বদনজর থেকে যেভাবে বাঁচবেন!
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
This is not a blog only-you will get almost everything helpful, educational materials and so on here with the passage of time.
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
ছোট করেই লিখি। বিয়ের জন্য কি কি বিষয় দেখা লাগবে সেগুলো মোটামুটি আমাদের আইডিয়া আছে। কারও না থাকলে কোনো আলেমের কাছে গেলেই বলে দিবেন ইন শা আল্লাহ।
আমি যেটা বলতে চাই তা হল, বিয়ের আগেই মেয়ের/ছেলের পরিবার কবিরাজ আসক্ত কিনা ভালমত যাচাই করে নিবেন। কিভাবে যাচাই করা যেতে পারে তার কয়েকটি টিপস দিচ্ছিঃ
১। ঘরে তাবিজ টাইপের কিছু ঝুলানো আছে কিনা। ঘর বন্ধের জন্য নকশা ঝুলায়।
২। আপনার মা/বোন যেন মেয়েকে খুটিয়ে দেখে গলায়, বাহুতে, কোমড়ে তাবিজের অস্তিত্ব বোঝা যায় কিনা।
৩। একই ভাবে মেয়ের ফ্যামিলির মেম্বাররা ছেলের ফ্যামিলিতে খোজ নিতে গিয়ে তাদের ঘর ও সদস্যদের উপর সূক্ষ্মভাবে অনুসন্ধান করলেই বোঝা যাবে ইন শা আল্লাহ।
৪। আশেপাশে কোনো মাজার আছে কিনা। সেই মাজারের কোনো কাহিনি আছে কিনা (ভুয়া গল্প টাইপের)। কৌশলে কথা তুললেই বের হয়ে আসবে ভিতরের খবর ইন শা আল্লাহ।
এভাবে নিজেই চিন্তা করে বের করবেন আর কিভাবে জানা যেতে পারে।
যদি খোজ না নেন, আর ওমন কোন ফ্যামিলিতে বিয়ে করেন/হয় তাহলে মেয়ের জামাই যেন মেয়ের কথা শুনে এই টাইপের ঘটনা ঘটতে পারে। ছেলে যেন বউকে দেখতে না পারে এই টাইপের ঘটনা ঘটতে পারে। (আল্লাহ হেফাজত করুন। আমি বলছি না ঘটবেই।)
তাছাড়া কোনো কিছু হলেই তারা কবিরাজের কাছে, বাবার কাছে দৌড় দেয়। আপনি সুস্থ হলেও নানান কিছু বলে এটা সেটা করে আপনার সিভিয়ার অসুস্থ করবে বা অসুস্থতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। পরিস্থিতি চরম পরিনতির দিকে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়।
কি করা? ভালভাবে বোঝানো। বুঝলে তো আলহামদুলিল্লাহ, বিয়ের পাশাপাশি দাওয়াতি কাজ হল। আর না বুঝলে আপনার সিদ্ধান্ত আপনি কি করবেন।
রুকইয়া শারইয়াহ বিষয়ে অনেক লম্বা চওড়া লেখা আছে, ইতোমধ্যে আমাদের রুকইয়াহ শারইয়াহ সিরিজও শেষ। আল্লাহর অনুগ্রহে “রুকইয়াহ” (আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ) নামে একটি বইও প্রকাশ হয়েছে। এসব যায়গায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আজ আমরা সংক্ষেপে রুকইয়াহ পরিচিতি এবং বিভিন্ন সমস্যার জন্য রুকইয়াহ করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো। বলতে পারেন এই লেখাটি অতীত ও ভবিষ্যতের পুরো রুকইয়াহ সিরিজের সারাংশ।
প্রবন্ধটির প্রথম সংস্করণ ১৭ই জুন ২০১৭তে প্রকাশ হয়েছিল। এরপর অনেক কিছু সংশোধন এবং সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। এটি পঞ্চম সংস্করণ। এখানে আরও কিছু যোগ করার পরামর্শ থাকলে জানাবেন, আর কোনো পুস্তক-পত্রিকা অথবা ফেসবুকের বাহিরে অন্য কোথাও প্রকাশ করতে চাইলে অনুগ্রহ করে অনুমতি নিবেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিফাজত করুন। আমীন!
রুকইয়া, রুকইয়াহ, রুকিয়া, রুকিয়াহ, রুকাইয়া সহ বিভিন্ন উচ্চারণ প্রচলিত রয়েছে, যার মূল হচ্ছে আরবি শব্দ (رقية) আর শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ রুকইয়াহ অথবা রুকইয়া।
রুকইয়াহ কী? - রুকইয়াহ অর্থ ঝাড়ফুঁক করা, মন্ত্র পড়া, তাবিজ-কবচ, মাদুলি ইত্যাদি। আর রুকইয়াহ শারইয়্যাহ (رقية شرعية) মানে শরিয়াত সম্মত রুকইয়াহ, কোরআনের আয়াত অথবা হাদিসে বর্ণিত দোয়া দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা। তবে স্বাভাবিকভাবে ‘রুকইয়া’ শব্দটি দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা বুঝায়। এই ঝাড়ফুঁক সরাসরি কারো ওপর হতে পারে, অথবা কোনো পানি বা খাদ্যের ওপর করে সেটা খাওয়া অথবা ব্যাবহার করা হতে পারে। এক্ষেত্রে রুকইয়ার পানি, অথবা রুকইয়ার গোসল ইত্যাদি পরিভাষা ব্যবহার হয়। আর সবগুলোই সালাফে সালেহিন থেকে বর্নিত আছে।
রুকইয়ার বিধানঃ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “রুকইয়াতে যদি শিরক না থাকে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই।” (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৫৪৪)
বিশুদ্ধ আক্বিদাঃ উলামায়ে কিরামের মতে রুকইয়া করার পূর্বে এই আক্বিদা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া উচিত ‘রুকইয়া বা ঝাড়ফুঁকের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই, সব ক্ষমতা আল্লাহ তা’আলার, আল্লাহ চাইলে শিফা হবে, নইলে নয়।’
ফিক্বহী বিধানঃ ফক্বিহদের মতে রুকইয়াহ বৈধ হওয়ার জন্য ৪ শর্ত পূরণ হওয়া আবশ্যক, যথা-
১. এতে কোন শিরক বা কুফরির সংমিশ্রণ না থাকা।
২. ঝাড়ফুঁকের নিজের কোন সক্ষমতা আছে; এমন কোন বিশ্বাস না রাখা। বরং বিশ্বাস করা, আল্লাহর ইচ্ছাতেই এর প্রভাব হয়, আল্লাহর হুকুমেই এর দ্বারা আরোগ্য হয়।
