Showing posts with label জাদু টোনা. Show all posts
Showing posts with label জাদু টোনা. Show all posts

Monday, August 1, 2022

বদনজর থেকে যেভাবে বাঁচবেন!

 


 

বদনজর থেকে যেভাবে বাঁচবেন!

 

 

 

 

Monday, June 13, 2022

জ্বিন আসরের লক্ষণ এবং জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়

 

জ্বিন আসরের লক্ষণ এবং জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়
----------
আজ শুরুতে আমরা জ্বিন আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ জানবো। গতপর্বে ব্যখা করা হয়েছে, মানুষ কয়েকভাবে জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হয়। আমাদের সমাজে whole body possession বা যেটাকে জ্বিনে ধরা বলে এটাকেই শুধু জ্বিনের সমস্যা ভাবা হয়, পুরো শরীর পজেসড না হলে সচরাচর কেউ বিশ্বাস করে না যে জ্বিন আছে শরীরে। কিন্তু আসলেই এটা সম্ভব যে, কারো শরীরে জ্বিন ঢুকে আছে.. আর দিনের পর দিন ধীরেধীরে সে মানসিক এবং শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখা জরুরী, আমরা যে লক্ষণগুলো আলোচনা করতে যাচ্ছি এক-দুদিন এসব দেখলেই জ্বিন আক্রান্ত হয়েছে ভাববার কারণ নেই, কারণ এগুলো স্বাভাবিক অসুখবিসুখ এর কারণেও হতে পারে। এই লক্ষণগুলো কারো মাঝে যদি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান থাকে, তাহলে ধরে নিবেন সমস্যা আছে।
আলোচনার সুবিধার্থে পজেসড হওয়ার লক্ষণগুলোকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করে নিচ্ছি। ঘুম সংক্রান্ত এবং অন্য সময়ের..।
.
ঘুম সংক্রান্ত লক্ষণ সমূহঃ
১। নিদ্রাহীনতা: যার জন্য সারারাত শুধু বিশ্রাম নেয়াই হয়, ঘুম হয়না
২। উদ্বিগ্নতা: যেজন্য রাতে বার বার ঘুম ভেঙে যাওয়া।
৩। বোবায়ধরা: ঘুমের সময় কেউ চেপে ধরেছে, নড়াচড়া করতে পারছে না। প্রায়ই এমন হওয়া
৪। ঘুমের মাঝে প্রায়শই চিৎকার করা, গোঙানো, হাসি-কান্না করা
৫। ঘুমন্ত অবস্থায় হাটাহাটি করা (Sleepwalking)
৬। স্বপ্নে কোনো প্রাণিকে আক্রমণ করতে বা ধাওয়া করতে দেখা। বিশেষতঃ কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর, উট, সিংহ, শিয়াল, সাপ (*)
৭। স্বপ্নে নিজেকে অনেক উঁচু কোনো যায়গা থেকে পড়ে যেতে দেখা
৮। কোনো গোরস্থান বা পরিত্যক্ত যায়গা, অথবা কোনো মরুভূমির সড়কে হাটাচলা করতে দেখা
৯। বিশেষ আকৃতির মানুষ দেখা। যেমন: অনেক লম্বা, খুবই খাটো, খুব কালো কুচকুচে
১০। জ্বিন-ভুত দেখা
দ্রষ্টব্যঃ যদি স্বপ্নে সবসময় দুইটা বা তিনটা প্রাণী আক্রমণ করতে আসছে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে সাথে দুইটা বা তিনটা জ্বিন আছে।
ঘুম ব্যতীত অন্য সময়ের লক্ষণ
১। দীর্ঘ মাথাব্যথা (চোখ, কান, দাত ইত্যাদি সমস্যার কারণে নয়, এমনিই)
২। ইবাদত বিমুখতা: নামাজ, তিলাওয়াত, যিকির আযকারে আগ্রহ উঠে যাওয়া। মোটকথা, দিনদিন আল্লাহর থেকে দূরে সরে যাওয়া
৩। মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকা, কিছুতেই মন না বসা..
৪। ব্যাপক অলসতা; সবসময় অবসন্নতা ঘিরে রাখা
৫। মৃগীরোগ
৬। শরীরের কোনো অংঙ্গে ব্যাথা কিংবা বিকল হয়ে যাওয়া। ডাক্তাররা যেখানে সমস্যা খুজে পেতে বা চিকিৎসা করতে অপারগ হচ্ছে।
আবারও মনে করিয়ে দেই, শারীরিক রোগের কারণেও এসব হয়ে থাকে। তবে যখন দীর্ঘদিন যাবত যখন এসব লক্ষণ দেখা যাবে, তখন ভাববেন কোনো সমস্যা আছে।
.
জ্বিনের আক্রমণ থেকে বাচার জন্যঃ
আগামী পর্বে হয়তো বাসাবাড়ি থেকে জিন তাড়ানোর পদ্ধতি, এরপর জ্বিনদ্বারা আক্রান্ত রুগীকে রুকইয়াহ করার নিয়ম আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ। তবে পোস্ট অনেক লম্বা হতে পারে। এজন্য দুই পর্বে দেয়ার ইচ্ছা আছে।
যাহোক, আজ সবশেষে খবিস জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে কয়েকটি মৌলিক বিষয় জেনে নিন।
১। জামা'আতে নামাজ আদায় করা। তাহাজ্জুদ পড়া। এই দুটি আপনার আত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
২। গানবাজনা থেকে বিরত থাকা।
৩। সর্বদা পাকপবিত্র থাকা। বিশেষত: ঘুমের আগে অযু করে বিছানায় যাওয়া।
৪। ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া।
৫। সব কাজে বিসমিল্লাহ বলা, বিশেষত: খাবার সময় এবং ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করতে। এছাড়া উঁচু থেকে লাফ দেয়ার সময়, কিছু ফেলার সময়, অন্ধকারে কিছু করার সময়ও বিসমিল্লাহ বলা ভালো।
৬। কুকুর - বিড়াল না মারা, সাপ মারতে চাইলে আগে জোর আওয়াজে ৩বার বলা "জ্বিন হলে চলে যাও.."
৭। কোনো গর্তে প্রসাব না করা। হাদিসে এব্যাপারে পরিষ্কার নিষেধাজ্ঞা আছে।
৮। ঘরে প্রবেশের এবং বের হওয়ার দোয়া পড়া, দোয়া না জানলে অন্তত বিসমিল্লাহ বলা।
৯। সন্ধ্যার সময় ঘরের জানালা বন্ধ করা, বাচ্চাদের বাহিরে বের হতে না দেয়া। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর বাচ্চাদের বের হতে কিংবা জানালা খুলতে পারেন।
১০। স্ত্রী সহবাসের পুর্বে অবশ্যই দু'আ পড়া। বিয়ের প্রথম রাতের দোয়াটি পড়া।
১১। টয়লেটে ঢোকার সময় দু'আ পড়া।
১২। প্রতিদিন "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া 'আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর" ১০০বার পড়া। একশতবার না হলে, অন্তত সকাল - সন্ধ্যায় ১০বার করে পড়া।
১৩। সকাল সন্ধ্যার অন্যান্য মাসনুন আমলগুলো নিয়মিতভাবে প্রতিদিন করা
১৪। সুরা ইখলাস ফালাক নাস, তথা তিনকুল-এর আমল গুরুত্ব সহকারে করা।
আয়েশা সিদ্দীকা রা. থেকে এব্যাপারে চল্লিশটিরও বেশি সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সা. জীবনের শেষ পর্যন্ত এর আমল করেছেন।
আমল হলো, রাসূল সা. প্রতিরাতে ঘুমানোর পূর্বে সূরা ইখলাস তিনবার, সূরা ফালাক তিনবার ও সূরা নাস তিনবার পড়ে দুইহাতের তালুতে ফুঁ দিতেন। ফুঁ এর সাথে হালকা থুতু বেরিয়ে আসতো। এরপর সমস্ত শরীরে হাত বুলিয়ে নিতেন।
দ্বিতীয়ত: প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের নামাযের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সূরা ইখলাস, একবার সূরা ফালাক ও একবার সূরা নাস এভাবে তিন সূরা তিনবার পড়তেন। এসময়ে ফুঁ দেয়া লাগবে না।
হাদীসের শেষাংশে আল্লাহর রাসূল সা বলেন, এআমলই তোমার জন্য যথেষ্ট।অন্য হাদিসের আছে এই সুরাগুলো পড়ে বাচ্চাদের ফুঁ দিয়ে দিতেন।
উপরে উল্লেখিত পরামর্শ বিভিন্ন হাদিস থেকে নেয়া, লেখা দীর্ঘ হয়ে যাবে এজন্য সবগুলো হাদিস উল্লেখ করা সম্ভব হলো না।
আর উপরে বলা কিছু দুয়া [এখানে] পাবেন। এছাড়া বাকিগুলো প্রসিদ্ধ অনেক বইতে পাবেন, যেমনঃ হিসনে হাসিন, গুলজারে সুন্নাহ, হিসনুল মুসলিম। আরো সহজে পাবেন নুরানী মাদরাসার বাচ্চারা একটা নীল রঙের বই পড়ে (নুরানী পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষা এরকম নাম), বেলায়েত সাহেবের লেখা, সেখানে।
যাহোক, অনেকগুলো ব্যাপার আলোচনা হলো, আল্লাহ আমাদের সতর্ক থাকার তাওফিক দিন, আমিন।

Wednesday, June 16, 2021

যাদু-টোনা থেকে সুরক্ষায় সহিহ সুন্নাহ ভিত্তিক আমল

 যাদু-টোনা থেকে সুরক্ষায় সহিহ সুন্নাহ ভিত্তিক আমল
▬▬▬▬◢◯◣▬▬▬▬
প্রশ্ন: আমার স্ত্রী তার গায়ের জামা গোসলের পর বাড়ির প্রাচীরের ভেতরেই রৌদ্রে শুকাতে দেয়। কিন্তু কেউ সেখান থেকে জামার দু স্থান থেকে দুটি অংশ কেটে নিয়ে গেছে।। আমরা ধারণা করছি, কেউ হয়তো আমার স্ত্রীর ক্ষতির জন্য যাদু করবে। এখন কী করণীয়?
উত্তর:
বিশেষজ্ঞগণ বলেন, যাদুকর যার উপর যাদু করতে চায় অনেক সময় তার ব্যবহৃত পোশাকের অংশ, শাড়ির আঁচল, তার ব্যবহৃত চিরুনির দাঁত, মাথার চুল, হাতের নখ, শরীরের চামড়া ইত্যাদি গোপনে সংগ্রহ করে তাতে যাদু করে। (যেমনটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, বনি জুরাইক গোত্রের লাবিদ বিন আসিম নামক এক ইহুদী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথার চুল এবং তার চিরুনির ভাঙ্গা দাঁত এর মাধ্যমে তার উপর যাদু করেছিল।)

সুতরাং উপরোক্ত ঘটনায় যাদুর উদ্দেশ্যই এমনটি করা হয়েছে বলে অনুমান করা যায়। আমরা দুআ করি, মহান আল্লাহ উক্ত বোনটিকে সকল অনিষ্ট থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

  ➧ উল্লেখ্য যে, ইসলামের দৃষ্টিতে যাদু করা বা যাদুবিদ্যা চর্চা করা কুফরি পর্যায়ের গুনাহ।
এটি ঈমান ধ্বংসকারী কার্য সমূহের অন্তর্ভুক্ত। কেউ যদি জেনে-বুঝে যাদু-টোনা করে তাহলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাব। আর ইসলামি ফৌজদারি দণ্ডবিধি আইন অনুযায়ী তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

যাদু থেকে আত্মরক্ষার জন্য সহিহ সুন্নাহ ভিত্তিক করণীয় নিম্নরূপ:

◈ ১. সকাল-সন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস তিনবার করে এবং আয়াতুল কুরসি একবার করে পাঠ করা।
◈ ২. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পর উক্ত তিনটি সূরা এবং আয়াতুল কুরসি একবার করে পাঠ করা।
◈ ৩. রাতে ঘুমানোর পূর্বে দু হাতের তালু একত্রিত করে তাতে ফুঁ দিয়ে উক্ত তিনটি সূরা একবার করে পাঠ করত: মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের উপরিভাগ যতদূর সম্ভব হাত দ্বারা মাসেহ করা। (এভাবে তিন বার করা)
◈ ৪. সূরা বাকারা ও আলে ইমরান পাঠ করা।
আবু উমামাহ আল বাহিলী রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি:
"‏ اقْرَءُوا الزَّهْرَاوَيْنِ الْبَقَرَةَ وَسُورَةَ آلِ عِمْرَانَ فَإِنَّهُمَا تَأْتِيَانِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُمَا غَمَامَتَانِ أَوْ كَأَنَّهُمَا غَيَايَتَانِ أَوْ كَأَنَّهُمَا فِرْقَانِ مِنْ طَيْرٍ صَوَافَّ تُحَاجَّانِ عَنْ أَصْحَابِهِمَا اقْرَءُوا سُورَةَ الْبَقَرَةِ فَإِنَّ أَخْذَهَا بَرَكَةٌ وَتَرْكَهَا حَسْرَةٌ وَلاَ تَسْتَطِيعُهَا الْبَطَلَةُ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ مُعَاوِيَةُ بَلَغَنِي أَنَّ الْبَطَلَةَ السَّحَرَةُ ‏.‏
"তোমরা দুটি উজ্জ্বল সূরা অর্থাৎ সূরা বাকারা এবং আলে ইমরান তিলাওয়াত করো। কিয়ামতের দিন এ দুটি সূরা এমনভাবে আসবে যেন তা দু খণ্ড মেঘ অথবা দুটি ছায়াদানকারী অথবা দুই ঝাঁক উড়ন্ত পাখি যা তার পাঠকারীর পক্ষ হয়ে কথা বলবে। আর তোমরা সূরা বাকারা পাঠ কর। এ সূরাটিকে গ্রহণ করা বরকতের কাজ এবং পরিত্যাগ করা পরিতাপের কাজ। আর বাতিলের অনুসারীগণ এর মোকাবেলা করতে পারে না। হাদিসটির বর্ণনাকারী আবু মুআবিয়াহ বলেছেন, "আমি জানতে পেরেছি যে, বাতিলের অনুসারী বলে যাদুকরদের কথা বলা হয়েছে।" [সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: ৭। কুরআনের মর্যাদাসমূহ ও এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়, পরিচ্ছেদঃ ১০. কুরআন তিলাওয়াত এবং সূরা বাকারা তিলাওয়াতের ফযিলত]
◈ ৫. বিশেষভাবে রাতে সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত তিলাওয়াত করা: (সালাতের মধ্যে হোক বা বাইরে হোক)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
مَنْ قَرَأَ بِالآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ ‏
"যে ব্যাক্তি রাতে সূরা বাকারার শেষ দু আয়াত পাঠ করবে তা তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে।" [সহীহ বুখারী, অধ্যায়: ৫৩/ ফাজায়িলুল কুরআন]
অর্থাৎ যে ব্যক্তি রাতের বেলা সূরা বাকারা শেষ দুটি আয়াত (২৮৫ ও ২৮৬ নং আয়াত তথা “আ-মানার রাসূলু বিমা উনযিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি….থেকে শেষ পর্যন্ত) পাঠ করবে আল্লাহর রহমতে তা জিনের সংক্রমণ, যাদু-টোনা, বদনজর ইত্যাদি সকল প্রকার অনিষ্ট থেকে সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে (একটি অভিমত অনুযায়ী)
 
