Wednesday, May 12, 2021

রুকইয়াহ নিয়ে যত কথা - ৪ কমন সাজেশন

 May be an image of text that says 'রুকইয়াহ নিয়ে যত কথা -8 কমন সাজেশন MடOO rugyahbd.org'

রুকইয়াহ নিয়ে যত কথা - ৪
কমন সাজেশন
 
 

_______________
যারা রুকইয়াহ করছেন বা করতে চাচ্ছেন বা রুকইয়াহ গ্রুপে পোস্ট করেছেন এখনো এপ্রুভ হয়নি। সবার জন্যই পোস্টটি উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।।
[ক]
প্রাথমিক নির্দেশিকা...
_____
👉 রুকইয়াহ শুরুর পুর্বে রুকইয়াহ বিষয়ে ধারনা নিন।। এ সম্পর্কে আক্বীদা ঠিক করে নিন। আবারো মনে করিয়ে দেই, রুকইয়াহ কোন যাদুর চেরাগ না। এইটা একটা চিকিৎসা পদ্ধতি। সুন্নাহ থেকে উৎসারিত। যা দ্বারা আপনার আত্মিক ও শারীরিক সমস্যার শিফা মিলবে ইনশাআল্লাহ।
যদি সেটা না পান, তাহলে বুঝবেন সমস্যা আপনার ইয়াক্বীনে অথবা মেহনতে। রুকইয়াতে কাজ হচ্ছে না— এমন বিশ্বাস রাখা দূরের কথা চিন্তাতেও আনবেন না, সবকিছু ঠিক থাকলে ফায়দা হবেই।
👉 ওযু - গোসল, সালাত, পর্দাসহ সকল ফরজ হুকুম আহকাম জেনে নিবেন। আর সুন্নাহ পালনে সিরিয়াস ও যত্নবান হবেন। এছাড়া হায়েজ - নিফাস, সাদা স্রাবসহ সকল বিষয়ে মাস'আলা-মাসায়েল জেনে নিন।
👉 রুকইয়াহ শুরুর আগে ফরজ গোসল সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। অনেকেই এই ব্যাপারে জানেন না বা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এইটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আগে না করে থাকেন তাহলে আজই করে নিন। সাথে দুই রাকাত সালাত আদায় করে তওবা করে নিন।।
👉 যারা গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন এখনো পোস্ট এপ্রুভ হয়নি। তারা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। আর পোস্ট এপ্রুভ না হওয়া পর্যন্ত বদনজরের রুকইয়াহ করুন। সিহর বা জ্বিন সংক্রান্ত সমস্যা থাকলেও সম্ভব হলে আগে বদনজরের রুকইয়াহ করুন। এতে অন্যান্য রুকইয়াহ ভালো ফায়দা দিবে ইনশাআল্লাহ। বদনজরের রুকইয়াহ ঠিকঠাকমত করতে পারলে আল্লাহর রহমতে ৫০ থেকে ৮০/৯০% সমস্যা চলে যায়। তাই আগে বদনজরের রুকইয়াহ করুন। আর আপডেটগুলা নোট করুন।
[খ]
কমন রুকইয়াহ....
___
এক. ⁦পিরিয়ড বা মেয়েলী সমস্যায় ডিটক্স করুন। ফায়দা পাবেন ইনশাআল্লাহ। সাথে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও দেখিয়ে নিবেন। পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা আর খাবার-দাবারের প্রতি যত্নশীল হবেন। আর হ্যা এই সময়টার আপডেট অবশ্যই নোট করবেন। আর পরবর্তীতে সাজেশন নেয়ার জন্য এইগুলো যোগ করুন।
দুই. সিহরের রুকইয়াহর ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন পুরো পরিবারের উপর রুকইয়াহ করার। পরিবার রাজি না থাকলে পানি বা খাবারে রুকইয়াহর আয়াত পড়ে দম করে খাওয়াবেন।
তিন. বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ভারি রুকইয়াহ না করাই উত্তম।
বাচ্চাদের জন্য সুরা ফাতিহা, তিন কুল এবং আয়াতে শিফাই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। আর মাসনুন আমলের প্রতি গুরুত্ব দিবেন।
চার. চেষ্টা করুন হাতের কাছে রুকইয়াহ ওয়াটার, তেল, মধু এইসব রাখতে। যেন প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়া রুকইয়াহ ইফেক্ট সামলানোর জন্য পানি রেডি রাখা। এক্ষেত্রে সুরাতুল ফাতিহা সাতবার, আয়াতে শিফা ৩/৭ বার, তিন কুল ৩/৭ বার, দরুদ শরীফ ৩/৭ বার পড়ে দম করুন। সাথে খেজুরও রাখতে পারেন। ভালো ফায়দা দিবে ইনশাআল্লাহ।
পাঁচ. ব্যথা, ঠান্ডা/এলার্জি, বদনজর এইগুলোর আপনার প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে রুকইয়াহ কিন্তু খুবই ফায়দাময় আলহামদুলিল্লাহ।
এই ধরনের সমস্যায় তাৎক্ষণিক রুকইয়াহ করতে পারেন। ফল পাবেন ইনশাআল্লাহ।
ছয়. 'রাতে জ্বিনের সমস্যা'য় যারা ভুগছেন তারা শুধু ঘুমানোর সময় না, সবসময় অযু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন।। বেশি থেকে বেশি ইস্তিগফার করুন। দরুদ শরীফ পাঠ করুন। সাথে আট সুরা ও সুরা যিনার রুকইয়াহ শুনুন।। আর এই সমস্যার জন্য ডিটক্সও করে ফেলতে পারেন। ফায়দা হবে ইনশাআল্লাহ।
সাত. ডিটক্সের ক্ষেত্রে সাতদিনই সুরা বাকারার তিলাওয়াত করার চেষ্টা করুন। তা সম্ভব না হলে অন্তত প্রতিদিন ২/৩ দিনে সম্পূর্ণ বাকারা তিলাওয়াত করুন। আর সাথে প্রতিদিন তিলাওয়াতের অডিও শুনুন।
আট. সাধারণ অসুস্থতার ক্ষেত্রে সকালে আয়াতে শিফা ও সুরা ফাতিহা ৭ বার পড়ে পানি খাবেন।।
সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। আর চেষ্টা করুন কুর'আন, হাদীসে উল্লেখিত চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ এবং উপাদান ব্যবহার করতে। যেমন: মধু-কালোজিরা, যাইতুনের তেল, খেজুর ইত্যাদি।।
নয়. সম্ভব হলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৭ টা আজওয়া খেজুর খান। আজওয়া না হলেও অন্য যে কোন খেজুর খেতে পারেন। যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা ঘুমানোর আগে মধুর শরবত বা দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, উপকার পাবেন ইনশাআল্লাহ।
দশ. পড়াশুনা ও ইবাদাতে অমনোযোগীতার জন্য অন্ততপক্ষে ২ সপ্তাহ বদনজরের রুকইয়াহ করুন।
ইনশাআল্লাহ ফায়দা পাবেন।
এক্ষেত্রে (১৬ মিনিটের অই রুকইয়াহ) শুনতে পারেন। আর প্রত্যেক নামাজ শেষে তাসবীহে ফাতেমি পড়ুন। এরপর -
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللّٰهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর।
অর্থ: একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর, আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
 
