Thursday, April 29, 2021

জীবন গঠনের মূলসূত্র

 

জীবন গঠনের মূলসূত্র
শামসুন্নাহার নিজামী

 একমাত্র  মেয়ে। মেয়েটির বিয়ে হয়ে শশুরবাড়ী চলে  গেল। বেশ কিছুদিন পরে সে এলো বাপের বাড়ি। মা জিজ্ঞাসা করল,তুমি কেমন আছো?  মেয়েটির জানালো সে খুব ভালো নেই।  শ্বশুরবাড়িতে তার এডজাস্ট করতে কষ্ট হচ্ছে। ইত্যাদি ইত্যাদি......। বাপের বাড়িতে মেয়েটি আনন্দে হাসিখুশিতে কাটাল। দেখতে দেখতে তার শ্বশুর বাড়ি ফিরে যাবার সময় ঘনিয়ে এলো। 

একদিন তার মা রান্না  ঘরে  একটি পাত্রে কিছু ডিম,গাজর আর কফি  বিন সিদ্ধ করতে দিলেন । সিদ্ধ হওয়ার পর সে অন্য পাত্রে সেটি ঢেলে রাখলেন। মেয়েটিও মায়ের সাথে রান্না ঘরে ছিল। মা তখন জিজ্ঞাসা করলেন এখান থেকে তুমি কি কিছু বুঝতে পারলে? মেয়েটির জবাব দিল না। স্বাভাবিকভাবেই তুমি এগুলো সিদ্ধ করেছো। 

মা তখন বললেন এখানে ডিম ছিল ভঙ্গুর  ভিতরে  নরম। সিদ্ধ করার কারণে তার শক্ত হয়ে গেছে। গাজর ছিল শক্ত। সিদ্ধ হয়ে সেটা নরম হয়ে গেছে। আর কফি বিন গলে সমস্ত কিছুর সঙ্গে মিশে সুন্দর সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। তিনি বললেন মেয়েরা যখন শ্বশুর বাড়িতে যায় তখন ভিন্ন পরিবেশে তাকে মোকাবেলা করতে হয়। যদি তুমি ডিমের মতো নরম হও তাহলে পরিবেশ তোমাকে শক্ত করে ফেলবে। গাজরের মত শক্ত হলে তোমাকে নরম করে ফেলবে। আর কফি বিনের মতো নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারলে সৌরভ ছড়িয়ে পড়বে। শ্বশুরবাড়ি কে নিজের মনে করে  সেখানে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যেই সার্থকতা এবং সুখ। আমার মা আমাকে এইভাবে বুঝিয়েছেন। আমিও তোমাকে সেই শিক্ষাই দিতে চাই। 

এরপর মেয়েটি যখন শ্বশুর বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল তখন মা লক্ষ্য করলেন যে মেয়ে খুবই উৎফুল্ল এবং আনন্দের সাথে যাচ্ছে।  বিয়ের পর মেয়েদের কে শ্বশুরবাড়ি নামক এক অজানা পরিবেশে যেতে হয়। সেখানে বউ হিসেবে তার ওপর চাপে অনেক দায়িত্ব কর্তব্যের বোঝা। সে আর তখন তার বাবা মায়ের রাজকন্যা নয়। তাকে সবাই  উৎসুক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করে। সামান্যতম   ছাড় দিতেও কেউ রাজি নয়। সেখানে মেয়েটি কি করবে?

 এর প্রাথমিক দায়িত্ব বাবা-মায়ের । সন্তান প্রতিপালনের ব্যাপারে দায়-দায়িত্ব মূলত তাদেরই। ছেলে হোক বা মেয়ে হোক সবাইকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে না পারলে বৃহত্তর  অঙ্গনে তাদেরকে হোঁচট খেতে হয়। এক্ষেত্রে পিতামাতাকে হতে হবে আদর্শ । তাদেরকে অনুকরণ অনুসরণ যোগ্য দৃষ্টান্ত রাখতে হবে। সন্তানদের মন-মগজে ও চরিত্র গঠনের জন্য এটাই কার্যকর মাধ্যম যা তারা সন্তানদের বলবেন তা তাদের নিজের জীবনে থাকতে হবে।

 সন্তান লালন-পালনের ক্ষেত্রে সূরা লোকমানের দ্বিতীয় রুকুতে বর্ণিত শিক্ষা কে সামনে রাখলে বিশেষভাবে উপকৃত হওয়া যায়। শিক্ষা গুলো হচ্ছে:-
১. সন্তানকে শুরু থেকে শিরক মুক্ত তৌহিদের অনুসারী বানাতে হবে।
২. পিতা মাতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৩. নামাজ কায়েমের  তাগিদ দিতে হবে ।
৪. কুরআনে বর্ণিত  দায়ী ইলাল্লাহ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে ।
৫. সৎকাজে আদেশ দান ও অসৎ কাজে বাধা  দানে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৬. এ পথে বাঁধা প্রতিবন্ধকতার মোকাবেলায় ধৈর্যধারণের তাগিদ দিতে হবে।

