Tuesday, July 27, 2021

দ্রুত বিয়ে ও উত্তম স্ত্রী কিংবা স্বামী পাওয়ার আমল

 

দ্রুত বিয়ে ও উত্তম স্ত্রী কিংবা স্বামী পাওয়ার আমল:
 
▪️আমাদের জীবনে সেটাই ঘটবে যা আল্লাহ তাআলা আমাদের ভাগ্যে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই পেরেশান হওয়ার কিছু নেই৷ আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা চাই৷ আল্লাহ বলেন:
 
قُلْ لَنْ يُصِيْبَنَا إِلاَّ مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا
▪️অর্থ: তুমি বল, আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন, তা ব্যতীত কিছুই আমাদের নিকট পৌঁছবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক।
➖(সুরা তওবা: ৫১)
▪️তবে বেশি বেশি করে দুআ করবেন৷ কারণ দুআ অনেক পাওয়ারফুল আমল৷ আল্লাহ তাআলা আম্বিয়ায়ে কেরামের আমলের মধ্যে দুআর বিষয়টি পবিত্র কুরআনে বারবার উল্লেখ করেছেন৷ হাদিসে এসেছে-
لاَ يَرُدُّ الْقَضَاءَ إِلاَّ الدُّعَاءُ
▪️অর্থ: ভাগ্য পরিবর্তন হয় না দুআ ব্যতীত।➖(তিরমিযী: ২১৩৯)
▪️অতিদ্রুত হালাল, উত্তম ও সম্মানজনক রুজি এবং উত্তম ও দ্বীনদার স্ত্রী কিংবা স্বামী পাওয়ার জন্য বেশি বেশি করে মুসা আলাইহিস সালাম কৃত দুআটি পড়তে পারেন:
 
رَبِّ اِنِّیۡ لِمَاۤ اَنۡزَلۡتَ اِلَیَّ مِنۡ خَیۡرٍ فَقِیۡرٌ
▪️অর্থ: হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাযিল করবে, আমি তার মুখাপেক্ষী। ➖(সুরা কাসাস: ২৪)
▪️উত্তম জীবনসঙ্গী, নেককার সন্তান-সন্ততির জন্য আল্লাহ তাআলার শিখিয়ে দেয়া কুরআনি এই দুআটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপক অর্থপূর্ণ:
 
رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّاجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا.
▪️অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।
➖(সুরা ফুরকান:৭৪)
▪️বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তিগফার করুন। কারণ এটা রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম একটি আমল। আর, আপনার জীবনের প্রতিটি নিয়ামত ও প্রশান্তি আপনার রিজিকেরই অন্তর্ভুক্ত। নফল সাদাকা করুন৷ বেশি করে সালাতুল হাজত পড়ে আল্লাহর নিকট সাহায্য চান। কারণ এটা দ্রুত বিয়ে ও দ্বীনদার স্বামী/স্ত্রী পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আমল।
▪️আর হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই৷ আল্লাহ তাআলা আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন৷ রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
 
ﺛَﻠَﺎﺛَﺔٌ ﺣَﻖٌّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻮْﻧُﻬُﻢْ: ﺍﻟﻤُﺠَﺎﻫِﺪُ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟﻤُﻜَﺎﺗَﺐُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻷَﺩَﺍﺀَ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﻛِﺢُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻌَﻔَﺎﻑَ
▪️অর্থ: তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ্ তাআলার জন্য কর্তব্য হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলার রাস্তায় জিহাদকারী, চুক্তিবদ্ধ গোলাম যে তার মনিবকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পদ আদায় করে মুক্ত হতে চায় এবং ওই বিবাহে ইচ্ছুক ব্যক্তি যে (বিবাহ করার মাধ্যমে) পবিত্র থাকতে চায়।
➖(আমি : ১৬৫৫, নাসায়ী: ৩২১৮)
▪️ধৈর্যধারণ করে এই আমলগুলো করতে থাকুন৷ আল্লাহ তাআলার প্রতি দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন৷ শীঘ্রই ব্যবস্থা হয়ে যাবে
ইন শাআল্লাহ।
_এডমিন✅

সবচেয়ে সুস্বাদু পাপ - গীবত

 May be an image of one or more people and text that says 'সবচেয়ে সুস্বাদু পাপ পাপ "গীবত" FAYSAL AHMED'

