Tuesday, June 15, 2021

৩. দাম্পত্য জীবনে মধুর সম্পর্ক এবং ভালবাসা ​বিনিময়ের অভাবনীয় মর্যাদা​

 May be an image of text that says 'দাম্পত্য জীবনে মধুর সম্পর্ক এবং ভালবাসা বিনিময়ের অভাবনীয় মর্যাদা!'

 

 

 

৩. দাম্পত্য জীবনে মধুর সম্পর্ক এবং ভালবাসা ​বিনিময়ের অভাবনীয় মর্যাদা​

 

 

দাম্পত্য জীবনে মধুর সম্পর্ক এবং ভালবাসা ​বিনিময়ের অভাবনীয় মর্যাদা​
▬▬▬▬◈♥◈▬▬▬▬
প্রশ্ন: বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসা বিনিময়ের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর:
প্রথমে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি এ কারণে যে, মহান আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামের মত এত সুন্দর ও মহান জীবনাদর্শ দান করে ধন্য করেছেন। আল হামদুলিল্লাহ।
আমরা জানি, স্বামী-স্ত্রীর সুসম্পর্ক ও ভালবাসার বন্ধনে একটি সুখী পরিবার গঠিত হয় আর একেকটি সুখী পরিবার মিলে সুখী সমাজ গঠিত হয়। আর প্রতিটি সমাজে যদি সুখ ও শান্তির সু বাতাস প্রবাহিত হয় তাহলে 'শান্তি' নামক সোনার হরিণটা আবারও মানুষের হাতে এসে ধরা দিবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
সুতরাং এ কথায় কোন বিবেকবান মানুষের দ্বিমত থাকার কথা নয় যে, দাম্পত্য জীবনে ভালবাসা পূর্ণ পবিত্র ও মধুর সম্পর্ক একটি সুস্থ, সুন্দর ও শান্তিময় জীবন, পরিবার, সমাজ ও বিশ্ব বিনির্মাণের কেন্দ্রবিন্দু।
দাম্পত্য জীবনটা মূলত: স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক ভালবাসা ও দয়া-মমতার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। এর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জীবনে প্রবাহিত হয় সুখ-শান্তির নির্মল ঝর্ণাধারা। তাই তো মহান আল্লাহ বলেন,
 
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
 
"আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনা বলী রয়েছে।" (সূরা রূম: ২১)
 
♥♥ স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক মধুর সম্পর্ক ও ভালবাসার মর্যাদা:
 
দাম্পত্য জীবন মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে পৃথিবীর গতিধারা বজায় রাখার একটি চমৎকার ব্যবস্থা। এটি সব ধর্মেই গ্রহণযোগ্য ও সামাজিকভাবে স্বীকৃত বিষয়। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে এই দাম্পত্য জীবন অবারিত সওয়াব অর্জনেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র তা অধিকাংশ মানুষের নিকট অপরিচিত। তাই আজকের আলোচনায় এ দিকটি সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা হলো: 
 
◈ ১) স্ত্রীকে ভালবাসা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহ (আদর্শ) এর অন্তর্ভুক্ত। তিনি বলেন,
حُبّبَ إِلَيَّ مِنْ دنياكُمُ النّساءُ والطيبُ وجُعِلَتْ قرةُ عينِي في الصّلاةِ
"আমার নিকট তোমাদের পার্থিব সামগ্রীর মধ্য থেকে প্রিয় করে দেয়া হয়েছে: স্ত্রী ও সুগন্ধিকে এবং নামাজকে আমার জন্য বানানো হয়েছে চক্ষু শীতল কারী।" [ত্বাবারানী-শাইখ আলবানি হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। দ্রষ্টব্য: আন নাসিহা/২৫৫]
 