 কথাবার্তা চালচলন আচার-ব্যবহার যাতে সুন্দর ও মার্জিত হয় সে ব্যাপারে তাগিদ দিতে হবে।  মানুষ যদি তার দায়িত্ব  কর্তব্য পালনে সচেতন হয় তাহলে সঠিক ভাবে তার কাজ করা সম্ভব হয়। সমানে সংসারের পেশাগত জীবনে সবখানেই আমাদের যেমন কিছু দায়-দায়িত্ব রয়েছে তেমনি কর্তব্য ও আছে। এর একক সীমারেখা আছে। সবাই যদি যার যার দায়িত্ব কর্তব্য সঠিক  ভাবে পালন করে। সীমারেখা অতিক্রম না করি তাহলে সমস্যা হওয়ার কথা না। 
আমাদের কার্যকলাপ কেউ লক্ষ্য করছে অথবা রেকর্ড হচ্ছে জানলে আমরা সবাই সতর্ক থাকি। উন্নত দেশগুলোকে যেখানে CCTV ক্যামেরা থাকে সেখানে সবাই সাবধান হয়ে যায়। এমনকি গাড়ী চালাতে গিয়ে SPREED CONTROL করে। আমরা যদি জীবনের সবকিছু আল্লাহর কাছে RECORD হচ্ছে এই অনুভূতি নিয়ে করি তাহলে আমরা নিজেদেরকে CONTROL করতে পারব। আর তাই শিশুকাল থেকেই শিরক এবং তৌহিদের শিক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। যা পরবর্তী জীবনে মানুষের জীবনে প্রতিফলিত হয়।ইসলামের ফরজ বিধিবিধান মেনে চলার মধ্যে দিয়ে মানুষের মধ্যে  ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি হয়। আচার আচরণ কথা বার্তায় নম্রতা ভদ্রতা সৃষ্টি হয়।

মানুষ সবসময় বাস্তব জীবনে অনুকুল পরিবেশ পাবে। এক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার সাথে সবর এখতিয়ার করতে হবে। সমস্ত কিছুর প্রতিদান আল্লাহর কাছে পাওয়া যাবে এ ভরসা রাখতে হবে।

যে গল্পটা দিয়ে শুরু করছিলাম সেখানে তিনটি জিনিসের মধ্যে কফি বীন সবকিছুর মধ্যে মিশে গিয়েছে। কিন্তু নিজে অস্তিত্বহীন হয়ে যায়নি। সবকিছুর মধ্যে তার অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে।সৌরভ ছড়িয়েছে। পক্ষান্তরে বেশি নরম বা বেশি শক্ত ডিম এবং পাথর তা পারেনি। এটাই হচ্ছে মধ্যম পন্থা যা ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়।

সুরা আল ফুরকানে আল্লাহর পছন্দনীয় বান্দাহদের গুণাবলী উল্লেখ করা হয়েছে:
১. তারা চাল চলনে বিনয়ী।
২. তারা অজ্ঞ মুর্খ লোকদের মুর্খতা ও অজ্ঞতা প্রসুত তর্কে জড়িয়ে পড়ে না।
৩. তারা রাত্রি জাগরণ করে। ইবাদত বান্দেগীতে সময় কাটায়।
৪. তারা আখেরাতের শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য পেরেশান থাকে এবং এজন্য আল্লাহর কাছে কাকুতি মিনতি করে দোয়া করে।
৫. অর্থনৈতিক জীবনে ভারসাম্যমুলক জীবনে তারা অভস্থ। তারা যেমন বাজে খরচ ও করে না তেমনি কৃপনতাও   করেনা।
৬. তারা আল্লাহর সাথে শিরক করেনা। আল্লাহকে ডাকতে গিয়ে কাউকে তার সাথে শরীক করেনা।
৭. তারা মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করেনা।
৮. তারা যেনা ব্যভিচার করেনা।
৯. তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়না। মিথ্যার পর্যায়ে পড়ে এমন কিছু তারা দেখতেও যায়না।
১০. তারা অর্থহীন কিছুর সামনে পড়লে সম্মানমুলক রাস্তা বের করে তাকে পাশ কাটিয়ে যায়
১১. তাদেরকে কোন ব্যাপারে আল্লাহর কোন আয়াতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হলে তারা তা মন দিয়ে শোনা এবং বোঝার চেষ্টা করে। অন্ধ ও বধিরের মত না দেখা না শোনার মত আচরন করে না।
১২. তারা স্বামী স্ত্রী উভয়ে পরস্পরের উত্তম আমল আখলাকের জন্য নিজেরা সহযোগিতা ও পূর্ণ চেষ্টা করে এবং আল্লাহর কাছেও এর জন্য সাহায্য চায়। সেইর সাথে সন্তান সন্ততি এবং গোটা পরিবারকে একটি আদর্শ পরিবার বানানোর জন্য চেষ্টা করে।আল্লাহর কাছে সাহায্য চায়।

 সুরা রাদের ২০ থেকে ২২ নং আয়াতে মুমিনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে:
১. তারা আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পুর্ণ করবে। কোন প্রকারের চুক্তি লঙ্গন করবে না।
২. আত্মীয়তার বন্ধন রাখার চেষ্টা করবে।
৩. আল্লাহকে ভয় করবে।
৪. আখিরাতে হিসাবের পরিনতিকে ভয় করবে।
৫.আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় সবর করবে।
৬. নামাজ কয়েম করবে।
৭. আল্লাহর দেয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে খরচ করবে।
৮. দুর্ব্যবহারের মোকাবেলায় সদ্ব্যাবহার করবে। ভালো দিয়ে খারাপের মোকাবেলা করবে।
কোরআনের আলোকে যদি আমরা আমাদের চরিত্রকে গড়ে তুলতে পারি তাহলে আমাদের সামনের সব বাধা সরে যাবে। সৌরভ ছড়িয়ে পড়বে চতুর্দিকে। যেমনি সৌরভ ছড়ায় কপি বিন। মনে রাখতে হবে কপি বিন কিন্তু তার চরিত্র বদলায়নি। রং গন্ধ সব ঠিক রেখেই সে সৌরভ ছড়িয়েছে।

ফেমিনিস্টিদের ঈমান ভঙ্গের ১০ টি কারণ

 

