Wednesday, May 12, 2021

বদনজর বিষয়ক সব একসাথে

 

বদনজর বিষয়ক সব একসাথে

বদনজর আক্রান্ত হওয়ার লক্ষন

কিভাবে বুঝবেন আপনার নজর লেগেছে কিনা? নিচের লক্ষনগুলো এখনি মিলিয়ে দেখুন। সবগুলো মিলতে হবে এমন কোন কথা নেই। ২-১ টা মিললেও বলা যায় অল্প-স্বল্প নজরের সমস্যা আছে।
মুম্বাইয়ের একজন অভিজ্ঞ আলেম মুফতি জুনাইদ সাহেব নজর লাগার অনেকগুলো আলামত বর্ণনা করেছিলেন। যেমনঃ
.
১। শরীরে জ্বর থাকা, কিন্তু থার্মোমিটারে না উঠা।
২। কোনো কারণ ছাড়াই কান্না আসা..
৩। প্রায়সময় কাজে মন না বসা, নামায যিকর ক্লাসে মন না বসা।
৪। প্রায়শই শরীর দুর্বল থাকা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব লাগা।
৫। চেহারা ধুসর/হলুদ হয়ে যাওয়া।
৬। বুক ধড়পড় করা, দমবন্ধ অস্বস্তি লাগা।
৭। অহেতুক মেজাজ বিগড়ে থাকা।
৮। আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই ভালো না লাগা।
৯। অতিরিক্ত চুল পড়া। শ্যাম্পুতে কাজ না করা।
১০। পেটে প্রচুর গ্যাস হওয়া।
১১। বিভিন্ন সব অসুখ লেগে থাকা যা দীর্ঘদিন চিকিৎসাতেও ভালো হয় না। (সর্দিকাশি, মাথাব্যথা ইত্যাদি)
১২। হাত-পায়ে মাঝেমধ্যেই ব্যাথা করা, পুরো শরীরে ব্যাথা দৌড়ে বেড়ানো।
১৩। ব্যবসায় ঝামেলা লেগে থাকা।
১৪। আপনি যে কাজে অভিজ্ঞ সেটা করতে গেলেই অসুস্থ হয়ে যাওয়া।
.
[আব্দুল্লাহ আলমাহমুদ]
 
 

বদনজরের রুকইয়া। রুকইয়ার গোসল।

 
[বদনজরের জন্য রুকইয়াহ - ১]
---------
[ক]
যদি জানা যায় কার নজর লেগেছে তাহলে সাহল ইবনে হুনাইফ রা. এর হাদিসটা অনুসরণ করলেই হবে।
অর্থাৎ যার নজর লেগেছে তাকে অযু করতে বলবে, অযুর পানিগুলো একটা পাত্রে জমা করবে, এরপর সেটা আক্রান্ত ব্যাক্তির গায়ে ঢেলে দিবে। তাহলেই নজর কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ। যেমন, যদি মনে করেন আপনার বাবুর উপর মেহমানের নজর লেগেছে (যদিও ইচ্ছা করে বদনজর দেয়নি) তাহলে মেহমানকে অযুর করতে বলবেন বা উনার অযুর পানি নিয়ে আপনার বাবুর গায়ে ঢেলে দিবেন। ইন শা আল্লাহ সে সুস্থ হয়ে যাবে।
এই পদ্ধতিতে সাধারণ একবারেই বদনজরের প্রভাব দূর হয়ে যায়। তবেঁ, প্রয়োজনে ২-৩দিন করা লাগতে পারে। আর হ্যাঁ! অনেকের ক্ষেত্রে এই ওযু করার পানি ঢালার পর, প্রচণ্ড পায়খানা বা প্রসাবের বেগ আসে, সেটা হয়ে গেলে আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ হয়ে যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে, কুলির পানিও কি জমা করবে?
উত্তরঃ যদিওবা এক হাদিসে আছে কুলির কথা, তবে না নিলেও সমস্যা নেই। এমনকি অধিকাংশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একজনের হাতমুখ ধোয়া পানি নিয়ে অপরজন হাতমুখ ধৌত করলেই বদনজর নষ্ট হয়ে যায়।
উহ্য প্রশ্ন-২: যদি নিজের নজর নিজেকেই লাগে?
উত্তরঃ তাহলে ওযু করবে, এবং পানিগুলো জমা করবে, এরপর সেটা নিজের গায়ে ঢালবে।
[খ]
আর যদি আপনি না জানেন আপনার উপর কার নজর লেগেছে, যদি অনেক দিনের সমস্যা হয়, কিংবা যদি অনেকজনের নজর লাগে, তাহলে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। বদনজরের সেলফ রুকইয়া হিসেবে এই পদ্ধতি সাজেসটেড।
১. রুকইয়ার আয়াতগুলো প্রতিদিন তিলাওয়াত করবেন অথবা শুনবেন, সরাসরি শোনা সম্ভব না হলে অডিও রেকর্ড শুনবেন।
রুকইয়াহর আয়াত নিজেই তেলাওয়াত করা সর্বোত্তম। কাজেই আপনার তেলাওয়াত শুদ্ধ হলে সম্ভব হলে রুকইয়াহ আয়াত তেলাওয়াত করবেন। তা না হলে অডিও শুনবেন। বদনজরের রুকইয়াহর পিডিএফ নিচের লিংকে পাবেন।
পিডিএফ পড়তে সমস্যা হলে বা অডিও শুনলে যদি ঘুম আসে তাহলে কুরআন থেকে দেখে দেখে তেলাওয়াত করতে পারেন। আয়াতের লিস্টঃ
 