◈ ২) স্বামী-স্ত্রী যদি একে অপরকে আল্লাহর কারণে (দীনদারী, ইবাদত-বন্দেগি, সততা, নৈতিকতা, সচ্চরিত্র, সদাচার ইত্যাদি কারণে) ভালবাসে এবং আল্লাহর কারণেই ঘৃণা করে তাহলে তারা আরশের ছায়াতলে আশ্রয় প্রাপ্ত ৭ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মর্যাদা লাভ করবে। যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ في ظِلِّهِ يَوْمَ لا ظِلَّ إلَّا ظِلُّهُ: إِمامٌ عادِلٌ، وشابٌّ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ اللَّه تَعالى، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌفي المَسَاجِدِ، وَرَجُلانِ تَحَابَّا في اللَّه: اجتَمَعا عَلَيهِ، وتَفَرَّقَا عَلَيهِ، وَرَجُلٌ دَعَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ، وَجَمَالٍ فَقَالَ: إِنِّي أَخافُ اللَّه، ورَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فأَخْفَاها، حتَّى لا تَعْلَمَ شِمالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينهُ، ورَجُلٌ ذَكَرَ اللَّه خالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ متفقٌ عَلَيْهِ.
 
◈ ৩) স্বামী-স্ত্রী যদি একে অপরকে আল্লাহর জন্য ভালবাসে এবং নিজের জন্য যা পছন্দ করে তার সঙ্গীর জন্যও তাই পছন্দ করে তাহলে তারা ঈমানের প্রকৃত সাধ অস্বাদন করবে। যেমন: প্রখ্যাত সাহাবি আনাস রা. বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
‏ ثَلاَثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ بِهِنَّ حَلاَوَةَ الإِيمَانِ مَنْ كَانَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا وَأَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لاَ يُحِبُّهُ إِلاَّ لِلَّهِ وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي الْكُفْرِ بَعْدَ أَنْ أَنْقَذَهُ اللَّهُ مِنْهُ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ
 
"তিনটি বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে রয়েছে, সে ঈমানের প্রকৃত স্বাদ অনুভব করবে। যথা:
(১) অন্য সবার তুলনায় যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অধিক প্রিয়।
(২) যে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তার বান্দাকে ভালোবাসে।
(৩) এবং যাকে আল্লাহ কুফর থেকে মুক্তি দিয়েছেন, তারপর সে কুফরের দিকে ফিরে যাওয়াকে এমন অপছন্দ করে যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করে।" [সহীহ মুসলিম (হাদিস একাডেমী) ১। ঈমান]
 
