রুকইয়াহ নিয়ে যত কথা - ৪
কমন সাজেশন
_______________
যারা রুকইয়াহ করছেন বা করতে চাচ্ছেন বা রুকইয়াহ গ্রুপে পোস্ট করেছেন এখনো এপ্রুভ হয়নি। সবার জন্যই পোস্টটি উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।।
[ক]
প্রাথমিক নির্দেশিকা...
_____
রুকইয়াহ শুরুর পুর্বে রুকইয়াহ বিষয়ে ধারনা নিন।। এ সম্পর্কে আক্বীদা ঠিক করে নিন। আবারো মনে করিয়ে দেই, রুকইয়াহ কোন যাদুর চেরাগ না। এইটা একটা চিকিৎসা পদ্ধতি। সুন্নাহ থেকে উৎসারিত। যা দ্বারা আপনার আত্মিক ও শারীরিক সমস্যার শিফা মিলবে ইনশাআল্লাহ।

যদি সেটা না পান, তাহলে বুঝবেন সমস্যা আপনার ইয়াক্বীনে অথবা মেহনতে। রুকইয়াতে কাজ হচ্ছে না— এমন বিশ্বাস রাখা দূরের কথা চিন্তাতেও আনবেন না, সবকিছু ঠিক থাকলে ফায়দা হবেই।



[খ]
কমন রুকইয়াহ....
___
এক. পিরিয়ড বা মেয়েলী সমস্যায় ডিটক্স করুন। ফায়দা পাবেন ইনশাআল্লাহ। সাথে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও দেখিয়ে নিবেন। পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতা আর খাবার-দাবারের প্রতি যত্নশীল হবেন। আর হ্যা এই সময়টার আপডেট অবশ্যই নোট করবেন। আর পরবর্তীতে সাজেশন নেয়ার জন্য এইগুলো যোগ করুন।
দুই. সিহরের রুকইয়াহর ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন পুরো পরিবারের উপর রুকইয়াহ করার। পরিবার রাজি না থাকলে পানি বা খাবারে রুকইয়াহর আয়াত পড়ে দম করে খাওয়াবেন।
তিন. বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ভারি রুকইয়াহ না করাই উত্তম।
বাচ্চাদের জন্য সুরা ফাতিহা, তিন কুল এবং আয়াতে শিফাই যথেষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। আর মাসনুন আমলের প্রতি গুরুত্ব দিবেন।
চার. চেষ্টা করুন হাতের কাছে রুকইয়াহ ওয়াটার, তেল, মধু এইসব রাখতে। যেন প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করতে পারেন।
এছাড়া রুকইয়াহ ইফেক্ট সামলানোর জন্য পানি রেডি রাখা। এক্ষেত্রে সুরাতুল ফাতিহা সাতবার, আয়াতে শিফা ৩/৭ বার, তিন কুল ৩/৭ বার, দরুদ শরীফ ৩/৭ বার পড়ে দম করুন। সাথে খেজুরও রাখতে পারেন। ভালো ফায়দা দিবে ইনশাআল্লাহ।
পাঁচ. ব্যথা, ঠান্ডা/এলার্জি, বদনজর এইগুলোর আপনার প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে রুকইয়াহ কিন্তু খুবই ফায়দাময় আলহামদুলিল্লাহ।
এই ধরনের সমস্যায় তাৎক্ষণিক রুকইয়াহ করতে পারেন। ফল পাবেন ইনশাআল্লাহ।
ছয়. 'রাতে জ্বিনের সমস্যা'য় যারা ভুগছেন তারা শুধু ঘুমানোর সময় না, সবসময় অযু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন।। বেশি থেকে বেশি ইস্তিগফার করুন। দরুদ শরীফ পাঠ করুন। সাথে আট সুরা ও সুরা যিনার রুকইয়াহ শুনুন।। আর এই সমস্যার জন্য ডিটক্সও করে ফেলতে পারেন। ফায়দা হবে ইনশাআল্লাহ।
সাত. ডিটক্সের ক্ষেত্রে সাতদিনই সুরা বাকারার তিলাওয়াত করার চেষ্টা করুন। তা সম্ভব না হলে অন্তত প্রতিদিন ২/৩ দিনে সম্পূর্ণ বাকারা তিলাওয়াত করুন। আর সাথে প্রতিদিন তিলাওয়াতের অডিও শুনুন।
আট. সাধারণ অসুস্থতার ক্ষেত্রে সকালে আয়াতে শিফা ও সুরা ফাতিহা ৭ বার পড়ে পানি খাবেন।।
সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। আর চেষ্টা করুন কুর'আন, হাদীসে উল্লেখিত চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ এবং উপাদান ব্যবহার করতে। যেমন: মধু-কালোজিরা, যাইতুনের তেল, খেজুর ইত্যাদি।।
নয়. সম্ভব হলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৭ টা আজওয়া খেজুর খান। আজওয়া না হলেও অন্য যে কোন খেজুর খেতে পারেন। যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা ঘুমানোর আগে মধুর শরবত বা দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, উপকার পাবেন ইনশাআল্লাহ।
দশ. পড়াশুনা ও ইবাদাতে অমনোযোগীতার জন্য অন্ততপক্ষে ২ সপ্তাহ বদনজরের রুকইয়াহ করুন।
ইনশাআল্লাহ ফায়দা পাবেন।
এক্ষেত্রে (১৬ মিনিটের অই রুকইয়াহ) শুনতে পারেন। আর প্রত্যেক নামাজ শেষে তাসবীহে ফাতেমি পড়ুন। এরপর -
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللّٰهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর।
অর্থ: একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর, আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
তাসবীহে ফাতেমীঃ
তাসবীহে ফাতেমী হলো আল্লাহ-আক-আকবার (তাকবীর) ৩৪ বার, আলহামদুলিল্লাহ (তাহমিদ) এবং ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ (তাসবীহ) ৩৩ বার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এগারো. ব্যথার জন্য ব্যথার রুকইয়ার আয়াত পড়ে অলিভওয়েল/যাইতুনের তেল রেখে দিতে পারেন। যেকোন ধরনের ব্যথায় এইটা খুবই উপকারী আলহামদুলিল্লাহ।।
[গ]
গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা...


সকাল-সন্ধ্যা এবং ঘুমের সময়ের মাসনুন আমলগুলো গুরুত্বের সাথে করুন।। খারাপ কিছুর আশংকা করলে বা কুকুরের ডাক শুনলে শয়তানের থেকে পানাহ চান। তা'আউয পড়ুন। এছাড়া প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর পূর্বে বলা "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু.. দোয়াটা ১০ বার করে পড়ুন।"



তবে প্রফেশনালদের একটা ব্যাপার হচ্ছে, তারা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ তাই সমস্যা আইডেন্টিফাই করে সে মোতাবেক চিকিৎসা দিতে পারে। আর রুগীর অবস্থা বুঝে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। বাকি কোন বিশেষ ব্যক্তির প্রতি না। আল্লাহ তা'আলার কালামের উপর বিশ্বাস রাখুন।।