বদনজরের রুকইয়াহর আয়াতের তালিকা
বদনজরের রুকইয়াহ যারা করেন তাদের একটি কমন সমস্যা হল অডিও শোনার সময় ঘুম পাওয়া। এই সমস্যার সমাধান হল তেলাওয়াত করা। তেলাওয়াতের পিডিএফ পাবেন https://ruqyahbd.org/ayat
যারা কুরআনুল কারীম থেকে বদনজরের আয়াত তেলাওয়াত করতে চান তাদের জন্য এই পোস্ট। নিজে নিজে তেলাওয়াত সর্বোত্তম রুকইয়াহ। প্রতিটি আয়াত এক বা একাধিকবার তেলাওয়াত করতে পারেন। বদনজরের লক্ষন এবং বদনজরের রুকইয়াহ করার বিস্তারিত পদ্ধতি কমেন্টে দেয়া হল।
আয়াতের তালিকাঃ
১। সুরা ফাতিহা
২। সুরা বাকারা। আয়াত নং- ৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ৫০, ৫৫, ৬০, ৬৯, ৭৬, ১০৫, ১০৯, ২৪৭, ২৫৫, ২৬৯, ২৮৫, ২৮৬।
৩। সুরা আলে ইমরান। আয়াত নং- ১৩, ১৪, ২৬, ২৭, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ১১৮, ১১৯, ১২০, ১৬৯, ১৭০, ১৭১, ১৭২, ১৭৩, ১৭৪, ১৮৬।
৪। সুরা আন-নিসা। আয়াত নং- ২৭, ৩২, ৫৩, ৫৪, ৭৩, ১০৮, ১১৩, ১৪১।
৫। সূরা মায়েদা। আয়াত নং- ৪৫, ৭৩।
৬। সুরা আনআম। আয়াত নং- ৩৩, ৫৩, ৯৩, ১০৩, ১১০, ১৩৯, ১৬৫।
৭। সুরা আরাফ। আয়াত নং- ৪৩, ১০৮, ১১৬, ১৭৯, ১৯৫, ১৯৮।
৮। সুরা আনফাল। আয়াত নং- ৬, ৪৪, ৫৩।
৯। সুরা তওবা। আয়াত নং- ৮, ৫০, ৫১, ৫৫, ৯২, ৯৮, ১২৭, ১২৮, ১২৯।
১০। সুরা ইউনুস। আয়াত নং- ৪৩, ১০১, ১০৭।
১১। সুরা হুদ। আয়াত নং- ৫, ৩১।
১২। সুরা ইউসুফ। আয়াত নং- ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১৮, ২১, ৩১, ৩৮, ৪৬, ৬৮, ৬৯, ৭৭, ৮৪, ৮৯, ৯০, ৯১, ৯২, ৯৩, ৯৯, ১০০।
১৩। সুরা রা'দ। আয়াত নং- ৫।
১৪। সুরা হিজর। আয়াত নং- ১৬, ১৭, ৫১, ৫২, ৮৮।
১৫। সুরা নাহল। আয়াত নং- ৬, ১৮, ৫৩, ৭১।
১৬। সুরা আল ইসরা (বনী ইসরাঈল)। আয়াত নং- ২০, ২১, ৭৬।
১৭। সুরা কাহাফ। আয়াত নং- ৫, ১৯, ২৮, ৩৫, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪৬, ৮২, ৮৬।
১৮। সুরা ত্বহা। আয়াত নং- ৫৯, ১৩১।
১৯। সুরা আম্বিয়া। আয়াত নং- ১৮, ৬১, ৯৬, ১১২।
২০। সুরা হজ্জ্ব। আয়াত নং- ১৫, ৭২।