৩. এখানে পাঠ করা জিনিসগুলো স্পষ্ট আরবি ভাষায় হওয়া।
৪. যদি অন্য ভাষায় হয়, তবে এমন হওয়া; যার অর্থ স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে।
রুকইয়া প্রকারভেদঃ বিভিন্ন ভাবে রুকইয়া করা হয়, যেমনঃ দোয়া বা আয়াত পড়ে ফুঁ দেয়া হয়, মাথায় বা আক্রান্ত স্থানে হাত রেখে দোয়া/আয়াত পড়া হয়। এছাড়া পানি, তেল, খাদ্য বা অন্য কিছুতে দোয়া অথবা আয়াত পড়ে ফুঁ দিয়ে খাওয়া এবং ব্যাবহার করা হয়।
পূর্বশর্তঃ রুকইয়া করে উপকার পেতে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন।
১. নিয়্যাত (কেন রুকইয়া করছেন, সেজন্য নির্দিষ্টভাবে নিয়াত করা)
২. ইয়াক্বিন (এব্যাপারে ইয়াকিন রাখা যে, আল্লাহর কালামে শিফা আছে)
৩. মেহনত (অনেক কষ্ট হলেও, সুস্থ হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরে রুকইয়া চালিয়ে যাওয়া)।
লক্ষণীয়ঃ রুকইয়ার ফায়দা ঠিকমতো পাওয়ার জন্য দৈনন্দিনের ফরজ অবশ্যই পালন করতে হবে, পাশাপাশি সুন্নাতের প্রতিও যত্নবান হতে হবে। যথাসম্ভব গুনাহ থেকে বাঁচতে হবে। (মেয়েদের জন্য পর্দার বিধানও ফরজ) ঘরে কোনো প্রাণীর ছবি / ভাস্কর্য রাখা যাবেনা। আর সুরক্ষার জন্য সকাল-সন্ধ্যার মাসনুন আমলগুলো অবশ্যই করতে হবে। আর ইতিমধ্যে শারীরিক ক্ষতি হয়ে গেলে, সেই ঘাটতি পোষানোর জন্য রুকইয়ার পাশাপাশি ডাক্তারের চিকিৎসাও চালিয়ে যেতে হবে।
আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ:
বদনজর আক্রান্ত হওয়ার অনেকগুলো লক্ষণ রয়েছে, এরমাঝে কয়েকটি হচ্ছে-
বদনজরের জন্য রুকইয়াহ:
যদি বুঝা যায় অমুকের জন্য নজর লেগেছে, তাহলে তাকে অযু করতে বলুন, এবংওযুর পানি গুলো আক্রান্তের গায়ে ঢেলে দিন। এরপর চাইলে ভালো পানি দিয়ে গোসল করুন। এতটুকুতেই নজর ভালো হয়ে যাবে ইনশা-আল্লাহ।
আর বদনজরের সেলফ রুকইয়া হচ্ছে, বদনজরের রুকইয়া তিলাওয়াত করবেন, অথবা তিলাওয়াত শুনবেন (ডাউনলোড লিংক নিচে)। এর পাশাপাশি ১ম অথবা ২য় নিয়মে রুকইয়ার গোসল করবেন। আর এভাবে লাগাতার ৩ থেকে ৭ দিন করবেন। প্রয়োজনে কয়েকদিন বিরতি দিয়ে আবার শুরু করুন, প্রতিদিন কয়েকবার রুকইয়া শুনুন, আর একবার রুকইয়ার গোসল করুন। এভাবে সমস্যা ভালো হওয়া পর্যন্ত করতে থাকুন। সমস্যা ভালো হওয়ার পরেও কয়েকদিন রুকইয়াহ করা উচিত।
১ম নিয়ম: একটা বালতিতে পানি নিবেন। তারপর পানিতে দুইহাত ডুবিয়ে যেকোনো দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক্ব, নাস, শেষে আবার কোনো দরুদ শরিফ-সব ৭বার করে পড়বেন। পড়ার পর হাত উঠাবেন এবং এই পানি দিয়ে গোসল করবেন।
২য় নিয়ম: একটা বালতিতে পানি নিন। ওপরের দোয়া-কালামগুলো পড়ুন আর মাঝেমাঝে ফুঁ দিন। এরপর ওই পান ইদিয়ে গোসল করুন।
৩য় নিয়ম: (জাদুর সমস্যার জন্য বিশেষভাবে উপকারী বরই পাতার গোসল) ৭টা বরই পাতা বেটে পানিতে গুলিয়ে নিন, এবং সেখানে আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস, ফালাক, নাস- ৩বার করে পড়ে ফুঁ দিন। এরপর এই পানি থেকে তিন ঢোক পান করুন, আর বাকিটা দিয়ে গোসল করুন।
(যদি টয়লেট আর গোসলখানা একসাথে থাকে, তাহলে অবশ্যই বালতি বাহিরে এনে এসব পড়বেন। প্রথমে এই পানি দিয়ে গোসল করে এরপর চাইলে অন্য পানি দিয়ে ইচ্ছামত গোসল করতে পারেন। যার সমস্যা সে পড়তে না পারলে অন্য কেউ তার জন্য পড়বে, এবং অসুস্থ ব্যক্তি শুধু গোসল করবে।)
আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ:
জিন দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার অনেকগুলো লক্ষণ রয়েছে, এরমাঝে কয়েকটি হচ্ছে-
জ্বিনের আসরের জন্য রুকইয়াহ:
যিনি রুকইয়া করবেন তিনি প্রথমে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে নিজের শরীরে হাত বুলিয়ে নিবেন। এরপর রুকইয়া শুরু করবেন। রুগীর পাশে বসে জোর আওয়াজে রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়তে থাকুন। রুকইয়ার অনেক আয়াত আছে সেগুলো শেষে বলা হবে। তবে জ্বিনের রোগীর রুকইয়ার জন্য স্বাভাবিকভাবে-
১. সুরা ফাতিহা
২. আয়াতুল কুরসি
৩. বাকারার শেষ ২ আয়াত
৪. সুরা ইখলাস, ফালাক, সুরা নাস। সম্ভব হলে এর সাথে-
৫. সুরা মু’মিনুনের ১১৫-১১৮ নং আয়াত
৬. সুরা সফফাতের প্রথম ১০ আয়াত এবং
৭. সুরা জিনের ১-৯ আয়াত পড়া যেতে পারে।
জ্বিন ছেড়ে দেয়া পর্যন্ত এগুলো বারবার পড়তে থাকুন, পড়ার মাঝেমাঝে রুগীর ওপর ফুঁ দিতে পারেন, (বৈধ ক্ষেত্রে) মাঝেমাঝে রুগীর মাথায় হাত রেখে পড়ুন। আর পানিতে ফুঁ দেয়ার পর মুখে এবং হাতে-পায়ে ছিটিয়ে দিন। জিন কথা বলতে শুরু করলে মাঝেমাঝে তাকে চলে যাওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দিতে হবে, এরপর আবার অবিরত তিলাওয়াত চালু রাখতে হবে। জ্বিনের রুগীর ক্ষেত্রে সাধারণত কথাবার্তা বলে জ্বিন বিদায় করতে হয়। এক্ষেত্রে জ্বিনের কথায় ঘাবড়ানো যাবেনা, তার কথা সহজে বিশ্বাসও করা যাবে না। হুমকিধামকি দিলে তাকেই উল্টা ধমক দিতে হবে। মোট কথা, যিনি রুকইয়া করবেন তাঁকে উপস্থিতবুদ্ধির পরিচয় দিতে হবে। একদিনে না গেলে পরপর কয়েকদিন কয়েকঘন্টা করে এভাবে রুকইয়া করে যেতে হবে। ইনশাআল্লাহ এক পর্যায়ে জ্বিন পালাতে বাধ্য হবে।