ফেমিনিস্টিদের ঈমান ভঙ্গের ১০ টি কারণঃ

ফেমিনিজম তথা নারী বাদ বলতে শরীয়তে কিছু নেই। এর আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত সবই ভ্রান্তি।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তদের গোমরাহ বলা গেলেও কাফের বলা যায়না আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে  শরীয়তের অকাট্য ও সুস্পষ্ট কোন বিষয়কে অস্বীকার করা, অভিযোগ করা ও বিদ্রুপ করার কারণে তাদের ঈমান চলে যাবে।
বিয়ে করে থাকলে সাথে সাথে বিয়ে ভেঙ্গে যাবে। ঐ অবস্থায় বাচ্চা হলে তা হারামযাদা হবে! এবং তাওবা না করলে ইসলামী রাষ্ট্রে তাকে মুরতাদ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।

সেসব বিষয় গুলোর মাঝে অন্যতম হচ্ছে-

১) সকল বিষয়ে নারী পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে। তাদের মাঝে কেবল লিঙ্গ ও গঠনাকৃতির ব্যবধান রয়েছে! বাকী সব ক্ষেত্রে পুরুষ যা করতে পারবে নারীরাও তাই করতে পারবে, এতে বাধা দেওয়া ধর্মান্ধতা ও মধ্যযুগীয়  কুসংস্কার বললে ঈমান চলে যাবে। 

২) বোরকা পরিধান করা ও পর্দা প্রথা একটি সেকেলে ও মধ্যযুগীয় প্রথা। অনুরুপ  নারীদের হিজাব ও পর্দার বিধানকে ব্যাঙ্গাত্মক ও বিদ্রুপাত্মক ট্যান্ট/তাবু,  ক্ষেত, জঙ্গী,  ঝোপঝাড় ও জঙ্গল  বললেও ঈমান  চলে যাবে।  

৩) আল্লাহ কুরআনে উত্তরাধিকার হিসেবে ছেলেরা মেয়েদের দ্বিগুণ পাওয়ার বিধান রেখেছেন তা বে ইনসাফ! এক্ষেত্রে কুরআন  ও আল্লাহ মেয়েদের অবহেলা করেছে!!

৪) পুরুষরা নারীর উপর কর্তৃত্ববান হবে কেন?  কেনই বা নারী তার স্বামীর আনুগত্য  করবে? নারীরা স্বাধীন থাকবে তাদের স্বাধীনতা থাকবে কারো কর্তৃত্ব ও আনুগত্য মেনে নারী পরাধীন থাকবেনা।

৫) পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা অযৌক্তিক ও অন্যায় ব্যবস্থা ও ধর্মীয় গোড়ামি বৈ কিছুইনা।

৬) দেশ পরিচালনায় নারীর নেতৃত্ব হারাম এ কথা অস্বীকার করলে। 

৭) মুখে মুখে তালাক দিলে তালাক হবেনা এবং মুখে তালাক দিলে তা পতিত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মানবতা বিরোধী ও বর্বর। অনুরুপ তিন তালাক দিয়ে দেওয়ার পর স্বামী ও স্ত্রী একে অপরের জন্য আর হালাল থাকেনা এ বিষয় অস্বীকার করলে ঈমান চলে যাবে।

৮) পুরুষরা যেহেতু একাধিক বিয়ে করতে পারে তাহলে নারীর একাধিক বিয়ে করা ও লিভ ইন করা তার অধিকার। তাই নারীর একাধিক বিয়ের অধিকার রয়েছে। অথচ সে জানে আল্লাহ তা'আলা স্বামী থাকা অবস্থায় অন্যের সাথে বিয়ে করা হারাম ঘোষণা দিয়েছেন।

৯) পুরুষদের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত একাধিক বিয়ের অধিকার দেওয়া জানা সত্ত্বেও কেউ তা অস্বীকার করলে কিংবা 'আল্লাহর এ আইন আমি মানি না',  'আল্লাহর এই আইন নারীর সাথে অন্যায়' বললে ঈমান চলে যাবে।

(তবে স্বামীর একাধিক বিয়ের উপর আল্লাহর আইন মেনে নিয়ে কেউ নারীদের স্বভাব সুলভ আচরণ থেকে ইর্ষা করা কিংবা স্বামীকে একাধিক বিয়ে না করতে অনুরোধ  করা এগুলো ঈমান ভঙ্গের কারণ বলে বিবেচিত হবেনা।)

১০) কুরআনে  লেনদেনের ক্ষেত্রে দুইজন নারীর সাক্ষী একজন পুরুষের সাক্ষী হিসেবে যেই তুলনা করা হয়েছে তা অস্বীকার করে সাক্ষীর ক্ষেত্রে নারী পুরুষ এক তাদের মাঝে কোন পার্থক্য নেই এগুলো মোল্লাদের বানানো নীতি বললে ঈমান চলে যাবে। অনুরুপ  আল্লাহর এই বিধানকে অযৌক্তিক ও অনৈতিক বললেও ঈমান চলে যাবে।

যদিও সব ক্ষেত্রে দু'জন নারীদের সাক্ষ্য এক পুরুষের সমান হয়না। কিন্তু উল্লেখিত ক্ষেত্রে বিষয়টি কুরআনে সুস্পষ্ট। 

বিষয়গুলো কুরআন ও সুন্নাহ থেকে অকাট্য ভাবে প্রমানিত হওয়ার দলিলঃ

১) আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

وليس الذكر كالأنثى 

'মেয়েরা তো ছেলেদের মত নয়'

[সূরা আলে ইমরানঃ৩৬]

ইমাম কুরতুবী রহঃ ইবনে ইসহাক থেকে এর ব্যাখ্যায়  আনেন-

 لأن الذكر هو أقوى على ذلك من الأنثى .

কেননা ছেলেরা সেই ক্ষেত্রে নারীদের তুলনায় অধিক শক্তিশালী হয়।

[তাফসীরে কুরতুবী ৬/৩৩৫]

২) আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ 

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

[সূরা নূরঃ৩১]

আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা আরো বলেন-

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا

হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। 

[সূরা আহযাবঃ৫৯]

আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন- 

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ

‘আর তোমরা যখন তাদের কাছ থেকে কিছু চাইবে, তখন পর্দার পিছন থেকে চেয়ে নাও’। 

[সূরা আহযাব ৫৩]

৩) আল্লাহ তা'আলা বলেন-

 يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلادِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الأُنثَيَيْنِ 

আল্লাহ তা'লা তোমাদের সন্তানদের মীরাস বন্টনের ক্ষেত্রে ওসীয়ত করছেন যে, ছেলেরা মেয়েদের দ্বিগুণ পাবে।

[সূরা নিসাঃ১১]

৪ ও ৫)
আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা বলেন-

ٱلرِّجَالُ قَوَّٲمُونَ عَلَى ٱلنِّسَآءِ بِمَا فَضَّلَ ٱللَّهُ بَعۡضَهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٍ۬ وَبِمَآ أَنفَقُواْ مِنۡ أَمۡوَٲلِهِمۡ‌ۚ فَٱلصَّـٰلِحَـٰتُ قَـٰنِتَـٰتٌ حَـٰفِظَـٰتٌ۬ لِّلۡغَيۡبِ بِمَا حَفِظَ ٱللَّهُ‌ۚ وَٱلَّـٰتِى تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَٱهۡجُرُوهُنَّ فِى ٱلۡمَضَاجِعِ وَٱضۡرِبُوهُنَّ‌ۖ فَإِنۡ أَطَعۡنَڪُمۡ فَلَا تَبۡغُواْ عَلَيۡہِنَّ سَبِيلاً‌ۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلِيًّ۬ا ڪَبِيرً۬ا  

পুরুষরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ। [সূরা নিসাঃ৩৪]

আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন-

وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ. 

'নারীদের উপর পুরুষদের একধাপ বেশি  শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে।'

[সূরা বাক্বারাহঃ২২৮]

৬)
হযরত আবু বাকরা রাদিঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-যখন কিসরা পদানত হল তখন তাকে বলতে শুনেছি-কে তার পরবর্তী খলীফা? বলা হল-তার মেয়ে। তখন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বললেন-সে জাতি সফলকাম হয় না, যাদের প্রধান হল নারী। 

 لما هلك كسرى قال من استخلفوا ؟ قالوا ابنته فقال النبي صلى الله عليه و سلم لن يفلح قوم ولو أمرهم امرأة 

[সহীহ বুখারীঃ৬৬৮৬; সুনানে তিরমিযীঃ ২২৬২; সুনানে নাসায়ী কুবরাঃ ৫৯৩৭; সুনানে বায়হাকী কুবরাঃ ৪৯০৭]

হযরত আবু হুরায়রা রাদিঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- 

যখন তোমাদের নেতারা তোমাদের মাঝের বদলোক হয়। আর তোমাদের ধনীরা হয় কৃপণ, আর তোমাদের কর্মকর্তা হয় মহিলা। তাহলে জমিনের পেট তার পিঠের তুলনায় তোমাদের জন্য উত্তম। 
[অর্থাৎ মৃত্যু তোমাদের জন্য উত্তম জমিনের উপরে বেঁচে থাকার চেয়ে।]

 وإذا كان أمراؤكم شراركم وأغنياؤكم بخلاءكم وأموركم إلى نسائكم فبطن الأرض خير لكم من ظهرها 

[সুনানে তিরমিযীঃ২২৬৬]

হযরত আবু বকরাহ রাদিঃ বর্ণনা করেন, রাসূলে করীম ﷺ একবার কোথাও সৈন্যদল প্রেরন করলেন। সেখান থেকে এক ব্যক্তি বিজয়ের সুসংবাদ নিয়ে এলে বিজয়ের সুসংবাদ শুনে তিনি সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন। সিজদা’র পর তিনি সংবাদ বাহকের কাছ থেকে বিস্তারিত বিবরণ শুনছিলেন। সংবাদদাতা বিস্তারিত বর্ণনা দান করলেন-

‘উক্ত বিবরণে শত্রুদের ঘটনাবলীর মধ্যে একটি বিষয় এও ছিল যে, একজন নারী তাদের নেতৃত্ব করছিল। রাসূলুল্লাহ ﷺ একথা শুনে বললেন- 

‘পুরুষরা যখন নারীদের অনুগত্য করা শুরু করে দিবে, তখন তারা বরবাদ- ধ্বংস হয়ে যাবে’। 

عن أبي بكرة - رضي الله عنه - : أن النبي - صلى الله عليه وآله وسلم - أتاه بشير يبشره بظفر خيل له ، ورأسه في حجر عائشة - رضي الله عنها - ، فقام ، فخر لله - تعالى - ساجدا . فلما انصرف ، أنشأ يسأل الرسول ، فحدثه ، فكان فيما حدثه من أمر العدو - وكانت تليهم امرأة - ، فقال النبي - صلى الله عليه وآله وسلم - : " هلكت الرجال حين أطاعت النساء " .

[মুসতাদরাকে হাকীম- ৪/২৯১, হাদিস ৭৮৭০;আখবারু আসবাহান ২/৩৪; মুসনাদে আহমাদ ৫/৪৫- ইমাম হাকেমের মতে এর সনদ সহীহ এবং যাহাবী একে সমর্থন করেছেন। ]

ইমাম ইবনে হাযাম রহ. (মৃঃ ৪৫৬ হিঃ) বলেন- 

و اتفقوا أن الإمامة لا تجوز لإمرأة 

‘সকল ওলামায়ে কেরাম এব্যপারে একমত যে, কোনো নারীর জন্য ‘রাষ্ট্র প্রধান’ হওয়া জায়েয নয়’। 

[মারাতিবুল ইজমা, ইবনে হাযাম- ১২৬ পৃষ্ঠা]

৭)
কুরআনের পরিস্কার নির্দেশ-

الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ ۖ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ ۗ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَن يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا ۚ وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ. 

তালাক( তথা তালাকে‘রাজঈ’ হ’ল) দু'বার পর্যন্ত, তারপর হয় নিয়মানুযায়ী রাখবে, না হয় সহৃদয়তার সঙ্গে বর্জন করবে।

[সূরা বাক্বারাহঃ২২৯]

হযরত হাসান রাঃ বলেন,হযরত ইবনে উমর রাদিঃ আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে,তিনি আপন স্ত্রীকে ‎হায়য অবস্থায় এক তালাক দিয়েছিলেন, অতঃপর ইচ্ছা করলেন যে,  দুই তুহুরে [হায়য থেকে ‎পবিত্র অবস্থায়] অবশিষ্ট দুই তালাক দিয়ে দিবেন। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ‎বিষয়ে অবগত হওয়ার পর বলেন-ইবনে ওমর! এভাবে আল্লাহ তা‘য়ালা তোমাকে হুকুম ‎‎দেননি। তুমি সুন্নাতের বিপরীত কাজ করেছ [হায়য অবস্থায় তালাক দিয়েছ]।

তালাকের ‎শরিয়ত সমর্থিত পদ্ধতি হল,‘তুহুর’ পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা। প্রত্যেক ‘তুহুরে’ এক ‎তালাক দেয়া। তার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘রুজু’ করার নির্দেশ ‎দিলেন। এ জন্য আমি ‘রুজু’ করে নিয়েছি। অতঃপর তিনি বললেন,সে পবিত্র হওয়ার পর ‎‎তোমার এখতিয়ার থাকবে। চাইলে তুমি তালাকও দিতে পারবে,বা তাকে নিজের কাছে রাখতে পারবে।

হযরত ইবনে উমর রাঃ বলেন-তারপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ‎ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম-ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যদি তিন তালাক দেই তখনও কি ‎‘রুজু’ করার অধিকার থাকবে? হুজুর সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- না। তখন স্ত্রী ‎‎তোমার কাছ থেকে পৃথক হয়ে যাবে। এবং তোমার এই কাজ (এক সাথে তিন তালাক ‎‎দেয়া) গুনাহের কাজ সাব্যস্ত হবে। 

عن الحسن قال نا عبد الله بن عمر أنه طلق امرأته تطليقة وهي حائض ثم أراد أن يتبعها بتطليقتين أخراوين عند القرئين فبلغ ذلك رسول الله صلى الله عليه و سلم فقال : يا بن عمر ما هكذا أمرك الله إنك قد أخطأت السنة والسنة أن تستقبل الطهر فيطلق لكل قروء قال فأمرني رسول الله صلى الله عليه و سلم فراجعتها ثم قال إذا هي طهرت فطلق عند ذلك أو أمسك فقلت يا رسول الله رأيت لو أني طلقتها ثلاثا أكان يحل لي أن أراجعها قال لا كانت تبين منك وتكون معصية
[সুনানে দারা কুতনী ২/৪৩৮ হাঃ৮৪ ; যাদুল মাআদ ২/২৫৭; সুনানে বায়হাকী কুবরাঃ ১৪৭৩২]

হযরত মুজাহিদ রহঃ. বলেন,আমি ইবনে আব্বাস রাঃ-এর পাশে ছিলাম। সে সময় এক ব্যক্তি ‎এসে বলেন-‘সে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ চুপ করে রইলেন। আমি ‎মনে মনে ভাবছিলাম-হয়ত তিনি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার কথা বলবেন (রুজু করার হুকুম দিবেন)। কিছুক্ষণ ‎পর ইবনে আব্বাস রা. বলেন,তোমাদের অনেকে নির্বোধের মত কাজ কর;[তিন তালাক দিয়ে দাও!] তারপর ‘ইবনে ‎আব্বাস! ইবনে আব্বাস! বলে চিৎকার করতে থাক। শুনে রাখ আল্লাহ তা‘য়ালা বাণী-“যে ‎ব্যক্তি আল্লাহ তা‘য়ালাকে ভয় করে আল্লাহ তা‘য়ালা তার জন্য পথকে খুলে দেন। তুমিতো স্বীয় রবের নাফরমানী করেছো [তিন তালাক দিয়ে]। এ কারণে তোমার স্ত্রী তোমার থেকে পৃথক হয়ে গেছে। 

عن مجاهد قال كنت عند ابن عباس فجاء رجل فقال إنه طلق امرأته ثلاثا. قال فسكت حتى ظننت أنه رادها إليه ثم قال ينطلق أحدكم فيركب الحموقة ثم يقول يا ابن عباس يا ابن عباس وإن الله قال (وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا) وإنك لم تتق الله فلم أجد لك مخرجا عصيت ربك وبانت منك امرأتك

[সুনানে আবু দাউদ ১/২৯৯ হাঃ২১৯৯; সুনানে বায়হাকী কুবরাঃ ১৪৭২০; সুনানে দারা কুতনীঃ১৪৩]

عن مالك أنه بلغه أن رجلا قال لعبد الله بن عباس إني طلقت امرأتي مائة تطليقة فماذا ترى علي فقال له ابن عباس طلقت منك لثلاث وسبع وتسعون اتخذت بها آيات الله هزوا

হযরত ইমাম মালেক রহঃ এর কাছে এ বর্ণনা পৌঁছেছে যে, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ এর ‎কাছে জিজ্ঞাসা করল-“আমি আমার স্ত্রীকে একশত তালাক দিয়েছি,এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি? ‎তখন ইবনে আব্বাস রা. বলেন, তুমি যা দিয়েছ তা থেকে তিন তালাক তোমার স্ত্রীর উপর ‎পতিত হয়েছে,আর সাতানব্বই তালাকের মাধ্যমে তুমি আল্লাহ তা‘য়ালার সাথে উপহাস ‎করেছ।

[মুয়াত্তা মালেকঃ ২০২১]

একবার রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানানো হল যে, জনৈক এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে একসাথে  ৩ তালাক দিয়েছে, একথা শুনে আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব রাগান্বিত হয়ে দাড়ালেন এবং বললেন-

আমি জীবিত থাকাবস্থায় আল্লাহর কিতাব নিয়ে কি খেল-তামাশা হচ্ছে!?

أُخْبِرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ رَجُلٍ طَلَّقَ امْرَأَتَهُ ثَلَاثَ تَطْلِيقَاتٍ جَمِيعًا ، فَقَامَ غَضْبَانًا ثُمَّ قَالَ : أَيُلْعَبُ بِكِتَابِ اللَّهِ وَأَنَا بَيْنَ أَظْهُرِكُمْ ؟ 

[সুনানে নাসাঈঃ৩৩৮৪;ফাতহুল বারী ৯/২৭৪]

উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস গুলো দ্বারা সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, এখানে মৌখিক তালাকের কথা বলা হচ্ছে নতুবা ইহা লিখিত হলে সংখ্যার কথা উল্লেখ থাকত না। এবং এও প্রমান হয় যে তিন তালাক দেওয়ার পর বৈবাহিক সম্পর্ক আর হালাল থাকেনা।

৮)

 وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاءِ إِلَّا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۖ 

'তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া কোন সতীসাধ্বী বিবাহিতা নারীও তোমাদের জন্য হারাম।'

[সূরা নিসাঃ২৪]

ইমাম ইবনু কাসীর রহঃ এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন- 

وقوله تعالى ( والمحصنات من النساء إلا ما ملكت أيمانكم ) أي : وحرم عليكم الأجنبيات المحصنات وهن المزوجات.

এর অর্থ, তোমাদের জন্য হারাম হচ্ছে বেগানা সতীসাধ্বী বিবাহিতা নারী।

[তাফসীরে ইবনু কাসীর  ১/৪২৯]

ইমাম ত্ববারী রহঃ  তার তাফসীরে ইবনে আব্বাস রাদিঃ থেকে এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বর্ণনা করেন-

ابن عباس في قوله : { والمحصنات من النساء إلا ما ملكت أيمانكم } يقول : كل امرأة لها زوج فهي عليك حرام
'প্রত্যেক মহিলা যার স্বামী রয়েছে সে তোমার উপর হারাম।'

আল্লামা শানক্বিতি রহঃ তার আদ্বওয়াউল বায়ানে এর ব্যাখায় বলেন-

المراد بـ (المحصنات) المتزوجات؛ وعليه فمعنى الآية: وحرمت عليكم المتزوجات؛ لأن ذات الزوج لا تحل لغيره
'এখানে আল্লাহ 'মুহসনাত' দ্বারা বিবাহিত হওয়া বুঝিয়েছে।  সুতরাং আয়াতের অর্থ হল- তোমাদের উপর বিবাহিত নারীদের হারাম করা হল, কেননা স্বামী ওয়ালী মহিলা অন্যের জন্যে হালাল নয়।

এই আয়াত থেকে সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে নারী স্বামী থাকা অবস্থায় একাধিক বিয়ে করতে পারবেনা।

৯)
  
وَإِنْ خِفْتُمْ أَلاَّ تُقْسِطُواْ فِي الْيَتَامَى فَانكِحُواْ مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاء مَثْنَى وَثُلاَثَ وَرُبَاعَ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلاَّ تَعْدِلُواْ فَوَاحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ذَلِكَ أَدْنَى أَلاَّ تَعُولُواْ

আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই (বিবাহ কর) অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে।

[সূরা নিসাঃ৩]

১০)
আল্লাহ পাক জাল্লা শানূহ বলেন-

وَاسْتَشْهِدُوا شَهِيدَيْنِ مِنْ رِجَالِكُمْ فَإِنْ لَمْ يَكُونَا رَجُلَيْنِ فَرَجُلٌ وَامْرَأَتَانِ مِمَّنْ تَرْضَوْنَ مِنَ الشُّهَدَاءِ أَنْ تَضِلَّ إِحْدَاهُمَا فَتُذَكِّرَ إِحْدَاهُمَا الْأُخْرَى

অতঃপর তোমাদের নিজেদের মধ্যের দুজন পুরুষকে সাক্ষী বানাও। তখন যদি দুজন পুরুষের আয়োজন না করা যায়, তাহলে একজন পুরুষ ও যাদের সাক্ষীর ব্যাপারে তোমরা আস্থাশীল এমন দুজন নারী বেছে নাও যে একজন ভুল করলে অন্যজন স্মরণ করিয়ে দিতে পারে।

 [সূরা বাকারাঃ২৮২]
.
উপরে উল্লেখিত ১০ টি বিষয় রয়েছে যা কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমানিত। ইসলামের এধনের অকাট্য ভাবে প্রমানিত বিষয়াবলী  ও ইসলামের শি'আর তথা নিদর্শানাবলী অস্বীকার করলে অথবা  তা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করলে ঈমান চলে যাবে। এটিই ৪ মাযহাব সহ সকল উম্মাহর ঐক্যবদ্ধ মত।

মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন- 

وَلَئِن سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ وَنَلْعَبُ ۚ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ   لاَ تَعْتَذِرُواْ قَدْ كَفَرْتُم بَعْدَ إِيمَانِكُمْ

"আর যদি তুমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস কর, তবে তারা বলবে, আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক-ঠাট্টা করেছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? তোমাদের কোন ওজর চলবে না, তোমরা ঈমান আনার পর কাফের হয়ে গেছ।''

[সুরা আত তওবাঃ ৬৫-৬৬]
ইমাম ইবনুল হুমাম আল হানাফী রহঃ বলেন-

 "مناط التكفير هو: التكذيب أو الاستخفاف بالدين"

'তাকফীরের মূল উপাদানই হচ্ছে দ্বীনি কোন বিষয় মিথ্যা প্রতিপন্ন করা অথবা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা।'

[আল মাসাঈরাহঃ৩১৮]

ইমাম ইবনু নুজাইম আল হানাফী রহঃ বলেন-

 من تكلم بكلمة الكفر هازلا، أو لاعبا، كفر عند الكل، ولا اعتبار باعتقاده، كما صرح به قاضي خان في فتاواه. ومن تكلم بها مخطئا، أو مكرها، لا يكفر عند الكل، ومن تكلم بها عالما عامدا، كفر عند الكل.

