বেশীর ভাগের সাথে আমার চিন্তার দ্বিমত বা ক্ল্যাশটা কোথায়?
প্রথমত, আমি মানুষকে আদিম প্রবৃত্তিতে সারা দেয়া প্রাণী হিসেবে দেখি, আমি মনে করি মানুষ চরম স্বাধীনতা পেলে সে প্রথমেই কোন র্যাশনাল সিদ্ধান্ত নিবে না। সে প্রথমে তার প্রবৃত্তিগত সিদ্ধান্তটা নিবে তারপর সেটাকে যথাসম্ভব র্যাশনালাইজ করতে চাইবে।
কেউ যদি বলে “অমুক ছেলে খুবই ভালো। সে বন্ধুদের সাথে মাঝে মাঝে ক্যাসিনোতে এমনিতেই ঘুরতে যায়, কিন্তু জুয়া খেলে না”- I’ll be highly skeptical at his Good will. একই ব্যাপার ভার্সিটিতে ছেলেদের সাথে গ্যাজানো “ওভার ফ্রেন্ডলি” নিব্বির জন্যেও প্রযোজ্য। কথা খুবই সিম্পল, ট্র্যাডিশনালি ভালো ছেলে ক্যাসিনোর ধারে কাছেই যাবে না আর ভালো মেয়ে নিজের chastity এর ব্যাপারে খুবই কনসার্নড থাকবে। এখানে vagueness মারিয়ে জল ঘোলা করে বিশেষ লাভ নাই।
আউটকাম হলো আমার দেখার বিষয়, Cause and effect. ফ্যাক্ট, ডেটা, স্ট্যাট হলো এখানে মূল উপজীব্য। আমি কোন আইডিয়ালিস্টিক, ইগালিটারিয়ান কোন ইউটোপিয়াতে বাস করি না। কি হলে কি হতে পারতো, কি হলে সবাই ভালো থাকত এর থেকে বেশী বিবেচ্য বিষয় হলো বাস্তবে আসলেই কি হচ্ছে, আর এর নিরীখে কি ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
প্রত্যেকটা ডিসিশনের একটা কনসেকুয়েন্স আছে। আমার কাজ সেই কনসেকুয়েন্সের সাথে পরিচয় করানো। আমি আপনাকে দেখাবো, "এভারেজ পুরুষদের জন্য পৃথিবী ব্যাপক আনফেয়ার। গেইম খুবই রিগড। সার্ভাইব করতে হলে আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে" বা "আপনার ফিমেইল পার্টনারকে এসব-ওসব করতে দিলে ৫০% চান্স আছে আপনার কাকোল্ড হবার"। মূল ডিশিসন আপনার, আপনাকে ডিসিশন দেয়া আমার কাজ না।
মাইনরিটি, এনোমালি, পরিসংখানিকভাবে নেগলিজিবল ঘটনা নিয়ে চিন্তা করাটা আমার কাজ না। মাইনর ঘটনার বেসিসে সিদ্ধান্ত নেয়া চূড়ান্ত বোকামী। কেউ যদি বলে "ভাই, আজকে থেকে স্ট্রিট ল্যাম্প দরকার নাই। হ্যালির ধুমকেতু আসতেসে" সেটা হাস্যকর হবে। আপনি বাস্তবজীবনে যেসব ঘটনার মুখোমুখী বেশী হবেন সেগুলোর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কোন মেয়ের খুব বাজে পাস্ট থাকলেও সে অবশ্যই তওবা করে একেবারে ভালো হয়ে যেতে পারে এটা সত্যি। কিন্তু প্রথমত এটা একটা পরিসংখানিকভাবে মাইনর আর দ্বিতীয়ত এটা আপনার লাইফের ডিসিশন মেকিং এর ক্ষেত্রে কোন এডভান্টেজ দিচ্ছে না- যেহেতু বাজে পাস্ট নেই এমন অন্যান্য মেয়ের অস্ত্বিত্ব আছে।
আপনিও যদি এভারেজ কোন ছেলে হয়ে থাকেন, আপনিও নূনতম এডভান্টেজ পাচ্ছেন না। কারণ যে যাই বলুক না কেন, আপনার কল্পনার পরী শুধু আপনার ‘ভালো মানুষি’ দেখে বিয়ে করতে চাইবে না। সে এবং তার পরিবার SWOT এনালাইসিস করেই তবে আপনার কাছে মেয়ে দিতে রাজি হবে।
আমি আপনাদেরকে ডিলুশনাল ফেমিনিস্টদের মত খোয়াব দেখাতে পারব না। There is no free lunch as a man. কয়েকদিন আগে এক ধামড়ী ডিলুশনাল নিব্বি লিখেছিল এখন থেকে বাঙ্গু মেয়েদের নাকি টার্কিশ আর বিদেশীদের কনভার্ট করে বিয়ে করা শুরু করা উচিত। আমি চাই না ছেলেরা এরকম তরতাজা, ডিজনি ওয়ার্ল্ডে বাস করুক।