বাড়িতে জ্বিনের কোনো সমস্যা থাকলে পরপর তিনদিন পূর্ন সুরা বাক্বারা তিলাওয়াত করুন, এরপর আযান দিন। তাহলে ইনশাআল্লাহ সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে। তিলাওয়াত না করে প্রতিদিন যদি সুরা বাক্বারা প্লে করা হয় তাহলেও ফায়দা পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে সবচেয়ে ভালো ফল পেলে তিলাওয়াত করা উচিত। এরপর প্রতিমাসে অন্তত এক দুইদিন সুরা বাকারা পড়বেন। অধিক ফায়দার জন্য চাইলে সুরা বাকারা পড়া শেষে পানিতে ফুঁ দেয়ার পর পুরো বাড়িতে ছিটিয়ে দিতে পারেন।
আর ঘরে প্রবেশের সময়, বের হবার সময়, দরজা-জানালা বন্ধের সময় বিসমিল্লাহ বলবেন। সন্ধ্যা বেলায় জানালা বন্ধ রাখবেন। ঘরে কোন প্রাণী বা মানুষের ছবি অথবা মূর্তি ঝুলিয়ে রাখবেন না। ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই সমস্যা কেটে যাবে।
জাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিকে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ:
অনেক সময় যাদু করতে জ্বিনের সাহায্য নেয়া হয়, তাই যাদুগ্রস্ত রোগীর মাঝে জিন আক্রান্তের কিছু লক্ষণও দেখা যেতে পারে। এছাড়াও যাদুগ্রস্ত রোগীর মাঝে কিছু বিশেষ লক্ষণ দেখা যেতে পারে। যেমন:
যাদু আক্রান্ত হলে বুঝার উপায়:
ওপরের এক বা একাধিক লক্ষণের সাথে মিল পাওয়া যাবে। আর যাদু আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়লে, অথবা অডিও শুনলে অস্বাভাবিক অনুভূতি হবে। যেমন, প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, বমি আসা, বুক ধড়ফড় করা, শরীর অবশ হয়ে আসা ইত্যাদি।
জাদুর সমস্যার জন্য রুকইয়া:
সমস্যার ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার রুকইয়াহ করতে পরামর্শ হয়। তবে প্রসিদ্ধ সেলফ রুকইয়া হচ্ছে- প্রথমে সমস্যার জন্য নিয়াত ঠিক করে, ইস্তিগফার দরুদ শরিফ পড়ে শুরু করুন। তারপর রুকইয়ার আয়াতগুলো পাঠ করে অথবা কোন রুকইয়া শুনে নিশ্চিত হয়ে নিন আসলেই সমস্যা আছে কি না! শাইখ সুদাইস অথবা লুহাইদানের রুকইয়া শুনতে পারেন (ডাউনলোড লিংক নিচে)। সবশেষে একটি পাত্রে পানি নিন, এরপর নিচের আয়াতগুলো ৩বার অথবা ৭বার করে পড়ুন, পড়ার মাঝেমাঝে পানিতে ফুঁ দিন-
ক. সুরা ফাতিহা এবং আয়াতুল কুরসি
খ. সুরা আ'রাফ ১১৭-১২২, ইউনুস ৮১-৮২ সুরা ত্বহা ৬৯নং আয়াত
١. وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُوْنَ - فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوْا يَعْمَلُونَ - فَغُلِبُوْا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوْا صَاغِرِيْنَ - وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِيْنَ -قَالُوْا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ - رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُوْنَ -
٢. فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُمْ بِهِ السِّحْرُۖ إِنَّ اللّٰهَ سَيُبْطِلُهُۖ إِنَّ اللّٰهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِيْنَ - وَيُحِقُّ اللّٰهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْكَرِهَ الْمُجْرِمُونَ -
٣. وَأَلْقِ مَافِي يَمِيْنِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوْاۖ إِنَّمَا صَنَعُوْا كَيْدُ سَاحِرٍۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتٰى -
গ. এরপর সুরা ইখলাস, ফালাক্ব, নাস- সব ৩বার করে।
সমস্যা অনুযায়ী সাতদিন অথবা এরচেয়ে বেশি সময় যাবত প্রতিদিন সকাল-বিকাল এই পানি খেতে হবে, এবং গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে হবে। আর জাদুর সমস্যার থেকে সুস্থতা লাভের নিয়াত করে প্রতিদিন রুকইয়ার আয়াতগুলো তিলাওয়াত করতে হবে, অথবা দেড়-দুইঘণ্টা রুকইয়ার অডিও শুনতে হবে। কোন ক্বারির সাধারণ রুকইয়া একবার, আর সুরা ইখলাস, ফালাক, নাসের রুকইয়াহ একাধিকবার (ডাউনলোড লিংক নিচে)। এর পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া করতে হবে।
এভাবে রুকইয়াহ করার পর সপ্তাহ শেষে আপনার অবস্থা পর্যালোচনা করুন, প্রয়োজনে চিকিৎসার মেয়ার বাড়িয়ে নিন। রুকইয়াহ চলাকালীন সমস্যা বেড়ে গেলেও বাদ দিবেন না, হাল ছাড়বেন না। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া পর্যন্ত রুকইয়া অবিরত রাখুন।
দ্বিতীয়ত: শুরুতে বর্ণনা করা রুকইয়ার গোসলগুলোর মাঝে ৩য় পদ্ধতিটি জাদুর চিকিৎসায় খুব উপকারী। সমস্যা বেশি হলে প্রথমে কয়েকদিন উল্লেখিত নিয়মে বরই পাতার গোসল করে এরপর সেলফ রুকইয়াহ শুরু করা যেতে পারে। ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুতই জাদুর সমস্যা থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন।
যাদুর কোন জিনিশ অথবা তাবিজ খুঁজে পেলে:
সন্দেহজনক কোন তাবিজ পেলে অথবা কি দিয়ে যাদু করেছে যদি পাওয়া যায়, তাহলে সেসব বের করে আলাদা আলাদা করে ফেলুন, কোন গিরা বা বাধন থাকলে কেটে ফেলুন, শক্ত কিছু দিয়ে বাধা থাকলে ভেঙ্গে ফেলুন। এরপর একটা পাত্রে পানি নিয়ে ওপরে বলা জাদুর রুকইয়ার আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন, এরপর তাবিজ অথবা যাদুর জিনিশগুলো ডুবিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, তাহলে ইনশাআল্লাহ যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। পরে সেগুলো পুড়িয়ে বা নষ্ট করে ফেলুন।
একসাথে যাদু, জ্বিন কিংবা বদনজর সম্পর্কিত একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে প্রথমে কিছুদিন বদনজরের জন্য রুকইয়া করতে হবে, এরপর জ্বিনের জন্য এবং যাদুর জন্য রুকইয়া করতে হবে। এর মাঝেমাঝে শারীরিক রোগব্যাধির জন্য চিকিৎসা নেয়া বা ডাক্তারের ঔষধ সেবন করতেও কোন সমস্যা নেই। কিন্তু রুকইয়াহ করার কারণে ব্যাথা শুরু হলে এজন্য ঔষধ খাবেন না। বরং রুকইয়ার গোসল করলে অনেকটা স্বস্তি পাবেন ইনশাআল্লাহ।
আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ:
সমস্যা বেশিদিন পুরনো হয়ে গেলে এসব থেকে আরও শারীরিক-মানসিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর জিন সংক্রান্ত কোন সমস্যা (জিনের বদনজর বা জিনের আসর) থাকলেও ওয়াসওয়াসার সমস্যা প্রকট হতে পারে।
ওয়াসওয়াসার প্রতিকার-
১. এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়া। প্রতি নামাজের আগে-পরে, অন্যান্য ইবাদতের সময়, কোন গুনাহের জন্য ওয়াসওয়াসা অনুভব করলে এটা পড়া -
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ، مِنْ غَضَبِهٖ وَعِقَابِهِ، وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَ مِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِيْنِ، وَأَنْ يَّحْضُرُوْنِ
ঈমান নিয়ে সংশয় উদিত হলে পড়া (সুরা হাদীদ, আয়াত নং ৩)
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْم
[এছাড়া "আমানতু বিল্লাহ বলা" এবং "সুরা ইখলাস পড়ার" কথাও বর্ণিত হয়েছে] এবং এরপর ওয়াসওয়াসা পাত্তা না দিয়ে অন্য কিছুতে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া।
২. পুরুষ হলে জামাআতের সাথে নামাজ পড়া, মুত্তাকী পরহেজগারদের সাথে উঠাবসা করা।
৩. নামাজে ওয়াসওয়াসা হলে বামে হালকা করে ৩বার থুতু ফালানো। আর রাকাত ভুলে গেলে- মনে থাকা কম সংখ্যাটা ধরে, এরপর প্রতি রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়া, আর নামাজের শেষে সাহু সাজদা দেয়া।
৫. সকাল-সন্ধ্যায় ও ঘুমের আগের আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করা। টয়লেটে প্রবেশের দোয়া পড়া।
৬. আয়াতুল হারক (আযাব এবং জাহান্নাম সংক্রান্ত আয়াত) বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। এবং প্রতিদিন এসবের তিলাওয়াত শোনা। (ডাউনলোড লিংক নিচে)
৭. সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক, নাস - ৩বার করে। এরপর শুধু সুরা নাস অনেক বার (৭বার/৩৩বার/আরও বেশি) পড়ে পানি আর অলিভ অয়েলে ফুঁ দেয়া। এরপর সুস্থতার নিয়াতে প্রতিদিন ২-৩ বেলা এই পানি পান করা। মাথায় এবং বুকে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা।
৮. বদনজর বা জিনের সমস্যা থাকলে সে অনুযায়ী রুকইয়াহ করা। যথাসম্ভবত ওয়াসওয়াসা পাত্তা না দেয়া; ইগনোর করা, এমনকি মুখে বিরক্তির ভাবও প্রকাশ না করা। আর আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকা।
বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের রুকইয়ার জন্য রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কিরাম রা. এবং বিভিন্ন যুগের সালাফদের থেকে অনেক দু’আ-কালাম পাওয়া যায়, সুস্থতা লাভের নিয়াতে সেসব গুরুত্বের সাথে পড়া।
যেমন, কোরআন থেকে প্রসিদ্ধ কয়েকটি রুকইয়া হচ্ছে- সুরা ফাতিহা, ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস এবং ৬টি আয়াতে শিফা- (সূরা তাওবাহ/১৪, ইউনূস/৫৭, নাহল/৬৯, বানী ইসরাইল/৮২, শু’আরা/৮০, ফুসসিলাত/৪৪)
١. وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ
٢. وَشِفَاء لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
٣. يخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ
٤. وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
٥. وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
٦. قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاء
এছাড়া রাসুল স. থেকে বর্ণিত রুকইয়ার উপযোগী অনেক দো’আ আছে, যেমন-
١.اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ، اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
٢. بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللَّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
