Thursday, June 17, 2021

৯. প্রশ্ন: বিয়ের পরে একটা মেয়ে কতটুকু স্বাধীনভাবে চলতে পারবে? Marriage education series

 No photo description available.

 

 

৯. প্রশ্ন: বিয়ের পরে একটা মেয়ে কতটুকু স্বাধীনভাবে চলতে পারবে?

 

প্রশ্ন: বিয়ের পরে একটা মেয়ে কতটুকু স্বাধীনভাবে চলতে পারবে?
▬▬▬◆◯◆▬▬▬
উত্তর:
আমরা যদি বিশ্বের দিকে দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, নারীরা পুরুষদের দ্বারা সবচেয়ে বেশি নিগৃত হয়। তারা ইভটিজিং, ধর্ষণ, প্রতারণা সহ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার। এ পরিস্থিতিতে একমাত্র ইসলামি বিধিবিধান অনুসরণই নারীদের প্রতি সহিংসতা কমাতে পারে এ কথা ১০০% নিশ্চয়তা সহকারে বলা যায়। কেননা, যে মহান স্রষ্টা আল্লাহ নারী এবং পুরুষকে সৃষ্টি করেছেন তিনি অবশ্যই তাদের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি অবগত। তাই তিনি উভয়ের জন্য বেশ কিছু নীতিমালা নির্ধারণ করেছেন। আমাদের সকলের জন্য আবশ্যক হল, সেগুলো যথাযথভাবে মেনে চলা। তাহলে আমরা যেমন একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ করতে সক্ষম হবো তেমনি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে প্রবেশ করতে পারব সুখসমৃদ্ধির চিরস্থায়ী নীড় জান্নাতে।
এখানে নারীদের সম্পর্কে প্রশ্ন করায় কেবল তাদের করণীয় বিষয়গুলো অতি সংক্ষেপে তুলে ধরা হল:
◉ বিয়ের আগে এবং পরে সর্বাবস্থায় একজন মুসলিম নারীর জন্য আবশ্যক হচ্ছে যে,
১. তারা নিজেদের স্বামী, বাবা, ভাই, দাদা, চাচা এবং মহিলা অঙ্গন ছাড়া নিজের রূপচর্চা, সৌন্দর্য ও অলঙ্কারের প্রদর্শনী করবে না।
২. স্বামী ছাড়া অন্যান্য মাহরাম পুরুষদের সামনে ভদ্র ও শালীন পোশাক পরিধান করে চলাফেরা করবে।
৩. একান্ত জরুরি দরকার না হলে বাড়ি থেকে বের হবে না। বাড়ির বাইরে যাওয়ার দরকার হলে অবশ্যই পরিপূর্ণ পর্দা করে বের হবে। দরকার শেষ হলে অনতি বিলম্বে বাড়ি ফিরে আসবে।
৪. জরুরি দরকারে বাইরে যেতে হলে এমন সুগন্ধযুক্ত পারফিউম, সেন্ট, আতর, ক্রিম, পাউডার ইত্যাদি ব্যবহার করবে না যার সুগন্ধি অন্য পরপুরুষ পর্যন্ত পৌঁছে। তবে বাড়িতে স্বামী, মাহরাম পুরুষ অথবা নারী অঙ্গনে এসব প্রসাধনী ব্যবহারে কোন আপত্তি নাই ইনশাআল্লাহ।
৫. কোন পর পুরুষের সাথে প্রয়োজন হীন কথাবার্তা বলবে না। এমনকি ফিতনার আশঙ্কা থাকলে সালাম দেয়া কিংবা সালামের জবাব দেয়া থেকেও বিরত থাকবে।
৬. স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষ তথা বাবা, ভাই, দাদা, চাচা প্রমুখ ব্যক্তিদের সাথে ছাড়া একাকী কোথাও দূরের সফরে যাবে না।
৭. কোন পর পুরুষের সাথে নরম স্বরে কথা বলবে না ও হাসি-মজাক করবে না।
৮. বিশেষ করে বিয়ের পর, স্বামীর আপন ভাই (দেবর-ভাসুর) ও অন্যান্য নিকটাত্মীয় নন মাহরাম পুরুষদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবে। কারণ হাদিসে এ জাতীয় সম্পর্কের লোকদেরকে ‘মৃত্যু সমতুল্য’ বলা হয়েছে।
৯. পর পুরুষদের সাথে কোথাও নির্জনে একত্রিত হবে না।
১০. ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বা পরিবারের কোন মেয়ের ছবি আপলোড করবে না।
১১. স্বামীর বন্ধুদের সাথে রং-তামাশায় লিপ্ত হবে না ও আড্ডা দিবে না।
১২. স্বামীর সাথে অথবা একাকী অন্য মহিলাদের সাথে কোন বিয়ের পার্টি বা এ জাতীয় অনুষ্ঠানে বেপর্দা অবস্থায় যাবে না।
এ সকল বিধিবিধান বিয়ের আগে যেমন পালনীয় তেমনি বিয়ের পরেও পালনীয়। সর্বাবস্থায় একজন মুসলিম নারী নিজেকে ইসলামের অনুশাসনের মধ্যে রাখবে এবং সর্ব প্রকার প্রকাশ্য ও গোপন ফিতনা থেকে দূরে রাখবে।
সর্বোপরি মনে রাখা আবশ্যক যে, একজন বিবাহিত নারীর জন্য তার স্বামীর আনুগত্য, সেবা ও তার সন্তুষ্টি অর্জন আখিরাতের সাফল্য ও মুক্তির কারণ এবং তার অবাধ্যতা (পাপাচার/আল্লাহর নাফরমানি এবং সাধ্যাতীত বিষয় ছাড়া) দুনিয়া ও আখিরাতের ধ্বংসের কারণ।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
▬▬▬◆◯◆ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব

 

৮. প্রশ্ন: স্বামীর আনুগত্য আমরা কীভাবে করবো? কী কী কাজ করলে স্বামীর আনুগত্য করা হবে? Marriage education series

 No photo description available.

 

 

৮. প্রশ্ন: স্বামীর আনুগত্য আমরা কীভাবে করবো? কী কী কাজ করলে স্বামীর আনুগত্য করা হবে?
 

প্রশ্ন: স্বামীর আনুগত্য আমরা কীভাবে করবো? কী কী কাজ করলে স্বামীর আনুগত্য করা হবে?
▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
উত্তর:
স্বামীর আনুগত্য করার অর্থ হচ্ছে, তিনি যা আদেশ করবেন তা বাস্তবায়ন করা এবং যা নিষেধ করবেন তা থেকে বিরত থাকা। তবে শর্ত হল, তা যেন অবশ্যই সাধ্যের অতিরিক্ত না হয় এবং আল্লাহর হুকুমের সাথে সাংঘর্ষিক না হয় (বা গুনাহের কোন কাজ না হয়)।
যদি স্বামী এমন কোন কাজের আদেশ করেন যা স্ত্রী পালন করলে স্ত্রী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অথবা উক্ত কাজটি যদি আল্লাহর নাফরমানী বা গুনাহের কাজ হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে তার হুকুম মানা আবশ্যক নয়। বর স্বামীর জন্য স্ত্রীকে এমন হুকুম দেয়াই জায়েজ নয়।
তবে স্বামীর উচিৎ, স্ত্রীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা, শক্তি-সামর্থ্য ইত্যাদির দিকে লক্ষ রেখে তাকে কাজের হুকুম দেয়া। এটাই সুন্দর দাম্পত্য জীবনের দাবি। সত্যিকার অর্থে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে যখন মধুর সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে তখন স্বামীর আনুগত্য ও সেবা করার বিষয়টিকে একজন স্ত্রী হাসিমুখেই বরণ করে নেন। অনুরূপভাবে স্বামীও তখন স্ত্রীর সহযোগী বন্ধুর মত পাশে থাকে এবং তাকে সাহায্য করে। এভাবে দুজনের সুসম্পর্ক ও ভালবাসার মাধ্যমে একটি দাম্পত্য সুখের তরীতে ভাসতে ভাসতে এগিয়ে যায়।
আল্লাহ তাআলা প্রতিটি দাম্পত্য জীনকে সুখ ও ভালবাসা দ্বারা পূর্ণ করে দিন। আমীন।
▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে : আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব