Saturday, February 17, 2024

কে দায়ী? উপায় কি?

"আমার বাবা চাকরিজীবী। আমার মা গৃহিণী। মা বাবার ওপর নির্ভরশীল৷ একদম ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রয়োজনে বাবার ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয়। আমি আমার স্বামীর ওপর এমন নির্ভরশীল হতে চাই না। তাই আমি চাকরি করবো।" 

এই অনুচ্ছেদটি এদেশের অনেকগুলো পরিবারের চিত্র। একটু খেয়াল করে দেখুন, 'নির্ভরশীল' শব্দটিকে। এই শব্দটি পরিবারের মেয়েটির মধ্যে চাকরি করার স্পিরিট যোগান দিয়েছে। কিন্তু এই ভাবনাটি কি আসলেই যথার্থ? তার মা কি আসলেই তার বাবার ওপর নির্ভরশীল? 

দেখেন, নির্ভরশীলতা তখন আসে যখন সেখানে বিনিময় থাকে না। যেমন, আমরা সূর্যের ওপর নির্ভরশীল। এই নির্ভরশীলতা প্রয়োজনীয়, সার্ভাইভালের জন্য। বিনিময়ে কিন্তু আমরা সূর্যকে কিছু দেই না। তাই, আমরা সূর্যের ওপর নির্ভরশীল কথাটা যথাযথ। 

এখন দেখুন, এই পরিবারটির বেলায় কী হচ্ছে। অর্থ উপার্জন বাবা করছে এটা সঠিক। কিন্তু মা কী করছে দেখুন। রান্নাবান্না, ঘরদোর সুন্দর রাখা, বাচ্চাদের সুন্দর বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করা, স্বামীর শারিরিক ও মানসিক চাহিদা নিশ্চিত করা আরো কতো কী! এই কাজগুলো যদি তিনি না করতেন, তবে কী এই পুরুষ চলতে পারতেন? তাহলে তো দেখা গেলো, এই পুরুষও পালটা এই নারীর ওপর নির্ভরশীল। এবং, এই পুরুষেরই নারীটির ওপর নির্ভরশীলতা বেশি! তবে একতরফাভাবে মেয়েটি কেন ভাবলো যে, তার মা তার বাবার ওপর নির্ভরশীল? 

চিন্তার মানদণ্ডের কারণে। মেয়েটি অর্থকে মানদণ্ড বানিয়েছে। অর্থ দিয়ে যা মাপা যায়, তার মূল্য আছে, অর্থ দিয়ে যা মাপা যায় না, তার মূল্য নেই। কিন্তু একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে মায়ের কাজগুলোরও অর্থমূল্য আছে। যদিও অর্থমূল্য নির্ধারণ করা অযৌক্তিক, কারণ মা হচ্ছেন মা। কিন্তু তর্কের খাতিরে আমরা একটুখানি করে দেখি। 

আপনি হোটেলে একবেলা খাবার খান। মা যেই যেই খাবার রান্না করেন, সেটা একটা ভালো-পরিচ্ছন্ন পরিবেশনায় খেতে হলে ঐ মানের হোটেলে ১০০ টাকার কাছাকাছি লেগে যাবে। ঐ হোটেলের বাবুর্চির স্যালারি কতো? ১০ হাজার? আপনার মা তো ৩০ দিনে ৯০ বেলা ক্লান্তিহীন রান্না করছেন, আপনাকে ডেকে নিয়ে খেতে বসাচ্ছেন, খাবার শেষে ধোয়াটোয়ার কাজও করছেন, তাহলে তাঁকে কতো স্যালারি দেবেন?  

ঝাড় দেয়া, ঘর মোছার জন্য একটা বুয়া রাখেন তো। দেখবেন সে মাসে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করবে। কিন্তু, তারপরও খাটের নিচে ময়লা থেকে যাবে, শোকেজের কোণায় ধুলো জমে থাকবে। কিন্তু, মা কতো যত্ন নিয়ে ঘর ঝেড়েঝুড়ে রাখছেন, আবার মুছছেন, তাহলে মা'কে কতো স্যালারি দেবেন? 

প্রাইভেট টিউটরকে মাসে কতো টাকা স্যালারি দেন? ৬-৭ হাজার? যেই মা কথা বলা শেখালো, ভালো-খারাপ চেনালো, খাবার খেতে, ওয়াশরুমে যেতে, হাঁটতে, পড়তে, লিখতে শেখালো, তার কতো স্যালারি হবে? 

হাসপাতালে নার্স কিংবা ডাক্তারকে ঠিক কতো টাকা দিলে তারা আপনার শিয়রে সারারাত বসে পট্টি দিবে মায়ের মতো? 

এরপর এই একই নারী তো স্বামীর হক্ব আদায় করছে। শারিরিক হক্ব আদায় করছে। মানসিক প্রশান্তি দিচ্ছে। দুঃশ্চিন্তা দূর করার চেষ্টা করছে। সমস্যা শুনছে, সাজেশন দিচ্ছে। পুরো ফ্যামিলিকে মায়া দিয়ে আগলে রাখছে এই নারী। মায়া তো এবস্ট্রাকট জিনিস, এটার অর্থমূল্য তো নির্ধারণ করতে পারবেন না। 

তাহলে মায়ের কাজের অর্থমূল্য নেই, এমনটাও কী বলা গেলো? অর্থাৎ, আমার বাবা চাকরি করছে তাই আমার মা তার ওপর নির্ভরশীল এই কথাটা একেবারেই অবান্তর। এইযে, বাবা অর্থ সরবরাহ করছে, ভরণপোষণ করছে, এটা তার অধিকার। এই অধিকার আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এতে নারীর জন্য লজ্জার কিছু নেই। এটা তার প্রাপ্যের চেয়ে বরং অনেক কম! তাই নতজানু হওয়ারও মোটেও কিছু নেই। (নতজানু এই অর্থে যে, আমি টাকা রোজগার করতে পারছিনা, তাই আমি ছোটো হয়ে থাকবো।)

কিন্তু আলাপটা এখানেই শেষ নয়। আরেকটি অনুচ্ছেদে চলে যাই। 

"আমার বাবা চাকরিজীবী। আমার মা গৃহিণী। মা বাবার ওপর নির্ভরশীল। বাবা মাকে যেমন-তেমন করে ট্রিট করে, খোঁটা দিয়ে কথা বলে, মতামতের মূল্য দেয় না। আমি এরকম আমার স্বামীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে এসব সহ্য করতে চাই না। তাই আমি চাকরি করবো।"

দেখুন, গল্পটা একেবারে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলো। এবার সমস্যাটা আর চিন্তার মানদণ্ডে না। এবার সমস্যাটা পুরুষেরই অবদান। এই বাবা তার মেয়ের মধ্যে পুরুষ সম্পর্কে একটি বিরূপ ধারণা সেট করে দিয়েছে, যা তাকে আল্লাহর তৈরি ফিতরাতের বিরুদ্ধে যেতে বাধ্য করছে। 

আমাদের সমাজের পুরুষদের একটা বিশাল অংশ প্রথম অনুচ্ছেদের মেয়েটির মতো চিন্তা করে। তারা ভাবে, মেয়েরা চাকরি করে না বলে তারা আমাদের ওপর নির্ভরশীল। তাদেরকে যাচ্ছেতাই ভাবে ট্রিট করা যাবে। দুইদল-ই আল্লাহর দেয়া ফিতরাত অস্বীকার করছে। 

ইসলামী রাষ্ট্রে এসব সমাধানের ব্যবস্থা আছে। খলিফার আদালতে বিচার তোলা যাবে। পুরুষটাকে সোজা করা যাবে, সিরিয়াস কেসে তালাক পর্যন্তও যাবে। কিন্তু, বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে? এখন তো খলিফাও নেই, ইসলামী আদালতও নেই, গ্রাম্য বিচার-শালিসে তো মহিলা বাই ডিফল্ট অপরাধী। 

ঠিক সেই জায়গাটিতেই একটা চাকরিপ্রিয় ক্যারিয়ারিস্টিক নারীপ্রজন্ম গড়ে উঠছে। তারা হয় প্রথম কেইসের অথবা দ্বিতীয় কেইসের। প্রথম কেইস হলে সেটা তাদের চিন্তার দৈন্যতা। দ্বিতীয় কেইস হলে তারা পরিস্থিতির স্বীকার। 