٣. بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ، وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ
٤. اَسْأَلُ اللهَ الْعَظِيْم، رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْم، اَنْ يَّشْفِيَكْ
٥. بِسْمِ اللَّه، بِسْمِ اللَّه، بِسْمِ اللَّه، أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللَّهِ وَقُدْرَتِهِ، مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ
এসব আয়াত এবং দোয়াগুলো ৩বার অথবা ৭বার পড়ুন, ব্যাথার যায়গায় অথবা রুগীর মাথায় হাত রেখে পড়ুন, অথবা এসব পড়ার পর রুগীর ওপর ফুঁ দিন। পানিতে ফুঁ দিয়ে পান করুন, গোসল করুন অথবা অলিভ অয়েলে ফুঁ দিয়ে মালিশ করুন। মধু-কালোজিরায় ফুঁ দিয়ে প্রতিদিন পানিতে গুলিয়ে খান। এসবের পাশাপাশি শাইখ লুহাইদান অথবা সা’দ আল গামিদির রুকইয়াহ শোনা যেতে পারে। (ডাউনলোড লিংক নিচে)
শুরুতে মনে মনে নিয়াত করে নিন কোন সমস্যার জন্য রুকইয়াহ করবেন, এরপর শিশুর মাথায় হাত রেখে কয়েকবার এই দুয়াটি পড়ুন, আর মাঝেমাঝে দিন। চাইলে সাথে ওপরের দোয়াগুলোও পড়া যেতে পারে।
أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
এরপর সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি এবং সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস - ৩ বার করে পড়া।
সমস্যার মাত্রা বেশি হলে উল্লেখিত পদ্ধতিতে রুকইয়া করা শেষে আরেকবার এগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে পান করান এবং গোসল করান। সমস্যা ভালো হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন রুকইয়াহ এবং এই কাজগুলো করতে থাকুন। এছাড়া কোন অঙ্গে বিশেষ রোগব্যাধি থাকলে এসব দোয়া-কালাম পড়ে অলিভ অয়েল বা কালোজিরার তেলে ফুঁ দিয়ে প্রতিদিন মালিশ করা।
ছোটদের পাশাপাশি বড়দের মাঝে কেউ নিজে নিজে রুকইয়াহ করতে অক্ষম হলে তার ওপরেও একই নিয়মে রুকইয়াহ করা যায়।
কোরআন মাজিদের বিভিন্ন আয়াত দ্বারা রুকইয়া করা হয়, তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ কিছু আয়াত হচ্ছে-
এই আয়াতগুলো একসাথে পিডিএফ করা অবস্থায় নিচে লিংক দেয়া ওয়েবসাইটে পাবেন।
১. প্রতিটি কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা। যেমন, খাবার পূর্বে, ঘরে ঢুকতে - বের হতে, দরজা-জানালা বন্ধ করতে ইত্যাদি।
২. বিষ, যাদু এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে সকাল-সন্ধ্যায় এই দোয়া তিনবার পড়াঃ
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি, মিং-শাররি মা-খলাক্ব। (জামে তিরমিযী, ৩৫৫৯)
৩. সব ধরনের ক্ষতি এবং বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকতে এই দোয়া সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার পড়াঃ
بِسْمِ اللهِ الَّذِيْ لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِه شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيْعُ العَلِيْمُ
বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা-ইয়াদ্বুররু মা‘আসমিহী, শাইউং ফিলআরদ্বী ওয়ালা- ফিসসামা-ই, ওয়াহুওয়াস সামি’উল ‘আলীম। (জামে তিরমিযী, ৩৩৩৫)
৪. প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস তিনবার করে পড়া। এবং এটা বিশেষ গুরুত্বের সাথে করা। (সুনানে আবি দাউদ)
৫. ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া। সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়ে হাতের তালুতে ফু দিয়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নেয়া। (বুখারী)
৬. টয়লেটে ঢোকার পূর্বে দোয়া পড়া-
اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা, মিনাল খুবসি ওয়াল খবা-ইছ। (মুসলিম, ৩৭৫)
৭. তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া। প্রতিদিনের অন্যান্য মাসনুন আমল করতে থাকা। এবং আল্লাহর কাছে সবসময় দোয়া করতে থাকা।
___________
(সংক্ষেপে বিভিন্ন সমস্যার জন্য ইসলাম সম্মত ঝাড়ফুঁক)
- রচনায়: আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ
- প্রথম প্রকাশ: ১৭ – জুন – ২০১৭
- সর্বশেষ আপডেট: (৫.০) পঞ্চম সংস্করণ, ০৭ – আগস্ট – ২০১৯
- রুকইয়াহ অডিও ডাউনলোড: https://ruqyahbd.org/download
- রুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপ: https://facebook.com/groups/ruqyahbd
- রুকইয়াহ বিষয়ক অন্যান্য তথ্যের জন্য: www.ruqyahbd.org
আশফিয়া – শিফাউন এর বহুবচন, যার অর্থ আরোগ্য। কোরআনুল কারিম এবং হাদিসে যেসব মেডিসিন এবং হার্বসকে শিফা এবং বরকতময় বলা হয়েছে, আমাদের এই ৭দিনের কোর্সটি হচ্ছে সেগুলোর একটি সম্মিলিত প্রয়োগ। এজন্যই এটার নাম রাখা হয়েছে ‘আল-আশফিয়া’ The Collection of cures!
এটি শাইখ আদিল বিন তাহির মুকবিল হাফিযাহুল্লাহুর দেয়া প্রেসক্রিপশন। উনার চাকুরীই হচ্ছে যাদুকরদের গ্রেফতার করে অথরিটির হাতে তুলে দেয়া আর যাদুর জিনিসপত্র ধ্বংস করা। অর্থাৎ ডিরেক্টর অব ডেস্ট্রয়িং ম্যাজিক!
