন্দেহ করেন তাদের কাছ থেকে কোন খাবার এলে খাবেন না। তাদেরকে আপনার ব্যবহার্য জিনিসপত্র দিবেন না। একইভাবে সন্দেহজনক যে কোন কবিরাজি বস্তু তাবিয নষ্ট করার নিয়মে নষ্ট করে নিবেন। bit.ly/tabij
৬। সর্বোপরি দুয়া করবেন আল্লাহর কাছে যেন যাদু নষ্ট হয়ে যায়। তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে দুয়া করলে অধিক উপকার পাওয়া যাবে।
৭। রুকইয়া চলাকালীন সময়ে এবং অন্য যেকোন সময়ে কবিরাজের কাছে যাবেন না। কবিরাজদের বেশিরভাগের কাজই সন্দেহজনক এবং অনেকেই কুফরি করে। তাদের সম্পর্কে জানতে এই লেখাটি পড়ুন bit.ly/kobiraji

বিয়ে আটকে রাখার যাদুর জন্য প্রাথমিক সাজেশন

 May be an image of text that says 'বিয়ে আটকে রাখার যাদুর সাজেশন'

 

বিয়ে আটকে রাখার যাদুর জন্য প্রাথমিক সাজেশন

----------

তাবিয বা যাদু করে কেউ আপনার বিয়ে আটকে রেখেছে মনে করলে নিচের নিয়মে রুকইয়াহ করবেন।
এই সমস্যায় প্রথমে ১/২ সপ্তাহ বদনজরের রুকইয়াহ করা ভাল। কারণ অনেক সময় এই সমস্যার পেছনে বদনজরের প্রভাব থাকে। বদনজরের রুকইয়াহ করতে এই লেখা দেখুন bitly.com/ruqyahevileye
যদি আপনি দৃঢ়ভাবে মনে করেন আপনাকে তাবিযই করা হয়েছে তবে নিচের নিয়মে ৭/১০ দিন প্রাথমিক রুকইয়াহ করে আপডেট পোস্ট দিন গ্রুপে...
রুকইয়াহ পড়া বা শোনা
১। আয়াতুল কুরসি। রুকইয়ার অডিও শুনবেন ১ ঘন্টা অথবা নিজে পড়বেন ১ ঘন্টা। শোনা বা পড়ার সময় বেশি দিতে পারলে ভাল, কম দিলেও ফায়দা হবে ইনশা আল্লাহ
২। ৩ কুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস)। রুকইয়াহ অডিও শুনবেন ১ ঘন্টা অথবা নিজে পড়বেন এক ঘন্টা। ফালাক, নাস বেশি পড়তে পারেন অপেক্ষাকৃত।
এগুলোর সাথে যদি সম্ভব হয় তবে শায়খ লুহাইদানের রুকইয়াহ (২০ নং) ১বার করে শুনতে পারেন।
পানি খাওয়া
দিনে ২ গ্লাস করে ৭/১০ দিনের জন্য যত পানি লাগে অত পানি নিয়ে তাতে
  • সুরা বাকারাহ ১০২ নং আয়াত
  • আয়াতুল কুরসি
  • আরাফ ১১৭-১২২ নং আয়াত
  • ইউনুস ৮১-৮২ নং আয়াত
  • তহা ৬৯ নং আয়াত
  • সুরা ফালাক
  • সুরা নাস
১/৩/৭ বার করে পড়ে পানিতে ফুঁ দিবেন। এরপরে এই পানি থেকে সকাল/বিকাল ১ গ্লাস করে খাবেন।
রুকইয়াহ গোসল
উপরে খাওয়ার পানি তৈরি করতে যে আয়াতগুলো পড়েছেন সেগুলো গোসলের পানিতে একবার করে পড়ে ফুঁ দিয়ে ঐ পানি দিয়ে গোসল করে নিবেন। যদি পড়তে না পারেন তবে আগের তৈরি করা খাওয়ার পানি থেকে ১ গ্লাস পানি নিয়ে গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করে নিবেন। আপনার সুযোগ থাকলে আপনি বরই পাতার গোসলটা করতে পারেন এর বদলে। নিয়ম দেখুন bitly.com/boroibath
অন্যান্যঃ
  • সুরক্ষার আমলগুলি করবেন সকাল,সন্ধ্যা আর ঘুমের আগে bitly.com/amalmasnun
  • ফরজ, ওয়াজিবগুলো ভালভাবে আদায় করবেন। পর্দাও ফরজ।
  • প্রতিদিন বেশি বেশি ইস্তেগফার করবেন।
  • সকালে সুরা ইয়াসিন আর রাতে সুরা মুলক পড়তে চেষ্টা করবেন
  • গুনাহ থেকে দূরে থাকবেন। গুনাহ হয়ে গেলেই তাওবা করে নিবেন।
  • রুকইয়াহ করতে গিয়ে গা ব্যথা হলে অলিভ অয়েল বা কালোজিরার তেলে খাওয়ার পানি তৈরির সময় যে আয়াতগুলো পড়েছেন সেসব পড়ে ফুঁ দিয়ে ঐ তেল ব্যথার জায়গায় লাগাবেন।
  • রুকইয়াহ সংক্রান্ত কোন প্রশ্ন থাকলে আগে এই পোস্টে উত্তর খুঁজবেন bitly.com/ruqyahfaq ওখানে উত্তর না পেলে প্রশ্ন করবেন।
রুকইয়ার অডিওগুলো পাবেন এখানে ruqyahbd.org/d