◈ ৪. এ ছাড়া হাদিসে বর্ণিত নিম্নোক্ত দুআ সমূহ পাঠ করা:

◍ ক. সাহিহ মুসলিমে রয়েছে:
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
‘আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণী সমূহের ওসিলায় তাঁর নিকট আমি তিনি যা সৃষ্টি করেছেন সেগুলোর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই।’ (বিকালে ৩ বার)। [সাহিহ মুসলিম: ৪/২০৮১]।

◍ খ. সাহিহ বুখারিতে রয়েছে,
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় সকল শয়তান ও বিষাক্ত জীব-জন্তু থেকে ও যাবতীয় ক্ষতিকর চোখ (বদ নযর) হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ [সাহীহ বুখারি ৪/১৪৭, নং ৩৩৭১]

◍ গ. আরও এসেছে,
«أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ الَّتِي لَا يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَا فَاجِرٌ، مِنْ شَرِّ مَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَعْرُجُ فِيهَا، وَمِنْ شَرِّ مَا ذَرَأَ فِي الْأَرْضِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا، وَمِنْ شَرِّ فِتَنِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَمِنْ شَرِّ كُلِّ طَارِقٍ إِلَّا طَارِقًا يَطْرُقُ بِخَيْرٍ يَا رَحْمَنُ»
“আমি আল্লাহর ঐ সকল পরিপূর্ণ বাণীসমূহের সাহায্যে আশ্রয় চাই যা কোনও সৎব্যক্তি বা অসৎ ব্যক্তি অতিক্রম করতে পারে না, — আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, অস্তিত্বে এনেছেন এবং তৈরি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে। আসমান থেকে যা নেমে আসে তার অনিষ্ট থেকে এবং যা আকাশে উঠে তার অনিষ্ট থেকে, আর যা পৃথিবীতে তিনি সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, আর যা পৃথিবী থেকে বেরিয়ে আসে, তার অনিষ্ট থেকে, দিনে রাতে সংঘটিত ফেতনার অনিষ্ট থেকে, আর রাতের বেলায় হঠাৎ করে আগত অনিষ্ট থেকে। তবে রাতে আগত কল্যাণকর আগমনকারী ব্যতীত, হে দয়াময়।” (হিসনুল মুসলিম : ২/১৪১)।

◍ ঘ. হাদিসে আরও এসেছে,
«أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ»
“আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণী সমূহের ওসিলায় আশ্রয় চাই তাঁর রাগ থেকে, তাঁর শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে, শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে এবং তাদের উপস্থিতি থেকে।” (আবু দাউদ: ৪/১২, নং : ৩৮৯৩। সাহীহুত- তিরমিযি ৩/১৭১)।

◍ ঙ. এ দুয়াটিও গুরুত্বপূর্ণ:

«حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ»
“আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনও সত্য মা‘বুদ নেই, আমি তাঁর উপরই ভরসা করি, আর তিনি মহান আরশের রব।” (৭ বার)। [সুনানে আবু দাউদ ৪/৩২১ ও হিসনুল মুসলিম ১/৬১)]

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সর্বপ্রকা অনিষ্ট থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
-আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
জুবাইল, সৌদি আরব

Wednesday, May 12, 2021

মাসনুন আমল: যাদু, জ্বিন এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাচার উপায় : যাদুগ্রস্ত ১২

 

মাসনুন আমল: যাদু, জ্বিন এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাচার উপায় : যাদুগ্রস্ত ১২

 

বিসমিল্লাহ! যারা যাদু আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা তো বটেই, তাদের সাথে আমাদের সবারই যাদু এবং জ্বিন-শয়তানের ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিখিয়ে দেয়া আমলগুলো যত্নসহকারে করা উচিত। এগুলোকে মাসনুন আমল অর্থাৎ সুন্নাহসম্মত আমল বলে। এসবের অসাধারণ সব উপকারিতার পাশাপাশি বড় যে লাভ রয়েছে, তা হচ্ছে আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল বাড়ে।

সব সুন্নাতই গুরুত্বপূর্ণ, আর সারাদিনের; বিশেষত সকাল-সন্ধ্যার ফযিলতপূর্ণ অনেক দুয়া ও যিকর হাদিসে আছে, সবকিছু বিস্তারিত এখানে উল্লেখ করা তো সম্ভব না। আর সবসময় সবগুলোর ওপর আমলও সম্ভব না। তাই আমরা এখানে অল্প কিছু মাসনুন দোয়া এবং আমল নিয়ে আলোচনা করবো। এর পাশাপাশি বদনজর থেকে বাচার উপায় (১) এবং জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায় (২) লেখা দুটো দেখতে পারেন।

 

আল্লাহ আমাদের এসবের প্রতি যত্নবান হবার তাওফিক দেন। আমিন।


সংযুক্তি:

➫ প্রতিদিনের মাসনুন আমলগুলো করার সুবিধার্থে এই প্রবন্ধের দোয়াগুলোর সাথে প্রয়োজনীয় আরও অনেক দোয়াসহ একটি অ্যা‌ন্ড্রয়েড অ্যাপ বানানো হয়েছে। যা পাওয়া যাবে এই লিংকে- http://bit.ly/masnun-app

➫ অ্যাপের ওয়েব সংস্করণ আছে এই লিংকে- http://ruqyahbd.org/dua


আর হ্যাঁ! আরবি দোয়া অথবা কোরআনের আয়াতের উচ্চারণ বাংলায় লেখতে আমার কাছে কেমন যেন লাগে! কিন্তু অতীতে এই ধরনের পোস্টে অনেকেই উচ্চারণ চেয়ে পীড়াপীড়ি করেছে, তাই কয়েকটার উচ্চারণ লিখে দিলাম।

 

[ক] সকাল-সন্ধ্যার আমল

১. আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি, মিং-শাররি মা-খলাক্ব।

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ

সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার পড়া। বিষ, যাদু এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে। (জামে তিরমিযী, ৩৫৫৯)

২. বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা-ইয়াদ্বুররু মা‘আসমিহী, শাইউং ফিলআরদ্বী ওয়ালা- ফিসসামা-ই, ওয়াহুওয়াস সামি’উল ‘আলীম।

بِسْمِ اللهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ العَلِيمُ

সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার পড়া। সব ধরনের ক্ষতি এবং বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকতে..। (জামে তিরমিযী, ৩৩৩৫)

৩. সুরা তাওবাহ ১২৯ নং আয়াতের অংশ-

حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ

যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় সাতবার এটি পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তাঁর জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবেন। (সুনানে আবি দাউদ)

৪. সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস: প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে পড়া। সব ধরনের অনিষ্ট থেকে হিফাজতের জন্য এটা রাসুল স. এর শিখানো আমল। (সুনানে আবি দাউদ)

৫. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর

لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ ، وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

প্রতিদিন সকালে ১০০বার পড়া। এর অনেক বেশি ফজিলত, এবং জ্বিন-শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচতে এটা পরিক্ষিত আমল। (বুখারি, মুসলিম হাদিস নং ৪৮৫৭) একশতবার না পারলে, অন্তত ফজর ও আসরের পর ১০বার করে পড়া। (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)

৬. জিন-শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় (১বার) আয়াতুল কুরসি পড়া। (মুসতাদরাকে হাকিম ১/৫৬২)

 

download hd quality image

[খ] ঘুমের আগের আমল

ক. ওযু করে ঘুমানো, তাহলে ফিরিশতারা হিফাজতের জন্য দুয়া করতে থাকে। ডান কাত হয়ে ঘুমানো। এমনিতেও সর্বদা ওযু অবস্থায় থাকা সুন্নাত। (আল-মু’জামুল আওসাত)
খ. শোয়ার পূর্বে কোন কাপড় বা ঝাড়ু দিয়ে বিছানা ঝেড়ে নেয়া। (মুসলিম)
গ. আয়াতুল কুরসি পড়া। (বুখারী) সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া। (বুখারী)
ঘ. সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক, সুরা নাস পড়ে হাতের তালুতে ফু দেয়া, এরপর পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নেয়া। (বুখারী)

[গ] অন্যান্য সময়ের আমল

১. সম্ভব হলে মদিনার আজওয়া খেজুরের ব্যবস্থা করা, না হয় যে কোন আজওয়া খেজুরেও হবে। রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সাতটি আজওয়া খেজুর সকাল বেলায় আহার করবে সেদিন তাকে কোন বিষ ও যাদু ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী)

২. ঘুমের মাঝে ভয় পেলে বা অন্যসময় খারাপ অনুভূতি হলে পড়া

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وشَرّ عِبَادِهِ ، ومِنْ هَمَزَاتِ الشّيَاطِينِ وأَنْ يَحْضُرُونِ

আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লাহিত্তা-ম্মাতি মিন্ গাদ্বাবিহি ওয়া ইক্বা-বিহি ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহি ওয়ামিন হামাযা-তিশ্শায়া-ত্বীনি ওয়া আন ইয়াহ্দুরূন।

৩. টয়লেটে ঢুকার পূর্বে দোয়া পড়া-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ 

আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা, মিনাল খুবসি ওয়াল খবা-ইছ। অর্থ: হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি খারাপ জ্বিন ও খারাপ পরী থেকে। (সহীহ মুসলিম, ৩৭৫)

৪. বিয়ের প্রথম রাতে স্ত্রীর কাছে গিয়ে পড়া [*]

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ

[*] এবিষয়ে প্রচলিত একটি ভুল ধারণা হচ্ছে, অনেকে এটি স্ত্রীর মাথায় হাত রেখেই পড়তে হবে। কিছু হাদিসে মাথায় হাত রেখে পড়ার কথা থাকলেও, প্রসিদ্ধ হাদিসগুলোতে কিন্তু স্ত্রীর কাছে গিয়ে শুধু পড়ার কথা আছে। (সুনানে আবি দাউদ ২২৪৩ এবং ইবনে মাযাহ ১৯০৮ দ্রষ্টব্য)

৫. স্ত্রী সহবাসের পূর্বে দোয়া পড়া।

بِسْمِ اللَّهِ، اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ، وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

বিসমিল্লাহি আল্লা-হুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্বা-না, ওয়া জান্নিবিশ্-শাইত্বানা মা-রযাকতানা। (বুখারী, ৪৮৭০)

৬. দৈনিক একবার হলেও মসজিদে প্রবেশের দোয়া পড়া

أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ مِنْ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: মসজিদে প্রবেশের সময় কেউ এটা পড়লে শয়তান বলে, এই ব্যক্তি আজ সারাদিনের জন্য আমার থেকে রক্ষা পেয়ে গেল। (সুনানে আবি দাউদ, ৩৯৩)

৭. বিসমিল্লাহ বলে দরজা-জানালা লাগানো। খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ বলা।

 

 

 

(১)

বদনজর থেকে বাচার উপায়, কিছু ঘটনা : বদনজর ৩

 

গত পর্বে আমরা বদনজর বিষয়ে সালাফের মতামত এবং বদনজর লাগার কিছু লক্ষণ জেনেছি। আজ বদনজর থেকে বাঁচার উপায় এবং এসম্পর্কিত কিছু সত্য ঘটনা জানবো।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “নিজের প্রয়োজন পূরণ হওয়া পর্যন্ত সেটা গোপন রাখার মাধ্যমে সাহায্য লাভ করো! কেননা, প্রতিটা নিয়ামত লাভকারীর সাথেই হিংসুক থাকে!” (তাবারানী)

এটা নজর এবং হিংসা থেকে বাচার একটা টিপস। নিয়ামত গোপন রাখার মানে হচ্ছে অন্য কারো সামনে অহেতুক নিজের, নিজের সম্পদের, প্রশংসা না করা, সন্তানের প্রশংসা না করা, মেয়েরা নিজ স্বামীর প্রশংসা অন্যদের সামনে না করা, ছেলেরা নিজ স্ত্রীর প্রশংসা অন্যদের সামনে না করা। নিজের প্রজেক্টের প্রপার্টির ব্যাবসার গোপন আলোচনা অন্যদের সামনে প্রকাশ না করা। অনেকে অহেতুক অন্যদের সামনে গল্প করেন, অমুক প্রজেক্টে এতো লাভ হলো, অমুক চালানে এতো টাকার বিক্রি হলো।

মোটকথা: অহেতুক অন্যের সামনে নিজের কোনো নিয়ামতের আলোচনা না করাই উত্তম। প্রসঙ্গক্রমে করলেও কথার মাঝে যিকর করা। যেমনঃ ‘আলহামদুলিল্লাহ্‌, এবছর ব্যাবসায় কোনো লস যায়নি।’ “আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে বেশ ভালো রেজাল্ট করেছে!” “মা-শা-আল্লাহ ভাবি! আপনি তো কাপড়ে অনেক ভালো ফুল তুলতে পারেন!!” ইত্যাদি ইত্যাদি.

শুধু খারাপ মানুষের নজর লাগে এমন কিন্তু না। ভালো মানুষের নজরও লাগতে পারে। বদনজর লাগার আসল কারণ হচ্ছে, আমরা যখন কোনো বস্তুর বা ব্যাক্তির প্রশংসা করি তখন এর মাঝে আল্লাহকে স্মরণ করি না। মা-শা-আল্লাহ, বারাকাল্লাহ বলি না। কোন কিছু দেখলে আমরা ওয়াও, অসাম! বাপরে! কি দেখাইলো মাইরি! হেব্বি হইছে! এক্কেরে ফাডালাইছে-এসব বলি। অথচ আমাদের উচিত ছিলো মা-শা-আল্লাহ, বারাকাল্লাহ, বলা।

সূরা কাহাফে এক ঘটনায় আল্লাহ্‌ বলেন: “যখন তুমি তোমার বাগানে প্রবেশ করলে, তখন ‘মা-শা-আল্লাহ; লা-কুও্ওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ’ (সব আল্লাহর ইচ্ছাতে হয়েছে, আল্লাহ ছাড়া কারো ক্ষমতা নেই) কেন বললে না?” (১৮:৩৯)

এখন অন্য কেউ যদি আপনার কিছুর প্রশংসা করে, তাহলে উনি যিকর না করলে আপনার উচিত হবে যিকর করা। উদাহরণ স্বরুপ কেউ বললো- ভাবি আপনার ছেলেটা তো অনেক কিউট! আপনি বলুন- আলহামদুলিল্লাহ্‌… মনে মনে বলুন- আল্লাহর কাছে বদনজর থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। আপনি অন্যের প্রশংসা করতে গিয়ে কথার মাঝে যিকর করুক। “মাশা-আল্লাহ! আপনার রান্না অনেক সুন্দর।”
আর অধিক পরিমাণে সালামের প্রচলন করুন, ইনশাআল্লাহ হিংসা দূর হয়ে যাবে।

সর্বোপরি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা বদনজর থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাও, কেননা বদনজর সত্য!”