আমাদের আলোচ্য প্রেসক্রিপশনটি বিশেষভাবে যাদু, জিন, বদনজর এবং এর পাশাপাশি অন্যান্য কঠিন শারীরিক ব্যাধির চিকিৎসাতে খুবই ফলপ্রসূ। কারও সমস্যা যদি অনেক প্রকারের কিংবা অনেক বেশি হয়, তখন সেটাকে একটা মাত্রায় আনার জন্য আমরা ডিটক্স সাজেস্ট করে থাকি। এছাড়া এই রুটিনটা “সার্বজনীন পূর্ণ রুকইয়াহ প্রোগ্রামে” প্রোগ্রামের মাঝেও প্রেসক্রাইব করা হয়েছে।
“সার্বজনীন পূর্ণ রুকইয়াহ প্রোগ্রামে”
শুরুর কথা
আজ আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। এটাকে বলা যায় “কমন রুকইয়াহ রুটিন।”
আরেকটু বিস্তারিত বললে, এটি একটি সার্বজনীন রুকইয়াহ গাইড, যা যাদু – জিন –
বদনজর অথবা অন্যান্য যেসব রোগের জন্য রুকইয়াহ রিকমেন্ড হয়, সবগুলোতে
আক্রান্তরা আমভাবে এটা অনুসরণ করতে পারেন। তাই যাদের সমস্যা অনেক বেশি এবং
অনেক প্রকারের, তারা চাইলে প্রতিটা সমস্যার জন্য বিশেষ বিশেষ রুকইয়ার নিয়ম
না ফলো করে, একভাবে এই রুটিন অনুসরণ করে দেখুন, ইনশাআল্লাহ যথেষ্ট উপকার
হবে।
উল্লেখ্য, আজকে আলোচ্য সাজেশনগুলো উস্তায
তিম হাম্বল সচরাচর দিয়ে থাকেন। আমি উনার পদ্ধতি হুবহু ভাষান্তর না করে,
প্রয়োজন মাফিক কিছু করা যোগ-বিয়োগ করব। এবং নিজের ভাষায় বর্ণনা করবো।
চলুন, আমরা এবার আলোচনা শুরু করি।
যিনি রুকইয়াহ করবেন
১. আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার ওপর তাকে পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে।
২. অবশ্যই প্রতিদিনের ফরজ ইবাদাতগুলো করতে হবে, আর যথাসম্ভব রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের প্রতি যত্নবান হতে হবে।
৩. প্রতিদিনের মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করতে হবে, এবং এগুলোকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। (এবিষয়ে আলাদা লেখা আছে)
৪. রুগীর সাথে কোন তাবিজ রাখা যাবে না। আগে ব্যবহার করেছে এরকম কোন তাবিজ থাকলে, পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলতে হবে।
৫. বাড়ীর পরিবেশ যতদূর সম্ভব পবিত্র রাখতে হবে। কোন প্রাণীর ছবি, ভাস্কর্য,
কুকুর বা এমন কিছু রাখা যাবে না, যা রহমতের ফেরেশতা প্রবেশে বাঁধা হয়, আর
শয়তান প্রবেশের কারণ হয়।
৬. সমস্যা একদম দূর হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর ওপর ভরসা করে, সবরের সাথে রুকইয়া চালিয়ে যেতে হবে।
৭. যথাসম্ভব গুনাহ থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে, আর সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করতে হবে।
প্রতিদিন যা করবেন
১. প্রতিদিন সকাল–সন্ধ্যা এবং ঘুমের আগের
মাসনুন আমল সঠিকভাবে করা। (মেয়েদের অনেকে পিরিয়ডের সময় এসব দোয়া পড়ে না।
এটা বড় ধরনের ভুল কাজ। সেসময় আরও গুরুত্ব দিয়ে আমল করা উচিত। পিরিয়ডের সময়
দোয়া পড়তে কোন মানা নেই।)
২. [রুকইয়া করার নিয়াতে] প্রতিদিন কমপক্ষে পৌনে একঘণ্টা কোরআন তিলাওয়াত
করা। একবারে এতক্ষণ না পড়তে পারলে দুই-তিন বারে পড়া। সম্ভব হলে আরও বেশি
পড়া। সম্ভব হলে সুরা বাকারা পুরাটা পড়ুন, কিংবা বিভিন্ন রুকইয়ার আয়াত রাখুন
আপনার তিলাওয়াত লিস্টে, অথবা কোরআনের যেখান থেকে ইচ্ছা পড়ুন।
আর সুযোগ কম পেলে “সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক, নাস” এগুলো
বারবার পড়ে উল্লেখিত সময় পূরণ করবেন। নিজে তিলাওয়াত করতে না পারলে অন্য কেউ
রুগীর ওপর রুকইয়া হিসেবে পড়বে। একান্ত অপারগ হলে অডিও শুনবে, এক্ষেত্রে
দিগুণ সময় শোনা উচিত। চাইলে কিছুক্ষণ নিজে পড়ে, কিছুক্ষণ অডিও শোনা যেতে
পারে।
৩. বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০ থেকে ১০০বার ইস্তেগফার করা উচিত।
৪. সুস্থতার জন্য প্রতিদিনই দোয়া করা। এক্ষেত্রে আয়াতে শিফা পড়ে দুয়া করা
যেতে পারে, সুস্থতার কিংবা রুকইয়ার জন্য রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত দোয়াগুলো পড়া যেতে পারে।
প্রতি সপ্তাহে যা করবেন
আক্রান্ত ব্যক্তি অথবা অন্য কেউ প্রতি
সপ্তাহে বাড়িতে সুরা বাকারা তিলাওয়াত করবে। উত্তম হচ্ছে, প্রতি তিনদিনে
কমপক্ষে একবার পড়া। যদি প্রতিদিন তিলাওয়াতে সুরা বাকারা শেষ করে, তাহলে
সবচেয়ে ভালো।
যদি পূর্ণ সুরা পড়ার মত কাউকে না পাওয়া যায়, তাহলে অপারগতা হেতু অডিও প্লে
করা যেতে পারে। কিন্তু পড়ার মত কেউ থাকলে অবশ্যই তিলাওয়াত করা উচিত।
প্রতি মাসে যা করবেন
রোগীকে প্রতিমাসে কমপক্ষে ১ বার “সুস্থতার পথে ৭দিন; ডিটক্স প্রোগ্রাম” করতে হবে। আরও ভালো ভালো হয় যদি দুইবার করতে পারে। এক্ষেত্রে সুবিধা মত এক সপ্তাহ করার পর কিছুদিন ব্রেক দিয়ে আবার শুরু করতে পারে, অথবা লাগাতার দুই সপ্তাহ করতে পারে।
যে কাজ মাঝে-মধ্যেই করা উচিত
১. হিজামা করা – খুবই উপকারী চিকিৎসা, রুকইয়াহ করে করে যেসব যায়গায় ব্যথা থাকবে, যেসব অঙ্গে রুকইয়ার বেশি ইফেক্ট হবে, সেগুলোতে হিজামা করানো উচিত। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবিদের বলেছিলেন, “তোমরা যেসব চিকিৎসা করো এর মধ্যে হিজামা সবচেয়ে সেরা।” রাসুলুল্লাহ বিভিন্ন রোগের জন্য হিজামা করিয়েছেন। এক্ষেত্রে হিজামা বা কাপিং থেরাপিতে অভিজ্ঞ কারও সহায়তা নিতে পারেন।
২. আমাদেরকে আপডেট জানানো! – যারা এটা শুরু করবেন, তাদের উচিত হবে একটি ডায়েরি বা নোটবুক হাতের কাছে রাখা, এবং যিনি আপনাকে রুকইয়ার ব্যাপারে গাইড করবেন তাকে অথবা রুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপে মাঝেমাঝে আপনার অবস্থার আপডেট জানানো।
আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে হিফাজত করেন এবং সুস্থতা দান করেন। আমিন!