২১। সুরা মু'মিনুন। আয়াত নং- ৯১, ৯৬।
২২। সুরা নুর। আয়াত নং- ৩০, ৩১, ৩৮।
২৩। সুরা ফুরকান। আয়াত নং- ৪১, ৭৪।
২৪। সুরা শু'আরা। আয়াত নং- ২১৮।
২৫। সুরা নামল। আয়াত নং- ১০, ১৫, ১৬, ১৯, ২৩, ২৭, ২৮, ৩৩, ৩৫, ৪০, ৪৪।
২৬। সুরা কাসাস। আয়াত নং- ১৩, ৬০, ৭৬, ৭৯, ৮০, ৮১, ৮২, ৮৩।
২৭। সুরা আহযাব। আয়াত নং- ১৯, ৫১, ৫২।
২৮। সুরা ইয়াসিন। আয়াত নং- ৯, ৬৬।
২৯। সুরা সফফাত। আয়াত নং- ১৯, ৪৬, ৫৭, ৮৮, ১৭৮, ১৭৯, ১৮০।
৩০। সুরা যুমার। আয়াত নং- ৬৮।
৩১। সুরা মু'মিন। আয়াত নং- ১৯, ২৫।
৩২। সুরা শু'রা। আয়াত নং- ১২, ২৭, ৪৫।
৩৩। সুরা আয-যুখরুফ। আয়াত নং- ৩১, ৩২, ৭১, ৮০।
৩৪। সুরা মুহাম্মাদ। আয়াত নং- ২০, ২৯, ৩০।
৩৫। সুরা ফাতাহ। আয়াত নং- ১৫।
৩৬। সুরা হুজুরাত। আয়াত নং- ১১, ১২।
৩৭। সুরা ক্বফ। আয়াত নং- ৬।
৩৮। সুরা আযযারিয়াত। আয়াত নং- ৪৪।
৩৯। সুরা তুর। আয়াত নং- ৪৮।
৪০। সুরা ক্বামার। আয়াত নং- ৮, ১২, ৩৫, ৩৭।
৪১। সুরা আর রাহমান। আয়াত নং- ৩৭, ৫০, ৭০।
৪২। সুরা ওয়াক্বিয়াহ। আয়াত নং- ৮৩, ৮৪।
৪৩। সুরা হাদিদ। আয়াত নং- ২০, ২৯।
৪৪। সুরা হাশর। আয়াত নং- ৯, ১০, ১৮।
৪৫। সুরা মুমতাহিনা। আয়াত নং- ২।
৪৬। সুরা মুনাফিকুন। আয়াত নং- ৪।
৪৭। সুরা মুলক। আয়াত নং- ৩, ৪, ২৮।
৪৮। সুরা ক্বলম। আয়াত নং- ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২।
৪৯। সুরা মুদ্দাস্‌সির। আয়াত নং- ২১, ২২।
৫০। সুরা ক্বিয়ামাহ। আয়াত নং- ২২ ২৩, ২৪, ২৫।
৫১। সুরা দাহর (ইনসান)। আয়াত নং- ১৯।
৫২। সুরা নাবা। আয়াত নং- ৪০।
৫৩। সুরা নাযিয়াত। আয়াত নং- ৪৬।
৫৪। সুরা আবাসা। আয়াত নং- ২৩।
৫৫। সুরা আল ইনশিকাক। আয়াত নং- ৯, ১৩।
৫৬। সুরা গাশিয়া। আয়াত নং- ১২।
৫৭। সুরা আল ফাজর। আয়াত নং- ১৫, ১৬।
৫৮। সুরা বালাদ। আয়াত নং- ৮, ৯।
৫৯। সুরা আশ শামস। আয়াত নং- ৮, ৯, ১০।
৬০। সুরা আদ্‌-দুহা।
৬১। সুরা হুমাযাহ।
৬২। সুরা আল কাওসার।
৬৩। সুরা নাসর।
৬৪। সুরা লাহাব।
৬৫। সুরা ইখলাস।
৬৬। সুরা ফালাক।
৬৭। সুরা নাস