 এই যাদুর লক্ষণ ও রুকইয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে আপনার এই লেখাটি পড়া উচিত

 

বিয়ে আটকে থাকার পেছনে যাদু/তাবিয/বদনজরের আশংকা যারা করছেন তাদের জন্য

প্রথমে কয়েকটি জরুরি কথা

প্রথম কথা - অনেকেই একটা/দুটা বিয়ে ভেঙে গেলেই মনে করেন তাদের যাদু করা হয়েছে। কিন্তু সবসময় যাদুই এই সমস্যার জন্য দায়ী হয় এটা ঠিক নয় । অন্যান্য যেসব কারনে বিয়ে বিলম্বিত হতে পারে তা হলো - পাত্র/পাত্রীর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত এক্সপেক্টেশন, পড়াশোনা শেষ করতে গিয়ে বিয়ের মূল সময়কে ফেলে আসা, অবহেলা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে বিলম্বিত হতে পারে। এই রুকইয়াহ তখনই উপকারি হবে যখন সমস্যার কারণ হিসেবে যাদু থাকবে।
দ্বিতীয় কথা - আকীদা, ফরজ ইবাদত (নামাজ, যথাযথভাবে পর্দা) ইত্যাদি ঠিক করা আবশ্যক। কোন গুনাহের সাথে জড়িত থাকলে সেটা ত্যাগ করতে হবে (যেমন হারাম রিলেশন, চোখের পর্দা না করা, গান-বাজনা শোনা ইত্যাদি)। বেশি বেশি আল্লাহর কাছে দুয়া করে সাহায্য চাইতে হবে। আল্লাহই যে মূল ও একমাত্র সাহায্যকারী, তিনি চাইলেই যে শুধু এই যাদু ও সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারি, এই কথা বিশ্বাস করতে হবে।
তৃতীয় কথা হলো - তাবিয থাকলে খুলে নষ্ট করতে হবে এবং দৃঢ়ভাবে ওয়াদা করতে হবে আর কখনো তাবিয ব্যবহার না করার জন্য। তাবিয কিভাবে নষ্ট করতে হবে জানতে এই পোস্ট দেখুন। কারণ তাবিযে বেশিরভাগ সময় থাকে কুফরি ও শিরকে পূর্ণ, আর আল্লাহর কালাম থাকলেও এগুলো তাওয়াক্কুল নষ্ট করে দেয়। মানুষের মনে হয় এইটা থাকলে বিপদ হবে না। https://web.facebook.com/.../permalink/901157306738256/