আমি সমাধান আলোচনা করবো না। আমি অতোবড়ো মাথাওয়ালা নই। আমি এই ছোটোখাটো প্রবন্ধের শেষে একটি অনুচ্ছেদে শুধুমাত্র দুটো কেইসের এন্ড রেজাল্ট দেখানোর চেষ্টা করবো। 

নারী চাকরিতে আসলে আদতে সমস্যাটা কোথায়? সমস্যা আসলে বিবিধ। 

প্রথমেই চলে আসে ফিতরাত নষ্ট হওয়ার ব্যাপারটি। এই পৃথিবীতে প্রতিটি বস্তুর স্বতন্ত্র জায়গা আছে, প্রতিটি প্রজাতির নিজস্ব অবস্থান আছে। ব্যতিক্রম নয় পুরুষ আর নারীও। পুরুষ এবং নারী শারিরিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই ভিন্নতাও সুন্দর এবং এমনভাবে করা যে, তারা পরস্পরের জন্য উপকারী বলে প্রতীয়মান হয়। তারা এমনভাবে সহাবস্থান করবে যাতে ন্যাচার ভায়োলেট না হয় এবং পরস্পরের অধিকার ও কর্তব্যের জায়গাটিও ঠিক থাকে। 

নারী ও পুরুষ কে কোথায় অবস্থান করবে, এই ব্যাপারে নির্ধারণ করতে পারেন কে? অবশ্যই তাদের স্রষ্টা তাইতো? তাহলে আমরা নারী-পুরুষের অবস্থান কী হবে, তাদের এক্টিভিটি কেমন হবে, এটা জানবো কুরআন এবং হাদীস থেকে। ইসলামে জেনারেল কেইসে নারীদের চাকরি করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। 

কেন সেটার কিছু নমুনা বলি। 

প্রথমত, এটা তার জন্য একটা ফিজিকাল বার্ডেন। একজন নারী মাসে ৬-৭ দিন অসুস্থ থাকে। এইসময় কি তার চাকরি অফ করার সুযোগ আছে? তাকে তো ঠিকই অফিসে যেতে হবে, সারাদিন কাজ করতে হবে। ঘরে থাকলে সুবিধা কী হতো? এখানে তার শ্বাশুড়ি আছে কিংবা মেয়ে আছে, কিংবা স্বামী আছে। তারা জানে এবং বোঝে। এখানে তার ফুসরতের সুযোগ আছে। অফিসে আছে? 

আচ্ছা, প্রেগনেন্সি লিভ কয় মাসের? ৬ মাসের। শুরুর ৪ মাস? প্রেগনেন্সি নিয়েই তো অফিস করতে হয়। মেডিকেল রিসার্চ ঘেঁটে দেখবেন প্রেগনেন্সি নিয়ে অফিস করার স্বাস্থ্যঝুঁকি। 

কিছু নারী আছে, যারা সন্তানই নিতে চান না ক্যারিয়ারের চাপে। ফলে দেখা যায়, বয়স বেড়ে গেলে সন্তান নিতেও জটিলতা তৈরি হয়। কেউবা অক্ষম হয়ে পড়ে। হাইলি ফিজিকাল বিভিন্ন পেশা, যেমন- সেনাবাহিনী, খেলাধুলো ইত্যাদিতে প্রফেশনাল নারীদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব দেখা যায় অনেক বেশি! 

এরপর আসে, সন্তানের ঠিকঠাক বেড়ে ওঠার ব্যাপারটি। ক্যারিয়ারিস্টিক নারীরা ছোটো বাচ্চাকে বুয়ার কাছে রেখে চাকরিতে বেরিয়ে পড়তে দেখা যায়। এতে কী হয়? না সন্তান মায়ের যত্ন-আত্তি পায়, না পায় মায়ের শিক্ষা। সে পায় বুয়ার শিক্ষা আর তার অবহেলা। প্রায়ই দেখা যায় ছোটো বাচ্চাদেরকে বুয়ার নির্যাতন করার নিউজ। এই ক্ষতিটা কি ছোটো কোনো ক্ষতি? 