 
২. আর প্রতিদিন রুকইয়ার গোসল করবেন।
রুকইয়াহ অডিওর ডাউনলোড পেজের লিংক: http://ruqyahbd.org/download (সেখান থেকে "বদনজর Evil Eye অথবা Eye Hasad যেকোনোটি শুনতে পারেন। এছাড়া সা'দ আল গামিদীর আধাঘণ্টার রুকয়াটাও শুনতে পারেন। যেটাই শুনবেন, শোনার সময় নিয়ত রাখবেন, আমি বদনজরের জন্য রুকইয়াহ করছি।
যদি আপনার কোনো সমস্যা থাকে তাহলে আপনি ফিজিক্যালি এর প্রভাব টের পাবেন। যেমনঃ প্রচণ্ড ঘুম আসবে, মাথাব্যথা করতে পারে, হাত-পা কামড়াতে পারে, হার্টবিট বেড়ে যেতে পারে, শরীর ঘামতে পারে, বেশি বেশি প্রসাব হতে পারে- ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে এরপরেও শুনতে থাকবেন, ঘুম আসলে জেগে থাকতে চেষ্টা করবেন। আর একান্তই না পেরে ঘুমিয়ে গেলেও দুশ্চিন্তার কিছু নাই। আর সমস্যা সমাধান হলেই ভালো ফিল করতে লাগবেন ইনশাআল্লাহ! দুশ্চিন্তার কারণ নাই।
.
আর আপনি কয়েকবার মনোযোগ দিয়ে শোনার পরেও যদি কোনোই ইফেক্ট না বুঝতে পারেন, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ্‌ আপনার কোনো সমস্যা নাই। আপনার যদি প্রবলেম থাকে তাহলে রুকইয়াহ শুনলে অবশ্যই প্রভাব টের পাবেন।
.
[গ]
রুকইয়ার গোসলের পদ্ধতি হচ্ছে-
একটা বালতিতে পানি নিবেন, তারপর ওই পানিতে দুইহাত ডুবিয়ে পড়বেন -
"দরুদ শরিফ, ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, চারকুল (কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক্ব, নাস) প্রত্যেকটা ৭ বার। শেষে আবার দরুদ শরিফ ৭ বার পড়বেন।
লক্ষণীয়ঃ
১. পড়ার পর হাত উঠাবেন এবং পানি দিয়ে গোসল করবেন। এগুলা পড়ে পানিতে ফু দিবেন না, এমনিই গোসল করবেন।
২. যদি টয়লেট আর গোসলখানা একসাথে হয় তখন এসব অবশ্যই বাহিরে এনে পড়তে হবে।
৩. কোনদিন হাতে সময় কম থাকলে এসবের মধ্যে সুরা কাফিরুন বাদ দিতে পারেন আর দরুদ শরিফ ৩বার করে পড়তে পারেন।
৪. প্রথমে এই পানি দিয়ে গোসল করলেন পরে অন্য পানি দিয়ে ভালোমতো করলেন অসুবিধে নেই।
৫. যার সমস্যা সে যদি পড়তে না পারে, তাহলে অন্যজন পানিতে হাত রেখে পড়ে দিবে, এরপর গোসল করবেন।
৬. উত্তম হচ্ছে, প্রথমে রুকইয়াহ শুনে এরপর গোসল করতে যাবেন। গোসলের আগে শুনতে না পারলে সমস্যা নাই, দিনের যেকোন সময় শুনলেই হবে ইনশাআল্লাহ।
৭. রুকইয়ার গোসল বাদ দিয়ে, খালি অডিও শোনা থেকে নিরুৎসাহিত করছি। এতে কষ্ট বেশি কিন্তু উপকার কম হওয়ার আশংকা রয়েছে।
.
[ঘ]
মোটকথা, প্রতিদিন রুকইয়া শুনবেন এবং উপরের নিয়ম অনুযায়ী রুকইয়ার গোসল করবেন। সমস্যা অনুযায়ী ৩-৭ থেকে দিন লাগতে পারে। সমস্যা বেশি মনে হলে ২১দিন করতে পারেন।
সমস্যা কম হলে কখনো একদিনেও ভালো হয়ে যায়। তবে ভালো হওয়ার পরেও ২-৩দিন করা উচিত।
[লেখাঃ আব্দুল্লাহ আলমাহমুদ]
----------
 