_____
নোট: এই ৭দিনের ডিটক্স রুকইয়াহ নিয়ে প্লেস্টোরে আমাদের একটি সুন্দর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ আছে। চাইলে দেখতে পারেন, আশা করি ভালো লাগবে। লিংক- https://play.google.com/store/apps/details?id=org.ruqyahbd.detox
_____
আমাদের যা যা দরকার হবে –
১. পানি। সাড়ে তিন থেকে চার লিটার।
২. অলিভ অয়েল। কোরআনুল কারিমে যাইতুনের তেলকে বরকতময় বলা হয়েছে। ১০০মিলি. হলে যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ।
৩. মধু। ২৫০ গ্রাম। আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, মধুর মাঝে মানুষের জন্য শিফা রয়েছে।
৪. কালোজিরা। ৫০গ্রাম। রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের শিফা।
৫. তিলাওয়াতের জন্য কোরআন । আল্লাহ তা’আলা বলেছেন- বিশ্বাসীদের জন্য কোরআনের মাঝে শিফা এবং রহমত রয়েছে।
এসব যদি সংগ্রহ করা হয়ে যায়, তাহলে আমরা শুরু করতে পারি। উপকরণগুলো হাতের কাছে রেখে নিম্নের আয়াতগুলো পড়ুন এবং সেগুলোতে ফুঁ দিন ।
১. সুরা ফাতিহা – ৭বার
২. আয়াতুল কুরসি – ৭বার
৩. সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস – সব তিনবার করে।
৪. সুরা বাক্বারা সম্পূর্ণ।
এক বসাতেই পুরাটা পড়ে শেষ করতে হবে এমন না, একবারে যতটুকু পারবেন পড়বেন, ফুঁ দিবেন। এরপর কোন কাজ থাকলে সেটা শেষ করে এসে বাকিটা পড়বেন, প্রয়োজনে দুই-তিন দিনে প্রস্তুত করবেন, এরপর কোর্স শুরু করবেন। সমস্যা নাই।
এসব পড়ুন আর মাঝে মাঝে পানি অলিভ অয়েল ফুঁ দিন। এরপর মধু ও কালোজিরায় ফু দিন।
এই স্টেপগুলো ঠিকভাবে অনুসরণ করে থাকলে আপনি “সুস্থতার পথে ৭ দিন” প্রোগ্রাম শুরু করার জন্য প্রস্তুত!
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
১. প্রথম ৩দিন ঘুমের আগে মাথা থেকে পায়ের
তালু পর্যন্ত, পুরো শরীরে রুকইয়া করা অলিভ অয়েল মালিশ করবেন। পরের ৪দিন
শরীরের যেসব যায়গায় ব্যথা আছে, শুধু সে জায়গাগুলোতে অলিভ অয়েল ব্যবহার
করুন।
২. এরপর আধা গ্লাস রুকইয়ার পানিতে এক চা চামচ মধু দিন। এর সাথে সাতটা
কালোজিরা মিশিয়ে এটাকে গুলিয়ে খেয়ে ফেলুন। এটাকে শরবত না, বরং ঔষধ মনে করে
খাবেন।
৩. পরেরদিন সকালে ভালোভাবে গোসল করবেন, এই গোসলের পানিতে এক গ্লাস রুকইয়ার পানি মিশিয়ে নিবেন।
(সাবান-শ্যাম্পু ব্যবহার করতে মানা নেই, শীতকালে হালকা গরম পানি ব্যবহার
করতে পারেন বা একটু বেলা হলে গোসল দিতে পারেন, কোন সমস্যা নেই।)
৪. সকালে গোসলের পর আবার আধা গ্লাস রুকইয়ার পানিতে, ১ চামচ মধু এবং ৭টা কালোজিরা গুলিয়ে খেয়ে নিন।
এই কয়দিনে কি ঘটতে পারে?
১. প্রথম দিন হয়তো তেমন কিছুই অনুভব করবেন না। তবে কারো কারো প্রথম দিন থেকেই ইফেক্ট শুরু হয়।
২. দ্বিতীয় এবং তৃতীয়দিন সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। হয়তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন,
প্রচণ্ড দুর্বল লাগবে। অথবা পুরো শরীর বা বিভিন্ন অঙ্গ ব্যথা হয়ে থাকবে।
ভারি ব্যায়াম করলে যেমন ব্যথা হয়, সেরকম হতে পারে।
৩. চতুর্থ দিন থেকে সমস্যা কমতে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ, এবং ৭দিনের প্রোগ্রাম শেষ হতে হতে আল্লাহ চায়তো আপনি একদম ফ্রেশ হয়ে যাবেন।
৪. যদি (আল্লাহ না করুক) ৭ দিন পরেও আপনার যথেষ্ট উন্নতি দেখা না যায়,
তাহলে আপনার উচিত হবে অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট পরামর্শ ফলো করা,
অথবা লাগাতার কয়েকমাস “সর্বজনীন পূর্ণ রুকইয়াহ প্রোগ্রাম” অনুসরণ করা।
৫. আপনার উচিত হবে এই কয়দিন নিজের গুনাহ থেকে ক্ষমা চেয়ে ইস্তেগফার করতে
থাকা। প্রতিদিনের মাসনুন আমলগুলো করা। আর বেশি বেশি দোয়া করা, যেন সপ্তাহ
শেষে আপনি একদম সুস্থ হয়ে যান।
৬. এই কয়দিন চাইলে “রুকইয়াহ অডিও ডাউনলোড”
পেজ থেকে কোন কারির সাধারণ রুকইয়াহ শুনতে পারেন। নিজে তিলাওয়াত করলে আরও
ভালো, সম্ভব হলে রুকইয়ার নিয়াতে প্রতিদিন সুরা বাক্বারা তিলাওয়াত করুন অথবা
মনোযোগ দিয়ে শুনুন। ইনশাআল্লাহ অনেক উপকার হবে।
৭. আর হ্যাঁ! এই রুটিন ফলো করার সময় একটা ডায়েরি বা নোটবুক রাখুন, খুব
সংক্ষেপে আপনার অবস্থা নোট করুন। যেন প্রোগ্রাম শেষে সেটা আপডেট জানাতে
পারেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুস্থ এবং নিরাপদ রাখুন, আমিন।
বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের জন্য রুকইয়া করতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক দু’আ-কালাম পাওয়া যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুগীর মাথায়/কপালে হাত রেখে এসব পড়তেন, কখনো এসব পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে ফুঁ দিতেন। সব এখানে লেখা সম্ভব না, কমন একটা রুকইয়া বলা হচ্ছে। এটা ফলো করলে ইনশাআল্লাহ উপকার পাওয়া যাবে।
কোরআন থেকে প্রসিদ্ধ কয়েকটি আয়াতে রুকইয়া- “সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস, ৬টি আয়াতে শিফা, ৮টি আয়াতে সালাম” এগুলো তিনবার বা সাতবার করে পড়া ।
এর সাথে রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত রুকইয়ার দোয়াগুলো পড়া।
৬টি আয়াতে শিফা (৯/১৪, ১০/৫৭, ১৬/৬৯, ১৭/৮২, ২৬/৮০, ৪১/৪৪)
১.وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ
২. وَشِفَاء لِّمَا فِي الصُّدُورِ
৩. يخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ
৪. وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
৫. وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
৬. قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاء
এরপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত অনেক দো’আ আছে, এর মাঝে কয়েকটি হল-
১.