একটা নারীবাদী টোন আছে, "নারীর কাজ কি শুধু বাচ্চা উৎপাদন আর লালন-পালন করা নাকি?" আমি এখানে 'শুধু' শব্দটার বিরোধিতা করি। অবশ্যই নারীর কাজ শুধু বাচ্চা উৎপাদন, লালন-পালন করা না। নারী অনেক কাজই চাইলে করতে পারে। কিন্তু, এই কাজটা স্পেশালি নারীকে অর্পণ করা হয়েছে এবং স্বয়ং আল্লাহ-ই অর্পণ করেছেন। বাচ্চা জন্মদানের উপযোগী শরীর তাকে দিয়েছেন আর লালন-পালনের উপযোগী মন। এটা অস্বীকার করা মানে প্রকৃতিকে অস্বীকার করা। 

আসলে চাকরি নিয়ে আমার কোনো সমস্যাই নেই। চাকরি করুক, কিন্তু এই ক'টি বিষয় নিশ্চিত করতে পারবে কি?

১. যথাযথ পর্দা। 

২. মাহরামসহ সফর। 

৩. খুব বেশি প্রয়োজন ব্যতীত নন-মাহরামের সাথে ইন্টারেকশন থেকে বেঁচে চলা। 

৪. স্বামীর হক্ব আদায় করা। 

৫. সন্তানের হক্ব আদায় করা। 

একজন চাকরিজীবী নারীর জন্য এর যেকোনো একটিও পরিপূর্ণ করা আজকের সমাজের প্রেক্ষাপটে অন্তত সম্ভব নয় বলে আমি মনে করি। 

যথাযথ পর্দা আপনি কতোক্ষণ করবেন? কোথায় করবেন? কর্পোরেট জবগুলো ক্রমাগত ইসলামোফোবিক হচ্ছে। আপনি নিকাব করলে বলবে, "তাহলে আর চাকরি করার মূল্য কী?" এই বাক্যেরও একটা তাৎপর্য আছে, যদি বোঝেন। অনেক কর্মক্ষেত্র আছে, নিকাবই এলাউড না। পরীক্ষা দেবেন, নিকাব এলাউড না। প্রেজেন্টেশন দেবেন, নিকাব এলাউড না। তাহলে যথাযথ পর্দা ম্যান্টেইন হচ্ছে? 

এরপর আসেন মাহরামসহ সফর। এই জায়গায় কী করবেন আপনি? আপনার স্বামীর চাকরি এক জায়গায়, আপনার অন্য জায়গায়। সে আপনাকে রোজ অফিসে পৌঁছে দিতে পারবে না। আপনাকে চলাফেরা করতে হচ্ছে একাকী। এই হায়েনার দেশে আপনার সেফটি কী? আপনার চাকরি আপনাকে রাস্তায় সিকিউরিটি দিচ্ছে? বাসে আপনি মলাস্টেটেড হলে, রাস্তায় আপনি টিজড হলে, কার ক্ষতি? অবশ্যই চাকরি না করা এর সমাধান না বলতে পারেন, কিন্তু যতোদিন সমাধান না আসছে, ক্ষতি মেনে নেবেন?

নন-মাহরামদের সাথে ইন্টারেকশন ঠেকাতে পারবেন? আপনার অফিসের বস থেকে শুরু করে, সহকর্মী, পিয়ন, সবই তো নন-মাহরাম। তাদের সাথে আপনার কাজ করা লাগছে পাশাপাশি বসে। টিম করে প্রেজেন্টেশন দেয়া লাগছে। প্রয়োজনে-স্বল্প প্রয়োজনে কল-মেসেজিং করা লাগছে। ঠেকাতে পারছেন কই? 

স্বামীর হক্ব আদায় করা কী সত্যিই সম্ভব? সারাদিনের অফিসের ক্লান্তির পর আপনার কি রেস্টের প্রয়োজন নেই? অবশ্যই আপনি বাসার স্ট্রেসের সাথে অফিস+জার্নির স্ট্রেসকে মেলাবেন না দয়া করে। দুটো যে কতটা ভিন্ন তা আপনি জানেন। আপনার ইচ্ছে হবে না মোটেও এতো স্ট্রেসের পর স্বামীর সাথে একটু ভালো করে কথা বলতে। অফিসে যদি প্যারা থাকে আর মেজাজ বিগড়ে থাকে, তাহলে তো আরো না। 

আর সন্তান? সে তো বড়ো হচ্ছে বুয়ার কাছেই.. 