বাচ্চাকাচ্চা, বাড়িঘর বা সম্পদে নজর লাগলে।

 
[বদনজরের জন্য রুকইয়াহ - ২]
-------------------
বাচ্চাদের নজর লাগলে কি করবেন? কিংবা যদি নজর লাগে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে? আপনার দোকানে, খামারে? ঘর-বাড়িতে? গাছে? বা অন্য কোথাও?
নিচে একে একে পদ্ধতিগুলো লেখা হল।
[১ম পদ্ধতি]
যদি জানা যায় কার নজর লেগেছে তাহলে সাহল ইবনে হুনাইফ রা. এর হাদিসটা অনুসরণ করলেই হবে।
অর্থাৎ যার নজর লেগেছে তাকে অযু করতে বলবে, অযুর পানিগুলো একটা পাত্রে জমা করবে, এরপর সেটা আক্রান্ত ব্যাক্তির গায়ে ঢেলে দিবে। তাহলেই নজর কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এই পদ্ধতিতে সাধারণ একবারেই বদনজরের প্রভাব দূর হয়ে যায়। তবেঁ, প্রয়োজনে ২-৩দিন করা লাগতে পারে। আর হ্যাঁ! অনেকের ক্ষেত্রে এই ওযু করার পানি ঢালার পর, প্রচণ্ড পায়খানা বা প্রসাবের বেগ আসে, সেটা হয়ে গেলে আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ হয়ে যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে, কুলির পানিও কি জমা করবে?
উত্তরঃ যদিওবা এক হাদিসে আছে কুলির কথা, তবে না নিলেও সমস্যা নেই। এমনকি অধিকাংশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একজনের হাতমুখ ধোয়া পানি নিয়ে অপরজন হাতমুখ ধৌত করলেই বদনজর নষ্ট হয়ে যায়।
উহ্য প্রশ্ন-২: যদি নিজের নজর নিজেকেই লাগে?
উত্তরঃ তাহলে ওযু করবে, এবং পানিগুলো জমা করবে, এরপর সেটা নিজের গায়ে ঢালবে।
[নোটঃ এই পদ্ধতি বাচ্চা-বয়স্ক, ছেলে-মেয়ে সবার জন্য। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যদি জানা না যায় কার নজর লেগেছে তাহলে নিচের দ্বিতীয় পদ্ধতি ফলো করতে হবে। ]
[২য় পদ্ধতি]
রোগীর মাথায় হাত রেখে এই দুয়াগুলো পড়বেন। এবং মাঝেমাঝে রোগীর গায়ে ফুঁ দিবেন, এভাবে কয়েকবার করবেন। নিজের সমস্যা থাকলে নিজের মাথায় বা বুকে হাত রেখেই পড়তে পারেন। অথবা পড়ার পর হাতে ফুঁ দিয়ে পুরা শরীরে হাত বুলিয়ে নিতে পারেন।
১.
أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উ"ঈযুকুম বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মাহ। মিং কুল্লি শাইত্বা-নিও- ওয়াহা-ম্মাহ। ওয়ামিং কুল্লি "আঈনিল্লা-ম্মাহ।
২.
بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللَّهُ يَشْفِيكَ، بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
বিসমিল্লা-হি আরকীক। মিং কুল্লি শাইয়িই ইউ'যীক। মিং শাররি কুল্লি নাফসিন আও "আইনি হাসিদ। আল্লা-হু ইয়াশফীক। বিসমিল্লা-হি আরকীক।
৩.
بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ، وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ
বিসমিল্লা-হি ইউবরীক। ওয়ামিং কুল্লি দা-ঈই ইয়াশফীক। ওয়ামিং শাররি হাসিদিন ইযা- হাসাদ। ওয়া শাররি কুল্লি যী "আঈন ।
৪.
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ، اشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
আল্লা-হুম্মা রাব্বান না-স। আযহিবিল বা'স । ইশফি ওয়াআংতাশ শা-ফী। লা-শিফাআ ইল্লা-শিফাউক। শিফাআল লা-ইউগা-দিরু সাক্বামা-।
এরপর সুরা ফাতিহা এবং আয়াতুল কুরসি ১বার। এবং সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস ৩ বার পড়বেন এরপর রুগীকে/নিজেকে ফুঁ দিবেন। চাইলে সুরা ফালাক নাস অনেকবার পুনরাবৃত্তি করতে পারেন, সবধরনের রুকইয়ায় এগুলো বিশেষভাবে উপকারী।
সমস্যা বেশি হলে উল্লেখিত পদ্ধতিতে রুকইয়া করা শেষে, আরেকবার এগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে প্রতিদিন খাবেন এবং গোসল করবেন। সমস্যা ভালো হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন করবেন এই দুটো কাজ। এছাড়া কোন অঙ্গে ব্যাথা থাকলে এসব দোয়া-কালাম পড়ে তেলে ফুঁ দিয়ে প্রতিদিন মালিশ করতে পারেন।
বদনজর আক্রান্ত কারো কারো ওপর রুকইয়া করতে চাইলে এই পদ্ধতিটা অনুসরণ করা উচিত। অনুরূপভাবে ছোট বাচ্চাদের বিবিধ সমস্যা / রোগবালাইয়ের জন্য রুকইয়া করতে চাইলেও এটা অনুসরণ করা যায়।
আর হ্যাঁ! উল্লেখিত সবগুলো দোয়া রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হাদিস থেকে নেয়া।
[৩য় পদ্ধতি]
যদি কোনো গাছ, খামার, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অথবা বাড়িতে নজর লাগে তাহলে প্রথমে এগুলোর মালিক নিজের জন্য বদনজরের রুকইয়াহ করবেন। আর এসব সম্পত্তির জন্য উপরের দু'আ এবং কোরআনের আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিবেন, এরপর ওই পানিটা গাছে, ঘরে অথবা দোকানে ছিটিয়ে দিবেন। গৃহপালিত পশুপাখির ওপর নজর লাগলে তাদের মাথায় হাত রেখে এসব পড়তে পারেন, কিংবা কোন খাদ্যের ওপর এসব পড়ে ফুঁ দিয়ে খাইয়ে দিতে পারেন।
তাহলে ইনশাআল্লাহ বদনজর নষ্ট হয়ে যাবে। প্রয়োজনে এভাবে পরপর কয়েকদিন রুকইয়া করুন।
 