নজর থেকে বাচার একটা দুয়া, রাসুল সা. এটা পড়ে হাসান এবং হুসাইন রা.কে ফুঁ দিয়ে দিতেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই একই দু’আ আমাদের জাতির পিতা ইবরাহীম আ.-ও ইসমাইল আ. এবং ইসহাক আ. এর জন্য পড়তেন। দুয়াটি হচ্ছে-

أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
.
উচ্চারণঃ আ’উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাহ। মিং-কুল্লি শাইত্বনিও ওয়াহা-ম্মাহ। ওয়ামিং-কুল্লি ‘আইনিল্লা-ম্মাহ।
অর্থঃ আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে পানাহ চাচ্ছি।

এই হাদিসটি আছে- বুখারি, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, মুসতাদরাকে হাকেম, তাবারানী, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, মুসনাদে আহমাদ, মুসনাদে বাযযার, মুসান্নাফ, মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকে..

এই দু’আ সকাল-সন্ধ্যায় কয়েকবার পড়ে বাচ্চাদের ফুঁ দিয়ে দিবেন, নিজের জন্যও পড়বেন। ইনশাআল্লাহ তাবিজ-কবচ টোটকা ইত্যাদির কোনো দরকার হবেনা। আল্লাহই হিফাজত করবে।

বদনজর বিষয়ে অনেকগুলো ঘটনা আগেরবার (প্রথম সিরিজে) বলা হয়েছে, সেসব আর উল্লেখ না করি.. আমি আগের পোস্টগুলোর লিংক কমেন্টে দিয়ে দিচ্ছি। তবে সাহল ইবনে হুনাইফ রা. এর ঘটনা; যা মুয়াত্তা মালেক, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাযাহ এবং নাসাঈ শরিফে আছে! সেটা এটা এখানে না বললেই নয়.

সাহল ইবনে হুনাইফ রাযি. কোথাও গোসলের জন্য জামা খুলেছিলেন। উনি বেশ সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন। বদরী সাহাবী আমির ইবনে রবী’আ রাযি. তাঁকে দেখতে পেয়ে বললেন, এতো সুন্দর মানুষ আমি জীবনে দেখিনি। এমনকি এত সুন্দর কোন যুবতীকেও দেখিনি। আমির রাযি. কথাটা বলার পরপরই সাহাল রাযি. সেখানে বেহুশ হয় পড়ে গেলেন। তাঁর গায়ে জ্বর চলে আসলো। মারাত্মক জ্বরে ছটফট করতে লাগলেন হযরত সাহাল রাযি.।
অন্য সাহাবিরা রাসূল সা. কে জানালেন, সংবাদ পেয়ে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবস্থা দেখতে আসলেন। সাহল রাযি. কে হঠাৎ করে এমনটা হবার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি ঘটনাটা খুলে বললেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন: “তোমরা কেন তোমাদের ভাইকে নজর দিয়ে হত্যা করছো?” আমির ইবনে রবী’আকে ডেকে বললেন: “তুমি যখন তাকে দেখলে, তখন আরো বরকতের দু’আ কেন করলেনা? বারাকাল্লাহ কেন বললে না?” (অর্থাৎ দুয়া করলে নজর লাগতো না)
এরপর প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন আমির রাযি. কে বললেন: অজু কর! আমির রাযি. অজু করলেন। অতঃপর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর নির্দেশে অযুর পানি সাহল এর গায়ে ঢেলে দিলেন। আল্লাহর রহমতে কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন।”
এটা বিশুদ্ধ সনদে নাসাঈ এবং ইবনে মাজাহতে বর্ণিত প্রসিদ্ধ একটি ঘটনা, যা থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। আমরা বুঝতে পারি, ভালো মানুষের নজরও লাগতে পারেরে, এখানে আমির ইবনে রবিয়া রা. তো বদরি সাহাবি, বদরী সাহাবিদের আগের পরের সব গুনাহ মাফ!! এরকম মানুষের নজর লেগেছে, সেখানে অন্যরা কোন ছার..

আরেকটা হাদিস, উম্মুল মুমিনিন হাফসা রা. কোনো সাহাবির বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন, ফিরে এসে রাসুল সা.কে ওদের হালহাকিকত শোনালেন। বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওই সাহাবির সন্তানরা প্রায় সময় অসুস্থ হয়ে থাকে.. রাসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আসলে বদনজর তাদের দিকে খুব দ্রুত কাজ করে!”
আসমা রা. এর ব্যাপারেও এরকম ঘটনা পাওয়া যায়.. (হাদিসগুলো সহীহ মুসলিমে  আছে)

আমার বাড়ির একটা গল্প বলি, এবার ছুটিতে গিয়ে আম্মুকে আমার বদনজর নিয়ে লেখা আগের প্রবন্ধগুলো দেখালাম। সেখানে “বদনজর মানুষকে কবর পর্যন্ত আর উটকে রান্নার পাতিল পর্যন্ত পৌঁছে দেয়!” হাদিসটা দেখিয়ে আমি হাসতে হাসতে বললাম ‘হাদিসটা মজাদার না’?!!
আম্মু দেখি মন খারাপ করে বলছে- কয়েকদিন আগে আমার একটা মুরগী মরে গেছে..
জিগাইলাম কিভাবে?
আম্মু বলছে- “সন্ধ্যায় সব মুরগিকে খাওয়ার দিয়ে আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি, তখন ওই মুরগিটার দিকে তাকায়া বললাম ইশ! এরকম আর একটা মুরগিও হলোনা.. একটা মুরগিও এরকম বড়সড় না, আর এর মতো একটাও ডিম দেয় না… তারপর সব মুরগি কুটিরে উঠেছে, ওই বড়সড় মুরগিটাও উঠেছে। পরদিন সকালে দেখি ওই মুরগিটা আর বের হয়না! পরে কুটিরের ভিতরে তাকায়া দেখি মুরগিটা এক কোণায় মরে পড়ে আছে… একদম ভালো মুরগি, কোনো অসুখ ছিল না, আমার ওই কথাগুলা বলার সময় কি নজর লাগছিল?”
– আমি বললাম.. “হ্যা….”

 

(২)

 

জ্বিন আসরের লক্ষণ এবং জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায় : জিনের স্পর্শ ৪

 

আজ শুরুতে আমরা জ্বিন আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ জানবো। গতপর্বে ব্যখা করা হয়েছে, মানুষ কয়েকভাবে জ্বিন দ্বারা আক্রান্ত হয়। আমাদের সমাজে whole body possession বা যেটাকে জ্বিনে ধরা বলে এটাকেই শুধু জ্বিনের সমস্যা ভাবা হয়, পুরো শরীর পজেসড না হলে সচরাচর কেউ বিশ্বাস করে না যে জ্বিন আছে শরীরে। কিন্তু আসলেই এটা সম্ভব যে, কারো শরীরে জ্বিন ঢুকে আছে.. আর দিনের পর দিন ধীরেধীরে সে মানসিক এবং শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখা জরুরী, আমরা যে লক্ষণগুলো আলোচনা করতে যাচ্ছি এক-দুদিন এসব দেখলেই জ্বিন আক্রান্ত হয়েছে ভাববার কারণ নেই, কারণ এগুলো স্বাভাবিক অসুখবিসুখ এর কারণেও হতে পারে। এই লক্ষণগুলো কারো মাঝে যদি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান থাকে, তাহলে ধরে নিবেন সমস্যা আছে।

আলোচনার সুবিধার্থে পজেসড হওয়ার লক্ষণগুলোকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করে নিচ্ছি। ঘুম সংক্রান্ত এবং অন্য সময়ের..।

