••••••••• •••••••••••••••
এই তুই পেয়েছিস কি আমারে? ছাগল না ভেড়া?
আজকে ওনার জুতা ছিরে যাবে কাল ব্যাগের চেইন নষ্ট হবে পরশু নীলক্ষেত হতে
কোন অখ্যাত লেখকের বই খুঁজে বের করতে হবে। আবার রোদে দাড়িয়ে থেকে রিক্সা
ঠিক করে দিতে হবে, আমি আর পারুম না, তোর কাজ তুই কর।
এমন করে প্রতিদিন আমার রাজকুমারীর সাথে ঝগড়া করি আর পরেরদিন ক্যাম্পাসে আসলেআবার আগের মতো তার হুকুম পালন করতে থাকি।
কেন জানেন?
কারণ এই বেখেয়ালি মেয়েটাকে আমি বড্ড বেশী ভালোবাসি। কিন্তু এখনো বলতেপারি নাই।
বলতে যে চেষ্টা করিনাই তা না, যেদিনই বলতে গেছি সেদিনইরাজকুমারীর আমার, অতি অপ্রয়োজনীয় কাজের ব্যস্ততা দেখা দেয়।
ধুর! ভালো লাগে না।
গত ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ তে শাহবাগ থেকে ১১০ টাকা দিয়ে একখান সাদা গোলাপ
কিনছিলাম তাহার আবার ওটাই পছন্দ কি করার, পকেটের শেষ সম্বল খরচ করতে হল।
সেটা আবার বন্ধু মহলের হাত হতে বাঁচানোর জন্য অতি সাবধানে ব্যাগের মাঝে
রাখলাম।
হায় কপাল আমার! ভাগ্য এতোই সুপ্রসন্ন, যে শালার মোজা মানে
মোজাম্মেল হাই বেঞ্চে বসার আর জায়গা পেল না একেবারে আমার ব্যাগের উপর।
আবার কয় কিনা চেতস কেন দোস্ত? কিভাবে বলি এর মাঝে অতি মূল্যবান একখান
বস্তু লুকায়িত অবস্থায় আছে।
কি করার রাজকুমারীকে তো আবার চ্যাপ্টা গোলাপ দেয়া যায়না। পকেটে নাই আবার টাকা। তাই সেবার আর বলা হল না।
রাজকুমারীর সাথে যেদিন প্রথম পরিচয় সেদিন থেকেই এসব গণ্ডগোল লেগেই আছে। তা আর বললাম না।
দু’দিন ধরে তিনি ক্লাসে অনুপস্থিত, ভাবলাম ফোন দিয়ে দেখি জ্বর-টর হোল নাকি।
মোবাইলটা বেজেই গেল ধরল না। তাই কি করার ল্যান্ড ফোনে কলদিতে হলো।
বহু কষ্টে ওনাকে পাওয়া গেল
-কিরে ক্যাম্পাসে আসস না কেন? জ্বর নাকি?
-নারে, একটু বিজি। কালকে আসবএখন রাখি পরে কথা হবে। বাই।
ভুলবশত রিসিভারটা রাখা হয় নাই তাই আমি শুলতে পেলাম কিছু কথা। তা ছিল এমন তাও আবার তার কণ্ঠস্বর,
“না আপা ছেলেটা-তো ভালোই, রিং টাও দারুণ। জবটা পার্মানেন্ট। এখন দেখার বাকি মানুষ হিসেবে কেমন। খারাপ হলে রিং ফেরত।“
রাজকুমারী আমার এই কাজের জন্য ক্যাম্পাসে আসে নাই। তার মানে বাসায় তাকে আজকে আংটি পরাতে আসছে।
এতদিন না বলার ফলাফল আমকে এভাবে শুনতে হবে আমি কল্পনাও করি নাই। আমার মাথা ঘুরছে। টোটালি আমার সামনে সবকিছু ব্ল্যাক।
কালকে গিয়ে দেখতে পাবো তার হাতে কোন পাথর বসানো আংটি শোভা পাচ্ছে। আর এসে
বলবে এতো দ্রুত সব হয়ে গেল তোদেরজানাতে পারলাম না সরি, বিয়েতে ডাবল
খেয়ে নিস।
নাহ্ আর ভাবতে পারছিনা।
যাহ্, কালকে থেকে ক্লাসেই যামু না। গেলেই ঐ মুখ দেখতে হবে।
এক সপ্তাহ কেটে গেল, ফোনটাও অফ।
লাস্ট ইয়ারের লাস্ট সেমিস্টার, এই পর্যায়ে এসে যদি সব ছেড়ে দেই তাহলে
আমারফ্যামিলির কি হবে। একমাত্র আমিই আমার ফ্যামিলির আশা ভরসা, নিজ
দায়িত্বকে-তো আর অবহেলা করতে পারিনা।
-কিরে এতদিন কই ছিলি?
-মরতে গেছিলাম। পারিনাই তাইব্যাক করছি
- বাজে কথা রাখ। একটা দারুণ খবর আছে, আমার আমার.......
- জানি আপনার বিয়ে দাওয়াত কার্ড দিবি ছেলে ভালো পার্মানেন্ট জব সরি বলতে
পারিনাই এতো বিজি ছিলাম ডাবল করে খেয়ে নিস ইত্যাদি ইত্যাদি............
শোন তোর এসব প্যানর প্যানর শোনার জন্য ক্লাস করতে আসি নাই আর আমাকে
পেয়েছিস কি? গাধা গরু ছাগল নাকি ভেড়া? হ্যাঁ আমি মনে হয় সব, কারণ আমি
ভুল করে তোরে ভালবাসতে গেছি বহুত হইছে আর না যা এবার থেকে জুতা ছিরে গেলে
তোর হবু বরকে গিয়ে বলবি মুচি ঠিক করে দিতে, পার্মানেন্ট গাড়ি কিনে দিতে,
নীলক্ষেত থেকে বই খুঁজে দিতে।
শোন তোর জন্য আমি আর কিচ্ছু করতে পারবনা
কিচ্ছু না আমি আর বৃষ্টিতে ভিজতে পারব না রোদে পুড়তে পারবনা তোর রাস্তা
তুই খুঁজে নে .........
আমি এতক্ষণ পাগলের মত এক নিশ্বাসে সব বলে গেলাম
কোন দাড়ি কমা ছাড়াই। খেয়াল করি নাই এতক্ষণ আমার রাজকুমারী সহ আমার
বন্ধু মহল হা করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি আর কথা না বাড়িয়ে করিডরের
দিকে পা বাড়ালাম শুধু তখন একটা কথাই শুনতে পেলাম পেছন থেকে,
“আমার মেঝ আপার বিয়ে আগামী শুক্রবার ক্লাস শেষ হলে দাওয়াত কার্ডটা নিয়ে যাস”
এর পরের ঘটনা অতি সংক্ষিপ্ত
চলো (তুই থেকে তুমিতে রূপান্তর)
কোথায়?
বড় আপা তোমার সাথে কথা বলতে চাইছেন..................
••••••••• •••••••••••••••
লিখেছেনঃ আফরিন
গল্পটি নেয়া :
https://www.facebook.com/Golpo143/posts/216397868435445
ভাল লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন ।
ভাল থাকুন ; সুস্থ থাকুন ।