কেউ কোন কুফরি কথা ঠাট্টা করে, দুষ্টুমি কিংবা খেল তামাশা করে করেছে সে সকলের ঐক্যমতে কুফুরী করেছে।  এক্ষেত্রে তার ঈমান ও আক্বীদা ধর্তব্য হবেনা। যেমনটি কাযী খান রহঃ তার ফাতাওয়ায় স্পষ্ট করেছেন।

তবে কেউ যদি ভুলঃবশত কিংবা অন্তরে ঘৃণা রেখেই (বাধ্য হয়ে) বলে থাকে তাকে সকলের ঐক্যমতে তাকফীর করা হবেনা।

তবে আবার কেউ জেনে-বুঝে ইচ্ছাকৃতভাবে বললে সকলের ঐক্যমতে তাকে কাফের সাব্যস্ত করা হবে।

[আল বাহরুর রায়েক্ব ৫/২১০]

ইমাম ইবনু রজব আল হাম্বলী রহঃ'এর মতে মুসলিম ও ঈমানদার ব্যক্তি  ইসলামের কোন একটু রুকন কে অস্বীকার করলে ও ঈমানহীন হয়ে যাবে।
فقد يترك دينه، ويفارق الجماعة، وهو مقر بالشهادتين، ويدعي الإسلام؛ كما إذا جحد شيئاً من أركان الإسلام، أو سب الله ورسوله، أو كفر ببعض الملائكة، أو النبيين، أو الكتب المذكورة في القرآن مع العلم بذلك

[আল জামিউল উলূম ওয়াল হিকাম ১/৩৪৪]

ইমাম ইবনু নুজাইম আল হানাফী রহঃ এর মতে শরীয়তের কোন অকাট্য ভাবে প্রমানিত হারামকে হালাল মনে করলে তাকে কাফের সাব্যস্ত করতে হবে।

والأصل أن من اعتقد الحرام حلالاً، فإن كان حراماً لغيره كمالِ الغيْرِ لا يكفر، وإن كان لعينه فإن كان دليله قطعياً كفر، وإلا فلا، وقيل التفصيل في العالم، أما الجاهل فلا يُفرّق بين الحلال والحرام لعينه ولغيره، وإنما الفرق في حقه إنما كان قطعياً كفر به، وإلا فلا، فيكفر إذا قال: الخمر ليس بحرام، وقيده بعضهم بما إذا كان يعلم حرمتها، لا بقوله: الخمر حرام، ولكن ليست هذه التي تزعمون أنها حرام، ويكفر من قال: إن حرمة الخمر لم تثبت بالقرآن، ومن زعم أن الصغائر والكبائر حلال، وباستحلاله الجماع للحائض

[আল বাহরুর রায়েক্ব ৫/১৩২]

মুল্লা আলী কারী আল হানাফী রহঃ বলেন- 

 "إن استحلال المعصية صغيرة أو كبيرة كفر إذا ثبت كونها معصية بدلالة قطعية وكذا الاستهانة بها كفر، بأن يعدها هينة سهلة، ويرتكبها من غير مبالاة بها، ويجريها مجرى المباحات في ارتكابها" .

'যখন অকাট্য ভাবে কোন গুনাহ গুনাহ হিসেবে প্রমানিত হবে চাই সেটা সগীরাহ হোক কিংবা  কবীরাহ গুনাহ  তখন তাকে হালাল মনে করা এবং এমনিভাবে তা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা সুস্পষ্ট কুফুরী।....'

[শারহু ফিক্বহিল আকবারঃ১০৬]

ইমাম ইবনুল আরাবী আল মালেকী রহঃ  এই প্রকৃতি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট কুফর ও রিদ্দাহ (ধর্মচ্যুত)  হওয়ার হুকুম লাগিয়েছেন এবং যতক্ষণ না তা খালেস তাওবা করবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ মাফ করবেন না বলেছেন। এবং এ ব্যাপারে তিনি ইজমার দাবী করেছেন।

لا يخلو أن يكون ما قالوه من ذلك جداً أو هزلاً، وهو كيفما كان كفر، فإن الهزل بالكفر كفر لا خلاف فيه بين الأمة، فإن التحقيق أخو العلم والحق، والهزل أخو الباطل والجهل، فإذا حصل الاستهزاء بالله أو بالرسول صلى الله عليه وسلم أو بالدين من شخص عاقل غير مكره فإنه يكفر بذلك ويعتبر ذلك ردة عن الإسلام، فعليه أن يتوب إلى الله تعالى توبة نصوحاً، فإن الله تعالى إذا علم منه صدق التوبة والرجوع إليه قبل توبته وتاب عليه

[আল জামে লি আহকামিল কুরআন,  কুরত্ববী ৮/১৯৭]

ইমাম নববী(রহিমাহুল্লাহ)  বলেন-

الردة هي قطع الإسلام بنية، أو قول كفر، أو فعل، سواء قاله استهزاء، أو عنادا، أو اعتقادا

রিদ্দাহ তথা ইসলামচ্যুত হওয়া হচ্ছে- সেচ্ছায় ইসলাম ত্যাগ করা, কুফুরী কথা বলা বা কুফুরী কাজ করা যদিও মজা করে কিংবা বিদ্বেষ করে অথবা অন্তর থেকে সায় দিয়েই বলে থাকুক না কেন।

[মুগনী আল মুহতাজ ৪/১৩৩-১৩৪]
 
ইমাম নববী(রহিমাহুল্লাহ) আরও ব্যাখ্যা করে 'কুফর' ঘোষণা করেন-

هي قطع الإسلام، ويحصل ذلك تارةً بالقول الذي هو كفرٌ، وتارةً بالفعل، والأفعال الموجبة للكفر هي التي تصدر عن تعمُّد واستهزاءٍ بالدِّين صريح, كالسُّجود للصَّنم, أو للشمس، وإلقاء المصحف في القاذورات.

[রাওদ্বাতুত তালেবীন,কিতাবুর রিদ্দা ১০/৬৪]

ইমাম ইবনু কুদামাহ(রহঃ) বলেন-

ومن سبَّ الله تعالى كفر، سواءً كان مازحاً أو جادًّا وكذلك من استهزأ بالله تعالى، أو بآياته أو برسله، أو كتبه.

'যে ব্যক্তি আল্লাহ কে গালি দেয়, হোক মজা করে কিংবা সেচ্ছায় অনুরূপভাবে কেউ আল্লাহ কিংবা তার আয়াত ও রাসূলগন অথবা তার কিতাব সমূহ নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে সে কুফরি করল।'

[আল মুগনী,কিতাবুল মুরতাদ ১২/২৯৮-২৯৯]

ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ একে কুফর বলেছে-

إن الاستهزاء بالله وآياته ورسوله كفر ، يكفر به صاحبه بعد إيمانه

মহান আল্লাহ তার আয়াত ও তার রাসূলকে নিয়ে ঠাট্টা মশকারা করা (সুস্পষ্ট)  কুফর। এধরনের ব্যক্তিকে ঈমান আনয়নের পরেও কাফির ঘোষণা করা হবে।

[মাজমূউল ফাতাওয়া ৭/২৮৩,১৫/৪৮]

ইমাম ক্বাযী ইয়ায আল মালেকী রহঃ ও একই ফতোয়া দেন।

وكذلك أجمع المسلمون على تكفير كل من استحل القتل، أو شرب الخمر، أو الزنا مما حرم الله، بعد علمه بتحريمه، كأصحاب الإباحة من القرامطة وبعض غلاة الصوفية.

[আশ শিফা ২/১০৭৩]

মালেকী মাযহাবের ইমামগন এ ব্যাপারে একমত। 

[বিস্তারিতঃ আশ শারহুস সগীর ৬/১৪৮-১৪৯; হাশিয়াতুদ দাসূক্বী ৪/৩০৪; বুলগাতুস সালেক, সাউই ২/৪১৮; হাশিয়ায়ে খিরাশি আলা মুখতাসারিল খলীল ৭/৬৫]

ইমাম ইবনু কুদামা রহঃ বলেন- 

من اعتقد حلّ شيء أجمع على تحريمه وظهر حكمه بين المسلمين وزالت الشبهة فيه للنصوص الواردة فيه كلحم الخنزير والزنا وأشباه هذا مما لا خلاف فيه كفر.

যে ব্যক্তি এমন একটু একটি হারাম বিষয়কে হালাল করল যার হারাম হওয়ার ব্যাপারে উম্মতের ইজমা রয়েছে ও তার বিধান  সুস্পষ্ট এবং 'নস' থাকার কারণে উক্ত বিধান সন্দেহ মুক্ত যেমনঃ শুকরের মাংস ও যিনা ইত্যাদি বিষয় যে হালাল করবে তার কুফুরীর ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই।

[আল মুগনী ৮/১৩১]

আল্লামা বুহুতী আল হাম্বলী রহঃ  ও একই কথা বলেন- 

أو أحل الزنا ونحوه كشهادة الزور واللواط، أو أحل ترك الصلاة، أو جحد شيئاً من المحرمات الظاهرة المجمع على تحريمها كلحم الخنزير والخمر وأشباه ذلك، أو شك فيه ومثله لا يجهله، كفر؛ لأنه مكذب لله ولرسوله وسائر الأمة

[কাশশাফুল ক্বিনা ৬/১৩৯-১৪০; আল মুক্বনি, ইবনু কুদামাহ ৩/৫১৬]

ইমাম আবূ ইয়ালা এ ব্যাপারে ইজমা উল্লেখ করেন-

ومن اعتقد تحليل ما حرم الله بالنص الصريح من الله، أو من رسوله، أو أجمع المسلمون على تحريمه فهو كافر، كمن أباح شرب الخمر، ومنع الصلاة والصيام والزكاة، وكذلك من اعتقد تحريم شيء حلله الله وأباحه بالنص الصريح، أو أباحه رسوله، أو المسلمون مع العلم بذلك فهو كافر كمن حرم النكاح والبيع والشراء على الوجه الذي أباحه الله عز وجل، والوجه فيه أن في ذلك تكذيباً لله تعالى، ولرسوله في خبره، وتكذيباً للمسلمين في خبرهم، ومن فعل ذلك فهو كافر بإجماع المسلمين

[আল মু'তামাদ ফী উসূলিদ দ্বীনঃ
২৭১-২৭২]

আল্লামা শাওকানী রহঃও শরীয়তে অকাট্য ভাবে প্রমানিত কোন বিষয় অস্বীকার করলে কিংবা তার হারাম হুকুমকে হালাল জ্ঞান করলে সে কাফের হয়ে যায় বলে উল্লেখ করেছেন।   তিনি বলেন- 

قد تقرر في القواعد الإسلامية: أن منكر (الإجماع) القطعي وجاحده، والعامل على خلافه تمرداً، أو عناداً، أو استحلالاً، أو استخفافاً كافر بالله، وبالشريعة المطهرة التي اختارها الله لعباده

[আদ দাওয়াউল আ'জিল ফী দফয়িল আদুউইস সয়িলঃ৩৪]
লেখা- আব্দুল্লাহ আল মামুন