তাসবীহে ফাতেমীঃ
তাসবীহে ফাতেমী হলো আল্লাহ-আক-আকবার (তাকবীর) ৩৪ বার, আলহামদুলিল্লাহ (তাহমিদ) এবং ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ (তাসবীহ) ৩৩ বার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
 
এগারো. ব্যথার জন্য ব্যথার রুকইয়ার আয়াত পড়ে অলিভওয়েল/যাইতুনের তেল রেখে দিতে পারেন। যেকোন ধরনের ব্যথায় এইটা খুবই উপকারী আলহামদুলিল্লাহ।।
[গ]
গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা...
🌿 রুকইয়াকে সকল সমস্যার সমাধানের মাধ্যম হিসেবে নিবেন না। সকল সমস্যা ও প্রয়োজন রবকে বলুন। সলাতের মাধ্যমে সাহায্য চান। বেশি বেশি দু'আ করুন। সাথে অল্প হলেও সামর্থ্য অনুযায়ী নিয়মিত দান-সাদাকা করুন।
🌿 নিজের জবানকে যিকরে ব্যস্ত রাখুন। বেশি বেশি করে ইস্তেগফার আর দরুদ শরীফ পাঠ করুন। একটু একটু ফুরসত পেলেই যিকর করতে থাকুন...। জীবনে আমূল পরিবর্তন চলে আসবে।
⁦⁦⁦🌿 সকাল-সন্ধ্যা এবং ঘুমের সময়ের মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করুন।। খারাপ কিছুর আশংকা করলে বা কুকুরের ডাক শুনলে শয়তানের থেকে পানাহ চান। তা'আউয পড়ুন। এছাড়া প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর পূর্বে বলা "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু.. দোয়াটা ১০ বার করে পড়ুন।"
🌿 মনে রাখবেন রুকইয়াহ করা মানে শুধু রুকইয়াহ শুনা না। রুকইয়াহর জন্য উত্তম হলো তিলাওয়াত করা। যদি আপনি একান্তই অপারগ তখন অডিও শুনুন। নাহলে তিলাওয়াত করুন। এতে বেশি ফায়দা হবে। আর যারা কুর'আন পড়তে পারেন না, তারা দ্রুত শিখে নিন। পারিনা বলে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবেন না প্লিজ। আর যারা বলেন পড়া শুদ্ধ না, দ্রুত পড়তে পারিনা তাদের বলছি। ভয় বা অজুহাত না দিয়ে চেষ্টা করুন শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করার। আপনার তিলাওয়াত আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আপনি যদি নাই ই চেষ্টা করেন তাহলে ঠিক হবে কীভাবে!!
🌿 অনেকের ধারনা নিজে নিজে রুকইয়াহ করলে ফায়দা হবে না। কিংবা কম হবে। অমুকের কাছেই যেতে হবে। এইটা-ওইটা করতে হবে। নাহলে ঠিক হবে না। এইসব ধারনা থেকে বেঁচে থাকুন। যে কেউই রুকইয়াহ করতে পারেন। নিজেই নিজের রুকইয়াহ করুন। এইটাই অধিক উত্তম।।
তবে প্রফেশনালদের একটা ব্যাপার হচ্ছে, তারা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ তাই সমস্যা আইডেন্টিফাই করে সে মোতাবেক চিকিৎসা দিতে পারে। আর রুগীর অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। বাকি কোন বিশেষ ব্যক্তির প্রতি না। আল্লাহ তা'আলার কালামের উপর বিশ্বাস রাখুন।।

[সেলফ রুকইয়াহ গাইড-৪] সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটানোর যাদুর চিকিৎসার রুকইয়াহ

 

[সেলফ রুকইয়াহ গাইড-৪]
সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটানোর যাদুর চিকিৎসার রুকইয়াহ
------------------
[ক]
পৃথিবীতে প্রচলিত যাদুগুলর মধ্যে এই যাদুটি অনেক পুরাতন। এমনকি আল-কুরআনে ব্যাবিলনীয় সভ্যতার যুগে লোকেরা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে এই যাদু শিক্ষা করত বলে বর্ণিত আছে। [সুরা বাকারা-১০২]
যদিও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নষ্ট করতে এই যাদু সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়, তবে অন্যান্য সম্পর্ক নষ্ট করার জন্যও এই যাদু করা হতে পারে। আলোচনার সুবিধার্থে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কথা বলা হল।
এই যাদুতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষনঃ
১. স্বামী বাহিরে থাকলে দু'জন ভালো থাকে, বাড়িতে আসলেই দু'জন বা একজনের মন-মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।
২. দু'জনের কেউ খুব বেশি সন্দেহপ্রবন হয়ে যায়।
৩. ছোট ছোট বিষয়ে ছাড় দিতে চায়না, ঝগড়া বেধে যায়।
৪. স্ত্রী দেখতে যেমনই হোক, স্বামীর কাছে খারাপ লাগে, ভালো আচরণ করলেও ভালো লাগেনা।
৫. স্বামী কোন জায়গায় বসেছে বা একটা জিনিশ ব্যবহার করেছে -এটাও স্ত্রী অপছন্দ করে।
৬. অন্যদের সাথে আচরণ স্বাভাবিক কিন্তু স্বামী-স্ত্রী কথা বার্তা বলতে গেলেই ঝগড়া শুরু হয়ে যায়।
এখন কথা হল, এসব যদি কদাচিৎ ঘটে থাকে তাহলে চিন্তার কিছু নেই ইনশাআল্লাহ। কিন্তু যদি প্রায়ই এমন হয় তাহলে খতিয়ে দেখা উচিত সমস্যা যাদুর জন্য হচ্ছে কিনা। তবে প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই সব লক্ষণ মিলবে তেমন না! তবে সমস্যা থাকলে অন্তত ২-৩টা মিলে যাওয়ার কথা।
বিশেষভাবে লক্ষনীয়ঃ
এই যাদু অনেক সময়েই জিনের সাহায্য নিয়ে করে, তাই কারও কারও ক্ষেত্রে সরাসরি রুকইয়াহ করানোর প্রয়োজন হতে পারে। যদি জ্বিনের লক্ষনের মধ্যে ৫-৬ টি মিলে যায় অথবা যদি প্রয়োজন মনে করেন তাহলে সেলফ রুকইয়াহ করতে করতে যেকোন সময় আপনি সরাসরি রুকইয়াহ কাউকে দিয়ে করাতে পারবেন। সরাসরি রুকইয়াহ মানে হল কেউ একজন আপনার উপর কুরআন তেলাওয়াত করবেন। যদি জ্বিন হাজির হয় তাহলে বুঝিয়ে শুনিয়ে জ্বিন বিদায় করবেন। এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা জিন সিরিজে বা রুকইয়াহ বইয়ের জিনের স্পর্শ অধ্যায়ে পাবেন (বিশেষ করে জিনের আসর বিষয় সিরিজের ৪ থেকে ৮ পর্ব) জিন সিরিজের লিংক:
তবে আপনি সেই অপেক্ষায় বসে না থেকে আল্লাহর ওপর ভরসা করে সেলফ রুকইয়াহ শুরু করে দিলেই সবচেয়ে ভালো হবে।
[খ]
বিচ্ছেদের যাদুর জন্য সেলফ রুকইয়া:
১। তাবিজ বা কোন কবিরাজি জিনিস থাকলে সবার আগে নিচের নিয়মে নষ্ট করে নিবেন। তাবিজ ব্যবহার করার জন্য তওবা করবেন।
