Thursday, June 17, 2021

২৯. স্বামী বা মাহরাম পুরুষ ছাড়া মহিলাদের হজ্জ বা উমরা আদায় Marriage education series

 No photo description available.

 

 

স্বামী বা মাহরাম পুরুষ ছাড়া মহিলাদের হজ্জ বা উমরা আদায়
➖➖➖➖➖➖➖
প্রশ্ন: আমি উমরা ও হজ্জ আদায় করতে চাই। আমার মনে বারবার আল্লাহ ঘর দেখার তাড়না হচ্ছে। কিন্তু আমার মাহরাম কেউ রাজি নয়। আমার বাবা, ভাই, স্বামী কেউ যেতে চান না। আমার বোনের স্বামী ও বোন যাবে। বোন জীবিত অবস্থায় কি তার স্বামী আমার মাহরাম হিসেবে গণ্য হবে? আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আমার স্বামী রাজি হয়ে যান।
উত্তর:
দোয়া করি, আল্লাহ তাআলা আপনার বায়তুল্লাহর জিয়ারতের স্বপ্ন পূরণ করুন।
অতঃপর, ইসলামে স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষ ব্যতিরেকে মহিলাদের জন্য দূরের সফর নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষ ব্যতিরেকে হজ/ওমরা সফরেও যাওয়া জায়েজ নয়।
এ মর্মে হাদিস হল:
♻ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে নারী আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে জেনে রাখ! তার জন্য অনুমতি নেই যে, সে আপন স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর সমান দূরত্বে একাকী ভ্রমণ করবে। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১৩৩৮)
♻ কোন নারী হজ্জের উদ্দেশ্যেও মক্কাতেও একাকী যেতে পারে না:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কোন নারী নিজ মাহরাম সঙ্গী ছাড়া একাকী সফর করবে না। ”
তখন উপস্থিত এক সাহাবী আরজ করলেন, “আমি তো অমুক জিহাদে যাচ্ছি। আর এ দিকে আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে যাচ্ছে। (আমি কি করবো)? জিহাদে বের হবো, নাকি স্ত্রীর সাথে হজ্বের সফরে বের হব।? কারণ আমি ছাড়া তার অন্য কোন মাহরারম সঙ্গী নেই।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
“তুমি জিহাদে না গিয়ে তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্বের সফরে যাও।” (সহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৩০০৬)
💠 বোনের স্বামী আপনার জন্য মাহরাম নয়। কেননা আপনার বোন বেঁচে থাকা অবস্থায়ও তাকে তালাক দিয়ে আপনাকে বিয়ে করা তার জন্য জায়েয রয়েছে। সুতরাং আপনার বোন বেঁচে থাকা অবস্থায়ও সে আপনার জন্য মাহরাম নয়।
অত:এব আপনার বোন ও তার স্বামীর সাথে আপনার সফর করা বৈধ হবে না। দোয়া করি, আল্লাহ যেন আপনার স্বামীর অন্তরে আল্লাহর ঘর জিয়ারতের আগ্রহ সৃষ্টি করে দেন। আমিন।
▪▪▪▪▪▪▪▪
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
FB//AbdullaahilHadi

 

২৮. প্রসূতি নারী কত দিন নাপাক থাকে? এ সময় কি স্বামীর সাথে এক বিছানায় শোয়া যাবে? Marriage education series

 May be an image of text that says 'প্রসূতি নারী কত দিন নাপাক থাকে? এ সময় কি স্বামীর সাথে এক বিছানায় শোয়া যাবে? আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল'

 

প্রসূতি নারী কত দিন নাপাক থাকে? এ সময় কি স্বামীর সাথে এক বিছানায় শোয়া যাবে?
▬▬▬◆◯◆▬▬▬
প্রশ্ন: সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পরে একজন প্রসূতি নারী কত দিন পর্যন্ত নাপাক থাকে? এ সময় সে যদি তার স্বামীর সাথে এক বিছানায় শোয় তাহলে স্বামীও কি নাপাক হবে?
উত্তর:
❖ ১. সন্তান জন্মের পরে প্রসূতি মহিলাদের নেফাসের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৪০ দিন। এই সময় একজন মহিলা নাপাক অবস্থায় থাকে। উম্মে সালামা রা. বর্ণিত হাদিসে এসেছে:
كانتِ النُّفساءُ على عهدِ رسولِ اللَّهِ صلَّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ تقعدُ بعدَ نفاسِها أربعينَ يومًا أو أربعينَ ليلةً
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে নেফাস তথা প্রসূতি নারীরা চল্লিশ দিন বিরতি নিত”। (সহিহ আবু দাউদ, হা/৩১১-আলবানি)
❖ ২. এই নাপাক অবস্থায় তার জন্য, সালাত, সিয়াম, কাবা ঘরের তওয়াফ, স্বামী সহবাস করা ইত্যাদি বৈধ নয়।
❖ ৩. এ অবস্থায় স্বামী সহবাস ছাড়া স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি শোয়া, একে অপরকে স্পর্শ করা, আদর-সোহাগ ও আনন্দ-বিনোদন করা সবাই জায়েজ। এতে স্বামী নাপাক হবে না। এ সময় তার সাংসারিক সকল কাজ করাই বৈধ। প্রসূতি মহিলা রান্নাবান্না বা বাড়ির কোন কাজ করতে পারবে না...এটা কুসংস্কার। ইসলামে কুসংস্কারের স্থান নাই।
❖ ৪. এই সময় ছুটে যাওয়া নামাজগুলো কাজা করার প্রয়োজন নেই তবে ফরজ রোজা গুলো পরবর্তীতে স্বাভাবিক অবস্থায় কাজা করে নিতে হবে।
হাদিসে এসেছে:
كانت المرأةُ من نساءِ النبيِّ تَقعُدُ في النِّفاسِ أربعين ليلةً لا يَأمُرُها النبيُّ بقضاءِ صلاةِ النِّفاسِ
“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের কারো নিফাস হলে চল্লিশ দিন বিরতি নিতেন। তিনি তাকে নিফাস অবস্থার সালাত কাজা করার নির্দেশ দিতেন না”। (ইরওয়াউল গালিল, হা ২০১-হাসান)
❖ ৫. ৪০ দিনের আগে যখনই রক্ত বন্ধ হয়ে হবে তখনই গোসল করে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে এবং যথারীতি নামায, রোযা ইত্যাদি শুরু করতে হবে।
❖ ৬. ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও যদি স্রাব চালু থাকে তাহলে তা রোগ হিসেবে গণ্য হবে। এ সময় সে নিম্নাংশে একটা কাপড় বেঁধে বা আন্ডার ওয়্যার পরিধান করে নিবে- যেন রক্তস্রাব পা দিয়ে নিচে গড়িয়ে না পড়ে এবং প্রত্যেক ওয়াক্তে আলাদাভাবে করে ওযু করে সালাত আদায় করবে। এক ওয়াক্তের ওযু দ্বারা একাধিক ওয়াক্তের সালাত আদায় করবে না।
আল্লাহু আলাম।
 
▬▬▬◆◯◆▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব