Sunday, June 10, 2012

লাশ [Small Tale Ghost - 2 ]




এই ঘটনাটি ঘটেছিল আমার মামার সাথে।

প্রায় 4/5 বছর আগের কথা। আমার বয়স তখন 22/23 এরকম হবে। আমার মামা ঢাকায় থেকে লেখাপড়া করতো। আমার মামারদের বাড়ি ছিল রাজবাড়ি জেলায়। একবার আমার মামা ঈদের ছুটিতে গ্রামে আসতেছে। ওই গ্রামের যাওয়ার দুটি রাস্তা ছিল। একটি রাস্তা দিয়ে গেলে দ্রুত যাওয়া যায় কিন্তু একটি সমস্যা ছিল ওই রাস্তা পাশে কবরস্থান ছিল এবং ওখানে নাকি অনেক ভয় ছিল তাইওই রাস্তা দিয়ে রাতে কেউ বাড়ি ফিরতো না আর অন্য রাস্তা দিয়ে গেলে কনো সমস্যা হত না। আমার মামা বাজার পর্যন্ত আসে এবং রিস্কা ওয়ালা বলে আর যাবে না অনেক রাত হয়েছে তাই। 



আমার তখন কি আর করবে রিক্সাথেকে নামে এবং দেখে বাজারে দুই একটা দোকান খোলা আছে কিন্তু কনো ভ্যান বা রিক্সানেই। তখন আমার মামা কিছু করার নেই দেখে হাটা শুরু করে। একসময় ওই দুটো রাস্তারসামনে যেয়ে থেমে ভাবে যে কোন রাস্তা দিয়ে যাবে। তখন আমার মামা মনে করে কবরস্থানএর রাস্তা দিয়েই যাই। তারপরআমার মামা ওই কবরস্থান এর রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। তখন আমার মামার মনে পরে যায় যে রাতে কেউ এই রাস্তা দিয়ে যায় না এবং এই রাস্তা দিয়ে গেলে নাকি সমস্যা হয়। এই ভেবে আমার মামা থেমে যায়। তারপর আমার মামা ভাবে ওই রাস্তা দিয়ে গেলে অনেক সময় লাগে এবং অনেক দেরি হয়ে যাবে বাড়ী পৌছাতে। এই ভেবেআমার মামা কবরস্থান এর রাস্তা দিয়ে হাটা শুরু করে।এমন সময় দেখে আমার মামার গ্রামের বন্ধু জামাল সে পেছন থেকে ডাকতেছে তখন আমারপেছনে তাকায় এবং দেখে সত্যিজামাল আসতেছে। তখন জামাল কাছে আসার পরে জামাল কে বলেতুই এত রাতে কোথায় গিয়েছিলি? তখন জামাল বললো তোকে আনতে বাজারে। তখন মামাবলে কোথায় তোকে তো বাজারে দেখলাম না। তখন জামাল বলে আমি একটু ওই দিকে গিয়েছিলাম। তখন আমার মামা বলে কোন দিকে? জামাল বলে ওইদিকে কিন্তু কোন দিক না দেখিয়ে। তখন আমার মামা এটারতেমন গুরুত্য না দিয়ে জামালএর সাথে হাটা শুরু করে। তারপর যখন কবরস্থান এর পাশেআসলো তখন দেখা গেলো জামাল নেই জামাল উধাও। আমার মামা এদিকে ওদিকে তাকিয়ে কোথাও জামাল কে খুজে পেল না। তখন আমার মামা একা একা হাটতে লাগলো একটু একটু ভয় নিয়ে বুকে। এমন সময় আমার মামা অনূভব করলো তার শরির এর ভিতর দিয়ে কে যেন বেরিয়ে গেলো। এরকম অনূভব করার পরে আমার মামা আরো ভয় পেয়ে যায়।এবং কিছু করার নেই ভেবে জোরে জোরে হাটতে শুরু করে। কিছুক্ষন পরে আমার মামার একদিকে চোখ পরে যায় এবং দেখে একটি মেয়ে কবরস্থান এরকবর থেকে লাশ উঠিয়ে সেই পচালাশ নখ দিয়ে ছিরে ছিরে কাচ্ছে এবং আমার মামা কে ডাকতেছে আর খিল খিল করে হাসতেছে। এটা দেখা মাত্র আমার মামা ভয় পেয়ে যায় এবং আমার মামার শরির ঠান্ডা হয়েযায় । তখন কিছু না দেখার ভান করে দৌর শুরু করে দেয়। একসময় আমার মামাদের বাড়ীতে এসে চিত্‍কার দিয়ে হাপাতে শুরু করে আমার মামা।তখন আমার নানা নানী এবং বড়মামা ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে এবং বলে কি হয়েছে তখন আমার মামা সব ঘটনা খুলে বলে। তখনআমার নানা নানী নিষেধ করে যে যত রাত ই হোক না কেনো আর যেন ওই রাস্তা দিয়ে না আসা হয়। এরপরে আমার মামার আর কনো সমস্যা হয় নাই এবং আর কনোদিন ওই রাস্তা দিয়ে আসেনি।
100% সত্য গল্প আমি ঠিকমত লিখতে পারিনি তাই। কেমন লাগলো তা like & কমেন্ট করে জানান।

জাহিদ [Small Tale -1]




অনেকদিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম । বেশ ভাল লেগেছিল।
কার লেখা জানি না । গল্পের খালি কাহিনী মনে আছে । নিজের মত করেই লিখছি....

প্রতিদিন বিকেল হলেই বাড়ী ফিরে আসে জাহিদ । বাসা বেশ খানিকটা দুর তো বটেই.. তাছাড়া তার নতুন বিয়ে করা বউ বাসায় একা থাকতে ভয় পায় । বিকেলের দিকে গ্রামের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ শেষ করে সাইকেলটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে । নতুন চাকর...ি একটু কষ্ট তো করতেই হবে । এইভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দেয় সে 
। তার বাসায় যাওয়ার রাস্তাটা অনেক ঘুর পথে । কয়দিন আগে একটা সর্টকাট আবিষ্কার করেছে সে । রাস্তাটা একটু নির্জন অবশ্য কিন্তু দিনের বেলায় যায় বলে ভয় লাগেনা জাহিদের ।
সেদিন কাজ শেষ করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেল । প্রচন্ড শীতের সময় , ছয়টা বাজতে না বাজতেই রাতের মত হয়ে গেল। বের হওয়ার সময় একবার মনে হল ঘুরপথেই যাবে নাকি!! কিন্তু পরমুহূর্তেই হেসে উড়িয়ে দিল ও । ধুর, এই শী্তের মধ্যে এত দূর ঘুরে যাব!! তাই বড় টর্চটা হাতে নিয়ে তাড়াতাড়ি সাইকেল বের করে রওনা হয়ে গেল জাহিদ ।
রাস্তাটা পাকা নয় । পাকা হবার কথাও না । এমনিতেই মানুষজন খুব কম চলাচল করে এখান দিয়ে । প্রচন্ড শীতের মধ্যে এখন তো কারো আসার প্রশ্নই আসে না ।
হঠাৎ করেই ফুশ করে শব্দ , আর সেই সাথে সাইকেল নড়বড় ।
সাইকেল খুব জোরে চলছিল । তাই সরাসরি মাটিতে ।
শব্দ শোনার পর আর বলে দিতে হল না কি হয়েছে । জাহিদ তিক্ত মনে ভাবল বাঙালী বাঘা জিনিস । কী কী প্রবাদ যে বানাইছে । যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই কিনা সন্ধ্যা হয় ! টায়ারটাও এখনই পাংচার হইতে হইল ! হাত থেকে পড়ে টর্চটা নিভে গিয়েছিল । শংকিত মনে জাহিদ মাটি হাতড়ান শুরু করল । টর্চের মত কিছু একটা হাতে ঠেকল । তুলে নিয়ে সুইচ চাপতেই মনটা আবারো তিক্ততায় ভরে গেল । "চমৎকার !! আর কী চাই !!" এইটাও শেষ । সোজা হয়ে দাড়িয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করার চেষ্টা করল জাহিদ । কি করা যায় ! অনেকক্ষন ভেবে এটুকুই বুঝল যে এখানে দাঁড়িয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করার চেষ্টা করতে থাকলে মাথা চিরদিনের মত ঠান্ডা হয়ে যাবে !
প্রথমে সাইকেলটাকে ঝোপের আড়ালে নিয়ে রাখলো কোনরকমে। নিজে কোনরকমে বাসায় পৈছতে পারলেও সাইকেলটা নিয়ে যাওয়া সম্ভব না । সকালে নিয়ে গেলেই হবে ।
তারপর আবার রাস্তায় দাড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাতেই হঠাৎ আশায় বুকটা নেচে উঠল । দূরে গাড়ির দুটো হেডলাইট এদিকেই আসছে । এই জায়গায় গাড়ি কিভাবে এল এ চিন্তা মাথায় এলেও জাহিদ তা মাথায় স্থান দিল না । জাহিদ অপেক্ষা করতে থাকল । কিন্তু গাড়িটা খুব বেশী স্লো । জাহিদ নিজেও একটু এগিয়ে গেল । গাড়িটা ওর সামনে এসেই থামল । জাহিদ খুশি মনে গাড়ির পেছনের সীটে গিয়ে উঠল । আস্তে করে গাড়ীর দরজা লাগাতেই গাড়িটা আবার চলতে শুরু করল ।
গাড়ির ভেতরটা বেশ গরম । জাহিদের মনে হল ও যেন ঠান্ডা দোযখ থেকে গরম বেহেশতে এসে পড়ল । গাড়ীর চালককে কিভাবে ধন্যবাদ দেবে বুঝতে পারছিল না জাহিদ । পেছন থেকে ও বলল-
" থ্যাংকিউ ভাই । জীবনটা বাঁচালেন ।"
চালক জবাব দিল না ।
একটু অস্বস্তিতে পড়ল জাহিদ । আবার বলল-
"রাস্তায় হঠাৎ সাইকেলের চাকা পাংচার হয়ে গেল আরকি হে হে।"
এবারো কোন জবাব নেই ।
জাহিদ বুঝতে পারছিল না এই লোক কথা বলে না কেন?
আবারো ও বলল
"এদিকে কার বাসায় যাবেন?"
এবারো কোন জবাব নেই।
এবার একটু মেজাজ খারাপ হল জাহিদের । ব্যাপার কি? যাই হোক ও চুপ করে গেল ।
কিছুক্ষণ পর ওর টনক নড়ল । কি ব্যাপার !! গাড়ী এত আস্তে আস্তে চলছে কেন ? সামনে ঝুকে জাহিদ ঐ লোককে ডেকে বলতে চাইল "ভাই গাড়ি এত আ-
মেরুদন্ড দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতল স্রোত তার কথা মাঝপথেই থামিয়ে দিল । চালকের আসনে কেউ বসে নেই । সবার আগে যে সম্ভাবনাটা মাথায় এল তা আর ভাবতে চাইল না জাহিদ। গাড়ি থেকে নেমে যেতে চাইল ও । কিন্তু আতংকে ও নড়তে পারছিল না । সামনে রেল ক্রসিং । গাড়িটা খুব আস্তে আস্তে ঐ রেললাইনের উপর গিয়ে দাড়াল । হঠাৎ ট্রেনের হুইসেলের শব্দে জাহিদের মাথা পরিষ্কার হয়ে গেল । তাহলে ভুতটার তাহলে এই মতলব ! এখন ট্রেন এলে জাহিদ একদম চ্যাপ্টা হয়ে যাবে । তাড়াতাড়ি ও দরজার হাতল ধরে টান দিল । আবারো ভয়ে ও পাগল হয়ে গেল । বারবার হাতল ধরে টান দিলেও ওটা খুলছিল না । গাড়িটা আবারো নড়তে শুরু করছিল । ওদিকে ট্রেন কাছে চলে আসছিল । ভয়ে আর পরিশ্রমে হাঁপাতে হাঁপাতে যখন ও জীবনের আশা প্রায় ছেড়ে দিচ্ছিল তখনই ও খেয়াল করল দরজাটা তো লক করাও থাকতে পারে । তাড়াতাড়ি লকে হাত দিয়ে লকটা খুলে ও বাইরে ঝাঁপিয়ে পড়ল । মাটিতে গড়িয়ে ও কিছুটা দুরে সরে এলো । তখনই আবারো গাড়িটা চলতে শুরু করল । গাড়িটা রেললাইন পার হয়ে গেলেই ট্রেন চলে গেল । জাহিদ মাটিতে শুয়ে চোখে আতংক নিয়ে গাড়িটার দিকে তাকিয়ে ছিল । গাড়িটা আবারো ওর সামনে এসে দাঁড়াল ।

গাড়ির পেছন থেকে হঠাৎ এক যুবক বের হয়ে গাড়ির গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে হাঁপাচ্ছিল । তার সারা গায়ে এই শীতের রাতেও ঘাম । জাহিদের একটু খটকা লাগল । ভুতেরাও ঘামে ?!! যুবক জাহিদকে দেখতে পেয়ে কাছে এসে বলল ''কী ব্যাপার, মাটিতে শুয়ে আছেন কেন ? আমার গাড়িটা যে রেললাইনের উপর হ্যাং হয়ে ছিল দেখেন নি ? ''
জাহিদ কোনরকমে ঘাড় নাড়ল ।
''আচ্ছা মানুষতো আপনি ! আরেকটু হলেই মারা যাচ্ছিলাম আর আপনি হেল্প করতে আসলেন না ? পাক্কা দুই কিলোমিটার ধরে গাড়িটাকে ঠেলছি !! আসুন আসুন , আমার সাথে ঠেলুন ।

জাহিদ বিনা বাক্য ব্যয়ে উঠে যুবকের সাথে গাড়ি ঠেলতে শুরু করল ।