সমস্যার কারণ চিহ্নিত করা

প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে এই সমস্যার পেছনে যাদু আছে কিনা। যাদুর লক্ষনগুলো দেখুন এখানে -
১। সব কিছু পার্ফেক্ট থাকলেও কোন না কোন কারনে প্রস্তাব গৃহীত হয়না। দু'পক্ষের যে কোন এক পক্ষ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়।
২। মেয়ে অনেক গুণধর হলেও প্রস্তাব আসে না। ছেলেদের বেলাও এটা হতে পারে। সব ঠিক থাকলেও মেয়ে পাত্রী পাওয়া যায় না।
৩। যখনই প্রস্তাব আসে তখনই মেয়ে (বা ছেলে) অসুস্থ হয়ে যায়।
৪। মাথাব্যথা। ওষুধ খেয়েও তেমন ফায়দা হয় না।
৫। প্রায় সময়ই মানসিক অশান্তিতে থাকা। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত খুব অস্বস্তিতে ভোগা।
৬। মাঝে মাঝেই পেট ব্যথা করা।
৭। ব্যাকপেইন বা কোমরের দিকে ব্যথা করা। বিশেষত - মেরুদন্ডের নিচের দিকে
যদি এখানের বেশ কিছু লক্ষন মিলে যায় ইত্যাদি তাহলে সাজেশন ফলো করা শুরু করতে পারেন। তবে যদি আরো নিশ্চিত হতে চান তাহলে সুদাইস এবং লুহাইদানের রুকিয়াহ দুইটা শুনে প্রতিক্রিয়া দেখে নিশ্চিত হবেন। রুকিয়াহ দুইটা পাবেন এখানে https://ruqyahbd.org/d (অন্যান্য সব রুকইয়াও সেই সাইটে পাবেন)
কেমন প্রতিক্রিয়া হলে বুঝবেন যাদুর সমস্যা আছে? যদি খুব ঘুম ধরে, মাথাব্যথা করে, তলপেটে ব্যথা করে, হাত-পা ব্যথা করে, শরীরের ভেতর ছটফট করে, অকারণে কান্না আসে তাহলে ধরে নিতে হবে যাদুর সমস্যা আছে । এছাড়াও রুকইয়া শুনতে গিয়ে বমি বমি ভাব আসতে পারে।

রুকইয়ার সাজেশন

সাজেশনটা ৩ সপ্তাহের। যেভাবে করবেন -
১ম সপ্তাহ - বিয়ে আটকে থাকার প্যারানরমাল কারণগুলোর মধ্যে বদনজরও থাকতে পারে। তাই প্রথম ১ সপ্তাহ বদনজর দূর করবার নিয়তে রুকইয়াহ করলে ভাল হয়। নিজে নিজে যেভাবে বদনজরের রুকইয়াহ করবেন
  • ruqyahbd.org/d থেকে ১ বা ২ নং রুকইয়াহটা দিনে যতবার পারেন শুনবেন।
  • রুকইয়ার গোসল করবেন যেকোন অডিও শোনার পরে একবার এই নিয়মে bit.ly/ruqyahbath
যদি রুকইয়ার ঐ গোসলে বেশি কষ্ট হয় তবে ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক, নাস পানিতে পড়ে ফু দিয়ে ঐ পানি দিয়ে গোসল করবেন।
শুরুতে শারিরীক সমস্যা হতে পারে কিছু। যেমন ঘুম ভাব, ব্যথা। এরকম হলে অলিভ অয়েলে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, বাকারার শেষ ২ আয়াত, সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস কয়েকবার করে পড়ে ফু দিয়ে সেটা ব্যথার জায়গায় লাগাতে পারেন।
২য় ও ৩য় সপ্তাহ - এই দুই সপ্তাহে আপনারা যাদুর জন্য রুকিয়াহ করবেন।
এই রুকিয়ার প্রস্তুতির জন্য প্রথমে ২ সপ্তাহের জন্য যত পানি লাগে নিয়ে তাতে
  • সুরা বাকারাহ ১০২ নং আয়াত
  • আয়াতুল কুরসি
  • আরাফ ১১৭-১২২ নং আয়াত
  • ইউনুস ৮১-৮২ নং আয়াত
  • তহা ৬৯ নং আয়াত
কয়েকবার করে পড়ে ফু দিবেন। এরপরে সেই পানি থেকে
  • আধা বা এক গ্লাসের মত পানি সকাল-বিকাল দুবার খাবেন
  • এক গ্লাসের মত পানি গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করবেন
আর আয়াতুল কুরসির রুকইয়াহ ১ ঘন্টা আর ৩ কুলের রুকইয়াহ ১ ঘন্টা শুনবেন । এগুলো পাবেন ruqyahbd.org/d এই পেইজে।
এছাড়া দিনে ৩০ থেকে ৬০ মিনিট ৩ কুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস) পড়লে উপকারী হবে।
এছাড়া সকালে ফজরের পর সুরা ইয়াসিন, রাতে সুরা মুলক পড়তে পারেন।
এই রুকইয়াহ করতে গিয়েও গায়ে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। ব্যথা হলে ১ম সপ্তাহের মতই অলিভ অয়েলে রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়ে ফু দিয়ে ব্যথার জায়গায় মালিশ করবেন। তেলে একবার ফু দিয়ে অনেকদিন ইউজ করতে পারবেন। একইসাথে ব্যথার জায়গায় হাত দিয়ে ব্যথার রুকইয়াহটাও করবেন। নিয়ম দেখুন এখানে bit.ly/ruqyahpain
পেট ব্যথাও হতে পারে। হলে সুরা ফাতিহা কয়েকবার পানিতে পড়ে ফু দিয়ে ঐ পানি খেয়ে নিবেন। ৭বার বা ১১বার পড়তে পারেন (সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ না)
এছাড়াও মধু, কালোজিরাতে রুকইয়ার আয়াতগুলো (যেগুলো পানিতে পড়েছিলেন) পড়ে ফু দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। ইনশা আল্লাহ অধিক উপকার হবে।
স্বপ্নে খাওয়ার ঘটনা ঘটলে রাতে ঘুমের আগে রুকইয়াহ করা মধু এক চামচ আর এক ঢোক রুকইয়ার পানি খেয়ে নিবেন। আয়াতুল কুরসি পড়বেন ৭বার/১১বার বা যতবার ইচ্ছা। এগুলো করবেন যেন স্বপ্নে খাওয়াতে না পারে এই নিয়তে। আল্লাহর কাছে দুয়া করবেন যেন খাওয়াতে না পারে।
স্বপ্নে কেউ আক্রমণ করছে, কেউ শারিরীকভাবে হেনস্তা করছে এরকম বার বার দেখলে, স্বপ্নেই তাকে ঘায়েল করার নিয়তে আয়াতুল কুরসি পড়বেন। তার হাত-পা যেন বিনষ্ট হয়ে যায়, এমনকি সে যেন মরে যায় এই নিয়তেও আয়াতুল কুরসি পড়তে পারেন।
বেশি বেশি ইস্তেগফার, সময় পেলেই কুরান তিলাওয়াত করা উচিত সুস্থতার নিয়তে। আল্লাহর কাছে সমস্যা থেকে মুক্তি চেয়ে দুয়া করা উচিত। ছোট বড় গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচানো উচিত। এক কথায় নিজের জীবনকে যতটা সম্ভব আল্লাহমুখী করা যায় সে চেষ্টা করা উচিত।
সকাল/সন্ধায় আর ঘুমের আগে সুরক্ষার দুয়া/আমলগুলি গুরুত্বের সাথে করবেন। আমলগুলো এখানে পাবেন bit.ly/masnun-amal