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ، اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي
لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
২. بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ
شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللَّهُ
يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ
৩. بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ، وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ
৪. اَسْأَلُ اللهَ الْعَظِيْم، رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيْم، اَنْ يَّشْفِيَكْ
৫. بِسْمِ اللَّه، بِسْمِ اللَّه، بِسْمِ اللَّه، أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللَّهِ وَقُدْرَتِهِ، مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ
আয়াতগুলোর উচ্চারণ https://facebook.com/ruqyahdhaka/videos/376534342782043/
শারীরিক অসুস্থতার জন্য রুকইয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি-
১. এগুলো সরাসরি পড়ে রুগীকে ফুঁ দেয়া, বিশেষত আক্রান্ত স্থানে ফুঁ দেয়া।
২. রুগীর মাথায় হাত রেখে পড়া, অথবা ব্যাথার যায়গায় হাত রেখে পড়া।
৩. এসব পড়ার পর কালোজিরার তেল বা অলিভ অয়েলের ওপর ফুঁ দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন, মালিশ করতে পারেন।
৪. পুষ্টিকর কোন খাদ্য, কালোজিরা, মধু, পানি, ভিটামিন অথবা ডাক্তারের দেয়া ঔষধে এগুলো পড়ে ফুঁ দিয়ে খেতে পারেন।
৫. আর এর পাশাপাশি রুকইয়া শুনতে চাইলে “শাইখ হুযাইফি” রুকইয়া এবং সা’দ আল
গামিদির আধাঘণ্টার রুকইয়া শুনতে পারেন। এসবের মাঝে অনেক অনেক দোয়া, আয়াতে
শিফা আছে। (অডিও লিংক – http://bit.ly/ruqyahdownload#qari)
৬. আর রুকইয়ার গোসলও বিভিন্ন অসুখের জন্য খুব উপকারী। (গোসলের পানিতে হাত
রেখে সাতবার করে দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক, নাস
পড়া। সেই পানি দিয়ে গোসল করা।)
ডাক্তারের চিকিৎসা নেয়ার পাশাপাশি পরপর কয়েকদিন উপরোক্ত এক বা একাধিক রুকইয়ার টিপস অনুসরণ করা। এর সাথে আল্লাহর কাছে তাহাজ্জুদ এবং নফল নামাজ পড়ে বেশি বেশি দোয়া করা। সাদকাহ করা।
মানসিক সমস্যার জন্য সুরা ইয়াসিন, সফফাত, দুখান, জ্বিন, তিনকুল – এসব তিলাওয়াত করা খুব উপকারী। এসব হয়তো তিলাওয়াত করেছেন আগেও, কিন্তু এমনি তিলাওয়াত করা আর রুকইয়াহ বা চিকিৎসার নিয়াতে তিলাওয়াত করার মাঝে পুর্ব-পশ্চিম ফারাক।
তো, রুগীর ওপর এসব তিলাওয়াত করা। সমস্যা নিজের হলে, নিজে তিলাওয়াত করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। পাশাপাশি রুকইয়ার গোসল করা যেতে পারে। নিদ্রাহীনতার চিকিৎসাতে এই সুরাগুলোর রুকইয়া আলহামদুলিল্লাহ খুব বেশি উপকারী। তিলাওয়াত করার দুর্বল বিকল্প হিসেবে শোনা যেতে পারে। (অডিও লিংক – http://bit.ly/ruqyahdownload#6)
উসমান ইবনে আবিল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, একবার আমার শরীরে ব্যাথা অনুভব করছিলাম, তখন আমি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এর কাছে এব্যাপারে অনুযোগ করলাম। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন- তোমার হাতটি ব্যাথার যায়গায় রাখো, এরপর তিনবার বল “বিসমিল্লাহ”। তারপর ৭বার বল- “আ’ঊযু বি’ইঝঝাতিল্লা-হি ওয়াক্বুদরাতিহ, মিন শাররি মা-আজিদু ওয়াউহ্া-যির”। : أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللَّهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ […]
৬টি আয়াতে শিফা (৯/১৪, ১০/৫৭, ১৬/৬৯, ১৭/৮২, ২৬/৮০, ৪১/৪৪)
১.وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ
২. وَشِفَاء لِّمَا فِي الصُّدُورِ
৩. يخْرُجُ مِن بُطُونِهَا شَرَابٌ مُّخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاء لِلنَّاسِ
৪. وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
৫. وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
৬. قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاء
মাসনুন আমল
https://allzinone.blogspot.com/2021/05/blog-post_21.html
বদনজর বিষয়ক সবকিছু একসাথে
https://allzinone.blogspot.com/2021/05/blog-post_56.html
জ্বীন বিষয়ক সব একসাথে
https://allzinone.blogspot.com/2021/05/blog-post_13.html
প্রসিদ্ধ বিষয়গুলো সব একসাথে
https://allzinone.blogspot.com/2021/05/blog-post_9.html
শয়তানি ওয়াসওয়াসা বিষয়ে সবকিছু একসাথে
https://allzinone.blogspot.com/2021/05/blog-post_25.html
যাদু বিষয়ক সবকিছু একসাথে Treatment relating to magic illness in a single place
https://allzinone.blogspot.com/2021/05/treatment-relating-to-magic-illness-in.html