এইসব আলোচনা আমাদেরকে তৃতীয় একটি পরিবারের প্রতিচ্ছবি দেখায়। 

"আমার বাবা-মা দুজনেই চাকরিজীবী। দুজনে দিনভর অফিসে থাকেন। রাতে আসেন। এসে দুজনে যান্ত্রিক তরীকায় আমার খোঁজ নেন। তারপর ফ্রেশ হয়ে খাওয়াদাওয়া করেন। তারপর একদফা ঝগড়া করেন। বাবা-মা দুজনে রাতেও পরবর্তী দিনের জন্য অফিসের কাজগুলো দেখেন। আমি সারাদিন একা ঘরে বসে থাকি। হাসিনা খালা দুপুরে খাইয়ে দেন। আমি টিভি দেখি আর বাবা-মায়ের অপেক্ষা করি। আমার খুব কান্না পায়। আমি কাঁদলে খালা আমাকে বকা দেন।" 

দেখেন, আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। আমি দুটো সিনারিও থেকে একটা কনক্লুশন সিনারিওতে গেছি। অনেক বেশি জেনারালাইজড হয়ে গেছে হয়তো। কিন্তু, রেজাল্ট এর কাছাকাছিই আসবে। আমি কোনো সমাধান দেখাইনি। শুধু দেখিয়েছি, যেই সমাধানটা ফেমিনিজম প্রস্তাব করেছে, সেটা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক এবং সেটা আদতে প্র‍্যাক্টিকালও না। 

এই জাহিলি সমাজে সবচেয়ে বেশি করণীয় আছে পুরুষদের। আপনারা শপথ নেন যে, আপনারা পুরুষ হবেন। আল্লাহ আপনার স্ত্রীর ভরণপোষণ আপনার ওপর বাধ্যতামূলক করেছেন, সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন। আপনি এইটা তার ওপর দয়া করছেন না, এটা তার অধিকার, এই মানসিকতা লালন করেন। আপনার স্ত্রীর মতামতের গুরুত্ব দেন। স্ত্রীকে যাচ্ছেতাইভাবে ট্রিট করবেন না। একটু গাইরতওয়ালা পুরুষ হন, এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আপনার স্ত্রী-কন্যাকে এমন পরিস্থিতিতে পড়া লাগে যেটা ইসলাম এলাউ করে না। আপনার স্ত্রী-কন্যাকে ইসলামী শিক্ষা দিন, আল্লাহকে চেনান, রাসূলকে (স) চেনান। নারীকে নারী হিসেবে চেনান, তার ফিতরাতকে চেনান। তার যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করুন, নয়তো আপনি নিজেই তাদেরকে জাহিলিয়াতের দিকে ঠেলে দিলেন, এটা মাথায় রাখুন। 

বোনেদের প্রতি আহবান, সচেতন হোন। নারী হিসেবে নিজেকে চিনুন। নিজের নারীত্বকে ভালোবাসুন, সম্মান করুন। নিজের মর্যাদাকে চিনুন, নিজের মর্যাদা রক্ষা করুন। ফেমিনিস্টদের চক্করে পড়ে জীবনকে দুর্বিষহ বানাবেন না। দুনিয়ায় আপনি কোনো কম্পিটিশনে আসেননি। পুরুষ আপনার কম্পিটিটর নয়, আপনার সহযোগী। প্রাকৃতিক অবস্থানকে অস্বীকার করে অসুস্থ পৃথিবী তৈরি করবেন না। 

© আসিফ মাহমুদ

Tuesday, February 6, 2024

How to be prepared for marriage for female



Sometimes unmarried sisters ask me, "What can I do now as a single woman to prepare myself for being a mom in the future?" 

My top 5 tips: 

1. Learn Your Deen: 

Cover the basics. Have a good foundation in Islamic knowledge, علم. You don't need to get an advanced degree as a muhadditha or specialize in ifta' (giving fatawa, etc). But you do need to learn in some depth the individually obligatory knowledge necessary to live as a practicing Muslim adult. 