 
 

 বদনজর থেকে বাচার উপায়

 

বদনজর থেকে বাচার উপায়, কিছু ঘটনা : বদনজর ৩

 

গত পর্বে আমরা বদনজর বিষয়ে সালাফের মতামত এবং বদনজর লাগার কিছু লক্ষণ জেনেছি। আজ বদনজর থেকে বাঁচার উপায় এবং এসম্পর্কিত কিছু সত্য ঘটনা জানবো।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নিজের প্রয়োজন পূরণ হওয়া পর্যন্ত সেটা গোপন রাখার মাধ্যমে সাহায্য লাভ করো! কেননা, প্রতিটা নিয়ামত লাভকারীর সাথেই হিংসুক থাকে!” (তাবারানী)

এটা নজর এবং হিংসা থেকে বাচার একটা টিপস। নিয়ামত গোপন রাখার মানে হচ্ছে অন্য কারো সামনে অহেতুক নিজের, নিজের সম্পদের, প্রশংসা না করা, সন্তানের প্রশংসা না করা, মেয়েরা নিজ স্বামীর প্রশংসা অন্যদের সামনে না করা, ছেলেরা নিজ স্ত্রীর প্রশংসা অন্যদের সামনে না করা। নিজের প্রজেক্টের প্রপার্টির ব্যাবসার গোপন আলোচনা অন্যদের সামনে প্রকাশ না করা। অনেকে অহেতুক অন্যদের সামনে গল্প করেন, অমুক প্রজেক্টে এতো লাভ হলো, অমুক চালানে এতো টাকার বিক্রি হলো।

মোটকথা: অহেতুক অন্যের সামনে নিজের কোনো নিয়ামতের আলোচনা না করাই উত্তম। প্রসঙ্গক্রমে করলেও কথার মাঝে যিকর করা। যেমনঃ ‘আলহামদুলিল্লাহ্‌, এবছর ব্যাবসায় কোনো লস যায়নি।’ “আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে বেশ ভালো রেজাল্ট করেছে!” “মা-শা-আল্লাহ ভাবি! আপনি তো কাপড়ে অনেক ভালো ফুল তুলতে পারেন!!” ইত্যাদি ইত্যাদি.

শুধু খারাপ মানুষের নজর লাগে এমন কিন্তু না। ভালো মানুষের নজরও লাগতে পারে। বদনজর লাগার আসল কারণ হচ্ছে, আমরা যখন কোনো বস্তুর বা ব্যাক্তির প্রশংসা করি তখন এর মাঝে আল্লাহকে স্মরণ করি না। মা-শা-আল্লাহ, বারাকাল্লাহ বলি না। কোন কিছু দেখলে আমরা ওয়াও, অসাম! বাপরে! কি দেখাইলো মাইরি! হেব্বি হইছে! এক্কেরে ফাডালাইছে-এসব বলি। অথচ আমাদের উচিত ছিলো মা-শা-আল্লাহ, বারাকাল্লাহ, বলা।

সূরা কাহাফে এক ঘটনায় আল্লাহ্‌ বলেন: “যখন তুমি তোমার বাগানে প্রবেশ করলে, তখন ‘মা-শা-আল্লাহ; লা-কুও্ওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ’ (সব আল্লাহর ইচ্ছাতে হয়েছে, আল্লাহ ছাড়া কারো ক্ষমতা নেই) কেন বললে না?” (১৮:৩৯)