আমি যখন বলছি মেয়েরা টপ হায়ারাকির ছেলে চায়, আর টপ হায়ারারকির পুরুষেরা বহুগামী হয় তখন আমি বিষয়গুলোকে প্রমোট করছি না- জিনিসগুলো ন্যাচারাল, স্ট্যাটিস্টিকালি সত্যি, I’m just calling a spade a spade
হাইপারগামীকে আমি খারাপ চোখে দেখি না। তবে আগেই বলেছি প্রত্যেকটা কাজের একটা ইফেক্ট আছে। সবার জানা উচিত যে টপ হায়ারারকির পুরুষদের বহুগামীতার প্রবণতা আছে। কারণ মেয়েরা যাকে চায়, তাদের সকলে মেয়েই চায়। আর টপ পুরুষের ফ্রিডম আছে, স্বাধীনতা থাকলে মানুষ আদিম প্রবৃত্তিতে সারা দেয়।
গল্প-সাহিত্যের মধ্যে আপনি তাই দেখবেন যেটা লেখক আপনাকে দেখাবে। রিয়েলিটির একটা ইউটোপিক বা ওয়াটার্ড ডাউন ভিও পাবেন এখানে। শরৎচন্দ্র ‘’দেবদাস” এ সাবলিল ভাবে পারোর চরিত্রে ইনোসেন্স, ভালোবাসা, ডিভোশন, পিউরিটি ছিটিয়ে দিয়েছে যাতে পাঠক একটা পজিটিভ ক্যারেক্টার হিসেবে কল্পনা করে নেয়, এর ডার্ক সাইডগুলো ইগনোর করতে পারে।
সাধারনত প্রটাগনিস্টদের ক্যারেক্টারগুলোকে বেশ ভালোভাবে বর্ণনা করা হয়, যাতে পাঠকদের মন এদের প্রকৃত ছবি কল্পনা করতে পারে, ক্যারেকটারের সাথে ইমপ্যাথি ডেভেলপ করে। পারো চরিত্রটা ইভুলুশনারি সাইকোলজি দিয়ে এনালাইসিস করলে অন্যরকম হত।
পারো বিয়ের পরেও দেবদাসকে ভুলতে পারে নি। পারো তাঁর স্বামীকে কিভাবে ট্রিট করছে আপনি সেটা জানেন না, পারোর স্বামীর প্রকৃত চরিত্র সেভাবে ফুটিয়ে তোলা হয় নি তাই তার প্রতি ইমপ্যাথি আসে নি। অথচ রিয়েল লাইফ হলে পারোর স্বামী একটা আপনার মতই অনুভূতিসম্পন্ন জলজ্যান্ত মানুষই হত।
দেবদাস একটা মদখোর ডিজেনারেট ক্যারেক্টার, শরৎ এটা প্রকৃত ভাবেই দেখিয়েছে এটা নিয়ে সন্দেহ নেই। যেটা দেখায়নি সেটা হচ্ছে পারো এখানে ডুয়াল মেটিং স্ট্র্যাটেজির আশ্রয় নিয়েছে।
ডুয়াল মেটিং স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে আমি জানতে পারি ইভুলুশনারি সাইকোলজিস্ট David Buss এর বই থেকে। এটা নিয়ে এখন বিস্তারিত লিখছি না, খুব সংক্ষেপে এই স্ট্যাটেজি বলে যে মেয়েদের দুই ধরণের ইভুলুশনারি নিড আছে একটা হলো ভালো জিন (আলফা) পাওয়া, আরেকটা হলো সামাজিক প্রটেকশনও- সিকিউরিটি। পশ্চিমা কালচারে প্রথম মেটিং এর উদাহরণ হলো ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড। এই দুইটা নিড সব সময়ই একজন পার্টনারের কাছ থেকে পাওয়া সম্ভব হয় না, তখন ডুয়াল-মেটিং রোল প্লে করে।
এখানে দেবদাস হলো এরিস্ট্রোক্র্যাট সমাজের উৎকৃষ্ট জিন। তাই হাইপারগামীর দরুন দেবদাসের প্রতি পারোর ভালোবাসা প্রবল। কিন্তু পারো জানে এই দেবদাস হলো দায়িত্ববোধহীন, মদখোর। গল্পে আপনি যেটাই পড়ুন না কেন, সার্ভাইবলের জন্য মেয়েদের নয়-দশ বছরের রিলেশন ছেড়ে সরকারি চাকরিজীবি বা সেটেল্ড পার্টনারের সাথে বিয়ে করার উদাহরণ ভুড়ি ভুড়ি।
তাই শেষমেষ পারোর এমন কাউকেই বেছে নিতে হলো। মূল সমস্যা হলো পারো হচ্ছে এক 'আলফা উইডো'। বিয়ের পরে দেবদাসকে ভুলতে পারলো না। চোখ বন্ধ করে বলা যায় পারোর স্বামী ওর আসল ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
I think, nowadays as a man you have to take the new worldviews with a grain of salt. Otherwise they will make you believe in Unicorns and Dragons.
Omar Bin Mahtab
No comments:
Post a Comment