২। ভালোভাবে পাক-পবিত্র হয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন। এরপর দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে আপনার সমস্যা থেকে 'পরিত্রাণের' জন্য এবং সুস্থতার জন্য দু'আ করে ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ পড়ে রুকইয়াহ শুরু করুন। হাতের কাছে এক বোতল পানি নিয়ে বসুন। প্রথমে সিহরের রুকইয়া (ruqyahbd.org/download এখানে ৩ নাম্বারেরটা) অথবা শাইখ সুদাইসের বা অন্য কোনো ক্বারির সাধারণ রুকইয়া (ruqyahbd.org/download লিংকের ১১ থেকে ২০ মধ্যে যেকোনটা) শুনুন। আপনার যদি রুকইয়াহ সংক্রান্ত কোন সমস্যা থেকে থাকলে তাহলে কিছু ইফেক্ট হতে পারে। যেমন: অনেক ঘুম ধরবে, মাথাব্যথা করতে পারে। কিছু খাইয়ে যাদু করলে পেটব্যথা করবে, বমি বমি লাগতে পারে, হাত-পা ব্যথা করতে পারে, খুব ক্লান্ত লাগতে পারে। এরকম কিছু হলে বুঝে নিবেন সমস্যা আছে। আর উপরে তো লক্ষণ বলেছিই, যদি ২-৩টা মিলে যায়, তবে নিচের প্রেসক্রিপশন ফলো করুন।
[গ]
প্রেসক্রিপশন:
১. একটা বোতলে পানি নিয়ে "সুরা বাক্বারা ১০২, আ'রাফ ১১৭-১২২, ইউনুস ৮১-৮২, সুরা ত্বহা ৬৯" আয়াতগুলো পড়ে ফুঁ দিন। এখনি কিছুটা খেতে হবে, বাকিটা রেখে দিবে। আর এরপর এই পানি দুইবেলা কমপক্ষে আধগ্লাস করে খেতে হবে। আর প্রতিদিন গোসলের পানিতে আধ গ্লাস পানি মিশিয়ে গোসল করতে হবে।
২. সুরা ইয়াসিন, সফফাত, দুখান, জ্বিন, যিলযাল, ইখলাস, ফালাক, নাস - তেলাওয়াত করতে পারেন। উচ্চারন শুদ্ধ না হলে আট সুরার রুকইয়াহ শুনবেন প্রতিদিন তিনবার (ruqyahbd.org/download থেকে ৮ নং) কোনো দিন খুব ব্যস্ত থাকলে অন্তত একবার হলেও শুনবেন। চাইলে প্রতিদিন শোনার ক্ষেত্রে অন্য কারো হেল্প নিতে পারেন অর্থাৎ অন্য কেউ যদি আপনার সমস্যার নিয়াতে রুকইয়াহ শোনে তবুও আপনি উপকার পাবেন।
৩. তবে যদি যাদুর সাথে জ্বিনের সমস্যাও থাকে তাহলে প্রতিদিন এই আট সুরার রুকইয়াহ একবার শুনবেন এবং আয়াতুল কুরসি শুনবেন ১ থেকে দেড় ঘণ্টা।
৪. প্রতিদিন ১০০বার ইস্তিগফার এবং “লা-হাওলা ওয়ালা ক্বুওওয়াতা ইল্লা-বিল্লাহ” পড়বেন। বেশি পড়লে আরো ভালো।
৫. রুকইয়া ভালোভাবে কাজ করার জন্য গানবাজনা শোনা যাবেনা। নামাজ-কালাম ঠিকঠাক পড়তে হবে। ফরজ ইবাদাতে যেন ত্রুটি না হয়। (মেয়েদের পর্দা করাও ফরজ)
৬. ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি পড়বেন। আর ৩ ক্বুল তিনবার পড়ে হাতে ফুঁ দিয়ে পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে নিবেন। ফজর এবং মাগরিবের পর ৩কুল (সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস)তিনবার করে পড়বেন।
৭. প্রতিদিন সুরা তাগাবুন তেলাওয়াত করবেন।