◈ ৪) স্বামী-স্ত্রী যদি একে অপরের সাথে সুন্দর ভাষায় কথা বলে তাহলে তারা উভয়ের সদকার সওয়াব পাবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
الكَلِمَةُ الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ
"একটি ভালো কথা হল সদকা।" (সহিহ বুখারি)
◈ ৫) স্বামী-স্ত্রী যদি একে অপরের সাথে মুচকি হেসে কথা বলে তাহলে তাতেও সদকার সওয়াব পাবে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ,
تَبَسُّمُكَ فِي وَجْهِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ.
"তোমার ভায়ের (সাক্ষাতে) মুচকি হাসাও একটি সদকা।" (জামে তিরমিযি/ ১৯৫৬)
◈ ৬) স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে খুশি করা আল্লাহর নিকট প্রিয় আমল হিসেবে বিবেচিত। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে,
أحبُّ الأعمالِ إلى اللهِ عزَّ وجلَّ سُرُورٌ يدْخِلُهُ على مسلمٍ
"আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় কাজ হল, কোন মুসলিমের হৃদয়ে আনন্দ প্রবেশ করানো।" (সিলসিলা সহিহা/৯০৬)
◈ ৭) স্বামী-স্ত্রী যদি একে অপরের কোনও উপকার করে বা ভালো কাজ করে তাহলে এর বিনিময়ে সদকার সওয়াব লাভ করবে। যেমন: আল্লাহর নবী সাল্লাহু সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
كُلُّ مَعْرُوفٍ صَدَقَةٌ، وَإِنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ.
"প্রতিটি ভালো কাজ সদকা। আর তোমার ভায়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাটাও একটি ভালো কাজ।" (জামে তিরমিযি, হাদিস ১৯৭০)
◈ ৮)স্বামী-স্ত্রী যদি কোনভাবে একে ওপরের উপকার করে তাহলে তারা আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠ ও প্রিয় মানুষ হওয়ার মর্যাদা লাভ করবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
خَيْرُ النَّاسِ أَنْفَعُهُمْ لِلنَّاسِ
“যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে সেই শ্রেষ্ঠ মানুষ।” (ইবনে হিব্বান-হাসান)
অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
أحبُّ الناسِ إلى اللهِ أنْفَعُهُمْ لِلنَّاسِ
"আল্লাহর নিকট সে ব্যক্তি সর্বাধিক প্রিয় যে সর্বাধিক মানুষের উপকার করে।" (সিলসিলা সহিহা/৯০৬)
এই উপকার করা যে কোন মুসলিমের ক্ষেত্রে হতে পারে। সুতরাং স্বামী-স্ত্রী যদি একে অপরের উপকার করে তাহলে তারাও এ মর্যাদা অধিকারী হবে এতে কোনও সন্দেহ নাই।
◈ ৯) একজন স্বামী যদি তার স্ত্রীর মুখে এক লোকমা খাবার তুলে দেয় হাদিসে তাকে শ্রেষ্ঠ সদকা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন: প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
إنَّ أعظم الصدقة لُقمة يضعها الرجل في فم زوجته
"শ্রেষ্ঠ সদকা হল, একজন মানুষ তার স্ত্রীর মুখে এক লোকমা খাবার তুলে দেয়া।" (সহিহ বুখারি ও মুসলিম) অন্য হাদিসে স্ত্রী পরিবারের জন্য খরচ করাকেও সদকার সওয়াব বলা হয়েছে যদি সদকার নিয়তে খরচ করে। সুবহানাল্লাহ!
◈১০) স্বামী-স্ত্রী যদি একে অপরকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করে তাহলে এতে তারা সদকার সওয়াব অর্জন করবে। হাদিসে এসেছে,
أَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْىٌ عَنْ مُنْكَرٍ صَدَقَةٌ
"সৎকাজের আদেশ দেয়া, অসৎ কাজ হতে বিরত রাখা সদকা।" [সহিহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) ১৩/ যাকাত, পরিচ্ছেদ: ১১. প্রত্যেক কল্যাণকর কাজই সদকা, হা/২২০১]
বরং একটি পরিবার দাওয়াতি কাজের সর্ব প্রথম এবং সবচেয়ে বেশী উপযুক্ত ক্ষেত্র।
সুতরাং স্বামী-স্ত্রীর যদি একে অপরের মাঝে দাওয়াতি কাজ করে তাহলে উভয়ে 'দাঈ ইলাল্লাহ' এর খাতায় নাম লেখাতে পারে-যেভাবে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবুওত প্রাপ্তির পর সর্বপ্রথম দাওয়াতী কাজ শুরু করেছিলেন তার নিজ গৃহাঙ্গনে। সেই দাওয়াতে ইসলামের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে সর্বপ্রথম যার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিপিবন্ধ আছে তিনি হলেন তাঁর প্রাণপ্রিয় স্ত্রী খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা।
যাহোক যদিও উল্লেখিত হাদিস সমূহ কেবল স্বামী-স্ত্রীর জন্য নির্দিষ্ট নয়। বরং যে কোন মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু মানুষের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠজন ও জীবনসঙ্গীর উপর সবার আগে তা প্রযোজ্য হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই।
◈ ১১) স্বামী স্ত্রী যদি ভালবাসার চূড়ান্ত নিদর্শন হিসেবে একে অপরের সাথে সহবাসে লিপ্ত হয় তাহলে এতেও আল্লাহ তাআলা সদকার সওয়াব দান করেন। যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
فِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ ‏"‏ ‏.‏ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ ‏"‏ أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِي الْحَلاَلِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ
"স্ত্রীর সঙ্গে মিলনও সদকা। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, কেউ যদি স্ত্রী সংগম করে এতেও কি সে সওয়াব পাবে? তিনি বললেন তোমরা কি মনে কর যদি সে জৈবিক চাহিদা পূরণ করে হারাম পথে তাতে কি তার পাপ হবে না? অনুরূপভাবে যদি সে তা হালাল পথে করে তবে সে সাওয়াব পাবে।" (সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) ১৩/ যাকাত, পরিচ্ছেদ: ১১. প্রত্যেক কল্যাণকর কাজই সদকা, হা/২২০১)
◈ ১২) এভাবে স্বামী-স্ত্রী মধুর ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে একে অপরকে অনেক হারাম সম্পর্ক, পাপাচার, জিনা, ব্যভিচার থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এতে তারা উভয়ে সওয়াব পাবে ইনশাআল্লাহ।
◈ ১৩) অনুরূপভাবে স্বামী-স্ত্রীর মিলনের ফলে আল্লাহ তাআলা যদি তাদের কোলে সন্তান দান করে আর তারা উভয়ে মিলে তাকে সৎ, চরিত্রবান, দীনদার সুসন্তান হিসেবে গড়ে তোলে তাহলে এটি তাদের উভয়ের আমলনামায় সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব হিসেবে লিপিবদ্ধ হবে। সেই সন্তান যত সৎকর্ম করবে তারা উভয়ে এর বিনিময়ে সওয়াব লাভ করবে। সেই সুসন্তান দুআ করলে কবরে থেকেও তারা সওয়াব অর্জন করবে। যা হাদিসের আলোকে সু সাব্যস্ত।
মোটকথা, স্বামী-স্ত্রী উভয়ে যদি আল্লাহ ও তার রসূলের দেখানো নির্দেশনা মোতাবেক তাদের দাম্পত্য জীবনকে সাজিয়ে নিতে পারে তাহলে তারা এ পৃথিবীতে কেবল সুখ-সমৃদ্ধ জীবনই পাবে না বরং আখিরাতেও বিশাল নেকির ভাণ্ডার অর্জন করবে এবং উভয়েই জান্নাতে প্রবেশ করে গড়ে তুলতে পারবে আরেক নতুন ভালোবাসার ঘর।
সুতরাং দাম্পত্য জীবনকে কেবল সন্তান উৎপাদনের কারখানা না বানিয়ে আসুন নেকি অর্জনের কারখানায় রূপান্তরিত করি।
আল্লাহ তাআলা প্রতিটি স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সুদৃঢ় ভালবাসা ও প্রেমময় সম্পর্ক স্থাপন করে দিন। আল্লাহুম্মা আমিন।
▬▬▬▬◈♥◈▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

 

২. পাত্র নির্বাচনের মানদণ্ড কী?

 No photo description available.

 

 

২. পাত্র নির্বাচনের মানদণ্ড কী?

 .

 

পাত্র নির্বাচনের মানদণ্ড কী?
-------------------
মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রে চরিত্রবান ও দ্বীনদার যুবককে অগ্রাধিকার দেয়া উচিৎ। কেনানা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
إذا أتاكم من ترضون خلقه ودينه فزوجوه . إلا تفعلوا تكن فتنة في الأرض وفساد عريض
“যখন তোমাদের নিকট এমন কোন ব্যক্তি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে, যার চরিত্র ও দীনদারীতে তোমরা সন্তুষ্ট, তবে তোমরা তার বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও। যদি তোমরা তা না কর, তবে তা পৃথিবীর মধ্যে বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং ব্যাপক বিশৃঙ্খলার কারণ হবে।”
[তিরমিযী, অধ্যায়: বিবাহ, পরিচ্ছেদ: যখন তোমাদের নিকট এমন ব্যক্তি আসে যার দীনদারীতে তোমরা সন্তুষ্ট, তবে তোমরা তার বিয়ের ব্যবস্থা কর ইবনু মাজাহ, অধ্যায়: বিবাহ, পরিচ্ছেদ: সমতা হাদিস নং- ১৯৬৭]
বিশেষ করে চরিত্রবান সহীহ আকীদা সম্পন্ন কোন যুবক পেলে তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কেননা, তার মধ্যেই প্রকৃত দ্বীন পাওয়া যাবে। কিন্তু যদি কোন মেয়ের বিবাহ বিলম্ব হয়ে যাওয়ার কারণে ঈমানের কমতি ও চারিত্রিক স্খলনের আশংকা করে এবং সহীহ আকীদাওয়ালা দ্বীনদার পাত্র না পাওয়া যায় তাহলে তুলনা মূলক যাকে ভালো পাওয়া যায় তার সাথে বিবাহ দেয়া যেতে পারে। আল্লাহ সাহায্যকারী।
আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন।
--------------------
উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।