বিশেষ নোটঃ

১। ৩ সপ্তাহের এই রুকইয়াহ শেষ হলে যদি আপনার এই সমস্যার জন্য কোন পোস্ট এপ্রুভ হয়ে থাকে তবে ওখানে কমেন্টে অবস্থা জানাবেন। আর যদি কোন পোস্ট এপ্রুভ না হয়ে থাকে তবে নতুন পোস্ট দিয়ে আপডেট জানাবেন। পোস্টের শুরুতে আপডেট পোস্ট কথাটা লিখে দিবেন। আপডেটে যদি সাজেশন দিতে দেরি হয় তবে শেষ সপ্তাহের মত করেই রুকইয়াহ করে যাবেন যতদিন না রুকইয়াতে কোন ইফেক্ট না হয়।
২। রুকইয়াহ সংক্রান্ত জরুরি কিছু প্রশ্নের উত্তর পাবেন এই লেখায়। পড়ে নিবেন https://web.facebook.com/.../permalink/800108556843132/
৩। আপডেট দেবার বেলায় প্রতি সপ্তাহে কী কী পরিবর্তন লক্ষ করলেন, কোন লক্ষনের উন্নতি হয়েছে আর কোনটা অবনতি হয়েছে তা জানাবেন। চেষ্টা করবেন আপডেট সংক্ষেপে দিতে।
৪। উপরে বলা সুরক্ষার মাসনুন আমলগুলো বাদ দিবেন না। এইসব আমল সারাজীবন করা উচিত। নিজেও করবেন সবাইকেও করতে বলবেন।
৫। যে বা যারা যাদু করেছে বলে সন্দেহ করেন তাদের কাছ থেকে কোন খাবার এলে খাবেন না। তাদেরকে আপনার ব্যবহার্য জিনিসপত্র দিবেন না। একইভাবে সন্দেহজনক যে কোন কবিরাজি বস্তু তাবিয নষ্ট করার নিয়মে নষ্ট করে নিবেন। bit.ly/tabij
৬। সর্বোপরি দুয়া করবেন আল্লাহর কাছে যেন যাদু নষ্ট হয়ে যায়। তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে দুয়া করলে অধিক উপকার পাওয়া যাবে।
৭। রুকইয়া চলাকালীন সময়ে এবং অন্য যেকোন সময়ে কবিরাজের কাছে যাবেন না। কবিরাজদের বেশিরভাগের কাজই সন্দেহজনক এবং অনেকেই কুফরি করে। তাদের সম্পর্কে জানতে এই লেখাটি পড়ুন bit.ly/kobiraji