 

আমাদের অনেকের সমস্যা হচ্ছে, ঠিক কোন গুলো গীবত তা ধরতে না পারা । এখানে বেশ কয়েক প্রকারের গীবত নিয়ে আলোচনা করা হলো"‼️🥺
(১) খাবারের গীবত :
নিকৃষ্টতম গীবত হল খাবারের গীবত করা । একজন মানুষ কষ্ট করে রান্না করে, আর সবাই মিলে রান্নার বদনাম করতে থাকে । খাবারের গীবত বেশি হয় বিয়ে বাড়িতে ।
যেমন বলা, খাবারটা মজা হয় নাই, লবণ কম হইছে, এত লবণ দিয়েছে যে তিতা লাগছে ইত্যাদি ।
নবী(স:) কখনই খাবারের দোষ ধরতেন না । ভালো না লাগলে এক পাশে সরিয়ে রাখতেন । কখনই বলতেন না, কী খাবার রান্না করেছে মুখেই দেয়া যাচ্ছে না !
(২) দৈহিক কাঠামোর গীবত :
কারো কাছে কোন ব্যক্তির দৈহিক ত্রুটি উল্লেখ করাও গীবত ।
যেমন বলা, অমুক ব্যক্তি খুব মোটা, তার নাক বোঁচা, চোখ খুবি ছোট, চোখে দেখে না, মাথায় তো চুল নাই, পেটে ভূড়ি আছে, সে তো খুবি খাট ইত্যাদি ।
তো কোন ব্যক্তির আড়ালে অন্য কারো সাথে যদি আপনি ঐ ব্যক্তির দৈহিক কাঠামো নিয়ে এরকম আলোচনা করেন তাহলে তা গীবত হয়ে যাবে ।
"একবার আয়েশা(রা:) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল ! আপনি কী সাফিয়ার বেঁটে হওয়াটা অপছন্দ করেন না ?
রাসূল(স:) বললেন, হে আয়েশা ! তুমি এমন একটি কথা বললে যা নদীর পানির সাথে মিশিয়ে দিলে তার উপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে ।"
(আবু দাউদ )
(৩) পোশাকের গীবত :
এভাবে বলা, অমুকের পোশাক খাট, কেমন কালারের জামা-কাপড় পরে দেখতে বিশ্রি লাগে, ঐ মেয়ে এত ফিটিং ওয়ালা পোশাক পরে, অমুক তো পাতলা ড্রেস পরে ইত্যাদি ।
" একবার আয়েশা(রা:) বলেন, অমুক স্ত্রীলোকের আচল খুব লম্বা । রাসূল(স:) একথা শুনে বললেন, হে আয়েশা ! তোমার থুথু ফেলা কর্তব্য । আয়েশা(রা:) বলেন, আমি থুথু ফেললে মুখ থেকে গোশতের একটি টুকরা বের হয়ে আসে ।"
(আত তারগীব ওয়াত তারহীব)
(৪) বংশের গীবত :
তুচ্ছ করার জন্য কাউকে বলা, অমুকের বংশ নিচু, অমুকের পূর্ব পুরুষেরা ছিল কূলি মজুর বা চোর ডাকাত ইত্যাদি, অমুকের তো কোন বংশই নেই ইত্যাদি বলা ।
"নবী(স:) বলেন, দীনদ্বার ও সৎকর্ম ব্যতীত কোন ব্যক্তির অপর কোন ব্যক্তির উপর শ্রেষ্ঠত্ব্য নেই ।"
(আব্দুর রহমান আশ-শারানী)
(৪) অভ্যাস বা আচার-আচারণের গীবত :
কোন ব্যক্তির আচার ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করা । যেমন, সে মানুষকে কষ্ট দিয়ে কথা বলে, ব্যবহার খারাপ, অভদ্র, পেটুক, অলস, সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘুমায় ইত্যাদি ।
একবার সালমান ফারসী(রা:) আহার করে শুয়ে পড়লেন । দুই ব্যক্তি তার খাওয়া ও শোয়ার ধরণ নিয়ে সমালোচনা করলে নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হয়,
"তোমরা পরস্পরের গীবত কর না । "
(সুরা হুজরাত : ১১)
(ইবনে জুরাইহ এর সূত্রে দুররুল মানছুরে)
(৫) ইবাদতের গীবত :