For example, learn the fiqh of purity (باب الطهارة) to make sure you are making wudu properly, fiqh of prayer (باب الصلاة) to make sure you are praying correctly, and all the other acts of worship that you do regularly. Learn as much Quran as possible: correct pronunciation, basic tajweed, some tafseer, some memorization if you can. Learn the basics of `aqidah and tawheed, knowing who Allah ﷻ is. This is important not only for you individually, but also for your future offspring inshaAllah. The first step of teaching your children is to teach yourself. 

You can also learn many things alongside your children inshaAllah-- I have! You don't need to cram in ALL the `ilm before you have children, so don't stress over this. But if you have time now, it would be good to use this free time to gain knowledge before you become busy with children inshaAllah. The more you learn now, the more you can teach children when you have them. 

2. De-colonize Your Mind:

Get rid of any traces of feminism. Get your priorities straight. Sort out your inner thoughts and feelings about your purpose in life, your goals, your role. Establish in your heart and mind the absolute importance of motherhood and the seriousness of the role. Narrow your focus. 

Ask yourself: What should I build my identity around? Being a Muslim wife and mother? Or being a wage serf?

Ask yourself: What counts as an accomplishment? Raising a righteous child and having a happy, healthy family? Or attaining a collection of secular higher-education degrees and climbing the corporate ladder?

Ask yourself: What does it mean to have a successful life? What does it mean to be happy?

Work out the reasons, rationales, and the implications for whatever answers you give. 

Figure out what you plan to do when you become a mother inshaAllah: do you aim to stay home with your children to raise them well, or do you intend to leave them so you can work your "dream job" because you're "a strong independent woman" working a 9-5 desk job? It's one thing if, after becoming a mom, you need to work outside the home purely out of necessity just to make ends meet. But it's another thing entirely for you to *aspire* to be "a working woman" all your life who is "stunning and brave" because this is the only way you think a woman can have any value. 

Growing up in this modern liberal world order, many girls and young women are indoctrinated by feminism to see marriage and motherhood as slavery and to think having self-worth means being a lifelong corporate slave. I was brainwashed with this, too. I had to un-brainwash myself slowly. It didn't happen overnight, but alhamdulillah it is possible to reverse the liberal feminist programming.

3. Address Your Childhood:

Our childhood often has an impact on how we raise our own children. My mother died when I was a young child. This reality has influenced my own method of motherhood and tarbiya with my own children. It is often healing to give others what we never got ourselves. 

Many people have childhood trauma and it isn't easy. May Allah grant us all ease and baraka and mercy. As moms, we often need to go back to our own childhood and recognize the roots of our own issues and problems so that we can slowly try to resolve them, and not just repeat the dysfunctional old patterns with our own innocent children. The worst thing is for us parents to lack self-reflection and blindly pass on the generational problem on to the next generation. I know how hard this is, though. It takes so much mental work and effort. But it is very possible through du`a and a willingness to pursue self-awareness and emotional maturity. 

4. Practice Homemaking:

When you have a baby, you will also have other responsibilities and duties that preceded that. Use some of your time before marriage and/ or motherhood to gain important practical skills needed to run a successful home smoothly. 

Learn to cook. You don't have to go to culinary school or become a professional chef who cooks Michelin-star gourmet meals. But it is important to learn at least the basics of cooking, making healthy and delicious food. 

Learn how to clean your home. Almost nobody talks about the importance of this skill. Having a neat, clean space is important not only to maintain hygiene in our spaces, but also to give us a sense of peace and serenity at home. Having a cluttered or messy or dirty home gives feelings of anxiety or stress. We want our home to be our safe haven, our sanctuary, our place of peace and rest. Part of the job of the homemaker is to have an efficiently organized and clean home. 

Learning these practical homemaking skills before becoming a mother is super helpful. Because having your first baby is a VERY new experience filled with new skills that you scramble to learn on the spot: how to change a diaper, how to breastfeed, how to care for an infant. So if along all this, you also have to learn how to cook, how to clean, how to do laundry, how to organize the pantry-- it will be too many new things all at once. You'll feel overwhelmed. 