ঘুম সংক্রান্ত লক্ষণ সমূহঃ

১। নিদ্রাহীনতা: যার জন্য সারারাত শুধু বিশ্রাম নেয়াই হয়, ঘুম হয়না
২। উদ্বিগ্নতা: যেজন্য রাতে বার বার ঘুম ভেঙে যাওয়া। 
৩। বোবায়ধরা: ঘুমের সময় কেউ চেপে ধরেছে, নড়াচড়া করতে পারছে না। প্রায়ই এমন হওয়া
৪। ঘুমের মাঝে প্রায়শই চিৎকার করা, গোঙানো, হাসি-কান্না করা
৫। ঘুমন্ত অবস্থায় হাটাহাটি করা (Sleepwalking)
৬। স্বপ্নে কোনো প্রাণিকে আক্রমণ করতে বা ধাওয়া করতে দেখা। বিশেষতঃ কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর, উট, সিংহ, শিয়াল, সাপ (*)
৭। স্বপ্নে নিজেকে অনেক উঁচু কোনো যায়গা থেকে পড়ে যেতে দেখা
৮। কোনো গোরস্থান বা পরিত্যক্ত যায়গা, অথবা কোনো মরুভূমির সড়কে হাটাচলা করতে দেখা
৯। বিশেষ আকৃতির মানুষ দেখা। যেমন: অনেক লম্বা, খুবই খাটো, খুব কালো কুচকুচে
১০। জ্বিন-ভুত দেখা

দ্রষ্টব্যঃ যদি স্বপ্নে সবসময় দুইটা বা তিনটা প্রাণী আক্রমণ করতে আসছে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে সাথে দুইটা বা তিনটা জ্বিন আছে।

ঘুম ব্যতীত অন্য সময়ের লক্ষণ

১। দীর্ঘ মাথাব্যথা (চোখ, কান, দাত ইত্যাদি সমস্যার কারণে নয়, এমনিই)
২। ইবাদত বিমুখতা: নামাজ, তিলাওয়াত, যিকির আযকারে আগ্রহ উঠে যাওয়া। মোটকথা, দিনদিন আল্লাহর থেকে দূরে সরে যাওয়া
৩। মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে থাকা, কিছুতেই মন না বসা..
৪। ব্যাপক অলসতা; সবসময় অবসন্নতা ঘিরে রাখা
৫। মৃগীরোগ
৬। শরীরের কোনো অংঙ্গে ব্যাথা কিংবা বিকল হয়ে যাওয়া। ডাক্তাররা যেখানে সমস্যা খুজে পেতে বা চিকিৎসা করতে অপারগ হচ্ছে।

আবারও মনে করিয়ে দেই, শারীরিক রোগের কারণেও এসব হয়ে থাকে। তবে যখন দীর্ঘদিন যাবত যখন এসব লক্ষণ দেখা যাবে, তখন ভাববেন কোনো সমস্যা আছে।

জ্বিনের আক্রমণ থেকে বাচার জন্যঃ

আগামী পর্বে হয়তো বাসাবাড়ি থেকে জিন তাড়ানোর পদ্ধতি, এরপর জ্বিনদ্বারা আক্রান্ত রুগীকে রুকইয়াহ করার নিয়ম আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ। তবে পোস্ট অনেক লম্বা হতে পারে। এজন্য দুই পর্বে দেয়ার ইচ্ছা আছে।
যাহোক, আজ সবশেষে খবিস জ্বিনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে কয়েকটি মৌলিক বিষয় জেনে নিন।

১। জামা’আতে নামাজ আদায় করা। তাহাজ্জুদ পড়া। এই দুটি আপনার আত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করে।

২। গানবাজনা থেকে বিরত থাকা।

৩। সর্বদা পাকপবিত্র থাকা। বিশেষত: ঘুমের আগে অযু করে বিছানায় যাওয়া।

৪। ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া।

৫। সব কাজে বিসমিল্লাহ বলা, বিশেষত: খাবার সময় এবং ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করতে। এছাড়া উঁচু থেকে লাফ দেয়ার সময়, কিছু ফেলার সময়, অন্ধকারে কিছু করার সময়ও বিসমিল্লাহ বলা ভালো।

৬। কুকুর – বিড়াল না মারা, সাপ মারতে চাইলে আগে জোর আওয়াজে ৩বার বলা “জ্বিন হলে চলে যাও..”

৭। কোনো গর্তে প্রসাব না করা। হাদিসে এব্যাপারে পরিষ্কার নিষেধাজ্ঞা আছে।

৮। ঘরে প্রবেশের এবং বের হওয়ার দোয়া পড়া, দোয়া না জানলে অন্তত বিসমিল্লাহ বলা।

৯। সন্ধ্যার সময় ঘরের জানালা বন্ধ করা, বাচ্চাদের বাহিরে বের হতে না দেয়া। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর বাচ্চাদের বের হতে কিংবা জানালা খুলতে পারেন।

১০। স্ত্রী সহবাসের পুর্বে অবশ্যই দু’আ পড়া। বিয়ের প্রথম রাতের দোয়াটি পড়া।

১১। টয়লেটে ঢোকার সময় দু’আ পড়া।

১২। প্রতিদিন “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হ্ামদ, ওয়াহুওয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর” ১০০বার পড়া। একশতবার না হলে, অন্তত সকাল – সন্ধ্যায় ১০বার করে পড়া।

১৩। সকাল সন্ধ্যার অন্যান্য মাসনুন আমলগুলো নিয়মিতভাবে প্রতিদিন করা

১৪। সুরা ইখলাস ফালাক নাস, তথা তিনকুল-এর আমল গুরুত্ব সহকারে করা। আয়েশা সিদ্দীকা রা. থেকে এব্যাপারে চল্লিশটিরও বেশি সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সা. জীবনের শেষ পর্যন্ত এর আমল করেছেন।
আমল হলো, রাসূল সা. প্রতিরাতে ঘুমানোর পূর্বে সূরা ইখলাস তিনবার, সূরা ফালাক তিনবার ও সূরা নাস তিনবার পড়ে দুইহাতের তালুতে ফুঁ দিতেন। ফুঁ এর সাথে হালকা থুতু বেরিয়ে আসতো। এরপর সমস্ত শরীরে হাত বুলিয়ে নিতেন।

দ্বিতীয়ত: প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের নামাযের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সূরা ইখলাস, একবার সূরা ফালাক ও একবার সূরা নাস এভাবে তিন সূরা তিনবার পড়তেন। এসময়ে ফুঁ দেয়া লাগবে না।
হাদীসের শেষাংশে আল্লাহর রাসূল সা বলেন, এআমলই তোমার জন্য যথেষ্ট।অন্য হাদিসের আছে এই সুরাগুলো পড়ে বাচ্চাদের ফুঁ দিয়ে দিতেন।

উপরে উল্লেখিত পরামর্শ বিভিন্ন হাদিস থেকে নেয়া, লেখা দীর্ঘ হয়ে যাবে এজন্য সবগুলো হাদিস উল্লেখ করা সম্ভব হলো না।

আর উপরে বলা কিছু দুয়া (এই লিখার শুরুতেই আছে) পাবেন। এছাড়া বাকিগুলো প্রসিদ্ধ অনেক বইতে পাবেন, যেমনঃ হিসনে হাসিন, গুলজারে সুন্নাহ, হিসনুল মুসলিম। আরো সহজে পাবেন নুরানী মাদরাসার বাচ্চারা একটা নীল রঙের বই পড়ে (নুরানী পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষা এরকম নাম), বেলায়েত সাহেবের লেখা, সেখানে।

যাহোক, অনেকগুলো ব্যাপার আলোচনা হলো, আল্লাহ আমাদের সতর্ক থাকার তাওফিক দিন, আমিন।

 

 

 

 

বাচ্চাদের সমস্যার জন্য প্রাথমিক রুকইয়াহ

 May be an image of text that says 'বাচ্চাদের সমস্যার সংক্ষিপ্ত সাজেশন'

 