ইবাদতের ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে সমালোচনা করা । যেমন, কাউকে গিয়ে বলা অমুকতো ঠিকমত নামায পরতে পারে না, মাকরুহ ওয়াক্তে নামায পরে, রমযানের রোজা রাখে না, এত বড় হইছে কিন্তু এখনো নামায পড়ে না, এত বড় মেয়ে কুরআন পড়তে জানে না ইত্যাদি ।
"তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে কতক লোক ঘুমিয়ে থাকলে শেখ সাদী(রহ:) তাদের সমালোচনা করেন এবং বলেন, এই লোকগুলো যদি তাহাজ্জুদ পড়তো তবে কতই না ভালো হত । সাদীর পিতা একথা শুনে বলেন, কতই না ভালো হত যদি তুমি তাহাজ্জুদ না পড়ে এদের মত ঘুমিয়ে থাকতে । তাহলে এদের গীবত করার পাপ তোমার ঘাড়ে চাপত না ।"
(ইহয়া উলূমিদ-দীন)
(৬) গুনাহের গীবত :
যেমন বলা, অমুক যেনা করেছে, অমুক মানুষের নামে বদনাম করে, বাবা-মা কে কষ্ট দেয়, মিথ্যা কথা বলে, হিংসুক, অমুকের মেয়ে প্রেম করে ছেলে নিয়ে রাস্তা দিয়ে ঘুড়ে বেড়ায় ইত্যাদি ।
(৭) অভিনয়/ইশারা-ইংগিতের মাধ্যমে গীবত :
কোন ব্যক্তির অসহায় অবস্থা অভিনয়ের বা ইশারা-ইংগিতের মাধ্যমে দেখানো । যেমন, অন্ধ, বোবা, খুরা ইত্যাদি সেজে দেখানো । এমনকি সমালোচনার জন্য কারো চালচলন, কথা, পোশাক ইত্যাদি নকল করে অভিনয় করাটাও গীবত । সরাসরি নামোল্লেখ না করে এমন কিছু ইংগিতবহ উপমা ব্যবহার করে দোষ বর্ণনা করা যে লোকেরা উপমা শুনেই বুঝে ফেলে কার কথা বলা হচ্ছে । অর্থাৎ গীবত করার সময় নাম না নিলেও এমন ভাবে কোন ব্যাক্তির দোষ-ত্রুটি বলা যে মানুষের আর বুঝতে বাকি থাকে না কার কথা বলা হচ্ছে, এটাও গীবত পর্যায়ে পড়বে ।
"রাসূল(স:) বলেন, আমি পরানুকরণ পছন্দ করি না, এত এত সম্পদের বিনিময়েও না ।"
(তিরমিযি)
(৭) কানের গীবত :
নিজে না বললেও কারো গীবত শোনা এবং শোনার সময় কোনরুপ বাধা না দেয়া কানের গীবত । গীবত দুই ভাবে হয় -
(১) মুখে বলে
(২) কানে শোনে
গীবত বলা ও শোনা সমান পাপ ।
"রাসূল(স:) বলেছেন, গীবত শ্রবণকারীও গীবতকারীদের একজন ।"
(তাবরানী)
(৮) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে গীবত :
নিজের হাত, পা, চোখ ইত্যাদির মাধ্যমে অন্য লোকের নিকট কোন ব্যক্তির দোষ বর্ণনা করা ।
যে ব্যক্তি চোখ এবং হাতের ইশারার দ্বারা মানুষদের কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি । এবং হুতামাহ নামক জাহান্নামটি তাদের জন্যও প্রস্তুত রয়েছে ।
যেমন, কোন ব্যক্তি কোন মজলিস থেকে উঠে চলে যাওয়ার পর তার প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য চোখ অথবা হাতের ব্যবহার করা ।
"খর্বাকৃতি এক মহিলা মহানবী(স:) এর নিকট আগমন করলো । তার চলে যাওয়ার পর আয়েশা(রা:) তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্য হাতের দ্বারা তার প্রতি ইংগিত করেন । মহানবী(স:) বলেন, হে আয়েশা ! তুমি তো তার গীবত করলে ।" (বায়হাকী)
ভুল ত্রুটিগুলো(পোস্ট এ কোন ভুল থাকলে) ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে।
Copied