5. Select Your Husband Wisely: 

When you choose a man to marry, you aren't only picking a husband for yourself. You are also choosing the father of your children inshaAllah. Make a wise, intelligent choice as much as you are able (of course nobody knows the ghayb except Allah). But through the processes of istikhara and istishara ( الاستخارة والإستشارة), you can hopefully vet the man well and make an informed decision based on long-term benefit and not only short-term physical attraction. 

One of the first rights children have upon their parents is the selection of a righteous spouse. A man picking a good wife is fulfilling his future children's right for a righteous mother. A woman picking a good husband is fulfilling her future children's right for a righteous father. 

When we take any role or job seriously, we plan and prepare for it. We study it, determine its requirements, and make sure we have the necessary prerequisites to be qualified candidates for the position. 

Motherhood is no different. In fact, motherhood for the sake of Allah is the highest and most worthwhile role for a woman. 

Motherhood is the unfurling of a woman's fullest potential.


Umm Khalid 

Thursday, February 1, 2024

নারী কেন ধোঁকা খায়

মেয়েদের একটা কমন বৈশিষ্ট্য হলো তারা ধোঁকা খায় বেশি। মিষ্টি কথা, মিষ্টি আচরণ দিয়ে এদের ধোঁকা দেয়া একদম পানিভাতের মত সহজ।দাজ্জাল নামের অর্থই হলো ধোঁকা, বিভ্রান্তি। আর দাজ্জালের ফেতনায় সবচেয়ে বেশি পড়বে মেয়েরা। এ থেকেই বোঝা যায় ওদের ধোঁকায় পড়ার সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি।।

এজন্য যখন দেখি কোন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বিশাল পাগলা মেয়ে ফ্যান বেইজ, তখন তাদের মধ্যে ধোঁকাবাজি আছে ধরে নিতে মন চায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ধরে নেয়া সেইফ থাকে। 

যেমন রিসেন্ট কেইস, লাইফ স্প্রিং। এর আগে মাইনু, জাফর বিপি। এছাড়াও আছে কিছু রাকি। বিদেশে আছে কিছু বক্তা, যেমন NAK। 

আজনবি নারীর প্রতি আলগা দরদ দেখানো প্রতিটি ব্যক্তিকে তাই আমার শিকারি শেয়াল মনে হয়। এবং নিজে সযত্নে অনলাইন ও অফলাইনে উল্টো করার চেষ্টা করি। 

যেসব নারী আপনার ফ্যামিলির অংশ, মাহরাম, ভালো ব্যবহার, নরম ব্যাবহার শুধু তাদের জন্য। অনাত্মীয়, গায়রে মাহরাম নারীদের প্রতি কোমল আচরণ করা অনুচিত। যদিও কিছু বেকুব উল্টো নসীহত দিবে।

আল্লাহ নারীদের গায়রে মাহরাম পুরুষদের সাথে কোমল কণ্ঠে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। পুরুষরা নারীদের কণ্ঠে আকৃষ্ট হয় বলে এই হুকুম। এর মানে শুধু এই না যে এটা নারীর জন্য খাস।একইভাবে যেখানে নারীরা পুরুষদের কোমল/সিম্প্যাথি দেখানো আচরণ দেখে আকৃষ্ট হতে পারে, ফেতনায় পড়তে পারে, সেখানে পুরুষের ওই ধরনের আচরণ পরিহার করা কর্তব্য মনে করি।

নারীদের করণীয়
-------------
প্রকৃতিগতভাবে তারা ধোঁকায় পড়ে বেশি, এটা তো পাল্টানো যাবে না। যেটা করা যাবে সেটা হলো আল্লাহর কাছে দুয়া করা, নিরাপত্তা চাওয়া। আর হলো বিশ্বস্ত, পুরুষ গার্ডিয়ানের পরামর্শে থাকা। শেয়াল কিন্তু এটাই ভয় পায়। সে চায় গার্ডিয়ানের আড়াল থেকে বের করে আনতে। বের করে আনলে সে ছলাকলা বুঝিয়ে ধোঁকায় ফেলতে পারবে সহজে।

- মোহাম্মদ আনোয়ার ভাই এর লিখা