Sunday, January 5, 2025

দুঃখ ও দুশ্চিন্তার সময় পড়ার দো‘আ

যদি কোন দুয়া সম্পর্কে হাদিসে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, ওই দুয়া পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা কষ্ট কে আনন্দে রূপান্তরিত করবেন তাহলে সেই দুয়া কেমন গুরুত্ব দেওয়া উচিত?! 

তেমন ই একটা দুয়া হাদিসে আছে। আলহামদুলিল্লাহ। মুখস্থ করে আমলের চেষ্টা করি। 

দুঃখ ও দুশ্চিন্তার সময় পড়ার দো‘আ #

اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ عَبْدُكَ، اِبْنُ عَبْدِكَ، اِبْنُ اَمَتِكَ، نَاصِيَتِيْ بِيَدِكَ، مَاضٍ فِيَّ حُكْمُكَ، عَدْلٌ فِيَّ قَضَاؤُكَ، اَسْاَلُكَ بِكُلِّ اِسْمٍ هُوَ لَكَ، سَمَّيْتَ بِهٖ نَفْسَكَ، اَوْ اَنْزَلْتَهٗ فِيْ كِتَابِكَ، اَوْ عَلَّمْتَهُ اَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ، اَوِ اسْتَاْثَرْتَ بِهٖ فِيْ عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ، اَنْ تَجْعَلَ الْقُرْاٰنَ رَبِيْعَ قَلْبِيْ، وَنُوْرَ صَدْرِيْ، وَجَلَاۤءَ حُزْنِيْ، وَذَهَابَ هَمِّيْ 

হে আল্লাহ! আমি আপনার বান্দা, আপনারই এক বান্দার পুত্র এবং আপনার এক বাঁদীর পুত্র। আমার কপাল (নিয়ন্ত্রণ) আপনার হাতে; আমার উপর আপনার নির্দেশ কার্যকর; আমার ব্যাপারে আপনার ফয়সালা ন্যায়পূর্ণ। আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি আপনার প্রতিটি নামের উসীলায়; যে নাম আপনি নিজের জন্য নিজে রেখেছেন অথবা আপনি আপনার কিতাবে নাযিল করেছেন অথবা আপনার সৃষ্টজীবের কাউকেও শিখিয়েছেন অথবা নিজ গায়েবী জ্ঞানে নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছেন—আপনি কুরআনকে বানিয়ে দিন আমার হৃদয়ের প্রশান্তি, আমার বক্ষের জ্যোতি, আমার দুঃখের অপসারণকারী এবং দুশ্চিন্তা দূরকারী।

আব্দুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ রদ্বিয়াল্লহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বলেছেন: “যে কোনো ব্যক্তি যদি কখনো দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠাগ্রস্ত অবস্থায় বা দুঃখ বেদনার মধ্যে নিপতিত হয়ে উপরের বাক্যগুলি বলে দু‘আ করে, তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তার দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠা দূর করবেনই এবং তার বেদনাকে আনন্দে রূপান্তরিত করবেন।” উপস্থিত সাহাবীগণ বলেন : তাহলে আমাদের উচিত এ বাক্যগুলো শিক্ষা করা। তিনি বললেন : “হাঁ, অবশ্যই, যে এগুলো শুনবে তার উচিত এগুলো শিক্ষা করা।” হাদীসটির সনদ গ্রহণযোগ্য। 

বি. দ্র. মহিলারা এ দুআ পাঠ করলে দুআর শুরুতে বলবেন: “আল্লা-হুম্মা ইন্নী আমাতুকা, ওয়া বিনতু আবদিকা ওয়া বিনতু আমাতিকা ...”, অর্থাৎ: হে আল্লাহ আমি আপনার বান্দী, আপনার (একজন) বান্দার কন্যা, আপনার এক বান্দীর কন্যা ....।

আহমাদ ১/৩৯১, নং ৩৭১২ আর শাইখ আলবানী তাঁর সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ গ্রন্থে ১/৩৩৭ একে সহীহ বলেছেন।

Saturday, January 4, 2025

_মুমিন হয়েও পরকালে যাদের শাস্তি পেতে হবে..._

*_মুমিন হয়েও পরকালে যাদের শাস্তি পেতে হবে..._* 

(মাহমুদ হাসান ফাহিম)

আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের বিশ্বাসমতে,কোনো ইমানদার ব্যক্তি কাফেরদের মতো চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকবে না। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী,৩৪ শ্রেণির গুনাহগার মুসলমানের কথা পাওয়া যায়,যারা পরকালীন জীবনের শুরুতে কৃত অপরাধের জন্য জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে,এরপর জান্নাতে প্রবেশ করবে। যথা—

১.প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী (সহিহ মুসলিম: ৬৬)।

২.অহংকারী (সহিহ মুসলিম: ১৩১)।
 
৩.পরচর্চাকারী (সহিহ মুসলিম: ১৫১)। 

৪.আত্মহত্যাকারী (সহিহ বুখারি: ৫৪৪২)। 

৫.আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী (সহিহ বুখারি: ৫৫২৫)।

 ৬.হারাম ভক্ষণকারী (সুনানে বায়হাকি: ৫৫২০)। 

৭.খোঁটাদানকারী।
 
৮.অবাধ্য সন্তান। 

৯.মদ্যপানকারী (সুনানে নাসায়ি: ৫৫৭৭)। 

১০.অন্যকে নিজের পিতা পরিচয়দাতা (সহিহ বুখারি: ৬২৬৯)। 

১১.দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে যারা ইলম শেখে (সুনানে আবু দাউদ: ৩১৭৯)। 

১২.তাকদির (ভাগ্য) অস্বীকারকারী (আহমদ: ৬/৪৪১)। 

১৩.জ্যোতিষ। 

১৪.জাদুকর (মুসনাদে আহমদ)। 

১৫.ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি (সুনানে নাসায়ি: ১৯৬০)। 

১৬.পুরুষের বেশধারী নারী। 

১৭.পরিবারের সদস্যদের ধর্মহীনতায় উদাসীন (মুসতাদরাকে হাকেম: ২২৬)।

 ১৮.আল্লাহর রাসুলের নাফরমান (সহিহ বুখারি: ৬৭৩৭)। 

১৯.ওয়ারিশকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিতকারী (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২৬৯৪)।

২০. ব্যভিচারী। 

২১. মিথ্যাবাদী শাসক

২২.অহংকারী গরিব (সহিহ মুসলিম: ১০৭)

২৩.গোড়ালির নিচে কাপড় পরা ব্যক্তি। 

২৪.মিথ্যা শপথ করে পণ্য বিক্রেতা (সুনানে নাসায়ি: ২৫৬৩)

২৫.যে মহিলা অকারণে তালাক চায় (তিরমিজি: ১১০৮)।

২৬.চুক্তিবদ্ধ অমুসলিমকে হত্যাকারী (সহিহ বুখারি)

২৭.অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎকারী (সহিহ মুসলিম: ১৯৬)। 

২৮.বিশ্বাসঘাতক শাসক (বুখারি: ৬৬১৮)। 

২৯.দাড়ি-চুলে মেহেদি ছাড়া কালো কলপ ব্যবহারকারী (সুনানে আবু দাউদ: ৪২১২)

৩০.অশ্লীলভাষী

৩১.উগ্র মেজাজি। 

৩২.কটুভাষী (আবু দাউদ: ৪১৬৮)

৩৩.উলঙ্গ-অর্ধ উলঙ্গ নারী (সহিহ মুসলিম-২১২৮)

৩৪.মানুষের বাহবা কুড়াতে ইবাদতকারী (সহিহ মুসলিম: ৩৫২৭)।