এখন অন্য কেউ যদি আপনার কিছুর প্রশংসা করে, তাহলে উনি যিকর না করলে আপনার উচিত হবে যিকর করা। উদাহরণ স্বরুপ কেউ বললো- ভাবি আপনার ছেলেটা তো অনেক কিউট! আপনি বলুন- আলহামদুলিল্লাহ্‌… মনে মনে বলুন- আল্লাহর কাছে বদনজর থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। আপনি অন্যের প্রশংসা করতে গিয়ে কথার মাঝে যিকর করুক। “মাশা-আল্লাহ! আপনার রান্না অনেক সুন্দর।”
আর অধিক পরিমাণে সালামের প্রচলন করুন, ইনশাআল্লাহ হিংসা দূর হয়ে যাবে।

সর্বোপরি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা বদনজর থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাও, কেননা বদনজর সত্য!”

নজর থেকে বাচার একটা দুয়া, রাসুল সা. এটা পড়ে হাসান এবং হুসাইন রা.কে ফুঁ দিয়ে দিতেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই একই দু’আ আমাদের জাতির পিতা ইবরাহীম আ.-ও ইসমাইল আ. এবং ইসহাক আ. এর জন্য পড়তেন। দুয়াটি হচ্ছে-

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
.
উচ্চারণঃ আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাহ। মিং-কুল্লি শাইত্বনিও ওয়াহা-ম্মাহ। ওয়ামিং-কুল্লি ‘আইনিল্লা-ম্মাহ।
অর্থঃ আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি।

এই হাদিসটি আছে- বুখারি, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, মুসতাদরাকে হাকেম, তাবারানী, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদে বাযযার, মুসান্নাফ, মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকে..

এই দু’আ সকাল-সন্ধ্যায় কয়েকবার পড়ে বাচ্চাদের ফুঁ দিয়ে দিবেন, নিজের জন্যও পড়বেন। ইনশাআল্লাহ তাবিজ-কবচ টোটকা ইত্যাদির কোনো দরকার হবেনা। আল্লাহই হিফাজত করবে।

বদনজর বিষয়ে অনেকগুলো ঘটনা আগেরবার (প্রথম সিরিজে) বলা হয়েছে, সেসব আর উল্লেখ না করি.. আমি আগের পোস্টগুলোর লিংক কমেন্টে দিয়ে দিচ্ছি। তবে সাহল ইবনে হুনাইফ রা. এর ঘটনা; যা মুয়াত্তা মালেক, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাযাহ এবং নাসাঈ শরিফে আছে! সেটা এটা এখানে না বললেই নয়.

সাহল ইবনে হুনাইফ রাযি. কোথাও গোসলের জন্য জামা খুলেছিলেন। উনি বেশ সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন। বদরী সাহাবী আমির ইবনে রবী’আ রাযি. তাঁকে দেখতে পেয়ে বললেন, এতো সুন্দর মানুষ আমি জীবনে দেখিনি। এমনকি এত সুন্দর কোন যুবতীকেও দেখিনি। আমির রাযি. কথাটা বলার পরপরই সাহাল রাযি. সেখানে বেহুশ হয় পড়ে গেলেন। তাঁর গায়ে জ্বর চলে আসলো। মারাত্মক জ্বরে ছটফট করতে লাগলেন হযরত সাহাল রাযি.।
অন্য সাহাবিরা রাসূল সা. কে জানালেন, সংবাদ পেয়ে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবস্থা দেখতে আসলেন। সাহল রাযি. কে হঠাৎ করে এমনটা হবার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি ঘটনাটা খুলে বললেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন: “তোমরা কেন তোমাদের ভাইকে নজর দিয়ে হত্যা করছো?” আমির ইবনে রবী’আকে ডেকে বললেন: “তুমি যখন তাকে দেখলে, তখন আরো বরকতের দু’আ কেন করলেনা? বারাকাল্লাহ কেন বললে না?” (অর্থাৎ দুয়া করলে নজর লাগতো না)
এরপর প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন আমির রাযি. কে বললেন: অজু কর! আমির রাযি. অজু করলেন। অতঃপর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর নির্দেশে অযুর পানি সাহল এর গায়ে ঢেলে দিলেন। আল্লাহর রহমতে কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন।”
এটা বিশুদ্ধ সনদে নাসাঈ এবং ইবনে মাজাহতে বর্ণিত প্রসিদ্ধ একটি ঘটনা, যা থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। আমরা বুঝতে পারি, ভালো মানুষের নজরও লাগতে পারেরে, এখানে আমির ইবনে রবিয়া রা. তো বদরি সাহাবি, বদরী সাহাবিদের আগের পরের সব গুনাহ মাফ!! এরকম মানুষের নজর লেগেছে, সেখানে অন্যরা কোন ছার..

