দুইটা গাইনোসেন্ট্রিক মিথ বা ডিলুশন আমি বার বার ব্যবহৃত হতে দেখিঃ
১। “মেয়েরা আগে অনেক অনেক দুঃখী ছিল, পুরুষতান্ত্রিকতার গ্যাঁড়াকলে থেকে এক্কেরে প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছিল। এখন নারীবাদিতা এসে মুক্তি দিয়েছে”
শিক্ষার হার, ক্যারিয়ার, স্বাধীনতা - এরকম অনেক অবজেক্টিভ মেট্রিকেই মেয়েদের মেয়েরা আগের থেকে এগিয়ে আছে - যেগুলি উন্নত ও সুখী জীবনের মাপকাঠি ধরা হয়েছিল। তাহলে হাইপোথেটিকালি অবশ্যই মেয়েদের আগের থেকে ঢের সুখে থাকার কথা। কিন্তু দেখা গেল দিনকে দিন মেয়েদের ওয়েল বিয়িং কমছে। শুধু কমছেই না, বরং রিলেটিভলি পুরুষদের সাথে পাল্লা দিয়ে অনেক কমছে।
বলে রাখি এটা কোন Fuwang কোম্পানির রিসার্চ না, আইভি লিগের Wharton বিজনেস স্কুলের রিসার্চ। বিভিন্ন ডেটাসেট ক্রস চেক করেও রেজাল্ট কনসিস্টেন্ট থেকেছে।
এটা নিয়ে কারো দ্বিমত নাই যে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড দেশগুলিতে নারীরা পৃথিবীর বাকি সব যায়গা থেকে বেশী প্রিভিলেজড রাইট? ওখানে তো কাওকে চার দেয়ালের ভেতর আটকে রাখা হচ্ছে না। ওখানকার মাম্মি-পাপারা সব ফ্রেন্ডস; সাব কন্টিনেন্টের মতন না। স্বামী এসে জোর করে রান্না করাচ্ছে না, রাত বিরাতে বাসার বাইরে থাকলে কেউ প্রশ্ন করছে না।
তবুও বিস্ময়কর ভাবে ‘সুখ’ কমে যাবার কারণটা ঠিক বোধগম্য নয়, তাই একে বলা হচ্ছে ‘প্যারাডক্স’। কেন ঠিক পুরুষতান্ত্রিক দাদুদের হাতেই দাদীরা সুখে ছিলেন? আমরা কারণটা জানি, কিন্তু বলব না।
২। “যোগ্য ছেলেরা উচ্চ শিক্ষিত মেয়ে পছন্দ করে, দূর্বল ছেলেরা ভয় পায়”
“আমার ৩৫ বছর বয়সে দুইটা পিএইচডি আর চারটা মাস্টার্স নিয়ে আমি সদ্য কলেজ পাশ করা সুন্দরীর থেকে বিয়ের বাজারে এগিয়ে থাকব”
“আমার কনফিডেন্স দেখে সবার চোয়াল ড্রপ হবে, কারণ প্রিয়াংকা চোপকরশালা বলেছে……”
এটা ঠিক যে মেয়েরা সব সময় হায়ারারকির উপরের দিকের, কনফিডেন্ট well-rounded ছেলে পছন্দ করে। কারণটা খুবই যৌক্তিক। একটা কনফিডেন্ট পুরুষলোক মানে সাহসী, হাই সার্ভাইবরশিপ আর প্রটেক্টরশিপের সাইন।
দায়িত্ব কাধে নেয়া, আর স্ত্রীকে কঠিন কঠিন ডিসিশন মেকিংয়ের থেকে দায়মুক্ত করা- এটাইতো হওয়া উচিত পুরুষের বৈশিষ্ট্য। যেসব সয়বয়দের গ্রুম করে নিতে হয় এদের মেয়েরা চাবে কেন?
এখন এই কারণে কিছু মেয়ে ভেবে থাকেন বিষয়টা হয়তো ভাইস-ভার্সা টাইপের। অর্থাৎ মাসকিউলিন ছেলেরাও হয়তো এমন পুরুষত্ব বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মেয়েই চায়, আফটারঅল নাটক সিনেমাতেও তো এগুলো দেখাচ্ছে তাই না?
ব্যাপারটা এমন না। একটা ম্যাসকিউলিন ছেলে তার polar opposite চাবে। সারাদিন খাটুনি করে, অন্যান্য পুরুষদের সাথে কম্পিটিশন করার পরে এই feminine aura আমাদের লাইফের একটা ইম্পারেটিভ বিষয়। কোমলতা, কম্প্যাশন, একটু খানি ফিক করে হাসি- এগুলি আমাদের সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে দিতে পারে।
তো এসব বৈশিষ্ট্য কোন ধরণের মেয়ের মধ্যে পাওয়া যাবে আপনার মনে হয়? যে মেয়ে আট-দশ ধরে বছর আরেকটা পুরুষের মতই ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করে জীবন যুদ্ধে কুস্তি করেছে সে? নাকি যেই মেয়ে তার জীবনের ইয়ং প্রাইম সময়টাতেই বিয়ে করে ফেলেছে?
প্রচণ্ড ঘাত প্রতিঘাত পুরুষকে পুরুষ বানায়, তেমনি নারীকেও পুরুষই বানায়। আমার বিছানার পাশে আমার মতই একটা সালমান খান শুয়ে থাকবে এটা একটা হিউজ টার্ন অফ।
ফোর্বস ৪০০ লিস্টের পুরুষদের নিয়ে একটা সমীক্ষা হয়েছিল। দেখা গেছে যে, এদের প্রথম ওয়াইফরা এদের থেকে অন এভারেজে ৭ বছরের ছোট। এদের বেশীর ভাগেরই একের বেশী বিয়ে হয়। আর পরের স্ত্রীরা গড়ে ২২ বছরের ছোট!
[ফোর্বসের লোকেরা সব সময় স্ট্যান্ডার্ড না, কারণ এদের স্ত্রী বাদেও বহু সাইডচিক থাকে। উদাহরণটা এই কারণে দেয়া যাতে করে বোঝা যায় যে অপশনওয়ালা পুরুষদের প্রিফারেন্সটা কি। সব মেয়েদের সিচুয়েশন হয়তো এক না, কিছু বোনের সংগ্রাম করা ব্যতীত কোন উপায় থাকে না। এর জন্য সমাজের পুরুষত্বহীনতাও অনেকটা দায়ী]
- ওমর বিন মাহতাব
No comments:
Post a Comment