বাচ্চাদের সমস্যার জন্য প্রাথমিক রুকইয়াহ

বাচ্চাদের নজর লাগা ও এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্য নিয়ত করে রুকইয়াহ করতে পারেন। দ্রত ফল পাবেন ইনশা আল্লাহ্‌
রুকইয়া করার নিয়মঃ
বাচ্চাকে সামনে বসিয়ে মাথায় হাত রেখে (হাত রাখতে অসুবিধা হলে দরকার নাই) সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস এগুলো বার বার করে পড়ে পড়ে ফুঁ দিতে থাকুন। অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট করেন। সাথে এই দুটি দোয়া পোড়তে পারেন-
.
أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ
উচ্চারণ: উঈযুকুম বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তাম্মাহ। মিন কুল্লি শাইত্বা-নিন ওয়া হা-ম্মাহ ওয়ামিন কুল্লি 'আইনিন লা-ম্মাহ।
.
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَاسَ، اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي، لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা রাব্বান নাস আযহিবিল বা’স । ইশফিহি ওয়া আনতাশ শা-ফী । লা শিফা-আ ইল্লা শিফা-উক। শিফা-আন লা-ইউগা-দিরু সাকামা ।
এভাবে দিনে দুই-তিনবার রুকইয়াহ করতে পারেন। সমস্যা বেশি থাকলে এর সাথে রুকইয়ার গোসল দেয়াবেন এবং পানি খাওয়াবেন।
রুকইয়াহ গোসলঃ
গোসলের পানিতে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি আর সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস যতবার ইচ্ছা পড়ে ফুঁ দিয়ে ঐ পানি দিয়ে গোসল করান। গোসল আবশ্যক না, সমস্যা বেশি দেখলে করাবেন।
পানি খাওয়ানোঃ
গোসলের পানি তৈরির মতই পানি তৈরি করে খাওয়ান দিনে ২/৩ বার। পানি খাওয়ানোও আবশ্যক না।
অন্যান্যঃ
  • কারো নজর লেগেছে বলে অনুমান করতে পারলে ঐ ব্যক্তির অযুর পানি নিয়ে বাচ্চার গায়ে ঢেলে দিবেন। দ্রুত উপকার পাবেন ইনশা আল্লাহ
  • বাচ্চার কিছু সমস্যা মায়ের কারনেও হতে পারে। বিশেষ করে মা-র স্তন্যপান না করতে চাইলে মায়ের উচিত নিজেরও সমস্যা আছে কিনা যাচাই করে রুকইয়াহ করা। এক্ষেত্রে তিনি বদনজরের সেলফ রুকইয়াহ করতে পারেন এই লেখা ফলো করে bit.ly/ruqyahguide1
  • অভিভাবকদের ফরজ, ওয়াজিবগুলো ভালভাবে আদায়ের সাথে সাথে সুরক্ষার আমলগুলি করা উচিত। আর নিজে আমলগুলো করার পর বাচ্চাকেও ফুঁ দিয়ে দিবেন। অথবা হিফাজতের নিয়াতে শুধু ৩ কুল পড়ে ফুঁ দিবেন bit.ly/masnun-amal
  • সন্ধ্যার আগে দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়া উচিত। সন্ধ্যার খানিক পরে খুলে দিতে পারে। বাচ্চাদের চেহারাওয়ালা পুতুল ইত্যাদির খেলনা দেয়া উচিত না। সন্ধ্যার সময় বাইরে থাকতে দেয়া উচিত না। আরো কিছু বিষয় এখানে জানতে পারবেন bit.ly/jinntips
  • রুকইয়াহ সংক্রান্ত কোন প্রশ্ন থাকলে আগে এই পোস্টে উত্তর খুঁজবেন bit.ly/ruqyahfaq ওখানে উত্তর না পেলে প্রশ্ন করবেন।
হাদীসে আরো কিছু দুয়ার কথা পাওয়া যায় রুকইয়ার জন্য। 

 

 

 

 

Wednesday, April 28, 2021

জাদুটোনা শয়তানের কুপ্রভাব থেকে বাঁচার উপায়

 May be an image of text that says 'জাদুটোনা শেয়তানের বেঁচে থাকার শ থেকে'

 জাদুটোনা শয়তানের কুপ্রভাব থেকে বাঁচার উপায়

 

আমাদের প্রতিবেশী এক নানু আম্মুর কাছে খুব আক্ষেপ করছিলেন উনার মেয়েদের বিয়ে শত্রুপক্ষ বারবার কুফরি করে আটকে রাখা নিয়ে।
অনলাইনে পরিচিত এক বোনের সাংসারিক জীবনের করুণ কাহিনী জানি। দুশ্চারিত্রা শাশুড়ির কুফরি কালামের আশ্রয়ে জাদুর বলয়ে বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার অবস্থায় পৌছিয়েছে।
এমন ঘটনা খুজে দেখলে অনেক পাওয়া যাবে।
ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কুফুরি কালাম বা জাদু টোনা এখন খুব কমন একটি প্র্যাকটিস বলা চলে। টিভি, পেপার, রাস্তায় রীতিমত বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে এদিকে আকৃষ্ট করা হচ্ছে।
 আর আমরা জানি নাওয়াক্বিদুল ঈমান তথা ঈমান ভঙ্গের ১০টি কারণের মাঝে একটি হল জাদু করা ও জাদুকরের কাছে গিয়ে সাহায্য চাওয়া।
এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, 
‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক জিনিস থেকে বেঁচে থাক। ছাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ঐ ধ্বংসাত্মক জিনিসগুলো কি? তিনি বললেন, (১) আল্লাহর সাথে শিরক করা (২) যাদু করা (৩) অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা, যা আল্লাহ হারাম করে দিয়েছেন (৪) সূদ খাওয়া (৫) ইয়াতীমের সম্পদ আত্মসাৎ করা (৬) যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা (৭) সতী-সাধ্বী মুমিন মহিলাকে অপবাদ দেয়া’।[বুখারী হা/২৭৬৬; মুসলিম হা/২৭২; মিশকাত হা/৫২।]
 