আরেকটা হাদিস, উম্মুল মুমিনিন হাফসা রা. কোনো সাহাবির বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন, ফিরে এসে রাসুল সা.কে ওদের হালহাকিকত শোনালেন। বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওই সাহাবির সন্তানরা প্রায় সময় অসুস্থ হয়ে থাকে.. রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আসলে বদনজর তাদের দিকে খুব দ্রুত কাজ করে!”
আসমা রা. এর ব্যাপারেও এরকম ঘটনা পাওয়া যায়.. (হাদিসগুলো মুসলিম শরিফে আছে)

আমার বাড়ির একটা গল্প বলি, এবার ছুটিতে গিয়ে আম্মুকে আমার বদনজর নিয়ে লেখা আগের প্রবন্ধগুলো দেখালাম। সেখানে “বদনজর মানুষকে কবর পর্যন্ত আর উটকে রান্নার পাতিল পর্যন্ত পৌঁছে দেয়!” হাদিসটা দেখিয়ে আমি হাসতে হাসতে বললাম ‘হাদিসটা মজাদার না’?!!
আম্মু দেখি মন খারাপ করে বলছে- কয়েকদিন আগে আমার একটা মুরগী মরে গেছে..
জিগাইলাম কিভাবে?
আম্মু বলছে- “সন্ধ্যায় সব মুরগিকে খাওয়ার দিয়ে আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি, তখন ওই মুরগিটার দিকে তাকায়া বললাম ইশ! এরকম আর একটা মুরগিও হলোনা.. একটা মুরগিও এরকম বড়সড় না, আর এর মতো একটাও ডিম দেয় না… তারপর সব মুরগি কুটিরে উঠেছে, ওই বড়সড় মুরগিটাও উঠেছে। পরদিন সকালে দেখি ওই মুরগিটা আর বের হয়না! পরে কুটিরের ভিতরে তাকায়া দেখি মুরগিটা এক কোণায় মরে পড়ে আছে… একদম ভালো মুরগি, কোনো অসুখ ছিল না, আমার ওই কথাগুলা বলার সময় কি নজর লাগছিল?”
– আমি বললাম.. “হ্যা….”

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

 

বদনজর আক্রান্ত হওয়ার লক্ষন

 

 বদনজর আক্রান্ত হওয়ার লক্ষন

কিভাবে বুঝবেন আপনার নজর লেগেছে কিনা? নিচের লক্ষনগুলো এখনি মিলিয়ে দেখুন। সবগুলো মিলতে হবে এমন কোন কথা নেই। ২-১ টা মিললেও বলা যায় অল্প-স্বল্প নজরের সমস্যা আছে।
মুম্বাইয়ের একজন অভিজ্ঞ আলেম মুফতি জুনাইদ সাহেব নজর লাগার অনেকগুলো আলামত বর্ণনা করেছিলেন। যেমনঃ
.
১। শরীরে জ্বর থাকা, কিন্তু থার্মোমিটারে না উঠা।
২। কোনো কারণ ছাড়াই কান্না আসা..
৩। প্রায়সময় কাজে মন না বসা, নামায যিকর ক্লাসে মন না বসা।
৪। প্রায়শই শরীর দুর্বল থাকা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব লাগা।
৫। চেহারা ধুসর/হলুদ হয়ে যাওয়া।
৬। বুক ধড়পড় করা, দমবন্ধ অস্বস্তি লাগা।
৭। অহেতুক মেজাজ বিগড়ে থাকা।
৮। আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের সাথে দেখা হলেই ভালো না লাগা।
৯। অতিরিক্ত চুল পড়া। শ্যাম্পুতে কাজ না করা।
১০। পেটে প্রচুর গ্যাস হওয়া।
১১। বিভিন্ন সব অসুখ লেগে থাকা যা দীর্ঘদিন চিকিৎসাতেও ভালো হয় না। (সর্দিকাশি, মাথাব্যথা ইত্যাদি)
১২। হাত-পায়ে মাঝেমধ্যেই ব্যাথা করা, পুরো শরীরে ব্যাথা দৌড়ে বেড়ানো।
১৩। ব্যবসায় ঝামেলা লেগে থাকা।
১৪। আপনি যে কাজে অভিজ্ঞ সেটা করতে গেলেই অসুস্থ হয়ে যাওয়া।
.
[আব্দুল্লাহ আলমাহমুদ]