.৮. সকাল সন্ধ্যার মাসনুন দোয়া, বিশেষত ৩ ক্বুল এর আমল ঠিকঠাক করবেন।
মাসনুন আমল সম্পর্কে জানতেঃ 
গুরুত্বপূর্ণ নোট:
১। এই বিচ্ছেদের যাদু একদম ভালো হতে হতে কয়েক সপ্তাহ থেকে শুরু করে মাসখানেক, কারও ক্ষেত্রে কয়েক মাস পর্যন্ত লাগতে পারে। তখন ধৈর্যহারা হওয়া যাবেনা। সবরের সাথে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনার শত্রু আপনার ক্ষতি করলেই সফল হয়ে যায়না। সে তখনই সফল হয়, যখন আপনি সমাধানের ব্যাপারে হাল ছেড়ে দেন। শয়তান আপনাকে দিয়ে গুনাহ করালেই সফল হয়না। বরং শয়তান তখনই সফল হয়, যখন আপনি নিরাশ হয়ে তাওবা করা ছেড়ে দেন। এজন্য একবার যদি বুঝতে পারেন সমস্যা আছে, তবে এর শেষ না দেখে ছাড়বেন না, চালিয়ে যাবেন। আর সম্ভব হলে কাউকে বিষয়টা জানিয়ে রাখবেন যেন আপনি হত্যোদম হয়ে গেলে তিনি আপনাকে উৎসাহ দিতে পারেন।
২। রুকইয়া শুনতে থাকলে, সাথে পানি খেতে এবং গোসল করতে থাকলেও প্রথম ১০ থেকে ১৫ দিন সমস্যা বাড়তে পারে, এরপর আস্তে আস্তে কমতে কমতে মাসের শেষের দিকে একদম ভালো হয়ে যায়। সবার ক্ষেত্রেই এমন হয় যে তা বলছি না। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই হয়, কাজেই সমস্যা বাড়লে রুকইয়া করা বাদ দেয়া যাবে না। প্রথম প্রথম সমস্যা বাড়তে পারে, পরে আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
৩। পিরিয়ড থাকলেও রুকইয়াহ করা যায়। গোসল ও খাবার পানি আগে থেকেই বেশি করে তৈরি করে রাখবেন যেন পিরিয়ড চলাকালীন পানি শেষ হয়ে না যায়। আর শেষ হয়ে গেলেও অসুবিধা নেই, অন্য কেউ তৈরি করে দিলে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
৪। সেলফ রুকইয়াহ করার সময় আপনি চাইলে যেকোন একদিন বা একাধিক দিন কাউকে দিয়ে সরাসরি রুকইয়াহ করাতে পারেন। কোন অসুবিধা নেই।
অন্য কাউকে রুকইয়াহ করতে যখন বলবেন তখনও বিশেষভাবে এই কথাগুলো বলে দিবেন।
[ঙ]
সফলতাঃ
আল্লাহর রহমতে যদি আপনি থেকে মুক্তি পান তাহলে উপরোক্ত লক্ষনগুলো আপনার মধ্যে আর দেখা যাবে না। স্বামী কাছে আসতে চাইলে রাগ উঠবে না, স্ত্রীকে অসুন্দর মনে হবে না। বরং স্বাভাবিক ভালবাসা জন্ম নিবে। তখন আপনি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবেন যে, আল্লাহ আপনাকে মুক্তি দিয়েছেন। তবে সতর্কতাস্বরুপ, সুস্থ হবার পরে আরও ৭ দিন রুকইয়াহ করবেন। এরপর আবার যেন কেউ যাদু করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখবেন। কাপড়-চোপড় সাবধানে রাখবেন, যাদেরকে সন্দেহ হয় তারা কোণ খাবার দিলে খাবেন না। মাসনুন আমল প্রতিদিন করবেন। মেয়েদের ক্ষেত্রে পিরিয়ড থাকলেও করতে থাকবেন মাসনুন আমল।
আল্লাহ আপনাকে এমন আরোগ্য দান করুন যাতে আর কোন রোগ বাকি না থাকে। আমীন।