আর এটি কোন কল্পকাহিনী নয়। কুফুরি কালামের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ করা, আত্মীয়ের ছেলে বা মেয়ের বিয়ে আটকিয়ে রাখা, পড়াশোনা, ব্যবসা, চাকরি ইত্যাদির ক্ষতি করা, কাউকে মানসিক ভারসাম্যহীন করে ফেলা, এমনকি এক্সট্রিম পর্যায়ের কুফুরি কালাম করে মানুষকে মেরে ফেলা পর্যন্ত সম্ভব।
আর এগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কেউ যাদুকরের কাছে গেলে তারও ঈমান চলে যাবে। একসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা কুরআনে হুশিয়ারি করে বলেন, ‘তারা ভালরূপেই জানে যে, যে কেউ যাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই’ (বাক্বারাহ ১০২)।
সুন্নতি লিবাসে প্রচুর শয়তান আজ এসবের সাথে জড়িত। আত্মীয়স্বজনের মাঝে বা পরিচিতদের অনেকেই কারো ভালো দেখতে না পেরে হিংসায় এগুলো করে থাকে। অথচ এই জাহেল মানুষগুলো বুঝে না এর মাধ্যমে তারা ইসলাম থেকেই বের হয়ে যায়। তাদের পূর্বের সকল আমল বরবাদ হয়ে যায়। এগুলো নিজেকে করা লাগে না, টাকার বিনিময়ে কিছু মানুষরুপী জানোয়ারের মাধ্যমে এগুলো খুব সহজেই করা যায় এবং আমাদের চারপাশের হাজার হাজার লোকজন এগুলো করছে। এবং এর ফলাফল হয় খুব ভয়াবহ। কেননা এইসব কুফুরি কালামের প্রভাব কার্যকরী। ক্রমাগত জঘন্য সব কুফুরি আর শির্ক করার মাধ্যমে শয়তানকে খুশি করা হয় আর শয়তান এসে তাদের কাজ করে দেয়। যারা জানেন না এগুলো কীভাবে করে, না জানাই ভালো। কেননা এগুলো জানা কোন জরুরী বিষয় নয়, জরুরী বিষয় হল এগুলো থেকে কীভাবে বেঁচে থাকবেন।
স্বয়ং রসুলুল্লাহ(ﷺ) কে কুফুরি কালাম করা হয়েছিল এবং উনার উপর এর প্রভাব কার্যকর করে আল্লাহ দেখিয়ে দিয়েছেন তা সত্য এবং আমাদের বেলায়ও তা হবে। এবং মৃত্যু পর্যন্ত উনার উপর এর কিছুটা প্রভাব ছিল বলে অনেক আলিম বলেছেন। এরই প্রেক্ষিতে সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস নাযিল হয়। যারা বলেন তাহলে তো গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও গোলাপি আন্টি একজন আরেকজনকে এভাবে ধ্বংস করে দিতো, পারছে না কেন? তাদের জানা উচিত এইসব নেতারা কুফুরি কালামের মাধ্যমে বহু আগে থেকেই নিজেদেরকে প্রটেকশান দিয়ে রেখেছে। শুধু এই উপমহাদেশ নয় বরং ইউরোপ আমেরিকার নেতারাও প্রতিপক্ষের হাত থেকে বাঁচার জন্য এগুলোতে অভ্যস্থ। যারা এগুলো নিয়ে ঘেঁটেছেন তারা সহজেই বুঝতে পারবেন।
আরবিতে একটি প্রবাদ আছে, الوقایة خیرمن العلاج অর্থাৎ প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধ উত্তমতাই জাদু শয়তান ও জ্বিনের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আগেই সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন।
প্রতিরোধের উপায়ঃ
১) আকীদা বিশুদ্ধ করুন।
প্রত্যেক মুসলমানের উচিত তার আকিদা বিশুদ্ধ করা। সে দৃড়ভাবে বিশ্বাস করবে যে, যা কিছু হয় সবই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়। মুসীবত, কষ্ট, যন্ত্রণা সবই আল্লাহর হুকুমে হয়। আল্লাহর ইচ্ছা না থাকলে কোন কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। না জাদুটোনা, না জ্বিন-শয়তান, না কোন সুপার পাওয়ার দাবিদার কেউ।
আল্লাহ তা'আলা বলেছে, "আর তারা (জাদুকরেরা) আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কোন ক্ষতি করতে পারে না।" [সূরা বাকারা : ১০২]
যেহেতু আল্লাহর ইরাদা ও ইচ্ছা ব্যতীত কোন কিছু হয় না। তাই সুস্থতা-অসুস্থতা, বিপদ-আপদে সর্বাবস্থায় আল্লাহর দিকে ফিরে আসায় কল্যাণকর।
 
২) তাকওয়া অর্জন করা।
সমস্ত কাজে আল্লাহর হুকুমকে সর্বাগ্রে এবং সব নিষেধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। যে তাকওয়া অর্জন করে আল্লাহ তাকে সব রকম বিপদাপদ ও কষ্ট থেকে উদ্ধার করেন।
আল্লাহ বলেছেন- "যে তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তাকে (বিপদাপদ ও পেরেশানি থেকে) বের হবার রাস্তা করে দেবেন।" [সূরা তালাক : ২]
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, "তোমরা যদি সবর ও তাকওয়া গ্রহণ করো, তবে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।" [সূরা আল ইমরান : ১১০]
 
৩) আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল রাখুন।
সর্বাবস্থায় আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে। যে বান্দা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করেন আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।
আল্লাহ বলেছেন, "যে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।" [সূরা তালাক : ৩]
 
৪) ইস্তি'আযাহ করুন।
জাদু ও জাদুর প্রভাবে সবচে বেশি ভূমিকা রাখে জ্বিন ও শয়তান। বেশির ভাগ সময় তাদের মাধ্যমে জাদু করা হয়। তাই জ্বিন ও শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হবে। আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়াকে 'ইস্তি'আযাহ' বলে। তাই ইস্তি'আযার আয়াত, দু'আ ও যিকির-আযকারকে দৈনন্দিন আমল বানিয়ে নিন।
যেমন বেশি বেশি এ আয়াত পড়ুন-
رب اعوذ بک من ھمزت الشيطين - واعوذ بک رب ان يحضرون
‘হে আমার রব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা থেকে।
আর হে আমার রব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার কাছে তাদের উপস্থিতি থেকে।’ [সূরা মু'মিনুন : ৯৭-৯৮]
৫) আজওয়া খেজুর খান।
সসম্ভব হলে জাদুর কুপ্রভাব থেকে বাঁচার জন্য আজওয়া খেজুর খান।
সা‘দ (রাযি.) তাঁর পিতা হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেকদিন সকালবেলায় সাতটি আজওয়া উৎকৃষ্ট খেজুর খাবে, সেদিন কোন বিষ ও যাদু তার ক্ষতি করবে না। [সহীহ বুখারী, ৫৪৪৫]
 
৬) সকাল-সন্ধ্যার আমল করুন।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে দু'আগুলো সকাল-সন্ধ্যায় শিখিয়েছেন, তা গুরুত্বের সাথে পাঠ করুন।
যেমন-
 
ক. প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে ও ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসী পড়া। একটি হাদীসে এসেছে, "যে ব্যক্তি রাতে ঘুমানোর সময় আয়াতুল কুরসি পড়বে, তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে একজ ফেরেস্তা নিযুক্ত করা হবে, সে সারারাত পাঠকারী বান্দাকে পাহারা দেয়। শয়তানকে তার কাছে ঘেষতে দেয় না।" [সহীহ বুখারী, ২৩১১]
 
খ. ঘরে সূরা বাকারা তিলাওয়াত দ্বারাও শয়তান ও জাদু থেকে হিফাজতে থাকা যায়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, "যে ঘরে সূরা বাকারা তিলাওয়াত করা হয়, শয়তান সে ঘর থেকে পালিয়ে যায়।" [সহীহ মুসলিম, ৭৮০]
 
গ. সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত রাতের বেলা পাঠ করাও গুরুত্বপূর্ণ। তা মানুষকে জাদুর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে, এই দুই আয়াত তার জন্য যথেষ্ট হবে।" [সহীহ মুসলিম, ৮০৭]
 
ঘ. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক এবং সূরা নাস বেশি বেশি পড়তে থাকা। বিশেষ করে প্রত্যেক সালাতের পর একবার করে এবং ফজর ও মাগরিবের পরে প্রত্যেক সূরা তিনবার তিনবার করে পড়লে দুনিয়ার সবকিছুর জন্য যথেষ্ট হবে।
 
ঙ. সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার নিচের দু'আটি পড়লে দুনিয়ার কোন কিছু তার ক্ষতি করতে পারবে না। দু'আটি হলো,
«بسم الله الذي لا يضر مع اسمه شيء في الازض ولا في السماء وھو السميع العليم».
“আল্লাহ্‌র নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।”[ আবূ দাউদ, ৪/৩২৩, নং ৫০৮৮; তিরমিযী, ৫/৪৬৫, নং ৩৩৮৮; ইবন মাজাহ, নং ৩৮৬৯; আহমাদ, নং ৪৪৬।]
 
৭) মানুষের সাথে শত্রুতা থাকলে তা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে। 
 
আল্লাহ আযযা ওয়া জাল আমাদের সকলকে হিফাজত করুন।
||জাদুটোনা (শয়তানের কুপ্রভাব) থেকে বেঁচে থাকার উপায়||
~ জেবা ফারিহা